মাসুমা হক প্রিয়াংকা
কিছু লিখতে বসলে এখন সাতপাঁচ অনেক কিছু ভাবতে হয়। কোনো লাইন বা শব্দের কারণে না জানি ফ্যাসিস্ট ও স্বৈরাচারী শাসকের পক্ষের ট্যাগ লাগিয়ে জীবন অতিষ্ঠ করে তোলা হয়! দেশে এখন নাকি মতপ্রকাশের অবাধ স্বাধীনতার বাতাস বইছে। কিন্তু পত্রিকা পড়ে কি মনে হয়, যা ঘটছে তার চিত্র ফুটে উঠছে? ভয়ের সংস্কৃতি কি সত্যি দূর হয়েছে? যাক, আমি আদার ব্যাপারী, জাহাজের খবর নিয়ে লাভ নেই। হাত নিসপিস করে তাই লেখা। পাঠক, একজন সাধারণ নাগরিকের নির্দোষ রাজনৈতিক ভাবনার এই লেখায় আবার ‘দোষ’, ‘গন্ধ’ ও ‘সংযোগ’ খুঁজে বের করবেন না অনুগ্রহপূর্বক।
আমি কোনো রাজনৈতিক দলের অনুসারী না হয়েও রাজনীতি নিয়ে চিন্তাভাবনা করি। দেশের কথা ভাবি, মানুষের কথা ভাবি। এসব ‘নিষ্ক্রিয়’ ভাবনার কোনো অর্থ আছে কি না জানি না। আমার বিবেচনায় রাজনীতি আদতে সমাজ পরিচালনার মাধ্যম, যার মাধ্যমে জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নত হওয়ার কথা। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় এটি জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটানোর একটি উপায়, যেখানে নেতৃত্ব জনগণের স্বার্থ রক্ষা করবে এবং জাতীয় উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করবে। কিন্তু বাংলাদেশসহ অনেক উন্নয়নশীল দেশে রাজনীতির প্রকৃত চিত্র ভিন্ন। এসব দেশে রাজনীতি যতটা না জনকল্যাণের জন্য, তার চেয়ে বেশি ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণ এবং ব্যক্তি বা গোষ্ঠীস্বার্থ রক্ষার হাতিয়ার হয়ে দাঁড়িয়েছে।
স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে রাজনীতি বহু উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে গেছে। প্রথম দিকে আদর্শিক রাজনীতি একটি বড় অংশ দখল করলেও ধীরে ধীরে এটি সুবিধাভোগী গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। রাজনৈতিক দলগুলোর ঘোষণাপত্র কিংবা ইশতেহারে জনস্বার্থের কথা থাকলেও বাস্তবায়নের বেলায় এগুলো প্রায়ই উপেক্ষিত হয়। বরং দেখা যায়, ক্ষমতার পালাবদলে শুধু ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর অবস্থানের পরিবর্তন হয়, কিন্তু জনগণের ভাগ্য বদলায় সামান্যই।
বাংলাদেশে রাজনৈতিক সংস্কৃতি এমনভাবে গড়ে উঠেছে যে দল ক্ষমতায় থাকলে একরকম, আর বিরোধী দলে থাকলে আরেক রকম আচরণ করে। ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় যারা দুর্নীতির অভিযোগ উড়িয়ে দেয়, তারা বিরোধী দলে গেলে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়। এতে সাধারণ জনগণ ক্রমাগত প্রতারিত হয়। রাজনীতির ওপর তাদের আস্থাহীনতা বাড়তে থাকে।
রাজনীতির মূল উদ্দেশ্য হলো নীতিনির্ধারণের মাধ্যমে রাষ্ট্র পরিচালনা করা। কিন্তু যখন এটি কেবল ক্ষমতা ধরে রাখার প্রতিযোগিতায় পরিণত হয়, তখন জনগণের কল্যাণ নীতির কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে না। বরং রাজনৈতিক দল ও তাদের নেতারা নিজস্ব বলয় তৈরি করেন, যেখানে জনগণের চেয়ে দলের আনুগত্য বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। ফলে দলীয়করণ, স্বজনপ্রীতি, দুর্নীতি এবং প্রশাসনিক কাঠামোর অবক্ষয় বৃদ্ধি পায়।
দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর গঠনপ্রণালি লক্ষ করলে দেখা যায়, বেশির ভাগ দল ব্যক্তিনির্ভর। যেখানে দলীয় আদর্শ, গঠনমূলক বিতর্ক, গণতন্ত্রের চর্চার চেয়ে ব্যক্তিপূজা এবং এককেন্দ্রিক নেতৃত্ব বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। এতে দীর্ঘ মেয়াদে রাজনীতিতে মেধাবীদের আসার সুযোগ থাকে না এবং সুবিধাবাদী চক্র সক্রিয় হয়ে দলকেই দখল করে ফেলে।
সম্প্রতি জুলাই গণ-অভ্যুত্থান থেকে উত্থিত নেতাদের নেতৃত্বে একটি নতুন রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠার ঘোষণা এসেছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, নতুন দলটি জনগণের প্রয়োজনে জনগণের দ্বারা গঠিত হয়েছে কি? সত্যিই কি জাতীয় নাগরিক পার্টি জনস্বার্থের প্রতিনিধিত্ব করবে, নাকি ক্ষমতা লাভের পুরোনো ধারা অনুসরণ করবে? অতীতে দেখা গেছে, নতুন দলগুলো শুরুর দিকে আদর্শিক অবস্থান নিলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তারা বিদ্যমান রাজনৈতিক সংস্কৃতির অনুগামী হয়ে পড়ে। আমাদের দেশের রাজনীতির বিগত সময়ের অভিজ্ঞতা কিন্তু তাই বলে। এতে জনগণের মধ্যে আস্থাহীনতা তৈরি হয় এবং বিকল্প রাজনীতি ভেবে সেই দল নিয়ে হতাশা ব্যক্ত করেন।
রাজনীতি সাধারণ মানুষের কল্যাণের পরিবর্তে কতটা রাজনীতিবিদদের বা ক্ষমতাসংশ্লিষ্টদের স্বার্থ রক্ষা করেছে, তা পর্যালোচনা করা দরকার। এ প্রশ্নের উত্তর সহজ নয়। দেশে কিছু উন্নয়ন হয়েছে, কিন্তু সেগুলো কি সমতাভিত্তিক? ক্ষমতার চক্রে কাদের সুযোগ বেশি এসেছে? আর কাদের জন্য নীতি নির্ধারিত হয়েছে? রাজনীতির গতি-প্রকৃতির এই চিত্রই বলে দেয়—বাংলাদেশে পায়ের মাপে জুতা বানানো হয় না, বরং জুতার মাপের সঙ্গে পা মানিয়ে নিতে হয়।
কিছু লিখতে বসলে এখন সাতপাঁচ অনেক কিছু ভাবতে হয়। কোনো লাইন বা শব্দের কারণে না জানি ফ্যাসিস্ট ও স্বৈরাচারী শাসকের পক্ষের ট্যাগ লাগিয়ে জীবন অতিষ্ঠ করে তোলা হয়! দেশে এখন নাকি মতপ্রকাশের অবাধ স্বাধীনতার বাতাস বইছে। কিন্তু পত্রিকা পড়ে কি মনে হয়, যা ঘটছে তার চিত্র ফুটে উঠছে? ভয়ের সংস্কৃতি কি সত্যি দূর হয়েছে? যাক, আমি আদার ব্যাপারী, জাহাজের খবর নিয়ে লাভ নেই। হাত নিসপিস করে তাই লেখা। পাঠক, একজন সাধারণ নাগরিকের নির্দোষ রাজনৈতিক ভাবনার এই লেখায় আবার ‘দোষ’, ‘গন্ধ’ ও ‘সংযোগ’ খুঁজে বের করবেন না অনুগ্রহপূর্বক।
আমি কোনো রাজনৈতিক দলের অনুসারী না হয়েও রাজনীতি নিয়ে চিন্তাভাবনা করি। দেশের কথা ভাবি, মানুষের কথা ভাবি। এসব ‘নিষ্ক্রিয়’ ভাবনার কোনো অর্থ আছে কি না জানি না। আমার বিবেচনায় রাজনীতি আদতে সমাজ পরিচালনার মাধ্যম, যার মাধ্যমে জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নত হওয়ার কথা। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় এটি জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটানোর একটি উপায়, যেখানে নেতৃত্ব জনগণের স্বার্থ রক্ষা করবে এবং জাতীয় উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করবে। কিন্তু বাংলাদেশসহ অনেক উন্নয়নশীল দেশে রাজনীতির প্রকৃত চিত্র ভিন্ন। এসব দেশে রাজনীতি যতটা না জনকল্যাণের জন্য, তার চেয়ে বেশি ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণ এবং ব্যক্তি বা গোষ্ঠীস্বার্থ রক্ষার হাতিয়ার হয়ে দাঁড়িয়েছে।
স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে রাজনীতি বহু উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে গেছে। প্রথম দিকে আদর্শিক রাজনীতি একটি বড় অংশ দখল করলেও ধীরে ধীরে এটি সুবিধাভোগী গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। রাজনৈতিক দলগুলোর ঘোষণাপত্র কিংবা ইশতেহারে জনস্বার্থের কথা থাকলেও বাস্তবায়নের বেলায় এগুলো প্রায়ই উপেক্ষিত হয়। বরং দেখা যায়, ক্ষমতার পালাবদলে শুধু ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর অবস্থানের পরিবর্তন হয়, কিন্তু জনগণের ভাগ্য বদলায় সামান্যই।
বাংলাদেশে রাজনৈতিক সংস্কৃতি এমনভাবে গড়ে উঠেছে যে দল ক্ষমতায় থাকলে একরকম, আর বিরোধী দলে থাকলে আরেক রকম আচরণ করে। ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় যারা দুর্নীতির অভিযোগ উড়িয়ে দেয়, তারা বিরোধী দলে গেলে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়। এতে সাধারণ জনগণ ক্রমাগত প্রতারিত হয়। রাজনীতির ওপর তাদের আস্থাহীনতা বাড়তে থাকে।
রাজনীতির মূল উদ্দেশ্য হলো নীতিনির্ধারণের মাধ্যমে রাষ্ট্র পরিচালনা করা। কিন্তু যখন এটি কেবল ক্ষমতা ধরে রাখার প্রতিযোগিতায় পরিণত হয়, তখন জনগণের কল্যাণ নীতির কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে না। বরং রাজনৈতিক দল ও তাদের নেতারা নিজস্ব বলয় তৈরি করেন, যেখানে জনগণের চেয়ে দলের আনুগত্য বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। ফলে দলীয়করণ, স্বজনপ্রীতি, দুর্নীতি এবং প্রশাসনিক কাঠামোর অবক্ষয় বৃদ্ধি পায়।
দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর গঠনপ্রণালি লক্ষ করলে দেখা যায়, বেশির ভাগ দল ব্যক্তিনির্ভর। যেখানে দলীয় আদর্শ, গঠনমূলক বিতর্ক, গণতন্ত্রের চর্চার চেয়ে ব্যক্তিপূজা এবং এককেন্দ্রিক নেতৃত্ব বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। এতে দীর্ঘ মেয়াদে রাজনীতিতে মেধাবীদের আসার সুযোগ থাকে না এবং সুবিধাবাদী চক্র সক্রিয় হয়ে দলকেই দখল করে ফেলে।
সম্প্রতি জুলাই গণ-অভ্যুত্থান থেকে উত্থিত নেতাদের নেতৃত্বে একটি নতুন রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠার ঘোষণা এসেছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, নতুন দলটি জনগণের প্রয়োজনে জনগণের দ্বারা গঠিত হয়েছে কি? সত্যিই কি জাতীয় নাগরিক পার্টি জনস্বার্থের প্রতিনিধিত্ব করবে, নাকি ক্ষমতা লাভের পুরোনো ধারা অনুসরণ করবে? অতীতে দেখা গেছে, নতুন দলগুলো শুরুর দিকে আদর্শিক অবস্থান নিলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তারা বিদ্যমান রাজনৈতিক সংস্কৃতির অনুগামী হয়ে পড়ে। আমাদের দেশের রাজনীতির বিগত সময়ের অভিজ্ঞতা কিন্তু তাই বলে। এতে জনগণের মধ্যে আস্থাহীনতা তৈরি হয় এবং বিকল্প রাজনীতি ভেবে সেই দল নিয়ে হতাশা ব্যক্ত করেন।
রাজনীতি সাধারণ মানুষের কল্যাণের পরিবর্তে কতটা রাজনীতিবিদদের বা ক্ষমতাসংশ্লিষ্টদের স্বার্থ রক্ষা করেছে, তা পর্যালোচনা করা দরকার। এ প্রশ্নের উত্তর সহজ নয়। দেশে কিছু উন্নয়ন হয়েছে, কিন্তু সেগুলো কি সমতাভিত্তিক? ক্ষমতার চক্রে কাদের সুযোগ বেশি এসেছে? আর কাদের জন্য নীতি নির্ধারিত হয়েছে? রাজনীতির গতি-প্রকৃতির এই চিত্রই বলে দেয়—বাংলাদেশে পায়ের মাপে জুতা বানানো হয় না, বরং জুতার মাপের সঙ্গে পা মানিয়ে নিতে হয়।
রুমিন ফারহানা বাংলাদেশের একজন রাজনীতিবিদ, আইনজীবী ও রাজনীতি বিশ্লেষক। তিনি সংরক্ষিত নারী আসন থেকে একাদশ জাতীয় সংসদের সদস্য ছিলেন। তিনি বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
১৯ ঘণ্টা আগেদেশে প্রতিবছর বহু প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়। বাস্তবায়নের সময় মাঝে মাঝে সংবাদ চোখে পড়ে যে প্রকল্পের ভবন নির্মাণ করতে গিয়ে গাছ কাটা পড়ছে, বনভূমি উজাড় হচ্ছে, খাল ও জলাভূমি ভরাট হচ্ছে, নির্মাণস্থলে নির্মাণকাজের ফলে পরিবেশ দূষণ হচ্ছে, এমনকি কোনো কোনো প্রকল্প গ্রহণের ফলে পরিবেশের ওপর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব...
১৯ ঘণ্টা আগেপাহাড় রক্ষা করা যখন খুবই জরুরি, তখন সে পাহাড় কেটে গোটা অঞ্চলের জন্য বিপদ ডেকে আনছে একদল দুর্বৃত্ত। খাগড়াছড়ির পানছড়ি এলাকায় অবাধে পাহাড় কাটা হচ্ছে, অথচ সরকারি কর্মকর্তারা এ বিষয়ে দায়সারা বক্তব্য দিয়ে নিজেদের ব্যর্থতাকে ঢাকার চেষ্টা করছেন।
১৯ ঘণ্টা আগে১৯৪৯ সালের ২৩ জুন মওলানা ভাসানীকে সভাপতি এবং শামসুল হককে সাধারণ সম্পাদক করে গঠিত হয়েছিল আওয়ামী লীগ। তখন শেখ মুজিবুর রহমান জেলে ছিলেন, তাঁকে করা হয়েছিল দলের যুগ্ম সম্পাদক। পরবর্তী সময়ে শামসুল হক অপ্রকৃতিস্থ হয়ে যাওয়ায় শেখ মুজিবুর রহমানকে দলের সাধারণ সম্পাদক করা হয়।
২ দিন আগে