মাসুদ কামাল
অভূতপূর্ব সুবিধায় থাকা অন্তর্বর্তী সরকার সম্ভবত প্রথমবারের মতো কিছুটা ঝামেলায় পড়তে যাচ্ছে। তবে এ ঝামেলাটা অন্য কেউ তৈরি করেনি, অতি আত্মবিশ্বাসের কারণে সরকার নিজেই সৃষ্টি করেছে।
একটু ডিটেইলে যাই। আগে সুবিধার থাকার বিষয়টা বলি। সেই বঙ্গবন্ধুর সরকার থেকে শুরু করে, এত বছরে যখনই যে সরকার দায়িত্বে বসেছে, একেবারে প্রথম দিন থেকেই কারও না কারও অসহযোগিতার মুখে পড়তে হয়েছে। স্বাধীনতার পর নতুন দেশ পরিচালনার শুরু থেকেই জাসদের মতো শক্তিশালী একটা বিরোধী দলকে দেখা গেছে। এদের মূল লক্ষ্যই ছিল সরকারকে ব্যর্থ প্রমাণের চেষ্টা করা। জিয়াউর রহমানের সরকারকে মোকাবিলা করতে হয়েছে আওয়ামী লীগের বিরোধিতা। এরশাদ সরকারের বিরুদ্ধে মাঠেই সক্রিয় ছিল আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামায়াতসহ সব বিরোধী দল। সেই সময় দারুণভাবে মাঠে ছিল সব ছাত্রসংগঠনও। ১৯৯১ সালে বিএনপি সরকার গঠন করলেও আওয়ামী লীগ কিন্তু পরাজয়কে মেনে নেয়নি। সূক্ষ্ম কারচুপির অভিযোগ তুলেছে। প্রথম দিন থেকেই বিরোধিতা করেছে। ’৯৬ সালে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে জিতেছে, বিএনপি মানেনি, বলেছে—স্থূল কারচুপি হয়েছে। সেই সঙ্গে চলেছে বিরোধিতা, মাঠে-ময়দানে এমনকি জাতীয় সংসদের ভেতরেও। সংসদ বয়কটের এই ধারা অব্যাহত থেকেছে ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পরও। ২০০৮-এর নির্বাচনকেও মেনে নেয়নি বিএনপি, ফলে জনগণ দেখেছে প্রধান দুই দলের সর্বাত্মক অসহযোগিতা। এরপর যে তিনটা নির্বাচন হয়েছে, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে, সেগুলোর আলোচনা যত কম করা যায় ততই ভালো। কারণ, এ সময়ে সরকার কেবল বিরোধী দলগুলোকেই নয়, পুরো জাতিকেই তাদের প্রতিপক্ষ বানিয়ে ফেলেছিল। দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠার সামান্যতম আগ্রহও তাদের ছিল না।
এ সময়ে অন্তর্বর্তী বা তত্ত্বাবধায়ক নামের অনিয়মিত কয়েকটা সরকারও ছিল। কিন্তু দুটি বাদে বাকিগুলোর আয়ু এতই কম ছিল যে, সেগুলো নিয়ে আলোচনা না করলেও চলে। যে দুটি নিয়ে আলোচনা করা যায়, তার একটি হলো সেনা-সমর্থিত ফখরুদ্দীনের সরকার। ২০০৭ সালের এই তত্ত্বাবধায়ক সরকার যে বিএনপির বাড়া-ভাতে ছাই দিতেই দায়িত্ব নিয়েছিল, সেটা বুঝতে কারও সমস্যা হয়নি। কাজেই শুরু থেকেই তারা বিএনপি-জামায়াতের সমর্থন পায়নি। এসবের বিপরীতে এবারের অন্তর্বর্তী সরকার দেশে থাকা সব রাজনৈতিক দলের সমর্থন ও সহযোগিতা পেয়েছে। একেবারে শুরুর দিন থেকেই পেয়েছে। আওয়ামী লীগের মূল নেতৃত্ব এ সময় মাঠে ছিল না, দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। দেশে যারা ছিল, সাধারণ কর্মী-সমর্থক, তারা হাসিনা সরকারের পতনে শুরুতে হতবিহ্বল হয়ে পড়েছিল। কিন্তু তারা দলের ওপর চেপে থাকা দুর্নীতিপরায়ণ নেতৃত্বের জন্য খুব একটা হা-হুতাশ করেছিল, তা-ও নয়। বরং ভেবেছিল—যাক, এবার তাহলে একটা ফ্রেশ নেতৃত্ব আসবে। সে কারণে তারাও ড. ইউনূস সরকারের তেমন একটা বিরোধিতা করেনি।
আর আওয়ামী লীগের বাইরে, যত রাজনৈতিক দল আছে, সবাই সম্পূর্ণভাবে সমর্থন দিয়েছে এই অন্তর্বর্তী সরকারকে। হাসিনাবিরোধী আন্দোলনের সময় সবাই ছিল এক ছাতার নিচে। তাদের কমন এনিমি ছিল একজনই— শেখ হাসিনা। সেই হাসিনা ভারতে চলে যাওয়ার পর, তারা সবাই নিজ নিজ রাজনীতিতে ফিরে যাবে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু তখনো তারা একটি জায়গায় এক ছিল, সেটা হচ্ছে—এই নতুন অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন দেওয়া। সরকারকে সমর্থন দেওয়ার পাশাপাশি তাদের সবার চাহিদা ছিল একটাই, সেটা হলো একটা সুন্দর নির্বাচন। নির্বাচনটি হতে হবে অবাধ ও নিরপেক্ষ। তবে রাজনীতির ভিন্নতার কারণে এই চাওয়ার মধ্যেও কিছুটা পার্থক্য ছিল। সেটা মূলত নির্বাচন অনুষ্ঠানের সময় নিয়ে। বিএনপি চেয়েছে দ্রুত নির্বাচন, কারণ তারা ভেবেছে যত দ্রুত নির্বাচন হবে ততই ভালো ফল তারা করবে। বিপরীত দিকে জামায়াত চেয়েছে কিছুটা রয়েসয়ে, সময় নিয়ে নির্বাচন। তারা ভেবেছে, সারা দেশে জনগণের সামনে দলকে নিয়ে যেতে তাদের আরও কিছুদিন লাগবে, তাই যতটা সময় পাওয়া যাবে ততই সুবিধা। এর মধ্যে আবার তৃতীয় শক্তি হিসেবে জন্ম নিল ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টি (এনসিপি)। এটা ছাত্রদের দল, ড. ইউনূসের প্ররোচনায় গড়ে ওঠা দল। অন্তর্বর্তী সরকারের একজন উপদেষ্টা এসে এই দলের কান্ডারির দায়িত্ব নিয়েছেন, আরও দুজন এখনো সরকারের মধ্যেই রয়ে গেছেন। এনসিপির কথাবার্তা আর কর্মকাণ্ডেও স্পষ্ট হয়ে গেল যে তারাও নির্বাচনকে বিলম্বিত করতে চায়। তারা যে দাবি নিয়েই মাঠে নামে, সরকার তা মেনে নেয়। কদিন আগে তারা দাবি করল, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে, সরকার সে দাবির প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করল। প্রথমত, তারা আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করল, আর সেই সঙ্গে ট্রাইব্যুনাল যাতে কোনো রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করতে পারে, সে রকম একটা আইন পাস করল। আগে কিংস পার্টি হিসেবে উল্লেখ করলেও এ ঘটনার পর সাধারণ মানুষের কাছে ড. ইউনূসের দল হিসেবেই বিবেচিত হতে থাকল এনসিপি।
এত কিছুর পরও বিএনপি, জামায়াত কিংবা বড় অন্য কোনো দলের মধ্যে এই সরকারের প্রতি প্রকাশ্য কোনো অসহযোগিতার কথা উচ্চারিত হয়নি। হয়তো তারা ভেবেছে, কোনোরকমে নির্বাচনটা তো হয়ে যাক। তারপর দেখা যাবে। কিন্তু নির্বাচন নিয়ে স্পষ্ট করে কোনো কথাই বলতে নারাজ সরকারের উপদেষ্টারা। সেই একই গান—ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে হবে। এ নিয়ে এক শীতল যুদ্ধ। তারপরও বিএনপির ধৈর্য অনেককেই অবাক করেছে, তারা সরাসরি সরকারের বিরোধিতা করেনি। কিন্তু শুরুতে যে কথাটা বলছিলাম, এবার সরকার নিজে থেকেই ঝামেলাটা তৈরি করল।
ঘটনা হলো তিনটি। মিয়ানমারের বিদ্রোহীদের দখল করা রাখাইন রাজ্যের জন্য ‘মানবিক করিডর,’ চট্টগ্রাম বন্দরের সবচেয়ে চালু ও লাভজনক নিউমুরিং টার্মিনালকে বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কাছে লিজ দেওয়া এবং সবশেষ আদালতের আদেশে মেয়র হওয়া বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে মেয়র পদে শপথ নেওয়ার পথে নানা অজুহাত তৈরি করা। এই তিনটি ঘটনায় সরকার সব দিক দিয়েই বড় ধরনের ঝামেলায় পড়ে গেছে।
প্রথম দুটি বিষয়কে কেন্দ্র করে সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে সরকারের সম্পর্কে একটা টানাপোড়েন হচ্ছে বলে সাধারণ্যে নানা আলোচনা হচ্ছে। এর মধ্যে তিন বাহিনীর প্রধানেরা দেখা করেছেন সরকারপ্রধানের সঙ্গে। কী কথা হয়েছে তাঁদের মধ্যে, তা জানা যায়নি। পরদিন আবার সেনাপ্রধান লম্বা বৈঠক করেছেন ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে। সেটাও সংবাদমাধ্যমের জন্য উন্মুক্ত ছিল না। তবে বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে এই দুই বৈঠক নিয়ে যেসব কথা প্রচারিত হচ্ছে, সেসবের অনেক কিছু বাদ দিয়ে দিলেও যতটুকু থাকে, তাতে বলা যায় সরকার খুব আরামদায়ক অবস্থানে নেই। বন্দর ও করিডর নিয়ে গত কয়েক দিনে বিভিন্ন মিডিয়াতে সরকারের নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান ও প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সেক্রেটারি শফিকুল আলম যে ভাষায় ও ভঙ্গিতে কথা বলেছেন, তাতে তাঁদের মধ্যে একধরনের ঔদ্ধত্যই প্রকাশ পেয়েছে। সেই সঙ্গে এই দুটি বিষয় নিয়ে সরকারের মধ্যে যে একধরনের তাড়া রয়েছে—সেটাও যেন বোঝা গেছে। তাড়াটা কোথায়? আর গোঁয়ার্তুমিটাই বা কেন? তারা কি তাহলে কারও কাছে কমিটেড? অথবা এই কাজগুলো করার মিশন নিয়েই তারা এসেছে? এই কমিটমেন্ট কি এতটাই গুরুত্বপূর্ণ যে দেশের মানুষের সেন্টিমেন্টকে পদদলিত করার ঝুঁকি পর্যন্ত তারা নিতে চাইছে? আমি ঠিক বুঝি না, এ দেশের সাধারণ মানুষের সেন্টিমেন্টকে গুরুত্ব না দেওয়ার আত্মঘাতী প্রবণতা কেন সরকারগুলোর মধ্যে বারবার দেখা যায়? আমরা হয়তো গরিব, আমরা হয়তো অত বেশি জ্ঞানী নই, তারপরও আমরা কারও অনুগ্রহ নিতে চাই না। কোনো দেশ, তা সে যত বড় পরাশক্তিই হোক না কেন, তাদের কাছে নতজানু হতে চাই না। আমাদের একেবারে দরিদ্র, অশিক্ষিত, অতি সাধারণ যেকোনো মানুষের সঙ্গে দশ মিনিট কথা বলুন, তাদের এই মনোভাব টের পেয়ে যাবেন। সে কারণেই জানবেন, আমাদের স্বাধীনতাযুদ্ধের মতো মহান কাজে সহায়তা করা সত্ত্বেও ভারতের প্রতি দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মনোভাব ইতিবাচক নয়। কারও মাতব্বরি এই জাতি সহ্য করতে চায় না। আমরা কিছু পারি না, সাদা চামড়ার লোকগুলো এসে আমাদের শিখিয়ে দিয়ে যাবে—এই ন্যারেটিভ এ দেশের মানুষকে খাওয়ানো যাবে না। আর যখন এমন মতলবের পেছনের অর্থনৈতিক অস্বচ্ছতার বিষয়গুলোও ধীরে উন্মোচিত হতে শুরু করেছে, তখন তো এদের দেশপ্রেম নিয়েই প্রশ্ন উঠছে।
এ তো গেল পোর্টের টার্মিনাল লিজ দেওয়ার বিষয়। করিডর, মানবিক করিডর বা ত্রাণ পাঠানোর জন্য রুট—এ রকম যে নামেই অভিহিত করা হোক না, পুরো বিষয়টাই যে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য একটা বড় ঝুঁকি, এমনটাই মনে করে মানুষ। সম্ভবত সামরিক বাহিনীর চিন্তাও একই ধারায় প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে সরকারের এ চেষ্টাটাও একটা বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছে।
অথচ এসব তো এই অন্তর্বর্তী সরকারের মুখ্য কাজ হওয়ার কথা ছিল না। এসব সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জনগণ কর্তৃক নির্বাচিত কোনো নিয়মিত সরকারের, অনির্বাচিত সরকারের নয়। তাদের প্রধান কাজ হচ্ছে—একটা অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করা। সে কাজে তাদের তেমন কোনো হেলদোল টের পাওয়া যাচ্ছে না। বরং এরই মধ্যে তারা এমন ব্যবস্থার সূচনা করেছে, যার কারণে দেশের একটা বিশাল জনগোষ্ঠী শেষ পর্যন্ত ভোটকেন্দ্রে না-ও যেতে পারে।
তৃতীয় ঘটনাটি হচ্ছে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে ইশরাক হোসেনকে বসতে না দেওয়ার প্রচেষ্টা। যেভাবে আদালতের রায় নিয়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র হয়েছেন ডা. শাহাদাত হোসেন, সেই একইভাবে ইশরাক হোসেনও আদালতে রায় পেয়েছেন। ডা. শাহাদাত শপথ নিয়ে মেয়রের দায়িত্ব নিতে পারলে ইঞ্জিনিয়ার ইশরাকের ক্ষেত্রে সমস্যাটা কী? সহজ এই প্রশ্নের কোনো জবাব নেই। ইনিয়েবিনিয়ে যা বলা হচ্ছে, তার সারমর্ম হচ্ছে একজন ‘শিশু উপদেষ্টা’ চান না, তাই হবে না। কিন্তু তিনি না চাইলেই তো আর হবে না। উচ্চ আদালত তো ঠিকই ইশরাকের পক্ষে রায় দিয়ে দিয়েছেন। এখন হয়তো ওই উপদেষ্টা আরও কিছু ফন্দিফিকির করবেন। কিন্তু তাতে ফল কী হবে? অভিজ্ঞতা বলে—যতই টানাটানি করবেন, ততই জটিলতা বাড়বে। এরই মধ্যে ঢাকাবাসী জেনে গেছে, বিএনপির ঢাকা মহানগরের এক নেতার সমর্থকেরা চাইলেই এই সরকারকে অচল করে দিতে পারে। তাহলে পুরো দেশে বিএনপি যদি অসহযোগিতা করে, তাহলে অবস্থা কতটা ভয়ংকর হতে পারে?
কদিন আগে এক অনুষ্ঠানে আমি বলেছিলাম, এই সরকারের সবচেয়ে বড় শক্তি হচ্ছে বিএনপি। তারা এদেরকে সমর্থন দিয়েছে বলেই এরা টিকে আছে। কিন্তু এই বিষয়টা সরকারও বোঝে না, বিএনপিও বোঝে না। তখন সবচেয়ে বড় শক্তির কথা বলেছিলাম। দ্বিতীয় শক্তিটির কথা বলিনি, বলার প্রসঙ্গ ওঠেনি। এখন বলছি। এদের দ্বিতীয় শক্তি হচ্ছে সামরিক বাহিনী। তারাও অনির্বাচিত হওয়া সত্ত্বেও এই সরকারকে সর্বাত্মক সহযোগিতা দিয়ে এসেছে।
মর্মান্তিক বাস্তবতা হচ্ছে—সরকার তার প্রধান এই দুই শক্তিকেই পূর্ণমাত্রায় ব্যবহার করতে পারছে না। এর বিপরীতে বাইরের শক্তির প্রতি নিজেদের নতজানু মনোভাব আর অনভিজ্ঞতামিশ্রিত গোঁয়ার্তুমি তাদেরকে এক জটিল চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে।
অভূতপূর্ব সুবিধায় থাকা অন্তর্বর্তী সরকার সম্ভবত প্রথমবারের মতো কিছুটা ঝামেলায় পড়তে যাচ্ছে। তবে এ ঝামেলাটা অন্য কেউ তৈরি করেনি, অতি আত্মবিশ্বাসের কারণে সরকার নিজেই সৃষ্টি করেছে।
একটু ডিটেইলে যাই। আগে সুবিধার থাকার বিষয়টা বলি। সেই বঙ্গবন্ধুর সরকার থেকে শুরু করে, এত বছরে যখনই যে সরকার দায়িত্বে বসেছে, একেবারে প্রথম দিন থেকেই কারও না কারও অসহযোগিতার মুখে পড়তে হয়েছে। স্বাধীনতার পর নতুন দেশ পরিচালনার শুরু থেকেই জাসদের মতো শক্তিশালী একটা বিরোধী দলকে দেখা গেছে। এদের মূল লক্ষ্যই ছিল সরকারকে ব্যর্থ প্রমাণের চেষ্টা করা। জিয়াউর রহমানের সরকারকে মোকাবিলা করতে হয়েছে আওয়ামী লীগের বিরোধিতা। এরশাদ সরকারের বিরুদ্ধে মাঠেই সক্রিয় ছিল আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামায়াতসহ সব বিরোধী দল। সেই সময় দারুণভাবে মাঠে ছিল সব ছাত্রসংগঠনও। ১৯৯১ সালে বিএনপি সরকার গঠন করলেও আওয়ামী লীগ কিন্তু পরাজয়কে মেনে নেয়নি। সূক্ষ্ম কারচুপির অভিযোগ তুলেছে। প্রথম দিন থেকেই বিরোধিতা করেছে। ’৯৬ সালে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে জিতেছে, বিএনপি মানেনি, বলেছে—স্থূল কারচুপি হয়েছে। সেই সঙ্গে চলেছে বিরোধিতা, মাঠে-ময়দানে এমনকি জাতীয় সংসদের ভেতরেও। সংসদ বয়কটের এই ধারা অব্যাহত থেকেছে ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পরও। ২০০৮-এর নির্বাচনকেও মেনে নেয়নি বিএনপি, ফলে জনগণ দেখেছে প্রধান দুই দলের সর্বাত্মক অসহযোগিতা। এরপর যে তিনটা নির্বাচন হয়েছে, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে, সেগুলোর আলোচনা যত কম করা যায় ততই ভালো। কারণ, এ সময়ে সরকার কেবল বিরোধী দলগুলোকেই নয়, পুরো জাতিকেই তাদের প্রতিপক্ষ বানিয়ে ফেলেছিল। দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠার সামান্যতম আগ্রহও তাদের ছিল না।
এ সময়ে অন্তর্বর্তী বা তত্ত্বাবধায়ক নামের অনিয়মিত কয়েকটা সরকারও ছিল। কিন্তু দুটি বাদে বাকিগুলোর আয়ু এতই কম ছিল যে, সেগুলো নিয়ে আলোচনা না করলেও চলে। যে দুটি নিয়ে আলোচনা করা যায়, তার একটি হলো সেনা-সমর্থিত ফখরুদ্দীনের সরকার। ২০০৭ সালের এই তত্ত্বাবধায়ক সরকার যে বিএনপির বাড়া-ভাতে ছাই দিতেই দায়িত্ব নিয়েছিল, সেটা বুঝতে কারও সমস্যা হয়নি। কাজেই শুরু থেকেই তারা বিএনপি-জামায়াতের সমর্থন পায়নি। এসবের বিপরীতে এবারের অন্তর্বর্তী সরকার দেশে থাকা সব রাজনৈতিক দলের সমর্থন ও সহযোগিতা পেয়েছে। একেবারে শুরুর দিন থেকেই পেয়েছে। আওয়ামী লীগের মূল নেতৃত্ব এ সময় মাঠে ছিল না, দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। দেশে যারা ছিল, সাধারণ কর্মী-সমর্থক, তারা হাসিনা সরকারের পতনে শুরুতে হতবিহ্বল হয়ে পড়েছিল। কিন্তু তারা দলের ওপর চেপে থাকা দুর্নীতিপরায়ণ নেতৃত্বের জন্য খুব একটা হা-হুতাশ করেছিল, তা-ও নয়। বরং ভেবেছিল—যাক, এবার তাহলে একটা ফ্রেশ নেতৃত্ব আসবে। সে কারণে তারাও ড. ইউনূস সরকারের তেমন একটা বিরোধিতা করেনি।
আর আওয়ামী লীগের বাইরে, যত রাজনৈতিক দল আছে, সবাই সম্পূর্ণভাবে সমর্থন দিয়েছে এই অন্তর্বর্তী সরকারকে। হাসিনাবিরোধী আন্দোলনের সময় সবাই ছিল এক ছাতার নিচে। তাদের কমন এনিমি ছিল একজনই— শেখ হাসিনা। সেই হাসিনা ভারতে চলে যাওয়ার পর, তারা সবাই নিজ নিজ রাজনীতিতে ফিরে যাবে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু তখনো তারা একটি জায়গায় এক ছিল, সেটা হচ্ছে—এই নতুন অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন দেওয়া। সরকারকে সমর্থন দেওয়ার পাশাপাশি তাদের সবার চাহিদা ছিল একটাই, সেটা হলো একটা সুন্দর নির্বাচন। নির্বাচনটি হতে হবে অবাধ ও নিরপেক্ষ। তবে রাজনীতির ভিন্নতার কারণে এই চাওয়ার মধ্যেও কিছুটা পার্থক্য ছিল। সেটা মূলত নির্বাচন অনুষ্ঠানের সময় নিয়ে। বিএনপি চেয়েছে দ্রুত নির্বাচন, কারণ তারা ভেবেছে যত দ্রুত নির্বাচন হবে ততই ভালো ফল তারা করবে। বিপরীত দিকে জামায়াত চেয়েছে কিছুটা রয়েসয়ে, সময় নিয়ে নির্বাচন। তারা ভেবেছে, সারা দেশে জনগণের সামনে দলকে নিয়ে যেতে তাদের আরও কিছুদিন লাগবে, তাই যতটা সময় পাওয়া যাবে ততই সুবিধা। এর মধ্যে আবার তৃতীয় শক্তি হিসেবে জন্ম নিল ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টি (এনসিপি)। এটা ছাত্রদের দল, ড. ইউনূসের প্ররোচনায় গড়ে ওঠা দল। অন্তর্বর্তী সরকারের একজন উপদেষ্টা এসে এই দলের কান্ডারির দায়িত্ব নিয়েছেন, আরও দুজন এখনো সরকারের মধ্যেই রয়ে গেছেন। এনসিপির কথাবার্তা আর কর্মকাণ্ডেও স্পষ্ট হয়ে গেল যে তারাও নির্বাচনকে বিলম্বিত করতে চায়। তারা যে দাবি নিয়েই মাঠে নামে, সরকার তা মেনে নেয়। কদিন আগে তারা দাবি করল, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে, সরকার সে দাবির প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করল। প্রথমত, তারা আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করল, আর সেই সঙ্গে ট্রাইব্যুনাল যাতে কোনো রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করতে পারে, সে রকম একটা আইন পাস করল। আগে কিংস পার্টি হিসেবে উল্লেখ করলেও এ ঘটনার পর সাধারণ মানুষের কাছে ড. ইউনূসের দল হিসেবেই বিবেচিত হতে থাকল এনসিপি।
এত কিছুর পরও বিএনপি, জামায়াত কিংবা বড় অন্য কোনো দলের মধ্যে এই সরকারের প্রতি প্রকাশ্য কোনো অসহযোগিতার কথা উচ্চারিত হয়নি। হয়তো তারা ভেবেছে, কোনোরকমে নির্বাচনটা তো হয়ে যাক। তারপর দেখা যাবে। কিন্তু নির্বাচন নিয়ে স্পষ্ট করে কোনো কথাই বলতে নারাজ সরকারের উপদেষ্টারা। সেই একই গান—ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে হবে। এ নিয়ে এক শীতল যুদ্ধ। তারপরও বিএনপির ধৈর্য অনেককেই অবাক করেছে, তারা সরাসরি সরকারের বিরোধিতা করেনি। কিন্তু শুরুতে যে কথাটা বলছিলাম, এবার সরকার নিজে থেকেই ঝামেলাটা তৈরি করল।
ঘটনা হলো তিনটি। মিয়ানমারের বিদ্রোহীদের দখল করা রাখাইন রাজ্যের জন্য ‘মানবিক করিডর,’ চট্টগ্রাম বন্দরের সবচেয়ে চালু ও লাভজনক নিউমুরিং টার্মিনালকে বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কাছে লিজ দেওয়া এবং সবশেষ আদালতের আদেশে মেয়র হওয়া বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে মেয়র পদে শপথ নেওয়ার পথে নানা অজুহাত তৈরি করা। এই তিনটি ঘটনায় সরকার সব দিক দিয়েই বড় ধরনের ঝামেলায় পড়ে গেছে।
প্রথম দুটি বিষয়কে কেন্দ্র করে সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে সরকারের সম্পর্কে একটা টানাপোড়েন হচ্ছে বলে সাধারণ্যে নানা আলোচনা হচ্ছে। এর মধ্যে তিন বাহিনীর প্রধানেরা দেখা করেছেন সরকারপ্রধানের সঙ্গে। কী কথা হয়েছে তাঁদের মধ্যে, তা জানা যায়নি। পরদিন আবার সেনাপ্রধান লম্বা বৈঠক করেছেন ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে। সেটাও সংবাদমাধ্যমের জন্য উন্মুক্ত ছিল না। তবে বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে এই দুই বৈঠক নিয়ে যেসব কথা প্রচারিত হচ্ছে, সেসবের অনেক কিছু বাদ দিয়ে দিলেও যতটুকু থাকে, তাতে বলা যায় সরকার খুব আরামদায়ক অবস্থানে নেই। বন্দর ও করিডর নিয়ে গত কয়েক দিনে বিভিন্ন মিডিয়াতে সরকারের নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান ও প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সেক্রেটারি শফিকুল আলম যে ভাষায় ও ভঙ্গিতে কথা বলেছেন, তাতে তাঁদের মধ্যে একধরনের ঔদ্ধত্যই প্রকাশ পেয়েছে। সেই সঙ্গে এই দুটি বিষয় নিয়ে সরকারের মধ্যে যে একধরনের তাড়া রয়েছে—সেটাও যেন বোঝা গেছে। তাড়াটা কোথায়? আর গোঁয়ার্তুমিটাই বা কেন? তারা কি তাহলে কারও কাছে কমিটেড? অথবা এই কাজগুলো করার মিশন নিয়েই তারা এসেছে? এই কমিটমেন্ট কি এতটাই গুরুত্বপূর্ণ যে দেশের মানুষের সেন্টিমেন্টকে পদদলিত করার ঝুঁকি পর্যন্ত তারা নিতে চাইছে? আমি ঠিক বুঝি না, এ দেশের সাধারণ মানুষের সেন্টিমেন্টকে গুরুত্ব না দেওয়ার আত্মঘাতী প্রবণতা কেন সরকারগুলোর মধ্যে বারবার দেখা যায়? আমরা হয়তো গরিব, আমরা হয়তো অত বেশি জ্ঞানী নই, তারপরও আমরা কারও অনুগ্রহ নিতে চাই না। কোনো দেশ, তা সে যত বড় পরাশক্তিই হোক না কেন, তাদের কাছে নতজানু হতে চাই না। আমাদের একেবারে দরিদ্র, অশিক্ষিত, অতি সাধারণ যেকোনো মানুষের সঙ্গে দশ মিনিট কথা বলুন, তাদের এই মনোভাব টের পেয়ে যাবেন। সে কারণেই জানবেন, আমাদের স্বাধীনতাযুদ্ধের মতো মহান কাজে সহায়তা করা সত্ত্বেও ভারতের প্রতি দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মনোভাব ইতিবাচক নয়। কারও মাতব্বরি এই জাতি সহ্য করতে চায় না। আমরা কিছু পারি না, সাদা চামড়ার লোকগুলো এসে আমাদের শিখিয়ে দিয়ে যাবে—এই ন্যারেটিভ এ দেশের মানুষকে খাওয়ানো যাবে না। আর যখন এমন মতলবের পেছনের অর্থনৈতিক অস্বচ্ছতার বিষয়গুলোও ধীরে উন্মোচিত হতে শুরু করেছে, তখন তো এদের দেশপ্রেম নিয়েই প্রশ্ন উঠছে।
এ তো গেল পোর্টের টার্মিনাল লিজ দেওয়ার বিষয়। করিডর, মানবিক করিডর বা ত্রাণ পাঠানোর জন্য রুট—এ রকম যে নামেই অভিহিত করা হোক না, পুরো বিষয়টাই যে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য একটা বড় ঝুঁকি, এমনটাই মনে করে মানুষ। সম্ভবত সামরিক বাহিনীর চিন্তাও একই ধারায় প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে সরকারের এ চেষ্টাটাও একটা বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছে।
অথচ এসব তো এই অন্তর্বর্তী সরকারের মুখ্য কাজ হওয়ার কথা ছিল না। এসব সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জনগণ কর্তৃক নির্বাচিত কোনো নিয়মিত সরকারের, অনির্বাচিত সরকারের নয়। তাদের প্রধান কাজ হচ্ছে—একটা অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করা। সে কাজে তাদের তেমন কোনো হেলদোল টের পাওয়া যাচ্ছে না। বরং এরই মধ্যে তারা এমন ব্যবস্থার সূচনা করেছে, যার কারণে দেশের একটা বিশাল জনগোষ্ঠী শেষ পর্যন্ত ভোটকেন্দ্রে না-ও যেতে পারে।
তৃতীয় ঘটনাটি হচ্ছে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে ইশরাক হোসেনকে বসতে না দেওয়ার প্রচেষ্টা। যেভাবে আদালতের রায় নিয়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র হয়েছেন ডা. শাহাদাত হোসেন, সেই একইভাবে ইশরাক হোসেনও আদালতে রায় পেয়েছেন। ডা. শাহাদাত শপথ নিয়ে মেয়রের দায়িত্ব নিতে পারলে ইঞ্জিনিয়ার ইশরাকের ক্ষেত্রে সমস্যাটা কী? সহজ এই প্রশ্নের কোনো জবাব নেই। ইনিয়েবিনিয়ে যা বলা হচ্ছে, তার সারমর্ম হচ্ছে একজন ‘শিশু উপদেষ্টা’ চান না, তাই হবে না। কিন্তু তিনি না চাইলেই তো আর হবে না। উচ্চ আদালত তো ঠিকই ইশরাকের পক্ষে রায় দিয়ে দিয়েছেন। এখন হয়তো ওই উপদেষ্টা আরও কিছু ফন্দিফিকির করবেন। কিন্তু তাতে ফল কী হবে? অভিজ্ঞতা বলে—যতই টানাটানি করবেন, ততই জটিলতা বাড়বে। এরই মধ্যে ঢাকাবাসী জেনে গেছে, বিএনপির ঢাকা মহানগরের এক নেতার সমর্থকেরা চাইলেই এই সরকারকে অচল করে দিতে পারে। তাহলে পুরো দেশে বিএনপি যদি অসহযোগিতা করে, তাহলে অবস্থা কতটা ভয়ংকর হতে পারে?
কদিন আগে এক অনুষ্ঠানে আমি বলেছিলাম, এই সরকারের সবচেয়ে বড় শক্তি হচ্ছে বিএনপি। তারা এদেরকে সমর্থন দিয়েছে বলেই এরা টিকে আছে। কিন্তু এই বিষয়টা সরকারও বোঝে না, বিএনপিও বোঝে না। তখন সবচেয়ে বড় শক্তির কথা বলেছিলাম। দ্বিতীয় শক্তিটির কথা বলিনি, বলার প্রসঙ্গ ওঠেনি। এখন বলছি। এদের দ্বিতীয় শক্তি হচ্ছে সামরিক বাহিনী। তারাও অনির্বাচিত হওয়া সত্ত্বেও এই সরকারকে সর্বাত্মক সহযোগিতা দিয়ে এসেছে।
মর্মান্তিক বাস্তবতা হচ্ছে—সরকার তার প্রধান এই দুই শক্তিকেই পূর্ণমাত্রায় ব্যবহার করতে পারছে না। এর বিপরীতে বাইরের শক্তির প্রতি নিজেদের নতজানু মনোভাব আর অনভিজ্ঞতামিশ্রিত গোঁয়ার্তুমি তাদেরকে এক জটিল চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে।
শিল্পীর নিজস্ব রাজনৈতিক পছন্দ থাকতে পারে, কিন্তু তিনি দলবাজ হলেই বিপদ। যেকোনো অন্যায়ের বিরুদ্ধে শিল্পী প্রতিবাদ করতে পারেন। কিন্তু সেটা সুপ্রযুক্ত হচ্ছে কি না, সেটাও তাঁকে ভেবে দেখতে হবে।
১২ ঘণ্টা আগেডিসেম্বর আর জুন নিয়ে যে বচসা (বচসা বলাই শ্রেয়, এটাকে সুস্থ মস্তিষ্কের আলোচনা বলার কোনো সুযোগ নেই) শুরু হয়েছে, তার অন্তর্নিহিত কারণ বোঝা দায়। অনেক ইউটিউবারই এই প্রশ্নটিকে সামনে নিয়ে এসেছেন এবং তাঁদের মতো করে আলোচনা করেছেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কেন ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন...
২ দিন আগেজাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়কে বলা হয় বাংলাদেশের প্রাকৃতিক আধার। ৭০০ একর বেষ্টিত এই প্রতিষ্ঠানে প্রাণ-প্রকৃতির সঙ্গে শিক্ষার্থীদের যে প্রগাঢ় বন্ধন, তা উচ্চশিক্ষার প্রকৃত পরিবেশ নিশ্চিত করে। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি লেকের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সুইজারল্যান্ড নামে পরিচিত...
২ দিন আগেএকসময় যাকে কেবল বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষার একটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ভাবা হতো, সেই ফেসবুক এখন আমাদের জীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ অবলম্বন হয়ে উঠেছে। বিশেষত, সংবাদ ও তথ্যপ্রবাহের ক্ষেত্রে ফেসবুকের ভূমিকা দিন দিন শুধু শক্তিশালীই হচ্ছে না, বরং প্রশ্ন উঠছে, মূলধারার গণমাধ্যম কি ক্রমেই...
২ দিন আগে