আহমেদ শমসের, সাংবাদিক
যখনই আকাশে কোনো বিমানের ডানা কেঁপে ওঠে, নিচে থাকা মানুষের হৃদয়ও কেঁপে ওঠে আতঙ্কে। বিশেষত ভারতে, যেখানে একদিকে বিমান চলাচল বেড়েছে অভাবনীয় হারে, অন্যদিকে নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্নও বেড়েছে ততটাই জোরে। সাম্প্রতিক কয়েকটি বিমান দুর্ঘটনা, প্রযুক্তিগত ত্রুটি কিংবা নিয়ন্ত্রণকক্ষের বিভ্রান্তি—সব মিলিয়ে আকাশপথে যাত্রীদের আস্থা প্রশ্নের মুখে পড়ছে।
সবশেষ ১২ জুন গুজরাটের আহমেদাবাদের সরদার বল্লভভাই প্যাটেল বিমানবন্দরে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ দুর্ঘটনা গোটা দেশের বিমান নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়ে আবারও নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার বিমান বিধ্বস্ত হয়। এটি আহমেদাবাদ থেকে যুক্তরাজ্যের লন্ডনের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল। বিমানবন্দর থেকে উড়াল দেওয়ার পর আকস্মিকভাবে একটি মেডিকেল কলেজ হোস্টেল ভবনের ওপর আছড়ে পড়ে। মুহূর্তেই বিমানটিতে আগুন ধরে যায়। বিমানে থাকা ২৪২ জনের মধ্যে ২৪১ জনই নিহত হন। কেবল একজন যাত্রী, ৪০ বছর বয়সী ব্রিটিশ নাগরিক বিশ্বাস কুমার রমেশ অলৌকিকভাবে বেঁচে যান। হোস্টেল ভবনে থাকা আরও ৩৩ জনের মৃত্যু হয়, গুরুতর আহত হন অন্তত ৬১ জন। মোট ২৭৪ জন মানুষের জীবন নিভে যায় একঝলকে।
এই দুর্ঘটনা ভারতের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনাগুলোর একটি। ১৯৯৬ সালের চরখি দাদরি বিমান দুর্ঘটনায় যেমন ৩৪৯ জন প্রাণ হারিয়েছিলেন, এবারও তাৎক্ষণিকভাবে আকাশ ও ভূমি মিলিয়ে মৃত্যু হয়েছে ২৭৪ জন মানুষের। ১৯৮৮ সালে আহমেদাবাদেই ইন্ডিয়ান এয়ারলাইনসের একটি বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ১৩৩ জন নিহত হয়েছিলেন, কিন্তু এবারের ঘটনার মাত্রা আরও গভীর, কারণ এটি শুধু বিমানে থাকা নয়—বিমানবন্দরের নিরাপত্তাবলয়ের বাইরেও বহু প্রাণ কেড়ে নিয়েছে।
২০২৪ সালের শেষ দিকেই, একটি বেসরকারি বিমান সংস্থার যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ মুম্বাই বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণের সময় রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়ে। যদিও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি, তবু এটি আবারও স্মরণ করিয়ে দিয়েছে যে ভারতে অবকাঠামোগত উন্নয়নের জোর প্রচেষ্টা থাকলেও নিরাপত্তার বিষয়টি যেন এখনো প্রাধান্য পাচ্ছে না। এর আগে ২০২০ সালে কেরালার কোঝিকোড়ে এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের একটি বিমান রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়ে দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। ২১ জন প্রাণ হারান, আহত হন শতাধিক। সেই দুর্ঘটনাই প্রমাণ করে, ভারতের অনেক বিমানবন্দর আজও ‘টেবিলটপ’ রানওয়েতে গড়ে উঠেছে, যেখানে সামান্যতম ভুলেই বড় বিপর্যয় ঘটতে পারে।
ভারতের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ নানা সময় নিয়মকানুন কড়াকড়ি করলেও বাস্তবে কার্যকর তদারকি ও প্রযুক্তিগত হালনাগাদে ঘাটতি থাকছে। প্রযুক্তিগত জ্ঞানের ঘাটতি, পুরোনো বিমান, অপ্রশিক্ষিত গ্রাউন্ড স্টাফ এবং সময়মতো যন্ত্রাংশ প্রতিস্থাপনের অভাব—সব মিলিয়ে বিপজ্জনক এক সমীকরণ তৈরি করেছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সম্প্রসারণের আগ্রাসী নীতিমালা, যেখানে বেশি বেশি রুট, বেশি ফ্লাইট, বেশি যাত্রী পরিবহনই মুখ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে, অথচ পাইলটদের বিশ্রামের সময়, নিয়ন্ত্রণকক্ষের চাপ ও নিরাপত্তাব্যবস্থা তেমন ঢেলে সাজানো হয়নি।
এই মুহূর্তে ভারতে প্রতিদিন গড়ে তিন হাজারের বেশি ফ্লাইট ওঠানামা করে। অভ্যন্তরীণ রুটে বিমানের ব্যবহার বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি। মধ্যবিত্ত শ্রেণির আয়ের বৃদ্ধি, দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছানোর চাহিদা ও উড়োজাহাজ ভাড়ার প্রতিযোগিতামূলক মূল্য—সবই এই বৃদ্ধির পেছনে কাজ করেছে। কিন্তু এই উড়ালচিত্রের বিপরীতে যখন সংবাদ শিরোনামে আসে ‘বিমান দুর্ঘটনা’, তখন মানুষের মনে বড় ধাক্কা লাগে, আস্থা টলে যায় সরকারের ওপর।
শুধু যাত্রী নয়, পাইলটরাও চাপে আছেন। প্রায়ই অভিযোগ ওঠে, বাণিজ্যিক সংস্থাগুলো পাইলটদের একটানা কাজ করিয়ে নিচ্ছে, বিশ্রামের সুযোগ দিচ্ছে না। এতে মনোযোগের ঘাটতি, সিদ্ধান্তহীনতা এবং অবসাদের কারণে বাড়ছে ভুল সিদ্ধান্তের আশঙ্কা। নিয়ন্ত্রণকক্ষেও জনবলসংকট, যন্ত্রপাতির ত্রুটি এবং আধুনিক অ্যাভিয়েশন সফটওয়্যার ব্যবহারের ঘাটতি এক বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেছে।
বিমান দুর্ঘটনা শুধু একটি ঘটনা নয়, এটি বহু মানুষের জীবনকে বদলে দেয়। পরিবার হারায় প্রিয়জনকে, সন্তান হয় এতিম, স্ত্রী হয় বিধবা, মায়ের কোলে ফিরে আসে কফিন। অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়, বিমা কোম্পানির দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়, কিন্তু এসবের চেয়েও ভয়াবহ বিষয় হলো, মানুষের মনে গেঁথে যায় এক অদৃশ্য ভয়—আকাশ কি তবে আর নিরাপদ নয়?
এই প্রশ্ন শুধু ভারতের জন্য নয়, গোটা দক্ষিণ এশিয়ার জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ, নেপাল, শ্রীলঙ্কা—সবার ক্ষেত্রেই বিমানবন্দর অবকাঠামো, আবহাওয়ার প্রতিকূলতা এবং কারিগরি ঘাটতি প্রায় একসূত্রে গাথা। ফলে ভারতের অভিজ্ঞতা আমাদের জন্যও সতর্কসংকেত।
তবে এই অন্ধকারে আলোও আছে। ভারতের বেশ কিছু বিমানবন্দর আন্তর্জাতিক মানে রূপান্তরিত হয়েছে। হায়দরাবাদ, বেঙ্গালুরু, দিল্লি কিংবা মুম্বাইয়ে আধুনিক নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা ও রাডার প্রযুক্তি চালু রয়েছে। কিছু বেসরকারি সংস্থা যেমন ইনডিগো বা স্পাইসজেটও নিরাপত্তার মান বজায় রাখতে কিছু ইতিবাচক উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু কিছু ভালো উদাহরণ পুরো ব্যবস্থাকে নিরাপদ করে না, প্রয়োজন একটি সার্বিক সংস্কার।
এখন প্রয়োজন তিনটি বিষয়ের দিকে মনোযোগ দেওয়া—প্রথমত, পাইলট ও বিমানকর্মীদের প্রশিক্ষণ ও বিশ্রামের সময় নিশ্চিত করা। দ্বিতীয়ত, প্রতিটি বিমানবন্দরে নিয়ন্ত্রণব্যবস্থাকে আধুনিক ও স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তির সঙ্গে যুক্ত করা এবং তৃতীয়ত, দুর্ঘটনার পর ‘দোষী কে’ এই খোঁজ না করে ‘ত্রুটি কোথায়’ তা নিয়ে সর্বজনীন তদন্ত চালানো। প্রতিটি দুর্ঘটনার পরে ‘স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি)’ সংস্কার ও জাতীয় পর্যায়ে রিপোর্ট প্রকাশ বাধ্যতামূলক করা দরকার, যাতে জনগণের আস্থা ফিরে আসে।
আকাশপথ মানুষকে শুধু এক স্থান থেকে অন্য স্থানে নিয়ে যায় না, এটি উন্নয়নের প্রতীক, দ্রুততার আশ্বাস এবং নিরাপত্তার এক নতুন সংজ্ঞা। তাই আকাশকে নিরাপদ না করতে পারলে, একটি দেশের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক সংযোগ শুধু ভেঙে পড়বে না, বরং আস্থার এই ডানা আর কখনোই উড়তে পারবে না।
যখনই আকাশে কোনো বিমানের ডানা কেঁপে ওঠে, নিচে থাকা মানুষের হৃদয়ও কেঁপে ওঠে আতঙ্কে। বিশেষত ভারতে, যেখানে একদিকে বিমান চলাচল বেড়েছে অভাবনীয় হারে, অন্যদিকে নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্নও বেড়েছে ততটাই জোরে। সাম্প্রতিক কয়েকটি বিমান দুর্ঘটনা, প্রযুক্তিগত ত্রুটি কিংবা নিয়ন্ত্রণকক্ষের বিভ্রান্তি—সব মিলিয়ে আকাশপথে যাত্রীদের আস্থা প্রশ্নের মুখে পড়ছে।
সবশেষ ১২ জুন গুজরাটের আহমেদাবাদের সরদার বল্লভভাই প্যাটেল বিমানবন্দরে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ দুর্ঘটনা গোটা দেশের বিমান নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়ে আবারও নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার বিমান বিধ্বস্ত হয়। এটি আহমেদাবাদ থেকে যুক্তরাজ্যের লন্ডনের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল। বিমানবন্দর থেকে উড়াল দেওয়ার পর আকস্মিকভাবে একটি মেডিকেল কলেজ হোস্টেল ভবনের ওপর আছড়ে পড়ে। মুহূর্তেই বিমানটিতে আগুন ধরে যায়। বিমানে থাকা ২৪২ জনের মধ্যে ২৪১ জনই নিহত হন। কেবল একজন যাত্রী, ৪০ বছর বয়সী ব্রিটিশ নাগরিক বিশ্বাস কুমার রমেশ অলৌকিকভাবে বেঁচে যান। হোস্টেল ভবনে থাকা আরও ৩৩ জনের মৃত্যু হয়, গুরুতর আহত হন অন্তত ৬১ জন। মোট ২৭৪ জন মানুষের জীবন নিভে যায় একঝলকে।
এই দুর্ঘটনা ভারতের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনাগুলোর একটি। ১৯৯৬ সালের চরখি দাদরি বিমান দুর্ঘটনায় যেমন ৩৪৯ জন প্রাণ হারিয়েছিলেন, এবারও তাৎক্ষণিকভাবে আকাশ ও ভূমি মিলিয়ে মৃত্যু হয়েছে ২৭৪ জন মানুষের। ১৯৮৮ সালে আহমেদাবাদেই ইন্ডিয়ান এয়ারলাইনসের একটি বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ১৩৩ জন নিহত হয়েছিলেন, কিন্তু এবারের ঘটনার মাত্রা আরও গভীর, কারণ এটি শুধু বিমানে থাকা নয়—বিমানবন্দরের নিরাপত্তাবলয়ের বাইরেও বহু প্রাণ কেড়ে নিয়েছে।
২০২৪ সালের শেষ দিকেই, একটি বেসরকারি বিমান সংস্থার যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ মুম্বাই বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণের সময় রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়ে। যদিও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি, তবু এটি আবারও স্মরণ করিয়ে দিয়েছে যে ভারতে অবকাঠামোগত উন্নয়নের জোর প্রচেষ্টা থাকলেও নিরাপত্তার বিষয়টি যেন এখনো প্রাধান্য পাচ্ছে না। এর আগে ২০২০ সালে কেরালার কোঝিকোড়ে এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের একটি বিমান রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়ে দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। ২১ জন প্রাণ হারান, আহত হন শতাধিক। সেই দুর্ঘটনাই প্রমাণ করে, ভারতের অনেক বিমানবন্দর আজও ‘টেবিলটপ’ রানওয়েতে গড়ে উঠেছে, যেখানে সামান্যতম ভুলেই বড় বিপর্যয় ঘটতে পারে।
ভারতের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ নানা সময় নিয়মকানুন কড়াকড়ি করলেও বাস্তবে কার্যকর তদারকি ও প্রযুক্তিগত হালনাগাদে ঘাটতি থাকছে। প্রযুক্তিগত জ্ঞানের ঘাটতি, পুরোনো বিমান, অপ্রশিক্ষিত গ্রাউন্ড স্টাফ এবং সময়মতো যন্ত্রাংশ প্রতিস্থাপনের অভাব—সব মিলিয়ে বিপজ্জনক এক সমীকরণ তৈরি করেছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সম্প্রসারণের আগ্রাসী নীতিমালা, যেখানে বেশি বেশি রুট, বেশি ফ্লাইট, বেশি যাত্রী পরিবহনই মুখ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে, অথচ পাইলটদের বিশ্রামের সময়, নিয়ন্ত্রণকক্ষের চাপ ও নিরাপত্তাব্যবস্থা তেমন ঢেলে সাজানো হয়নি।
এই মুহূর্তে ভারতে প্রতিদিন গড়ে তিন হাজারের বেশি ফ্লাইট ওঠানামা করে। অভ্যন্তরীণ রুটে বিমানের ব্যবহার বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি। মধ্যবিত্ত শ্রেণির আয়ের বৃদ্ধি, দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছানোর চাহিদা ও উড়োজাহাজ ভাড়ার প্রতিযোগিতামূলক মূল্য—সবই এই বৃদ্ধির পেছনে কাজ করেছে। কিন্তু এই উড়ালচিত্রের বিপরীতে যখন সংবাদ শিরোনামে আসে ‘বিমান দুর্ঘটনা’, তখন মানুষের মনে বড় ধাক্কা লাগে, আস্থা টলে যায় সরকারের ওপর।
শুধু যাত্রী নয়, পাইলটরাও চাপে আছেন। প্রায়ই অভিযোগ ওঠে, বাণিজ্যিক সংস্থাগুলো পাইলটদের একটানা কাজ করিয়ে নিচ্ছে, বিশ্রামের সুযোগ দিচ্ছে না। এতে মনোযোগের ঘাটতি, সিদ্ধান্তহীনতা এবং অবসাদের কারণে বাড়ছে ভুল সিদ্ধান্তের আশঙ্কা। নিয়ন্ত্রণকক্ষেও জনবলসংকট, যন্ত্রপাতির ত্রুটি এবং আধুনিক অ্যাভিয়েশন সফটওয়্যার ব্যবহারের ঘাটতি এক বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেছে।
বিমান দুর্ঘটনা শুধু একটি ঘটনা নয়, এটি বহু মানুষের জীবনকে বদলে দেয়। পরিবার হারায় প্রিয়জনকে, সন্তান হয় এতিম, স্ত্রী হয় বিধবা, মায়ের কোলে ফিরে আসে কফিন। অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়, বিমা কোম্পানির দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়, কিন্তু এসবের চেয়েও ভয়াবহ বিষয় হলো, মানুষের মনে গেঁথে যায় এক অদৃশ্য ভয়—আকাশ কি তবে আর নিরাপদ নয়?
এই প্রশ্ন শুধু ভারতের জন্য নয়, গোটা দক্ষিণ এশিয়ার জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ, নেপাল, শ্রীলঙ্কা—সবার ক্ষেত্রেই বিমানবন্দর অবকাঠামো, আবহাওয়ার প্রতিকূলতা এবং কারিগরি ঘাটতি প্রায় একসূত্রে গাথা। ফলে ভারতের অভিজ্ঞতা আমাদের জন্যও সতর্কসংকেত।
তবে এই অন্ধকারে আলোও আছে। ভারতের বেশ কিছু বিমানবন্দর আন্তর্জাতিক মানে রূপান্তরিত হয়েছে। হায়দরাবাদ, বেঙ্গালুরু, দিল্লি কিংবা মুম্বাইয়ে আধুনিক নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা ও রাডার প্রযুক্তি চালু রয়েছে। কিছু বেসরকারি সংস্থা যেমন ইনডিগো বা স্পাইসজেটও নিরাপত্তার মান বজায় রাখতে কিছু ইতিবাচক উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু কিছু ভালো উদাহরণ পুরো ব্যবস্থাকে নিরাপদ করে না, প্রয়োজন একটি সার্বিক সংস্কার।
এখন প্রয়োজন তিনটি বিষয়ের দিকে মনোযোগ দেওয়া—প্রথমত, পাইলট ও বিমানকর্মীদের প্রশিক্ষণ ও বিশ্রামের সময় নিশ্চিত করা। দ্বিতীয়ত, প্রতিটি বিমানবন্দরে নিয়ন্ত্রণব্যবস্থাকে আধুনিক ও স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তির সঙ্গে যুক্ত করা এবং তৃতীয়ত, দুর্ঘটনার পর ‘দোষী কে’ এই খোঁজ না করে ‘ত্রুটি কোথায়’ তা নিয়ে সর্বজনীন তদন্ত চালানো। প্রতিটি দুর্ঘটনার পরে ‘স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি)’ সংস্কার ও জাতীয় পর্যায়ে রিপোর্ট প্রকাশ বাধ্যতামূলক করা দরকার, যাতে জনগণের আস্থা ফিরে আসে।
আকাশপথ মানুষকে শুধু এক স্থান থেকে অন্য স্থানে নিয়ে যায় না, এটি উন্নয়নের প্রতীক, দ্রুততার আশ্বাস এবং নিরাপত্তার এক নতুন সংজ্ঞা। তাই আকাশকে নিরাপদ না করতে পারলে, একটি দেশের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক সংযোগ শুধু ভেঙে পড়বে না, বরং আস্থার এই ডানা আর কখনোই উড়তে পারবে না।
জাতি হিসেবে আমরা এতই নির্বোধ যে, কিসে আমাদের প্রাপ্তি, আর কিসে আমাদের গৌরব, তা বোঝার ন্যূনতম জ্ঞানটুকুও হারিয়ে ফেলেছি। জাতিগত সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের বিচারে তামাম দুনিয়ার অনেকের চেয়ে আমরা যে অনেক এগিয়ে, সেটা গর্ব করে বলার সুযোগও যেন হারাতে বসেছি।
১৫ ঘণ্টা আগেকোথাও শান্তি নেই। ঢাকায় নেই, লন্ডনে নেই, ইরানে নেই। বাসে নেই, রেলগাড়িতে নেই, উড়োজাহাজে নেই। শুধু মৃত্যু, অপমান আর অশান্তি আছে। আমাদের জীবনে সবচেয়ে মিসিং বিষয়টা হচ্ছে শান্তি।
১৫ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশ যে গ্যাসের ওপর ভাসছে না, এটা তো সত্য কথা। তবে গ্যাসের সংকট কতটা তীব্র, তা হয়তো অনেকের জানা নেই। ১৪ জুন আজকের পত্রিকায় ‘সম্ভব হলে আমি ঢাকায়ও বাসাবাড়ির গ্যাস বন্ধ করতাম: ফাওজুল’ শিরোনামে প্রকাশিত ছোট খবর থেকে গ্যাস-সংকটের মাত্রা বোঝা যায়।
১৬ ঘণ্টা আগেডা. মারুফুর রহমান ২০১২ সালে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সেন্টার ফর মেডিকেল বায়োটেকনোলজিতে ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
২ দিন আগে