সম্পাদকীয়
মাকে নিয়ে চঞ্চল চৌধুরীর দেওয়া ফেসবুক স্ট্যাটাস নিয়ে যে কাণ্ডকীর্তি গড়ল একশ্রেণির ধর্মবাজ কুলাঙ্গারের দল, তাতে যেকোনো শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের মাথা হেট হয়ে আসবে। মায়ের মাথায় সিঁদুর দেখে কেউ কেউ বুঝতে পেরেছেন, চঞ্চল চৌধুরী মুসলমান নন। তিনি অন্য ধর্মের মানুষ হওয়ায় কেউ কেউ হতাশ হয়েছেন, কেউ কেউ ক্রুদ্ধ হয়েছেন, কেউ কেউ তাঁকে ধর্ম পরিবর্তন করে অশেষ নেক হাসিল করার অনুরোধ জানিয়েছেন। আর গালাগাল যা করেছেন, তা কহতব্য নয়। সে বিষয়গুলোর উল্লেখ করতে রুচিতে বাধে।
চঞ্চল চৌধুরী একজন জনপ্রিয় শিল্পী বলেই হয়তো এই ঘটনার সাম্প্রদায়িক ধাক্কাটা এত প্রচণ্ড হলো। নইলে আমরা অনেক আগেই দেখতে পেতাম, সাম্প্রদায়িকতার বিষ সমাজের কতটা গভীরে গিয়ে পৌঁছেছে। সমাজের যৌথভাবে চলার শক্তি ক্ষয় হয়ে গেছে। ছিন্ন হয়ে গেছে সংস্কৃতির বন্ধন। যে দেশটির জন্ম হয়েছিল অসাম্প্রদায়িকতার মন্ত্র বুকে নিয়ে, সে দেশের হৃদয় যে কোন ফাঁকে ধর্ম ব্যবসায়ীরা ধীরে ধীরে আত্মসাৎ করে নিল, তা টেরই পাওয়া গেল না।
নানাভাবে এই অরাজকতা ঘটেছে। প্রথমত, দেশ স্বাধীন হওয়ার পরপরই ধর্মনিরপেক্ষতা শব্দটির অপব্যাখ্যা পৌঁছে গেছে জনগণের মনে। এ দেশের মানুষ চিরকালই ধর্মপরায়ণ ছিল, কিন্তু ধর্মান্ধ ছিল না। ধর্মভীরু মানুষের মনে ধর্মনিরপেক্ষতাকে ধর্মহীনতা বলে চালিয়ে দেওয়া সহজ হয়েছে। রাষ্ট্র যে ধর্মনিরপেক্ষ হবে, অর্থাৎ সাংবিধানিকভাবে সব ধর্মের থাকবে সমান অধিকার, যে যার ধর্ম পালন করবে—এই ব্যাখ্যা নিয়ে কেউ জনগণকে বিষয়টি বোঝানোর দায়িত্ব নেয়নি। ফলে সাধারণ মানুষ ভেবেছে, ধর্মের বিরুদ্ধেই বুঝি ধর্মনিরপেক্ষতা।
দ্বিতীয়ত, পাকিস্তান রাষ্ট্রে শাসক ও শোষকেরা ধর্মকে ব্যবহার করেই ক্ষমতায় টিকে থাকার চেষ্টা করেছেন। বাঙালি জাতীয়তাবাদ ছিল তারই প্রতিক্রিয়ায় সৃষ্ট বাঙালি জাতির আকাঙক্ষার প্রতীক। কোনো ধর্মের প্রতিভূ না হয়ে রাষ্ট্র হবে সবার, রাষ্ট্র গড়ে উঠবে তার আবহমান সংস্কৃতির পরিচয়ে—এটাই ছিল স্বাধীন একটি রাষ্ট্র গঠনের অভিপ্রায়। কিন্তু দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতা এই অভিপ্রায়টিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেনি। বরং একাত্তরের পরাজিত শক্তির পাশাপাশি বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের নাম করে জাসদ নামে যে দলটি গড়ে ওঠে, তারাও দেশে অরাজকতা বৃদ্ধির কাজটি করতে থাকে। সদ্যপ্রসূত দেশটি এই দ্বিমুখী আক্রমণে বিপর্যস্ত হয়। এর সঙ্গে যুক্ত হয় বিদেশি চক্রান্ত। বিভিন্ন প্রশ্নে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ষড়যন্ত্র, সৌদি আরবসহ মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর বাংলাদেশ বিরোধিতা, মুসলিম দেশগুলোয় গিয়ে গোলাম আযমসহ পরাজিত শক্তির কার্যকলাপ আমাদের অসাম্প্রদায়িক পরিচয়কে ঘোলাটে করে তোলে। শাসক দল আওয়ামী লীগের ভেতরেও স্বজনপ্রীতি, দুর্নীতি দেখা দেয়। এই সবকিছুর মিলিত যোগফলই হলো দেশকে বিভ্রান্ত করা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শেষ তিন বছরের বক্তৃতাগুলো শুনলেই বোঝা যাবে, কত ধরনের প্রতিবন্ধকতা ছাপিয়ে তাঁকে এগিয়ে যেতে হচ্ছিল।
এরপর দেশি-বিদেশি চক্রান্তে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর যা ঘটতে থাকে, তার ভেতরেই মূলত নিহিত ছিল নব্য সাম্প্রদায়িকতার ভ্রূণ। যুদ্ধকালীন আমলাদের ফিরিয়ে আনা হলো প্রশাসনে। এদের বেশির ভাগই ছিল পাকিস্তানের ধর্মান্ধ রাজনীতির তল্পিবাহক। বিদেশ থেকে ডেকে এনে এম জি তাওয়াবকে করা হলো বিমান বাহিনীর প্রধান, যিনি বাংলাদেশকে ইসলামি প্রজাতন্ত্র বানানোর মন্ত্র আউড়ালেন। জিয়াউর রহমান তাঁর রাজনৈতিক দল তৈরি করলেন মুক্তিযুদ্ধবিরোধী চীনা বাম, ভাসানী ন্যাপ, মুসলিম লীগ আর জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের নিয়ে। যাঁরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বহন করতেন, তাঁদের সরিয়ে দিয়ে এ দেশটা পরিণত করা হলো মিনি পাকিস্তানে।
এই ইতিহাসটুকু না জানলে চঞ্চল চৌধুরীর ওপর হামলে পড়া এই জনগোষ্ঠীকে চেনা সহজ হবে না। দেশীয় সংস্কৃতিকে ধীরে ধীরে একপাশে ঠেলে দিয়ে এমন সব বিজাতীয় সাংস্কৃতিক উপাদান যুক্ত করা হলো, যা সাম্প্রদায়িকতাকে ডালপালা মেলার সুযোগ করে দিল। সংস্কৃতি গড়ে ওঠে যা-কিছু ভালো তা গ্রহণে, এবং যা-কিছু খারাপ তা বর্জনের মাধ্যমে। কিন্তু আমাদের দেশে দেখা গেল সংস্কৃতির ভালোটাকে নির্বাসনে পাঠিয়ে খারাপটাকে ধারণ করার প্রবণতা। তারই ধারাবাহিকতায় আমরা আজ এ রকম এক জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছি।
ওয়াজ মাহফিলের নামে একশ্রেণির ছদ্ম ধর্ম ব্যবসায়ী ইসলাম ও সংবিধানবিরোধী কথা বলে চলেছে অনর্গল। দেশীয় সংস্কৃতিকে কতল করে এরা একটি বিজাতীয় সংস্কৃতির ওপর নির্ভর করে দেশটাকে বদলে ফেলতে চাইছে। ওয়াজ মাহফিল অনেকের জন্যই খুব লাভজনক একটি ব্যবসা হওয়ায় দল-মতনির্বিশেষে সুযোগসন্ধানীর দল এর সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়ে। একই প্রবণতার কারণে তারা ঐতিহ্যবাহী যাত্রাগানে প্রিন্সেসের আমদানি করে যাত্রাকে কলুষিত করে, বিদায় জানায় জারি-সারি-ভাটিয়ালিকে। ঘরে ঘরে যে সংগীতচর্চা হতো, তা বাদ পড়ে যায়। সৌদি আরব থেকে সালাফি মতবাদ এসে জায়গা করে নেয় মরমি মতবাদকে হটিয়ে দিয়ে। এবং একসময় এসে দেখা যায়, ধর্ম ব্যবসায়ীদের চক্রান্তের বিরুদ্ধে জোরের সঙ্গে যে কথা বলা যেত গত শতাব্দীর ষাট থেকে নব্বইয়ের দশক পর্যন্ত, এখন তা বলার সাহস হারিয়ে ফেলেছে দেশের জনগণ। এমনকি দেশের নেতৃবৃন্দও এই ধর্ম ব্যবসায়ীদের সমঝে চলেন। তারই পরিণতিতে দিনের পর দিন তৈরি হয়েছে ব্যাপকসংখ্যক মানুষ, যারা ধর্ম সম্পর্কে এই উগ্রবাদীদের মিথ্যে বয়ানকে আত্মস্থ করে নিজেদের মগজকে তৈরি করে নিয়েছে। এরা পরমতকে একেবারেই সহ্য করতে পারে না। এবং নিজের ধর্মকে শ্রেষ্ঠ ধর্ম বলার পাশাপাশি অন্য ধর্মকে খাটো করার প্রবণতাও হালে পানি পেল। চঞ্চল চৌধুরী সেই প্রবণতারই শিকার।
বাংলাদেশের সংবিধানে সব ধর্মের মানুষের সমান অধিকারের বিষয়টি স্পষ্ট অক্ষরে লেখা আছে। সে লেখাগুলোকে জীবনে প্রবিষ্ট করানো না হলে অন্যকে ছোট করার এই কুসংস্কৃতি থেকে বের হওয়া যাবে না।
মাকে নিয়ে চঞ্চল চৌধুরীর দেওয়া ফেসবুক স্ট্যাটাস নিয়ে যে কাণ্ডকীর্তি গড়ল একশ্রেণির ধর্মবাজ কুলাঙ্গারের দল, তাতে যেকোনো শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের মাথা হেট হয়ে আসবে। মায়ের মাথায় সিঁদুর দেখে কেউ কেউ বুঝতে পেরেছেন, চঞ্চল চৌধুরী মুসলমান নন। তিনি অন্য ধর্মের মানুষ হওয়ায় কেউ কেউ হতাশ হয়েছেন, কেউ কেউ ক্রুদ্ধ হয়েছেন, কেউ কেউ তাঁকে ধর্ম পরিবর্তন করে অশেষ নেক হাসিল করার অনুরোধ জানিয়েছেন। আর গালাগাল যা করেছেন, তা কহতব্য নয়। সে বিষয়গুলোর উল্লেখ করতে রুচিতে বাধে।
চঞ্চল চৌধুরী একজন জনপ্রিয় শিল্পী বলেই হয়তো এই ঘটনার সাম্প্রদায়িক ধাক্কাটা এত প্রচণ্ড হলো। নইলে আমরা অনেক আগেই দেখতে পেতাম, সাম্প্রদায়িকতার বিষ সমাজের কতটা গভীরে গিয়ে পৌঁছেছে। সমাজের যৌথভাবে চলার শক্তি ক্ষয় হয়ে গেছে। ছিন্ন হয়ে গেছে সংস্কৃতির বন্ধন। যে দেশটির জন্ম হয়েছিল অসাম্প্রদায়িকতার মন্ত্র বুকে নিয়ে, সে দেশের হৃদয় যে কোন ফাঁকে ধর্ম ব্যবসায়ীরা ধীরে ধীরে আত্মসাৎ করে নিল, তা টেরই পাওয়া গেল না।
নানাভাবে এই অরাজকতা ঘটেছে। প্রথমত, দেশ স্বাধীন হওয়ার পরপরই ধর্মনিরপেক্ষতা শব্দটির অপব্যাখ্যা পৌঁছে গেছে জনগণের মনে। এ দেশের মানুষ চিরকালই ধর্মপরায়ণ ছিল, কিন্তু ধর্মান্ধ ছিল না। ধর্মভীরু মানুষের মনে ধর্মনিরপেক্ষতাকে ধর্মহীনতা বলে চালিয়ে দেওয়া সহজ হয়েছে। রাষ্ট্র যে ধর্মনিরপেক্ষ হবে, অর্থাৎ সাংবিধানিকভাবে সব ধর্মের থাকবে সমান অধিকার, যে যার ধর্ম পালন করবে—এই ব্যাখ্যা নিয়ে কেউ জনগণকে বিষয়টি বোঝানোর দায়িত্ব নেয়নি। ফলে সাধারণ মানুষ ভেবেছে, ধর্মের বিরুদ্ধেই বুঝি ধর্মনিরপেক্ষতা।
দ্বিতীয়ত, পাকিস্তান রাষ্ট্রে শাসক ও শোষকেরা ধর্মকে ব্যবহার করেই ক্ষমতায় টিকে থাকার চেষ্টা করেছেন। বাঙালি জাতীয়তাবাদ ছিল তারই প্রতিক্রিয়ায় সৃষ্ট বাঙালি জাতির আকাঙক্ষার প্রতীক। কোনো ধর্মের প্রতিভূ না হয়ে রাষ্ট্র হবে সবার, রাষ্ট্র গড়ে উঠবে তার আবহমান সংস্কৃতির পরিচয়ে—এটাই ছিল স্বাধীন একটি রাষ্ট্র গঠনের অভিপ্রায়। কিন্তু দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতা এই অভিপ্রায়টিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেনি। বরং একাত্তরের পরাজিত শক্তির পাশাপাশি বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের নাম করে জাসদ নামে যে দলটি গড়ে ওঠে, তারাও দেশে অরাজকতা বৃদ্ধির কাজটি করতে থাকে। সদ্যপ্রসূত দেশটি এই দ্বিমুখী আক্রমণে বিপর্যস্ত হয়। এর সঙ্গে যুক্ত হয় বিদেশি চক্রান্ত। বিভিন্ন প্রশ্নে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ষড়যন্ত্র, সৌদি আরবসহ মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর বাংলাদেশ বিরোধিতা, মুসলিম দেশগুলোয় গিয়ে গোলাম আযমসহ পরাজিত শক্তির কার্যকলাপ আমাদের অসাম্প্রদায়িক পরিচয়কে ঘোলাটে করে তোলে। শাসক দল আওয়ামী লীগের ভেতরেও স্বজনপ্রীতি, দুর্নীতি দেখা দেয়। এই সবকিছুর মিলিত যোগফলই হলো দেশকে বিভ্রান্ত করা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শেষ তিন বছরের বক্তৃতাগুলো শুনলেই বোঝা যাবে, কত ধরনের প্রতিবন্ধকতা ছাপিয়ে তাঁকে এগিয়ে যেতে হচ্ছিল।
এরপর দেশি-বিদেশি চক্রান্তে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর যা ঘটতে থাকে, তার ভেতরেই মূলত নিহিত ছিল নব্য সাম্প্রদায়িকতার ভ্রূণ। যুদ্ধকালীন আমলাদের ফিরিয়ে আনা হলো প্রশাসনে। এদের বেশির ভাগই ছিল পাকিস্তানের ধর্মান্ধ রাজনীতির তল্পিবাহক। বিদেশ থেকে ডেকে এনে এম জি তাওয়াবকে করা হলো বিমান বাহিনীর প্রধান, যিনি বাংলাদেশকে ইসলামি প্রজাতন্ত্র বানানোর মন্ত্র আউড়ালেন। জিয়াউর রহমান তাঁর রাজনৈতিক দল তৈরি করলেন মুক্তিযুদ্ধবিরোধী চীনা বাম, ভাসানী ন্যাপ, মুসলিম লীগ আর জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের নিয়ে। যাঁরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বহন করতেন, তাঁদের সরিয়ে দিয়ে এ দেশটা পরিণত করা হলো মিনি পাকিস্তানে।
এই ইতিহাসটুকু না জানলে চঞ্চল চৌধুরীর ওপর হামলে পড়া এই জনগোষ্ঠীকে চেনা সহজ হবে না। দেশীয় সংস্কৃতিকে ধীরে ধীরে একপাশে ঠেলে দিয়ে এমন সব বিজাতীয় সাংস্কৃতিক উপাদান যুক্ত করা হলো, যা সাম্প্রদায়িকতাকে ডালপালা মেলার সুযোগ করে দিল। সংস্কৃতি গড়ে ওঠে যা-কিছু ভালো তা গ্রহণে, এবং যা-কিছু খারাপ তা বর্জনের মাধ্যমে। কিন্তু আমাদের দেশে দেখা গেল সংস্কৃতির ভালোটাকে নির্বাসনে পাঠিয়ে খারাপটাকে ধারণ করার প্রবণতা। তারই ধারাবাহিকতায় আমরা আজ এ রকম এক জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছি।
ওয়াজ মাহফিলের নামে একশ্রেণির ছদ্ম ধর্ম ব্যবসায়ী ইসলাম ও সংবিধানবিরোধী কথা বলে চলেছে অনর্গল। দেশীয় সংস্কৃতিকে কতল করে এরা একটি বিজাতীয় সংস্কৃতির ওপর নির্ভর করে দেশটাকে বদলে ফেলতে চাইছে। ওয়াজ মাহফিল অনেকের জন্যই খুব লাভজনক একটি ব্যবসা হওয়ায় দল-মতনির্বিশেষে সুযোগসন্ধানীর দল এর সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়ে। একই প্রবণতার কারণে তারা ঐতিহ্যবাহী যাত্রাগানে প্রিন্সেসের আমদানি করে যাত্রাকে কলুষিত করে, বিদায় জানায় জারি-সারি-ভাটিয়ালিকে। ঘরে ঘরে যে সংগীতচর্চা হতো, তা বাদ পড়ে যায়। সৌদি আরব থেকে সালাফি মতবাদ এসে জায়গা করে নেয় মরমি মতবাদকে হটিয়ে দিয়ে। এবং একসময় এসে দেখা যায়, ধর্ম ব্যবসায়ীদের চক্রান্তের বিরুদ্ধে জোরের সঙ্গে যে কথা বলা যেত গত শতাব্দীর ষাট থেকে নব্বইয়ের দশক পর্যন্ত, এখন তা বলার সাহস হারিয়ে ফেলেছে দেশের জনগণ। এমনকি দেশের নেতৃবৃন্দও এই ধর্ম ব্যবসায়ীদের সমঝে চলেন। তারই পরিণতিতে দিনের পর দিন তৈরি হয়েছে ব্যাপকসংখ্যক মানুষ, যারা ধর্ম সম্পর্কে এই উগ্রবাদীদের মিথ্যে বয়ানকে আত্মস্থ করে নিজেদের মগজকে তৈরি করে নিয়েছে। এরা পরমতকে একেবারেই সহ্য করতে পারে না। এবং নিজের ধর্মকে শ্রেষ্ঠ ধর্ম বলার পাশাপাশি অন্য ধর্মকে খাটো করার প্রবণতাও হালে পানি পেল। চঞ্চল চৌধুরী সেই প্রবণতারই শিকার।
বাংলাদেশের সংবিধানে সব ধর্মের মানুষের সমান অধিকারের বিষয়টি স্পষ্ট অক্ষরে লেখা আছে। সে লেখাগুলোকে জীবনে প্রবিষ্ট করানো না হলে অন্যকে ছোট করার এই কুসংস্কৃতি থেকে বের হওয়া যাবে না।
গত সংখ্যায় লিখেছিলাম, এখন আর ছাত্র খুঁজে পাওয়া যায় না, চারদিকে পরীক্ষার্থী। কিন্তু দ্রুতই দেখা যাচ্ছে, ছাত্র এবং পরীক্ষার্থী কাউকেই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ছাত্রদের একটা বৃহদাংশ রাজনীতিবিদে পরিণত হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, তাদের অঙ্গুলি হেলনে বড় বড় রাজনৈতিক সিদ্ধান্তও হয়ে যাচ্ছে। ভেবেছিলাম প্রাথমিক শিক্ষা
২০ ঘণ্টা আগেবিজ্ঞানীরা বিংশ শতাব্দীজুড়ে বহির্জাগতিক প্রাণ অনুসন্ধানের চেষ্টা চালিয়েছেন। খুঁজেছেন কার্বনভিত্তিক, সিলিকনভিত্তিক বা অ্যামোনিয়া যৌগনির্ভর প্রাণ। এটা আমাদের জানা জরুরি যে প্রাণের প্রকৃতি, আর অন্য জায়গায় প্রাণ আছে কি না, তা আসলে একই প্রশ্নের দুটো দিক। তা হলো, ‘কেন আমরা এখানে?’ বিস্ময়ের ব্যাপার হচ্ছে,
২১ ঘণ্টা আগেপরিবার হলো মূলত রক্ত-সম্পর্কিত ব্যক্তিদের সংগঠন, যেখানে সব সদস্যের খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, নিরাপত্তা এবং বিনোদনের আয়োজন হয়ে থাকে। পরিবার কখন কী কারণে গড়ে উঠেছে, তা নিয়ে মতপার্থক্য রয়েছে। বেশির ভাগের মত হলো, মানুষ সমতলে বসবাস করার সময় কৃষিকাজ শিখে ফেলে। কৃষিজাত পণ্য সংরক্ষণের জন্য গোলাঘর
২১ ঘণ্টা আগেনিষিদ্ধ জিনিসের প্রতি মানুষের আকর্ষণ বেশি, এ কথা নতুন নয়। এবং এ ব্যাপারে প্রমাণের অভাব নেই। একটা কিছু নিষিদ্ধ করলেই যে তা ব্যবহার করা বন্ধ হয়ে যাবে, এমন ভাবাটাই ভুল। ধরুন, একটি রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলে সেই দলটি যে ছদ্মবেশে বা তলে তলে রাজনীতি করবে না, সেই গ্যারান্টি কে দিতে পারে? তেমনি কেউ
২১ ঘণ্টা আগে