Ajker Patrika

রাষ্ট্রপতির অপসারণ, ‘জনগণতান্ত্রিক বাংলাদেশ’ চায় সিটিজেন রাইটস মুভমেন্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৬: ১১
রাষ্ট্রপতির অপসারণ, ‘জনগণতান্ত্রিক বাংলাদেশ’ চায় সিটিজেন রাইটস মুভমেন্ট

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু ও উচ্চ আদালতে নিয়োগ পাওয়া দলীয় অনুগত সব বিচারপতির অপসারণসহ ১৭ দফা দাবি জানিয়েছে সিটিজেনস রাইটস মুভমেন্ট। এর পাশাপাশি সংবিধানে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের স্থলে ‘জনগণতান্ত্রিক বাংলাদেশ’ নাম করার দাবি করেন সংগঠনের নেতারা। 

আজ শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এই দাবি করেন সংগঠনের নেতারা। 

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সিটিজেনস রাইটস মুভমেন্টের মহাসচিব তুসার রেহমান। তিনি সংবাদ সম্মেলনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে ১৭ দফা দাবি তুলে ধরেন। 

দাবিগুলো হলো—
১. স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য ব্রিটিশ সরকারের প্রণীত সব আইনকানুন বিধিবিধানের আমূল সংস্কার করে স্বদেশ ও স্বাধীন মানুষের কল্যাণে সময়োপযোগী আইন সংস্কার কমিশন গঠন করে কল্যাণ রাষ্ট্রের সংবিধান সংশোধনসহ আইন বিধিমালা তৈরি করতে হবে। 
২. স্বাধীন নির্বাচন কমিশন, স্বাধীন দুদক, স্বাধীন মানবাধিকার কমিশন, আইন কমিশন, স্বাধীন দেশে নাগরিক কল্যাণে পুলিশ কমিশন গঠনসহ ন্যায়পাল কমিশন গঠন করতে হবে। 
৩. পতিত সরকারের নিয়োগকৃত পদলেহনকারী রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পুকে অপসারণ করতে হবে। 
৪. পতিত সরকার কর্তৃক উচ্চ আদালতে নিয়োগকৃত দলীয় ও অনুগত সব বিচারপতিকে অপসারণ করতে হবে। 
৫. ছাত্র-জনতাকে মানবতাবিরোধী গণহত্যা ও গণগুমের ন্যায় মানবতাবিরোধী অপরাধে পতিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর দোসরদের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আদালতে বিচারের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। 
৬. এক ব্যক্তি দুবারের অধিক প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না মর্মে বিধিবদ্ধ আইন প্রণয়নসহ একই ব্যক্তি একই মেয়াদকালে সরকারপ্রধান ও দলীয় প্রধানের পদে থাকতে পারবেন না। 
৭. স্বাধীন ও মুক্তিযুদ্ধের মৌলিক বৈশিষ্ট্য বৈষম্যহীন সমাজ ও রাষ্ট্র বিনির্মাণের লক্ষ্যে এবং সম্প্রতি সংগঠিত ছাত্র-জনতার সফল আন্দোলনের প্রত্যাশিত আদর্শিক বিজ্ঞানমনস্ক শিক্ষাব্যবস্থার জন্য শিক্ষানীতি নিশ্চিত করতে হবে। 
৮. যেহেতু স্বাধীন বাংলাদেশ রাজা-শাসকদের রাজ্য কিংবা রাষ্ট্র নয়, সুতরাং সাংবিধানিকভাবে আমাদের রাষ্ট্রটির নাম ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের’ স্থলে ‘জনগণতান্ত্রিক বাংলাদেশ’ নামকরণ করতে হবে। 
৯. হত্যাকাণ্ড যেমন অমানবিক ও গর্হিত অপরাধ, সে কারণে হত্যাকরীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি মৃত্যুদণ্ডই যথার্থ, ঠিক তেমনি দুর্নীতি নামক দুষ্ট ক্ষত অপরাধ দমনের লক্ষ্যে মৃত্যুদণ্ড আইন প্রণয়ন করতে হবে। 
১০. দেশের নিম্ন আদালতসহ উচ্চ আদালতে সব ধরনের আইনি কার্যক্রম ইংরেজি ভাষার পরিবর্তে বাংলায় চালু বাধ্যতামূলকসহ এর সব সঠিক ব্যবহারবিধি চালুর লক্ষ্যে আইন গ্রন্থসমূহ বাংলায় রচনা করতে হবে। 
১১. ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের রাষ্ট্রীয় ভাতা বাতিলপূর্বক তাদের শাস্তির আওতায় আনাতে হবে। 
১২. দেশের সব নাগরিকদের জন্য একটি টেকসই পেনশন স্কিম পদ্ধতি চালুর ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। 
১৩. উচ্চ আদালতসহ দেশের নিম্ন আদালতসমূহের বিচার বিভাগের কর্মচারী যথা বেঞ্চ অফিসার, সেরেস্তাদার, পেশাকারদের রেওয়াজি থোক (ঘুষ) আদান-প্রদানের ব্যবস্থা স্থায়ীভাবে বন্ধ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে দেশের সব আইনজীবী কর্তৃক ঘুষের রেওয়াজ বন্ধে আন্তরিক হতে হবে। 
১৪. রাজধানী ঢাকার অসহনীয় যানজট নিরসনে ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহার নিরুৎসাহিত করার লক্ষ্যে ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহারে অধিক করারোপসহ পর্যাপ্তসংখ্যক আরামপ্রদ গণপরিবহন নিশ্চিত করতে হবে। 
১৫. সর্বস্তরের সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বার্ষিক ভিত্তিতে আয়-রোজগারসহ ব্যক্তিগত সম্পদের হিসাব বিবরণী জনসমক্ষে প্রকাশ বাধ্যতামূলক করতে হবে। 
১৬. বাংলাদেশে দলিল রেজি. সম্পাদনকারী সাবরেজিস্ট্রার অফিসের রেওয়াজি (১) ঘুষ ও অনৈতিক অর্থ লেনদেন বন্ধ করার লক্ষ্যে রেজিস্ট্রার/সাবরেজিস্ট্রার ও তাদের সহকর্মীদের গোয়েন্দা তদারকির মাধ্যমে তাদের নিত্যকার লক্ষ-কোটি টাকার অবৈধ লেনদেন বন্ধে সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। 
১৭. অনৈতিক ব্যবসায় ও ঘুষ লেদদেনসহ অবৈধ অর্থ সংগ্রহকারী গোষ্ঠীটির বিদেশে পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনাসহ অর্থ পাচারকারীদের অর্থবিত্ত ও সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে দেশে ফেরত আনার কার্যকর ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। 

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সিটিজেনস রাইটস মুভমেন্টের সভাপতি মেজর (অব.) মো. মফিজুল হক সরকার, ব্যারিস্টার সাদিয়া আরমান, মেজর (অব.) হামিদুল ইসলাম বীর বিক্রম প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাদির মাথায় নয়, ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো অভ্যুত্থানের বুকে বুলেট: সারজিস আলম

পঞ্চগড় প্রতিনিধি
আপডেট : ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ০৬
গতকাল রাতে পঞ্চগড় চৌরঙ্গী মোড়ে বিক্ষোভ মিছিলে কথা বলেন এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। ছবি: আজকের পত্রিকা
গতকাল রাতে পঞ্চগড় চৌরঙ্গী মোড়ে বিক্ষোভ মিছিলে কথা বলেন এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। ছবি: আজকের পত্রিকা

বুলেট শুধু শরিফ ওসমান হাদির মাথায় নয়, এই বুলেট বাংলাদেশের ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে যাওয়া যে অভ্যুত্থান, তার বুকে করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। গতকাল শুক্রবার রাতে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে গুলির প্রতিবাদে পঞ্চগড় চৌরঙ্গী মোড়ে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ মিছিলে এসব কথা বলেন তিনি।

সারজিস বলেন, ‘যারা আগামীর বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে রুখে দিতে চাচ্ছে, যারা নির্বাচনকেন্দ্রিক প্রস্তুতিকে বানচাল করতে চাচ্ছে দেশে ও দেশের বাইরে, ওই এজেন্টদের এটা একটা খেলা। আর হাদিকে গুলি করার মধ্য দিয়ে এই খেলা তারা শুরু করল। আগামীতে আমরা ঐক্যবদ্ধ না থাকলে, যে পথে চলছি, সেই পথ থেকে বিপথে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। তাই ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’

এনসিপির এই নেতা বলেন, ‘শরিফ ওসমান হাদি অভ্যুত্থানের আগ থেকে অভ্যুত্থানের পর পর্যন্ত ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধের সিনা টান করে কথা বলে এসেছেন। যারা ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে কথা বলে, তাদের ভয় দেখানোর জন্য হাদিকে গুলি করা হয়েছে। বিগত কয়েক মাসে এই বাংলাদেশে বিভিন্ন পরিচয়ে সীমান্ত দিয়ে এমন অনেক মানুষকে অনুপ্রবেশ করানো হয়েছে। যারা বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে এসেছে।’ 

সারজিস বলেন, ‘আমাদের সামনে শুধু নির্বাচনী লড়াই নয়, আমাদের সামনে বাংলাদেশকে রক্ষা করার লড়াই। আমাদের সামনে শুধু ভোটের লড়াই নয়, যারা বাংলাদেশকে ধ্বংসের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে লড়াই। আওয়ামী সন্ত্রাসী যারা ছিল, তাদের গ্রেপ্তারের জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নামতে হবে। তাদের সঙ্গে ইন্টারনাল আপস করে, ইন্টারনাল প্রটেকশন দিয়ে এই বাংলাদেশে আগামীতে কোনো কিছু সুষ্ঠুভাবে হতে পারে না। আমরা অন্তর্বর্তী সরকারকে অনুরোধ করছি, সারা দেশে সাঁড়াশি অভিযান চালাতে হবে। খুনি-সন্ত্রাসী, তাদের দোসর এবং বাইরে থেকে যারা ষড়যন্ত্র করছে, যারা বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে চায়, অগ্রযাত্রা থামাতে চায়, যাদের স্বার্থ বাংলাদেশের স্বার্থের সঙ্গে মিলছে না, তাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে হবে। আমরা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ সবাইকে বলি, লুতুপুতু করে আগামীর বাংলাদেশে খুনিদের আশ্রয় দিয়ে কখনোই শান্তি ফেরানো সম্ভব নয়। দিনে এক কথা, রাতে এক কথা, এই যদি হয় অবস্থা; তাহলে আগামীতে কখনোই সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে পারবেন না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গুলিবিদ্ধ হাদিকে দেখতে গেলেন ফখরুল

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফাইল ছবি
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফাইল ছবি

গুলিবিদ্ধ ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদিকে দেখতে গেলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শুক্রবার রাত সাড়ে ১১ টার দিকে এভারকেয়ার হাসপাতালে যান তিনি। বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এ তথ্য জানান।

হাদিকে দেখার আগে শুরুতে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে দেখতে যান মির্জা ফখরুল। এসময় বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এজেডএম জাহিদ হোসেনও ছিলেন বলে জানান শায়রুল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আসিফ মাহমুদের র‍্যালি পরিণত হলো হাদির ওপর হামলার প্রতিবাদ মিছিলে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আসিফ মাহমুদের বিজয় মিছিল। ছবি: সংগৃহীত
আসিফ মাহমুদের বিজয় মিছিল। ছবি: সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকার থেকে পদত্যাগ করে ঢাকা-১০ আসনে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। এ উপলক্ষে শুক্রবার বিজয় র‍্যালির প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তিনি। ঠিক সে সময় তিনি ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর পান। এরপর বিজয় র‍্যালি পরিণত হয় প্রতিবাদ মিছিলে। শুক্রবার বিকেলে আসিফ মাহমুদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে এ কথা জানানো হয়।

আজ শুক্রবার বিকেলে হাদির ওপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে ধানমন্ডি, নিউমার্কেট, কলাবাগান ও হাজারীবাগ এলাকায় প্রতিবাদ মিছিল করেন তিনি।

প্রতিবাদ মিছিলে আসিফ মাহমুদ নিজেই ‘হাদির গায়ে গুলি কেন, প্রশাসন জবাব চাই; লাগছে গুলি হাদির গায়, আমরা আছি লাখো ভাই’ স্লোগান দেন।

এরপর হামলার শিকার স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী ওসমান হাদির শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান আসিফ মাহমুদ। এ সময় তিনি চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেন।

পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তিনি দেশবাসীর কাছে দোয়ার আহ্বান জানান। সংকট মোকাবিলায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাদির গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনা গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে চক্রান্ত: তারেক রহমান

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনাকে ‘গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে চক্রান্ত’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর খামারবাড়িতে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে বিএনপির ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন।

তারেক রহমান বলেন, ‘আজ শরিফ ওসমান বিন হাদির যে দুর্ঘটনা ঘটেছে, এই দুর্ঘটনা আরও ঘটেছে। কিছুদিন আগে চট্টগ্রামে আমাদের এক এমপি প্রার্থীর ওপরে যা হয়েছে, এটা ষড়যন্ত্র। এটার বিরুদ্ধে যদি আমাদের অবস্থান নিতে হয়, এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে যদি অবস্থান নিতে হয়, যেকোনো মূল্যে আমাদের গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে, যেকোনো মূল্যে আমাদের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে ফিরিয়ে আনতে হবে, গণতান্ত্রিক অধিকারকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।’

জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলকে আগামী দিনের ভবিষ্যৎ হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তারেক বলেন, ‘এই ষড়যন্ত্র বন্ধ করতে পারে এই দেশের মানুষ, এই ষড়যন্ত্র দমিয়ে দিতে পারে, রুখে দিতে পারে গণতন্ত্র।’

‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ শীর্ষক সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচির ষষ্ঠদিনে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের বিভিন্ন স্তরের নেতাদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। তাঁদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমাদের দলের পরিকল্পনাগুলো তোমাদের কাছে অর্পণ করছি। আমি বিশ্বাস করি, আজকে যে দায়িত্ব তোমাদের দিলাম মানুষকে বোঝানোর জন্য, যে দায়িত্ব দিলাম মানুষের সমর্থন জোগাড়ের জন্য, সেটি তোমরা করতে সফল হবে। কারণ, তোমাদের সেই যোগ্যতা আছে, তোমাদের সেই মেধা আছে। ফার্মার্স কার্ড, ফ্যামিলি কার্ড, হেলথ কার্ড প্রভৃতি বিষয়ে তোমাদের সামনে উপস্থাপন করা হয়েছে ঘরে ঘরে মানুষের কাছে পৌঁছে দেবে।’

দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সভাপতিত্ব ও যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খানের সঞ্চালনায় ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির প্রমুখ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।

এর আগে শুক্রবার সকালে অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী ভাষণে তফসিল ঘোষণা প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘তফসিল ঘোষণায় অনেকে ভারাক্রান্ত হয়েছে। কিন্তু স্বাগত জানাতে বাধ্য হয়েছে। আমরা স্বাগত জানিয়েছি, সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছি। আমরা বলেছি, এ জন্যই গণ-অভ্যুত্থানের যত প্রত্যাশা, তার মধ্যে প্রধান ও প্রাথমিক প্রত্যাশা ছিল জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা, ভোটাধিকার প্রয়োগ করা, এই তফসিল ঘোষণা করা।’ তিনি বলেন, ‘কেউ কেউ বলেছে নো পিআর, নো ইলেকশন, কেউ কেউ বলেছে, আগে স্থানীয় সরকার ইলেকশন না হলে নো ইলেকশন। আর কেউ কেউ বলেছে, একই দিনে গণভোট আর সংসদ নির্বাচন হলে আমরা মানি না। কেউ কেউ বলেছে, ২০২৯ সালের দিকে নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করেন। এরা সবাই....আমি কারও নাম নিতে চাই না...গণতন্ত্রের বিপক্ষের শিবির। তারা নিজেদের মত করে গণতন্ত্র চায়, তাদের গণতন্ত্রের সংজ্ঞা আলাদা।’

কোন দলের নাম উচ্চারণ না করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘একটি দল আওয়ামী লীগের ভোটপ্রাপ্তির জন্য আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে একটি শব্দও উচ্চারণ করে না। আমাদের গ্রামের ভাষায় কথা বলে যে ভাশুরের নাম মুখে নেওয়া যায় না। এখন সেই দল আওয়ামী লীগের ভোট টানার জন্য তাদের যে ভূমিকা, সেটা জনগণের সামনে উন্মোচন করেছে।’

দলটির উদ্দেশে সালাহউদ্দিন আরও বলেন, ‘যাদের ইতিহাস হচ্ছে সব সময় বাংলাদেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে, যাদের ইতিহাস হচ্ছে ১৯৪৭ সাল থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিপক্ষে, তাদের কথাও আমাদের বলতে হবে। যারা ইনিয়ে-বিনিয়ে বলছে, তারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ছিল, তা আমরা মাঝেমধ্যে জিজ্ঞেস করি, সেই মুক্তিযুদ্ধটা কি পাকিস্তানের পক্ষে ছিল?’ তিনি বলেন, ‘কিছুদিন পরে তারা হয়তো বলবে, তারাই একমাত্র মুক্তিযুদ্ধ করেছিল, আমরা করি নাই। এ রকম অনেক বক্তব্য আপনারা ভোটের ময়দানে শুনতে পাবেন।’

সালাহ উদ্দিন বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ অনেক সচেতন। এখন আর ধর্মের বিড়ি বিক্রি করে বাংলাদেশের জনগণের সামনে ভোট চাওয়া যাবে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত