আলতাফ পারভেজ লেখক ও গবেষক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনে স্নাতকোত্তর। ডাকসুর নির্বাচিত সদস্য ছিলেন। মুজিব বাহিনী থেকে গণবাহিনী: ইতিহাসের পুনঃপাঠ, বার্মা: জাতিগত সংঘাতের সাত দশক, শ্রীলঙ্কার তামিল ইলম, গ্রামসি ও তাঁর রাষ্ট্রচিন্তা প্রভৃতি তাঁর গুরুত্বপূর্ণ বই। দেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার মাসুদ রানা।
মাসুদ রানা
দেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আপনার পর্যবেক্ষণ শুনতে চাই?
ছাত্র-শ্রমিক-সৈনিক-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের প্রায় আট মাস হতে চলল। সময়ের হিসাবে এটা বেশি নয়। তবে ইতিমধ্যে পেরিয়ে আসা সময়ের কিছু মূল্যায়ন করাই যায়।
প্রথম যেটা মনে হয়, গত আগস্টে মানুষের মাঝে যে বিপুল প্রত্যাশা ছিল, সেটা এখন অনেকটা থিতিয়ে গেছে। কিছু গোষ্ঠী অভ্যুত্থানের মালিকানা থেকে গণমানুষের অংশীদারত্ব মুছে দিতে চাইছে। তারা অভ্যুত্থানের কর্তৃত্ব আত্মসাৎ করতে তৎপর হয়েছে এবং তাতে কিছুটা সফলও তারা। জাতীয় পর্যায়ের প্রচারমাধ্যমগুলোও ওই গোষ্ঠীর হয়ে বেশ সক্রিয় ভূমিকা রেখেছে। এ রকম গোষ্ঠীর সঙ্গে ব্যবসায়ীদের একটা মেলবন্ধন ঘটেছে। এ রকম হওয়ার পরও মানুষ বিক্ষুব্ধ হতো না—যদি অভ্যুত্থানের সরকার শ্রমিক, কৃষক ও শহুরে দরিদ্রদের অবস্থার পরিবর্তনে মৌলিক কিছু পদক্ষেপ নিতে পারত। সে রকম কিছু মোটাদাগে এখনো দেখা যায়নি।
অভ্যুত্থানকে আমরা বলেছিলাম বৈষম্যবিরোধী। সমাজে বৈষম্যের শিকার প্রধান গোষ্ঠীগুলো এখনো বৈষম্য নামের দানবের হাত থেকে তেমন রেহাই পায়নি। বৈষম্যের কাঠামোটা বেশ সবল ও সচলই আছে, গ্রাম-শহর মিলে।
আপনি বলতে চাইছেন বহুল আলোচিত সংস্কার কিছু হচ্ছে না?
সংস্কার বিষয়ে কয়েকটি কমিশন হয়েছে। কমিশনগুলো প্রায় সবাই তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। কিন্তু মৌলিক ধাঁচের সংস্কারের জন্য যে জাতীয় ঐকমত্য দরকার, সেটা তো এখন আর নেই। সেটা ভেঙে দেওয়া হয়েছে এবং ভেঙে ফেলা হয়েছে।
সংস্কার এমন একটা প্রস্তাব—যার বিরুদ্ধে এতদিনকার রাষ্ট্রীয় সুবিধাপ্রাপ্ত গোষ্ঠী বাধা দেবে। ফলে অভ্যুত্থান ও পরিবর্তনবাদী শক্তিগুলো একজোট না থাকলে সংস্কার করতে পারবে না। করলেও সেটা টিকিয়ে রাখতে পারবে না। কিন্তু অভ্যুত্থানের পরপরই দক্ষিণপন্থীরা আন্দোলনের ভরকেন্দ্র থেকে রূপান্তরবাদী র্যাডিক্যালদের বড় অংশকে বিচ্ছিন্ন করে নানা ধরনের ট্যাগ দিয়ে তাড়িয়েছে। তারপর নিজেরা অভ্যুত্থানের এজেন্সি দাবি করে চারদিকে মব তৈরি করেছে এবং সমাজে একটা দাপুটে ভাব নিয়েছে মূলত প্রশাসনকে নিজেদের প্রভাবে রাখার জন্য। সে কাজে তারা সফলও হয়েছে। কিন্তু তার নেতিবাচক পার্শ্বফল হিসেবে সংস্কার কর্মসূচি নিয়ে এগোনো এখন কঠিন হবে। ঔপনিবেশিক প্রশাসনের কায়েমি স্বার্থগোষ্ঠী আন্দোলনকারীদের বিভক্তির সুযোগ নেবেই।
নির্বাচন নিয়ে আলাপ হচ্ছে চারদিকে। কেউ কেউ অনিশ্চয়তাও দেখছেন। আপনি কি মনে করছেন?
দেশের মানুষের ন্যূনতম চাওয়া এখন নির্বাচন। নির্বাচন হলে যে সাধারণ মানুষের বড় কোনো পরিবর্তন হয়ে যাবে, এমন নয়। কিন্তু মানুষ চায় দেশ অন্তত দ্রুত নির্বাচনী সংস্কৃতিতে হাঁটুক। মানুষের এই চাওয়াকে সম্মান জানিয়ে দ্রুত জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচন হওয়া দরকার। স্থানীয় নির্বাচন না হওয়ায় উন্নয়নকাজ বিঘ্নিত হচ্ছে। প্রান্তিক মানুষ রাজনৈতিকভাবে এতিম হয়ে আছে। আর জাতীয় নির্বাচন এবং জাতীয় নির্বাচিত নেতৃত্ব না থাকায় দেশ কিছুটা নিরাপত্তাহীনতায় আছে। কিন্তু নির্বাচন আদৌ শিগগির হবে কি না, এই নিয়ে সমাজে বড় ধরনের অনিশ্চয়তাও আছে। সবাই চাইছে ডিসেম্বরের মধ্যে অন্তর্ভুক্তিমূলক একটা নির্বাচন হয়ে যাক। কিন্তু সেই আকাঙ্ক্ষার বিপরীতে দাঁড়িয়ে অনেক শক্তি এটাকে পেছাতে চাইছে। কেউ কেউ আগামী বছর পর্যন্ত নির্বাচনকে টেনে নিতে চাইছে।
নির্বাচন পেছানোর অজুহাত ও যুক্তি হিসেবে সংস্কারকে সামনে আনা হচ্ছে। এটা বেশ বিস্ময়কর একটা প্রস্তাব। কারণ, ছোটখাটো প্রশাসনিক, অর্থনৈতিক, আইনগত সংস্কারের জন্য নির্বাচন পেছানোর কোনো প্রয়োজন নেই। এখনই সেসব শুরু হতে পারে। গত আট মাসে কেন এ রকম সংস্কার হয়নি, সেটাই বরং প্রশ্ন জাগে?
শ্রমিকদের জন্য জাতীয় মজুরি, অর্থনীতিতে প্রগতিশীল কর ব্যবস্থা, প্রশাসনকে জনমুখী করা—এ রকম সব বিষয়ে কি কোনো রাজনৈতিক দল আপত্তি করবে এখন? আমার তো তা মনে হয় না। সাংবিধানিক কিছু সংস্কারে রাজনৈতিক মতভিন্নতা থাকবে। সেসব বিষয়ে হয় গণপরিষদ নির্বাচন বা জাতীয় নির্বাচন লাগবে। সেটাও পেছানোর কোনো প্রয়োজন নেই। ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন দেওয়া সমীচীন হবে।
নির্বাচন যত দেরিতে হবে, সমাজে অস্থিরতা ও নৈরাজ্য তত বাড়বে। ইতিমধ্যে তার আলামত দেখা যাচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার চাপ কেবল সেনাবাহিনীকে বইতে দিলে তো হবে না। সামাজিক বাস্তবতা ও প্রত্যাশা আমলে নেওয়া বেসামরিক কর্তৃপক্ষের জন্যও জরুরি বৈকি।
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা না-করা নিয়ে যে দ্বন্দ্ব, তা বড় কোনো রাজনৈতিক সংঘাতের দিকে দেশকে নিয়ে যেতে পারে কি?
এটা এ সময়ের সবচেয়ে আলোচিত একটি বিষয়। গত ১৫ বছর এবং চব্বিশে আন্দোলনকালে আওয়ামী লীগ দল হিসেবে এবং সরকার হিসেবে যে ভূমিকা রেখেছে, তাতে এ প্রসঙ্গ ওঠা স্বাভাবিক। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত কে নেবে? কার সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার?
এ মুহূর্তে সংসদ নেই। তাহলে বাকি বিকল্প হলো আন্দোলনের শক্তিগুলোকে বসে যৌথভাবে এই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তাদের একসঙ্গে বসে
এই বিষয়ে একটা মীমাংসায় আসতে হবে। রাজপথে, সংবাদপত্রে সাক্ষাৎকারে, ফেসবুকের পোস্টের চাপে এ রকম বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্তে আসার সুযোগ নেই। কারণ, সে রকম সিদ্ধান্ত টেকসই হয় না। যদি একসঙ্গে বৈঠকে বসে রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তিগুলো এ বিষয়ে সিদ্ধান্তে আসতে না পারে, তাহলে গণভোট হতে পারে। এ রকম একটা বিষয়ে আন্দোলনের শক্তিগুলোর মাঝে মতভিন্নতাকে বৈরিতার পর্যায়ে নেওয়া ঠিক নয়। কিন্তু সেটা শুরু হয়েছে।
নতুন জন্ম নেওয়া রাজনৈতিক দল ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’র (এনসিপি) মধ্যে যেভাবে দ্বন্দ্ব-বিরোধ দেখা যাচ্ছে, তাতে এই দলের ভবিষ্যৎ নিয়ে কতটা আশাবাদী হওয়া যায়।
নতুন রাজনৈতিক দল গঠন সব সময় একটা শুভ ঘটনা। এতে রাজনীতির ময়দানে প্রতিযোগিতা বাড়বে। তাতে বিএনপি, আওয়ামী লীগ, জামায়াত, জাপার মতো দলগুলো একধরনের চ্যালেঞ্জে থাকবে। তবে ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি, গণ-অভ্যুত্থানের ছাত্র নেতৃত্বের মন্ত্রী হওয়া ভুল সিদ্ধান্ত ছিল এবং দল গঠনও ভুল সিদ্ধান্ত। এ নিয়ে হয়তো অন্যদের অন্য রকম মত থাকবে। কিন্তু আমি মনে করি, তাদের উচিত ছিল এবং দরকারও ছিল—রাজনৈতিক চাপ প্রয়োগকারী সামাজিক শক্তি হিসেবে আরও অনেক দিন কাজ করে যাওয়া।
গণ-অভ্যুত্থানের ভেতর দিয়ে সমাজে যে রাজনৈতিক-প্রশাসনিক সংস্কারের আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে, তা রাজনীতিবিদদের দিয়ে করিয়ে নেওয়ার জন্য, অর্থাৎ গণ-অভ্যুত্থানকে একটা বৈপ্লবিক পরিবর্তনে রূপান্তরের জন্য বিপুল জনমত তৈরির কাজটি তাদের মাঠে-ময়দানে থেকে করার দরকার ছিল। তার জন্য তারা জাতীয় ঐক্যের প্রতীক হয়ে থাকলে ভালো হতো। এখন অভ্যুত্থানের ভেতর থেকে একটা গোষ্ঠী একটা দল গঠন করেছে। জামায়াত-শিবিরপন্থীরা শুনছি আরেকটা দল গঠন করবে। অনুমান করি, বামপন্থী ছাত্র-শ্রমিকেরাও হয়তো আরেকটা দল গঠন করবে। তার ফল হবে এদেরই পারস্পরিক প্রতিযোগিতা ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা। পাশাপাশি শুরু হবে নানান বিতর্ক ও সংঘাত। ইতিমধ্যে সেটা শুরুও হয়ে গেছে।
বর্তমান প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক ব্যবস্থায় খুব র্যাডিক্যাল কেউ মন্ত্রী হয়ে আমূল কিছু যে পরিবর্তন ঘটাতে পারবে না, সেটা নিশ্চয়ই আন্দোলনের শক্তিগুলো ইতিমধ্যে টের পেয়েছে হাতে-কলমে। আবার আন্দোলনকারী পুরো জনগোষ্ঠীকে একসঙ্গে ধরে রাখার মডেল বাদ দিয়ে তার একাংশ নিয়ে দল গঠন করে, নির্বাচন করে কিছু আসন পেয়ে কী হবে? এই দুটো কাজ বাদ দিয়ে মাঠে থেকে আগস্টের শক্তি হিসেবে সবাইকে এক জায়গায় রেখে সংস্কারের অ্যাজেন্ডাগুলোর জন্য প্রচণ্ড চাপ তৈরির কৌশল বেশি কার্যকর হতো বলে মনে করি। কিন্তু সেই মুহূর্তটা বোধ হয় হারিয়ে গেল।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস তাঁর সুনাম অক্ষুণ্ন রেখে ক্ষমতা থেকে বিদায় নিতে পারবেন কি না?
কোনো এক ব্যক্তির সুনামের চেয়ে জরুরি বিষয় হলো গণ-অভ্যুত্থানের সরকার, যাকে আমরা বলছি অন্তর্বর্তী সরকার—তারা সুনামের সঙ্গে তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করে বিদায় নিতে পারবে কি না, পারছে কি না?
একজন মুহাম্মদ ইউনূসের চেয়ে চব্বিশের ছাত্র-শ্রমিক-জনতার অভ্যুত্থানের ভবিষ্যতের প্রশ্নটি এখানে গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রশ্নের উত্তর তিনটি বিষয়ের ওপর নির্ভর করছে। প্রথমত, গত ১৫ বছরের অত্যাচার-নির্যাতন-দুর্নীতির বিচার। এই বিচারটা আবার আক্রোশ মেটানোর কায়দায় যেনতেনভাবে না হওয়া উচিত হবে। বিচার হতে হবে সঠিক তদন্ত ও বিশ্বাসযোগ্য স্বচ্ছতায়। এক হাজার মানুষ যে আন্দোলনকালে মারা গেছেন, শহীদ হয়েছেন, সেটা তো সত্য। এই মানুষগুলোর হত্যার তদন্ত ও বিচার দরকার। এটা বিচারের আন্তর্জাতিক মানদণ্ড মেনে হওয়াই ভালো। এর ফলে আগামী দিনে এ রকম গণহত্যা বন্ধ হতে পারে। কাজটি তাড়াহুড়ো যেমন কাম্য নয়, তেমনি অতি বিলম্বও কাম্য নয়।
দ্বিতীয় বিষয় হলো, গণ-অভ্যুত্থানের ভেতর দিয়ে সমাজে পরিবর্তন ও সংস্কারের যে আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে, তার অন্তত কিছু অংশের বাস্তবায়ন। এ বিষয়ে ইতিমধ্যে যা ঘটেছে তাতে অবশ্য আশাবাদী হওয়া যাচ্ছে না।
তৃতীয় বিষয় হলো, একটা অবাধ, সুষ্ঠু, অন্তর্ভুক্তিমূলক জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচন। এই তিনটি বিষয় যদি বর্তমান সরকার করতে পারে, তাহলে সেই সরকারের সব উপদেষ্টা, প্রধান উপদেষ্টাসহ সবাই জাতীয় সম্মানের নিশ্চয়তাসহ সুন্দরভাবে বিদায় নিতে পারবেন। আর সেটা না ঘটলে, অপ্রয়োজনীয়ভাবে তার বিলম্ব ঘটলে—সবচেয়ে বড় ক্ষতি যেটা হবে, দেশের মানুষের মাঝে ভবিষ্যৎ নিয়ে একটা চরম হতাশা তৈরি হবে।
দেখুন, এ দেশটা প্রায় ২০ কোটি মানুষের ভারে ভারাক্রান্ত। ৩-৪ কোটি মানুষ দরিদ্র এবং অতিদরিদ্র। পরিবেশের দিক থেকে চরম ঝুঁকিতে থাকা একটা জনপদ এটা। আমাদের জন্য পরিবর্তনের কাজে বেশি সময় হাতে নেই। ইতিহাসের শেষ সুযোগ হারাতে পারি আমরা এবারও।
এসব বিষয়ে আজকের পত্রিকার পাঠকদের জন্য কিছু বলার আছে কি আপনার?
নাগরিক হিসেবে আমরা যেন এই গণ-অভ্যুত্থানকে সফল করতে আরও সচেতন হই, সেই আহ্বান রাখতে চাই। আমরা যেন ধর্ম-বর্ণ-লিঙ্গ-জাতিগত পরিচয়ের ঊর্ধ্বে উঠে বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নিজেদের সর্বাগ্রে চিন্তা করি এবং দেশটার গণতান্ত্রিক বিকাশে নিজেদের ভূমিকা রাখি, সেটা খুব জরুরি। কোনো একটা মহল অপর মহলের ওপর কোনো ধরনের একরোখা শ্রেষ্ঠত্ববাদী আচরণ করলে এ দেশ এগোতে পারবে না। হয়তো টিকবেও না।
সংবাদপত্র এবং অন্যান্য মিডিয়ায় আজকাল পপুলিজমের যে উৎপাত চলছে, তাতে পাঠক হিসেবে ভেসে গেলে মুশকিল। পাঠক, শ্রোতা, দর্শককে নির্মম সত্যকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত, জনপ্রিয় কথাবার্তাকে নয়।
সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
আপনাকেও ধন্যবাদ।
দেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আপনার পর্যবেক্ষণ শুনতে চাই?
ছাত্র-শ্রমিক-সৈনিক-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের প্রায় আট মাস হতে চলল। সময়ের হিসাবে এটা বেশি নয়। তবে ইতিমধ্যে পেরিয়ে আসা সময়ের কিছু মূল্যায়ন করাই যায়।
প্রথম যেটা মনে হয়, গত আগস্টে মানুষের মাঝে যে বিপুল প্রত্যাশা ছিল, সেটা এখন অনেকটা থিতিয়ে গেছে। কিছু গোষ্ঠী অভ্যুত্থানের মালিকানা থেকে গণমানুষের অংশীদারত্ব মুছে দিতে চাইছে। তারা অভ্যুত্থানের কর্তৃত্ব আত্মসাৎ করতে তৎপর হয়েছে এবং তাতে কিছুটা সফলও তারা। জাতীয় পর্যায়ের প্রচারমাধ্যমগুলোও ওই গোষ্ঠীর হয়ে বেশ সক্রিয় ভূমিকা রেখেছে। এ রকম গোষ্ঠীর সঙ্গে ব্যবসায়ীদের একটা মেলবন্ধন ঘটেছে। এ রকম হওয়ার পরও মানুষ বিক্ষুব্ধ হতো না—যদি অভ্যুত্থানের সরকার শ্রমিক, কৃষক ও শহুরে দরিদ্রদের অবস্থার পরিবর্তনে মৌলিক কিছু পদক্ষেপ নিতে পারত। সে রকম কিছু মোটাদাগে এখনো দেখা যায়নি।
অভ্যুত্থানকে আমরা বলেছিলাম বৈষম্যবিরোধী। সমাজে বৈষম্যের শিকার প্রধান গোষ্ঠীগুলো এখনো বৈষম্য নামের দানবের হাত থেকে তেমন রেহাই পায়নি। বৈষম্যের কাঠামোটা বেশ সবল ও সচলই আছে, গ্রাম-শহর মিলে।
আপনি বলতে চাইছেন বহুল আলোচিত সংস্কার কিছু হচ্ছে না?
সংস্কার বিষয়ে কয়েকটি কমিশন হয়েছে। কমিশনগুলো প্রায় সবাই তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। কিন্তু মৌলিক ধাঁচের সংস্কারের জন্য যে জাতীয় ঐকমত্য দরকার, সেটা তো এখন আর নেই। সেটা ভেঙে দেওয়া হয়েছে এবং ভেঙে ফেলা হয়েছে।
সংস্কার এমন একটা প্রস্তাব—যার বিরুদ্ধে এতদিনকার রাষ্ট্রীয় সুবিধাপ্রাপ্ত গোষ্ঠী বাধা দেবে। ফলে অভ্যুত্থান ও পরিবর্তনবাদী শক্তিগুলো একজোট না থাকলে সংস্কার করতে পারবে না। করলেও সেটা টিকিয়ে রাখতে পারবে না। কিন্তু অভ্যুত্থানের পরপরই দক্ষিণপন্থীরা আন্দোলনের ভরকেন্দ্র থেকে রূপান্তরবাদী র্যাডিক্যালদের বড় অংশকে বিচ্ছিন্ন করে নানা ধরনের ট্যাগ দিয়ে তাড়িয়েছে। তারপর নিজেরা অভ্যুত্থানের এজেন্সি দাবি করে চারদিকে মব তৈরি করেছে এবং সমাজে একটা দাপুটে ভাব নিয়েছে মূলত প্রশাসনকে নিজেদের প্রভাবে রাখার জন্য। সে কাজে তারা সফলও হয়েছে। কিন্তু তার নেতিবাচক পার্শ্বফল হিসেবে সংস্কার কর্মসূচি নিয়ে এগোনো এখন কঠিন হবে। ঔপনিবেশিক প্রশাসনের কায়েমি স্বার্থগোষ্ঠী আন্দোলনকারীদের বিভক্তির সুযোগ নেবেই।
নির্বাচন নিয়ে আলাপ হচ্ছে চারদিকে। কেউ কেউ অনিশ্চয়তাও দেখছেন। আপনি কি মনে করছেন?
দেশের মানুষের ন্যূনতম চাওয়া এখন নির্বাচন। নির্বাচন হলে যে সাধারণ মানুষের বড় কোনো পরিবর্তন হয়ে যাবে, এমন নয়। কিন্তু মানুষ চায় দেশ অন্তত দ্রুত নির্বাচনী সংস্কৃতিতে হাঁটুক। মানুষের এই চাওয়াকে সম্মান জানিয়ে দ্রুত জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচন হওয়া দরকার। স্থানীয় নির্বাচন না হওয়ায় উন্নয়নকাজ বিঘ্নিত হচ্ছে। প্রান্তিক মানুষ রাজনৈতিকভাবে এতিম হয়ে আছে। আর জাতীয় নির্বাচন এবং জাতীয় নির্বাচিত নেতৃত্ব না থাকায় দেশ কিছুটা নিরাপত্তাহীনতায় আছে। কিন্তু নির্বাচন আদৌ শিগগির হবে কি না, এই নিয়ে সমাজে বড় ধরনের অনিশ্চয়তাও আছে। সবাই চাইছে ডিসেম্বরের মধ্যে অন্তর্ভুক্তিমূলক একটা নির্বাচন হয়ে যাক। কিন্তু সেই আকাঙ্ক্ষার বিপরীতে দাঁড়িয়ে অনেক শক্তি এটাকে পেছাতে চাইছে। কেউ কেউ আগামী বছর পর্যন্ত নির্বাচনকে টেনে নিতে চাইছে।
নির্বাচন পেছানোর অজুহাত ও যুক্তি হিসেবে সংস্কারকে সামনে আনা হচ্ছে। এটা বেশ বিস্ময়কর একটা প্রস্তাব। কারণ, ছোটখাটো প্রশাসনিক, অর্থনৈতিক, আইনগত সংস্কারের জন্য নির্বাচন পেছানোর কোনো প্রয়োজন নেই। এখনই সেসব শুরু হতে পারে। গত আট মাসে কেন এ রকম সংস্কার হয়নি, সেটাই বরং প্রশ্ন জাগে?
শ্রমিকদের জন্য জাতীয় মজুরি, অর্থনীতিতে প্রগতিশীল কর ব্যবস্থা, প্রশাসনকে জনমুখী করা—এ রকম সব বিষয়ে কি কোনো রাজনৈতিক দল আপত্তি করবে এখন? আমার তো তা মনে হয় না। সাংবিধানিক কিছু সংস্কারে রাজনৈতিক মতভিন্নতা থাকবে। সেসব বিষয়ে হয় গণপরিষদ নির্বাচন বা জাতীয় নির্বাচন লাগবে। সেটাও পেছানোর কোনো প্রয়োজন নেই। ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন দেওয়া সমীচীন হবে।
নির্বাচন যত দেরিতে হবে, সমাজে অস্থিরতা ও নৈরাজ্য তত বাড়বে। ইতিমধ্যে তার আলামত দেখা যাচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার চাপ কেবল সেনাবাহিনীকে বইতে দিলে তো হবে না। সামাজিক বাস্তবতা ও প্রত্যাশা আমলে নেওয়া বেসামরিক কর্তৃপক্ষের জন্যও জরুরি বৈকি।
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা না-করা নিয়ে যে দ্বন্দ্ব, তা বড় কোনো রাজনৈতিক সংঘাতের দিকে দেশকে নিয়ে যেতে পারে কি?
এটা এ সময়ের সবচেয়ে আলোচিত একটি বিষয়। গত ১৫ বছর এবং চব্বিশে আন্দোলনকালে আওয়ামী লীগ দল হিসেবে এবং সরকার হিসেবে যে ভূমিকা রেখেছে, তাতে এ প্রসঙ্গ ওঠা স্বাভাবিক। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত কে নেবে? কার সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার?
এ মুহূর্তে সংসদ নেই। তাহলে বাকি বিকল্প হলো আন্দোলনের শক্তিগুলোকে বসে যৌথভাবে এই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তাদের একসঙ্গে বসে
এই বিষয়ে একটা মীমাংসায় আসতে হবে। রাজপথে, সংবাদপত্রে সাক্ষাৎকারে, ফেসবুকের পোস্টের চাপে এ রকম বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্তে আসার সুযোগ নেই। কারণ, সে রকম সিদ্ধান্ত টেকসই হয় না। যদি একসঙ্গে বৈঠকে বসে রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তিগুলো এ বিষয়ে সিদ্ধান্তে আসতে না পারে, তাহলে গণভোট হতে পারে। এ রকম একটা বিষয়ে আন্দোলনের শক্তিগুলোর মাঝে মতভিন্নতাকে বৈরিতার পর্যায়ে নেওয়া ঠিক নয়। কিন্তু সেটা শুরু হয়েছে।
নতুন জন্ম নেওয়া রাজনৈতিক দল ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’র (এনসিপি) মধ্যে যেভাবে দ্বন্দ্ব-বিরোধ দেখা যাচ্ছে, তাতে এই দলের ভবিষ্যৎ নিয়ে কতটা আশাবাদী হওয়া যায়।
নতুন রাজনৈতিক দল গঠন সব সময় একটা শুভ ঘটনা। এতে রাজনীতির ময়দানে প্রতিযোগিতা বাড়বে। তাতে বিএনপি, আওয়ামী লীগ, জামায়াত, জাপার মতো দলগুলো একধরনের চ্যালেঞ্জে থাকবে। তবে ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি, গণ-অভ্যুত্থানের ছাত্র নেতৃত্বের মন্ত্রী হওয়া ভুল সিদ্ধান্ত ছিল এবং দল গঠনও ভুল সিদ্ধান্ত। এ নিয়ে হয়তো অন্যদের অন্য রকম মত থাকবে। কিন্তু আমি মনে করি, তাদের উচিত ছিল এবং দরকারও ছিল—রাজনৈতিক চাপ প্রয়োগকারী সামাজিক শক্তি হিসেবে আরও অনেক দিন কাজ করে যাওয়া।
গণ-অভ্যুত্থানের ভেতর দিয়ে সমাজে যে রাজনৈতিক-প্রশাসনিক সংস্কারের আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে, তা রাজনীতিবিদদের দিয়ে করিয়ে নেওয়ার জন্য, অর্থাৎ গণ-অভ্যুত্থানকে একটা বৈপ্লবিক পরিবর্তনে রূপান্তরের জন্য বিপুল জনমত তৈরির কাজটি তাদের মাঠে-ময়দানে থেকে করার দরকার ছিল। তার জন্য তারা জাতীয় ঐক্যের প্রতীক হয়ে থাকলে ভালো হতো। এখন অভ্যুত্থানের ভেতর থেকে একটা গোষ্ঠী একটা দল গঠন করেছে। জামায়াত-শিবিরপন্থীরা শুনছি আরেকটা দল গঠন করবে। অনুমান করি, বামপন্থী ছাত্র-শ্রমিকেরাও হয়তো আরেকটা দল গঠন করবে। তার ফল হবে এদেরই পারস্পরিক প্রতিযোগিতা ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা। পাশাপাশি শুরু হবে নানান বিতর্ক ও সংঘাত। ইতিমধ্যে সেটা শুরুও হয়ে গেছে।
বর্তমান প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক ব্যবস্থায় খুব র্যাডিক্যাল কেউ মন্ত্রী হয়ে আমূল কিছু যে পরিবর্তন ঘটাতে পারবে না, সেটা নিশ্চয়ই আন্দোলনের শক্তিগুলো ইতিমধ্যে টের পেয়েছে হাতে-কলমে। আবার আন্দোলনকারী পুরো জনগোষ্ঠীকে একসঙ্গে ধরে রাখার মডেল বাদ দিয়ে তার একাংশ নিয়ে দল গঠন করে, নির্বাচন করে কিছু আসন পেয়ে কী হবে? এই দুটো কাজ বাদ দিয়ে মাঠে থেকে আগস্টের শক্তি হিসেবে সবাইকে এক জায়গায় রেখে সংস্কারের অ্যাজেন্ডাগুলোর জন্য প্রচণ্ড চাপ তৈরির কৌশল বেশি কার্যকর হতো বলে মনে করি। কিন্তু সেই মুহূর্তটা বোধ হয় হারিয়ে গেল।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস তাঁর সুনাম অক্ষুণ্ন রেখে ক্ষমতা থেকে বিদায় নিতে পারবেন কি না?
কোনো এক ব্যক্তির সুনামের চেয়ে জরুরি বিষয় হলো গণ-অভ্যুত্থানের সরকার, যাকে আমরা বলছি অন্তর্বর্তী সরকার—তারা সুনামের সঙ্গে তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করে বিদায় নিতে পারবে কি না, পারছে কি না?
একজন মুহাম্মদ ইউনূসের চেয়ে চব্বিশের ছাত্র-শ্রমিক-জনতার অভ্যুত্থানের ভবিষ্যতের প্রশ্নটি এখানে গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রশ্নের উত্তর তিনটি বিষয়ের ওপর নির্ভর করছে। প্রথমত, গত ১৫ বছরের অত্যাচার-নির্যাতন-দুর্নীতির বিচার। এই বিচারটা আবার আক্রোশ মেটানোর কায়দায় যেনতেনভাবে না হওয়া উচিত হবে। বিচার হতে হবে সঠিক তদন্ত ও বিশ্বাসযোগ্য স্বচ্ছতায়। এক হাজার মানুষ যে আন্দোলনকালে মারা গেছেন, শহীদ হয়েছেন, সেটা তো সত্য। এই মানুষগুলোর হত্যার তদন্ত ও বিচার দরকার। এটা বিচারের আন্তর্জাতিক মানদণ্ড মেনে হওয়াই ভালো। এর ফলে আগামী দিনে এ রকম গণহত্যা বন্ধ হতে পারে। কাজটি তাড়াহুড়ো যেমন কাম্য নয়, তেমনি অতি বিলম্বও কাম্য নয়।
দ্বিতীয় বিষয় হলো, গণ-অভ্যুত্থানের ভেতর দিয়ে সমাজে পরিবর্তন ও সংস্কারের যে আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে, তার অন্তত কিছু অংশের বাস্তবায়ন। এ বিষয়ে ইতিমধ্যে যা ঘটেছে তাতে অবশ্য আশাবাদী হওয়া যাচ্ছে না।
তৃতীয় বিষয় হলো, একটা অবাধ, সুষ্ঠু, অন্তর্ভুক্তিমূলক জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচন। এই তিনটি বিষয় যদি বর্তমান সরকার করতে পারে, তাহলে সেই সরকারের সব উপদেষ্টা, প্রধান উপদেষ্টাসহ সবাই জাতীয় সম্মানের নিশ্চয়তাসহ সুন্দরভাবে বিদায় নিতে পারবেন। আর সেটা না ঘটলে, অপ্রয়োজনীয়ভাবে তার বিলম্ব ঘটলে—সবচেয়ে বড় ক্ষতি যেটা হবে, দেশের মানুষের মাঝে ভবিষ্যৎ নিয়ে একটা চরম হতাশা তৈরি হবে।
দেখুন, এ দেশটা প্রায় ২০ কোটি মানুষের ভারে ভারাক্রান্ত। ৩-৪ কোটি মানুষ দরিদ্র এবং অতিদরিদ্র। পরিবেশের দিক থেকে চরম ঝুঁকিতে থাকা একটা জনপদ এটা। আমাদের জন্য পরিবর্তনের কাজে বেশি সময় হাতে নেই। ইতিহাসের শেষ সুযোগ হারাতে পারি আমরা এবারও।
এসব বিষয়ে আজকের পত্রিকার পাঠকদের জন্য কিছু বলার আছে কি আপনার?
নাগরিক হিসেবে আমরা যেন এই গণ-অভ্যুত্থানকে সফল করতে আরও সচেতন হই, সেই আহ্বান রাখতে চাই। আমরা যেন ধর্ম-বর্ণ-লিঙ্গ-জাতিগত পরিচয়ের ঊর্ধ্বে উঠে বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নিজেদের সর্বাগ্রে চিন্তা করি এবং দেশটার গণতান্ত্রিক বিকাশে নিজেদের ভূমিকা রাখি, সেটা খুব জরুরি। কোনো একটা মহল অপর মহলের ওপর কোনো ধরনের একরোখা শ্রেষ্ঠত্ববাদী আচরণ করলে এ দেশ এগোতে পারবে না। হয়তো টিকবেও না।
সংবাদপত্র এবং অন্যান্য মিডিয়ায় আজকাল পপুলিজমের যে উৎপাত চলছে, তাতে পাঠক হিসেবে ভেসে গেলে মুশকিল। পাঠক, শ্রোতা, দর্শককে নির্মম সত্যকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত, জনপ্রিয় কথাবার্তাকে নয়।
সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
আপনাকেও ধন্যবাদ।
সূর্যোদয় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই এবার যে নববর্ষের আগমন, তা রাঙিয়ে দিয়ে যাক প্রত্যেক মানুষের জীবন। বাংলা নববর্ষের উজ্জীবনী সুধায় স্নান করুক মানুষ। আশা ও আকাঙ্ক্ষার স্বপ্নপূরণে সার্থক হোক পৃথিবী। গ্লানি, জ্বরা মুছে গিয়ে অগ্নিস্নানে ধরণিকে শুচি করার যে আহ্বান জানিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ...
১ দিন আগেবাংলা নববর্ষ বরণকে কেন্দ্র করে আমাদের নগরকেন্দ্রিক জীবনে উপচানো আবেগ-উচ্ছ্বাস উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই আবেগ-উচ্ছ্বাস জাতিগত পারস্পরিক সৌহার্দ্যের নয়, সমষ্টিগতও নয়, একান্তই আত্মকেন্দ্রিকতায় সীমাবদ্ধ।
১ দিন আগেনতুন বছরে প্রবেশ করলাম আমরা। পৃথিবীব্যাপী বসবাসরত নানা জনগোষ্ঠী যেমন নতুন বছরকে উৎসবের মাধ্যমে বরণ করে নেয়, তেমনি বাঙালিও নানা আনন্দ-আয়োজনের মাধ্যমে নতুন বছরকে বরণ করে নেয়। একটি নতুন আশা, উদ্দীপনা নিয়ে যাত্রা শুরু হয় বছরের প্রথম দিনটিতে।
১ দিন আগেআশেকা ইরশাদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক এবং সাবেক চেয়ারপারসন। তাঁর গবেষণার ক্ষেত্র জেন্ডার, ভূ-কৌশলগত ও আঞ্চলিক সম্পর্ক নিয়ে। ফিলিস্তিন পরিস্থিতিতে আরব বিশ্বের ভূমিকা...
২ দিন আগে