আবু তাহের খান
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, ‘আমরা চাই, বাহাত্তরের মুজিববাদী সংবিধানের কবর রচিত হবে।’ ২৯ ডিসেম্বর এই বক্তব্য দানকালে তিনি আরও জানান, ৩১ ডিসেম্বর (২০২৪) জুলাই অভ্যুত্থানের যে ঘোষণাপত্র দেওয়া হবে, সেখানেই বাহাত্তরের সংবিধান কবরস্থ করার বিষয়টি যুক্ত থাকবে। এদিকে ওই বক্তব্যের পরপরই প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব জানান, জুলাই বিপ্লবের ঘোষণার সঙ্গে সরকারের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। অবশ্য পরদিনই সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সরকারই জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র দেবে। এরই ধারাবাহিকতায় এর পরদিন আবার পরিবেশ উপদেষ্টা নিশ্চিত করে, ১৫ জানুয়ারির মধ্যেই এটি দেওয়া হবে।
বিষয়গুলো অনেকটা উগ্রতাপূর্ণ, অস্বস্তিকর, গোলমেলে ও স্ববিরোধী হয়ে গেল নাকি? নানা জটিলতা ও অস্থিরতা সত্ত্বেও দেশে বর্তমানে একটি সংবিধান বহাল আছে। এ অবস্থায় কেউ যদি সংবিধানকে ‘কবর দিতে’ চায়, তাহলে সেটি একেবারেই শৃঙ্খলাবহির্ভূত অগণতান্ত্রিক ধারণা ও আচরণ হয়ে যায় নাকি? তা ছাড়া, বহু বছরের ধারাবাহিক সংগ্রাম, ত্যাগ ও রক্তের বিনিময়ে অর্জিত একটি দেশ ও তার সংবিধানকে এরূপ উচ্ছৃঙ্খলতাপূর্ণ কায়দায় কবর দেওয়ার প্রশ্ন আসছে কেন বা সেটি কতটা গ্রহণযোগ্য? সন্দেহ নেই, শেখ হাসিনা ও তাঁর দরবেশী শিষ্য ও লুটপাটকারী চাটুকারেরা গত দেড় দশকে বাংলাদেশ রাষ্ট্র এবং তার সমাজ ও অর্থনীতিকে ধ্বংসের প্রায় দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গিয়েছিলেন। আর সে অপরাধের বিচার ও শাস্তি দেশের সবারই কাম্য। কিন্তু কোনো ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর অপরাধের কারণে দৃষ্টান্তমূলক সংগ্রামের মধ্য দিয়ে অর্জিত রাষ্ট্রের সংবিধানকে ফ্যাসিবাদী কায়দায় ‘কবর দেওয়া হবে’—এটি জনগণের কাছে কীভাবে গ্রহণযোগ্য হবে?
বাহাত্তরের সংবিধানের ভালোমন্দ নিয়ে আলোচনা হতেই পারে। কিন্তু আইন ও সংবিধান নিয়ে ব্যাপক ও গভীরতর পড়াশোনা ছাড়াই দেশ-বিদেশে বসে নিছক পত্রপত্রিকায় কলাম লিখে পরিচয় পাওয়া ব্যক্তিরা যেভাবে এ সংবিধানকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করছেন, সে সংবিধান আসলে ততটা তাচ্ছিল্য করার মতো দলিল নয়। বিভিন্ন উন্নত দেশের সংবিধানের সঙ্গে তুলনামূলক আলোচনার বৈশ্বিক মানদণ্ডেও নয়। ওয়েস্টমিনস্টার ধাঁচে প্রণীত বাহাত্তরের সংবিধানকে নির্মোহ ও বস্তুনিষ্ঠ দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে গেলে এর ৭০ অনুচ্ছেদের মতো ছোটখাটো ত্রুটি ও অসম্পূর্ণতার কথা বাদ দিলে এটি নিঃসন্দেহে অতি উন্নতমানের একটি গঠনতন্ত্র। সমস্যা যেখানে, সেগুলোর অধিকাংশই বাহাত্তর-পরবর্তী সময়ে ব্যক্তি ও গোষ্ঠীস্বার্থে আনীত সংশোধনী, যার প্রথমটি শুরু হয় চতুর্থ সংশোধনীর মধ্য দিয়ে (প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় সংশোধনী মৌলিক কোনো পরিবর্তন নয়, করণিক ধাঁচের পরিমার্জনমাত্র)। চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে বহুদলীয় গণতন্ত্রের বিলুপ্তি ঘটানোর মধ্য দিয়েই বস্তুত বাহাত্তরের ওই উত্তম সংবিধানের নেতিবাচক যাত্রার শুরু।
১৯৭২ থেকে যাত্রা করে বাংলাদেশের সংবিধানে এ পর্যন্ত যে ১৭টি সংশোধনী আনা হয়েছে, এর মধ্যে একাদশ, দ্বাদশ ও ত্রয়োদশ সংশোধনী ছাড়া বাকি কোনো সংশোধনীই দেশের জনগণের নিরঙ্কুশ স্বার্থে আনা হয়নি—আনা হয়েছে ব্যক্তি ও গোষ্ঠীগত স্বার্থে। এ তিনটি সংশোধনী ছিল যথাক্রমে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতির পদ থেকে সাহাবুদ্দীন আহমদের স্বপদে ফিরে যাওয়া, রাষ্ট্রপতিশাসিত সরকারব্যবস্থা থেকে সংসদীয় ব্যবস্থায় প্রত্যাবর্তন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা প্রবর্তন। মজার ব্যাপার হচ্ছে, গত ৫২ বছরের ইতিহাসে এ তিনটি সংশোধনীই কেবল সর্বদলীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে আনা সম্ভব হয়েছে। ফলে প্রথম তিনটি বাদে ব্যক্তি ও গোষ্ঠীস্বার্থে আনা বাকি ১১টি জনস্বার্থবিহীন সংশোধনীর কারণেই বাহাত্তরের সংবিধানের নামে এত নেতিবাচক কথাবার্তা, যার জন্য বাহাত্তরের সংবিধান বা এর প্রণেতাদের কোনোই দায় নেই। অতএব এসব সংশোধনীবিহীন বাহাত্তরের মূল সংবিধান নিয়ে উচ্চবাচ্য করার সুযোগও খুবই কম।
এখন আসা যাক সংবিধান ‘কবরস্থকরণে’র বৈধতা ও এ-সংক্রান্ত আচরণ প্রসঙ্গে। একটি সভ্য ও পরিশীলিত সমাজে সংবিধান ও এ-জাতীয় দলিল সংশোধনের বিধান ও সুযোগ দুই-ই রয়েছে। সে ধারায় বাংলাদেশের সংবিধানকেও জনস্বার্থের প্রয়োজন অনুযায়ী সংশোধন করা যেতে পারে। কিন্তু এটিকে কবরস্থকরণের ঘোষণা কি সভ্য গণতান্ত্রিক সমাজের সঙ্গে যায়? জনগণের দ্বারা গৃহীত সংবিধানকে কবর দেওয়ার মতো আচরণ বস্তুতই উগ্রতা ও উচ্ছৃঙ্খলতার পরিচায়ক। এ ধরনের উগ্রতা ও উচ্ছৃঙ্খলতাপূর্ণ আচরণ যেকোনো আনুষ্ঠানিক রাষ্ট্রে অবধারিতভাবেই একটি অপরাধ। বাংলাদেশ সংবিধানের ৭.(১) অনুচ্ছেদে বলা আছে যে ‘কোন ব্যক্তি শক্তি প্রদর্শন বা শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে কিংবা অন্য কোন অসাংবিধানিক পন্থায় এই সংবিধান বা ইহার কোন অনুচ্ছেদ রদ, রহিত বা বাতিল বা স্থগিত করিলে কিংবা উহা করিবার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ বা ষড়যন্ত্র করিলে... তাহার এই কার্য রাষ্ট্রদ্রোহিতা হইবে এবং ঐ ব্যক্তি রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধে দোষী হইবে।’
উল্লিখিত ঘোষণাপত্র নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বক্তব্য ও সরকারের সিদ্ধান্তকে সাধারণ মানুষ পরস্পরের মধ্যকার সাজানো আয়োজন ভাবতে শুরু করেছে। আর এগুলোর মধ্যে একধরনের গোলমেলে অসংলগ্নতাও রয়েছে। রয়েছে স্ববিরোধিতা এবং নিজেদের মধ্যকার সম্পর্ক ও সমঝোতাকে অস্বীকার করার প্রবণতাও। ফলে সরকার ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ভবিষ্যৎ চিন্তাভাবনা ও কর্মসূচি নিয়ে খুব স্বাভাবিকভাবেই জনগণের মধ্যে একধরনের সন্দেহ, ভীতি ও আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। আর তারা পরস্পরের মধ্যকার সম্পর্ককে কেন লুকাতে চাইছে, সেটিও এক রহস্য বৈকি!
হাসনাত আবদুল্লাহ বাহাত্তরের সংবিধানকে বলেছেন মুজিববাদী সংবিধান এবং এর মূলনীতিতে ‘ভারতীয় আগ্রাসনের ইনস্টলমেন্ট’ রয়েছে বলে দাবি করেছেন। দীর্ঘ ২৩ বছরের ধারাবাহিক সংগ্রাম ও ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমেই বস্তুত বাহাত্তরের সংবিধান প্রণীত হয়েছে। আর এ সংবিধানের মূল ভিত্তি হচ্ছে ১৯৭১-এর ১৭ এপ্রিল গৃহীত স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র (The Proclamation of Independence), যেটি প্রণয়নের সময় বঙ্গবন্ধুর প্রত্যক্ষ কোনো সংশ্লিষ্টতাই ছিল না। বাহাত্তরের সংবিধান বস্তুত স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রেরই বর্ধিত সংস্করণ, যা কোনো বিশেষ ব্যক্তি, দল বা গোষ্ঠীর সমর্থনপুষ্ট দলিল নয়। কতিপয় চিহ্নিত স্বাধীনতাবিরোধী ছাড়া এটি ছিল দল-মত-আদর্শ-গোষ্ঠীনির্বিশেষে দেশের সব নাগরিকের মধ্যকার ঐকমত্যের দলিল। ফলে এটিকে মুজিববাদী সংবিধান হিসেবে অভিহিত করাটা অনেকটাই বিদ্বেষপ্রসূত অথবা ইতিহাস সম্পর্কে অজ্ঞতা। অন্যদিকে ওই সংবিধানের মূলনীতিতে ভারতীয় আগ্রাসনের উপাদান আছে—এরূপ বলাটা তথ্য বিকৃতির মাধ্যমে নাগরিকদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টিরই শামিল। বাংলাদেশ ও ভারত এই উভয় দেশের সংবিধানই এখন প্রকাশ্য দলিল। ফলে এ দুয়ের ভাষ্য পাশাপাশি রেখে তা হাসনাত আবদুল্লাহর বক্তব্যের সঙ্গে মিলিয়ে দেখলে সহজেই প্রতীয়মান হবে যে তাঁর এতৎসংক্রান্ত বক্তব্য একেবারেই তথ্যভিত্তিক নয়।
এবার আসা যাক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে জুতা নিক্ষেপের কর্মসূচি প্রসঙ্গে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং তাদের ভাষ্য অনুযায়ী অন্য আরও কয়েকটি সংগঠন মিলে গত ৩০ ডিসেম্বর এ কর্মসূচি পালন করেছে। শেখ হাসিনার ছবিসংবলিত ‘ঘৃণাস্তম্ভে’র ওপর জুতা নিক্ষেপের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক পূর্বঘোষণা দিয়ে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। কোনো ব্যক্তি বা তাঁর কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে অন্যদের আপত্তি বা ক্ষোভ থাকতেই পারে এবং গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সমাজে সে ক্ষোভ ও ভিন্নমত প্রকাশের প্রচলিত রীতিও রয়েছে। কিন্তু তাই বলে সেটি বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে জুতা নিক্ষেপের মাধ্যমে? এটি কি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা, ভাবমূর্তি ও ঐতিহ্যের সঙ্গে যায়? বিশ্ববিদ্যালয়ের শত-সহস্র মেধাবী, প্রতিশ্রুতিশীল ও সম্ভাবনাময় তরুণ শিক্ষার্থীরা কি এ কর্মসূচিকে সমর্থন বা ধারণ করছেন?
শেখ হাসিনার বিগত দেড় দশকের কর্মকাণ্ডে এ দেশের অধিকাংশ মানুষই প্রচণ্ডভাবে বিরক্ত, এমনকি তাঁর দলের লোকেরাও। কিন্তু তাই বলে জুতা নিক্ষেপের মতো কোনো কর্মসূচি একটি সভ্য সমাজে কতটুকু গ্রহণযোগ্য, যা পুরো পৃথিবীর মানুষ দেখছে? বাংলাদেশ সমাজের মানুষ কি এতটা নিচু সংস্কৃতিতে অভ্যস্ত? আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি প্রতিষ্ঠানের ক্যাম্পাসে যখন এ ধরনের ঘটনা ঘটে, তখন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি কী দাঁড়ায়? এ ঘটনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল কার্যক্রমের মান ও দক্ষতাকেও প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দিচ্ছে বৈকি! স্মর্তব্য যে এ ধরনের বিষয় বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে আন্তর্জাতিক র্যাঙ্কিংয়েও অনেকখানি পিছিয়ে দিচ্ছে।
সব মিলিয়ে বলব, সংবিধানকে কবরস্থকরণ ও ক্যাম্পাসে জুতা নিক্ষেপ কর্মসূচি গ্রহণের মধ্য দিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন তাদের আন্দোলনকালীন বক্তব্যকেই পরিহার করল বৈকি!
ফ্যাসিবাদের বিপক্ষে দাঁড়াবার কথা বলে তারা নিজেরাই এখন ফ্যাসিবাদীদের মতো আচরণ করছে। আর এর মাধ্যমে জনগণের
মধ্যে অস্বস্তি ও হতাশাই শুধু বাড়ছে না, এসব আচরণ স্বাধীনতাবিরোধীদের পক্ষে যাচ্ছে কি না, সে প্রশ্নও উঠছে। সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স ইতিমধ্যে এ কবরস্থকরণসংক্রান্ত বক্তব্যকে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির আচরণের মতো বলে উল্লেখ করেছেন। তাঁর এ বক্তব্য দেশের সাধারণ মানুষেরও বক্তব্য। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এসব বক্তব্য ও আচরণ থেকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে একদিকে যেমন সরকারের এলোমেলো দশার চিত্র ফুটে উঠছে, অন্যদিকে তেমনি রাষ্ট্রের ভাবমূর্তিও প্রচণ্ডভাবে ক্ষুণ্ন হচ্ছে। বিষয়গুলো সরকার ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা যত
দ্রুত উপলব্ধি করবেন, ততই মঙ্গল। আর পরিশেষে বলা, এ লেখা সরকারের সমালোচনার জন্য নয়—ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে তাদের ত্রুটিগুলো ধরিয়ে দেওয়ার জন্য।
লেখক: সাবেক পরিচালক, বিসিক
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, ‘আমরা চাই, বাহাত্তরের মুজিববাদী সংবিধানের কবর রচিত হবে।’ ২৯ ডিসেম্বর এই বক্তব্য দানকালে তিনি আরও জানান, ৩১ ডিসেম্বর (২০২৪) জুলাই অভ্যুত্থানের যে ঘোষণাপত্র দেওয়া হবে, সেখানেই বাহাত্তরের সংবিধান কবরস্থ করার বিষয়টি যুক্ত থাকবে। এদিকে ওই বক্তব্যের পরপরই প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব জানান, জুলাই বিপ্লবের ঘোষণার সঙ্গে সরকারের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। অবশ্য পরদিনই সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সরকারই জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র দেবে। এরই ধারাবাহিকতায় এর পরদিন আবার পরিবেশ উপদেষ্টা নিশ্চিত করে, ১৫ জানুয়ারির মধ্যেই এটি দেওয়া হবে।
বিষয়গুলো অনেকটা উগ্রতাপূর্ণ, অস্বস্তিকর, গোলমেলে ও স্ববিরোধী হয়ে গেল নাকি? নানা জটিলতা ও অস্থিরতা সত্ত্বেও দেশে বর্তমানে একটি সংবিধান বহাল আছে। এ অবস্থায় কেউ যদি সংবিধানকে ‘কবর দিতে’ চায়, তাহলে সেটি একেবারেই শৃঙ্খলাবহির্ভূত অগণতান্ত্রিক ধারণা ও আচরণ হয়ে যায় নাকি? তা ছাড়া, বহু বছরের ধারাবাহিক সংগ্রাম, ত্যাগ ও রক্তের বিনিময়ে অর্জিত একটি দেশ ও তার সংবিধানকে এরূপ উচ্ছৃঙ্খলতাপূর্ণ কায়দায় কবর দেওয়ার প্রশ্ন আসছে কেন বা সেটি কতটা গ্রহণযোগ্য? সন্দেহ নেই, শেখ হাসিনা ও তাঁর দরবেশী শিষ্য ও লুটপাটকারী চাটুকারেরা গত দেড় দশকে বাংলাদেশ রাষ্ট্র এবং তার সমাজ ও অর্থনীতিকে ধ্বংসের প্রায় দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গিয়েছিলেন। আর সে অপরাধের বিচার ও শাস্তি দেশের সবারই কাম্য। কিন্তু কোনো ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর অপরাধের কারণে দৃষ্টান্তমূলক সংগ্রামের মধ্য দিয়ে অর্জিত রাষ্ট্রের সংবিধানকে ফ্যাসিবাদী কায়দায় ‘কবর দেওয়া হবে’—এটি জনগণের কাছে কীভাবে গ্রহণযোগ্য হবে?
বাহাত্তরের সংবিধানের ভালোমন্দ নিয়ে আলোচনা হতেই পারে। কিন্তু আইন ও সংবিধান নিয়ে ব্যাপক ও গভীরতর পড়াশোনা ছাড়াই দেশ-বিদেশে বসে নিছক পত্রপত্রিকায় কলাম লিখে পরিচয় পাওয়া ব্যক্তিরা যেভাবে এ সংবিধানকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করছেন, সে সংবিধান আসলে ততটা তাচ্ছিল্য করার মতো দলিল নয়। বিভিন্ন উন্নত দেশের সংবিধানের সঙ্গে তুলনামূলক আলোচনার বৈশ্বিক মানদণ্ডেও নয়। ওয়েস্টমিনস্টার ধাঁচে প্রণীত বাহাত্তরের সংবিধানকে নির্মোহ ও বস্তুনিষ্ঠ দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে গেলে এর ৭০ অনুচ্ছেদের মতো ছোটখাটো ত্রুটি ও অসম্পূর্ণতার কথা বাদ দিলে এটি নিঃসন্দেহে অতি উন্নতমানের একটি গঠনতন্ত্র। সমস্যা যেখানে, সেগুলোর অধিকাংশই বাহাত্তর-পরবর্তী সময়ে ব্যক্তি ও গোষ্ঠীস্বার্থে আনীত সংশোধনী, যার প্রথমটি শুরু হয় চতুর্থ সংশোধনীর মধ্য দিয়ে (প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় সংশোধনী মৌলিক কোনো পরিবর্তন নয়, করণিক ধাঁচের পরিমার্জনমাত্র)। চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে বহুদলীয় গণতন্ত্রের বিলুপ্তি ঘটানোর মধ্য দিয়েই বস্তুত বাহাত্তরের ওই উত্তম সংবিধানের নেতিবাচক যাত্রার শুরু।
১৯৭২ থেকে যাত্রা করে বাংলাদেশের সংবিধানে এ পর্যন্ত যে ১৭টি সংশোধনী আনা হয়েছে, এর মধ্যে একাদশ, দ্বাদশ ও ত্রয়োদশ সংশোধনী ছাড়া বাকি কোনো সংশোধনীই দেশের জনগণের নিরঙ্কুশ স্বার্থে আনা হয়নি—আনা হয়েছে ব্যক্তি ও গোষ্ঠীগত স্বার্থে। এ তিনটি সংশোধনী ছিল যথাক্রমে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতির পদ থেকে সাহাবুদ্দীন আহমদের স্বপদে ফিরে যাওয়া, রাষ্ট্রপতিশাসিত সরকারব্যবস্থা থেকে সংসদীয় ব্যবস্থায় প্রত্যাবর্তন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা প্রবর্তন। মজার ব্যাপার হচ্ছে, গত ৫২ বছরের ইতিহাসে এ তিনটি সংশোধনীই কেবল সর্বদলীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে আনা সম্ভব হয়েছে। ফলে প্রথম তিনটি বাদে ব্যক্তি ও গোষ্ঠীস্বার্থে আনা বাকি ১১টি জনস্বার্থবিহীন সংশোধনীর কারণেই বাহাত্তরের সংবিধানের নামে এত নেতিবাচক কথাবার্তা, যার জন্য বাহাত্তরের সংবিধান বা এর প্রণেতাদের কোনোই দায় নেই। অতএব এসব সংশোধনীবিহীন বাহাত্তরের মূল সংবিধান নিয়ে উচ্চবাচ্য করার সুযোগও খুবই কম।
এখন আসা যাক সংবিধান ‘কবরস্থকরণে’র বৈধতা ও এ-সংক্রান্ত আচরণ প্রসঙ্গে। একটি সভ্য ও পরিশীলিত সমাজে সংবিধান ও এ-জাতীয় দলিল সংশোধনের বিধান ও সুযোগ দুই-ই রয়েছে। সে ধারায় বাংলাদেশের সংবিধানকেও জনস্বার্থের প্রয়োজন অনুযায়ী সংশোধন করা যেতে পারে। কিন্তু এটিকে কবরস্থকরণের ঘোষণা কি সভ্য গণতান্ত্রিক সমাজের সঙ্গে যায়? জনগণের দ্বারা গৃহীত সংবিধানকে কবর দেওয়ার মতো আচরণ বস্তুতই উগ্রতা ও উচ্ছৃঙ্খলতার পরিচায়ক। এ ধরনের উগ্রতা ও উচ্ছৃঙ্খলতাপূর্ণ আচরণ যেকোনো আনুষ্ঠানিক রাষ্ট্রে অবধারিতভাবেই একটি অপরাধ। বাংলাদেশ সংবিধানের ৭.(১) অনুচ্ছেদে বলা আছে যে ‘কোন ব্যক্তি শক্তি প্রদর্শন বা শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে কিংবা অন্য কোন অসাংবিধানিক পন্থায় এই সংবিধান বা ইহার কোন অনুচ্ছেদ রদ, রহিত বা বাতিল বা স্থগিত করিলে কিংবা উহা করিবার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ বা ষড়যন্ত্র করিলে... তাহার এই কার্য রাষ্ট্রদ্রোহিতা হইবে এবং ঐ ব্যক্তি রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধে দোষী হইবে।’
উল্লিখিত ঘোষণাপত্র নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বক্তব্য ও সরকারের সিদ্ধান্তকে সাধারণ মানুষ পরস্পরের মধ্যকার সাজানো আয়োজন ভাবতে শুরু করেছে। আর এগুলোর মধ্যে একধরনের গোলমেলে অসংলগ্নতাও রয়েছে। রয়েছে স্ববিরোধিতা এবং নিজেদের মধ্যকার সম্পর্ক ও সমঝোতাকে অস্বীকার করার প্রবণতাও। ফলে সরকার ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ভবিষ্যৎ চিন্তাভাবনা ও কর্মসূচি নিয়ে খুব স্বাভাবিকভাবেই জনগণের মধ্যে একধরনের সন্দেহ, ভীতি ও আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। আর তারা পরস্পরের মধ্যকার সম্পর্ককে কেন লুকাতে চাইছে, সেটিও এক রহস্য বৈকি!
হাসনাত আবদুল্লাহ বাহাত্তরের সংবিধানকে বলেছেন মুজিববাদী সংবিধান এবং এর মূলনীতিতে ‘ভারতীয় আগ্রাসনের ইনস্টলমেন্ট’ রয়েছে বলে দাবি করেছেন। দীর্ঘ ২৩ বছরের ধারাবাহিক সংগ্রাম ও ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমেই বস্তুত বাহাত্তরের সংবিধান প্রণীত হয়েছে। আর এ সংবিধানের মূল ভিত্তি হচ্ছে ১৯৭১-এর ১৭ এপ্রিল গৃহীত স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র (The Proclamation of Independence), যেটি প্রণয়নের সময় বঙ্গবন্ধুর প্রত্যক্ষ কোনো সংশ্লিষ্টতাই ছিল না। বাহাত্তরের সংবিধান বস্তুত স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রেরই বর্ধিত সংস্করণ, যা কোনো বিশেষ ব্যক্তি, দল বা গোষ্ঠীর সমর্থনপুষ্ট দলিল নয়। কতিপয় চিহ্নিত স্বাধীনতাবিরোধী ছাড়া এটি ছিল দল-মত-আদর্শ-গোষ্ঠীনির্বিশেষে দেশের সব নাগরিকের মধ্যকার ঐকমত্যের দলিল। ফলে এটিকে মুজিববাদী সংবিধান হিসেবে অভিহিত করাটা অনেকটাই বিদ্বেষপ্রসূত অথবা ইতিহাস সম্পর্কে অজ্ঞতা। অন্যদিকে ওই সংবিধানের মূলনীতিতে ভারতীয় আগ্রাসনের উপাদান আছে—এরূপ বলাটা তথ্য বিকৃতির মাধ্যমে নাগরিকদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টিরই শামিল। বাংলাদেশ ও ভারত এই উভয় দেশের সংবিধানই এখন প্রকাশ্য দলিল। ফলে এ দুয়ের ভাষ্য পাশাপাশি রেখে তা হাসনাত আবদুল্লাহর বক্তব্যের সঙ্গে মিলিয়ে দেখলে সহজেই প্রতীয়মান হবে যে তাঁর এতৎসংক্রান্ত বক্তব্য একেবারেই তথ্যভিত্তিক নয়।
এবার আসা যাক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে জুতা নিক্ষেপের কর্মসূচি প্রসঙ্গে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং তাদের ভাষ্য অনুযায়ী অন্য আরও কয়েকটি সংগঠন মিলে গত ৩০ ডিসেম্বর এ কর্মসূচি পালন করেছে। শেখ হাসিনার ছবিসংবলিত ‘ঘৃণাস্তম্ভে’র ওপর জুতা নিক্ষেপের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক পূর্বঘোষণা দিয়ে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। কোনো ব্যক্তি বা তাঁর কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে অন্যদের আপত্তি বা ক্ষোভ থাকতেই পারে এবং গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সমাজে সে ক্ষোভ ও ভিন্নমত প্রকাশের প্রচলিত রীতিও রয়েছে। কিন্তু তাই বলে সেটি বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে জুতা নিক্ষেপের মাধ্যমে? এটি কি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা, ভাবমূর্তি ও ঐতিহ্যের সঙ্গে যায়? বিশ্ববিদ্যালয়ের শত-সহস্র মেধাবী, প্রতিশ্রুতিশীল ও সম্ভাবনাময় তরুণ শিক্ষার্থীরা কি এ কর্মসূচিকে সমর্থন বা ধারণ করছেন?
শেখ হাসিনার বিগত দেড় দশকের কর্মকাণ্ডে এ দেশের অধিকাংশ মানুষই প্রচণ্ডভাবে বিরক্ত, এমনকি তাঁর দলের লোকেরাও। কিন্তু তাই বলে জুতা নিক্ষেপের মতো কোনো কর্মসূচি একটি সভ্য সমাজে কতটুকু গ্রহণযোগ্য, যা পুরো পৃথিবীর মানুষ দেখছে? বাংলাদেশ সমাজের মানুষ কি এতটা নিচু সংস্কৃতিতে অভ্যস্ত? আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি প্রতিষ্ঠানের ক্যাম্পাসে যখন এ ধরনের ঘটনা ঘটে, তখন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি কী দাঁড়ায়? এ ঘটনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল কার্যক্রমের মান ও দক্ষতাকেও প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দিচ্ছে বৈকি! স্মর্তব্য যে এ ধরনের বিষয় বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে আন্তর্জাতিক র্যাঙ্কিংয়েও অনেকখানি পিছিয়ে দিচ্ছে।
সব মিলিয়ে বলব, সংবিধানকে কবরস্থকরণ ও ক্যাম্পাসে জুতা নিক্ষেপ কর্মসূচি গ্রহণের মধ্য দিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন তাদের আন্দোলনকালীন বক্তব্যকেই পরিহার করল বৈকি!
ফ্যাসিবাদের বিপক্ষে দাঁড়াবার কথা বলে তারা নিজেরাই এখন ফ্যাসিবাদীদের মতো আচরণ করছে। আর এর মাধ্যমে জনগণের
মধ্যে অস্বস্তি ও হতাশাই শুধু বাড়ছে না, এসব আচরণ স্বাধীনতাবিরোধীদের পক্ষে যাচ্ছে কি না, সে প্রশ্নও উঠছে। সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স ইতিমধ্যে এ কবরস্থকরণসংক্রান্ত বক্তব্যকে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির আচরণের মতো বলে উল্লেখ করেছেন। তাঁর এ বক্তব্য দেশের সাধারণ মানুষেরও বক্তব্য। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এসব বক্তব্য ও আচরণ থেকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে একদিকে যেমন সরকারের এলোমেলো দশার চিত্র ফুটে উঠছে, অন্যদিকে তেমনি রাষ্ট্রের ভাবমূর্তিও প্রচণ্ডভাবে ক্ষুণ্ন হচ্ছে। বিষয়গুলো সরকার ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা যত
দ্রুত উপলব্ধি করবেন, ততই মঙ্গল। আর পরিশেষে বলা, এ লেখা সরকারের সমালোচনার জন্য নয়—ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে তাদের ত্রুটিগুলো ধরিয়ে দেওয়ার জন্য।
লেখক: সাবেক পরিচালক, বিসিক
২০ বছর আগে বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে অটিজম শব্দটির অস্তিত্ব প্রায় খুঁজে পাওয়া যেত না। অটিজম বিষয়ে মানুষের ধারণা সীমিত ছিল। ঠিক সেই সময়ে অটিজম ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন পরিচালিত বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান ‘কানন’ প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০০৪ সালের ৪ এপ্রিল, বায়তুল আমান হাউজিং সোসাইটির একটি চারতলা ভাড়া বাড়িতে...
১০ ঘণ্টা আগেমাঝে মাঝে মনে হয় দেশটা বুঝি ট্রায়াল অ্যান্ড এররের ভিত্তিতে চলছে। রাজনীতি, অর্থনীতি, সংস্কৃতি, এমনকি আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়েও নানা ধরনের পরীক্ষামূলক তত্ত্ব দেখতে পাচ্ছি। প্রথমে নতুন কিছু একটা বলা হয় বা চালু করা হয়। তারপর দেখা হয়—কতটা বিতর্ক হয় সেটা নিয়ে।
১৬ ঘণ্টা আগেসম্প্রতি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীকে দেওয়া ও অস্থায়ী আবাসনসহ বিভিন্ন দাবিতে শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলনের ফলে কর্তৃপক্ষ আন্দোলনের দাবি মেনে নিয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, কর্তৃপক্ষ দাবি মেনে নেওয়ার পরও প্রত্যাশিত দাবির বাস্তবায়ন না দেখে আবারও...
১৬ ঘণ্টা আগেআকৃষ্ট করেছিল, সে বাণী যেন কথার কথায় পরিণত হওয়ার জন্য অপেক্ষা করছে। ভালো একটি ভবিষ্যতের আশা ক্রমেই ধূসরতার দিকে যাচ্ছে। শীর্ষ সন্ত্রাসীরা রাজধানীর নিউ এলিফ্যান্ট রোড ও নিউমার্কেট এলাকার মধ্যে থাকা ৫৭টি মার্কেটের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে। এই মার্কেটগুলো থেকে প্রতি মাসে সেবা খাত...
১৬ ঘণ্টা আগে