হুসাইন আহমদ

বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন মাত্রা যোগ করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। ৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের গর্ভ থেকে জন্ম নেওয়া দলটি ‘নতুন বন্দোবস্তের’ স্লোগান দিয়ে নিজেদের নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতির ধারক হিসেবে তুলে ধরেছে; বিশেষ করে নারীর নেতৃত্ব, অংশগ্রহণ ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রশ্নে এনসিপির বাণীতে অনেকে আশার আলো খুঁজেছেন। কিন্তু গত ফেব্রুয়ারিতে দল গঠনের আগে ও পরে দলের নেতা-কর্মীদের ঘিরে একের পর এক ঘটনা সেই প্রত্যাশার বিপরীত চিত্র ফুটিয়ে তুলেছে বলে অনেকে মনে করছেন। বিশেষ করে, নারীর প্রতি দলটির অবস্থান বারবার প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।
অভ্যুত্থানের নেতৃত্বে সামনের সারিতে থাকা ব্যক্তিদের নিয়ে গঠিত দলটি এখন যৌন হয়রানির অভিযোগ নিয়ে সমালোচনার কেন্দ্রে রয়েছে। সেই ঘটনার শুরু হয় এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষারের সঙ্গে এক নারীর অডিও ফাঁস হওয়ার পর। সেখানে তুষারের পক্ষ থেকে যৌন হয়রানিমূলক কথাবার্তা শোনা যায়। অডিওতে নারী কণ্ঠটি যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. তাজনূভা জাবীনের বলে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর তাজনূভার চরিত্রহনন শুরু হয় সামাজিক মাধ্যমে। তাজনূভা ফেসবুকে জানান, ওই নারী তিনি নিজে নন, তবে কে তা জানেন।
কয়েক দিনের জল্পনাকল্পনার অবসান ঘটে যখন এনসিপির এক সংগঠক নীলা ইস্রাফিল প্রকাশ্যে আসেন। তিনি তুষারের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তোলেন। তাঁর দাবি, বিষয়টি নিয়ে ঈদুল আজহার দিনে সংগঠনের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামকে জানালেও বিষয়টির সমাধান পাননি। কেন্দ্রীয় নেতার আচরণের বিষয়ে তিনি ঢাকা মহানগর শাখার নেতাদের সঙ্গে আলাপ করতে বলেন। এর মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় তুষারের পক্ষ হয়ে নীলাকে আক্রমণ শুরু হয়, এতে এনসিপির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরাও যুক্ত হন। এমনকি দলের নারী নেত্রীরাও তাঁর পাশে দাঁড়াননি বলে নীলার অভিযোগ। এর মধ্যে এনসিপির পক্ষ থেকে তাজনূভা জাবীনের একটি বিবৃতি দেওয়া হয়। সেটি ফেসবুকে শেয়ার করে তাজনূভা যে পোস্ট দিয়েছেন, তাতে নারী বিষয়ে দলের অবস্থান নিয়ে সুস্পষ্ট অনাস্থা ও অবিশ্বাসের প্রকাশ ঘটেছে।
এর আগে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে নারী সংস্কার কমিশনের সদস্যদের ‘বেশ্যা’ বলে গালি দেওয়া হয়। ওই সমাবেশে এনসিপির প্রভাবশালী নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ উপস্থিত ছিলেন, বক্তব্য দিয়েছেন। হাসনাতের বিষয়টির প্রতিবাদ না করা বা সমাবেশ বর্জন না করায় বেশ সমালোচনা হয়। তা ছাড়া নারীর সমান অধিকারের পক্ষে এনসিপির স্পষ্ট অবস্থান নেই। শুরুর দিকে সামান্থা শারমিনকে এনসিপির মুখপাত্রের দায়িত্ব দেওয়া হয়। একাধিক অনুষ্ঠানে নারী বিষয়ে দলের অবস্থান নিয়ে দ্বিধাগ্রস্ত দেখা গেছে। এনসিপির আঁতুড়ঘর হিসেবে পরিচিত জাতীয় নাগরিক কমিটি ছেড়ে যাওয়া শেখ তাসনিম আফরোজ ইমিও নারী বিষয়ে নেতৃত্বের দুর্বলতার কথ তুলে ধরেছেন।
নীলা ইস্রাফিলের অভিযোগ
মানবাধিকারকর্মী ও রাজনৈতিক সংগঠক হিসেবে এনসিপির প্রতি আস্থা ও ভালোবাসার কথা প্রকাশ করেছেন নীলা ইস্রাফিল। তিনি গণ-অভ্যুত্থানের সময় সক্রিয় ছিলেন এবং এনসিপি গঠনের প্রাক্-পর্বেই দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতা সারোয়ার তুষারের সঙ্গে তাঁর রাজনৈতিক যোগাযোগ গড়ে ওঠে। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই সম্পর্ক ক্রমশ বিষাক্ত হয়ে ওঠে বলে দাবি করেছেন নীলা।
ফেসবুক বিবৃতিতে তিনি বলেন, তুষার তাঁকে নানা সময় ‘আপত্তিকর বার্তা’ দিয়েছেন, যেমন ‘তোমার ঠোঁট সুন্দর’, ‘তোমার প্রতিবাদী কণ্ঠ আমাকে আকৃষ্ট করে’ ইত্যাদি। নীলা প্রথমে বিষয়টি গোপনে মীমাংসার চেষ্টা করেন এবং ঘনিষ্ঠ সহকর্মীদের জানান। এমনকি তুষারের প্রস্তাবকে প্রত্যাখ্যান করে তিনি দলের ভেতরে এ বিষয়ে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নিতে চেষ্টা করেন। কিন্তু এর বদলে তিনি দেখেন, তাঁকে দলের বিভিন্ন সেল থেকে বাদ দেওয়ার চেষ্টা চলেছে এবং তাঁর সম্পর্কে নেতিবাচক প্রচার শুরু হয়।
সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো, অভিযোগ জানানোর পরও এনসিপি কোনো প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা নেয়নি; বরং অডিও ফাঁস হয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর ‘চাপে পড়ে’ সারোয়ার তুষারকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হয়। নীলা দাবি করেছেন, গত ঈদের রাতে এক অনুষ্ঠানে দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামকে তিনি বিষয়টি জানালে নাহিদ ‘মহানগরের দায়িত্বে থাকা’ নেতাদের বিষয়টি অবগত করতে বলেন। তা যদি সত্য হয়, তাহলে বলতে হবে, এনসিপির শীর্ষ নেতৃত্ব যথাযথ সংবেদনশীলতার সঙ্গে বিষয়টি ডিল করেনি। একপ্রকার এড়িয়েই গেছে। কারণ, সারোয়ার তুষার কেন্দ্রীয় নেতা, ঢাকা মহানগর কমিটি তাঁর বিষয়ে অভিযোগ নিষ্পত্তি কীভাবে করে।
নেতৃত্বের নির্লিপ্ততা: মুখে নারীবান্ধব, আচরণে নয়
নীলা ইস্রাফিল দাবি করেছেন, নাহিদের কথামতো বিষয়টি মহানগর নেতাদের জানানোর পর তাঁকে নিয়ে ‘সোশ্যাল মিডিয়া ট্রায়াল’ হয়, কিন্তু তখন দলের নারী সহকর্মীরাও তাঁর পাশে দাঁড়াননি। কারণ, তাঁর অপরাধ—তিনি ‘পাশ্চাত্য’ পোশাক পরেন এবং ‘তুমি’ সম্বোধন করেন এবং সহজভাবে সবার সঙ্গে মেশেন। তাঁর দাবির সত্য-মিথ্যা বিচার্য বিষয়। কিন্তু যদি সত্য হয়, তাহলে এনসিপির ভেতরে রক্ষণশীলতা ও নারী স্বাধীনতাবিরোধী সংস্কৃতিচর্চার প্রকাশ এটি।
অভিযোগ ওঠার পর সারোয়ার তুষারের বিরুদ্ধে ১৭ জুন একটি কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়, যেখানে তাঁকে সাংগঠনিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়। কিন্তু উল্লেখযোগ্য যে, এর আগে দলীয় নেতৃত্ব বা নীতিনির্ধারকেরা বিষয়টি প্রকাশ্যে আনেননি কিংবা কোনো সহমর্মিতা প্রকাশ করেননি। এই প্রেক্ষাপটে এনসিপির আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক তাজনূভা জাবীনের ফেসবুক স্ট্যাটাস গভীর তাৎপর্য বহন করে। তিনি সরাসরি কোনো নেতার নাম বলেননি, তবে তাঁর বার্তা ছিল দল সম্পর্কে অনাস্থা ও সংশয়ের প্রকাশ।
ফেসবুকে তিনি লেখেন, ‘আমি বিশ্বাস করতে চাই, এনসিপি বাংলাদেশের নারীদের সামনে দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে—কেন তারা এনসিপিকে সমর্থন করবে। শুধু কাগজে-কলমে আর বক্তৃতায় না, কাজেও। বাস্তবায়নেও।’ তাজনূভা মনে করেন, এনসিপির নেতাদের উচিত, আগে নিজের দলের নারীদের যোগ্য নেতা হিসেবে গড়ে তুলতে সহযোগিতা করা। তারপর তাঁদের সংসদে নারী আসনে সরাসরি নির্বাচনের দাবি তোলা উচিত।
তিনি দলের নেতাদের উদ্দেশে বলেন, ‘সংসদে নারী আসনে সরাসরি নির্বাচনের দাবি বৃথা, যদি দলে আপনি যোগ্য নারী নেতৃত্ব তৈরি করতে সহযোগিতা না করেন। যে গণতান্ত্রিক উত্তরণ এনসিপি সংসদে, রাষ্ট্রে দেখতে চায়, সেটা তাকে আগে নিজের মধ্যে প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’
তাজনূভা আরও বলেন, ‘অজানা, অচেনা, সাধারণ ঘরের যোগ্য, দৃঢ়, শিক্ষিত নারীরা যাতে রাজনীতিতে এসে দেশকে দিতে পারে, সে জন্য এনসিপিকে বিশ্বস্ত ও নির্ভরযোগ্য রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান হতে হবে।’ নয়তো বিদ্যমান রাজনৈতিক দলের সঙ্গে এনসিপির কোনো পার্থক্য থাকবে না বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
তাঁর ভাষ্য, বাংলাদেশের জন্মের পর থেকে জনসংখ্যার অর্ধেকের বেশি এই বিশাল জনগোষ্ঠীকে কোনো রাজনৈতিক দল গুরুত্বের সঙ্গে আমলে নেয়নি। এনসিপির সুযোগ আছে এ ক্ষেত্রে দৃষ্টান্ত স্থাপন করার। আর এর জন্য কোনো গোপন বা কঠিন সমীকরণের প্রয়োজন হবে না বলে মনে করেন তিনি। নারীর বিষয় উপেক্ষা করে বাংলাদেশে টেকসই রাজনীতি কখনোই সম্ভব নয় বলেও মত দেন তাজনূভা জাবীন।
তিনি নারীর বিরুদ্ধে দলীয় সহকর্মীদের যৌন হয়রানিমূলক প্রচারণা ও অপপ্রচারকে ‘রাজনৈতিক পরিসর সংকুচিত করার পরিকল্পিত প্রচেষ্টা’ হিসেবে অভিহিত করেন। তাঁর পোস্টে দলীয় সহকর্মী ও গণমাধ্যমের ভূমিকাও তিনি প্রশ্নবিদ্ধ করেন—যারা অভিযোগকারী নারীনেত্রীদের বিপক্ষে ইঙ্গিতপূর্ণ সংবাদ প্রচার বা নীরবতা পালন করেছে।
কাঠামোগত পিতৃতন্ত্রের মুখোমুখি নারী নেতৃত্ব
সারোয়ার তুষারের সঙ্গে সম্পর্কের প্রসঙ্গে নীলা ইস্রাফিল লিখেছেন, ‘বাংলাদেশে অসংখ্য নারীকে ক্ষমতাবান পুরুষের সঙ্গে এই ধরনের সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে হয়।’ এই বাক্য কেবল ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা নয়, বরং রাজনৈতিক ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোতে নারীর স্থান কোথায়, তা তুলে ধরে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলে নারীর অংশগ্রহণ থাকলেও তাঁদের ওপর বারবার চাপ প্রয়োগ, উপেক্ষা, প্রলোভন ও নিপীড়নের ঘটনা ঘটে থাকে। জুলাই অভ্যুত্থানের গর্ভজাত এনসিপি ‘নতুন বস্তোবস্ত’ নামে নতুন রাজনীতির দাবি করলেও বাস্তবে তারা পুরোনো চর্চার মধ্যে যে রয়েছে, তা স্পষ্ট।
এই অভ্যুত্থানের অন্যতম সহযোদ্ধা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুন নাহার হল সংসদের সাবেক ভিপি শেখ তাসনিম আফরোজ ইমি ২০২৫ সালের মে মাসে নাগরিক কমিটি থেকে পদত্যাগ করেন। সম্প্রতি তিনি ফেসবুক পোস্টে এনসিপির নারীবিষয়ক অবস্থানের সমালোচনা করেন। তাঁর মতে, নারীদের প্রশ্নে ‘মিনিমাম সততা’ না দেখিয়ে দ্বিচারিতা করে যাচ্ছে এনসিপি।
নারী মুখপাত্র: প্রতীকী উপস্থিতি, না বাস্তব নেতৃত্ব
জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখপাত্র হিসেবে সামান্থা শারমিন এবং তাঁদের সমর্থিত ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের মুখপাত্র করা হয়েছে আশরেফা খাতুনকে। তাঁদের উপস্থিতি নারীর রাজনৈতিক অংশগ্রহণের প্রতীক হিসেবে তুলে ধরা হলেও প্রশ্ন রয়ে গেছে—তাঁরা আদৌ সিদ্ধান্ত গ্রহণে ভূমিকা রাখেন কি না, নাকি শুধুই ‘ক্যামেরার সামনে উপস্থাপনের’ সস্তা কৌশল?
একাধিক অনুষ্ঠান ও সাক্ষাৎকারে নারীর সমান অধিকার বিষয়ে সামান্থার অপ্রস্তুত প্রতিক্রিয়া এই আশঙ্কাকে জোরালো করেছে যে, তাঁদের ভূমিকা বাস্তবায়নের চেয়ে বেশি প্রতীকী। এনসিপি যদি সত্যিই নারীবান্ধব দল হতে চায়, তবে এই প্রশ্নের সদুত্তর দেওয়া জরুরি।
দলীয় হিপোক্রেসি ও নৈতিক পরীক্ষা
এনসিপির নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ হেফাজতের সমাবেশে অংশ নেন, যেখানে নারী সংস্কার কমিশনের সদস্যদের ‘বেশ্যা’ বলে আক্রমণ করা হয়। এনসিপির নৈতিক অবস্থান ও নারীর প্রতি শ্রদ্ধাবোধের কথা বারবার বলা হলেও এই ঘটনায় দল বা নেতারা প্রকাশ্যে কোনো বিবৃতি দেয়নি। এতে আবারও প্রমাণিত হয়, নারীর অধিকার ও মর্যাদার প্রশ্নে দলটি নীরবতা পালন করেছে।
তুষারের বিরুদ্ধে এর আগেও যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছিল। ২০২১ সালে তাঁর সাবেক প্রেমিকা বীথি সপ্তর্ষি ওই অভিযোগ করেন। তুষার সে সময় রাষ্ট্রচিন্তার সদস্য ছিলেন। বীথির অভিযোগের ভিত্তিতে তখন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মির্জা তাসলিমাকে আহ্বায়ক করে আলোকচিত্রী ড. শহিদুল আলম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সামিনা লুৎফা, আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া ও গবেষক দিলশানা পারুলের সমন্বয়ে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
অভিযুক্ত ও অভিযোগকারী উভয়ের বক্তব্য নিয়ে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিলও করেছিল তদন্ত কমিটি। তুষারের বিরুদ্ধে বীথির অভিযোগের বিষয়ে ‘গ্রহণযোগ্য নিষ্পত্তি হয়নি’ বলে সম্প্রতি এক বিবৃতিতে জানান ড. শহিদুল আলম। সেই বিবৃতিতে সই করেন মির্জা তাসলিমা সুলতানা ও ড. সামিনা লুৎফাও। প্রশ্ন উঠেছে, এ রকম অবস্থায় একজন ব্যক্তিকে দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব কীভাবে দেওয়া হয়। শুধু তা-ই নয়, দ্বিতীয়বার যখন অভিযোগ উঠল, তখন বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া হলো না কেন?
যে দলটি নারীর অংশগ্রহণের কথা বলছে, সেই দলের শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে যখন যৌন হয়রানির অভিযোগ আসে এবং তা বারবার উপেক্ষিত হয়, তখন সেটি একটি নৈতিক পতনের ইঙ্গিত দেয়। আবার সেই অভিযোগকারী নারীকে যখন দমন, অপমান ও দূরে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়, তখন সেটি আর কেবল ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থাকে না; বরং তা নারীর প্রতি কাঠামোগত বৈষম্যের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক সাক্ষ্য হয়ে দাঁড়ায়।
এমন অবস্থায় এনসিপি নৈতিক ও সাংগঠনিক অগ্নিপরীক্ষার মুখে রয়েছে। দলটি সত্যিই নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতির ধারক হতে চাইলে তাদের কয়েকটি কাজ করতে হবে—
১. সারোয়ার তুষারের বিরুদ্ধে অভিযোগের সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও দ্রুত তদন্ত করতে হবে।
২. অভিযোগকারী নীলা ইস্রাফিলের প্রতি আনুষ্ঠানিক সমর্থন ও দুঃখ প্রকাশ করতে হবে।
৩. দলের ভেতরে নারীর নিরাপত্তা ও মর্যাদা নিশ্চিতে বাধ্যতামূলক জেন্ডার নীতিমালা চালু করতে হবে।
৪. ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে প্রশিক্ষণ ও অভ্যন্তরীণ অভিযোগব্যবস্থা কার্যকর করতে হবে।
৫. নারীবান্ধব সংস্কৃতি গড়ে তোলার জন্য দলীয় নেতৃত্বে নারীর সংখ্যা ও ক্ষমতা বাড়াতে হবে।
৬. মুখপাত্র বা মুখ্য নেত্রীদের প্রতীকী না করে তাঁদের সিদ্ধান্ত গ্রহণে পূর্ণাঙ্গ ভূমিকা দিতে হবে।
না হলে এনসিপি সেই পুরোনো ধারার রাজনীতিরই আরেক রূপ হয়ে থাকবে, যেখানে নারী কেবল ব্যানারে থাকবে, মঞ্চে থাকবে, মুখপাত্র হবে, কিন্তু দলের ভেতরের কাঠামোতে তাঁর জায়গা থাকবে না। গণ-অভ্যুত্থান থেকে উদ্ভূত এক রাজনৈতিক শক্তির পক্ষ থেকে সেটিই হবে সবচেয়ে বড় প্রতারণা।
লেখক: সহকারী বার্তা সম্পাদক
আজকের পত্রিকা

বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন মাত্রা যোগ করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। ৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের গর্ভ থেকে জন্ম নেওয়া দলটি ‘নতুন বন্দোবস্তের’ স্লোগান দিয়ে নিজেদের নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতির ধারক হিসেবে তুলে ধরেছে; বিশেষ করে নারীর নেতৃত্ব, অংশগ্রহণ ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রশ্নে এনসিপির বাণীতে অনেকে আশার আলো খুঁজেছেন। কিন্তু গত ফেব্রুয়ারিতে দল গঠনের আগে ও পরে দলের নেতা-কর্মীদের ঘিরে একের পর এক ঘটনা সেই প্রত্যাশার বিপরীত চিত্র ফুটিয়ে তুলেছে বলে অনেকে মনে করছেন। বিশেষ করে, নারীর প্রতি দলটির অবস্থান বারবার প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।
অভ্যুত্থানের নেতৃত্বে সামনের সারিতে থাকা ব্যক্তিদের নিয়ে গঠিত দলটি এখন যৌন হয়রানির অভিযোগ নিয়ে সমালোচনার কেন্দ্রে রয়েছে। সেই ঘটনার শুরু হয় এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষারের সঙ্গে এক নারীর অডিও ফাঁস হওয়ার পর। সেখানে তুষারের পক্ষ থেকে যৌন হয়রানিমূলক কথাবার্তা শোনা যায়। অডিওতে নারী কণ্ঠটি যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. তাজনূভা জাবীনের বলে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর তাজনূভার চরিত্রহনন শুরু হয় সামাজিক মাধ্যমে। তাজনূভা ফেসবুকে জানান, ওই নারী তিনি নিজে নন, তবে কে তা জানেন।
কয়েক দিনের জল্পনাকল্পনার অবসান ঘটে যখন এনসিপির এক সংগঠক নীলা ইস্রাফিল প্রকাশ্যে আসেন। তিনি তুষারের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তোলেন। তাঁর দাবি, বিষয়টি নিয়ে ঈদুল আজহার দিনে সংগঠনের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামকে জানালেও বিষয়টির সমাধান পাননি। কেন্দ্রীয় নেতার আচরণের বিষয়ে তিনি ঢাকা মহানগর শাখার নেতাদের সঙ্গে আলাপ করতে বলেন। এর মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় তুষারের পক্ষ হয়ে নীলাকে আক্রমণ শুরু হয়, এতে এনসিপির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরাও যুক্ত হন। এমনকি দলের নারী নেত্রীরাও তাঁর পাশে দাঁড়াননি বলে নীলার অভিযোগ। এর মধ্যে এনসিপির পক্ষ থেকে তাজনূভা জাবীনের একটি বিবৃতি দেওয়া হয়। সেটি ফেসবুকে শেয়ার করে তাজনূভা যে পোস্ট দিয়েছেন, তাতে নারী বিষয়ে দলের অবস্থান নিয়ে সুস্পষ্ট অনাস্থা ও অবিশ্বাসের প্রকাশ ঘটেছে।
এর আগে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে নারী সংস্কার কমিশনের সদস্যদের ‘বেশ্যা’ বলে গালি দেওয়া হয়। ওই সমাবেশে এনসিপির প্রভাবশালী নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ উপস্থিত ছিলেন, বক্তব্য দিয়েছেন। হাসনাতের বিষয়টির প্রতিবাদ না করা বা সমাবেশ বর্জন না করায় বেশ সমালোচনা হয়। তা ছাড়া নারীর সমান অধিকারের পক্ষে এনসিপির স্পষ্ট অবস্থান নেই। শুরুর দিকে সামান্থা শারমিনকে এনসিপির মুখপাত্রের দায়িত্ব দেওয়া হয়। একাধিক অনুষ্ঠানে নারী বিষয়ে দলের অবস্থান নিয়ে দ্বিধাগ্রস্ত দেখা গেছে। এনসিপির আঁতুড়ঘর হিসেবে পরিচিত জাতীয় নাগরিক কমিটি ছেড়ে যাওয়া শেখ তাসনিম আফরোজ ইমিও নারী বিষয়ে নেতৃত্বের দুর্বলতার কথ তুলে ধরেছেন।
নীলা ইস্রাফিলের অভিযোগ
মানবাধিকারকর্মী ও রাজনৈতিক সংগঠক হিসেবে এনসিপির প্রতি আস্থা ও ভালোবাসার কথা প্রকাশ করেছেন নীলা ইস্রাফিল। তিনি গণ-অভ্যুত্থানের সময় সক্রিয় ছিলেন এবং এনসিপি গঠনের প্রাক্-পর্বেই দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতা সারোয়ার তুষারের সঙ্গে তাঁর রাজনৈতিক যোগাযোগ গড়ে ওঠে। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই সম্পর্ক ক্রমশ বিষাক্ত হয়ে ওঠে বলে দাবি করেছেন নীলা।
ফেসবুক বিবৃতিতে তিনি বলেন, তুষার তাঁকে নানা সময় ‘আপত্তিকর বার্তা’ দিয়েছেন, যেমন ‘তোমার ঠোঁট সুন্দর’, ‘তোমার প্রতিবাদী কণ্ঠ আমাকে আকৃষ্ট করে’ ইত্যাদি। নীলা প্রথমে বিষয়টি গোপনে মীমাংসার চেষ্টা করেন এবং ঘনিষ্ঠ সহকর্মীদের জানান। এমনকি তুষারের প্রস্তাবকে প্রত্যাখ্যান করে তিনি দলের ভেতরে এ বিষয়ে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নিতে চেষ্টা করেন। কিন্তু এর বদলে তিনি দেখেন, তাঁকে দলের বিভিন্ন সেল থেকে বাদ দেওয়ার চেষ্টা চলেছে এবং তাঁর সম্পর্কে নেতিবাচক প্রচার শুরু হয়।
সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো, অভিযোগ জানানোর পরও এনসিপি কোনো প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা নেয়নি; বরং অডিও ফাঁস হয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর ‘চাপে পড়ে’ সারোয়ার তুষারকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হয়। নীলা দাবি করেছেন, গত ঈদের রাতে এক অনুষ্ঠানে দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামকে তিনি বিষয়টি জানালে নাহিদ ‘মহানগরের দায়িত্বে থাকা’ নেতাদের বিষয়টি অবগত করতে বলেন। তা যদি সত্য হয়, তাহলে বলতে হবে, এনসিপির শীর্ষ নেতৃত্ব যথাযথ সংবেদনশীলতার সঙ্গে বিষয়টি ডিল করেনি। একপ্রকার এড়িয়েই গেছে। কারণ, সারোয়ার তুষার কেন্দ্রীয় নেতা, ঢাকা মহানগর কমিটি তাঁর বিষয়ে অভিযোগ নিষ্পত্তি কীভাবে করে।
নেতৃত্বের নির্লিপ্ততা: মুখে নারীবান্ধব, আচরণে নয়
নীলা ইস্রাফিল দাবি করেছেন, নাহিদের কথামতো বিষয়টি মহানগর নেতাদের জানানোর পর তাঁকে নিয়ে ‘সোশ্যাল মিডিয়া ট্রায়াল’ হয়, কিন্তু তখন দলের নারী সহকর্মীরাও তাঁর পাশে দাঁড়াননি। কারণ, তাঁর অপরাধ—তিনি ‘পাশ্চাত্য’ পোশাক পরেন এবং ‘তুমি’ সম্বোধন করেন এবং সহজভাবে সবার সঙ্গে মেশেন। তাঁর দাবির সত্য-মিথ্যা বিচার্য বিষয়। কিন্তু যদি সত্য হয়, তাহলে এনসিপির ভেতরে রক্ষণশীলতা ও নারী স্বাধীনতাবিরোধী সংস্কৃতিচর্চার প্রকাশ এটি।
অভিযোগ ওঠার পর সারোয়ার তুষারের বিরুদ্ধে ১৭ জুন একটি কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়, যেখানে তাঁকে সাংগঠনিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়। কিন্তু উল্লেখযোগ্য যে, এর আগে দলীয় নেতৃত্ব বা নীতিনির্ধারকেরা বিষয়টি প্রকাশ্যে আনেননি কিংবা কোনো সহমর্মিতা প্রকাশ করেননি। এই প্রেক্ষাপটে এনসিপির আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক তাজনূভা জাবীনের ফেসবুক স্ট্যাটাস গভীর তাৎপর্য বহন করে। তিনি সরাসরি কোনো নেতার নাম বলেননি, তবে তাঁর বার্তা ছিল দল সম্পর্কে অনাস্থা ও সংশয়ের প্রকাশ।
ফেসবুকে তিনি লেখেন, ‘আমি বিশ্বাস করতে চাই, এনসিপি বাংলাদেশের নারীদের সামনে দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে—কেন তারা এনসিপিকে সমর্থন করবে। শুধু কাগজে-কলমে আর বক্তৃতায় না, কাজেও। বাস্তবায়নেও।’ তাজনূভা মনে করেন, এনসিপির নেতাদের উচিত, আগে নিজের দলের নারীদের যোগ্য নেতা হিসেবে গড়ে তুলতে সহযোগিতা করা। তারপর তাঁদের সংসদে নারী আসনে সরাসরি নির্বাচনের দাবি তোলা উচিত।
তিনি দলের নেতাদের উদ্দেশে বলেন, ‘সংসদে নারী আসনে সরাসরি নির্বাচনের দাবি বৃথা, যদি দলে আপনি যোগ্য নারী নেতৃত্ব তৈরি করতে সহযোগিতা না করেন। যে গণতান্ত্রিক উত্তরণ এনসিপি সংসদে, রাষ্ট্রে দেখতে চায়, সেটা তাকে আগে নিজের মধ্যে প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’
তাজনূভা আরও বলেন, ‘অজানা, অচেনা, সাধারণ ঘরের যোগ্য, দৃঢ়, শিক্ষিত নারীরা যাতে রাজনীতিতে এসে দেশকে দিতে পারে, সে জন্য এনসিপিকে বিশ্বস্ত ও নির্ভরযোগ্য রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান হতে হবে।’ নয়তো বিদ্যমান রাজনৈতিক দলের সঙ্গে এনসিপির কোনো পার্থক্য থাকবে না বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
তাঁর ভাষ্য, বাংলাদেশের জন্মের পর থেকে জনসংখ্যার অর্ধেকের বেশি এই বিশাল জনগোষ্ঠীকে কোনো রাজনৈতিক দল গুরুত্বের সঙ্গে আমলে নেয়নি। এনসিপির সুযোগ আছে এ ক্ষেত্রে দৃষ্টান্ত স্থাপন করার। আর এর জন্য কোনো গোপন বা কঠিন সমীকরণের প্রয়োজন হবে না বলে মনে করেন তিনি। নারীর বিষয় উপেক্ষা করে বাংলাদেশে টেকসই রাজনীতি কখনোই সম্ভব নয় বলেও মত দেন তাজনূভা জাবীন।
তিনি নারীর বিরুদ্ধে দলীয় সহকর্মীদের যৌন হয়রানিমূলক প্রচারণা ও অপপ্রচারকে ‘রাজনৈতিক পরিসর সংকুচিত করার পরিকল্পিত প্রচেষ্টা’ হিসেবে অভিহিত করেন। তাঁর পোস্টে দলীয় সহকর্মী ও গণমাধ্যমের ভূমিকাও তিনি প্রশ্নবিদ্ধ করেন—যারা অভিযোগকারী নারীনেত্রীদের বিপক্ষে ইঙ্গিতপূর্ণ সংবাদ প্রচার বা নীরবতা পালন করেছে।
কাঠামোগত পিতৃতন্ত্রের মুখোমুখি নারী নেতৃত্ব
সারোয়ার তুষারের সঙ্গে সম্পর্কের প্রসঙ্গে নীলা ইস্রাফিল লিখেছেন, ‘বাংলাদেশে অসংখ্য নারীকে ক্ষমতাবান পুরুষের সঙ্গে এই ধরনের সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে হয়।’ এই বাক্য কেবল ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা নয়, বরং রাজনৈতিক ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোতে নারীর স্থান কোথায়, তা তুলে ধরে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলে নারীর অংশগ্রহণ থাকলেও তাঁদের ওপর বারবার চাপ প্রয়োগ, উপেক্ষা, প্রলোভন ও নিপীড়নের ঘটনা ঘটে থাকে। জুলাই অভ্যুত্থানের গর্ভজাত এনসিপি ‘নতুন বস্তোবস্ত’ নামে নতুন রাজনীতির দাবি করলেও বাস্তবে তারা পুরোনো চর্চার মধ্যে যে রয়েছে, তা স্পষ্ট।
এই অভ্যুত্থানের অন্যতম সহযোদ্ধা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুন নাহার হল সংসদের সাবেক ভিপি শেখ তাসনিম আফরোজ ইমি ২০২৫ সালের মে মাসে নাগরিক কমিটি থেকে পদত্যাগ করেন। সম্প্রতি তিনি ফেসবুক পোস্টে এনসিপির নারীবিষয়ক অবস্থানের সমালোচনা করেন। তাঁর মতে, নারীদের প্রশ্নে ‘মিনিমাম সততা’ না দেখিয়ে দ্বিচারিতা করে যাচ্ছে এনসিপি।
নারী মুখপাত্র: প্রতীকী উপস্থিতি, না বাস্তব নেতৃত্ব
জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখপাত্র হিসেবে সামান্থা শারমিন এবং তাঁদের সমর্থিত ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের মুখপাত্র করা হয়েছে আশরেফা খাতুনকে। তাঁদের উপস্থিতি নারীর রাজনৈতিক অংশগ্রহণের প্রতীক হিসেবে তুলে ধরা হলেও প্রশ্ন রয়ে গেছে—তাঁরা আদৌ সিদ্ধান্ত গ্রহণে ভূমিকা রাখেন কি না, নাকি শুধুই ‘ক্যামেরার সামনে উপস্থাপনের’ সস্তা কৌশল?
একাধিক অনুষ্ঠান ও সাক্ষাৎকারে নারীর সমান অধিকার বিষয়ে সামান্থার অপ্রস্তুত প্রতিক্রিয়া এই আশঙ্কাকে জোরালো করেছে যে, তাঁদের ভূমিকা বাস্তবায়নের চেয়ে বেশি প্রতীকী। এনসিপি যদি সত্যিই নারীবান্ধব দল হতে চায়, তবে এই প্রশ্নের সদুত্তর দেওয়া জরুরি।
দলীয় হিপোক্রেসি ও নৈতিক পরীক্ষা
এনসিপির নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ হেফাজতের সমাবেশে অংশ নেন, যেখানে নারী সংস্কার কমিশনের সদস্যদের ‘বেশ্যা’ বলে আক্রমণ করা হয়। এনসিপির নৈতিক অবস্থান ও নারীর প্রতি শ্রদ্ধাবোধের কথা বারবার বলা হলেও এই ঘটনায় দল বা নেতারা প্রকাশ্যে কোনো বিবৃতি দেয়নি। এতে আবারও প্রমাণিত হয়, নারীর অধিকার ও মর্যাদার প্রশ্নে দলটি নীরবতা পালন করেছে।
তুষারের বিরুদ্ধে এর আগেও যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছিল। ২০২১ সালে তাঁর সাবেক প্রেমিকা বীথি সপ্তর্ষি ওই অভিযোগ করেন। তুষার সে সময় রাষ্ট্রচিন্তার সদস্য ছিলেন। বীথির অভিযোগের ভিত্তিতে তখন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মির্জা তাসলিমাকে আহ্বায়ক করে আলোকচিত্রী ড. শহিদুল আলম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সামিনা লুৎফা, আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া ও গবেষক দিলশানা পারুলের সমন্বয়ে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
অভিযুক্ত ও অভিযোগকারী উভয়ের বক্তব্য নিয়ে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিলও করেছিল তদন্ত কমিটি। তুষারের বিরুদ্ধে বীথির অভিযোগের বিষয়ে ‘গ্রহণযোগ্য নিষ্পত্তি হয়নি’ বলে সম্প্রতি এক বিবৃতিতে জানান ড. শহিদুল আলম। সেই বিবৃতিতে সই করেন মির্জা তাসলিমা সুলতানা ও ড. সামিনা লুৎফাও। প্রশ্ন উঠেছে, এ রকম অবস্থায় একজন ব্যক্তিকে দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব কীভাবে দেওয়া হয়। শুধু তা-ই নয়, দ্বিতীয়বার যখন অভিযোগ উঠল, তখন বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া হলো না কেন?
যে দলটি নারীর অংশগ্রহণের কথা বলছে, সেই দলের শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে যখন যৌন হয়রানির অভিযোগ আসে এবং তা বারবার উপেক্ষিত হয়, তখন সেটি একটি নৈতিক পতনের ইঙ্গিত দেয়। আবার সেই অভিযোগকারী নারীকে যখন দমন, অপমান ও দূরে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়, তখন সেটি আর কেবল ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থাকে না; বরং তা নারীর প্রতি কাঠামোগত বৈষম্যের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক সাক্ষ্য হয়ে দাঁড়ায়।
এমন অবস্থায় এনসিপি নৈতিক ও সাংগঠনিক অগ্নিপরীক্ষার মুখে রয়েছে। দলটি সত্যিই নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতির ধারক হতে চাইলে তাদের কয়েকটি কাজ করতে হবে—
১. সারোয়ার তুষারের বিরুদ্ধে অভিযোগের সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও দ্রুত তদন্ত করতে হবে।
২. অভিযোগকারী নীলা ইস্রাফিলের প্রতি আনুষ্ঠানিক সমর্থন ও দুঃখ প্রকাশ করতে হবে।
৩. দলের ভেতরে নারীর নিরাপত্তা ও মর্যাদা নিশ্চিতে বাধ্যতামূলক জেন্ডার নীতিমালা চালু করতে হবে।
৪. ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে প্রশিক্ষণ ও অভ্যন্তরীণ অভিযোগব্যবস্থা কার্যকর করতে হবে।
৫. নারীবান্ধব সংস্কৃতি গড়ে তোলার জন্য দলীয় নেতৃত্বে নারীর সংখ্যা ও ক্ষমতা বাড়াতে হবে।
৬. মুখপাত্র বা মুখ্য নেত্রীদের প্রতীকী না করে তাঁদের সিদ্ধান্ত গ্রহণে পূর্ণাঙ্গ ভূমিকা দিতে হবে।
না হলে এনসিপি সেই পুরোনো ধারার রাজনীতিরই আরেক রূপ হয়ে থাকবে, যেখানে নারী কেবল ব্যানারে থাকবে, মঞ্চে থাকবে, মুখপাত্র হবে, কিন্তু দলের ভেতরের কাঠামোতে তাঁর জায়গা থাকবে না। গণ-অভ্যুত্থান থেকে উদ্ভূত এক রাজনৈতিক শক্তির পক্ষ থেকে সেটিই হবে সবচেয়ে বড় প্রতারণা।
লেখক: সহকারী বার্তা সম্পাদক
আজকের পত্রিকা

মিরপুরের শিয়ালবাড়ী এলাকায় একটি রাসায়নিক গুদামে আগুন লাগার পর যে মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছিল, সে কথা সবাই এখন জানেন। যাঁরা স্বজন হারিয়েছেন, তাঁরা জানেন এটা তাঁদের পরিবারের জন্য কত বড় ক্ষতি। নিহতদের পরিবার ক্ষতিপূরণ পাচ্ছে কি না, তাদের জীবনে স্থিতি ফিরিয়ে আনতে কী করা দরকার...
৯ ঘণ্টা আগে
না, সব উপদেষ্টা প্রশ্নবিদ্ধ নন। তবে সংখ্যাটা যে নেহাত কম হবে না, তা অনুমান করা যায় যখন প্রধান তিনটি প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলই আলাদা আলাদাভাবে উপদেষ্টাদের দলঘনিষ্ঠতার অভিযোগ তোলে। অবশ্য এবারই প্রথম নয়, এর আগেও একই অভিযোগ তোলা হয়েছে, যখন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম কোনো কোনো উপদেষ্টার সেফ...
১০ ঘণ্টা আগে
সমাজ এগিয়ে চলেছে দ্রুতগতিতে, পৃথিবী প্রবেশ করেছে এক নতুন যুগে। এই গতিময় সভ্যতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে গিয়ে আমরা হয়তো অনেক কিছু পাচ্ছি, কিন্তু হারিয়ে ফেলছি আরও বেশি কিছু। আজ আমরা এক অদ্ভুত স্বার্থপর সময়ে বাস করছি, যেখানে প্রতিটি সম্পর্কের মাপকাঠি হয়ে দাঁড়িয়েছে ব্যক্তিগত লাভ-ক্ষতি।
১০ ঘণ্টা আগে
প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি সুন্দরবন এ দেশের দক্ষিণাঞ্চলকে মাতৃস্নেহে আগলে রেখেছে। ঝড়-ঝঞ্ঝা, জলোচ্ছ্বাস, ভূমিক্ষয় রোধসহ সব প্রাকৃতিক দুর্যোগে সুন্দরবন আমাদের রক্ষা করে আসছে। এই সুন্দরবনের এক অনন্য প্রজাতির প্রাণী হলো রয়েল বেঙ্গল টাইগার।
১০ ঘণ্টা আগেসম্পাদকীয়

মিরপুরের শিয়ালবাড়ী এলাকায় একটি রাসায়নিক গুদামে আগুন লাগার পর যে মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছিল, সে কথা সবাই এখন জানেন। যাঁরা স্বজন হারিয়েছেন, তাঁরা জানেন এটা তাঁদের পরিবারের জন্য কত বড় ক্ষতি। নিহতদের পরিবার ক্ষতিপূরণ পাচ্ছে কি না, তাদের জীবনে স্থিতি ফিরিয়ে আনতে কী করা দরকার—তা নিয়ে সংশ্লিষ্টরা নিশ্চয়ই ভাববেন। এ রকম একটা অবস্থায় দুর্ঘটনা-পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে খুব কম মানুষই মাথা ঘামায়। দুর্ঘটনা-পরবর্তী সময়টিতে স্থানীয় পরিবেশ ও পরিস্থিতি যে মোটেও অনুকূল থাকে না, সেটা বোঝা দরকার।
সম্প্রতি আমাদের প্রতিবেদক শিয়ালবাড়ীর ক্ষতিগ্রস্ত রাসায়নিক গুদামে গিয়েছিলেন। সেখানে গিয়ে তিনি দেখেছেন, এতগুলো দিন পার হওয়ার পরও বিষাক্ত রাসায়নিকের কারণে এখনো অসুস্থ হচ্ছে মানুষ। রাসায়নিকের ড্রাম থেকে নির্গত বিষাক্ত গ্যাস ও ধোঁয়া মানুষকে অসুস্থ করে দিচ্ছে। অসুস্থদের মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধরা রয়েছেন ঝুঁকির মধ্যে। প্রায়ই দেখা যায়, একটা দুর্ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর দু-এক দিন সংবাদপত্রে রিপোর্ট হয়, তারপর একসময় সেটা ভুলে যায় মানুষ। কিন্তু যে মানুষেরা ভুক্তভোগী, তাদের প্রতিটি দিনই যে কাটছে ভয়ংকর রাসায়নিকের সঙ্গে লড়াই করে, সে খবর কয়জন রাখে?
চিকিৎসকেরা বলেছেন, অগ্নিকাণ্ডের কয়েক দিন পরও বিষাক্ত গ্যাস ও ধোঁয়ার ঘনত্ব বেশি থাকে। পরে ধীরে ধীরে তা কমে যায়। মাটিতে পড়ে থাকা রাসায়নিক দ্রব্যের অবশিষ্টাংশ ভুক্তভোগীর শরীরে ঢোকে। ঘন ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ার কারণে বাতাসে ভাসমান ক্ষুদ্র ধূলিকণা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি হয়ে যায়। এই কারণে ভবিষ্যতেও তা বিপদ সৃষ্টি করতে পারে।
বিষাক্ত কণিকা বা গ্যাস মানবদেহে ঢোকে শ্বাসের মাধ্যমে, ত্বকের মাধ্যমে এবং খাদ্যের মাধ্যমে। এই গ্যাস অ্যাজমা, কাশি, গলাজ্বলা বা শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। চোখ আর ত্বকও তাতে আক্রান্ত হতে পারে। তৈরি হতে পারে মাথাব্যথা, বমি ও ক্লান্তির মতো ঘটনা। ভারী ধাতু দীর্ঘ মেয়াদে স্নায়ুতন্ত্র দুর্বল করে দেয়। তাতে হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। উচ্চ রক্তচাপ হতে পারে।
শিয়ালবাড়ীর দুর্ঘটনাস্থলের অন্তত এক হাজার গজ পর্যন্ত এলাকায় বাতাসে এখনো পোড়া জিনিস ও গ্যাসের মতো কটু গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। তাতে মনে হয়, এই এলাকার মানুষের স্বাস্থ্য পরিস্থিতি এখনো রয়েছে সংকটের মুখে।
আমরা সবাই জানি, স্বাস্থ্য আমাদের মৌলিক অধিকারের একটি। কিন্তু দেশের মানুষ এ কথাও জানে, সেই মৌলিক অধিকার সব সময় সমুন্নত রাখা হয় না। রাসায়নিক গুদামে অগ্নিকাণ্ড ঘটলে কীভাবে তার মোকাবিলা করতে হবে, তার পূর্বপ্রস্তুতি কয়টি গুদামে আছে? এসব জায়গায় কি নিয়মিত ইন্সপেকশন হয়? শুধু গুদাম কেন, কারখানাগুলোয় কি সঠিক নিরাপত্তাব্যবস্থা রয়েছে? শ্রমিকেরা কি নিরাপদে তাঁদের কাজ করে যেতে পারেন?
এসব দুর্ঘটনায় মূলত সমাজের নিচুতলার মানুষেরা বিপদে পড়েন। তাঁদের পাশে যদি দাঁড়ানো না হয়, তাহলে বুঝতে হবে, শিল্প-ব্যবস্থাপনায় যে ঘাটতি আছে, তা নিরসনের কোনো চিন্তা কারও নেই।

মিরপুরের শিয়ালবাড়ী এলাকায় একটি রাসায়নিক গুদামে আগুন লাগার পর যে মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছিল, সে কথা সবাই এখন জানেন। যাঁরা স্বজন হারিয়েছেন, তাঁরা জানেন এটা তাঁদের পরিবারের জন্য কত বড় ক্ষতি। নিহতদের পরিবার ক্ষতিপূরণ পাচ্ছে কি না, তাদের জীবনে স্থিতি ফিরিয়ে আনতে কী করা দরকার—তা নিয়ে সংশ্লিষ্টরা নিশ্চয়ই ভাববেন। এ রকম একটা অবস্থায় দুর্ঘটনা-পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে খুব কম মানুষই মাথা ঘামায়। দুর্ঘটনা-পরবর্তী সময়টিতে স্থানীয় পরিবেশ ও পরিস্থিতি যে মোটেও অনুকূল থাকে না, সেটা বোঝা দরকার।
সম্প্রতি আমাদের প্রতিবেদক শিয়ালবাড়ীর ক্ষতিগ্রস্ত রাসায়নিক গুদামে গিয়েছিলেন। সেখানে গিয়ে তিনি দেখেছেন, এতগুলো দিন পার হওয়ার পরও বিষাক্ত রাসায়নিকের কারণে এখনো অসুস্থ হচ্ছে মানুষ। রাসায়নিকের ড্রাম থেকে নির্গত বিষাক্ত গ্যাস ও ধোঁয়া মানুষকে অসুস্থ করে দিচ্ছে। অসুস্থদের মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধরা রয়েছেন ঝুঁকির মধ্যে। প্রায়ই দেখা যায়, একটা দুর্ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর দু-এক দিন সংবাদপত্রে রিপোর্ট হয়, তারপর একসময় সেটা ভুলে যায় মানুষ। কিন্তু যে মানুষেরা ভুক্তভোগী, তাদের প্রতিটি দিনই যে কাটছে ভয়ংকর রাসায়নিকের সঙ্গে লড়াই করে, সে খবর কয়জন রাখে?
চিকিৎসকেরা বলেছেন, অগ্নিকাণ্ডের কয়েক দিন পরও বিষাক্ত গ্যাস ও ধোঁয়ার ঘনত্ব বেশি থাকে। পরে ধীরে ধীরে তা কমে যায়। মাটিতে পড়ে থাকা রাসায়নিক দ্রব্যের অবশিষ্টাংশ ভুক্তভোগীর শরীরে ঢোকে। ঘন ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ার কারণে বাতাসে ভাসমান ক্ষুদ্র ধূলিকণা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি হয়ে যায়। এই কারণে ভবিষ্যতেও তা বিপদ সৃষ্টি করতে পারে।
বিষাক্ত কণিকা বা গ্যাস মানবদেহে ঢোকে শ্বাসের মাধ্যমে, ত্বকের মাধ্যমে এবং খাদ্যের মাধ্যমে। এই গ্যাস অ্যাজমা, কাশি, গলাজ্বলা বা শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। চোখ আর ত্বকও তাতে আক্রান্ত হতে পারে। তৈরি হতে পারে মাথাব্যথা, বমি ও ক্লান্তির মতো ঘটনা। ভারী ধাতু দীর্ঘ মেয়াদে স্নায়ুতন্ত্র দুর্বল করে দেয়। তাতে হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। উচ্চ রক্তচাপ হতে পারে।
শিয়ালবাড়ীর দুর্ঘটনাস্থলের অন্তত এক হাজার গজ পর্যন্ত এলাকায় বাতাসে এখনো পোড়া জিনিস ও গ্যাসের মতো কটু গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। তাতে মনে হয়, এই এলাকার মানুষের স্বাস্থ্য পরিস্থিতি এখনো রয়েছে সংকটের মুখে।
আমরা সবাই জানি, স্বাস্থ্য আমাদের মৌলিক অধিকারের একটি। কিন্তু দেশের মানুষ এ কথাও জানে, সেই মৌলিক অধিকার সব সময় সমুন্নত রাখা হয় না। রাসায়নিক গুদামে অগ্নিকাণ্ড ঘটলে কীভাবে তার মোকাবিলা করতে হবে, তার পূর্বপ্রস্তুতি কয়টি গুদামে আছে? এসব জায়গায় কি নিয়মিত ইন্সপেকশন হয়? শুধু গুদাম কেন, কারখানাগুলোয় কি সঠিক নিরাপত্তাব্যবস্থা রয়েছে? শ্রমিকেরা কি নিরাপদে তাঁদের কাজ করে যেতে পারেন?
এসব দুর্ঘটনায় মূলত সমাজের নিচুতলার মানুষেরা বিপদে পড়েন। তাঁদের পাশে যদি দাঁড়ানো না হয়, তাহলে বুঝতে হবে, শিল্প-ব্যবস্থাপনায় যে ঘাটতি আছে, তা নিরসনের কোনো চিন্তা কারও নেই।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন মাত্রা যোগ করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। ৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের গর্ভ থেকে জন্ম নেওয়া দলটি ‘নতুন বন্দোবস্তের’ স্লোগান দিয়ে নিজেদের নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতির ধারক হিসেবে তুলে ধরেছে। বিশেষ করে, নারীর নেতৃত্ব, অংশগ্রহণ ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রশ্নে এনসিপির বাণীতে
২৪ জুন ২০২৫
না, সব উপদেষ্টা প্রশ্নবিদ্ধ নন। তবে সংখ্যাটা যে নেহাত কম হবে না, তা অনুমান করা যায় যখন প্রধান তিনটি প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলই আলাদা আলাদাভাবে উপদেষ্টাদের দলঘনিষ্ঠতার অভিযোগ তোলে। অবশ্য এবারই প্রথম নয়, এর আগেও একই অভিযোগ তোলা হয়েছে, যখন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম কোনো কোনো উপদেষ্টার সেফ...
১০ ঘণ্টা আগে
সমাজ এগিয়ে চলেছে দ্রুতগতিতে, পৃথিবী প্রবেশ করেছে এক নতুন যুগে। এই গতিময় সভ্যতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে গিয়ে আমরা হয়তো অনেক কিছু পাচ্ছি, কিন্তু হারিয়ে ফেলছি আরও বেশি কিছু। আজ আমরা এক অদ্ভুত স্বার্থপর সময়ে বাস করছি, যেখানে প্রতিটি সম্পর্কের মাপকাঠি হয়ে দাঁড়িয়েছে ব্যক্তিগত লাভ-ক্ষতি।
১০ ঘণ্টা আগে
প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি সুন্দরবন এ দেশের দক্ষিণাঞ্চলকে মাতৃস্নেহে আগলে রেখেছে। ঝড়-ঝঞ্ঝা, জলোচ্ছ্বাস, ভূমিক্ষয় রোধসহ সব প্রাকৃতিক দুর্যোগে সুন্দরবন আমাদের রক্ষা করে আসছে। এই সুন্দরবনের এক অনন্য প্রজাতির প্রাণী হলো রয়েল বেঙ্গল টাইগার।
১০ ঘণ্টা আগেঅরুণ কর্মকার

না, সব উপদেষ্টা প্রশ্নবিদ্ধ নন। তবে সংখ্যাটা যে নেহাত কম হবে না, তা অনুমান করা যায় যখন প্রধান তিনটি প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলই আলাদা আলাদাভাবে উপদেষ্টাদের দলঘনিষ্ঠতার অভিযোগ তোলে। অবশ্য এবারই প্রথম নয়, এর আগেও একই অভিযোগ তোলা হয়েছে, যখন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম কোনো কোনো উপদেষ্টার সেফ এক্সিটের প্রসঙ্গটি তুলেছিলেন। আর এবার তো জানা গেল প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে গত বুধবার অনুষ্ঠিত বৈঠকে জামায়াতে ইসলামী তাদের দৃষ্টিতে দলঘনিষ্ঠ উপদেষ্টাদের নামধামের তালিকাই নিয়ে গিয়েছিল। তবে ওই দিন সেই তালিকা তারা প্রধান উপদেষ্টাকে দেয়নি। প্রয়োজন হলে পরে দেবে। এবার শুধু বিষয়টি সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে এবং কয়েকজন উপদেষ্টা বিএনপির পক্ষে কাজ করছেন বলে অভিযোগ করেছে।
শুধু উপদেষ্টা নয়, জামায়াত সুনির্দিষ্ট নাম-ঠিকানা নিয়ে গিয়েছিল প্রায় ৪০ জন আমলারও, যাঁরা তাদের দৃষ্টিতে কোনো না কোনো দলের হয়ে, বিশেষত বিএনপির হয়ে কাজ করছেন। আর বৈঠক-পরবর্তী সংবাদ ব্রিফিংয়ে জামায়াতের নেতারা উল্লেখ করেছেন যে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রশাসন ও পুলিশের ৭০ থেকে ৮০ ভাগ লোকই বিএনপির। বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টাকে জামায়াত বলেছে, নির্বাচনের আগে সরকারকে নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে হবে। এ জন্য সচিবালয়, পুলিশ প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ে রদবদল আনতে হবে। বিএনপির বিরুদ্ধে জামায়াতের আরও অভিযোগ, বিএনপি রাজনৈতিক চাপে পড়ে গণভোটে রাজি হলেও এখন জটিলতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে।
ওই দিনই জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) একটি প্রতিনিধিদলও পৃথকভাবে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে। এরপর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, তাঁরা প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছেন, নির্বাচনের আগে বড় রাজনৈতিক দলগুলো প্রশাসন ও পুলিশে নিজেদের মতো ভাগ-বাঁটোয়ারা শুরু করেছে। ডিসি-এসপিদের তালিকা করে সরকারকে দিচ্ছে এবং সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের মধ্য থেকেও এ ব্যাপারে তারা সহযোগিতা পাচ্ছে।
এনসিপির আরও বড় অভিযোগ নির্বাচন কমিশন সম্পর্কে। প্রধান উপদেষ্টাকে তারা বলেছে, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ আচরণ করছে না। কোনো কোনো দলের প্রতি পক্ষপাতমূলক আচরণ করছে। শাপলা প্রতীক পাওয়া প্রসঙ্গে নাহিদ ইসলামের স্পষ্ট বক্তব্য হলো, যে নির্বাচন কমিশন নিবন্ধন এবং প্রতীকের বিষয়ে এনসিপির সঙ্গে ন্যায়বিচার করে না, তার অধীনে নির্বাচনে গিয়ে ন্যায়বিচার এবং নিরপেক্ষতা বা সঠিক ফলাফল পাওয়ার ব্যাপারে ভরসা করা যায় না। তাই নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। তাঁদের যুক্তি হলো, নির্বাচন কমিশনের কারণে যদি সুষ্ঠু নির্বাচন না হয়, সেই দায়ও সরকারের ওপরই পড়বে।
উপদেষ্টাদের নিয়ে প্রশ্ন আছে বিএনপিরও। জামায়াত ও এনসিপির এক দিন আগে, গত মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করেছে বিএনপি। সেই বৈঠকে তারাও কয়েকজন উপদেষ্টাকে নিয়ে আপত্তি তুলেছে। কারও নাম উল্লেখ না করেই বিতর্কিত উপদেষ্টাদের বাদ দেওয়ার জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে আহ্বান জানিয়েছে দলটি। এর আগেও বিএনপির পক্ষ থেকে এমন আহ্বান জানানো হয়েছিল। তখন দুই ছাত্র উপদেষ্টাকে পদত্যাগ করতে বলা হয়েছিল বলেও খবর বেরিয়েছে। তবে তাঁরা তখনই তাতে রাজি হননি। উপদেষ্টাদের ছাড়াও প্রশাসন নিয়েও অন্য দুই দলের মতোই উদ্বেগ আছে বিএনপিরও। মঙ্গলবারের বৈঠকে তারা এই বলে প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে যে প্রশাসন, পুলিশ এবং বিচার বিভাগের প্রায় ৫০ ভাগ ফ্যাসিস্টের দোসর।
তিনটি দলের সঙ্গে বৈঠকেই প্রধান উপদেষ্টা সরকারের নিরপেক্ষ অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের নিরপেক্ষতা নিয়ে আপনারা নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন। একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে আমরা ইতিমধ্যে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি; সামনে আরও অনেক উদ্যোগ আপনারা দেখতে পাবেন।’
তা প্রধান উপদেষ্টা যতই নিশ্চয়তা দিন না কেন, যেখানে সব দলের কাছেই উপদেষ্টাদের (সবার নয়) এবং প্রশাসনের পক্ষপাতদুষ্টতা স্পষ্ট, যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণ আছে উল্লেখ করে যখন প্রকাশ্যে বারবার অভিযোগ করা হচ্ছে, সেখানে রাজনৈতিক দলগুলো কীভাবে নিশ্চিন্তে নিশ্চিত থাকতে পারে! তা ছাড়া, মাঝেমধ্যেই তো দলগুলোর পরস্পরের প্রতি বৈরী বক্তব্য রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তাপ ছড়াচ্ছে। যেমন কিছুদিন আগে এনসিপির আহ্বায়ক তাঁর ফেসবুক পোস্টে বললেন, সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন (পিআর) নিয়ে জামায়াতের আন্দোলন রাজনৈতিক প্রতারণা ছাড়া আর কিছু নয়। কিংবা জামায়াত জুলাই অভ্যুত্থানের আগে-পরে কখনোই সংস্কার আলোচনায় যুক্ত হয়নি। তারা কোনো কার্যকর প্রস্তাব দেয়নি। কোনো সাংবিধানিক দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করেনি এবং গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের প্রতি কোনো অঙ্গীকারও দেখায়নি।
এর পরিপ্রেক্ষিতে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বললেন আরও একটু শক্ত কথা—‘জন্মের পরই বাপের সাথে পাল্লা দিতে যেও না।’ সরকার ভাবতে পারে যে এগুলো তো রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যেকার বাহাস। এটা নিয়ে তাদের অতটা না ভাবলেও চলবে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, এই বাহাসগুলো তো রাজনৈতিক বাস্তবতা। এগুলো তো রাজনৈতিক অঙ্গনকে অস্থিতিশীল করতে পারে, যা শেষ পর্যন্ত নির্বাচনের পরিবেশেও প্রভাব ফেলতে পারে।
তারপর উল্লেখ করা যায় মঙ্গলবারের বৈঠকে বিএনপি যে অন্তর্বর্তী সরকারকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে, সে সম্পর্কে এনসিপির প্রতিক্রিয়ার কথা। এনসিপি বলল হঠাৎ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়ার পরামর্শটি দুরভিসন্ধিমূলক। কারণ, অন্তর্বর্তী সরকার গণ-অভ্যুত্থানের সরকার। সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন—এই তিনটি তাদের ম্যান্ডেট। অথচ বিএনপির বক্তব্যটি ছিল—নিরপেক্ষতার নিরিখে এখন অন্তর্বর্তী সরকারকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূমিকা নিতে হবে।
এইসব রাজনৈতিক টানাপোড়েন ছাড়াও কতগুলো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এখনো অমীমাংসিত রয়েছে। যেমন জামায়াতের কাছে অমীমাংসিত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি, সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি, ওই সনদের ভিত্তিতে নির্বাচন, পিআর পদ্ধতির নির্বাচন এবং জাতীয় নির্বাচনের আগে আগামী নভেম্বরে গণভোট। এই দাবিতে জামায়াতসহ আটটি দল আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। এনসিপির কাছে অমীমাংসিত বিষয় জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি, সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি, নির্বাচন কমিশনের পুনর্গঠন এবং তাদের দাবিকৃত নির্বাচনী প্রতীক শাপলা বরাদ্দ দেওয়া। বিএনপির কাছে সবচেয়ে বড় ইস্যু সময়মতো সুষ্ঠু নির্বাচন। এ ছাড়া এই তিনটি দলের কাছেই (হয়তো আরও অনেক দলের কাছে) সাধারণ ইস্যু হচ্ছে সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য দলঘনিষ্ঠ উপদেষ্টাদের সরিয়ে দেওয়া। এর মধ্যে বেশ কিছু বিষয় প্রতিটি দল চায় না। এসব বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষ ভূমিকা নিশ্চিত করা এবং রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে সেই ভূমিকা নিরপেক্ষ হিসেবেই প্রতীয়মান হওয়া এক বড় চ্যালেঞ্জই বটে।

না, সব উপদেষ্টা প্রশ্নবিদ্ধ নন। তবে সংখ্যাটা যে নেহাত কম হবে না, তা অনুমান করা যায় যখন প্রধান তিনটি প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলই আলাদা আলাদাভাবে উপদেষ্টাদের দলঘনিষ্ঠতার অভিযোগ তোলে। অবশ্য এবারই প্রথম নয়, এর আগেও একই অভিযোগ তোলা হয়েছে, যখন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম কোনো কোনো উপদেষ্টার সেফ এক্সিটের প্রসঙ্গটি তুলেছিলেন। আর এবার তো জানা গেল প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে গত বুধবার অনুষ্ঠিত বৈঠকে জামায়াতে ইসলামী তাদের দৃষ্টিতে দলঘনিষ্ঠ উপদেষ্টাদের নামধামের তালিকাই নিয়ে গিয়েছিল। তবে ওই দিন সেই তালিকা তারা প্রধান উপদেষ্টাকে দেয়নি। প্রয়োজন হলে পরে দেবে। এবার শুধু বিষয়টি সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে এবং কয়েকজন উপদেষ্টা বিএনপির পক্ষে কাজ করছেন বলে অভিযোগ করেছে।
শুধু উপদেষ্টা নয়, জামায়াত সুনির্দিষ্ট নাম-ঠিকানা নিয়ে গিয়েছিল প্রায় ৪০ জন আমলারও, যাঁরা তাদের দৃষ্টিতে কোনো না কোনো দলের হয়ে, বিশেষত বিএনপির হয়ে কাজ করছেন। আর বৈঠক-পরবর্তী সংবাদ ব্রিফিংয়ে জামায়াতের নেতারা উল্লেখ করেছেন যে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রশাসন ও পুলিশের ৭০ থেকে ৮০ ভাগ লোকই বিএনপির। বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টাকে জামায়াত বলেছে, নির্বাচনের আগে সরকারকে নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে হবে। এ জন্য সচিবালয়, পুলিশ প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ে রদবদল আনতে হবে। বিএনপির বিরুদ্ধে জামায়াতের আরও অভিযোগ, বিএনপি রাজনৈতিক চাপে পড়ে গণভোটে রাজি হলেও এখন জটিলতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে।
ওই দিনই জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) একটি প্রতিনিধিদলও পৃথকভাবে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে। এরপর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, তাঁরা প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছেন, নির্বাচনের আগে বড় রাজনৈতিক দলগুলো প্রশাসন ও পুলিশে নিজেদের মতো ভাগ-বাঁটোয়ারা শুরু করেছে। ডিসি-এসপিদের তালিকা করে সরকারকে দিচ্ছে এবং সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের মধ্য থেকেও এ ব্যাপারে তারা সহযোগিতা পাচ্ছে।
এনসিপির আরও বড় অভিযোগ নির্বাচন কমিশন সম্পর্কে। প্রধান উপদেষ্টাকে তারা বলেছে, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ আচরণ করছে না। কোনো কোনো দলের প্রতি পক্ষপাতমূলক আচরণ করছে। শাপলা প্রতীক পাওয়া প্রসঙ্গে নাহিদ ইসলামের স্পষ্ট বক্তব্য হলো, যে নির্বাচন কমিশন নিবন্ধন এবং প্রতীকের বিষয়ে এনসিপির সঙ্গে ন্যায়বিচার করে না, তার অধীনে নির্বাচনে গিয়ে ন্যায়বিচার এবং নিরপেক্ষতা বা সঠিক ফলাফল পাওয়ার ব্যাপারে ভরসা করা যায় না। তাই নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। তাঁদের যুক্তি হলো, নির্বাচন কমিশনের কারণে যদি সুষ্ঠু নির্বাচন না হয়, সেই দায়ও সরকারের ওপরই পড়বে।
উপদেষ্টাদের নিয়ে প্রশ্ন আছে বিএনপিরও। জামায়াত ও এনসিপির এক দিন আগে, গত মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করেছে বিএনপি। সেই বৈঠকে তারাও কয়েকজন উপদেষ্টাকে নিয়ে আপত্তি তুলেছে। কারও নাম উল্লেখ না করেই বিতর্কিত উপদেষ্টাদের বাদ দেওয়ার জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে আহ্বান জানিয়েছে দলটি। এর আগেও বিএনপির পক্ষ থেকে এমন আহ্বান জানানো হয়েছিল। তখন দুই ছাত্র উপদেষ্টাকে পদত্যাগ করতে বলা হয়েছিল বলেও খবর বেরিয়েছে। তবে তাঁরা তখনই তাতে রাজি হননি। উপদেষ্টাদের ছাড়াও প্রশাসন নিয়েও অন্য দুই দলের মতোই উদ্বেগ আছে বিএনপিরও। মঙ্গলবারের বৈঠকে তারা এই বলে প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে যে প্রশাসন, পুলিশ এবং বিচার বিভাগের প্রায় ৫০ ভাগ ফ্যাসিস্টের দোসর।
তিনটি দলের সঙ্গে বৈঠকেই প্রধান উপদেষ্টা সরকারের নিরপেক্ষ অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের নিরপেক্ষতা নিয়ে আপনারা নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন। একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে আমরা ইতিমধ্যে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি; সামনে আরও অনেক উদ্যোগ আপনারা দেখতে পাবেন।’
তা প্রধান উপদেষ্টা যতই নিশ্চয়তা দিন না কেন, যেখানে সব দলের কাছেই উপদেষ্টাদের (সবার নয়) এবং প্রশাসনের পক্ষপাতদুষ্টতা স্পষ্ট, যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণ আছে উল্লেখ করে যখন প্রকাশ্যে বারবার অভিযোগ করা হচ্ছে, সেখানে রাজনৈতিক দলগুলো কীভাবে নিশ্চিন্তে নিশ্চিত থাকতে পারে! তা ছাড়া, মাঝেমধ্যেই তো দলগুলোর পরস্পরের প্রতি বৈরী বক্তব্য রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তাপ ছড়াচ্ছে। যেমন কিছুদিন আগে এনসিপির আহ্বায়ক তাঁর ফেসবুক পোস্টে বললেন, সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন (পিআর) নিয়ে জামায়াতের আন্দোলন রাজনৈতিক প্রতারণা ছাড়া আর কিছু নয়। কিংবা জামায়াত জুলাই অভ্যুত্থানের আগে-পরে কখনোই সংস্কার আলোচনায় যুক্ত হয়নি। তারা কোনো কার্যকর প্রস্তাব দেয়নি। কোনো সাংবিধানিক দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করেনি এবং গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের প্রতি কোনো অঙ্গীকারও দেখায়নি।
এর পরিপ্রেক্ষিতে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বললেন আরও একটু শক্ত কথা—‘জন্মের পরই বাপের সাথে পাল্লা দিতে যেও না।’ সরকার ভাবতে পারে যে এগুলো তো রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যেকার বাহাস। এটা নিয়ে তাদের অতটা না ভাবলেও চলবে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, এই বাহাসগুলো তো রাজনৈতিক বাস্তবতা। এগুলো তো রাজনৈতিক অঙ্গনকে অস্থিতিশীল করতে পারে, যা শেষ পর্যন্ত নির্বাচনের পরিবেশেও প্রভাব ফেলতে পারে।
তারপর উল্লেখ করা যায় মঙ্গলবারের বৈঠকে বিএনপি যে অন্তর্বর্তী সরকারকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে, সে সম্পর্কে এনসিপির প্রতিক্রিয়ার কথা। এনসিপি বলল হঠাৎ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়ার পরামর্শটি দুরভিসন্ধিমূলক। কারণ, অন্তর্বর্তী সরকার গণ-অভ্যুত্থানের সরকার। সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন—এই তিনটি তাদের ম্যান্ডেট। অথচ বিএনপির বক্তব্যটি ছিল—নিরপেক্ষতার নিরিখে এখন অন্তর্বর্তী সরকারকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূমিকা নিতে হবে।
এইসব রাজনৈতিক টানাপোড়েন ছাড়াও কতগুলো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এখনো অমীমাংসিত রয়েছে। যেমন জামায়াতের কাছে অমীমাংসিত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি, সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি, ওই সনদের ভিত্তিতে নির্বাচন, পিআর পদ্ধতির নির্বাচন এবং জাতীয় নির্বাচনের আগে আগামী নভেম্বরে গণভোট। এই দাবিতে জামায়াতসহ আটটি দল আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। এনসিপির কাছে অমীমাংসিত বিষয় জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি, সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি, নির্বাচন কমিশনের পুনর্গঠন এবং তাদের দাবিকৃত নির্বাচনী প্রতীক শাপলা বরাদ্দ দেওয়া। বিএনপির কাছে সবচেয়ে বড় ইস্যু সময়মতো সুষ্ঠু নির্বাচন। এ ছাড়া এই তিনটি দলের কাছেই (হয়তো আরও অনেক দলের কাছে) সাধারণ ইস্যু হচ্ছে সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য দলঘনিষ্ঠ উপদেষ্টাদের সরিয়ে দেওয়া। এর মধ্যে বেশ কিছু বিষয় প্রতিটি দল চায় না। এসব বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষ ভূমিকা নিশ্চিত করা এবং রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে সেই ভূমিকা নিরপেক্ষ হিসেবেই প্রতীয়মান হওয়া এক বড় চ্যালেঞ্জই বটে।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন মাত্রা যোগ করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। ৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের গর্ভ থেকে জন্ম নেওয়া দলটি ‘নতুন বন্দোবস্তের’ স্লোগান দিয়ে নিজেদের নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতির ধারক হিসেবে তুলে ধরেছে। বিশেষ করে, নারীর নেতৃত্ব, অংশগ্রহণ ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রশ্নে এনসিপির বাণীতে
২৪ জুন ২০২৫
মিরপুরের শিয়ালবাড়ী এলাকায় একটি রাসায়নিক গুদামে আগুন লাগার পর যে মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছিল, সে কথা সবাই এখন জানেন। যাঁরা স্বজন হারিয়েছেন, তাঁরা জানেন এটা তাঁদের পরিবারের জন্য কত বড় ক্ষতি। নিহতদের পরিবার ক্ষতিপূরণ পাচ্ছে কি না, তাদের জীবনে স্থিতি ফিরিয়ে আনতে কী করা দরকার...
৯ ঘণ্টা আগে
সমাজ এগিয়ে চলেছে দ্রুতগতিতে, পৃথিবী প্রবেশ করেছে এক নতুন যুগে। এই গতিময় সভ্যতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে গিয়ে আমরা হয়তো অনেক কিছু পাচ্ছি, কিন্তু হারিয়ে ফেলছি আরও বেশি কিছু। আজ আমরা এক অদ্ভুত স্বার্থপর সময়ে বাস করছি, যেখানে প্রতিটি সম্পর্কের মাপকাঠি হয়ে দাঁড়িয়েছে ব্যক্তিগত লাভ-ক্ষতি।
১০ ঘণ্টা আগে
প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি সুন্দরবন এ দেশের দক্ষিণাঞ্চলকে মাতৃস্নেহে আগলে রেখেছে। ঝড়-ঝঞ্ঝা, জলোচ্ছ্বাস, ভূমিক্ষয় রোধসহ সব প্রাকৃতিক দুর্যোগে সুন্দরবন আমাদের রক্ষা করে আসছে। এই সুন্দরবনের এক অনন্য প্রজাতির প্রাণী হলো রয়েল বেঙ্গল টাইগার।
১০ ঘণ্টা আগেহেনা শিকদার

সমাজ এগিয়ে চলেছে দ্রুতগতিতে, পৃথিবী প্রবেশ করেছে এক নতুন যুগে। এই গতিময় সভ্যতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে গিয়ে আমরা হয়তো অনেক কিছু পাচ্ছি, কিন্তু হারিয়ে ফেলছি আরও বেশি কিছু। আজ আমরা এক অদ্ভুত স্বার্থপর সময়ে বাস করছি, যেখানে প্রতিটি সম্পর্কের মাপকাঠি হয়ে দাঁড়িয়েছে ব্যক্তিগত লাভ-ক্ষতি। এমন এক পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বড় প্রশ্নের মুখে পড়েছে যে সম্পর্কটি, মানুষের আত্মার সঙ্গে মিশে থাকে—বন্ধুত্ব।
একসময় বন্ধুত্ব ছিল নিঃস্বার্থ ভালোবাসার এক দারুণ উদাহরণ। সেখানে লেনদেনের কোনো হিসাব ছিল না, ছিল শুধু একে অপরের প্রতি বিশ্বাস, আস্থা এবং নির্ভরতা। শৈশবের সেই দিনগুলোর কথা মনে করলে আজও অনেকের মন আর্দ্র হয়ে ওঠে। টিফিনের খাবার ভাগ করে খাওয়া, বন্ধুর দুঃখে নির্দ্বিধায় পাশে দাঁড়ানো, কিংবা সামান্য কারণে অহেতুক ঝগড়া করে আবার মুহূর্তেই সব ভুলে গিয়ে একে অপরের হাত ধরার মধ্যে যে পবিত্রতা ছিল, আজকের যান্ত্রিক সভ্যতায় তা যেন এক দুর্লভ বস্তু।
বর্তমান সমাজব্যবস্থা আমাদের শিখিয়েছে কীভাবে সবকিছুকে ব্যক্তিগত লাভের নিরিখে বিচার করতে হয়। আমরা এখন বন্ধু বানানোর আগেও অবচেতন মনে বিচার করে নিই—এই সম্পর্কটি আমার জীবনে কতটা মূল্য যোগ করবে? তার সামাজিক অবস্থান, অর্থনৈতিক সচ্ছলতা, কিংবা তার মাধ্যমে আমার কোনো উপকার হবে কি না—এইসব প্রশ্নই এখন বন্ধুত্বের ভিত্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে, একধরনের ‘শর্তাধীন’ বন্ধুত্বের জন্ম হচ্ছে, যেখানে স্বার্থের লেনদেন শেষ হলেই সম্পর্কের সুতো ছিঁড়ে যায়। এই ধরনের বন্ধুত্ব অনেকটা ব্যবসায়িক চুক্তির মতো, যেখানে একে অপরকে ব্যবহার করে নিজের আখের গোছানোই মূল উদ্দেশ্য।
এই স্বার্থপরতার পেছনে অবশ্য বেশ কিছু সামাজিক এবং মনস্তাত্ত্বিক কারণও রয়েছে। প্রথমত, আধুনিক জীবনযাত্রার ক্রমবর্ধমান চাপ এবং প্রতিযোগিতা মানুষকে এতটাই আত্মকেন্দ্রিক করে তুলেছে যে, সে নিজের জগৎ ছাড়া আর কিছুই ভাবতে পারছে না। দ্বিতীয়ত, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিস্তার এক মায়াবী জগতের সৃষ্টি করেছে। এখানে মানুষের বন্ধুর সংখ্যা হাজার হাজার, কিন্তু সত্যিকার অর্থে ভরসা করার মতো বন্ধুর সংখ্যা প্রায় শূন্য। লাইক, কমেন্ট এবং শেয়ারের ভিত্তিতে গড়ে ওঠা এই ভার্চুয়াল বন্ধুত্ব আসলে একধরনের লোকদেখানো সম্পর্ক, যার গভীরে কোনো প্রাণের ছোঁয়া নেই। এখানে সবাই যেন এক অদৃশ্য প্রতিযোগিতায় নেমেছে—কার কত বন্ধু, কে কতটা জনপ্রিয়। এই জাঁকজমকপূর্ণ সংস্কৃতি আমাদের সত্যিকারের আবেগ এবং অনুভূতি থেকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে।
তবে এই হতাশাজনক চিত্রের মধ্যেও আশার আলো রয়েছে। স্বার্থের এই ঝোড়ো হাওয়ার বিপরীতে দাঁড়িয়েও কিছু মানুষ এখনো সত্যিকারের বন্ধুত্বের পতাকা উড়িয়ে চলেছেন। তাঁরা বিশ্বাস করেন, বন্ধুত্ব মানে শুধু দেওয়া-নেওয়ার সম্পর্ক নয়, বরং এটি একটি আত্মিক টান, যা কোনো স্বার্থের বিনিময়ে বিক্রি হয় না। একজন সত্যিকারের বন্ধু আয়নার মতো, যে কেবল আমাদের ভালো দিকগুলোই তুলে ধরে না, বরং আমাদের ভুলগুলোও দেখিয়ে দেয়। সে আমাদের বিপদের দিনে ঢাল হয়ে দাঁড়ায় এবং আনন্দের দিনে মন খুলে হাসে।
এই স্বার্থপর সময়ে সত্যিকারের বন্ধু খুঁজে পাওয়া হয়তো কঠিন, কিন্তু অসম্ভব নয়। এর জন্য প্রয়োজন নিজের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন। বন্ধুত্বের সম্পর্ককে যদি আমরা লাভ-ক্ষতির হিসাব থেকে মুক্ত করতে পারি, তবেই এর আসল সৌন্দর্য উপলব্ধি করা সম্ভব। বন্ধুত্ব কোনো পণ্য নয় যে তাকে ব্যবহার করে ফেলে দিতে হবে। এটি একটি চারা গাছের মতো, যাকে যত্ন, বিশ্বাস এবং সময় দিয়ে বড় করে তুলতে হয়। যখন একজন মানুষ সব ধরনের স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে আরেকজন মানুষের পাশে দাঁড়ায়, তখনই জন্ম নেয় এক নির্মল বন্ধুত্ব।
স্বার্থের এই সমাজে বন্ধুত্বের মানে হলো এক নিঃস্বার্থ আশ্রয়। এমন এক সম্পর্ক, যেখানে আপনি কোনো মুখোশ ছাড়াই নিজেকে প্রকাশ করতে পারেন, যেখানে আপনার দুর্বলতাগুলো নিয়ে কেউ উপহাস করবে না, বরং আপনাকে আরও শক্তিশালী হয়ে উঠতে সাহায্য করবে। এই বন্ধুত্ব আপনাকে শেখাবে যে পৃথিবীতে এখনো এমন কিছু সম্পর্ক আছে, যা অর্থ বা ক্ষমতার বিনিময়ে কেনা যায় না, যা কেবল হৃদয় দিয়ে অনুভব করা যায়। তাই এই যান্ত্রিক সভ্যতায় হারিয়ে যাওয়ার আগে আমাদের উচিত জীবনের সেই নিঃস্বার্থ বন্ধুত্বের সম্পর্কগুলোকে খুঁজে বের করা এবং পরম মমতায় সেগুলো আগলে রাখা। কারণ, দিন শেষে এই সম্পর্কগুলোই আমাদের বেঁচে থাকার আসল প্রেরণা জোগায়।
শিক্ষার্থী, দর্শন বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

সমাজ এগিয়ে চলেছে দ্রুতগতিতে, পৃথিবী প্রবেশ করেছে এক নতুন যুগে। এই গতিময় সভ্যতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে গিয়ে আমরা হয়তো অনেক কিছু পাচ্ছি, কিন্তু হারিয়ে ফেলছি আরও বেশি কিছু। আজ আমরা এক অদ্ভুত স্বার্থপর সময়ে বাস করছি, যেখানে প্রতিটি সম্পর্কের মাপকাঠি হয়ে দাঁড়িয়েছে ব্যক্তিগত লাভ-ক্ষতি। এমন এক পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বড় প্রশ্নের মুখে পড়েছে যে সম্পর্কটি, মানুষের আত্মার সঙ্গে মিশে থাকে—বন্ধুত্ব।
একসময় বন্ধুত্ব ছিল নিঃস্বার্থ ভালোবাসার এক দারুণ উদাহরণ। সেখানে লেনদেনের কোনো হিসাব ছিল না, ছিল শুধু একে অপরের প্রতি বিশ্বাস, আস্থা এবং নির্ভরতা। শৈশবের সেই দিনগুলোর কথা মনে করলে আজও অনেকের মন আর্দ্র হয়ে ওঠে। টিফিনের খাবার ভাগ করে খাওয়া, বন্ধুর দুঃখে নির্দ্বিধায় পাশে দাঁড়ানো, কিংবা সামান্য কারণে অহেতুক ঝগড়া করে আবার মুহূর্তেই সব ভুলে গিয়ে একে অপরের হাত ধরার মধ্যে যে পবিত্রতা ছিল, আজকের যান্ত্রিক সভ্যতায় তা যেন এক দুর্লভ বস্তু।
বর্তমান সমাজব্যবস্থা আমাদের শিখিয়েছে কীভাবে সবকিছুকে ব্যক্তিগত লাভের নিরিখে বিচার করতে হয়। আমরা এখন বন্ধু বানানোর আগেও অবচেতন মনে বিচার করে নিই—এই সম্পর্কটি আমার জীবনে কতটা মূল্য যোগ করবে? তার সামাজিক অবস্থান, অর্থনৈতিক সচ্ছলতা, কিংবা তার মাধ্যমে আমার কোনো উপকার হবে কি না—এইসব প্রশ্নই এখন বন্ধুত্বের ভিত্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে, একধরনের ‘শর্তাধীন’ বন্ধুত্বের জন্ম হচ্ছে, যেখানে স্বার্থের লেনদেন শেষ হলেই সম্পর্কের সুতো ছিঁড়ে যায়। এই ধরনের বন্ধুত্ব অনেকটা ব্যবসায়িক চুক্তির মতো, যেখানে একে অপরকে ব্যবহার করে নিজের আখের গোছানোই মূল উদ্দেশ্য।
এই স্বার্থপরতার পেছনে অবশ্য বেশ কিছু সামাজিক এবং মনস্তাত্ত্বিক কারণও রয়েছে। প্রথমত, আধুনিক জীবনযাত্রার ক্রমবর্ধমান চাপ এবং প্রতিযোগিতা মানুষকে এতটাই আত্মকেন্দ্রিক করে তুলেছে যে, সে নিজের জগৎ ছাড়া আর কিছুই ভাবতে পারছে না। দ্বিতীয়ত, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিস্তার এক মায়াবী জগতের সৃষ্টি করেছে। এখানে মানুষের বন্ধুর সংখ্যা হাজার হাজার, কিন্তু সত্যিকার অর্থে ভরসা করার মতো বন্ধুর সংখ্যা প্রায় শূন্য। লাইক, কমেন্ট এবং শেয়ারের ভিত্তিতে গড়ে ওঠা এই ভার্চুয়াল বন্ধুত্ব আসলে একধরনের লোকদেখানো সম্পর্ক, যার গভীরে কোনো প্রাণের ছোঁয়া নেই। এখানে সবাই যেন এক অদৃশ্য প্রতিযোগিতায় নেমেছে—কার কত বন্ধু, কে কতটা জনপ্রিয়। এই জাঁকজমকপূর্ণ সংস্কৃতি আমাদের সত্যিকারের আবেগ এবং অনুভূতি থেকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে।
তবে এই হতাশাজনক চিত্রের মধ্যেও আশার আলো রয়েছে। স্বার্থের এই ঝোড়ো হাওয়ার বিপরীতে দাঁড়িয়েও কিছু মানুষ এখনো সত্যিকারের বন্ধুত্বের পতাকা উড়িয়ে চলেছেন। তাঁরা বিশ্বাস করেন, বন্ধুত্ব মানে শুধু দেওয়া-নেওয়ার সম্পর্ক নয়, বরং এটি একটি আত্মিক টান, যা কোনো স্বার্থের বিনিময়ে বিক্রি হয় না। একজন সত্যিকারের বন্ধু আয়নার মতো, যে কেবল আমাদের ভালো দিকগুলোই তুলে ধরে না, বরং আমাদের ভুলগুলোও দেখিয়ে দেয়। সে আমাদের বিপদের দিনে ঢাল হয়ে দাঁড়ায় এবং আনন্দের দিনে মন খুলে হাসে।
এই স্বার্থপর সময়ে সত্যিকারের বন্ধু খুঁজে পাওয়া হয়তো কঠিন, কিন্তু অসম্ভব নয়। এর জন্য প্রয়োজন নিজের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন। বন্ধুত্বের সম্পর্ককে যদি আমরা লাভ-ক্ষতির হিসাব থেকে মুক্ত করতে পারি, তবেই এর আসল সৌন্দর্য উপলব্ধি করা সম্ভব। বন্ধুত্ব কোনো পণ্য নয় যে তাকে ব্যবহার করে ফেলে দিতে হবে। এটি একটি চারা গাছের মতো, যাকে যত্ন, বিশ্বাস এবং সময় দিয়ে বড় করে তুলতে হয়। যখন একজন মানুষ সব ধরনের স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে আরেকজন মানুষের পাশে দাঁড়ায়, তখনই জন্ম নেয় এক নির্মল বন্ধুত্ব।
স্বার্থের এই সমাজে বন্ধুত্বের মানে হলো এক নিঃস্বার্থ আশ্রয়। এমন এক সম্পর্ক, যেখানে আপনি কোনো মুখোশ ছাড়াই নিজেকে প্রকাশ করতে পারেন, যেখানে আপনার দুর্বলতাগুলো নিয়ে কেউ উপহাস করবে না, বরং আপনাকে আরও শক্তিশালী হয়ে উঠতে সাহায্য করবে। এই বন্ধুত্ব আপনাকে শেখাবে যে পৃথিবীতে এখনো এমন কিছু সম্পর্ক আছে, যা অর্থ বা ক্ষমতার বিনিময়ে কেনা যায় না, যা কেবল হৃদয় দিয়ে অনুভব করা যায়। তাই এই যান্ত্রিক সভ্যতায় হারিয়ে যাওয়ার আগে আমাদের উচিত জীবনের সেই নিঃস্বার্থ বন্ধুত্বের সম্পর্কগুলোকে খুঁজে বের করা এবং পরম মমতায় সেগুলো আগলে রাখা। কারণ, দিন শেষে এই সম্পর্কগুলোই আমাদের বেঁচে থাকার আসল প্রেরণা জোগায়।
শিক্ষার্থী, দর্শন বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন মাত্রা যোগ করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। ৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের গর্ভ থেকে জন্ম নেওয়া দলটি ‘নতুন বন্দোবস্তের’ স্লোগান দিয়ে নিজেদের নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতির ধারক হিসেবে তুলে ধরেছে। বিশেষ করে, নারীর নেতৃত্ব, অংশগ্রহণ ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রশ্নে এনসিপির বাণীতে
২৪ জুন ২০২৫
মিরপুরের শিয়ালবাড়ী এলাকায় একটি রাসায়নিক গুদামে আগুন লাগার পর যে মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছিল, সে কথা সবাই এখন জানেন। যাঁরা স্বজন হারিয়েছেন, তাঁরা জানেন এটা তাঁদের পরিবারের জন্য কত বড় ক্ষতি। নিহতদের পরিবার ক্ষতিপূরণ পাচ্ছে কি না, তাদের জীবনে স্থিতি ফিরিয়ে আনতে কী করা দরকার...
৯ ঘণ্টা আগে
না, সব উপদেষ্টা প্রশ্নবিদ্ধ নন। তবে সংখ্যাটা যে নেহাত কম হবে না, তা অনুমান করা যায় যখন প্রধান তিনটি প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলই আলাদা আলাদাভাবে উপদেষ্টাদের দলঘনিষ্ঠতার অভিযোগ তোলে। অবশ্য এবারই প্রথম নয়, এর আগেও একই অভিযোগ তোলা হয়েছে, যখন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম কোনো কোনো উপদেষ্টার সেফ...
১০ ঘণ্টা আগে
প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি সুন্দরবন এ দেশের দক্ষিণাঞ্চলকে মাতৃস্নেহে আগলে রেখেছে। ঝড়-ঝঞ্ঝা, জলোচ্ছ্বাস, ভূমিক্ষয় রোধসহ সব প্রাকৃতিক দুর্যোগে সুন্দরবন আমাদের রক্ষা করে আসছে। এই সুন্দরবনের এক অনন্য প্রজাতির প্রাণী হলো রয়েল বেঙ্গল টাইগার।
১০ ঘণ্টা আগেরিয়াদ হোসেন

প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি সুন্দরবন এ দেশের দক্ষিণাঞ্চলকে মাতৃস্নেহে আগলে রেখেছে। ঝড়-ঝঞ্ঝা, জলোচ্ছ্বাস, ভূমিক্ষয় রোধসহ সব প্রাকৃতিক দুর্যোগে সুন্দরবন আমাদের রক্ষা করে আসছে। এই সুন্দরবনের এক অনন্য প্রজাতির প্রাণী হলো রয়েল বেঙ্গল টাইগার।
সাধারণ মানুষের মতো বাঘেরও প্রধান দুটি মৌলিক চাহিদা হলো খাদ্য ও বাসস্থান। বিশেষ করে খাদ্যের জোগান এবং আবাসস্থল নিরাপদ করতে পারলে বাঘ বাঁচিয়ে রাখা কিংবা তাদের প্রজনন বৃদ্ধিতে অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয়। এ জন্য সুন্দরবনকে বন্য প্রাণীর অবাধ বিচরণের জায়গা হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। তাহলে বাঘসহ অন্য প্রজাতির প্রাণীর সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে। পৃথিবীর মাত্র ১৩টি দেশে এখন বাঘের অস্তিত্ব আছে। বাঘ বাঁচাতে বাংলাদেশসহ বিশ্বের সেসব দেশের সরকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
সুন্দরবনের বাস্তুসংস্থান রক্ষায় অন্য প্রজাতির প্রাণী থেকে বাঘ সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে সুন্দরবনে চোরা শিকারি বাঘের প্রধান হুমকি। কিছু অতিলোভী চোরা শিকারি ও বনদস্যুদের জন্য দিন দিন বাঘের সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে। সবশেষ তথ্যমতে, সুন্দরবনে বাঘ রয়েছে ১১৪টি। কয়েক বছর আগে বড় বড় বনদস্যু দলের আত্মসমর্পণের ফলে বাঘনিধন কিছুটা কমে এসেছে। দুই বছর আগেও খাদ্যসংকটে বাঘ লোকালয়ে এলে হত্যা করা হতো। এখন সেটিও অনেকটা বন্ধ হয়েছে। বন সংরক্ষণে বন মন্ত্রণালয়ের নানামুখী পদক্ষেপের কারণে সুন্দরবনসংলগ্ন স্থানীয় মানুষ আগের থেকে অনেক সচেতন হয়ে উঠেছে। এ জন্য বনের ওপর নির্ভরশীল মানুষগুলোর জীবিকায় সরকারকে আরও বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। তাদের জীবন-জীবিকার জন্য বিকল্প কর্মসংস্থানের বিষয়ে আরও বেশি কাজ করতে হবে।
সুন্দরবনকে বাঁচাতে এবং বনের জীববৈচিত্র্য রক্ষা করতে বাঘ সংরক্ষণের বিকল্প নেই। আর এ জন্য বন বিভাগ কিংবা সরকারের দিকে তাকিয়ে থাকলে সুন্দরবন বা বাঘ কোনোটাই রক্ষা করা সম্ভব হবে না; যদি আমরা আমাদের নিজেদের জায়গা থেকে সচেতন না হই। পাশাপাশি বাঘনিধন ও হরিণ শিকার বন্ধের জন্য ২০১২ সালে বন্য প্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। যে আইনের ৩৬ ধারায় বাঘশিকারি বা হত্যাকারী জামিন-অযোগ্য হবেন এবং সর্বোচ্চ সাত বছর সর্বনিম্ন দুই বছর কারাদণ্ড ও ১ লাখ থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। এ আইনটিও অপরাধীদের বিরুদ্ধে যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। তাহলে সুন্দরবন বাঁচানোর পাশাপাশি বাঘ, হরিণসহ নানা প্রজাতির প্রাণীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে।
শিক্ষার্থী, সরকারি বিএল কলেজ, খুলনা

প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি সুন্দরবন এ দেশের দক্ষিণাঞ্চলকে মাতৃস্নেহে আগলে রেখেছে। ঝড়-ঝঞ্ঝা, জলোচ্ছ্বাস, ভূমিক্ষয় রোধসহ সব প্রাকৃতিক দুর্যোগে সুন্দরবন আমাদের রক্ষা করে আসছে। এই সুন্দরবনের এক অনন্য প্রজাতির প্রাণী হলো রয়েল বেঙ্গল টাইগার।
সাধারণ মানুষের মতো বাঘেরও প্রধান দুটি মৌলিক চাহিদা হলো খাদ্য ও বাসস্থান। বিশেষ করে খাদ্যের জোগান এবং আবাসস্থল নিরাপদ করতে পারলে বাঘ বাঁচিয়ে রাখা কিংবা তাদের প্রজনন বৃদ্ধিতে অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয়। এ জন্য সুন্দরবনকে বন্য প্রাণীর অবাধ বিচরণের জায়গা হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। তাহলে বাঘসহ অন্য প্রজাতির প্রাণীর সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে। পৃথিবীর মাত্র ১৩টি দেশে এখন বাঘের অস্তিত্ব আছে। বাঘ বাঁচাতে বাংলাদেশসহ বিশ্বের সেসব দেশের সরকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
সুন্দরবনের বাস্তুসংস্থান রক্ষায় অন্য প্রজাতির প্রাণী থেকে বাঘ সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে সুন্দরবনে চোরা শিকারি বাঘের প্রধান হুমকি। কিছু অতিলোভী চোরা শিকারি ও বনদস্যুদের জন্য দিন দিন বাঘের সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে। সবশেষ তথ্যমতে, সুন্দরবনে বাঘ রয়েছে ১১৪টি। কয়েক বছর আগে বড় বড় বনদস্যু দলের আত্মসমর্পণের ফলে বাঘনিধন কিছুটা কমে এসেছে। দুই বছর আগেও খাদ্যসংকটে বাঘ লোকালয়ে এলে হত্যা করা হতো। এখন সেটিও অনেকটা বন্ধ হয়েছে। বন সংরক্ষণে বন মন্ত্রণালয়ের নানামুখী পদক্ষেপের কারণে সুন্দরবনসংলগ্ন স্থানীয় মানুষ আগের থেকে অনেক সচেতন হয়ে উঠেছে। এ জন্য বনের ওপর নির্ভরশীল মানুষগুলোর জীবিকায় সরকারকে আরও বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। তাদের জীবন-জীবিকার জন্য বিকল্প কর্মসংস্থানের বিষয়ে আরও বেশি কাজ করতে হবে।
সুন্দরবনকে বাঁচাতে এবং বনের জীববৈচিত্র্য রক্ষা করতে বাঘ সংরক্ষণের বিকল্প নেই। আর এ জন্য বন বিভাগ কিংবা সরকারের দিকে তাকিয়ে থাকলে সুন্দরবন বা বাঘ কোনোটাই রক্ষা করা সম্ভব হবে না; যদি আমরা আমাদের নিজেদের জায়গা থেকে সচেতন না হই। পাশাপাশি বাঘনিধন ও হরিণ শিকার বন্ধের জন্য ২০১২ সালে বন্য প্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। যে আইনের ৩৬ ধারায় বাঘশিকারি বা হত্যাকারী জামিন-অযোগ্য হবেন এবং সর্বোচ্চ সাত বছর সর্বনিম্ন দুই বছর কারাদণ্ড ও ১ লাখ থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। এ আইনটিও অপরাধীদের বিরুদ্ধে যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। তাহলে সুন্দরবন বাঁচানোর পাশাপাশি বাঘ, হরিণসহ নানা প্রজাতির প্রাণীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে।
শিক্ষার্থী, সরকারি বিএল কলেজ, খুলনা

বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন মাত্রা যোগ করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। ৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের গর্ভ থেকে জন্ম নেওয়া দলটি ‘নতুন বন্দোবস্তের’ স্লোগান দিয়ে নিজেদের নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতির ধারক হিসেবে তুলে ধরেছে। বিশেষ করে, নারীর নেতৃত্ব, অংশগ্রহণ ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রশ্নে এনসিপির বাণীতে
২৪ জুন ২০২৫
মিরপুরের শিয়ালবাড়ী এলাকায় একটি রাসায়নিক গুদামে আগুন লাগার পর যে মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছিল, সে কথা সবাই এখন জানেন। যাঁরা স্বজন হারিয়েছেন, তাঁরা জানেন এটা তাঁদের পরিবারের জন্য কত বড় ক্ষতি। নিহতদের পরিবার ক্ষতিপূরণ পাচ্ছে কি না, তাদের জীবনে স্থিতি ফিরিয়ে আনতে কী করা দরকার...
৯ ঘণ্টা আগে
না, সব উপদেষ্টা প্রশ্নবিদ্ধ নন। তবে সংখ্যাটা যে নেহাত কম হবে না, তা অনুমান করা যায় যখন প্রধান তিনটি প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলই আলাদা আলাদাভাবে উপদেষ্টাদের দলঘনিষ্ঠতার অভিযোগ তোলে। অবশ্য এবারই প্রথম নয়, এর আগেও একই অভিযোগ তোলা হয়েছে, যখন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম কোনো কোনো উপদেষ্টার সেফ...
১০ ঘণ্টা আগে
সমাজ এগিয়ে চলেছে দ্রুতগতিতে, পৃথিবী প্রবেশ করেছে এক নতুন যুগে। এই গতিময় সভ্যতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে গিয়ে আমরা হয়তো অনেক কিছু পাচ্ছি, কিন্তু হারিয়ে ফেলছি আরও বেশি কিছু। আজ আমরা এক অদ্ভুত স্বার্থপর সময়ে বাস করছি, যেখানে প্রতিটি সম্পর্কের মাপকাঠি হয়ে দাঁড়িয়েছে ব্যক্তিগত লাভ-ক্ষতি।
১০ ঘণ্টা আগে