সম্পাদকীয়
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) পরিচালিত ‘সিটিজেন পারসেপশন সার্ভে (সিপিএস) ২০২৫’-এর প্রাথমিক প্রতিবেদন আমাদের সামনে একটি হতাশাজনক বাস্তবতা তুলে ধরেছে।
আজকের পত্রিকায় প্রকাশিত এ-সংক্রান্ত খবর থেকে জানা যাচ্ছে, সরকারি সেবা গ্রহণে প্রায় ৩২ শতাংশ নাগরিক ঘুষ কিংবা দুর্নীতির শিকার হচ্ছেন—এটি কোনো নতুন তথ্য নয়, এমনটিই তো হয়ে আসছে, হচ্ছে।
বিআরটিএ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, পাসপোর্ট ও ভূমি অফিস—এই চারটি প্রতিষ্ঠানেই ঘুষের হার ৫০ শতাংশের ওপরে। অর্থাৎ এই প্রতিষ্ঠানগুলোর সেবা মানেই ‘মূল্যতালিকার বাইরে মূল্য’ দেওয়া। এটি শুধু সুশাসনের ঘাটতির দৃষ্টান্ত নয়; বরং জনগণের ওপর রাষ্ট্রীয় কাঠামোর অন্যায্য চাপ প্রয়োগের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, পুরুষের তুলনায় নারীরা দুর্নীতির শিকার কম হলেও, তাঁরা নিরাপত্তাবোধে পিছিয়ে। যেখানে ৮৯ শতাংশ পুরুষ সন্ধ্যার পর চলাফেরাকে নিরাপদ মনে করেন, সেখানে নারীদের মধ্যে এ হার ৮০ শতাংশ। এই ব্যবধান শুধু শারীরিক নিরাপত্তার নয়, এটি সামাজিক-মানসিক নিরাপত্তার অভাবকেও ইঙ্গিত করে। নারীর পথচলার নিশ্চয়তা নিশ্চিত না হলে উন্নয়নের সমতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ে।
মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে নাগরিকদের উপলব্ধিও উদ্বেগজনক। মাত্র ২৭ শতাংশ মানুষ মনে করেন তাঁরা সরকার নিয়ে প্রকাশ্যে মত দিতে পারেন। বাক্স্বাধীনতা একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের মৌলিক ভিত্তি, সেখানে এ ধরনের সীমাবদ্ধতা নাগরিক অধিকারকে সংকুচিত করে এবং রাষ্ট্রের প্রতি মানুষের আস্থা ক্ষুণ্ন করে।
স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে কিছুটা ইতিবাচক চিত্র থাকলেও, সেখানে মানের ঘাটতি রয়েছে। সরকারি স্বাস্থ্যসেবার গ্রহণযোগ্য ব্যয়সীমা এবং সহজপ্রাপ্যতার প্রশংসা করা গেলেও চিকিৎসকের সময় দেওয়া, আচরণ এবং সেবার মানে যে সন্তুষ্টির হার ৬৫ শতাংশের নিচে, তা আমাদের ব্যবস্থাপনার আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। সরকারি স্কুলে শিক্ষার মান নিয়ে সন্তুষ্টির হার প্রাথমিক ও মাধ্যমিকে যথাক্রমে ৬৭ ও ৭২ শতাংশ—এটি যথেষ্ট নয়, তবে উন্নয়নের ভিত্তি হিসেবে গ্রহণযোগ্য।
এ ছাড়া সমাজে বৈষম্য ও হয়রানির যে চিত্র উঠে এসেছে, যেখানে এক-পঞ্চমাংশ মানুষ কোনো না কোনো বৈষম্যের শিকার হয়েছেন, তার মধ্যে পারিবারিক বৈষম্যের হার ৪৮ শতাংশ—এটি আমাদের সমাজের গভীরতর বৈষম্যের চিত্র তুলে ধরে। এ বৈষম্যের রিপোর্টিং হার মাত্র ৫ শতাংশ—এটি ভয়, অনাস্থা ও বিচারহীনতার এক করুণ প্রতিচ্ছবি।
এই জরিপ শুধু একটি সংখ্যাতাত্ত্বিক প্রতিবেদন নয়, এটি আমাদের সামাজিক ও প্রশাসনিক কাঠামোর আয়না হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। রাষ্ট্র যদি এ চিত্রকে গুরুত্ব না দিয়ে উড়িয়ে দেয় বা চেপে রাখে, তবে ভবিষ্যৎ উন্নয়ন কিংবা ‘নতুন বাংলাদেশ’ গড়ার যে স্বপ্ন, তা কেবল অলীক কল্পনায় পরিণত হবে।
এই প্রতিবেদনের গুরুত্ব দুদিক থেকে অনস্বীকার্য—প্রথমত, এটি রাষ্ট্রের একটি বাস্তব চিত্র তুলে ধরেছে, দ্বিতীয়ত, এটি সুশাসন, ন্যায়বিচার এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রশাসনের জন্য একটি কর্মপরিকল্পনার সূচনাবিন্দু হতে পারে। এখন দরকার রাজনৈতিক সদিচ্ছা, প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার এবং দুর্নীতিবিরোধী পদক্ষেপের কঠোর ও কার্যকরভাবে প্রয়োগ করা।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) পরিচালিত ‘সিটিজেন পারসেপশন সার্ভে (সিপিএস) ২০২৫’-এর প্রাথমিক প্রতিবেদন আমাদের সামনে একটি হতাশাজনক বাস্তবতা তুলে ধরেছে।
আজকের পত্রিকায় প্রকাশিত এ-সংক্রান্ত খবর থেকে জানা যাচ্ছে, সরকারি সেবা গ্রহণে প্রায় ৩২ শতাংশ নাগরিক ঘুষ কিংবা দুর্নীতির শিকার হচ্ছেন—এটি কোনো নতুন তথ্য নয়, এমনটিই তো হয়ে আসছে, হচ্ছে।
বিআরটিএ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, পাসপোর্ট ও ভূমি অফিস—এই চারটি প্রতিষ্ঠানেই ঘুষের হার ৫০ শতাংশের ওপরে। অর্থাৎ এই প্রতিষ্ঠানগুলোর সেবা মানেই ‘মূল্যতালিকার বাইরে মূল্য’ দেওয়া। এটি শুধু সুশাসনের ঘাটতির দৃষ্টান্ত নয়; বরং জনগণের ওপর রাষ্ট্রীয় কাঠামোর অন্যায্য চাপ প্রয়োগের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, পুরুষের তুলনায় নারীরা দুর্নীতির শিকার কম হলেও, তাঁরা নিরাপত্তাবোধে পিছিয়ে। যেখানে ৮৯ শতাংশ পুরুষ সন্ধ্যার পর চলাফেরাকে নিরাপদ মনে করেন, সেখানে নারীদের মধ্যে এ হার ৮০ শতাংশ। এই ব্যবধান শুধু শারীরিক নিরাপত্তার নয়, এটি সামাজিক-মানসিক নিরাপত্তার অভাবকেও ইঙ্গিত করে। নারীর পথচলার নিশ্চয়তা নিশ্চিত না হলে উন্নয়নের সমতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ে।
মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে নাগরিকদের উপলব্ধিও উদ্বেগজনক। মাত্র ২৭ শতাংশ মানুষ মনে করেন তাঁরা সরকার নিয়ে প্রকাশ্যে মত দিতে পারেন। বাক্স্বাধীনতা একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের মৌলিক ভিত্তি, সেখানে এ ধরনের সীমাবদ্ধতা নাগরিক অধিকারকে সংকুচিত করে এবং রাষ্ট্রের প্রতি মানুষের আস্থা ক্ষুণ্ন করে।
স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে কিছুটা ইতিবাচক চিত্র থাকলেও, সেখানে মানের ঘাটতি রয়েছে। সরকারি স্বাস্থ্যসেবার গ্রহণযোগ্য ব্যয়সীমা এবং সহজপ্রাপ্যতার প্রশংসা করা গেলেও চিকিৎসকের সময় দেওয়া, আচরণ এবং সেবার মানে যে সন্তুষ্টির হার ৬৫ শতাংশের নিচে, তা আমাদের ব্যবস্থাপনার আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। সরকারি স্কুলে শিক্ষার মান নিয়ে সন্তুষ্টির হার প্রাথমিক ও মাধ্যমিকে যথাক্রমে ৬৭ ও ৭২ শতাংশ—এটি যথেষ্ট নয়, তবে উন্নয়নের ভিত্তি হিসেবে গ্রহণযোগ্য।
এ ছাড়া সমাজে বৈষম্য ও হয়রানির যে চিত্র উঠে এসেছে, যেখানে এক-পঞ্চমাংশ মানুষ কোনো না কোনো বৈষম্যের শিকার হয়েছেন, তার মধ্যে পারিবারিক বৈষম্যের হার ৪৮ শতাংশ—এটি আমাদের সমাজের গভীরতর বৈষম্যের চিত্র তুলে ধরে। এ বৈষম্যের রিপোর্টিং হার মাত্র ৫ শতাংশ—এটি ভয়, অনাস্থা ও বিচারহীনতার এক করুণ প্রতিচ্ছবি।
এই জরিপ শুধু একটি সংখ্যাতাত্ত্বিক প্রতিবেদন নয়, এটি আমাদের সামাজিক ও প্রশাসনিক কাঠামোর আয়না হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। রাষ্ট্র যদি এ চিত্রকে গুরুত্ব না দিয়ে উড়িয়ে দেয় বা চেপে রাখে, তবে ভবিষ্যৎ উন্নয়ন কিংবা ‘নতুন বাংলাদেশ’ গড়ার যে স্বপ্ন, তা কেবল অলীক কল্পনায় পরিণত হবে।
এই প্রতিবেদনের গুরুত্ব দুদিক থেকে অনস্বীকার্য—প্রথমত, এটি রাষ্ট্রের একটি বাস্তব চিত্র তুলে ধরেছে, দ্বিতীয়ত, এটি সুশাসন, ন্যায়বিচার এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রশাসনের জন্য একটি কর্মপরিকল্পনার সূচনাবিন্দু হতে পারে। এখন দরকার রাজনৈতিক সদিচ্ছা, প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার এবং দুর্নীতিবিরোধী পদক্ষেপের কঠোর ও কার্যকরভাবে প্রয়োগ করা।
নেপাল ও ভারতের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক কেবল ভৌগোলিক নয়, হাজার বছরের সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় ও ঐতিহাসিক বন্ধনে আবদ্ধ। উন্মুক্ত সীমান্ত, অভিন্ন হিন্দু ঐতিহ্য এবং ব্যাপক বাণিজ্যিক সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও নেপালে ভারতবিরোধী মনোভাব একটি দীর্ঘস্থায়ী এবং জটিল বাস্তবতা।
২ ঘণ্টা আগেআগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা-সংশয় যা-ই বলি, এত দিন সে বিষয়টির পরিসর সীমিত ছিল বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের বক্তব্য এবং সাধারণত নির্বাক থাকা দেশের আমজনতার মনোজগতে। কিন্তু এখন যখন সরকারপ্রধান নিজেই সেই শঙ্কার কথা ব্যক্ত করছেন, তখন বিষয়টি যে মোটেই অমূলক নয়, তা স্বীকার করতে কোনো দ্বিধা থাকতে পারে না
১৪ ঘণ্টা আগেআজ থেকে খুব বেশি দিন না, এই ধরেন, বারো-সাড়ে বারো শ বছর আগের কথা। হীরকরাজ্যে তখনো জ্ঞান-বিজ্ঞান, বিদ্যা-শিক্ষার চর্চা হতো। রীতিমতো বিশ্ববিদ্যালয় ছিল। ৩০০ বছর ধরে শুধু উপমহাদেশের বিভিন্ন স্থান থেকেই নয়, বরং চীন, তিব্বত, ব্রহ্মদেশ (মিয়ানমার), শ্যামদেশ (থাইল্যান্ড), মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, কম্বোডিয়াসহ
১৫ ঘণ্টা আগে৭ সেপ্টেম্বর বদরুদ্দীন উমরের জীবনের প্রস্থান হয়েছে। তাঁর এই প্রস্থানের মধ্য দিয়ে তিন পুরুষের রাজনৈতিক ধারারও সমাপ্তি ঘটেছে। তাঁর দাদা আবুল কাসেম ছিলেন তৎকালীন জাতীয় কংগ্রেসের পার্লামেন্টারিয়ান বোর্ডের সদস্য। বাবা আবুল হাশিম ছিলেন মুসলিম লীগের গুরুত্বপূর্ণ নেতা। আর তিনি ছিলেন কমিউনিস্ট ধারার নেতা।
১৫ ঘণ্টা আগে