এম আর রহমান
পাকিস্তান সে দেশে বসবাস করা আফগান শরণার্থীদের ব্যাপকভাবে বহিষ্কার করতে শুরু করেছে। চলতি এপ্রিলের মধ্যে ৮০ হাজার শরণার্থীকে ফেরত পাঠানোর লক্ষ্য রয়েছে পাকিস্তান সরকারের। বলা যায়, এই সিদ্ধান্ত আফগান শরণার্থীদের কাছে বজ্রাঘাতের মতো হয়ে এসেছে। কোথায় যাবে তারা? তালেবানশাসিত আফগানিস্তানে ফেরার মতো অবস্থা কি আছে?
যুদ্ধবিগ্রহের কারণে দশকের পর দশক ধরে আফগানিস্তানের এসব নাগরিক পাকিস্তানে আশ্রয় নিয়ে বসবাস করছেন। এদের অনেকেই পাকিস্তানে জন্মগ্রহণ করেছেন, সেখানে বিয়ে করেছেন, সন্তানসন্ততিও আছে। তাঁরাও পাকিস্তানে বেড়ে উঠেছেন। আফগানিস্তানে তাঁদের কখনোই যাওয়া হয়নি। তাঁরা বুঝতে পারছেন না, আফগানিস্তানে গিয়ে তাঁরা কী করবেন, কিংবা তাঁদের জন্য সেখানে কী অপেক্ষা করছে।
কিছু প্রদেশে, যেমন খাইবার পাখতুনখোয়ায়, স্থানীয় জনগণ আফগান শরণার্থীদের প্রতি সহানুভূতিশীল। তাদের সাংস্কৃতিক ও ভাষাগত মিল এবং পারিবারিক সম্পর্কের কারণে অনেক আফগান এই অঞ্চলে থেকে যেতে চান। অনেকেই বলছেন, তাঁদের মেয়েরা পাকিস্তানের স্কুলগুলোতে পড়ালেখা করছে। কিন্তু আফগানিস্তানে ফেরত পাঠানো হলে তাদের আর পড়াশোনা করতে দেওয়া হবে না। কারণ তালেবান সরকার নারীদের ওপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। নারীদের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা নিষিদ্ধ এবং চলাফেরার স্বাধীনতা সীমিত করেছে। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক সহায়তা হ্রাস পাওয়ায় আফগানিস্তানে খাদ্য, স্বাস্থ্যসেবাসহ মৌলিক চাহিদা পূরণের ক্ষেত্রে সংকট দেখা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের দাতা সংস্থাগুলোর কার্যক্রম বন্ধ হওয়ায় লাখ লাখ মানুষ অনাহার ও রোগের ঝুঁকিতে পড়েছে।
পাকিস্তানের এই পদক্ষেপে আফগানিস্তানের সঙ্গে তাদের সম্পর্কে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। আফগান সরকারের পক্ষ থেকে পাকিস্তানের এই পদক্ষেপকে ‘একতরফা’ ও ‘অমানবিক’ হিসেবে নিন্দা করা হয়েছে। জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা এই বহিষ্কারের পদক্ষেপে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা পাকিস্তানকে আফগান নাগরিকদের ফেরত পাঠানো থেকে বিরত থাকতে এবং ‘নন-রিফাউলমেন্ট’ (অবৈধভাবে ফেরত পাঠানো নিষিদ্ধ) নীতি মেনে চলতে আহ্বান জানিয়েছেন। তাঁরা সতর্ক করেছেন যে আফগানিস্তানে ফেরত পাঠানো হলে শরণার্থীরা হয়রানি, নির্যাতন বা মৃত্যুর ঝুঁকিতে পড়তে পারে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো পাকিস্তানের এই পদক্ষেপকে ‘মৃত্যুদণ্ড’ হিসেবে বর্ণনা করেছে; বিশেষ করে নারীদের জন্য, যাঁরা তালেবানের শাসনে ফেরত গেলে নির্যাতনের শিকার হতে পারেন। পাকিস্তানের মানবাধিকার কমিশন (এইচআরসিপি) সতর্ক করেছে যে এই বহিষ্কার অভিযানটি একটি বৃহত্তর মানবিক সংকট সৃষ্টি করতে পারে।
তবে এটা পাকিস্তান সরকারের নতুন কোনো পদক্ষেপ নয়। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শরণার্থী বিতাড়নের এই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত প্রায় ৯ লাখ আফগান শরণার্থীকে বিতাড়ন করা হয়েছে।
এই পদক্ষেপের জন্য পাকিস্তান সরকার আফগান শরণার্থীদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ তুলেছে, বিশেষ করে তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) গোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পর্কিতদের বিরুদ্ধে। তারা দাবি করেছে যে আফগান শরণার্থীরা পাকিস্তানে সন্ত্রাসী হামলা ও আত্মঘাতী বোমা হামলার সঙ্গে জড়িত। নিরাপত্তার উদ্বেগ থেকে নতুন করে বিতাড়নের এই সিদ্ধান্ত।
দীর্ঘদিন ধরে ৪০-৫০ লাখ আফগান শরণার্থী পাকিস্তানে অবস্থান করছে, যা দেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থার ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে। তার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা কমে যাওয়ার পর পাকিস্তানে শরণার্থী ব্যবস্থাপনা কঠিন হয়ে পড়েছে। জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) ও আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) সহায়তা কমে যাওয়ায় শরণার্থীদের প্রয়োজনীয় সেবা দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। কারণ পাকিস্তান নিজেই এখন অর্থনৈতিক সমস্যায় জর্জরিত।
যদিও দশম শতাব্দীতে গজনবিদের সময় থেকেই আফগানরা পাকিস্তানে আশ্রয় নিতে শুরু করে। কিন্তু ১৯৭৯ সালে অভিবাসনের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য সময়কাল শুরু হয়। আফগানিস্তান সোভিয়েত বাহিনীর দখলে যাওয়ার পর থেকেই অনেক আফগান নাগরিক দেশ ছেড়ে পালাতে শুরু করে। সোভিয়েত বাহিনীর সহিংসতা হাজার হাজার মানুষকে পাকিস্তানে পালিয়ে যেতে বাধ্য করে। আশির দশকজুড়ে প্রায় ৩০ লাখ আফগান শরণার্থী পাকিস্তানে এবং প্রায় ২০ লাখ ইরানে পালিয়ে যায়। উইকিপিডিয়ার তথ্য অনুসারে, ১৯৯০ সাল নাগাদ প্রায় ৪৫ লাখ আফগান শরণার্থী পাকিস্তানজুড়ে বসবাস করছিল। ইউএনএইচসিআরের সহায়তায় এবং প্রাথমিকভাবে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অর্থায়নে, পাকিস্তান দশকজুড়ে এই আফগান শরণার্থীদের গ্রহণ এবং তাদের প্রতিপালন করে।
১৯৮৮ সালের শেষের দিকে, খাইবার পাখতুনখোয়ায় আফগান-পাকিস্তান সীমান্তে ৩৪০টি শরণার্থী শিবিরে প্রায় ৩৩ লাখ আফগান শরণার্থীকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছিল। ওই বছরের নভেম্বরে নিউইয়র্ক টাইমসের রিপোর্টেও একই কথা বলা হয়।
একজন গবেষকের মতে, শরণার্থীদের মধ্যে কিছু ব্যক্তি ছিলেন যাঁরা রাজনৈতিকভাবে বিশিষ্ট ও ধনী পরিবার থেকে এসেছিলেন এবং যাঁদের আফগানিস্তানের বাইরে ব্যক্তিগত এবং ব্যবসায়িক সম্পদ ছিল। একটি ছোট দল এসেছিল যাদের এমন সম্পদ ছিল, যা তারা তাদের সঙ্গে আনতে পেরেছিল, যেমন ট্রাক, গাড়ি এবং সীমিত তহবিল এবং তারা পাকিস্তানে তুলনামূলক ভালো করেছে—নতুন সমাজে একীভূত হয়েছে এবং ব্যবসা-বাণিজ্যে সফলতা লাভ করেছে। এ ছাড়া ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার ও শিক্ষকতার পেশায় যুক্ত ব্যক্তিরা এসেছিলেন। আবার অনেকে এসেছিলেন গৃহস্থালির জিনিসপত্র, ভেড়া, গবাদিপশু এবং চমরি গাইয়ের পাল নিয়ে। তবে শরণার্থীদের প্রায় ৬০ শতাংশ এসেছিল খালি হাতে এবং তারা মূলত পাকিস্তান ও আন্তর্জাতিক সাহায্যের ওপর নির্ভরশীল।
এখন আফগান শরণার্থীদের পাকিস্তানে বৈধভাবে অবস্থান নিশ্চিত করতে হলে তাদের নথিপত্র হালনাগাদ, স্থানীয় সম্প্রদায়ের সহানুভূতি, আন্তর্জাতিক সহায়তা এবং মানবাধিকার সংস্থার সক্রিয় ভূমিকা প্রয়োজন। এই সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে শরণার্থীদের সুরক্ষা ও অধিকার নিশ্চিত করা সম্ভব হতে পারে। যদিও পুরো বিষয়টা নির্ভর করছে পাকিস্তানের সদিচ্ছার ওপর।
তবে আফগান শরণার্থী বিতাড়নের মধ্য দিয়ে পাকিস্তান আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও আফগানিস্তানের তালেবান সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে চাচ্ছে। এর মূল উদ্দেশ্য হলো আন্তর্জাতিক সহায়তা লাভ করা। অন্যদিকে তালেবান সরকারের কাছে এই বার্তা দেওয়া যে বেশি বিরোধে জড়ালে তোমার বিপুল লোকজনকে ফেরত পাঠাব, যাদের বোঝা তোমাদের টানতে হবে। এই দুই খেলায় পাকিস্তান কতটা সফল হবে বলা কঠিন। তবে প্রায় চার দশক ধরে পাকিস্তানে বাস করা আফগান শরণার্থীরা যে বলির পাঁঠা হতে চলেছে সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।
পাকিস্তান সে দেশে বসবাস করা আফগান শরণার্থীদের ব্যাপকভাবে বহিষ্কার করতে শুরু করেছে। চলতি এপ্রিলের মধ্যে ৮০ হাজার শরণার্থীকে ফেরত পাঠানোর লক্ষ্য রয়েছে পাকিস্তান সরকারের। বলা যায়, এই সিদ্ধান্ত আফগান শরণার্থীদের কাছে বজ্রাঘাতের মতো হয়ে এসেছে। কোথায় যাবে তারা? তালেবানশাসিত আফগানিস্তানে ফেরার মতো অবস্থা কি আছে?
যুদ্ধবিগ্রহের কারণে দশকের পর দশক ধরে আফগানিস্তানের এসব নাগরিক পাকিস্তানে আশ্রয় নিয়ে বসবাস করছেন। এদের অনেকেই পাকিস্তানে জন্মগ্রহণ করেছেন, সেখানে বিয়ে করেছেন, সন্তানসন্ততিও আছে। তাঁরাও পাকিস্তানে বেড়ে উঠেছেন। আফগানিস্তানে তাঁদের কখনোই যাওয়া হয়নি। তাঁরা বুঝতে পারছেন না, আফগানিস্তানে গিয়ে তাঁরা কী করবেন, কিংবা তাঁদের জন্য সেখানে কী অপেক্ষা করছে।
কিছু প্রদেশে, যেমন খাইবার পাখতুনখোয়ায়, স্থানীয় জনগণ আফগান শরণার্থীদের প্রতি সহানুভূতিশীল। তাদের সাংস্কৃতিক ও ভাষাগত মিল এবং পারিবারিক সম্পর্কের কারণে অনেক আফগান এই অঞ্চলে থেকে যেতে চান। অনেকেই বলছেন, তাঁদের মেয়েরা পাকিস্তানের স্কুলগুলোতে পড়ালেখা করছে। কিন্তু আফগানিস্তানে ফেরত পাঠানো হলে তাদের আর পড়াশোনা করতে দেওয়া হবে না। কারণ তালেবান সরকার নারীদের ওপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। নারীদের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা নিষিদ্ধ এবং চলাফেরার স্বাধীনতা সীমিত করেছে। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক সহায়তা হ্রাস পাওয়ায় আফগানিস্তানে খাদ্য, স্বাস্থ্যসেবাসহ মৌলিক চাহিদা পূরণের ক্ষেত্রে সংকট দেখা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের দাতা সংস্থাগুলোর কার্যক্রম বন্ধ হওয়ায় লাখ লাখ মানুষ অনাহার ও রোগের ঝুঁকিতে পড়েছে।
পাকিস্তানের এই পদক্ষেপে আফগানিস্তানের সঙ্গে তাদের সম্পর্কে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। আফগান সরকারের পক্ষ থেকে পাকিস্তানের এই পদক্ষেপকে ‘একতরফা’ ও ‘অমানবিক’ হিসেবে নিন্দা করা হয়েছে। জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা এই বহিষ্কারের পদক্ষেপে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা পাকিস্তানকে আফগান নাগরিকদের ফেরত পাঠানো থেকে বিরত থাকতে এবং ‘নন-রিফাউলমেন্ট’ (অবৈধভাবে ফেরত পাঠানো নিষিদ্ধ) নীতি মেনে চলতে আহ্বান জানিয়েছেন। তাঁরা সতর্ক করেছেন যে আফগানিস্তানে ফেরত পাঠানো হলে শরণার্থীরা হয়রানি, নির্যাতন বা মৃত্যুর ঝুঁকিতে পড়তে পারে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো পাকিস্তানের এই পদক্ষেপকে ‘মৃত্যুদণ্ড’ হিসেবে বর্ণনা করেছে; বিশেষ করে নারীদের জন্য, যাঁরা তালেবানের শাসনে ফেরত গেলে নির্যাতনের শিকার হতে পারেন। পাকিস্তানের মানবাধিকার কমিশন (এইচআরসিপি) সতর্ক করেছে যে এই বহিষ্কার অভিযানটি একটি বৃহত্তর মানবিক সংকট সৃষ্টি করতে পারে।
তবে এটা পাকিস্তান সরকারের নতুন কোনো পদক্ষেপ নয়। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শরণার্থী বিতাড়নের এই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত প্রায় ৯ লাখ আফগান শরণার্থীকে বিতাড়ন করা হয়েছে।
এই পদক্ষেপের জন্য পাকিস্তান সরকার আফগান শরণার্থীদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ তুলেছে, বিশেষ করে তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) গোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পর্কিতদের বিরুদ্ধে। তারা দাবি করেছে যে আফগান শরণার্থীরা পাকিস্তানে সন্ত্রাসী হামলা ও আত্মঘাতী বোমা হামলার সঙ্গে জড়িত। নিরাপত্তার উদ্বেগ থেকে নতুন করে বিতাড়নের এই সিদ্ধান্ত।
দীর্ঘদিন ধরে ৪০-৫০ লাখ আফগান শরণার্থী পাকিস্তানে অবস্থান করছে, যা দেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থার ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে। তার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা কমে যাওয়ার পর পাকিস্তানে শরণার্থী ব্যবস্থাপনা কঠিন হয়ে পড়েছে। জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) ও আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) সহায়তা কমে যাওয়ায় শরণার্থীদের প্রয়োজনীয় সেবা দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। কারণ পাকিস্তান নিজেই এখন অর্থনৈতিক সমস্যায় জর্জরিত।
যদিও দশম শতাব্দীতে গজনবিদের সময় থেকেই আফগানরা পাকিস্তানে আশ্রয় নিতে শুরু করে। কিন্তু ১৯৭৯ সালে অভিবাসনের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য সময়কাল শুরু হয়। আফগানিস্তান সোভিয়েত বাহিনীর দখলে যাওয়ার পর থেকেই অনেক আফগান নাগরিক দেশ ছেড়ে পালাতে শুরু করে। সোভিয়েত বাহিনীর সহিংসতা হাজার হাজার মানুষকে পাকিস্তানে পালিয়ে যেতে বাধ্য করে। আশির দশকজুড়ে প্রায় ৩০ লাখ আফগান শরণার্থী পাকিস্তানে এবং প্রায় ২০ লাখ ইরানে পালিয়ে যায়। উইকিপিডিয়ার তথ্য অনুসারে, ১৯৯০ সাল নাগাদ প্রায় ৪৫ লাখ আফগান শরণার্থী পাকিস্তানজুড়ে বসবাস করছিল। ইউএনএইচসিআরের সহায়তায় এবং প্রাথমিকভাবে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অর্থায়নে, পাকিস্তান দশকজুড়ে এই আফগান শরণার্থীদের গ্রহণ এবং তাদের প্রতিপালন করে।
১৯৮৮ সালের শেষের দিকে, খাইবার পাখতুনখোয়ায় আফগান-পাকিস্তান সীমান্তে ৩৪০টি শরণার্থী শিবিরে প্রায় ৩৩ লাখ আফগান শরণার্থীকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছিল। ওই বছরের নভেম্বরে নিউইয়র্ক টাইমসের রিপোর্টেও একই কথা বলা হয়।
একজন গবেষকের মতে, শরণার্থীদের মধ্যে কিছু ব্যক্তি ছিলেন যাঁরা রাজনৈতিকভাবে বিশিষ্ট ও ধনী পরিবার থেকে এসেছিলেন এবং যাঁদের আফগানিস্তানের বাইরে ব্যক্তিগত এবং ব্যবসায়িক সম্পদ ছিল। একটি ছোট দল এসেছিল যাদের এমন সম্পদ ছিল, যা তারা তাদের সঙ্গে আনতে পেরেছিল, যেমন ট্রাক, গাড়ি এবং সীমিত তহবিল এবং তারা পাকিস্তানে তুলনামূলক ভালো করেছে—নতুন সমাজে একীভূত হয়েছে এবং ব্যবসা-বাণিজ্যে সফলতা লাভ করেছে। এ ছাড়া ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার ও শিক্ষকতার পেশায় যুক্ত ব্যক্তিরা এসেছিলেন। আবার অনেকে এসেছিলেন গৃহস্থালির জিনিসপত্র, ভেড়া, গবাদিপশু এবং চমরি গাইয়ের পাল নিয়ে। তবে শরণার্থীদের প্রায় ৬০ শতাংশ এসেছিল খালি হাতে এবং তারা মূলত পাকিস্তান ও আন্তর্জাতিক সাহায্যের ওপর নির্ভরশীল।
এখন আফগান শরণার্থীদের পাকিস্তানে বৈধভাবে অবস্থান নিশ্চিত করতে হলে তাদের নথিপত্র হালনাগাদ, স্থানীয় সম্প্রদায়ের সহানুভূতি, আন্তর্জাতিক সহায়তা এবং মানবাধিকার সংস্থার সক্রিয় ভূমিকা প্রয়োজন। এই সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে শরণার্থীদের সুরক্ষা ও অধিকার নিশ্চিত করা সম্ভব হতে পারে। যদিও পুরো বিষয়টা নির্ভর করছে পাকিস্তানের সদিচ্ছার ওপর।
তবে আফগান শরণার্থী বিতাড়নের মধ্য দিয়ে পাকিস্তান আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও আফগানিস্তানের তালেবান সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে চাচ্ছে। এর মূল উদ্দেশ্য হলো আন্তর্জাতিক সহায়তা লাভ করা। অন্যদিকে তালেবান সরকারের কাছে এই বার্তা দেওয়া যে বেশি বিরোধে জড়ালে তোমার বিপুল লোকজনকে ফেরত পাঠাব, যাদের বোঝা তোমাদের টানতে হবে। এই দুই খেলায় পাকিস্তান কতটা সফল হবে বলা কঠিন। তবে প্রায় চার দশক ধরে পাকিস্তানে বাস করা আফগান শরণার্থীরা যে বলির পাঁঠা হতে চলেছে সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।
বাংলাদেশে মৌলবাদ আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। এক দিক দিয়ে এটা অত্যন্ত অপ্রত্যাশিত। কেননা বাংলাদেশের অভ্যুদয় ধর্মভিত্তিক জাতীয়তাবাদকে প্রত্যাখ্যান ও পরাভূত করে। কিন্তু পরাভূত শক্তি আবার ফিরে এসেছে। তার পরাজয়টা কেবল যে সশস্ত্র যুদ্ধক্ষেত্রে ঘটেছিল তা নয়, ঘটেছিল আদর্শিকভাবেও। তাহলে কেন তার পুনরুত্থান?
৩ ঘণ্টা আগেআমরা যুদ্ধবিরোধী। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বা যেকোনো দেশে যুদ্ধ মানেই মানুষের বিপদ। খেয়াল করবেন, বিশ্ব বদলে গেছে। আগে দুনিয়ার যেকোনো জায়গায় একটা বোমা ফাটলেই মানুষ নড়েচড়ে বসত। খবর হয়ে যেত সারা পৃথিবীতে। এখন আর তেমন হয় না। গাজায় আক্রান্ত সভ্যতা ও মানুষের জীবন। যারা মারছে তারা বেপরোয়া। অথচ মানুষের মনে আফসোস
৩ ঘণ্টা আগেলালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলায় চলবলা ইউনিয়নের শিয়ালখোওয়া এলাকার শিয়ালখোওয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং শিয়ালখোওয়া উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজ মাঠে সপ্তাহে প্রতি শনি ও বুধবার হাট বসে। এ ছাড়া বাকি পাঁচ দিনই প্রতিষ্ঠানটির মাঠে বসে দৈনিক বাজার। হাটের কার্যক্রম শুরু হয় সকাল থেকে। সারা দিন চলে বেচাকেনা। এ মাঠে আর
৩ ঘণ্টা আগেনারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের সুপারিশমালার ভিত্তিতে তৈরি প্রতিবেদনটি সমাজে নারী-পুরুষ সমতার বাস্তবায়নে একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ বলে বিবেচিত হচ্ছে। কমিশন যে সুপারিশগুলো দিয়েছে, সেগুলোর মধ্যে কিছু সুস্পষ্টভাবে নারীর অধিকারে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম, আবার কিছু সুপারিশ কাঠামোগত ও প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাসের
১৯ ঘণ্টা আগে