সম্পাদকীয়
বরগুনায় ডেঙ্গুর ভয়াবহ প্রকোপ ক্রমেই গভীর সংকটের দিকে ধাবিত হচ্ছে। ১৩ জুন আজকের পত্রিকায় প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, এক দিনেই তিনজনসহ মোট ১০ জনের মৃত্যু এবং হাসপাতালগুলোতে ১ হাজার ৬০০ জনের বেশি রোগী ভর্তি হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, স্থানীয় সরকার ও পৌর কর্তৃপক্ষের সমন্বয়হীনতা যে কী ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে, বরগুনার উদাহরণ সেই বাস্তবতা চোখে আঙুল দিয়ে দেখাচ্ছে। যখন জানা যায় দেশে মোট আক্রান্তের এক-চতুর্থাংশ ডেঙ্গু রোগী এই একটি জেলাতেই, তখন বোঝা যায়, কতখানি অব্যবস্থাপনা জমে আছে স্থানীয় পর্যায়ে।
উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষ লবণাক্ততার কারণে বৃষ্টির পানি জমিয়ে রাখে, ফলে সেখানে নিয়মিত এডিস মশার লার্ভা জন্ম নিচ্ছে। অথচ অনেকেই জানেন না বা মানতে রাজি নন যে সেই পানির পাত্রেই রয়েছে সংক্রমণের উৎস। এই অজ্ঞতা দূরীকরণে ব্যাপক সচেতনতামূলক প্রচার দরকার ছিল, যা দৃশ্যত অনুপস্থিত।
বরগুনায় এখন যে অবস্থা, তাতে হাসপাতালগুলোতে শয্যার সংকট, চিকিৎসক ও নার্সের অভাব, স্যালাইন ও কিটের অপ্রতুলতা দেখা দিচ্ছে। রোগীদের কেউ মেঝেতে শুয়ে আছে, কেউ ঢাকায় পৌঁছাতে পারছে না, কেউ পথেই মারা যাচ্ছে। গত কয়েক দিনে ১০ জনের মৃত্যু কোনো সাধারণ ঘটনা নয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রতিক্রিয়া হিসেবে মাত্র দুজন চিকিৎসক ও ১০ জন নার্সের বরগুনায় পদায়ন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ হলেও প্রশ্ন হলো, এতেই কি এই ভয়াবহ সংক্রমণ ঠেকানো সম্ভব? বরং বরগুনাকে এখন ‘হটস্পট’ হিসেবে চিহ্নিত করে বিশেষ ‘হটস্পট ম্যানেজমেন্ট’-এর আওতায় আনতে হবে। আক্রান্ত বাড়ির ২০০ মিটারের মধ্যে ফগিং ও লার্ভিসাইডিং করতে হবে প্রতিদিন। পাশাপাশি নতুন আক্রান্ত এলাকা চিহ্নিত করে সেখানে পূর্বপ্রস্তুতি নিতে হবে, যাতে আগামী দিনগুলোতে আরও মৃত্যু ঠেকানো সম্ভব হয়।
ডেঙ্গু একটি প্রতিরোধযোগ্য রোগ। কিন্তু তা তখনই সম্ভব, যখন মশার উৎসস্থল ধ্বংস করা যায়। জলাবদ্ধতা, উন্মুক্ত ড্রেন, ব্যবহৃত পানির পাত্র, ফুলদানি, নির্মাণাধীন ভবনে জমে থাকা পানি—এসবই মশার জন্য প্রজননক্ষেত্র। আমরা যত দিন ধরে রাখতে বাধ্য হই বৃষ্টির পানি এবং সেই সঙ্গে লার্ভা, তত দিন ডেঙ্গু আমাদের পিছু ছাড়বে না।
গণমাধ্যমের পাশাপাশি স্থানীয় মসজিদ, স্কুল, ইউনিয়ন পরিষদ এবং কমিউনিটি ক্লাবগুলোরও দায়িত্ব রয়েছে। স্বাস্থ্যবিষয়ক সচেতনতা এখন কেবল বিজ্ঞাপন দিয়ে হবে না, দরকার মাঠপর্যায়ে কাজ। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বরিশালসহ অন্যান্য উপকূলীয় জেলা বা বৃষ্টিপ্রবণ এলাকা যাতে একই দশায় না পড়ে, এখনই সেখানে জরুরিভাবে ‘ভেক্টর কন্ট্রোল প্রোগ্রাম’ চালানো দরকার। নগর পরিকল্পনার অন্তর্ভুক্ত করে ডেঙ্গু প্রতিরোধকে দীর্ঘমেয়াদি কৌশলে রূপ দিতে হবে।
বরগুনা আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছে, কতটা অনিরাপদ আমরা। এই সংকট শুধু বরগুনার নয়, গোটা দেশের। এই সংকট ব্যবস্থাপনা, প্রস্তুতি এবং প্রতিরোধের। এখনই পদক্ষেপ না নিলে আমরা পুরো বর্ষাকালে মৃত্যু-সংবাদ শুনতে থাকব। এবং তখন প্রশ্ন থাকবে—কেন আমরা প্রস্তুত ছিলাম না, যখন সামনে ছিল ঝুঁকির স্পষ্ট চিত্র?
বরগুনায় ডেঙ্গুর ভয়াবহ প্রকোপ ক্রমেই গভীর সংকটের দিকে ধাবিত হচ্ছে। ১৩ জুন আজকের পত্রিকায় প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, এক দিনেই তিনজনসহ মোট ১০ জনের মৃত্যু এবং হাসপাতালগুলোতে ১ হাজার ৬০০ জনের বেশি রোগী ভর্তি হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, স্থানীয় সরকার ও পৌর কর্তৃপক্ষের সমন্বয়হীনতা যে কী ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে, বরগুনার উদাহরণ সেই বাস্তবতা চোখে আঙুল দিয়ে দেখাচ্ছে। যখন জানা যায় দেশে মোট আক্রান্তের এক-চতুর্থাংশ ডেঙ্গু রোগী এই একটি জেলাতেই, তখন বোঝা যায়, কতখানি অব্যবস্থাপনা জমে আছে স্থানীয় পর্যায়ে।
উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষ লবণাক্ততার কারণে বৃষ্টির পানি জমিয়ে রাখে, ফলে সেখানে নিয়মিত এডিস মশার লার্ভা জন্ম নিচ্ছে। অথচ অনেকেই জানেন না বা মানতে রাজি নন যে সেই পানির পাত্রেই রয়েছে সংক্রমণের উৎস। এই অজ্ঞতা দূরীকরণে ব্যাপক সচেতনতামূলক প্রচার দরকার ছিল, যা দৃশ্যত অনুপস্থিত।
বরগুনায় এখন যে অবস্থা, তাতে হাসপাতালগুলোতে শয্যার সংকট, চিকিৎসক ও নার্সের অভাব, স্যালাইন ও কিটের অপ্রতুলতা দেখা দিচ্ছে। রোগীদের কেউ মেঝেতে শুয়ে আছে, কেউ ঢাকায় পৌঁছাতে পারছে না, কেউ পথেই মারা যাচ্ছে। গত কয়েক দিনে ১০ জনের মৃত্যু কোনো সাধারণ ঘটনা নয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রতিক্রিয়া হিসেবে মাত্র দুজন চিকিৎসক ও ১০ জন নার্সের বরগুনায় পদায়ন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ হলেও প্রশ্ন হলো, এতেই কি এই ভয়াবহ সংক্রমণ ঠেকানো সম্ভব? বরং বরগুনাকে এখন ‘হটস্পট’ হিসেবে চিহ্নিত করে বিশেষ ‘হটস্পট ম্যানেজমেন্ট’-এর আওতায় আনতে হবে। আক্রান্ত বাড়ির ২০০ মিটারের মধ্যে ফগিং ও লার্ভিসাইডিং করতে হবে প্রতিদিন। পাশাপাশি নতুন আক্রান্ত এলাকা চিহ্নিত করে সেখানে পূর্বপ্রস্তুতি নিতে হবে, যাতে আগামী দিনগুলোতে আরও মৃত্যু ঠেকানো সম্ভব হয়।
ডেঙ্গু একটি প্রতিরোধযোগ্য রোগ। কিন্তু তা তখনই সম্ভব, যখন মশার উৎসস্থল ধ্বংস করা যায়। জলাবদ্ধতা, উন্মুক্ত ড্রেন, ব্যবহৃত পানির পাত্র, ফুলদানি, নির্মাণাধীন ভবনে জমে থাকা পানি—এসবই মশার জন্য প্রজননক্ষেত্র। আমরা যত দিন ধরে রাখতে বাধ্য হই বৃষ্টির পানি এবং সেই সঙ্গে লার্ভা, তত দিন ডেঙ্গু আমাদের পিছু ছাড়বে না।
গণমাধ্যমের পাশাপাশি স্থানীয় মসজিদ, স্কুল, ইউনিয়ন পরিষদ এবং কমিউনিটি ক্লাবগুলোরও দায়িত্ব রয়েছে। স্বাস্থ্যবিষয়ক সচেতনতা এখন কেবল বিজ্ঞাপন দিয়ে হবে না, দরকার মাঠপর্যায়ে কাজ। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বরিশালসহ অন্যান্য উপকূলীয় জেলা বা বৃষ্টিপ্রবণ এলাকা যাতে একই দশায় না পড়ে, এখনই সেখানে জরুরিভাবে ‘ভেক্টর কন্ট্রোল প্রোগ্রাম’ চালানো দরকার। নগর পরিকল্পনার অন্তর্ভুক্ত করে ডেঙ্গু প্রতিরোধকে দীর্ঘমেয়াদি কৌশলে রূপ দিতে হবে।
বরগুনা আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছে, কতটা অনিরাপদ আমরা। এই সংকট শুধু বরগুনার নয়, গোটা দেশের। এই সংকট ব্যবস্থাপনা, প্রস্তুতি এবং প্রতিরোধের। এখনই পদক্ষেপ না নিলে আমরা পুরো বর্ষাকালে মৃত্যু-সংবাদ শুনতে থাকব। এবং তখন প্রশ্ন থাকবে—কেন আমরা প্রস্তুত ছিলাম না, যখন সামনে ছিল ঝুঁকির স্পষ্ট চিত্র?
একটি সফল গণ-অভ্যুত্থানের মাত্র এক বছরের মধ্যে প্রশ্নটি সর্বব্যাপী হয়ে উঠেছে। কারণ, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে বৈষম্যহীন অন্তর্ভুক্তিমূলক গণতান্ত্রিক দেশ এবং ‘দায় ও দরদের সমাজ’ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়েছিল, গত এক বছরের চলার পথ তার ধারেকাছেও নেই। বরং এক বছর ধরে দেশবাসী দেখে...
১ ঘণ্টা আগেঢাকায় প্রতিদিন আমরা যে শ্বাস গ্রহণ করি, তার প্রতিটি কণায় লুকিয়ে আছে অদৃশ্য বিষ, যা নিঃশব্দে আমাদের দেহকে দুর্বল করে দিচ্ছে, কেড়ে নিচ্ছে সুস্থতার অধিকার। একসময় যাকে বলা হতো প্রাণের শহর, আজ তা যেন বিষে ভরা এক মৃত্যুপুরী। ঢাকার বাতাস আর নিছক বাতাস নয়—এ যেন নিশ্বাসের আড়ালে লুকিয়ে থাকা এক অদৃশ্য...
১ ঘণ্টা আগে২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ছাত্র আন্দোলন একটি স্ফুলিঙ্গ ছড়িয়েছিল বাংলাদেশের রাজনীতিতে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের দমন-পীড়ন, নির্বাচনী ব্যবস্থার ভেঙে পড়া কাঠামো এবং প্রচলিত দেউলিয়া রাজনীতির বিপরীতে তরুণদের নবজাগরণ এমন এক সম্ভাবনার জন্ম দিয়েছিল, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে নতুন একটি অধ্যায়ের সূচনা করতে পারত..
২ ঘণ্টা আগেচীনের বেইজিং শহরের তিয়েনআনমেন স্কয়ারের পূর্ব দিকে যে জাতীয় জাদুঘরটি রয়েছে, তা আধুনিককালে যাত্রা শুরু করলেও এর পেছনে জড়িয়ে আছে ১১৩ বছরের ইতিহাস। চীনের এই জাতীয় জাদুঘরের সূচনা ঘটে দুটি আলাদা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে—ন্যাশনাল মিউজিয়াম অব চায়নিজ হিস্টোরি ও মিউজিয়াম অব দ্য চায়নিজ রেভল্যুশন...
২ ঘণ্টা আগে