নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সদ্য প্রয়াত লেখক ও গবেষক বদরুদ্দীন উমর বলেছেন, শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে এমনভাবে ব্যবহার করেছেন, যেন সেটি তার পারিবারিক সম্পত্তি। এই চেতনা একসময় কাজ করেছে—মানুষ বিভ্রান্ত হয়েছে, আবেগে ভেসেছে। কিন্তু পরে দেখা গেছে, তার দমননীতি ও নির্যাতনের ফলে এই চেতনা ধরা পড়ে গেছে। এখন তিনি জনগণ থেকে শতভাগ বিচ্ছিন্ন।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত কর্মকর্তার কাছে দেওয়া জবানবন্দিতে এসব কথা বলেছেন বদরুদ্দীন উমর। প্রসিকিউশন সূত্র জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় সারা দেশে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ট্রাইব্যুনালে গিয়ে সাক্ষ্য দেওয়ার কথা ছিল তাঁর। তবে ট্রাইব্যুনালে গিয়ে সাক্ষ্য দেওয়ার আগেই রোববার সকালে মারা যান তিনি। তাঁর সাক্ষ্যের বিষয়ে প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম রোববার সাংবাদিকদের বলেন, ট্রাইব্যুনাল আইনের ১৯(২) ধারা অনুযায়ী কোনো সাক্ষী তদন্ত কর্মকর্তার কাছে সাক্ষ্য দিয়ে মারা গেলে প্রসিকিউশনের আবেদনে ট্রাইব্যুনাল তা গ্রহণ করতে পারেন।
বদরুদ্দীন উমর তদন্ত কর্মকর্তার কাছে জবানবন্দিতে বলেছেন, শেখ হাসিনার শাসনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আড়ালে কর্তৃত্ববাদী শাসন আর লুটপাট। এই যে ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা’ বলা হয়, সেটি নিয়ে আমি নিজেও নিশ্চিত না—এই কথাটি আসলে কী বোঝায়। ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা’ বলে সবাই বলে যাচ্ছে, কিন্তু এই চেতনার প্রকৃত অর্থ কী, তা কখনো স্পষ্ট করা হয়নি। যদি চেতনা বলতে বোঝানো হয়, ১৯৭১ সালে মানুষ কী স্বপ্ন দেখেছিল, কী পেতে চেয়েছিল, তাহলে বলা যায়—সাধারণ মানুষের চেতনা আর আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের চেতনার মধ্যে কোনো মিল ছিল না। সাধারণ মানুষ চেয়েছিল দু’বেলা খেতে, নিরাপদ জীবন, একটা সম্মানজনক চাকরি, আর একটু নিরাপত্তা। কিন্তু আওয়ামী লীগের লোকজন ভাবছিল, কীভাবে তারা সুযোগ নিয়ে সম্পদ বানাবে, ক্ষমতা কুক্ষিগত করবে।
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে যারা বাস্তবে লড়াই করেছিল, তারা ছিল সাধারণ ছাত্র, কৃষক-শ্রমিকের সন্তান, মধ্যবিত্ত তরুণেরা। আওয়ামী লীগের এমপি-মন্ত্রী বা ছাত্রনেতাদের কারও যুদ্ধক্ষেত্রে কোনো ভূমিকা ছিল না। তাদের মধ্যে অনেকেই তখন পলায়নপর ছিল। তাহলে প্রশ্ন হলো—‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা’ বলতে কার চেতনার কথা বোঝানো হচ্ছে? শেখ হাসিনা যখন এটি উচ্চারণ করেন, তখন তিনি এমনভাবে বলেন যেন তাঁর চেতনা আর জনগণের চেতনা একই। কিন্তু বাস্তবে তাঁর ‘চেতনা’ জনগণের আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে কোনো সম্পর্ক রাখে না। বরং এটা এক ধরনের দলীয় রেটোরিক, যার মাধ্যমে তিনি জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছেন। তিনি এই মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গণতান্ত্রিক চর্চার কোনো সুযোগ দেননি। শেখ হাসিনার মুক্তিযুদ্ধের বয়ানে শেখ মুজিবুর রহমানই মুক্তির একমাত্র পুরুষ, একমাত্র নেতা—এইরকম একটা ‘ঐতিহাসিক মিথ’ প্রতিষ্ঠা করেছেন। অথচ বাস্তবতা হলো, ২৫ মার্চ ১৯৭১-এ শেখ মুজিব রাজনৈতিকভাবে ব্যর্থ হয়ে পড়েন এবং পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানে বন্দী ছিলেন এবং সেই নয় মাস যুদ্ধ সম্পর্কে প্রায় কিছুই জানতেন না।
বদরুদ্দীন উমর বলেন, যদি একটি সত্যিকারের নিরপেক্ষ নির্বাচন হতো, তাহলে আওয়ামী লীগ কয়টি আসন পেত তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। শেখ হাসিনা ‘চেতনা’ দিয়ে এক ধরনের রাজনৈতিক জমিদারি কায়েম করেছেন। মুক্তিযুদ্ধকে কংক্রিটাইজ বা বাস্তবায়িত করার কোনো চেষ্টা তিনি করেননি। তার জন্য এটি শুধু একটি রেটোরিকাল অস্ত্র। এত বেপরোয়া হয়ে তো বাংলাদেশে আর কাউকে এইভাবে কাজ করতে দেখা যায় না। শেখ মুজিব বেপরোয়া ছিলেন ঠিকই, কিন্তু তার শাসন শৈলী ও শেখ হাসিনার শাসন শৈলীর মধ্যে মৌলিক পার্থক্য আছে। কারণ হাজার হলেও, শেখ মুজিব জনগণের মধ্য থেকে উঠে এসেছিলেন, আন্দোলন-সংগ্রামের ভেতর দিয়ে রাজনীতিতে এসেছিলেন। দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক পরিপক্বতা তাঁর ছিল। আর শেখ হাসিনা যেন ‘উড়ে এসে জুড়ে বসা’। তিনি শুধু শেখ মুজিবের কন্যা হওয়াতেই ক্ষমতায় এসেছেন। তাঁর নিজের কোনো রাজনৈতিক ভিত্তি বা ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তা ছিল না। তিনি ‘বাপের বেটি’ হিসেবে নেতৃত্বে এসেছেন, কিন্তু শেখ মুজিবের চিন্তা-চেতনার কিছুই তিনি ধারণ করেননি। বরং হাসিনা দেশের রাজনৈতিক মূল্যবোধকে ধ্বংস করেছেন।
বদরুদ্দীন উমর আরও বলেন, যখন শেখ হাসিনা বলেন—তাঁর পিতা মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছেন, তখন সেটি ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বিকৃতি বলে মনে হয়। কিন্তু তাঁর শাসনামলে এই মিথ্যার বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে পারেনি। যেসব তথাকথিত ‘বুদ্ধিজীবী’ তার শাসনামলে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে, তারাই এই বিকৃত ইতিহাসের বাহক। তা ছাড়া শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এমন একটা ব্যবস্থা দাঁড়িয়ে গিয়েছিল, যেখানে শেখ মুজিবুর রহমানকে পাঠ্যবই থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের থিসিস পর্যন্ত এককভাবে উপস্থাপন করা হয়। স্কুলের পাঠ্যসূচি থেকে শুরু করে সমস্ত শিক্ষা ও গবেষণায় শেখ মুজিবকে এমনভাবে স্থাপন করা হয়েছে যেন তিনিই বাংলাদেশের একমাত্র ইতিহাস। এই অবস্থায় মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যে কোনো গণতান্ত্রিক চর্চা—সে ইতিহাস হোক, মতামত হোক, গবেষণা হোক—সবই দমন করা হয়েছে। কেউ ভিন্ন কিছু বললে, তাঁর চাকরি যায়, উন্নতি বন্ধ হয়, হয়রানি হয়—কখনো কখনো জীবন পর্যন্ত ঝুঁকির মধ্যে পড়ে। সব মিলিয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ মুজিবের বর্ণনায় ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা’ একটি দলীয়, ক্ষমতাকেন্দ্রিক, একমুখী বয়ানে পরিণত হয়েছে—যা গণতন্ত্র, সত্য ও ইতিহাসের বিপরীতে দাঁড়িয়েছে।
সংখ্যালঘুদের নির্যাতনের বিষয়ে বদরুদ্দীন উমর বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের আরেকটি দমনমূলক কৌশল ছিল সাম্প্রদায়িকতার বয়ানকে ব্যবহার করা। আওয়ামী লীগ সরাসরি ধর্মীয় বৈষম্যের রাজনীতি খুব বেশি করেনি বটে, কিন্তু ১৯৭২ সাল থেকেই হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর, সম্পত্তি লুটপাট শুরু হয়েছে এবং এসব কাজ করেছে মূলত আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরাই। জামায়াতে ইসলামীর বা বিএনপির লোকজন এভাবে হিন্দুদের সম্পত্তি দখল করেনি, যতটা করেছে আওয়ামী লীগের নেতারা। পাকিস্তানি আমলে যে ‘শত্রু সম্পত্তি আইন’ ছিল, স্বাধীনতার পর সেটি বাতিল করা উচিত ছিল। কিন্তু তা না করে, আওয়ামী লীগ সরকার এটিকে ‘অর্পিত সম্পত্তি আইন’ নামে রূপান্তর করে বহাল রাখে। যার ফলে হিন্দু সম্প্রদায়ের সম্পত্তি লুটপাট অব্যাহত থাকে। ধর্মনিরপেক্ষতা দাবি করলেও অর্থনৈতিক স্তরে আওয়ামী লীগ ছিল চরম সাম্প্রদায়িক—হিন্দুদের অর্থ-সম্পদ দখল করাকে তারা একটি কাঠামোগত ও ব্যবস্থাগত প্রক্রিয়া হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে।
তিনি বলেন, রাজনৈতিকভাবে আওয়ামী লীগ সাম্প্রদায়িকতা খুব বেশি ব্যবহার না করলেও, অর্থনৈতিক লুটপাটের হাতিয়ার হিসেবে এটি ব্যবহার করেছে। সমাজের প্রভাবশালী এলিট, সিভিল সোসাইটি, আমলাতন্ত্র, বিশ্ববিদ্যালয়, ব্যবসায়ী মহল—সবাইকে দমন ও পুরস্কারের নীতিতে নিয়ন্ত্রণ করেছে। যারা সরকারের অনুগত তাঁদের দেওয়া হয়েছে সুযোগ-সুবিধা। যারা বিরোধিতা করেছে, তাঁদের করা হয়েছে বরখাস্ত, বঞ্চিত, এমনকি কারাবন্দী। শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসন এমন একপর্যায়ে পৌঁছেছে যেখানে রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণে দুর্নীতি সাংগঠনিক নীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। দলীয় নেতা কর্মী ও পরিবারের সদস্যরা হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করে বিদেশে পাচার করেছে—যার স্কেল ব্রিটিশ বা পাকিস্তান আমলেও দেখা যায়নি। এর ফলে প্রশাসন পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। প্রশাসনিক কাঠামো যে ধ্বংস হয়ে গেছে, তার প্রমাণ ২০২৪ সালে স্পষ্ট হয়ে গেছে। এমনকি আগস্টের শুরুতে সামরিক বাহিনী পর্যন্ত শেখ হাসিনার নির্দেশে গুলি চালাতে অস্বীকৃতি জানায়—কারণ তারা বুঝে গিয়েছিল যে, এই সরকারের দিন শেষ।
তিনি আরও বলেন, এখনো প্রশাসন, বিশ্ববিদ্যালয়, মিডিয়া ও বুদ্ধিজীবী মহলে আওয়ামী লীগের অনুগতরা রয়ে গেছে। তারা খোলাখুলি না বললেও নীরবভাবে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। তাদের কেউ কেউ ‘কোনো দল নিষিদ্ধ করা উচিত নয়’ বললেও বাস্তবতা হলো, আওয়ামী লীগ এখন আর একটি সাধারণ রাজনৈতিক দল নয়। এটি একপ্রকার ভারতীয় স্ট্র্যাটেজিক এজেন্টের মতো কাজ করছে। শেখ হাসিনার সরকারের শাসন শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ভারতের স্বার্থরক্ষায় নিয়োজিত ছিল। শেখ মুজিব ভারতপন্থী হলেও তিনি ভারতের নির্দেশে চলতেন না। কিন্তু শেখ হাসিনার শাসনব্যবস্থা ছিল সম্পূর্ণভাবে ভারতের নকশায় নির্মিত। এই অবস্থায়, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা রাজনৈতিক নীতির প্রশ্ন নয় বরং জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্নে পরিণত হয়েছে। এ দলটির কার্যক্রম বাংলাদেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক স্বার্থের বিরুদ্ধে। এটি একটি ‘ভারত ঘেঁষা’ কাঠামোগত এজেন্ট হিসেবে কাজ করছে, যার ফলে রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ বিপন্ন হয়ে পড়েছে।

সদ্য প্রয়াত লেখক ও গবেষক বদরুদ্দীন উমর বলেছেন, শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে এমনভাবে ব্যবহার করেছেন, যেন সেটি তার পারিবারিক সম্পত্তি। এই চেতনা একসময় কাজ করেছে—মানুষ বিভ্রান্ত হয়েছে, আবেগে ভেসেছে। কিন্তু পরে দেখা গেছে, তার দমননীতি ও নির্যাতনের ফলে এই চেতনা ধরা পড়ে গেছে। এখন তিনি জনগণ থেকে শতভাগ বিচ্ছিন্ন।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত কর্মকর্তার কাছে দেওয়া জবানবন্দিতে এসব কথা বলেছেন বদরুদ্দীন উমর। প্রসিকিউশন সূত্র জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় সারা দেশে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ট্রাইব্যুনালে গিয়ে সাক্ষ্য দেওয়ার কথা ছিল তাঁর। তবে ট্রাইব্যুনালে গিয়ে সাক্ষ্য দেওয়ার আগেই রোববার সকালে মারা যান তিনি। তাঁর সাক্ষ্যের বিষয়ে প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম রোববার সাংবাদিকদের বলেন, ট্রাইব্যুনাল আইনের ১৯(২) ধারা অনুযায়ী কোনো সাক্ষী তদন্ত কর্মকর্তার কাছে সাক্ষ্য দিয়ে মারা গেলে প্রসিকিউশনের আবেদনে ট্রাইব্যুনাল তা গ্রহণ করতে পারেন।
বদরুদ্দীন উমর তদন্ত কর্মকর্তার কাছে জবানবন্দিতে বলেছেন, শেখ হাসিনার শাসনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আড়ালে কর্তৃত্ববাদী শাসন আর লুটপাট। এই যে ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা’ বলা হয়, সেটি নিয়ে আমি নিজেও নিশ্চিত না—এই কথাটি আসলে কী বোঝায়। ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা’ বলে সবাই বলে যাচ্ছে, কিন্তু এই চেতনার প্রকৃত অর্থ কী, তা কখনো স্পষ্ট করা হয়নি। যদি চেতনা বলতে বোঝানো হয়, ১৯৭১ সালে মানুষ কী স্বপ্ন দেখেছিল, কী পেতে চেয়েছিল, তাহলে বলা যায়—সাধারণ মানুষের চেতনা আর আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের চেতনার মধ্যে কোনো মিল ছিল না। সাধারণ মানুষ চেয়েছিল দু’বেলা খেতে, নিরাপদ জীবন, একটা সম্মানজনক চাকরি, আর একটু নিরাপত্তা। কিন্তু আওয়ামী লীগের লোকজন ভাবছিল, কীভাবে তারা সুযোগ নিয়ে সম্পদ বানাবে, ক্ষমতা কুক্ষিগত করবে।
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে যারা বাস্তবে লড়াই করেছিল, তারা ছিল সাধারণ ছাত্র, কৃষক-শ্রমিকের সন্তান, মধ্যবিত্ত তরুণেরা। আওয়ামী লীগের এমপি-মন্ত্রী বা ছাত্রনেতাদের কারও যুদ্ধক্ষেত্রে কোনো ভূমিকা ছিল না। তাদের মধ্যে অনেকেই তখন পলায়নপর ছিল। তাহলে প্রশ্ন হলো—‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা’ বলতে কার চেতনার কথা বোঝানো হচ্ছে? শেখ হাসিনা যখন এটি উচ্চারণ করেন, তখন তিনি এমনভাবে বলেন যেন তাঁর চেতনা আর জনগণের চেতনা একই। কিন্তু বাস্তবে তাঁর ‘চেতনা’ জনগণের আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে কোনো সম্পর্ক রাখে না। বরং এটা এক ধরনের দলীয় রেটোরিক, যার মাধ্যমে তিনি জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছেন। তিনি এই মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গণতান্ত্রিক চর্চার কোনো সুযোগ দেননি। শেখ হাসিনার মুক্তিযুদ্ধের বয়ানে শেখ মুজিবুর রহমানই মুক্তির একমাত্র পুরুষ, একমাত্র নেতা—এইরকম একটা ‘ঐতিহাসিক মিথ’ প্রতিষ্ঠা করেছেন। অথচ বাস্তবতা হলো, ২৫ মার্চ ১৯৭১-এ শেখ মুজিব রাজনৈতিকভাবে ব্যর্থ হয়ে পড়েন এবং পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানে বন্দী ছিলেন এবং সেই নয় মাস যুদ্ধ সম্পর্কে প্রায় কিছুই জানতেন না।
বদরুদ্দীন উমর বলেন, যদি একটি সত্যিকারের নিরপেক্ষ নির্বাচন হতো, তাহলে আওয়ামী লীগ কয়টি আসন পেত তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। শেখ হাসিনা ‘চেতনা’ দিয়ে এক ধরনের রাজনৈতিক জমিদারি কায়েম করেছেন। মুক্তিযুদ্ধকে কংক্রিটাইজ বা বাস্তবায়িত করার কোনো চেষ্টা তিনি করেননি। তার জন্য এটি শুধু একটি রেটোরিকাল অস্ত্র। এত বেপরোয়া হয়ে তো বাংলাদেশে আর কাউকে এইভাবে কাজ করতে দেখা যায় না। শেখ মুজিব বেপরোয়া ছিলেন ঠিকই, কিন্তু তার শাসন শৈলী ও শেখ হাসিনার শাসন শৈলীর মধ্যে মৌলিক পার্থক্য আছে। কারণ হাজার হলেও, শেখ মুজিব জনগণের মধ্য থেকে উঠে এসেছিলেন, আন্দোলন-সংগ্রামের ভেতর দিয়ে রাজনীতিতে এসেছিলেন। দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক পরিপক্বতা তাঁর ছিল। আর শেখ হাসিনা যেন ‘উড়ে এসে জুড়ে বসা’। তিনি শুধু শেখ মুজিবের কন্যা হওয়াতেই ক্ষমতায় এসেছেন। তাঁর নিজের কোনো রাজনৈতিক ভিত্তি বা ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তা ছিল না। তিনি ‘বাপের বেটি’ হিসেবে নেতৃত্বে এসেছেন, কিন্তু শেখ মুজিবের চিন্তা-চেতনার কিছুই তিনি ধারণ করেননি। বরং হাসিনা দেশের রাজনৈতিক মূল্যবোধকে ধ্বংস করেছেন।
বদরুদ্দীন উমর আরও বলেন, যখন শেখ হাসিনা বলেন—তাঁর পিতা মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছেন, তখন সেটি ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বিকৃতি বলে মনে হয়। কিন্তু তাঁর শাসনামলে এই মিথ্যার বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে পারেনি। যেসব তথাকথিত ‘বুদ্ধিজীবী’ তার শাসনামলে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে, তারাই এই বিকৃত ইতিহাসের বাহক। তা ছাড়া শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এমন একটা ব্যবস্থা দাঁড়িয়ে গিয়েছিল, যেখানে শেখ মুজিবুর রহমানকে পাঠ্যবই থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের থিসিস পর্যন্ত এককভাবে উপস্থাপন করা হয়। স্কুলের পাঠ্যসূচি থেকে শুরু করে সমস্ত শিক্ষা ও গবেষণায় শেখ মুজিবকে এমনভাবে স্থাপন করা হয়েছে যেন তিনিই বাংলাদেশের একমাত্র ইতিহাস। এই অবস্থায় মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যে কোনো গণতান্ত্রিক চর্চা—সে ইতিহাস হোক, মতামত হোক, গবেষণা হোক—সবই দমন করা হয়েছে। কেউ ভিন্ন কিছু বললে, তাঁর চাকরি যায়, উন্নতি বন্ধ হয়, হয়রানি হয়—কখনো কখনো জীবন পর্যন্ত ঝুঁকির মধ্যে পড়ে। সব মিলিয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ মুজিবের বর্ণনায় ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা’ একটি দলীয়, ক্ষমতাকেন্দ্রিক, একমুখী বয়ানে পরিণত হয়েছে—যা গণতন্ত্র, সত্য ও ইতিহাসের বিপরীতে দাঁড়িয়েছে।
সংখ্যালঘুদের নির্যাতনের বিষয়ে বদরুদ্দীন উমর বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের আরেকটি দমনমূলক কৌশল ছিল সাম্প্রদায়িকতার বয়ানকে ব্যবহার করা। আওয়ামী লীগ সরাসরি ধর্মীয় বৈষম্যের রাজনীতি খুব বেশি করেনি বটে, কিন্তু ১৯৭২ সাল থেকেই হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর, সম্পত্তি লুটপাট শুরু হয়েছে এবং এসব কাজ করেছে মূলত আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরাই। জামায়াতে ইসলামীর বা বিএনপির লোকজন এভাবে হিন্দুদের সম্পত্তি দখল করেনি, যতটা করেছে আওয়ামী লীগের নেতারা। পাকিস্তানি আমলে যে ‘শত্রু সম্পত্তি আইন’ ছিল, স্বাধীনতার পর সেটি বাতিল করা উচিত ছিল। কিন্তু তা না করে, আওয়ামী লীগ সরকার এটিকে ‘অর্পিত সম্পত্তি আইন’ নামে রূপান্তর করে বহাল রাখে। যার ফলে হিন্দু সম্প্রদায়ের সম্পত্তি লুটপাট অব্যাহত থাকে। ধর্মনিরপেক্ষতা দাবি করলেও অর্থনৈতিক স্তরে আওয়ামী লীগ ছিল চরম সাম্প্রদায়িক—হিন্দুদের অর্থ-সম্পদ দখল করাকে তারা একটি কাঠামোগত ও ব্যবস্থাগত প্রক্রিয়া হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে।
তিনি বলেন, রাজনৈতিকভাবে আওয়ামী লীগ সাম্প্রদায়িকতা খুব বেশি ব্যবহার না করলেও, অর্থনৈতিক লুটপাটের হাতিয়ার হিসেবে এটি ব্যবহার করেছে। সমাজের প্রভাবশালী এলিট, সিভিল সোসাইটি, আমলাতন্ত্র, বিশ্ববিদ্যালয়, ব্যবসায়ী মহল—সবাইকে দমন ও পুরস্কারের নীতিতে নিয়ন্ত্রণ করেছে। যারা সরকারের অনুগত তাঁদের দেওয়া হয়েছে সুযোগ-সুবিধা। যারা বিরোধিতা করেছে, তাঁদের করা হয়েছে বরখাস্ত, বঞ্চিত, এমনকি কারাবন্দী। শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসন এমন একপর্যায়ে পৌঁছেছে যেখানে রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণে দুর্নীতি সাংগঠনিক নীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। দলীয় নেতা কর্মী ও পরিবারের সদস্যরা হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করে বিদেশে পাচার করেছে—যার স্কেল ব্রিটিশ বা পাকিস্তান আমলেও দেখা যায়নি। এর ফলে প্রশাসন পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। প্রশাসনিক কাঠামো যে ধ্বংস হয়ে গেছে, তার প্রমাণ ২০২৪ সালে স্পষ্ট হয়ে গেছে। এমনকি আগস্টের শুরুতে সামরিক বাহিনী পর্যন্ত শেখ হাসিনার নির্দেশে গুলি চালাতে অস্বীকৃতি জানায়—কারণ তারা বুঝে গিয়েছিল যে, এই সরকারের দিন শেষ।
তিনি আরও বলেন, এখনো প্রশাসন, বিশ্ববিদ্যালয়, মিডিয়া ও বুদ্ধিজীবী মহলে আওয়ামী লীগের অনুগতরা রয়ে গেছে। তারা খোলাখুলি না বললেও নীরবভাবে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। তাদের কেউ কেউ ‘কোনো দল নিষিদ্ধ করা উচিত নয়’ বললেও বাস্তবতা হলো, আওয়ামী লীগ এখন আর একটি সাধারণ রাজনৈতিক দল নয়। এটি একপ্রকার ভারতীয় স্ট্র্যাটেজিক এজেন্টের মতো কাজ করছে। শেখ হাসিনার সরকারের শাসন শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ভারতের স্বার্থরক্ষায় নিয়োজিত ছিল। শেখ মুজিব ভারতপন্থী হলেও তিনি ভারতের নির্দেশে চলতেন না। কিন্তু শেখ হাসিনার শাসনব্যবস্থা ছিল সম্পূর্ণভাবে ভারতের নকশায় নির্মিত। এই অবস্থায়, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা রাজনৈতিক নীতির প্রশ্ন নয় বরং জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্নে পরিণত হয়েছে। এ দলটির কার্যক্রম বাংলাদেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক স্বার্থের বিরুদ্ধে। এটি একটি ‘ভারত ঘেঁষা’ কাঠামোগত এজেন্ট হিসেবে কাজ করছে, যার ফলে রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ বিপন্ন হয়ে পড়েছে।

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতৃত্বে তিনটি রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে সদ্য গঠিত ‘গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট’-এর পরিধি আরও বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। এ জন্য ডান ও বাম ঘরানার বেশ কয়েকটি দলের সঙ্গে চলছে আলোচনা। জেএসডি (জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল), নাগরিক ঐক্য, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের একাংশ এবং গণঅধিকার পরিষদের একাংশ গণ
২ ঘণ্টা আগে
চব্বিশের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান দেশের রাজনৈতিক চালচিত্র অনেকটাই বদলে দিয়েছে। পাল্টে যাওয়া দৃশ্যপটের একটি চিত্র দীর্ঘদিনের বন্ধু বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর এখনকার দুই মেরুতে অবস্থান। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আওয়ামী লীগবিহীন ভোটের মাঠে দল দুটি এখন একে অপরের মূল প্রতিপক্ষ।
২ ঘণ্টা আগে
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নিতে ভাড়া করা এয়ার অ্যাম্বুলেন্স আজ মঙ্গলবার ঢাকায় আসছে না। তাঁকে আপাতত লন্ডন নেওয়া হচ্ছে না। তাঁকে কবে নাগাদ চিকিৎসার জন্য লন্ডন নেওয়া হবে, সে বিষয়ে কিছু জানা যায়নি।
২ ঘণ্টা আগে
বরিশালে বিএনপি নেতা–কর্মীদের হাতে হেনস্তার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ। আজ সোমবার বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলনে তিনি দাবি করেন, বিএনপির একটি ক্ষুদ্রাংশের ‘অভদ্র আচরণে একদিনেই সারা দেশে বিএনপির কমপক্ষে ১০ লাখ ভোট কমে
৬ ঘণ্টা আগেতানিম আহমেদ, ঢাকা

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতৃত্বে তিনটি রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে সদ্য গঠিত ‘গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট’-এর পরিধি আরও বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। এ জন্য ডান ও বাম ঘরানার বেশ কয়েকটি দলের সঙ্গে চলছে আলোচনা। জেএসডি (জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল), নাগরিক ঐক্য, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের একাংশ এবং গণঅধিকার পরিষদের একাংশ গণতান্ত্রিক সংস্কার জোটের সঙ্গী হতে পারে। আবার গণতন্ত্র মঞ্চে থাকা পাঁচটি দলেরই এনসিপির জোটসঙ্গী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে আলোচনা আছে।
এ বিষয়ে জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তাদের (এনসিপির নেতৃত্বাধীন জোট) সঙ্গে যোগাযোগ আছে। তাদের প্রতি শুভকামনা আছে। আলাপ-আলোচনা ছিল। কিন্তু আমরা এখনো গণতন্ত্র মঞ্চটাকে রক্ষা করছি।’
‘গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট’-এর ঘোষণা দেওয়া হয়েছে গত রোববার। এনসিপি ছাড়া এই জোটের অন্য দুই দল হলো আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি) এবং রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন। জোট ঘোষণার সময় এনসিপির আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম বলেন, আরও কয়েকটি দল এই জোটে যুক্ত হতে পারে। তাদের সঙ্গে আলোচনা চলছে।
গণতান্ত্রিক সংস্কার জোটের নেতারা জানিয়েছেন, জোটের ঘোষণাপত্র ও সংসদীয় আসনের প্রার্থিতা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন তাঁরা। তবে একই সঙ্গে জোটের কলেবর বাড়ানোর বিষয়েও আলোচনা চলছে। জোট গঠন নিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চ, গণঅধিকার পরিষদ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামসহ (একাংশ) একাধিক দলের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে গণতন্ত্র মঞ্চের গণসংহতি আন্দোলনসহ দু-একটি দল বিএনপির সঙ্গে আসন সমঝোতা করে বের হয়ে যেতে পারে। অন্যদিকে বিএনপির সঙ্গে সম্মানজনক আসন সমঝোতা না হলে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি, নাগরিক ঐক্যসহ তিনটি দল নিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চ নতুন জোটে যোগ দিতে পারে।
জোটের এক নেতা বলেন, ‘গণতন্ত্র মঞ্চ, গণঅধিকার পরিষদ ছাড়াও জামায়াতের নেতৃত্বে থাকা ৮ দলের জোটের বাইরে থাকা ইসলামপন্থী দলের সঙ্গে জোট গঠনের বিষয়ে আলাপ-আলোচনা চলছে। একই সঙ্গে আমরা বামপন্থী একাধিক দলের সঙ্গেও আলোচনা করছি। আশা করি, কয়েক দিনের মধ্যে বিষয়টি চূড়ান্ত হতে পারে।’
এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেন, ‘সংস্কারের পক্ষে থেকে দেশকে এগিয়ে নিতে চায়, এমন কয়েকটি দলের সঙ্গে আমাদের আলোচনা চলছে। ইসলামপন্থী দু-একটি দলও এই আলোচনায় রয়েছে।’
রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দিদার ভূঁইয়া বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমরা জোট নিয়ে সাধারণ জনগণের মধ্যে এবং রাজনৈতিক পরিসরেও খুব ভালো সাড়া পাচ্ছি। গণতান্ত্রিক শক্তি এবং জুলাইয়ের পক্ষের শক্তির যে দলগুলো আছে, তাদেরকে নিয়ে আমরা এই জোটটা নিয়ে আরও এগোতে চাই। তাদের অনেকের সঙ্গেই আগে থেকে কথা চলছিল এবং রেসপন্স বেশ ভালো।’
রাজনীতিসংশ্লিষ্টদের মধ্যে গুঞ্জন রয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকারে থাকা দুজন ছাত্র উপদেষ্টার মধ্যে একজন চলতি সপ্তাহেই পদত্যাগ করে গণঅধিকার পরিষদ বা বিএনপিতে যোগ দিতে পারেন। তিনি কোন দলে যোগ দেবেন, তার ওপরেও গণতান্ত্রিক সংস্কার জোটে নতুন করে কোন কোন দল যুক্ত হবে—সে বিষয়টি নির্ভর করছে।
গণতান্ত্রিক সংস্কার জোটের একটি দলের শীর্ষ নেতা বলেন, ‘জোট গঠনের সঙ্গে নির্বাচনে কে কোন আসনে, কোন দলের প্রার্থী হবেন—সে বিষয়টিও জড়িত। তাই আমাদের জোটে নতুন করে কোন দল যুক্ত হবে, সেটা দেখতে আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।’

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতৃত্বে তিনটি রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে সদ্য গঠিত ‘গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট’-এর পরিধি আরও বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। এ জন্য ডান ও বাম ঘরানার বেশ কয়েকটি দলের সঙ্গে চলছে আলোচনা। জেএসডি (জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল), নাগরিক ঐক্য, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের একাংশ এবং গণঅধিকার পরিষদের একাংশ গণতান্ত্রিক সংস্কার জোটের সঙ্গী হতে পারে। আবার গণতন্ত্র মঞ্চে থাকা পাঁচটি দলেরই এনসিপির জোটসঙ্গী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে আলোচনা আছে।
এ বিষয়ে জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তাদের (এনসিপির নেতৃত্বাধীন জোট) সঙ্গে যোগাযোগ আছে। তাদের প্রতি শুভকামনা আছে। আলাপ-আলোচনা ছিল। কিন্তু আমরা এখনো গণতন্ত্র মঞ্চটাকে রক্ষা করছি।’
‘গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট’-এর ঘোষণা দেওয়া হয়েছে গত রোববার। এনসিপি ছাড়া এই জোটের অন্য দুই দল হলো আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি) এবং রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন। জোট ঘোষণার সময় এনসিপির আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম বলেন, আরও কয়েকটি দল এই জোটে যুক্ত হতে পারে। তাদের সঙ্গে আলোচনা চলছে।
গণতান্ত্রিক সংস্কার জোটের নেতারা জানিয়েছেন, জোটের ঘোষণাপত্র ও সংসদীয় আসনের প্রার্থিতা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন তাঁরা। তবে একই সঙ্গে জোটের কলেবর বাড়ানোর বিষয়েও আলোচনা চলছে। জোট গঠন নিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চ, গণঅধিকার পরিষদ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামসহ (একাংশ) একাধিক দলের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে গণতন্ত্র মঞ্চের গণসংহতি আন্দোলনসহ দু-একটি দল বিএনপির সঙ্গে আসন সমঝোতা করে বের হয়ে যেতে পারে। অন্যদিকে বিএনপির সঙ্গে সম্মানজনক আসন সমঝোতা না হলে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি, নাগরিক ঐক্যসহ তিনটি দল নিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চ নতুন জোটে যোগ দিতে পারে।
জোটের এক নেতা বলেন, ‘গণতন্ত্র মঞ্চ, গণঅধিকার পরিষদ ছাড়াও জামায়াতের নেতৃত্বে থাকা ৮ দলের জোটের বাইরে থাকা ইসলামপন্থী দলের সঙ্গে জোট গঠনের বিষয়ে আলাপ-আলোচনা চলছে। একই সঙ্গে আমরা বামপন্থী একাধিক দলের সঙ্গেও আলোচনা করছি। আশা করি, কয়েক দিনের মধ্যে বিষয়টি চূড়ান্ত হতে পারে।’
এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেন, ‘সংস্কারের পক্ষে থেকে দেশকে এগিয়ে নিতে চায়, এমন কয়েকটি দলের সঙ্গে আমাদের আলোচনা চলছে। ইসলামপন্থী দু-একটি দলও এই আলোচনায় রয়েছে।’
রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দিদার ভূঁইয়া বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমরা জোট নিয়ে সাধারণ জনগণের মধ্যে এবং রাজনৈতিক পরিসরেও খুব ভালো সাড়া পাচ্ছি। গণতান্ত্রিক শক্তি এবং জুলাইয়ের পক্ষের শক্তির যে দলগুলো আছে, তাদেরকে নিয়ে আমরা এই জোটটা নিয়ে আরও এগোতে চাই। তাদের অনেকের সঙ্গেই আগে থেকে কথা চলছিল এবং রেসপন্স বেশ ভালো।’
রাজনীতিসংশ্লিষ্টদের মধ্যে গুঞ্জন রয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকারে থাকা দুজন ছাত্র উপদেষ্টার মধ্যে একজন চলতি সপ্তাহেই পদত্যাগ করে গণঅধিকার পরিষদ বা বিএনপিতে যোগ দিতে পারেন। তিনি কোন দলে যোগ দেবেন, তার ওপরেও গণতান্ত্রিক সংস্কার জোটে নতুন করে কোন কোন দল যুক্ত হবে—সে বিষয়টি নির্ভর করছে।
গণতান্ত্রিক সংস্কার জোটের একটি দলের শীর্ষ নেতা বলেন, ‘জোট গঠনের সঙ্গে নির্বাচনে কে কোন আসনে, কোন দলের প্রার্থী হবেন—সে বিষয়টিও জড়িত। তাই আমাদের জোটে নতুন করে কোন দল যুক্ত হবে, সেটা দেখতে আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।’

সদ্য প্রয়াত লেখক ও গবেষক বদরুদ্দীন উমর বলেছেন, শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে এমনভাবে ব্যবহার করেছেন, যেন সেটি তার পারিবারিক সম্পত্তি। এই চেতনা একসময় কাজ করেছে—মানুষ বিভ্রান্ত হয়েছে, আবেগে ভেসেছে। কিন্তু পরে দেখা গেছে, তার দমননীতি ও নির্যাতনের ফলে এই চেতনা ধরা পড়ে গেছে।
০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
চব্বিশের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান দেশের রাজনৈতিক চালচিত্র অনেকটাই বদলে দিয়েছে। পাল্টে যাওয়া দৃশ্যপটের একটি চিত্র দীর্ঘদিনের বন্ধু বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর এখনকার দুই মেরুতে অবস্থান। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আওয়ামী লীগবিহীন ভোটের মাঠে দল দুটি এখন একে অপরের মূল প্রতিপক্ষ।
২ ঘণ্টা আগে
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নিতে ভাড়া করা এয়ার অ্যাম্বুলেন্স আজ মঙ্গলবার ঢাকায় আসছে না। তাঁকে আপাতত লন্ডন নেওয়া হচ্ছে না। তাঁকে কবে নাগাদ চিকিৎসার জন্য লন্ডন নেওয়া হবে, সে বিষয়ে কিছু জানা যায়নি।
২ ঘণ্টা আগে
বরিশালে বিএনপি নেতা–কর্মীদের হাতে হেনস্তার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ। আজ সোমবার বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলনে তিনি দাবি করেন, বিএনপির একটি ক্ষুদ্রাংশের ‘অভদ্র আচরণে একদিনেই সারা দেশে বিএনপির কমপক্ষে ১০ লাখ ভোট কমে
৬ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

চব্বিশের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান দেশের রাজনৈতিক চালচিত্র অনেকটাই বদলে দিয়েছে। পাল্টে যাওয়া দৃশ্যপটের একটি চিত্র দীর্ঘদিনের বন্ধু বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর এখনকার দুই মেরুতে অবস্থান। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আওয়ামী লীগবিহীন ভোটের মাঠে দল দুটি এখন একে অপরের মূল প্রতিপক্ষ। নির্বাচনে জয়ের হাতিয়ার হিসেবে প্রতিপক্ষের দুর্বলতা ও স্পর্শকাতর বিষয়গুলো জোরেশোরে সামনে আনছে তারা। এরই অংশ হিসেবে দুই পক্ষের জমে ওঠা কথার যুদ্ধে স্থান পেয়েছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ।
২০২৬-এর ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। সব ঠিক থাকলে চলতি সপ্তাহেই ঘোষণা করা হবে নির্বাচনের তফসিল, অর্থাৎ বিশদ সময়সূচি। টেলিভিশনের জন্য আগামীকাল বুধবার তফসিলের বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের ভাষণ রেকর্ড করা হবে বলে গতকাল সোমবার জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি) কর্তৃপক্ষ।
তফসিল ঘনিয়ে আসায় প্রকাশ্যে-নেপথ্যে চলছে দলগুলোর জোটের তৎপরতা। ক্রমেই জমে উঠেছে অনানুষ্ঠানিক নির্বাচনী প্রচারণা। দলগুলোর নেতারা দেশজুড়ে সফর করছেন, জনসভায় অংশ নিচ্ছেন। এই প্রচারে নিজেদের কৃতিত্ব আর অঙ্গীকারের বয়ানের পাশাপাশি দলগুলো পরস্পরের দোষ চিহ্নিত করে সমালোচনার তির ছুড়ছে। চেষ্টা করছে জনসমর্থন নিজের পক্ষে টানতে।
বাংলাদেশের ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকার জন্য বিতর্কিত জামায়াতে ইসলামী। দলটি তখন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পক্ষে অবস্থান নিয়েছিল। সেই জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে নির্বাচনের মৌসুমে জনসমর্থন সৃষ্টির প্রচার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাদের অতীতের ঘনিষ্ঠ মিত্র বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। গত রোববার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে এক অনুষ্ঠানে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে কোনো দলের নাম উল্লেখ না করে তিনি বলেন, ‘কিছু মানুষ বা কোনো কোনো গোষ্ঠীকে ইদানীং বলতে শুনছি, “অমুককে দেখলাম, তমুককে দেখলাম, এবার তমুককে দেখুন”। তাদের তো দেশের মানুষ ১৯৭১ সালেই দেখেছে।’
২০২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানের পর থেকে শুরু হওয়া বিএনপি-জামায়াতের কথার যুদ্ধ তারেক রহমানের এ তির্যক মন্তব্যের মধ্য দিয়ে অনেকটাই তুঙ্গে উঠেছে বলে পর্যবেক্ষকদের ধারণা। অভ্যুত্থানের কিছুদিন পর থেকে আন্দোলনকালীন ঘনিষ্ঠতা বা সৌজন্য অনেকটাই পেছনে সরিয়ে রেখে বিএনপি ও জামায়াত একে অপরকে আক্রমণ করে কথা বলে আসছে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতন এবং তাদের ছোট-বড় নেতাদের নির্বিচার পলায়নের পর রাজধানীসহ দেশজুড়ে মাঠ ফাঁকা পেয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের দখল, চাঁদাবাজিতে লিপ্ত হওয়ার অভিযোগ ওঠে। তুলনামূলকভাবে জামায়াত বা অন্য দলের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ ওঠে বেশ কম। বিএনপি পরিস্থিতি সামাল দিতে কয়েক হাজার নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে বহিষ্কারাদেশসহ বিভিন্ন ব্যবস্থা নেয়। বিএনপির বিরুদ্ধে অতীতের আওয়ামী লীগের মতোই দখল-চাঁদাবাজির অভিযোগকে জামায়াত তাদের প্রচারের প্রধান অস্ত্র করে তোলে। জামায়াতের নেতারা জনসভা, সেমিনার, টক শো, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে বিএনপিকে ঘায়েলের তৎপরতা চালাচ্ছেন। অন্যদিকে বিএনপিও বসে নেই। জামায়াতের নেতা-কর্মীদের অন্যায়-অপকর্মের ঘটনা দেখলে সেগুলো সামনে আনছে তারা। এরই ধারাবাহিকতায় ভোটের মাঠে জামায়াতকে কাবু করতে নির্বাচনী প্রচারে দলটির মুক্তিযুদ্ধকালীন ভূমিকাকে এবার জোরেশোরে সামনে এনেছে বিএনপি।
শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে একাত্তরে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করে জাতিকে অনুপ্রাণিত করা বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান পরবর্তীকালে বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেন। বিএনপি বরাবর দলের প্রতিষ্ঠাতাকে ‘স্বাধীনতার ঘোষক জিয়া’ হিসেবে তুলে ধরেছে। দলটির সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন বা ছিলেন আরও অনেক বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতাযুদ্ধে নেতৃত্ব দেওয়া খোদ আওয়ামী লীগের মতোই বিএনপিও ‘রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে’ জামায়াতের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। বস্তুত বিএনপি-জামায়াত মিত্রতা অনেক বেশি সময়ের। জামায়াতে ইসলামীকে সঙ্গে নিয়ে ২০০১ সালে জোট সরকার পর্যন্ত গঠন করেছিল বিএনপি। তবে রাজনৈতিক আবহের পরিবর্তনে সেই চিত্র আপাতত একেবারেই পাল্টে গেছে।
বিএনপির দায়িত্বশীল নেতাদের অভিযোগ, ভোটের মাঠে দলটিকে পরাজিত করতে জামায়াতের দিক থেকে নানা অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। ভোটার আকর্ষণ করতে ধর্মকেও ব্যবহার করা হচ্ছে। একই সঙ্গে জামায়াত একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধকে পুরোনো, বিভেদ সৃষ্টিকারী বিষয় বলে ভুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে।
স্পষ্টতই জামায়াতে ইসলামীকে ইঙ্গিত করে গতকাল সোমবার এক অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘একটি দল ধর্মের নামে ট্যাবলেট বিক্রি করে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করার পরিকল্পনা করছে। তাদেরকে জনগণ এরই মধ্যে চিনেছে। তাদের মুখোশ উন্মোচিত হয়েছে।’
সালাহউদ্দিন বলেন, ‘তারা (জামায়াতে ইসলামী) কেবলই বলছে যে এখানে একটু মার্কাতে ভোট দিলে তরতরাইয়া জান্নাতে যাবে। তার আগে ইহকালে কীভাবে চলব, এর কোনো বক্তব্য নাই।’
নির্বাচন মৌসুমে একাত্তরকে সামনে নিয়ে আসায় বিব্রত জামায়াতে ইসলামী। এ বিষয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বক্তব্যকে ভালোভাবে নিচ্ছেন না দলটির নেতারা। জামায়াতের নীতিনির্ধারকেরা বলেছেন, এত বড় দলের দায়িত্বশীল পর্যায় থেকে এমন ‘দায়িত্বহীন বক্তব্য’ প্রত্যাশিত নয়।
গতকাল সন্ধ্যায় এ প্রসঙ্গে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বক্তব্যকে দায়িত্বশীলতার পরিচয় বলে জনগণ মনে করে না। জনগণ মনে করে না, এটা সমীচীন কোনো বক্তব্য।’
মুক্তিযুদ্ধের সময়ে জামায়াতের বিতর্কিত অবস্থানের বিষয়টি ভোট এগিয়ে এলে প্রচারণার মাঠে আরও বেশি করে আলোচিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে দলের অবস্থান কী হবে, এমন প্রশ্নের জবাবে গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘সময় কথা বলবে। আমরা সেই সময়ের অপেক্ষা করি। তখন সামাল দেওয়ার বিষয়টি সবাই দেখবে।’
বিএনপি রাজনৈতিকভাবে হীনম্মন্যতায় ভুগে একাত্তরের বিষয় সামনে এনেছে বলেও মন্তব্য করেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল। তিনি বলেন, ‘এ ইস্যুটি পুরোনো হয়ে গেছে। বিষয়টি মীমাংসিত হয়ে গেছে। এখন নতুন করে বিষয়টি সামনে আনার অর্থই হচ্ছে, তারা রাজনৈতিক হীনম্মন্যতায় ভুগছে।’
কিছুদিন আগে যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে ‘১৯৪৭ থেকে শুরু করে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধসহ এখন পর্যন্ত’ করা যেকোনো অপরাধের জন্য ক্ষমা চেয়েছিলেন জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান।
বিজয় দিবস সামনে রেখে বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে দলটি ক্ষমা চাইবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে দলের পক্ষ থেকে একাধিকবার অবস্থান ব্যাখ্যা করা হয়েছিল। সর্বশেষ আমাদের আমির বলেছিলেন, শুধু একাত্তর না, ১৯৪৭ থেকে শুরু করে অদ্যাবধি কেউ আমাদের দ্বারা কষ্ট পেয়ে থাকলে, ত্রুটি-বিচ্যুতি হলে আমরা ক্ষমা চেয়েছি, ক্ষমা চাইতেই থাকব। আমরা মনে করি, বিষয়টি জাতির কাছে স্পষ্ট হয়েছে।’
আগামী নির্বাচনে একাত্তরের বিষয়টি সামনে এনে প্রতিপক্ষ খুব একটা সুবিধা করতে পারবে না বলে মনে করছেন জামায়াতের নেতারা। ভোটে এ নিয়ে জামায়াত কতটুকু চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে—এমন প্রশ্নের জবাবে এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেন, ফ্যাসিস্টদের মুখেও এ নিয়ে ফেনা উঠেছিল। জাতি তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, নিজস্ব ভোটব্যাংক প্রতিটি দলেরই আছে। এর বাইরে বড় সংখ্যার দোদুল্যমান ভোটার রয়েছেন, যাঁরা সিদ্ধান্তহীনতায় থাকেন। এমন ভোটারদের নিজেদের দিকে টানতে দলগুলোর কথার যুদ্ধ স্বাভাবিক একটি ব্যাপার। নির্বাচন মৌসুমে দলগুলোর বাগ্যুদ্ধে দোদুল্যমান ভোটারদের একটা বড় অংশ প্রভাবিত হয়। কিছুটা এরই অংশ হিসেবে ভোটের মাঠে মুক্তিযুদ্ধে জামায়াতের ভূমিকাকে সামনে এনেছে বিএনপি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সাব্বির আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ছাড়া রাজনীতির ময়দানে জামায়াত এখন বড় ফ্যাক্টর। জামায়াত যেহেতু বিপক্ষে চলে গেছে, সংগত কারণেই একাত্তর দিয়ে জামায়াতকে কোণঠাসা করার চেষ্টা করবে বিএনপি। এটা খুবই স্বাভাবিক।...অন্যদিকে একাত্তরের বিষয়ে জামায়াত সংযত না হয়ে উল্টো আরও ১০ ডিগ্রি ওপর দিয়ে কথা বলছে। একাত্তরকে অস্বীকার করা, একে-ওকে বিশ্বাসঘাতক বলা—এগুলো জামায়াতের জন্য খুবই নেতিবাচক হবে। মানুষ এগুলো ভালোভাবে নেবে না।’
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অধ্যাপক ড. আল মাসুদ হাসানুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিজয় নিশ্চিত করতে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জড়িয়ে পড়েছে দল দুটি। প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতেই তারা স্পর্শকাতর বিষয় সামনে আনছে।’

চব্বিশের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান দেশের রাজনৈতিক চালচিত্র অনেকটাই বদলে দিয়েছে। পাল্টে যাওয়া দৃশ্যপটের একটি চিত্র দীর্ঘদিনের বন্ধু বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর এখনকার দুই মেরুতে অবস্থান। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আওয়ামী লীগবিহীন ভোটের মাঠে দল দুটি এখন একে অপরের মূল প্রতিপক্ষ। নির্বাচনে জয়ের হাতিয়ার হিসেবে প্রতিপক্ষের দুর্বলতা ও স্পর্শকাতর বিষয়গুলো জোরেশোরে সামনে আনছে তারা। এরই অংশ হিসেবে দুই পক্ষের জমে ওঠা কথার যুদ্ধে স্থান পেয়েছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ।
২০২৬-এর ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। সব ঠিক থাকলে চলতি সপ্তাহেই ঘোষণা করা হবে নির্বাচনের তফসিল, অর্থাৎ বিশদ সময়সূচি। টেলিভিশনের জন্য আগামীকাল বুধবার তফসিলের বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের ভাষণ রেকর্ড করা হবে বলে গতকাল সোমবার জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি) কর্তৃপক্ষ।
তফসিল ঘনিয়ে আসায় প্রকাশ্যে-নেপথ্যে চলছে দলগুলোর জোটের তৎপরতা। ক্রমেই জমে উঠেছে অনানুষ্ঠানিক নির্বাচনী প্রচারণা। দলগুলোর নেতারা দেশজুড়ে সফর করছেন, জনসভায় অংশ নিচ্ছেন। এই প্রচারে নিজেদের কৃতিত্ব আর অঙ্গীকারের বয়ানের পাশাপাশি দলগুলো পরস্পরের দোষ চিহ্নিত করে সমালোচনার তির ছুড়ছে। চেষ্টা করছে জনসমর্থন নিজের পক্ষে টানতে।
বাংলাদেশের ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকার জন্য বিতর্কিত জামায়াতে ইসলামী। দলটি তখন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পক্ষে অবস্থান নিয়েছিল। সেই জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে নির্বাচনের মৌসুমে জনসমর্থন সৃষ্টির প্রচার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাদের অতীতের ঘনিষ্ঠ মিত্র বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। গত রোববার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে এক অনুষ্ঠানে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে কোনো দলের নাম উল্লেখ না করে তিনি বলেন, ‘কিছু মানুষ বা কোনো কোনো গোষ্ঠীকে ইদানীং বলতে শুনছি, “অমুককে দেখলাম, তমুককে দেখলাম, এবার তমুককে দেখুন”। তাদের তো দেশের মানুষ ১৯৭১ সালেই দেখেছে।’
২০২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানের পর থেকে শুরু হওয়া বিএনপি-জামায়াতের কথার যুদ্ধ তারেক রহমানের এ তির্যক মন্তব্যের মধ্য দিয়ে অনেকটাই তুঙ্গে উঠেছে বলে পর্যবেক্ষকদের ধারণা। অভ্যুত্থানের কিছুদিন পর থেকে আন্দোলনকালীন ঘনিষ্ঠতা বা সৌজন্য অনেকটাই পেছনে সরিয়ে রেখে বিএনপি ও জামায়াত একে অপরকে আক্রমণ করে কথা বলে আসছে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতন এবং তাদের ছোট-বড় নেতাদের নির্বিচার পলায়নের পর রাজধানীসহ দেশজুড়ে মাঠ ফাঁকা পেয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের দখল, চাঁদাবাজিতে লিপ্ত হওয়ার অভিযোগ ওঠে। তুলনামূলকভাবে জামায়াত বা অন্য দলের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ ওঠে বেশ কম। বিএনপি পরিস্থিতি সামাল দিতে কয়েক হাজার নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে বহিষ্কারাদেশসহ বিভিন্ন ব্যবস্থা নেয়। বিএনপির বিরুদ্ধে অতীতের আওয়ামী লীগের মতোই দখল-চাঁদাবাজির অভিযোগকে জামায়াত তাদের প্রচারের প্রধান অস্ত্র করে তোলে। জামায়াতের নেতারা জনসভা, সেমিনার, টক শো, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে বিএনপিকে ঘায়েলের তৎপরতা চালাচ্ছেন। অন্যদিকে বিএনপিও বসে নেই। জামায়াতের নেতা-কর্মীদের অন্যায়-অপকর্মের ঘটনা দেখলে সেগুলো সামনে আনছে তারা। এরই ধারাবাহিকতায় ভোটের মাঠে জামায়াতকে কাবু করতে নির্বাচনী প্রচারে দলটির মুক্তিযুদ্ধকালীন ভূমিকাকে এবার জোরেশোরে সামনে এনেছে বিএনপি।
শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে একাত্তরে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করে জাতিকে অনুপ্রাণিত করা বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান পরবর্তীকালে বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেন। বিএনপি বরাবর দলের প্রতিষ্ঠাতাকে ‘স্বাধীনতার ঘোষক জিয়া’ হিসেবে তুলে ধরেছে। দলটির সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন বা ছিলেন আরও অনেক বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতাযুদ্ধে নেতৃত্ব দেওয়া খোদ আওয়ামী লীগের মতোই বিএনপিও ‘রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে’ জামায়াতের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। বস্তুত বিএনপি-জামায়াত মিত্রতা অনেক বেশি সময়ের। জামায়াতে ইসলামীকে সঙ্গে নিয়ে ২০০১ সালে জোট সরকার পর্যন্ত গঠন করেছিল বিএনপি। তবে রাজনৈতিক আবহের পরিবর্তনে সেই চিত্র আপাতত একেবারেই পাল্টে গেছে।
বিএনপির দায়িত্বশীল নেতাদের অভিযোগ, ভোটের মাঠে দলটিকে পরাজিত করতে জামায়াতের দিক থেকে নানা অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। ভোটার আকর্ষণ করতে ধর্মকেও ব্যবহার করা হচ্ছে। একই সঙ্গে জামায়াত একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধকে পুরোনো, বিভেদ সৃষ্টিকারী বিষয় বলে ভুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে।
স্পষ্টতই জামায়াতে ইসলামীকে ইঙ্গিত করে গতকাল সোমবার এক অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘একটি দল ধর্মের নামে ট্যাবলেট বিক্রি করে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করার পরিকল্পনা করছে। তাদেরকে জনগণ এরই মধ্যে চিনেছে। তাদের মুখোশ উন্মোচিত হয়েছে।’
সালাহউদ্দিন বলেন, ‘তারা (জামায়াতে ইসলামী) কেবলই বলছে যে এখানে একটু মার্কাতে ভোট দিলে তরতরাইয়া জান্নাতে যাবে। তার আগে ইহকালে কীভাবে চলব, এর কোনো বক্তব্য নাই।’
নির্বাচন মৌসুমে একাত্তরকে সামনে নিয়ে আসায় বিব্রত জামায়াতে ইসলামী। এ বিষয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বক্তব্যকে ভালোভাবে নিচ্ছেন না দলটির নেতারা। জামায়াতের নীতিনির্ধারকেরা বলেছেন, এত বড় দলের দায়িত্বশীল পর্যায় থেকে এমন ‘দায়িত্বহীন বক্তব্য’ প্রত্যাশিত নয়।
গতকাল সন্ধ্যায় এ প্রসঙ্গে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বক্তব্যকে দায়িত্বশীলতার পরিচয় বলে জনগণ মনে করে না। জনগণ মনে করে না, এটা সমীচীন কোনো বক্তব্য।’
মুক্তিযুদ্ধের সময়ে জামায়াতের বিতর্কিত অবস্থানের বিষয়টি ভোট এগিয়ে এলে প্রচারণার মাঠে আরও বেশি করে আলোচিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে দলের অবস্থান কী হবে, এমন প্রশ্নের জবাবে গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘সময় কথা বলবে। আমরা সেই সময়ের অপেক্ষা করি। তখন সামাল দেওয়ার বিষয়টি সবাই দেখবে।’
বিএনপি রাজনৈতিকভাবে হীনম্মন্যতায় ভুগে একাত্তরের বিষয় সামনে এনেছে বলেও মন্তব্য করেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল। তিনি বলেন, ‘এ ইস্যুটি পুরোনো হয়ে গেছে। বিষয়টি মীমাংসিত হয়ে গেছে। এখন নতুন করে বিষয়টি সামনে আনার অর্থই হচ্ছে, তারা রাজনৈতিক হীনম্মন্যতায় ভুগছে।’
কিছুদিন আগে যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে ‘১৯৪৭ থেকে শুরু করে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধসহ এখন পর্যন্ত’ করা যেকোনো অপরাধের জন্য ক্ষমা চেয়েছিলেন জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান।
বিজয় দিবস সামনে রেখে বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে দলটি ক্ষমা চাইবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে দলের পক্ষ থেকে একাধিকবার অবস্থান ব্যাখ্যা করা হয়েছিল। সর্বশেষ আমাদের আমির বলেছিলেন, শুধু একাত্তর না, ১৯৪৭ থেকে শুরু করে অদ্যাবধি কেউ আমাদের দ্বারা কষ্ট পেয়ে থাকলে, ত্রুটি-বিচ্যুতি হলে আমরা ক্ষমা চেয়েছি, ক্ষমা চাইতেই থাকব। আমরা মনে করি, বিষয়টি জাতির কাছে স্পষ্ট হয়েছে।’
আগামী নির্বাচনে একাত্তরের বিষয়টি সামনে এনে প্রতিপক্ষ খুব একটা সুবিধা করতে পারবে না বলে মনে করছেন জামায়াতের নেতারা। ভোটে এ নিয়ে জামায়াত কতটুকু চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে—এমন প্রশ্নের জবাবে এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেন, ফ্যাসিস্টদের মুখেও এ নিয়ে ফেনা উঠেছিল। জাতি তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, নিজস্ব ভোটব্যাংক প্রতিটি দলেরই আছে। এর বাইরে বড় সংখ্যার দোদুল্যমান ভোটার রয়েছেন, যাঁরা সিদ্ধান্তহীনতায় থাকেন। এমন ভোটারদের নিজেদের দিকে টানতে দলগুলোর কথার যুদ্ধ স্বাভাবিক একটি ব্যাপার। নির্বাচন মৌসুমে দলগুলোর বাগ্যুদ্ধে দোদুল্যমান ভোটারদের একটা বড় অংশ প্রভাবিত হয়। কিছুটা এরই অংশ হিসেবে ভোটের মাঠে মুক্তিযুদ্ধে জামায়াতের ভূমিকাকে সামনে এনেছে বিএনপি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সাব্বির আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ছাড়া রাজনীতির ময়দানে জামায়াত এখন বড় ফ্যাক্টর। জামায়াত যেহেতু বিপক্ষে চলে গেছে, সংগত কারণেই একাত্তর দিয়ে জামায়াতকে কোণঠাসা করার চেষ্টা করবে বিএনপি। এটা খুবই স্বাভাবিক।...অন্যদিকে একাত্তরের বিষয়ে জামায়াত সংযত না হয়ে উল্টো আরও ১০ ডিগ্রি ওপর দিয়ে কথা বলছে। একাত্তরকে অস্বীকার করা, একে-ওকে বিশ্বাসঘাতক বলা—এগুলো জামায়াতের জন্য খুবই নেতিবাচক হবে। মানুষ এগুলো ভালোভাবে নেবে না।’
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অধ্যাপক ড. আল মাসুদ হাসানুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিজয় নিশ্চিত করতে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জড়িয়ে পড়েছে দল দুটি। প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতেই তারা স্পর্শকাতর বিষয় সামনে আনছে।’

সদ্য প্রয়াত লেখক ও গবেষক বদরুদ্দীন উমর বলেছেন, শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে এমনভাবে ব্যবহার করেছেন, যেন সেটি তার পারিবারিক সম্পত্তি। এই চেতনা একসময় কাজ করেছে—মানুষ বিভ্রান্ত হয়েছে, আবেগে ভেসেছে। কিন্তু পরে দেখা গেছে, তার দমননীতি ও নির্যাতনের ফলে এই চেতনা ধরা পড়ে গেছে।
০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতৃত্বে তিনটি রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে সদ্য গঠিত ‘গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট’-এর পরিধি আরও বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। এ জন্য ডান ও বাম ঘরানার বেশ কয়েকটি দলের সঙ্গে চলছে আলোচনা। জেএসডি (জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল), নাগরিক ঐক্য, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের একাংশ এবং গণঅধিকার পরিষদের একাংশ গণ
২ ঘণ্টা আগে
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নিতে ভাড়া করা এয়ার অ্যাম্বুলেন্স আজ মঙ্গলবার ঢাকায় আসছে না। তাঁকে আপাতত লন্ডন নেওয়া হচ্ছে না। তাঁকে কবে নাগাদ চিকিৎসার জন্য লন্ডন নেওয়া হবে, সে বিষয়ে কিছু জানা যায়নি।
২ ঘণ্টা আগে
বরিশালে বিএনপি নেতা–কর্মীদের হাতে হেনস্তার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ। আজ সোমবার বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলনে তিনি দাবি করেন, বিএনপির একটি ক্ষুদ্রাংশের ‘অভদ্র আচরণে একদিনেই সারা দেশে বিএনপির কমপক্ষে ১০ লাখ ভোট কমে
৬ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নিতে ভাড়া করা এয়ার অ্যাম্বুলেন্স আজ মঙ্গলবার ঢাকায় আসছে না। তাঁকে আপাতত লন্ডন নেওয়া হচ্ছে না। তাঁকে কবে নাগাদ চিকিৎসার জন্য লন্ডন নেওয়া হবে, সে বিষয়ে কিছু জানা যায়নি।
চিকিৎসকদের সূত্র বলেছে, খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়া নির্ভর করছে তাঁর শারীরিক অবস্থার ওপর। তাঁর বড় ছেলে তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান গতকাল সোমবারও হাসপাতালে তাঁকে দেখতে যান। তিনিও চিকিৎসা কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন।
সূত্র বলেছে, খালেদা জিয়াকে লন্ডনের হাসপাতালে নিতে কাতারের ব্যবস্থা করা এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটির আজ সকালে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের অনুমতি নেওয়া হয়েছিল। গতকাল সেই অনুমতি প্রত্যাহার চেয়ে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) কাছে আবেদন করা হয়। অর্থাৎ আজ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি আসছে না এবং খালেদা জিয়াকেও লন্ডনে নেওয়া হচ্ছে না।
বেবিচকের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, জার্মানভিত্তিক এফএআই এভিয়েশন গ্রুপ তাদের স্থানীয় সমন্বয়কারী সংস্থার মাধ্যমে স্লট অনুমোদন প্রত্যাহারের আবেদন করেছে। তিনি বলেন, বাতিলের অনুরোধটি বেবিচক পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রয়োজনীয় পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পাঠাবে।
গত রোববার জমা দেওয়া প্রাথমিক আবেদনের ভিত্তিতে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটির আজ সকাল ৮টায় অবতরণ এবং রাত ৯টার দিকে উড্ডয়নের অনুমতি দিয়েছিল বেবিচক।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে গত ২৩ নভেম্বর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে ভর্তির পর তাঁর শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটে। ২৭ নভেম্বর তাঁকে হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) স্থানান্তর করা হয়। লিভার, কিডনি, ফুসফুস ও হৃদ্যন্ত্রের গুরুতর জটিলতায় ভুগছেন তিনি। বর্তমানে দেশি ও বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত একটি মেডিকেল বোর্ডের নিবিড় পর্যবেক্ষণে চিকিৎসাধীন আছেন তিনি। লন্ডন থেকে শুক্রবার এসে তাঁর চিকিৎসায় যুক্ত হয়েছেন পুত্রবধূ জুবাইদা রহমানও। রোববার খালেদা জিয়ার সিটি স্ক্যানসহ কয়েকটি পরীক্ষা করা হয়েছে। এগুলোর রিপোর্ট ভালো এসেছে বলে জানিয়েছে মেডিকেল বোর্ডের একটি সূত্র।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ গত শনিবার জানান, খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য লন্ডনে নিতে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত আছে। চিকিৎসকেরা বললেই তাঁকে লন্ডন নেওয়া হবে। খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থাই বলে দেবে, কখন তাঁকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া যাবে।

রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নিতে ভাড়া করা এয়ার অ্যাম্বুলেন্স আজ মঙ্গলবার ঢাকায় আসছে না। তাঁকে আপাতত লন্ডন নেওয়া হচ্ছে না। তাঁকে কবে নাগাদ চিকিৎসার জন্য লন্ডন নেওয়া হবে, সে বিষয়ে কিছু জানা যায়নি।
চিকিৎসকদের সূত্র বলেছে, খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়া নির্ভর করছে তাঁর শারীরিক অবস্থার ওপর। তাঁর বড় ছেলে তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান গতকাল সোমবারও হাসপাতালে তাঁকে দেখতে যান। তিনিও চিকিৎসা কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন।
সূত্র বলেছে, খালেদা জিয়াকে লন্ডনের হাসপাতালে নিতে কাতারের ব্যবস্থা করা এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটির আজ সকালে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের অনুমতি নেওয়া হয়েছিল। গতকাল সেই অনুমতি প্রত্যাহার চেয়ে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) কাছে আবেদন করা হয়। অর্থাৎ আজ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি আসছে না এবং খালেদা জিয়াকেও লন্ডনে নেওয়া হচ্ছে না।
বেবিচকের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, জার্মানভিত্তিক এফএআই এভিয়েশন গ্রুপ তাদের স্থানীয় সমন্বয়কারী সংস্থার মাধ্যমে স্লট অনুমোদন প্রত্যাহারের আবেদন করেছে। তিনি বলেন, বাতিলের অনুরোধটি বেবিচক পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রয়োজনীয় পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পাঠাবে।
গত রোববার জমা দেওয়া প্রাথমিক আবেদনের ভিত্তিতে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটির আজ সকাল ৮টায় অবতরণ এবং রাত ৯টার দিকে উড্ডয়নের অনুমতি দিয়েছিল বেবিচক।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে গত ২৩ নভেম্বর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে ভর্তির পর তাঁর শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটে। ২৭ নভেম্বর তাঁকে হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) স্থানান্তর করা হয়। লিভার, কিডনি, ফুসফুস ও হৃদ্যন্ত্রের গুরুতর জটিলতায় ভুগছেন তিনি। বর্তমানে দেশি ও বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত একটি মেডিকেল বোর্ডের নিবিড় পর্যবেক্ষণে চিকিৎসাধীন আছেন তিনি। লন্ডন থেকে শুক্রবার এসে তাঁর চিকিৎসায় যুক্ত হয়েছেন পুত্রবধূ জুবাইদা রহমানও। রোববার খালেদা জিয়ার সিটি স্ক্যানসহ কয়েকটি পরীক্ষা করা হয়েছে। এগুলোর রিপোর্ট ভালো এসেছে বলে জানিয়েছে মেডিকেল বোর্ডের একটি সূত্র।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ গত শনিবার জানান, খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য লন্ডনে নিতে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত আছে। চিকিৎসকেরা বললেই তাঁকে লন্ডন নেওয়া হবে। খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থাই বলে দেবে, কখন তাঁকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া যাবে।

সদ্য প্রয়াত লেখক ও গবেষক বদরুদ্দীন উমর বলেছেন, শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে এমনভাবে ব্যবহার করেছেন, যেন সেটি তার পারিবারিক সম্পত্তি। এই চেতনা একসময় কাজ করেছে—মানুষ বিভ্রান্ত হয়েছে, আবেগে ভেসেছে। কিন্তু পরে দেখা গেছে, তার দমননীতি ও নির্যাতনের ফলে এই চেতনা ধরা পড়ে গেছে।
০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতৃত্বে তিনটি রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে সদ্য গঠিত ‘গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট’-এর পরিধি আরও বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। এ জন্য ডান ও বাম ঘরানার বেশ কয়েকটি দলের সঙ্গে চলছে আলোচনা। জেএসডি (জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল), নাগরিক ঐক্য, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের একাংশ এবং গণঅধিকার পরিষদের একাংশ গণ
২ ঘণ্টা আগে
চব্বিশের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান দেশের রাজনৈতিক চালচিত্র অনেকটাই বদলে দিয়েছে। পাল্টে যাওয়া দৃশ্যপটের একটি চিত্র দীর্ঘদিনের বন্ধু বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর এখনকার দুই মেরুতে অবস্থান। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আওয়ামী লীগবিহীন ভোটের মাঠে দল দুটি এখন একে অপরের মূল প্রতিপক্ষ।
২ ঘণ্টা আগে
বরিশালে বিএনপি নেতা–কর্মীদের হাতে হেনস্তার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ। আজ সোমবার বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলনে তিনি দাবি করেন, বিএনপির একটি ক্ষুদ্রাংশের ‘অভদ্র আচরণে একদিনেই সারা দেশে বিএনপির কমপক্ষে ১০ লাখ ভোট কমে
৬ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

বরিশালে বিএনপি নেতা–কর্মীদের হাতে হেনস্তার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ। আজ সোমবার বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলনে তিনি দাবি করেন, বিএনপির একটি ক্ষুদ্রাংশের ‘অভদ্র আচরণে একদিনেই সারা দেশে বিএনপির কমপক্ষে ১০ লাখ ভোট কমে গেছে’। এ ধরনের কর্মকাণ্ড বিএনপির জন্য ‘রাজনৈতিক ক্ষতি’ ডেকে আনতে পারে।
বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে ফুয়াদ বলেন, ‘আপনাদের একাংশ— খুবই সংক্ষিপ্ত একটা ফ্যাকশন— যে আচরণটা করছে, তাতে প্রত্যেকদিন আপনাদের হাজার হাজার ভোট কমছে। শুধু গতকালকের ঘটনায় সোশ্যাল মিডিয়াতে আপনারা যা দেখেছেন তাতে বাংলাদেশে নূন্যতম একদিনে ১০ লাখ ভোট কমে গেছে সারা বাংলাদেশে। আপনারা যদি আপনাদের এই অভদ্র একাংশ— খুবই ছোট অল্প কয়টা মানুষকে— নিয়ন্ত্রণ করতে না পারেন, তাহলে কিন্তু আগামী নির্বাচনে আপনারা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বেন। কারণ এই ক্রিমিনালদেরকে নিয়ে কিন্তু আপনাদের ভোট চাইতে যাইতে হবে।’
গতকাল রোববার বরিশালের বাবুগঞ্জে মীরগঞ্জ সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধনে গিয়ে বিএনপির নেতা–কর্মীদের তোপের মুখে পড়েন ব্যারিস্টার ফুয়াদ। ঠিকাদারের কাছে বিএনপির নেতা–কর্মীরা চাঁদা দাবি করছেন, অভিযোগ তোলার পর বাগ্বিতণ্ডা থেকে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়। একপর্যায়ে ‘ভুয়া, ভুয়া’ বলে ধাওয়া দিলে ফুয়াদ দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
এলাকাভিত্তিক রাজনৈতিক কার্যক্রমে তাঁকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে অভিযোগ তুলে ফুয়াদ বলেন, ‘আমাদের নেতাদেরকে বলছে যে, এখন পর্যন্ত ঢুকতে দিতেছি, নির্বাচনের আগের দিন আর এলাকায় আসবেন না। যেটা আওয়ামী ফ্যাসিবাদের আমলে আমরা দেখেছি এবং বিএনপির একাংশের আচরণ ঠিক একই রকমভাবে নব্য আওয়ামী ফ্যাসিবাদের মত মনে হচ্ছে।’
ভিডিও ফুটেজের কথা তুলে তদন্ত দাবি করে তিনি বলেন, ‘ভিডিও ফুটেজ আছে— কারা উসকানি দিয়েছে সবাইকে চিনি। বিএনপিকে বলছি, তদন্ত করুন, দায়ীদের দলীয় শৃঙ্খলায় আনুন। যা যা করা দরকার এর দায় আপনাদের।’
ঘটনার সময় পুলিশ কোনো উদ্যোগ নেয়নি বলে দাবি করেন এবি পার্টির ফুয়াদ বলেন, ‘গতকালকে আমার সাথে যেটা হয়েছে, পুলিশ তো কোনো কিছু করে নাই। তাহলে ভোটকেন্দ্রের সময় আমাকে–আমার লোকদের সময় তাড়িয়ে দিবে না নির্বাচনের দিন, তার কি গ্যারান্টি আছে? যারা দায়িত্ব পালন গতকালকে করল না, তাঁরা তো নির্বাচনের দিনও এই দায়িত্বটা পালন করবেন না। কারণ বিএনপি ক্ষমতায় আসবে, আমার ক্যারিয়ারের কি হবে? আমার পোস্টিং এর কি হবে? আমাকে তো বান্দরবনে পোস্টিং করে দিবে। তাহলে একই ভয় যদি আপনার এই মাসে থাকে, একই ভয় তো নির্বাচনের দিনও থাকবে। তাহলে আপনি ভালো নির্বাচন কীভাবে করবেন? অতএব সেই জায়গাতে আমাদের নির্বাচনে অংশ না নেয়ার ব্যাপারটা যথেষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাচ্ছে।’
গত দুই মাস ধরে দলের কর্মীদের ওপর নিয়মিত হামলা–হেনস্তা চলছে অভিযোগ যুয়াদ বলেন, ‘আমাকে বলতেছে, আমাদের নেতাদেরকে বলছে যে, এখন পর্যন্ত ঢুকতে দিতেছি, নির্বাচনের আগের দিন আর এলাকায় আসবেন না। কোন দোকানে কয়টা রামদার অর্ডার দেওয়া হয়েছে— এগুলো পর্যন্ত বলতেছে আমাদেরকে।’
তিনি বলেন, ‘নপির একাংশের আচরণ ঠিক আওয়ামী ফ্যাসিবাদের মত মনে হচ্ছে। এক মাসে কিন্তু শীত যাবে না। আজকে আমার দল ছোট। আজকে হয়তো আপনি মনে করছেন আমার হাজার হাজার লোক ওয়ার্ডে ইউনিয়নে নাই। আপনারাও কিন্তু ছোট দল ছিলেন। আপনারা বড় দল হয়েও কিন্তু গত ১৬ বছর আওয়ামী লীগরে ফালাইতে পারেন নাই।’
‘আপনারা গতকালকে যেটা দেখেছেন, আমি গত দুই মাস থেকে রেগুলার বেসিসে এই অভিজ্ঞতা শিকার হচ্ছি। আমার নেতাকর্মীদের ক্যাম্পেইনে মারধর করতেছে, হাসপাতালে ভর্তি হইতেছে, থানায় যাচ্ছে, মামলা নিচ্ছে না। এক্সাক্টলি আমরা আওয়ামী লীগের আমলে যেগুলো দেখেছি। প্রশাসন ধরে নিয়েছে, এটাই হচ্ছে রুলস অফ দ্য গেম যে যখন আওয়ামী লীগ থাকবে তখন আমরা সবাই আওয়ামী লীগ হয়ে যাব, যখন বিএনপি আসবে অথবা থাকবে তখন আমরা বিএনপি হয়ে যাব। একটা রাষ্ট্র তো এইভাবে হতে পারে না।’

বরিশালে বিএনপি নেতা–কর্মীদের হাতে হেনস্তার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ। আজ সোমবার বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলনে তিনি দাবি করেন, বিএনপির একটি ক্ষুদ্রাংশের ‘অভদ্র আচরণে একদিনেই সারা দেশে বিএনপির কমপক্ষে ১০ লাখ ভোট কমে গেছে’। এ ধরনের কর্মকাণ্ড বিএনপির জন্য ‘রাজনৈতিক ক্ষতি’ ডেকে আনতে পারে।
বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে ফুয়াদ বলেন, ‘আপনাদের একাংশ— খুবই সংক্ষিপ্ত একটা ফ্যাকশন— যে আচরণটা করছে, তাতে প্রত্যেকদিন আপনাদের হাজার হাজার ভোট কমছে। শুধু গতকালকের ঘটনায় সোশ্যাল মিডিয়াতে আপনারা যা দেখেছেন তাতে বাংলাদেশে নূন্যতম একদিনে ১০ লাখ ভোট কমে গেছে সারা বাংলাদেশে। আপনারা যদি আপনাদের এই অভদ্র একাংশ— খুবই ছোট অল্প কয়টা মানুষকে— নিয়ন্ত্রণ করতে না পারেন, তাহলে কিন্তু আগামী নির্বাচনে আপনারা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বেন। কারণ এই ক্রিমিনালদেরকে নিয়ে কিন্তু আপনাদের ভোট চাইতে যাইতে হবে।’
গতকাল রোববার বরিশালের বাবুগঞ্জে মীরগঞ্জ সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধনে গিয়ে বিএনপির নেতা–কর্মীদের তোপের মুখে পড়েন ব্যারিস্টার ফুয়াদ। ঠিকাদারের কাছে বিএনপির নেতা–কর্মীরা চাঁদা দাবি করছেন, অভিযোগ তোলার পর বাগ্বিতণ্ডা থেকে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়। একপর্যায়ে ‘ভুয়া, ভুয়া’ বলে ধাওয়া দিলে ফুয়াদ দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
এলাকাভিত্তিক রাজনৈতিক কার্যক্রমে তাঁকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে অভিযোগ তুলে ফুয়াদ বলেন, ‘আমাদের নেতাদেরকে বলছে যে, এখন পর্যন্ত ঢুকতে দিতেছি, নির্বাচনের আগের দিন আর এলাকায় আসবেন না। যেটা আওয়ামী ফ্যাসিবাদের আমলে আমরা দেখেছি এবং বিএনপির একাংশের আচরণ ঠিক একই রকমভাবে নব্য আওয়ামী ফ্যাসিবাদের মত মনে হচ্ছে।’
ভিডিও ফুটেজের কথা তুলে তদন্ত দাবি করে তিনি বলেন, ‘ভিডিও ফুটেজ আছে— কারা উসকানি দিয়েছে সবাইকে চিনি। বিএনপিকে বলছি, তদন্ত করুন, দায়ীদের দলীয় শৃঙ্খলায় আনুন। যা যা করা দরকার এর দায় আপনাদের।’
ঘটনার সময় পুলিশ কোনো উদ্যোগ নেয়নি বলে দাবি করেন এবি পার্টির ফুয়াদ বলেন, ‘গতকালকে আমার সাথে যেটা হয়েছে, পুলিশ তো কোনো কিছু করে নাই। তাহলে ভোটকেন্দ্রের সময় আমাকে–আমার লোকদের সময় তাড়িয়ে দিবে না নির্বাচনের দিন, তার কি গ্যারান্টি আছে? যারা দায়িত্ব পালন গতকালকে করল না, তাঁরা তো নির্বাচনের দিনও এই দায়িত্বটা পালন করবেন না। কারণ বিএনপি ক্ষমতায় আসবে, আমার ক্যারিয়ারের কি হবে? আমার পোস্টিং এর কি হবে? আমাকে তো বান্দরবনে পোস্টিং করে দিবে। তাহলে একই ভয় যদি আপনার এই মাসে থাকে, একই ভয় তো নির্বাচনের দিনও থাকবে। তাহলে আপনি ভালো নির্বাচন কীভাবে করবেন? অতএব সেই জায়গাতে আমাদের নির্বাচনে অংশ না নেয়ার ব্যাপারটা যথেষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাচ্ছে।’
গত দুই মাস ধরে দলের কর্মীদের ওপর নিয়মিত হামলা–হেনস্তা চলছে অভিযোগ যুয়াদ বলেন, ‘আমাকে বলতেছে, আমাদের নেতাদেরকে বলছে যে, এখন পর্যন্ত ঢুকতে দিতেছি, নির্বাচনের আগের দিন আর এলাকায় আসবেন না। কোন দোকানে কয়টা রামদার অর্ডার দেওয়া হয়েছে— এগুলো পর্যন্ত বলতেছে আমাদেরকে।’
তিনি বলেন, ‘নপির একাংশের আচরণ ঠিক আওয়ামী ফ্যাসিবাদের মত মনে হচ্ছে। এক মাসে কিন্তু শীত যাবে না। আজকে আমার দল ছোট। আজকে হয়তো আপনি মনে করছেন আমার হাজার হাজার লোক ওয়ার্ডে ইউনিয়নে নাই। আপনারাও কিন্তু ছোট দল ছিলেন। আপনারা বড় দল হয়েও কিন্তু গত ১৬ বছর আওয়ামী লীগরে ফালাইতে পারেন নাই।’
‘আপনারা গতকালকে যেটা দেখেছেন, আমি গত দুই মাস থেকে রেগুলার বেসিসে এই অভিজ্ঞতা শিকার হচ্ছি। আমার নেতাকর্মীদের ক্যাম্পেইনে মারধর করতেছে, হাসপাতালে ভর্তি হইতেছে, থানায় যাচ্ছে, মামলা নিচ্ছে না। এক্সাক্টলি আমরা আওয়ামী লীগের আমলে যেগুলো দেখেছি। প্রশাসন ধরে নিয়েছে, এটাই হচ্ছে রুলস অফ দ্য গেম যে যখন আওয়ামী লীগ থাকবে তখন আমরা সবাই আওয়ামী লীগ হয়ে যাব, যখন বিএনপি আসবে অথবা থাকবে তখন আমরা বিএনপি হয়ে যাব। একটা রাষ্ট্র তো এইভাবে হতে পারে না।’

সদ্য প্রয়াত লেখক ও গবেষক বদরুদ্দীন উমর বলেছেন, শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে এমনভাবে ব্যবহার করেছেন, যেন সেটি তার পারিবারিক সম্পত্তি। এই চেতনা একসময় কাজ করেছে—মানুষ বিভ্রান্ত হয়েছে, আবেগে ভেসেছে। কিন্তু পরে দেখা গেছে, তার দমননীতি ও নির্যাতনের ফলে এই চেতনা ধরা পড়ে গেছে।
০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতৃত্বে তিনটি রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে সদ্য গঠিত ‘গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট’-এর পরিধি আরও বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। এ জন্য ডান ও বাম ঘরানার বেশ কয়েকটি দলের সঙ্গে চলছে আলোচনা। জেএসডি (জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল), নাগরিক ঐক্য, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের একাংশ এবং গণঅধিকার পরিষদের একাংশ গণ
২ ঘণ্টা আগে
চব্বিশের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান দেশের রাজনৈতিক চালচিত্র অনেকটাই বদলে দিয়েছে। পাল্টে যাওয়া দৃশ্যপটের একটি চিত্র দীর্ঘদিনের বন্ধু বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর এখনকার দুই মেরুতে অবস্থান। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আওয়ামী লীগবিহীন ভোটের মাঠে দল দুটি এখন একে অপরের মূল প্রতিপক্ষ।
২ ঘণ্টা আগে
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নিতে ভাড়া করা এয়ার অ্যাম্বুলেন্স আজ মঙ্গলবার ঢাকায় আসছে না। তাঁকে আপাতত লন্ডন নেওয়া হচ্ছে না। তাঁকে কবে নাগাদ চিকিৎসার জন্য লন্ডন নেওয়া হবে, সে বিষয়ে কিছু জানা যায়নি।
২ ঘণ্টা আগে