Ajker Patrika

হাসিনার স্বৈরশাসন একান্তভাবে তাঁরই মারাত্মক ভুল

ড. মইনুল ইসলাম
হাসিনার স্বৈরশাসন একান্তভাবে তাঁরই মারাত্মক ভুল

সম্প্রতি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক মাহফুজ আলম মুক্তিযুদ্ধকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে মর্মে বক্তব্য দিয়েছেন। কিন্তু গত ১৮ অক্টোবর ২০২৪ তারিখে ১৯৭১ সালের ৭ মার্চকে জাতীয় দিবস থেকে বাদ দেওয়া হলো। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে জাতিকে মুক্তিযুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছিল। এই ভাষণটিকে জাতিসংঘ মানবজাতির ঐতিহ্যের রেজিস্টারে অন্তর্ভুক্ত করেছে। আমি দৃঢ়ভাবে বলতে চাই, মুক্তিযুদ্ধকে অপমান করে জনগণের কাছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কিংবা অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের জনপ্রিয়তা মোটেও বাড়বে না। সম্প্রতি বইপত্রে বাংলাদেশের স্বাধীনতাসংগ্রামের মহানায়ক শেখ মুজিবুর রহমানকে অন্যান্য ‘ফাউন্ডিং ফাদার্সের’ কাতারে ঠেলে দিয়ে উপদেষ্টা পরিষদ কি দেশের স্বাধীনতাসংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিকৃত করছে না? মুক্তিযুদ্ধের সময় শেখ মুজিব পাকিস্তানের কারাগারে বন্দী থাকলেও তাঁর নামেই মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধ করেছেন। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিটি প্রশিক্ষণ শিবিরে ‘আমার নেতা তোমার নেতা শেখ মুজিব শেখ মুজিব’ স্লোগান দিয়ে শুরু করা হতো প্রতিটি কার্যক্রম। শেখ মুজিব বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করেছিল মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনাকারী মুজিবনগর সরকার। বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ বাংলাদেশের প্রথম সরকারের মন্ত্রিসভার শপথ গ্রহণের স্থান মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলার আম্রকাননকে ‘মুজিবনগর’ নামকরণ করেছিলেন স্বাধীনতার স্থপতি শেখ মুজিবের অনন্য ভূমিকাকে সম্মান জানানোর জন্যই। অতএব, শেখ মুজিব এবং মুক্তিযুদ্ধে তাঁর সর্বোচ্চ নেতার আসনকে অস্বীকার করে অন্তর্বর্তী সরকার কোন ইতিহাসকে প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে? স্বাধীন বাংলাদেশে ক্ষমতার দম্ভে কোনো শাসকগোষ্ঠী মুক্তিযুদ্ধকে হেয় করলে কিংবা শেখ মুজিবের অবদানকে অস্বীকার করলে তাদের ইতিহাসের কাঠগড়ায় দাঁড়াতেই হবে।

১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি শেখ মুজিব মাতৃভূমিতে ফেরত আসার পর ১২ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতি পদে ইস্তফা দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর পদ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। ১৯৭২ সালের ১২ জানুয়ারি থেকে শুরু করে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে শেখ মুজিব নিহত হওয়া পর্যন্ত সময়ের ইতিহাসের অনেক কিছুই আমার পছন্দনীয় ছিল না। শেখ মুজিবের ওই সময়ের রাজনীতিতে অনেক ভুলত্রুটি ছিল, তাঁর অনেক ব্যর্থতা ছিল। আমি নিজেও এসব ব্যর্থতার সোচ্চার সমালোচনা করে থাকি। আমি ১৯৭৫ সালে শেখ মুজিবের বাকশাল প্রবর্তনের কট্টর সমালোচক। কিন্তু, ওগুলোর অজুহাতে স্বাধীনতাসংগ্রামে শেখ মুজিবের অতুলনীয় অবদানকে অস্বীকার করার স্পর্ধিত অপপ্রয়াস কেন? সম্প্রতি সমন্বয়কদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ১৯৭২ সালের আগের সময়ে শেখ মুজিবের অবদানকে যথাযোগ্য মর্যাদা প্রদান করা হবে। আমি এ বক্তব্যকে স্বাগত জানাই। স্বৈরশাসক শেখ হাসিনাকে উৎখাত করে ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থান ৫ আগস্ট দেশের ক্ষমতায় পরিবর্তন এনেছে, তাই তাঁর প্রতি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘৃণা থাকাই স্বাভাবিক।

উপদেষ্টা পরিষদের অনেকেই হাসিনা সরকারের হেনস্তা ও নির্যাতনের প্রত্যক্ষ শিকার হয়েছেন, তাঁরাও পতিত সরকারের প্রতি বিরাগ পোষণ করতে পারেন। হাসিনার স্বৈরশাসন একান্তভাবে তাঁরই মারাত্মক ভুল। ওই শাসনামলের গুম, খুন, লুটপাটতন্ত্র ও পুঁজি পাচার যারা চালিয়েছে, তাদের বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতেই হবে। কিন্তু, এর কোনোটাই কাউকে অধিকার দেয় না বাংলাদেশের স্বাধীনতাসংগ্রামে শেখ মুজিবের অবদানকে খাটো করার। মওলানা ভাসানী, এ কে ফজলুল হক কিংবা শহীদ সোহরাওয়ার্দীর রাজনৈতিক জীবনেও অনেক ভুলভ্রান্তি ছিল, কিন্তু তাঁরা আমাদের রাষ্ট্রটির ‘ফাউন্ডিং ফাদার্স’—এটা সবাইকে স্বীকার করতেই হবে। শেখ মুজিব রাজনৈতিকভাবে এই তিনজন ফাউন্ডিং ফাদার্সের শিষ্য ও স্নেহভাজন ‘জুনিয়র নেতা’ হলেও বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে ১৯৬৬ সাল থেকে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পর্যন্ত শেখ মুজিবের অবদান তাঁদের অবদানকে নিঃসন্দেহে ছাড়িয়ে গেছে।

কোনো কোনো সমন্বয়ক ১৯৭২ সালের সংবিধানকে ‘কবর দিয়ে’ নতুন সংবিধান রচনা করার অভিপ্রায় ঘোষণা করেছেন। কেউ একজন এই সংবিধানকে ‘মুজিববাদী সংবিধান’ আখ্যা দিয়ে নালায় ফেলে দেওয়ার দম্ভোক্তি করেছেন। এগুলো নেহাতই স্বাধীনতাবিরোধী মহলের স্পর্ধিত দম্ভোক্তি। দেশের দুটি দেশপ্রেমিক শক্তির মধ্যে যারা জামায়াতকে অন্তর্ভুক্ত করে, তারা এখনো স্বাধীনতাবিরোধীই রয়ে গেছে। স্বাধীনতার সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ ছিল পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ উপনিবেশ

হিসেবে পূর্ব পাকিস্তানের শোষণ ও বঞ্চনা থেকে মুক্তির সংগ্রাম। পূর্ব পাকিস্তানের ঔপনিবেশিক শোষণ ও বঞ্চনার ব্যাপারে স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াতে ইসলামী ও তাদের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র সংঘের অবস্থান ছিল ন্যক্কারজনক, তারা পাকিস্তানকে টিকিয়ে রাখার ভুল অবস্থান গ্রহণ করেছিল। উপরন্তু, সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সহযোগী শক্তির ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে এই দুটো সংগঠনের নেতা-কর্মীরা মুক্তিযুদ্ধবিরোধী ঘাতক-দালাল বাহিনী আলবদর ও আলশামসের সশস্ত্র ক্যাডারে পরিণত হয়েছিল। তাদের হাতে কত বাঙালির রক্ত ঝরেছে, কত মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হয়েছেন, তা কখনোই সঠিকভাবে নিরূপিত হয়নি। বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে এখনো প্রকাশ্য বিবৃতি দিয়ে স্বীকার করেনি জামায়াতে ইসলামী। ঘাতক হানাদার পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর দোসরের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে তাদের মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডের জন্য তারা স্বাধীন বাংলাদেশে জাতির কাছে ক্ষমা চায়নি।

বর্তমান ইসলামী ছাত্রশিবির ওই স্বাধীনতাবিরোধী ইসলামী ছাত্র সংঘের নব্য-সংস্করণ, যা ১৯৭৬ সালে পুনর্গঠিত হয়েছে। আমার সন্দেহ, বর্তমানে জামায়াতে ইসলামীর অঙ্গসংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীদের আজও বাংলাদেশের স্বাধীনতাসংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে দেওয়া হচ্ছে না। ‘ইসলামি বিপ্লবের’ নামে জোরজবরদস্তি করে এবং জাতীয় সম্পদ ধ্বংস করার মাধ্যমে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের স্বপ্নে মশগুল রয়েছে জামায়াত-শিবির। গত জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের সময় ঢাকার টেলিভিশন ভবন ভাঙচুর, ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীর রগ কাটা, হাইরাইজ বিল্ডিংয়ের ছাদ থেকে ফেলে ছাত্রলীগ কর্মী হত্যা, দুটো মেট্রোরেল স্টেশন ধ্বংস, সেতু মন্ত্রণালয়ের অফিস ভাঙচুর, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের অফিস ভাঙচুর, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ময়লার ট্রাক পোড়ানো, রেললাইন উপড়ানো, বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর, প্রায় ৪০০ থানা পোড়ানো ও পুলিশকে আক্রমণ এবং সর্বোপরি ৪ আগস্টে সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানায় আক্রমণ চালিয়ে ১৩ জন ও নরসিংদীতে ৬ জন পুলিশকে পিটিয়ে হত্যা—এ ধরনের অগ্নিসন্ত্রাস, হত্যাকাণ্ড ও ভাঙচুর সবগুলো জামায়াত-শিবিরের ক্যাডাররাই চালিয়েছিল বলে ধারণা করা হয়।

দুঃখজনক সত্য হলো, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের মধ্যে অনেকেই ইসলামী ছাত্রশিবিরের ক্যাডার রয়েছে। তারা সুযোগ পেলেই মুক্তিযুদ্ধকে খাটো করার অপপ্রয়াস চালাচ্ছে। তাদের মাথায় বাংলাদেশের পতাকা মোড়ানো থাকলেও তারা মুক্তিযুদ্ধের বিকৃত ইতিহাসকেই জাতির ওপর চাপিয়ে দিতে চাইছে। স্বৈরশাসক হাসিনা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে চরম বিশ্বাসঘাতকতা করে গণতন্ত্রহীন লুটপাটতন্ত্র কায়েম রেখেছিলেন সাড়ে ১৫ বছর। অর্থনীতির রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতিকে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন হাসিনা, সরকারের সক্রিয় পৃষ্ঠপোষকতায় বিদেশে পাচার করা হয়েছে কয়েক লাখ কোটি টাকা। হাসিনার পরিবার, আত্মীয়স্বজন, আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-সংসদ সদস্য, নেতা-কর্মী, হাসিনার পৃষ্ঠপোষকতা-ধন্য অলিগার্ক ব্যবসায়ী এস আলম, সালমান এফ রহমান, সামিটের আজিজ খান, বসুন্ধরার আকবর সোবহান, ওরিয়ন গ্রুপের ওবাইদুল করিম, নাসা গ্রুপের নজরুল ইসলাম মজুমদার এই পুঁজি লুণ্ঠন ও পুঁজি পাচারযজ্ঞের প্রধান কুশীলব।

সম্প্রতি বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীনের পুত্র সোহেল তাজ অভিযোগ করেছেন, ২০০৯ সালেই শেখ হাসিনা বলেছিলেন ‘বিএনপি অনেক টাকা কামিয়েছে। এখন আমাদেরকে দুহাতে টাকা বানাতে হবে।’ আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের প্রায় সব নেতা-কর্মীই গত সাড়ে ১৫ বছরে কোনো না কোনোভাবে অবৈধ কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে কোটিপতি হওয়ার মিশনে অংশগ্রহণ করেছেন। পতনের পর আগামী বেশ কয়েক বছর ধরে লুটপাটতন্ত্রের সুবিধাভোগী সবাইকে বিচারের মুখোমুখি হতেই হবে। ইতিমধ্যেই সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বাড়িঘর, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও শিল্পকারখানাগুলো হয় পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, নয়তো লুটতরাজ ও ভাঙচুরের কবলে পড়ে বিধ্বস্ত হয়ে

গেছে। হাসিনা ও তাঁর পরিবার-আত্মীয়স্বজন হয়তো বিদেশে পাচার করা অর্থে আরাম-আয়েশে দিন-গুজরান করতে পারবে, কিন্তু লাখ লাখ আওয়ামী নেতা-কর্মীর জীবন আরও বহুদিন ধরে দুর্বিষহ দারিদ্র্যপীড়িত হয়ে থাকবে নিশ্চিতভাবে।

লাখ লাখ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে কীভাবে অহরহ মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বুলি আউড়ানো সম্ভব, সেটা হাসিনা তাঁর আমলে দেখিয়ে গেলেন! তিন-তিনটি একতরফা নির্বাচনী প্রহসনে জনগণকে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে দেননি হাসিনা, তাই দেশের আপামর জনগণ স্বৈরশাসক হাসিনাকে গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে উৎখাত করতে বদ্ধপরিকর ছিল। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থান হাসিনাকে প্রাণভয়ে ভারতে যেতে বাধ্য করেছে। হাসিনা সরকারকে উৎখাতকারী গণ-অভ্যুত্থান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে প্রতিষ্ঠা করার স্বর্ণ-সুযোগ এনে দিয়েছে জাতিকে। আমি মনে করি, হাসিনার পচা-গলা লুটপাটতন্ত্রকে পেছনে ফেলে নতুন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার উদ্দেশ্যেই প্রফেসর ইউনূস ও অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা রাষ্ট্রের হাল ধরেছেন। মুক্তিযুদ্ধকে খাটো করে ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানের বৈষম্যবিরোধী চেতনাকে সমুন্নত করা যাবে না, এটা অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের বিপক্ষে সেমির আগেই ধাক্কা খেল অস্ট্রেলিয়া

পরমাণু শক্তিধর হতে চেয়েছিল তাইওয়ান, সিআইএ এজেন্টের বিশ্বাসঘাতকতায় স্বপ্নভঙ্গ

এলপি গ্যাস, তেল, আটাসহ বেশ কিছু পণ্যে ভ্যাট তুলে দিল এনবিআর

চ্যাম্পিয়নস ট্রফি: রিজার্ভ-ডেতেও সেমিফাইনাল না হলে হৃদয়বিদারক সমীকরণ

অমর্ত্য সেনের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় যা বললেন জামায়াতের আমির

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত