Ajker Patrika

খতিব সম্মেলন

বিএনপি কোরআন ও সুন্নাহবিরোধী কানুন বাতিল করবে: সালাহউদ্দিন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আজ রোববার বিকেলে রাজধানীর বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলনকেন্দ্রে জাতীয় ইমাম-খতিব সম্মেলনে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। ছবি: সংগৃহীত
আজ রোববার বিকেলে রাজধানীর বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলনকেন্দ্রে জাতীয় ইমাম-খতিব সম্মেলনে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে কোরআন ও সুন্নাহবিরোধী কানুন বাতিল করা হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।

আজ রোববার বিকেলে রাজধানীর বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলনকেন্দ্রে জাতীয় ইমাম-খতিব সম্মেলনে এই অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

সালাহউদ্দিন বলেন, ‘বিএনপি ক্ষমতায় গেলে কোরআন ও সুন্নাহর বিপরীতে কোনো কানুন করা হবে না। যদি থাকে সেটা বাতিল করা হবে। সংবিধানের মূলনীতিতে শহীদ জিয়াউর রহমান বিসমিল্লাহ হির রাহমানির রাহিম’ সন্নিবেশিত করেছিলেন...এখন সেটা নেই। আমরা আগামীতে এটা সংবিধানে পুনর্বহাল করব।’

সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তাঁর দল ক্ষমতায় গেলে মহানবী (সা.)-এর আদর্শ অনুসরণে ‘ইনসাফভিত্তিক বাংলাদেশ’ গড়বে বলে তিনি অঙ্গীকার করেন।

তারেক রহমান বলেন, ‘মহানবীর ন্যায়পরায়ণতা নিয়ে মুসলমান-অমুসলমান, বিশ্বাসী-অবিশ্বাসী কারও মধ্যেই কোনো সংশয় ছিল না। মহানবীর সেই ন্যায়পরায়ণতার আদর্শ সমুন্নত রেখে রাষ্ট্র এবং সরকার পরিচালনায় বিএনপির মূল মন্ত্র হবে ন্যায়পরায়ণতা।’ তিনি বলেন, ‘মহানবীর ন্যায়পরায়ণতার আদর্শ উজ্জীবিত একটি ইনসাফভিত্তিক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে আগামী নির্বাচনে বিএনপি দেশের সব সম্মানিত ইমাম, খতিব, মুয়াজ্জিন, আলেম, ওলামা, পীর, মাশায়েখদের দোয়া এবং সমর্থন চায়।’ এ সময় নিজের পাশাপাশি তাঁর মা বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জন্য দলের নেতা-কর্মী ও দেশবাসীর কাছে দোয়া চান তারেক রহমান।

দেশের ইমাম-খতিব-মুয়াজ্জিনদের জন্য বিএনপির প্রতিশ্রুতির কথা জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, ‘বিএনপি রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেলে আপনাদের (ইমাম-খতিব-মুয়াজ্জিনদের জন্য) সার্ভিস রুল প্রণয়নের ব্যাপারে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করবে।’

ইমাম-খতিবদের ‘সমাজ সংস্কারক’ আখ্যা দিয়ে বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘বিএনপি মনে করে সমাজ সংস্কারকের ভূমিকায় বা ভূমিকা পালনকারী ইমাম-খতিব-মুয়াজ্জিন যাঁরা আর্থিকভাবে পিছিয়ে রয়েছেন, তাঁদের প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা প্রদান অবশ্যই রাষ্ট্রের দায়িত্ব। এমন বাস্তবতায় ইমাম-খতিব-মুয়াজ্জিনদের মধ্যে যাঁরা আর্থিক অনটনে রয়েছেন, তাঁদের প্রতি মাসে রাষ্ট্রীয় তহবিল থেকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণে সম্মানী ভাতা দেওয়ার ব্যাপারে বিএনপির একটি পরিকল্পনা রয়েছে। বিএনপি রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেলে ইমাম-মুয়াজ্জিনদের সম্মানী ভাতা দেওয়ার পরিকল্পনা পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করব।’

একই সঙ্গে তাঁদের আর্থিকভাবে আরও স্বাবলম্বী করার লক্ষ্যে ইমাম-মুয়াজ্জিন কল্যাণ ট্রাস্টকে শক্তিশালী করার পরিকল্পনার কথাও জানান তারেক রহমান।

অনুষ্ঠানে জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা মনে করি, বিশ্বাস করি, ইমামরা যেদিন সমাজের ইমাম হবেন, সেদিন আমাদের মুক্তি হবে।’

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থানের পর সারা দেশে ওলামা-কেরামের যে মাঠ তৈরি হয়েছে, তাকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। আর এ দেশে নাস্তিকতা, ফ্যাসিবাদের কোনো স্থান থাকবে না। এ দেশে আলেম-ওলামাদের নেতৃত্ব থাকতে হবে।’

এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, বাংলাদেশে বিগত ১৬ বছর ইসলামবিরোধীদের প্রশ্রয় দেওয়া হয়েছে, আওয়ামী লীগ ইসলামবিরোধী রাজনীতি করেছে, আওয়ামী লীগ ভারতের দালালি করেছে। আমরা এবার কারও দালালি নয়, নিজেদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় নিজের পায়ে বাংলাদেশ গড়ে তুলব এবং সেই বাংলাদেশ হবে ইনসাফের বাংলাদেশ।’

সম্মিলিত ইমাম-খতিব পরিষদ আয়োজিত জাতীয় ইমাম-খতিব সম্মেলন কমিটির সদস্যসচিব মুফতি আজহারুল ইসলাম ইমাম-খতিবদের ৭ দফা দাবি উপস্থাপন করেন। সম্মিলিত ইমাম-খতিব পরিষদের আহ্বায়ক বায়তুল মোকাররম মসজিদের জ্যেষ্ঠ পেশ ইমাম মুফতি মুহিব্বুল্লাহিল বাকী নদভীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে হেফাজতে ইসলামের মাওলানা জোনায়েদ আল হাবিব, মুফতি সাখাওয়াত হোসাইন রাজী, মুফতি হাবিবুর রহমান কাশেমী, মুফতি বশির উল্লাহ, গণঅধিকার পরিষদের নুরুল হক নুর, খেলাফত আন্দোলনের মাওলানা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মাওলানা মনজুরুল ইসলাম আফেন্দী প্রমুখ বক্তব্য দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ