Ajker Patrika

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে পুঁজি করে কাউকে সহিংসতার সুযোগ দিতে পারি না: ওবায়দুল কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক
আপডেট : ১৮ জুলাই ২০২৪, ১৭: ৪৮
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে পুঁজি করে কাউকে সহিংসতার সুযোগ দিতে পারি না: ওবায়দুল কাদের

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে পুঁজি করে কাউকেই সন্ত্রাস–সহিংসতা সৃষ্টির সুযোগ আমরা দিতে পারি না। জনগণের জনমালের নিরাপত্তাকে বাধাগ্রস্ত করে—এমন কোনো কর্মকাণ্ড সহ্য করা হবে না।’ 

আজ বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) দুপুরে ধানমন্ডি আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। 

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সারা দেশে বিএনপি-জামায়াতের প্রশিক্ষিত ক্যাডার বাহিনী ব্যাপক সন্ত্রাসী তাণ্ডব চালাচ্ছে। গতকাল (১৭ জুলাই) পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়ার পর আজ থেকে দেখা যাচ্ছে, শিক্ষার্থীদের পরিবর্তে, কোটাবিরোধী আন্দোলনের বিপরীতে এখন বিএনপি-জামায়াত তাদের পুরোনো আগুন–সন্ত্রাস নিয়ে মাঠে নেমেছে। এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে নিরাপদ আশ্রয়ের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে ইতিমধ্যে নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছে।’ 

কাদের আরও বলেন, এই আন্দোলন আর সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নয়। এই আন্দোলন বিএনপি–জামায়াতের রাজনৈতিক হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে। এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের লাশ বানিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা লোটার অপচেষ্টা করছে বিএনপি-জামায়াত ও তাদের দোসররা। এই প্রেক্ষাপটে সাধারণ শিক্ষার্থীদের জীবনের নিরাপত্তার জন্য, কোনো মায়ের বুক যাতে খালি না হয়— সে লক্ষ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। 

সেতুমন্ত্রী আরও বলেন, ‘সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের ওপর অমানবিক নির্যাতন চালিয়েছে। তিন শতাধিক ছাত্রলীগ কর্মী মারাত্মক আহত হয়েছে। এদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এ ছাড়া ছাত্রলীগের নারী শিক্ষার্থীদের হামলা করে বেধড়ক পিটিয়েছে, হলে আক্রমণ চালিয়ে তাদের লাঞ্চিত করেছে। সাংবাদিকদের ওপরেও হামলা করেছে। এ ছাড়া বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও শিক্ষকদের জিম্মি করে রাখে। আবাসিক হলে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে।’ 

সংবাদমাধ্যমের প্রতি অভিযোগ তুলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘গণমাধ্যমের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা আছে, থাকবে। গণমাধ্যমের গঠনমূলক সমালোচনাকেও স্বাগত জানাই। গত দুই দিন আক্রান্তের আক্রমণকারী হিসেবে হেডিং হয় ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। সর্বত্রই একই হেডিং। তাহলে হলে মেয়েদের ওপর যে অত্যাচার করেছে, চট্টগ্রামে ছয়তলা ভবনের ছাদ থেকে যাদের নিচে ফেলে দিয়েছে, দুজনের পায়ের রগ কেটেছে, তাদের মধ্যে একজন মারা গেছে—সেটা কী? এটাও কি ছাত্রলীগ ছাত্রলীগের ওপর হামলা করেছে? এই বর্বরতা নিয়ে আমরা আশা করি, আমাদের গণমাধ্যম যা দেখবে তাই প্রকাশ করবে, যা সত্য তা–ই তারা ধারণা করবে, জাতিকে ধারণা দিবে যাতে বিভ্রান্ত হতে না পারে।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, দ্রুততার সঙ্গে এই ষড়যন্ত্রের স্বরূপ উদ্‌ঘাটিত হবে এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষার্থীদের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনবে। নতুন প্রজন্মের মস্তিষ্কে রাজাকারের মতো ভিন্ন শব্দ ঢুকিয়ে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ দেশবিরোধী রাজনীতির ধারা প্রচলনের গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। যারা অসৎ উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্য সন্ত্রাস সহিংসতার মাধ্যমে সারা দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে আমরা বাধ্য হব। কারা উসকানি দিয়েছে, দিচ্ছে সব খতিয়ে দেখা হবে। দেশের মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, রক্ষা করার পবিত্র দায়িত্ব আমাদের ওপর বর্তেছে। আমরা সেখানে দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হব না, এ কথা বলতে পারি। এই সন্ত্রাসী ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য প্রয়োজনে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।’

আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের রাজপথে থেকে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধানের নিজেদের সহযোগিতামূলক সক্রিয় ভূমিকা পালনের জন্য সাংগঠনিকভাবে নির্দেশনা দিয়ে তিনি বলেন, যারা হত্যাকাণ্ড, লুটপাট ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়েছে তারা যারাই হোক, তাদের বিরুদ্ধে শাস্তির ব্যবস্থা নিতেই হবে। জননিরাপত্তা বাধাবিঘ্ন ঘটানোর চেষ্টা করলে ছাড় দেওয়া হবে না। 

তিনি আরও বলেন, আজ স্বাধীনতাবিরোধী মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পরিপন্থী যেই অপশক্তি আজ বাংলাদেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে, অশান্তি সৃষ্টির ষড়যন্ত্র করছে—এদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের সব শক্তিকে আহ্বান জানান। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আবারও ঐক্যবদ্ধ হই এবং অশুভ শক্তি এই ঘৃণ্য তৎপরতা থেকে মাতৃভূমিকে রক্ষা করতে হবে। 

এ সময় উপস্থিত ছিলেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, এস এম কামাল হোসেন, মির্জা আজম, সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১০০ বছর পর জানা গেল, ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের এপিএস মোয়াজ্জেমকে অব্যাহতি

ঘন ঘন নাক খুঁটিয়ে স্মৃতিভ্রংশ ডেকে আনছেন না তো!

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত