আবুল কাসেম ফজলুল হক শিক্ষাবিদ ও রাষ্ট্রচিন্তক। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সাবেক অধ্যাপক এবং বাংলা একাডেমির সভাপতি। রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং শিক্ষার্থীদের নতুন দল গঠন নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার মাসুদ রানা।
মাসুদ রানা
বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আপনার পর্যবেক্ষণ কী?
বাংলাদেশের রাজনীতি রাজনৈতিক নেতাদের এবং রাজনৈতিক দলগুলোর আয়ত্তের বাইরে চলে গেছে। আগে দেশের মধ্যে রাজনৈতিক ক্রাইসিসের সময় সেনাবাহিনী সরাসরি ক্ষমতা দখল করত। এ সময়ের অন্তর্বর্তী সরকারও সেনাবাহিনীর সরকার না। এ সরকার হলো সুশীল সমাজের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিয়ে গঠিত সরকার।
বর্তমানে মানুষের কাছে নির্বাচনের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হচ্ছে, তারা কীভাবে খেয়ে-পরে বাঁচবে? এ আশঙ্কাটা বৃদ্ধি পাচ্ছে ক্রমাগত। সাধারণ মানুষ ক্রমাগত দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে যাচ্ছে।
রাজনৈতিক দিক দিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান খুব দুর্বল। অন্যদিকে কৃষকেরা পরিশ্রম করে ফসল উৎপাদন করছেন এবং শ্রমিকেরাও কলকারখানায় কাজ করছেন। এতে কৃষিতে উৎপাদনের পরিমাণ বাড়ছে। কিন্তু রাজনীতিতে রাজনীতিবিদেরা কোনো উন্নতি ঘটাতে পারছেন
না। তাঁরা নিজেদের উন্নয়নের বিষয়টা বিবেচনায় নেননি। এ কারণে জনগণ থেকে রাজনীতি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। রাজনীতিবিদদের কাছ থেকে ক্ষমতা চলে গেছে সুশীল সমাজের হাতে। এটাই হলো আমাদের দেশের এখনকার রাজনৈতিক বাস্তবতা।
এটা কী কারণে হলো?
মানুষের অনেক ধরনের সীমাবদ্ধতা, ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকে। আবার মানুষের মধ্যে অনেক ধরনের ভালো গুণও থাকে। যেমন সাহস, বুদ্ধি ইত্যাদি। আবার শ্রম ও চিন্তাশক্তির জোরে মানুষ ভালো কাজ করতে পারে। ভালো ও মন্দের এই বিরোধ ব্যক্তি মানুষের মধ্যে আছে। যে কাজ করবে না বলে মানুষ প্রতিজ্ঞা করে, অনেক সময় সেই কাজ করে ফেলে। আবার অনেক সময় যে কাজ করার প্রতিজ্ঞা করে, সেই কাজ করতে পারে না। এর মধ্যে কেউ কেউ ভালোটা অনেক বেশি করতে পারে এবং মন্দ থেকে বেরিয়ে আসতে পারে।
তেমনি যাঁরা কোনো জাতি ও সমাজকে নেতৃত্ব দেবেন, তাঁদের হতে হবে উন্নত চরিত্রের, সাধারণ মানুষ যাতে তাঁদের কাজ আন্তরিকভাবে শ্রদ্ধা করতে পারে। আমাদের দেশে রাজনৈতিক নেতৃত্বের যে গুণাবলি, সেটার কোনো চিন্তা ও চর্চা নেই। বহু বছর ধরে শুধু ভোটাভুটির মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। এভাবে তো রাজনৈতিক চিন্তার বিকাশ হবে না। এ ছাড়া এ দেশের রাজনীতিবিদদের কাছে রাজনীতি কি ফিরে আসবে না? এ কারণে নির্বাচনের কথা জোরেশোরে বলা হচ্ছে। যদি রাজনীতিবিদের চরিত্র উন্নত না হয়, তাহলে রাজনীতির উন্নতির কোনো সম্ভাবনা নেই।
শিক্ষার্থীদের নতুন দল নিয়ে আপনার বক্তব্য কী?
নতুন দল নিয়ে আমার বক্তব্য হলো, সামনে যা দেখা যাচ্ছে, সেটা সব না। আমরা অনেক কিছু দেখতে পাচ্ছি না, সে ব্যাপারটা এদের মধ্যে আছে। এ জন্য জাতীয় নাগরিক পার্টি নিয়ে চূড়ান্ত কোনো কথা বলার সুযোগ নেই। তবে আমাদের রাষ্ট্র ও সমাজব্যবস্থার সংস্কারের প্রয়োজন খুব দরকার। এ দেশে যাঁরা মার্ক্সবাদী রাজনীতি করেন, তাঁরা সমাজব্যবস্থা পরিবর্তনের কথা বলেন। কিন্তু তাঁরা রাষ্ট্রব্যবস্থার পরিবর্তনের কথা সেভাবে বলেন না। ফলে তাঁদের বক্তব্য অনেকটা বিমূর্ত থেকে গেছে। রাষ্ট্রব্যবস্থার সংস্কার বা পরিবর্তন বলতে কী বোঝায়, সেটা জনগণকে বোঝালে জনগণ বুঝত।
জাতীয় নাগরিক পার্টি আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টির চেয়ে একটা সুশৃঙ্খল পার্টি গঠন করতে চাইছে জনগণের কল্যাণে। কিন্তু সমস্যা অনেক জটিল। রাজনীতি আসলে সহজসাধ্য বিষয় না, অনেকটা কঠিন। যারা কায়েমি স্বার্থবাদী, তাদের রাজনীতি একরকম, সেটা চলে আসছে আবহমান কাল ধরে। তারা একটা পদ্ধতিতে নিজেরা ঐক্যবদ্ধ হয় এবং দেশবাসীকেও ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা করে। আর ক্ষমতায় গিয়ে স্বার্থ রক্ষা করে অল্প কিছু ধনী লোকের। কিন্তু আমাদের দেশেও ভালো কোনো সিস্টেম দাঁড়াল না। এর কারণ হলো, আমাদের জাতীয় রাজনীতির পুরো ইতিহাস থেকে জানা যায় পরনির্ভর রাজনীতি। বিদেশিরা এখানে রাজনীতিকে নিয়ন্ত্রণ করে।
আমাদের দেশের দলগুলো পরনির্ভরতা থেকে কেন বের হতে পারছে না?
পশ্চিমা বৃহৎ শক্তিগুলো থেকে দেশকে রক্ষা, জনগণকে রক্ষা এবং স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার মনোভাব শাসকশ্রেণির কোনো দলের মধ্যেই নেই। সেনাবাহিনী বা আমলাতন্ত্রের মধ্যেও নেই। আমাদের দেশের সব মানুষ খারাপ হয়ে গেছে, এ ধারণা করাটাই ভুল। কিন্তু যারা কর্তৃত্ব করে ক্ষমতার চর্চা করে, তখন সেই খারাপ দিকটা বের হয় বেশি।
রাজনীতিবিদদের জানা-বোঝার মান খারাপ হওয়ার কারণে ইউরোপীয় ও আমেরিকান শক্তিগুলো বেশি কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে পারে। ইউনূস সাহেবের নেতৃত্বে যে উপদেষ্টা পরিষদ গঠিত হয়েছে, তাঁরা কিছু ভালো কাজ করতে চান। এ জন্য তাঁরা প্রায় ১৫টি সংস্কার কমিটি গঠন করে রাষ্ট্রকে সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছেন। একটা প্রশ্ন হলো, রাষ্ট্রব্যবস্থার সংস্কার কাদের স্বার্থে? এতে কিছু লোক নিজেদেরকে ক্ষতিগ্রস্ত মনে করবে। তারা কারা? এগুলোকে চিহ্নিত করা দরকার।
এই বাস্তবতায় আমাদের নেতাদের ইতিহাসের যে জ্ঞান থাকা দরকার, সেটা তো তাঁরা চর্চা এবং জানারও চেষ্টা করেন না।
জাতীয় নাগরিক পার্টি সেকেন্ড রিপাবলিকের কথা বলছে, সেটা কতটা যৌক্তিক?
তারা তো সেকেন্ড রিপাবলিক কথাটার মানে কী, সেটা ব্যাখ্যা করে বলেনি। তারা সেটা যদি স্পষ্ট করে ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ না করে জনগণের কাছে, তাতে তো তাদের বক্তব্য স্পষ্ট হবে না। তারা সেটা যদি স্পষ্ট করে, তাহলে জনগণ সেটা বুঝতে পারবে। এ জন্য এ বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।
আপনি দীর্ঘ সময় ধরে বলে আসছেন, আমাদের দেশের বড় দলগুলো বিদেশি দূতাবাসকেন্দ্রিক রাজনীতি করে থাকে। দেশে পটপরিবর্তনের পর কি সে অবস্থার কোনো রকমফের দেখতে পাচ্ছেন?
একটা প্রক্রিয়া চলতে থাকলে সেটাকে হঠাৎ করে বদলে ফেলা যায় না। কিন্তু বদলে দেওয়ার চেষ্টা থাকলে একসময় সেটা বদলে দেওয়া যায়। কোনো রাজনৈতিক দল যা কিছু করতে চায়, সেটার জন্য জনগণকে জাগিয়ে দিয়ে এবং জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সংগ্রামের মধ্য দিয়ে রাজনীতি করা দরকার। আমি মনে করি, এটাই হলো কোনো রাজনৈতিক দল ও নেতার কর্তব্য। সে জায়গায় তো আমাদের রাজনীতিবিদদের কোনো চিন্তাভাবনা দেখতে পাওয়া যায় না। বিশেষ করে সত্তরের দশকের পর থেকে সেটা পাওয়া যায় না। এরশাদবিরোধী আন্দোলন যে দীর্ঘ সময় ধরে চলেছে, সেখানে কি আওয়ামী লীগ ও বিএনপির আলাদা ও নতুন কোনো বক্তব্য ছিল? ‘এক দফা এক দাবি, এরশাদ তুই কবে যাবি’?—এই একটা স্লোগান নিয়ে তো তারা আন্দোলন করেছে। তারা এরশাদকে উৎখাত করতে পেরেছে, কিন্তু তারা কোনো উন্নত শাসনব্যবস্থার নির্দেশনা দিতে পারেনি।
আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, জামায়াতসহ অন্য কিছু দলের প্রতি জনগণের গভীর আস্থা আছে বলে আমার মনে হয় না। সবটাই ওপরভাসা। সারা দেশে এসব দলের কর্মী-নেতা আছে। কিন্তু প্রকৃত জনসমর্থন বলতে যেটা বোঝায় সেটা আছে কি না, সেটা আমার সন্দেহ। সর্বজনীন কল্যাণের জন্য রাজনীতি নেই বললেই চলে। তারা গণতন্ত্রের কথা বলে কিন্তু গণতন্ত্র কী ও কেন? সেই ধারণা জনগণের কাছে এসব পার্টি কখনো দেয়নি। জিয়াউর রহমান ও এরশাদের এ সম্পর্কে কিছু চিন্তা ছিল। কিন্তু শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়া নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এলেও এসব নিয়ে জনগণের কাছে কোনো বক্তব্য হাজির করেননি।
এখানে সব সময় নির্বাচন ছিল সন্দেহের বিষয়। কোনো দলকে জয়ী করা এবং কোনো দলকে হারিয়ে দেওয়া—এই উদ্দেশ্যে নির্বাচন কাজ করেছে। আবার এটাতে নানাভাবে রাষ্ট্রীয় অর্থের অপচয় করা হয়েছে। কিন্তু জনগণের মধ্যে এসব দল যে আস্থাভাজন হতে পারেনি, সে কারণে একটা রাজনীতির শূন্যতা এখানে আছে। সেই শূন্যতা থেকে জাতীয় নাগরিক পার্টির প্রতিষ্ঠা হয়েছে। এটা হলো সময়ের দাবি। আমি সব সময় চেয়েছি রাজনৈতিক নেতাদের মাধ্যমে বক্তব্যগুলো আসুক। তারা আমাদের ইতিহাস-ঐতিহ্য এবং বাস্তবতা লক্ষ করে বলুক—আমাদের রাষ্ট্রব্যবস্থার এই এই সংস্কার ও পরিবর্তন দরকার। আমি নিজে ৩১ দফা বক্তব্য নিজের টাকায় ছাপিয়ে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছি। কিন্তু আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সেটার কোনো মূল্যই দেয়নি। মন্ত্রী, সংসদ সদস্য থেকে সবার কাছে সেই পুস্তিকাটি পাঠানো হয়েছিল।
এরপর বিএনপির তো কোনো রাজনৈতিক বক্তব্য নেই। তারা অনেক বছর ধরে ক্ষমতার বাইরে। তারা কী লক্ষ্য নিয়ে রাজনীতি করছে এবং ভবিষ্যৎ লক্ষ্য কী, সেটা তারা দেয়নি। তারা ৩১ দফা নামে একটা কর্মসূচি দিয়েছে। এটা আমার কাছে মনে হয় ড. কামাল হোসেন দল গঠনের সময় যে রকম বক্তব্য দিয়েছিলেন, অনেকটা সেই ধরনের। দুনিয়ার তাবৎ ভালো কথা সে বক্তব্যে থাকে, কিন্তু কীভাবে করা যাবে এবং কেন করা হবে, সে রকম কোনো স্পষ্ট কথা নেই। ফলে কামাল হোসেনের দল গঠনের চেষ্টা যেমন সফল হয়নি, তেমনি বিএনপির ৩১ দফার মধ্য দিয়ে তাদের রাজনীতি সফল হবে, সেটা আমার মনে হয় না।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস তাঁর পেশার জায়গায় সফল হলেও রাষ্ট্র পরিচালনায় তিনি সফল বলে মনে করেন কি?
রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য যে অভিজ্ঞতা প্রয়োজন সেটা রাজনীতির মধ্য দিয়ে অর্জিত হয়। বই পড়ে কিছুটা হয়। বই পড়ে যে কিছুটা হয়, সেটা তাঁর মধ্যে আছে। আরও বৃহত্তর পরিসরে গভীরভাবে দেখে রাষ্ট্রের কী পরিবর্তন করতে হবে—এ ধারায় তো বিশেষ কিছু চিন্তা করছেন না। তিনি একধরনের আদর্শ এনজিওর কথা বলেছেন। সেটা তো আমাদের মন্ত্রীদের দিকে তাকালে বোঝা যায়, তাঁরা অনেক সম্পদের মালিক হয়েছেন। এসব করতে কোথায় ও কীভাবে টাকা পেলেন, তার কোনো ব্যাখ্যা তাঁরা দিতে পারেন না। এ রকম একটা বাস্তবতার মধ্যে সিভিল সোসাইটির বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধি নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হলে তারা একধরনের সমর্থন পাচ্ছেন ও পাবেন। কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষমতায় থেকে ভালো কিছু কাজ করে জনগণের সমর্থন অব্যাহত রাখতে পারবেন, সেই সম্ভাবনাও তো দেখা যাচ্ছে না।
বিএনপি তাড়াতাড়ি নির্বাচন চাইছে, অন্যদিকে অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কারে গুরুত্ব দিচ্ছে। আপনার কাছে কোনটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়?
এখানে কোনোটাই বেশি গুরুত্ব পাওয়ার মতো না। এগুলো তো তাদের কথা। তারা কী করতে চায়, সেটা তো তাদের কাজের মধ্য দিয়ে প্রমাণ পাওয়া যাবে। যারা আদর্শগত রাজনীতি করে এবং নীতিনিষ্ঠ তাদের সম্পর্কে বলা যায়, এটা এ রকম হবে বা হবে না ইত্যাদি। কিন্তু এদের কোনো আদর্শ নেই। আর একটা কথা, রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু নেই। তো শেষ কথা না থাকলে সুবিধা অনুযায়ী যেকোনো কথা বলা যায়। তবে প্রতিটি বিষয়ের একটা শেষ কথা থাকতে হয়। ইংরেজের বিরুদ্ধে আমরা সংগ্রাম করেছি। কেন করেছি? করেছি তাদের শাসনের অবসান চেয়েছিলাম এবং নিজেদের জাতীয় সরকার গঠন করতে চাই। একটা স্পষ্ট বক্তব্য ছিল। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকারের তো সে রকম কোনো নির্দেশনা দেখতে পাচ্ছি না।
সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
আপনাকেও ধন্যবাদ।
আরও খবর পড়ুন:
বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আপনার পর্যবেক্ষণ কী?
বাংলাদেশের রাজনীতি রাজনৈতিক নেতাদের এবং রাজনৈতিক দলগুলোর আয়ত্তের বাইরে চলে গেছে। আগে দেশের মধ্যে রাজনৈতিক ক্রাইসিসের সময় সেনাবাহিনী সরাসরি ক্ষমতা দখল করত। এ সময়ের অন্তর্বর্তী সরকারও সেনাবাহিনীর সরকার না। এ সরকার হলো সুশীল সমাজের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিয়ে গঠিত সরকার।
বর্তমানে মানুষের কাছে নির্বাচনের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হচ্ছে, তারা কীভাবে খেয়ে-পরে বাঁচবে? এ আশঙ্কাটা বৃদ্ধি পাচ্ছে ক্রমাগত। সাধারণ মানুষ ক্রমাগত দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে যাচ্ছে।
রাজনৈতিক দিক দিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান খুব দুর্বল। অন্যদিকে কৃষকেরা পরিশ্রম করে ফসল উৎপাদন করছেন এবং শ্রমিকেরাও কলকারখানায় কাজ করছেন। এতে কৃষিতে উৎপাদনের পরিমাণ বাড়ছে। কিন্তু রাজনীতিতে রাজনীতিবিদেরা কোনো উন্নতি ঘটাতে পারছেন
না। তাঁরা নিজেদের উন্নয়নের বিষয়টা বিবেচনায় নেননি। এ কারণে জনগণ থেকে রাজনীতি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। রাজনীতিবিদদের কাছ থেকে ক্ষমতা চলে গেছে সুশীল সমাজের হাতে। এটাই হলো আমাদের দেশের এখনকার রাজনৈতিক বাস্তবতা।
এটা কী কারণে হলো?
মানুষের অনেক ধরনের সীমাবদ্ধতা, ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকে। আবার মানুষের মধ্যে অনেক ধরনের ভালো গুণও থাকে। যেমন সাহস, বুদ্ধি ইত্যাদি। আবার শ্রম ও চিন্তাশক্তির জোরে মানুষ ভালো কাজ করতে পারে। ভালো ও মন্দের এই বিরোধ ব্যক্তি মানুষের মধ্যে আছে। যে কাজ করবে না বলে মানুষ প্রতিজ্ঞা করে, অনেক সময় সেই কাজ করে ফেলে। আবার অনেক সময় যে কাজ করার প্রতিজ্ঞা করে, সেই কাজ করতে পারে না। এর মধ্যে কেউ কেউ ভালোটা অনেক বেশি করতে পারে এবং মন্দ থেকে বেরিয়ে আসতে পারে।
তেমনি যাঁরা কোনো জাতি ও সমাজকে নেতৃত্ব দেবেন, তাঁদের হতে হবে উন্নত চরিত্রের, সাধারণ মানুষ যাতে তাঁদের কাজ আন্তরিকভাবে শ্রদ্ধা করতে পারে। আমাদের দেশে রাজনৈতিক নেতৃত্বের যে গুণাবলি, সেটার কোনো চিন্তা ও চর্চা নেই। বহু বছর ধরে শুধু ভোটাভুটির মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। এভাবে তো রাজনৈতিক চিন্তার বিকাশ হবে না। এ ছাড়া এ দেশের রাজনীতিবিদদের কাছে রাজনীতি কি ফিরে আসবে না? এ কারণে নির্বাচনের কথা জোরেশোরে বলা হচ্ছে। যদি রাজনীতিবিদের চরিত্র উন্নত না হয়, তাহলে রাজনীতির উন্নতির কোনো সম্ভাবনা নেই।
শিক্ষার্থীদের নতুন দল নিয়ে আপনার বক্তব্য কী?
নতুন দল নিয়ে আমার বক্তব্য হলো, সামনে যা দেখা যাচ্ছে, সেটা সব না। আমরা অনেক কিছু দেখতে পাচ্ছি না, সে ব্যাপারটা এদের মধ্যে আছে। এ জন্য জাতীয় নাগরিক পার্টি নিয়ে চূড়ান্ত কোনো কথা বলার সুযোগ নেই। তবে আমাদের রাষ্ট্র ও সমাজব্যবস্থার সংস্কারের প্রয়োজন খুব দরকার। এ দেশে যাঁরা মার্ক্সবাদী রাজনীতি করেন, তাঁরা সমাজব্যবস্থা পরিবর্তনের কথা বলেন। কিন্তু তাঁরা রাষ্ট্রব্যবস্থার পরিবর্তনের কথা সেভাবে বলেন না। ফলে তাঁদের বক্তব্য অনেকটা বিমূর্ত থেকে গেছে। রাষ্ট্রব্যবস্থার সংস্কার বা পরিবর্তন বলতে কী বোঝায়, সেটা জনগণকে বোঝালে জনগণ বুঝত।
জাতীয় নাগরিক পার্টি আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টির চেয়ে একটা সুশৃঙ্খল পার্টি গঠন করতে চাইছে জনগণের কল্যাণে। কিন্তু সমস্যা অনেক জটিল। রাজনীতি আসলে সহজসাধ্য বিষয় না, অনেকটা কঠিন। যারা কায়েমি স্বার্থবাদী, তাদের রাজনীতি একরকম, সেটা চলে আসছে আবহমান কাল ধরে। তারা একটা পদ্ধতিতে নিজেরা ঐক্যবদ্ধ হয় এবং দেশবাসীকেও ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা করে। আর ক্ষমতায় গিয়ে স্বার্থ রক্ষা করে অল্প কিছু ধনী লোকের। কিন্তু আমাদের দেশেও ভালো কোনো সিস্টেম দাঁড়াল না। এর কারণ হলো, আমাদের জাতীয় রাজনীতির পুরো ইতিহাস থেকে জানা যায় পরনির্ভর রাজনীতি। বিদেশিরা এখানে রাজনীতিকে নিয়ন্ত্রণ করে।
আমাদের দেশের দলগুলো পরনির্ভরতা থেকে কেন বের হতে পারছে না?
পশ্চিমা বৃহৎ শক্তিগুলো থেকে দেশকে রক্ষা, জনগণকে রক্ষা এবং স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার মনোভাব শাসকশ্রেণির কোনো দলের মধ্যেই নেই। সেনাবাহিনী বা আমলাতন্ত্রের মধ্যেও নেই। আমাদের দেশের সব মানুষ খারাপ হয়ে গেছে, এ ধারণা করাটাই ভুল। কিন্তু যারা কর্তৃত্ব করে ক্ষমতার চর্চা করে, তখন সেই খারাপ দিকটা বের হয় বেশি।
রাজনীতিবিদদের জানা-বোঝার মান খারাপ হওয়ার কারণে ইউরোপীয় ও আমেরিকান শক্তিগুলো বেশি কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে পারে। ইউনূস সাহেবের নেতৃত্বে যে উপদেষ্টা পরিষদ গঠিত হয়েছে, তাঁরা কিছু ভালো কাজ করতে চান। এ জন্য তাঁরা প্রায় ১৫টি সংস্কার কমিটি গঠন করে রাষ্ট্রকে সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছেন। একটা প্রশ্ন হলো, রাষ্ট্রব্যবস্থার সংস্কার কাদের স্বার্থে? এতে কিছু লোক নিজেদেরকে ক্ষতিগ্রস্ত মনে করবে। তারা কারা? এগুলোকে চিহ্নিত করা দরকার।
এই বাস্তবতায় আমাদের নেতাদের ইতিহাসের যে জ্ঞান থাকা দরকার, সেটা তো তাঁরা চর্চা এবং জানারও চেষ্টা করেন না।
জাতীয় নাগরিক পার্টি সেকেন্ড রিপাবলিকের কথা বলছে, সেটা কতটা যৌক্তিক?
তারা তো সেকেন্ড রিপাবলিক কথাটার মানে কী, সেটা ব্যাখ্যা করে বলেনি। তারা সেটা যদি স্পষ্ট করে ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ না করে জনগণের কাছে, তাতে তো তাদের বক্তব্য স্পষ্ট হবে না। তারা সেটা যদি স্পষ্ট করে, তাহলে জনগণ সেটা বুঝতে পারবে। এ জন্য এ বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।
আপনি দীর্ঘ সময় ধরে বলে আসছেন, আমাদের দেশের বড় দলগুলো বিদেশি দূতাবাসকেন্দ্রিক রাজনীতি করে থাকে। দেশে পটপরিবর্তনের পর কি সে অবস্থার কোনো রকমফের দেখতে পাচ্ছেন?
একটা প্রক্রিয়া চলতে থাকলে সেটাকে হঠাৎ করে বদলে ফেলা যায় না। কিন্তু বদলে দেওয়ার চেষ্টা থাকলে একসময় সেটা বদলে দেওয়া যায়। কোনো রাজনৈতিক দল যা কিছু করতে চায়, সেটার জন্য জনগণকে জাগিয়ে দিয়ে এবং জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সংগ্রামের মধ্য দিয়ে রাজনীতি করা দরকার। আমি মনে করি, এটাই হলো কোনো রাজনৈতিক দল ও নেতার কর্তব্য। সে জায়গায় তো আমাদের রাজনীতিবিদদের কোনো চিন্তাভাবনা দেখতে পাওয়া যায় না। বিশেষ করে সত্তরের দশকের পর থেকে সেটা পাওয়া যায় না। এরশাদবিরোধী আন্দোলন যে দীর্ঘ সময় ধরে চলেছে, সেখানে কি আওয়ামী লীগ ও বিএনপির আলাদা ও নতুন কোনো বক্তব্য ছিল? ‘এক দফা এক দাবি, এরশাদ তুই কবে যাবি’?—এই একটা স্লোগান নিয়ে তো তারা আন্দোলন করেছে। তারা এরশাদকে উৎখাত করতে পেরেছে, কিন্তু তারা কোনো উন্নত শাসনব্যবস্থার নির্দেশনা দিতে পারেনি।
আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, জামায়াতসহ অন্য কিছু দলের প্রতি জনগণের গভীর আস্থা আছে বলে আমার মনে হয় না। সবটাই ওপরভাসা। সারা দেশে এসব দলের কর্মী-নেতা আছে। কিন্তু প্রকৃত জনসমর্থন বলতে যেটা বোঝায় সেটা আছে কি না, সেটা আমার সন্দেহ। সর্বজনীন কল্যাণের জন্য রাজনীতি নেই বললেই চলে। তারা গণতন্ত্রের কথা বলে কিন্তু গণতন্ত্র কী ও কেন? সেই ধারণা জনগণের কাছে এসব পার্টি কখনো দেয়নি। জিয়াউর রহমান ও এরশাদের এ সম্পর্কে কিছু চিন্তা ছিল। কিন্তু শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়া নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এলেও এসব নিয়ে জনগণের কাছে কোনো বক্তব্য হাজির করেননি।
এখানে সব সময় নির্বাচন ছিল সন্দেহের বিষয়। কোনো দলকে জয়ী করা এবং কোনো দলকে হারিয়ে দেওয়া—এই উদ্দেশ্যে নির্বাচন কাজ করেছে। আবার এটাতে নানাভাবে রাষ্ট্রীয় অর্থের অপচয় করা হয়েছে। কিন্তু জনগণের মধ্যে এসব দল যে আস্থাভাজন হতে পারেনি, সে কারণে একটা রাজনীতির শূন্যতা এখানে আছে। সেই শূন্যতা থেকে জাতীয় নাগরিক পার্টির প্রতিষ্ঠা হয়েছে। এটা হলো সময়ের দাবি। আমি সব সময় চেয়েছি রাজনৈতিক নেতাদের মাধ্যমে বক্তব্যগুলো আসুক। তারা আমাদের ইতিহাস-ঐতিহ্য এবং বাস্তবতা লক্ষ করে বলুক—আমাদের রাষ্ট্রব্যবস্থার এই এই সংস্কার ও পরিবর্তন দরকার। আমি নিজে ৩১ দফা বক্তব্য নিজের টাকায় ছাপিয়ে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছি। কিন্তু আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সেটার কোনো মূল্যই দেয়নি। মন্ত্রী, সংসদ সদস্য থেকে সবার কাছে সেই পুস্তিকাটি পাঠানো হয়েছিল।
এরপর বিএনপির তো কোনো রাজনৈতিক বক্তব্য নেই। তারা অনেক বছর ধরে ক্ষমতার বাইরে। তারা কী লক্ষ্য নিয়ে রাজনীতি করছে এবং ভবিষ্যৎ লক্ষ্য কী, সেটা তারা দেয়নি। তারা ৩১ দফা নামে একটা কর্মসূচি দিয়েছে। এটা আমার কাছে মনে হয় ড. কামাল হোসেন দল গঠনের সময় যে রকম বক্তব্য দিয়েছিলেন, অনেকটা সেই ধরনের। দুনিয়ার তাবৎ ভালো কথা সে বক্তব্যে থাকে, কিন্তু কীভাবে করা যাবে এবং কেন করা হবে, সে রকম কোনো স্পষ্ট কথা নেই। ফলে কামাল হোসেনের দল গঠনের চেষ্টা যেমন সফল হয়নি, তেমনি বিএনপির ৩১ দফার মধ্য দিয়ে তাদের রাজনীতি সফল হবে, সেটা আমার মনে হয় না।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস তাঁর পেশার জায়গায় সফল হলেও রাষ্ট্র পরিচালনায় তিনি সফল বলে মনে করেন কি?
রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য যে অভিজ্ঞতা প্রয়োজন সেটা রাজনীতির মধ্য দিয়ে অর্জিত হয়। বই পড়ে কিছুটা হয়। বই পড়ে যে কিছুটা হয়, সেটা তাঁর মধ্যে আছে। আরও বৃহত্তর পরিসরে গভীরভাবে দেখে রাষ্ট্রের কী পরিবর্তন করতে হবে—এ ধারায় তো বিশেষ কিছু চিন্তা করছেন না। তিনি একধরনের আদর্শ এনজিওর কথা বলেছেন। সেটা তো আমাদের মন্ত্রীদের দিকে তাকালে বোঝা যায়, তাঁরা অনেক সম্পদের মালিক হয়েছেন। এসব করতে কোথায় ও কীভাবে টাকা পেলেন, তার কোনো ব্যাখ্যা তাঁরা দিতে পারেন না। এ রকম একটা বাস্তবতার মধ্যে সিভিল সোসাইটির বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধি নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হলে তারা একধরনের সমর্থন পাচ্ছেন ও পাবেন। কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষমতায় থেকে ভালো কিছু কাজ করে জনগণের সমর্থন অব্যাহত রাখতে পারবেন, সেই সম্ভাবনাও তো দেখা যাচ্ছে না।
বিএনপি তাড়াতাড়ি নির্বাচন চাইছে, অন্যদিকে অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কারে গুরুত্ব দিচ্ছে। আপনার কাছে কোনটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়?
এখানে কোনোটাই বেশি গুরুত্ব পাওয়ার মতো না। এগুলো তো তাদের কথা। তারা কী করতে চায়, সেটা তো তাদের কাজের মধ্য দিয়ে প্রমাণ পাওয়া যাবে। যারা আদর্শগত রাজনীতি করে এবং নীতিনিষ্ঠ তাদের সম্পর্কে বলা যায়, এটা এ রকম হবে বা হবে না ইত্যাদি। কিন্তু এদের কোনো আদর্শ নেই। আর একটা কথা, রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু নেই। তো শেষ কথা না থাকলে সুবিধা অনুযায়ী যেকোনো কথা বলা যায়। তবে প্রতিটি বিষয়ের একটা শেষ কথা থাকতে হয়। ইংরেজের বিরুদ্ধে আমরা সংগ্রাম করেছি। কেন করেছি? করেছি তাদের শাসনের অবসান চেয়েছিলাম এবং নিজেদের জাতীয় সরকার গঠন করতে চাই। একটা স্পষ্ট বক্তব্য ছিল। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকারের তো সে রকম কোনো নির্দেশনা দেখতে পাচ্ছি না।
সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
আপনাকেও ধন্যবাদ।
আরও খবর পড়ুন:
আওয়ামী লীগের দেড় দশকের শাসনামলে ‘বঞ্চিত ও বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো’ কর্মকর্তাদের মধ্যে ১১৯ জন ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি পেয়ে সচিব হয়েছেন। গত মাসে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি পাওয়া কর্মকর্তাদের কেউ কেউ কোটি টাকার ওপরে ক্ষতিপূরণ পাবেন।
১৭ ঘণ্টা আগেমার্চ মাস চলছে। এখনো লাখ লাখ শিক্ষার্থী তাদের সম্পূর্ণ পাঠ্যপুস্তক পায়নি। এটিকে যদি আমরা জাতীয় জরুরি অবস্থা না বলি, তাহলে আর কোনটাকে বলব? শিক্ষাব্যবস্থা সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত। প্রথম দিকে আমরা দেখলাম বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানদের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও সমন্বয়কদের নামে হেনস্তা করা হচ্ছে।
১৭ ঘণ্টা আগেপ্রবীণ বয়সে অনেকের প্রয়োজন ফুরিয়ে আসে এবং গুরুত্ব কমতে থাকে। দীর্ঘ জীবনলাভের মধ্য দিয়ে অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ হয়ে ওঠেন। সেই অভিজ্ঞতার বর্ণনা করতে ভালো লাগে। অপেক্ষাকৃত কম বয়সীদের চোখের সামনে দেখলে জীবনের নানা চড়াই-উতরাইয়ের কথা মনে পড়ে।
১৭ ঘণ্টা আগেআন্তর্জাতিক নারী দিবসের দিন প্রকাশিত পত্রিকায় যদি পড়তে হয় ৮ বছর বয়সী শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে, তাহলে দিবসটির মূল প্রতিপাদ্যই ম্লান হয়ে পড়ে। ঘটনাটির নৃশংসতা বিবেচনা করুন। মাগুরায় বোনের বাড়ি বেড়াতে এসেছে ৮ বছর বয়সী অভয়া (কল্পিত নাম)।
১৭ ঘণ্টা আগে