ড. মুহাম্মদ আল মাহমুদ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাজনীতি এক গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে এসে দাঁড়িয়েছে। একদিকে প্রশাসন দ্রুততম সময়ে জাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পাঁয়তারা করছে। অন্যদিকে ছাত্রদল চায় জাকসুর গঠনতন্ত্রসহ প্রয়োজনীয় সংস্কারের পর নির্বাচন হোক। যৌক্তিক দাবির ভিত্তিতে তারা প্রশাসনের কাছে একটি স্মারকলিপি দিয়েছে, ক্যাম্পাসে প্রতিবাদ সভাও করেছে। কিন্তু প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া দেখে মনে হচ্ছে, তারা এই দাবিগুলোকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করতে প্রস্তুত নয়।
দেখা গেছে—শিবির-সমর্থিত ছাত্ররা ‘সাধারণ ছাত্রছাত্রী’ নামে দ্রুত তফসিল ঘোষণার পক্ষে মিছিল করছে। তারা বলছে, উপাচার্য সাহেব জুলাই বিপ্লবের আদর্শ ধারণ করতে পারছেন না। বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক বাস্তবতাকে আরও প্রশ্নবিদ্ধ করছে। অথচ ছাত্রদল যে দাবিটি করছে, সেটাই প্রকৃত অর্থে জুলাই ছাত্র গণ-অভ্যুত্থানের চেতনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
জাকসু নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ করতে হলে প্রশাসনকে অবশ্যই নির্বাচনপূর্ব কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাঠামোগত সংস্কার নিশ্চিত করতে হবে। বিদ্যমান আহ্বায়ক ফ্যাসিলিটি পুনর্গঠন করা এর মধ্যে অন্যতম। বর্তমানে ফ্যাসিলিটি পরিচালনার গঠন ও কার্যপদ্ধতি পক্ষপাতদুষ্ট বলে ছাত্রদের মধ্যে একটি সুস্পষ্ট অভিযোগ রয়েছে। প্রশাসন যদি প্রকৃতপক্ষে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চায়, তবে তাদের এই কাঠামো সংস্কার করে নিশ্চিত করতে হবে যে, কোনো নির্দিষ্ট ছাত্রসংগঠন বা গোষ্ঠী এতে অন্যায্য সুবিধা পাবে না।
নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত করতে হলে নির্বাচনী তফসিলও সকল ছাত্রসংগঠনের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে নির্ধারণ করা জরুরি। অথচ বাস্তবতা হলো, প্রশাসন একতরফাভাবে তফসিল ঘোষণার পাঁয়তারা করছে, যা বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ ধরনের একপাক্ষিক সিদ্ধান্ত গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় এবং নির্বাচনের বৈধতাকেও প্রশ্নবিদ্ধ করে।
এই বাস্তবতায় ছাত্রদলের দাবিটিকেই যৌক্তিক বলে মনে হচ্ছে। তাদের মতে, নির্বাচনের আগে ছাত্রসংগঠনগুলোর কাঠামোগত অনুমোদন নিশ্চিত করতে হবে। প্রতিটি সংগঠনকে অন্তত ১৭ সদস্য বিশিষ্ট নির্বাহী কমিটি গঠনের সুযোগ দিতে হবে, যাতে তারা সংগঠিতভাবে নির্বাচনে অংশ নিতে পারে। নির্বাচনের আগেই কাঠামোগত স্বীকৃতি না দিলে, কিছু ছাত্রসংগঠন অনিবার্যভাবে একটি অসম প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হবে, যা গণতান্ত্রিক চেতনার পরিপন্থী।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সাধারণ ছাত্রদের ওপর রাষ্ট্রীয় প্রশাসন ও ছাত্রলীগের বর্বর হামলা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এক কালো অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে। সেই সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন এই নৃশংস হামলার বিষয়ে নীরব ভূমিকা পালন করেছিল। এখন ছাত্রদল সেই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের শাস্তির দাবি করছে এবং পতিত ফ্যাসিস্টের দোসরদের প্রভাবমুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গড়ে তোলার কথা বলছে। প্রশাসন যদি সত্যিকার অর্থে নিরপেক্ষ হয়, তবে এই দাবিকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা উচিত।
জাকসু নির্বাচন কোনো সাধারণ ইভেন্ট নয়, এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাজনীতির ভবিষ্যৎ নির্ধারণের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। তাই প্রশাসনের উচিত হবে, দ্রুত বিদ্যমান ফ্যাসিলিটি পুনর্গঠন করা এবং সকল ছাত্রসংগঠনের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে গ্রহণযোগ্য তফসিল ঘোষণা করা। যদি প্রশাসন এই দাবিগুলো উপেক্ষা করে, তবে এই নির্বাচন গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে স্বীকৃতি পাবে না, বরং তা একটি পক্ষপাতদুষ্ট নির্বাচন হিসেবে ইতিহাসে নথিভুক্ত হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বলে, প্রতিটি দমনমূলক নীতির বিরুদ্ধে ছাত্রসমাজ প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না। প্রশ্ন হলো—প্রশাসন কি সেই সংঘাতের দিকে এগোতে চায়, নাকি একটি গ্রহণযোগ্য ও স্বচ্ছ নির্বাচনের মাধ্যমে ছাত্ররাজনীতির স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করতে চায়? সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব এখন তাদের।
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, সাগা ইউনিভার্সিটি, জাপান
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাজনীতি এক গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে এসে দাঁড়িয়েছে। একদিকে প্রশাসন দ্রুততম সময়ে জাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পাঁয়তারা করছে। অন্যদিকে ছাত্রদল চায় জাকসুর গঠনতন্ত্রসহ প্রয়োজনীয় সংস্কারের পর নির্বাচন হোক। যৌক্তিক দাবির ভিত্তিতে তারা প্রশাসনের কাছে একটি স্মারকলিপি দিয়েছে, ক্যাম্পাসে প্রতিবাদ সভাও করেছে। কিন্তু প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া দেখে মনে হচ্ছে, তারা এই দাবিগুলোকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করতে প্রস্তুত নয়।
দেখা গেছে—শিবির-সমর্থিত ছাত্ররা ‘সাধারণ ছাত্রছাত্রী’ নামে দ্রুত তফসিল ঘোষণার পক্ষে মিছিল করছে। তারা বলছে, উপাচার্য সাহেব জুলাই বিপ্লবের আদর্শ ধারণ করতে পারছেন না। বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক বাস্তবতাকে আরও প্রশ্নবিদ্ধ করছে। অথচ ছাত্রদল যে দাবিটি করছে, সেটাই প্রকৃত অর্থে জুলাই ছাত্র গণ-অভ্যুত্থানের চেতনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
জাকসু নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ করতে হলে প্রশাসনকে অবশ্যই নির্বাচনপূর্ব কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাঠামোগত সংস্কার নিশ্চিত করতে হবে। বিদ্যমান আহ্বায়ক ফ্যাসিলিটি পুনর্গঠন করা এর মধ্যে অন্যতম। বর্তমানে ফ্যাসিলিটি পরিচালনার গঠন ও কার্যপদ্ধতি পক্ষপাতদুষ্ট বলে ছাত্রদের মধ্যে একটি সুস্পষ্ট অভিযোগ রয়েছে। প্রশাসন যদি প্রকৃতপক্ষে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চায়, তবে তাদের এই কাঠামো সংস্কার করে নিশ্চিত করতে হবে যে, কোনো নির্দিষ্ট ছাত্রসংগঠন বা গোষ্ঠী এতে অন্যায্য সুবিধা পাবে না।
নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত করতে হলে নির্বাচনী তফসিলও সকল ছাত্রসংগঠনের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে নির্ধারণ করা জরুরি। অথচ বাস্তবতা হলো, প্রশাসন একতরফাভাবে তফসিল ঘোষণার পাঁয়তারা করছে, যা বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ ধরনের একপাক্ষিক সিদ্ধান্ত গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় এবং নির্বাচনের বৈধতাকেও প্রশ্নবিদ্ধ করে।
এই বাস্তবতায় ছাত্রদলের দাবিটিকেই যৌক্তিক বলে মনে হচ্ছে। তাদের মতে, নির্বাচনের আগে ছাত্রসংগঠনগুলোর কাঠামোগত অনুমোদন নিশ্চিত করতে হবে। প্রতিটি সংগঠনকে অন্তত ১৭ সদস্য বিশিষ্ট নির্বাহী কমিটি গঠনের সুযোগ দিতে হবে, যাতে তারা সংগঠিতভাবে নির্বাচনে অংশ নিতে পারে। নির্বাচনের আগেই কাঠামোগত স্বীকৃতি না দিলে, কিছু ছাত্রসংগঠন অনিবার্যভাবে একটি অসম প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হবে, যা গণতান্ত্রিক চেতনার পরিপন্থী।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সাধারণ ছাত্রদের ওপর রাষ্ট্রীয় প্রশাসন ও ছাত্রলীগের বর্বর হামলা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এক কালো অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে। সেই সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন এই নৃশংস হামলার বিষয়ে নীরব ভূমিকা পালন করেছিল। এখন ছাত্রদল সেই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের শাস্তির দাবি করছে এবং পতিত ফ্যাসিস্টের দোসরদের প্রভাবমুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গড়ে তোলার কথা বলছে। প্রশাসন যদি সত্যিকার অর্থে নিরপেক্ষ হয়, তবে এই দাবিকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা উচিত।
জাকসু নির্বাচন কোনো সাধারণ ইভেন্ট নয়, এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাজনীতির ভবিষ্যৎ নির্ধারণের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। তাই প্রশাসনের উচিত হবে, দ্রুত বিদ্যমান ফ্যাসিলিটি পুনর্গঠন করা এবং সকল ছাত্রসংগঠনের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে গ্রহণযোগ্য তফসিল ঘোষণা করা। যদি প্রশাসন এই দাবিগুলো উপেক্ষা করে, তবে এই নির্বাচন গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে স্বীকৃতি পাবে না, বরং তা একটি পক্ষপাতদুষ্ট নির্বাচন হিসেবে ইতিহাসে নথিভুক্ত হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বলে, প্রতিটি দমনমূলক নীতির বিরুদ্ধে ছাত্রসমাজ প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না। প্রশ্ন হলো—প্রশাসন কি সেই সংঘাতের দিকে এগোতে চায়, নাকি একটি গ্রহণযোগ্য ও স্বচ্ছ নির্বাচনের মাধ্যমে ছাত্ররাজনীতির স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করতে চায়? সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব এখন তাদের।
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, সাগা ইউনিভার্সিটি, জাপান
১৯৪৯ সালের ২৩ জুন মওলানা ভাসানীকে সভাপতি এবং শামসুল হককে সাধারণ সম্পাদক করে গঠিত হয়েছিল আওয়ামী লীগ। তখন শেখ মুজিবুর রহমান জেলে ছিলেন, তাঁকে করা হয়েছিল দলের যুগ্ম সম্পাদক। পরবর্তী সময়ে শামসুল হক অপ্রকৃতিস্থ হয়ে যাওয়ায় শেখ মুজিবুর রহমানকে দলের সাধারণ সম্পাদক করা হয়।
১১ ঘণ্টা আগেআমাদের দেশে অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদসংক্রান্ত সুনির্দিষ্ট কোনো আইনকানুন কিংবা বিধিবিধান নেই। তাহলে এই সরকারের মেয়াদ কত দিন হবে? একটি সফল গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে, সেই অভ্যুত্থানের চালিকাশক্তির আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী এই সরকার গঠিত ও ক্ষমতায়িত হয়েছে।
১১ ঘণ্টা আগেভাই, ব্যানার ঠিক আছে? পোস্টার সোজা লাগছে তো? আরে না না, ওই কোনার ছেলেটা একটু ডান দিকে সরো—পোস্টারের অর্ধেক ঢাকা পড়ে গেছে। ক্যামেরায় হাসিটা ভালো আসছে তো? কেউ কি ‘লাইক’ বাড়ানোর মতো ছবি তুলেছে? এইসব কথাবার্তার মধ্য দিয়েই শুরু হয় আজকালকার মিছিল। কেউ আর চেঁচিয়ে জিজ্ঞেস করে না—‘কার জন্য এই সংগ্রাম?’
১১ ঘণ্টা আগেকিশোরগঞ্জের ইটনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা ওসি কি জিলাপি খেতে চেয়েই বিপদে পড়লেন? নাকি জিলাপির সঙ্গে আরও কিছু তিনি খেতে চেয়েছিলেন, যে ব্যাপারে টেলিফোনের অন্য পাশের ছাত্রনেতা বলেছিলেন, ‘বিলটিল পাই, একটা অ্যামাউন্ট দেবো নে!’
১১ ঘণ্টা আগে