Ajker Patrika

কুয়েট শিক্ষার্থীদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবি একাধিক ছাত্রসংগঠনের

ঢাবি সংবাদদাতা
কুয়েটে নীতিনির্ধারণী বডি সিন্ডিকেটের জরুরি সভায় আগামী ৪ মে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু এবং ২ মে আবাসিক হলগুলো খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। তা প্রত্যাখ্যান করে আবাসিক হলের তালা ভেঙে ঢোকার চেষ্টা করছেন শিক্ষার্থীরা। আজ মঙ্গলবার তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
কুয়েটে নীতিনির্ধারণী বডি সিন্ডিকেটের জরুরি সভায় আগামী ৪ মে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু এবং ২ মে আবাসিক হলগুলো খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। তা প্রত্যাখ্যান করে আবাসিক হলের তালা ভেঙে ঢোকার চেষ্টা করছেন শিক্ষার্থীরা। আজ মঙ্গলবার তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ৩৭ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার এবং ২২ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলার ঘটনায় নিন্দা জানানোর পাশাপাশি এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে একাধিক ছাত্রসংগঠন। আজ মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট (একাংশ), বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন এ দাবি জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে। এ ছাড়া বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ এক সংবাদ সম্মেলনে একই দাবি জানিয়েছে।

ছাত্রসংগঠনগুলো এসব বিবৃতিতে শিক্ষার্থীদের ওপর আরোপিত মামলা এবং বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবি জানানোর পাশাপাশি, হামলাকারীদের বিচার এবং উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করেন।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের নেতারা বিবৃতিতে বলেন, ‘এ ধরনের ফ্যাসিবাদী সিদ্ধান্ত আমরা দেখেছি বিগত আওয়ামী শাসনামলে। প্রশাসনের এ ধরনের অন্যায় সিদ্ধান্ত ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড আরও তীব্র হওয়ার পরিবেশ তৈরি করবে, শিক্ষার্থীদের মাঝে ভয়ের সঞ্চার করবে। তদন্তের অজুহাতে কোনোভাবেই বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রাখা যাবে না। বরং শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক শিক্ষাজীবন এগিয়ে নিতে নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। অবিলম্বে শিক্ষার্থীদের নামে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে এবং শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারী সন্ত্রাসীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।’

বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী

বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর দেওয়া বিবৃতিতে নেতারা বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার বিচার না করে বরং শিক্ষার্থীদের ওপরই মিথ্যা মামলা করে হয়রানি করা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে একটা অনিরাপদ এবং ভীতিকর পরিবেশ তৈরি করার মাধ্যমে মূলত প্রশাসনের স্বৈরাচারী ক্ষমতাকাঠামোকে শক্তিশালী করা হচ্ছে। আমরা শিক্ষার্থীদের ওপর দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং বহিরাগত সন্ত্রাসীদের হামলার বিচার চাই।’

কুয়েট উপাচার্যের পদত্যাগ এবং বিশ্ববিদ্যালয়টিতে শিক্ষা কার্যক্রম দ্রুত চালুর দাবি জানিয়ে বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর নেতারা বলেন, ‘কুয়েটে ফেব্রুয়ারি মাসে হামলা থেকে শুরু করে এই পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে যা যা ঘটেছে, সব দায় উপাচার্যের। উপাচার্যের এই দায় এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। ফলে অবিলম্বে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, মিথ্যা মামলা এবং অন্যায় বহিষ্কারাদেশের দায় নিয়ে উপাচার্যকে পদত্যাগ করতে হবে এবং আবাসিক হলসমূহ খুলে দিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম চালু করতে হবে।’

ইসলামী ছাত্র আন্দোলন

ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা বিবৃতিতে বলেন, কুয়েট ক্যাম্পাসে একটি সন্ত্রাসী সংগঠনের বহিরাগত কর্মীরা এসে হামলা করে। পরে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর মামলা দিয়ে এর দায় ধামাচাপা দেওয়া কুয়েট উপাচার্যের ব্যর্থতার পরিচয়।

বিবৃতিতে সংগঠনটি অবিলম্বে কুয়েটের নির্দোষ শিক্ষার্থীদের ওপর দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার, দ্রুত হামলাকারীদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনা এবং অতিসত্বর সকল প্রকার একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করে দিয়ে হলগুলো খোলার দাবি জানায়।

বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ

এদিকে দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ কুয়েট উপাচার্যের পদত্যাগসহ পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরে।

দাবিগুলো হলো কুয়েট ছাত্রদল-যুবদলের হামলা, মামলা এবং শিক্ষার্থীদের বহিষ্কারের বিষয়ে পূর্ণ নিরপেক্ষ তদন্ত করে দোষীদের চিহ্নিত করে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে; আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের নামে মামলা এবং বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করতে হবে; কুয়েটের ভিসি ড. মোহাম্মদ মাছুদকে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পদত্যাগ করতে হবে, পদত্যাগ না করলে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতাবলে অপসারণ করতে হবে; আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কুয়েটের সব হল খুলে দিতে হবে এবং মিরপুরে গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ নেতা মাহিন আহম্মেদের ওপর হামলাকারীদের অনতিবিলম্বে গ্রেপ্তার করতে হবে।

আরও পড়ুন—

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত