Ajker Patrika

মার্কিন ভিসা নীতি ভোট চুরির বিরুদ্ধে পরিষ্কার বার্তা: আমীর খসরু

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৫ মে ২০২৩, ১৭: ৩৫
Thumbnail image

বাংলাদেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষিত ভিসা নীতিকে ‘ভোট চুরির সঙ্গে জড়িতদের জন্য পরিষ্কার বার্তা’ হিসেবে দেখছে বিএনপি। এটি সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও বিদেশ কমিটির চেয়ারম্যান আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। 

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে মার্কিন ভিসা নীতির বিষয়ে বিএনপির প্রতিক্রিয়া প্রসঙ্গে এসব কথা বলেন আমীর খসরু। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটকে বিবেচনায় নিয়েই এই সিদ্ধান্ত এসেছে। দেশের মানুষ এই সিদ্ধান্তকে সাদরে গ্রহণ করেছে। যারা ভোট চুরির প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত রয়েছে (প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে), সেটা যারাই হোক, সবার প্রতি এটা পরিষ্কার বার্তা। এর চেয়ে পরিষ্কার বার্তা আর কিছু হতে পারে না।’ 

আমীর খসরু আরও বলেন, ‘আগামী নির্বাচন নিয়ে দেশের মানুষের যে শঙ্কা, এ ধরনের একটি পদক্ষেপ অন্তত আমি মনে করি, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।’

বাংলাদেশের নির্বাচনকে ঘিরে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার প্রতিফলন হিসেবে এমন মার্কিন সিদ্ধান্ত এসেছে উল্লেখ করে আমীর খসরু বলেন, ‘‘বাংলাদেশের মানুষ আগামী নির্বাচনে আবারও তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন কি না, নাকি তারা আবারও ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হবেন—এই জায়গা থেকে এ স্টেটমেন্ট। এই স্টেটমেন্ট সুনির্দিষ্টভাবে বাংলাদেশের জন্য দেওয়া হয়েছে। 

স্টেটমেন্ট বাংলাদেশের ব্যক্তি, সংগঠনগুলোকে সুনির্দিষ্ট করেছে, নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠানকে তারা সরাসরি অ্যাড্রেস করেছে। এর মধ্যে তারা বিচার বিভাগের কথা বলেছে, সাংবাদিকদের কথা বলেছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কথা বলেছে, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কথা বলেছে। যারাই ভোট চুরির সঙ্গে প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষভাবে জড়িত থাকবে, তাদের সবার জন্যই তাদের এই স্টেটমেন্ট।’ 

নির্বাচন তো পরের কথা—এমন মন্তব্য করে আমীর খসরু বলেন, ‘আগে গণতান্ত্রিক পরিবেশ থাকতে হবে, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড থাকতে হবে। মানবাধিকার, আইনের শাসন, জনগণের সাংবিধানিক অধিকার, সভা-সমাবেশ করার অধিকার থাকতে হবে। এগুলো বাধাগ্রস্ত হওয়ার কারণেই এই প্রশ্নগুলো আজকে আসছে। তার মধ্যে এটা একটা পদক্ষেপ যা যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এসেছে।’ 

‘যেহেতু বাংলাদেশের মানুষের বাক স্বাধীনতা নাই, জীবনের নিরাপত্তা নাই। আগামী নির্বাচনে ভোট চুরির অংশ হিসেবে সরকার একটা ভয়ভীতির পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। ভোট চুরির প্রক্রিয়া চলছে বলেই আগেভাগে এমন অর্ডার দেওয়া হয়েছে।’ 

ভোট চুরির প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে অভিযোগ করে তিনি আরও বলেন, ‘সভা-সমাবেশে বাধা, গুলি করে মানুষ হত্যা, মানবাধিকার ও আইনের শাসন না থাকা এ সবই ভোট চুরির প্রক্রিয়ার অংশ। এ সবকিছুর সঙ্গে যারা জড়িত, আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে, তাদের সবাইকে তারা (যুক্তরাষ্ট্র) অ্যাড্রেস করেছে।’ 

সরকারকে উদ্দেশ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘এটা একটা বার্তা যে, বাংলাদেশের মানুষ ভোট দিতে পারছে না। সরকার যদি এই বার্তা না নিয়ে ভোট চুরির প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখে, তাহলে তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে তাদের চিন্তা করা দরকার।’ 

মার্কিন ভিসা নীতি সরকারের দায়িত্বশীলদের বক্তব্য প্রসঙ্গে আমীর খসরু বলেন, ‘উদ্বিগ্ন না হলে ভালো কথা। তাহলে বাংলাদেশের মানুষের ভোটাধিকার, গণতান্ত্রিক পরিবেশ, আইনের শাসন—এগুলো ফিরিয়ে দিতে হবে। তা না করলে তাদের (সরকার) উদ্বিগ্ন হতে হবে। আবার যদি নির্বাচনে জনগণের ভোট নেওয়ার প্রক্রিয়া চলতে থাকে, তাহলে তাদের উদ্বিগ্ন হওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে।’ 

নতুন মার্কিন ভিসানীতির বিষয়টি সরকারের গোপন করার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এত বড় একটা পদক্ষেপ, কেন তারা (সরকার) দেশবাসীকে জানাল না, সে উত্তর সরকার দিতে পারবে।’

 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত