রুমিন ফারহানা বাংলাদেশের একজন রাজনীতিবিদ, আইনজীবী ও রাজনীতি বিশ্লেষক। তিনি সংরক্ষিত নারী আসন থেকে একাদশ জাতীয় সংসদের সদস্য ছিলেন। তিনি বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। রুমিন লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিভাগে স্নাতক সম্পন্ন করেন এবং যুক্তরাজ্যের লিংকনস্ইন থেকে ব্যারিস্টার ডিগ্রি অর্জন করেন। সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার বিভুরঞ্জন সরকার।
বিভুরঞ্জন সরকার
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা শেষে বিএনপি মহাসচিব অসন্তুষ্টির কথা জানিয়েছেন। আপনি কি মনে করেন, বিএনপির জন্য সহসাই কোনো সন্তোষজনক খবর আসবে?
আমরা দীর্ঘ ১৫ বছর এমন এক রাজনৈতিক বাস্তবতায় ছিলাম, যেখানে রাষ্ট্রযন্ত্রের প্রতিটি স্তর সরকারি দলের হুকুমে চলত। দেশে স্বাধীন নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠান বলতে কিছু ছিল না। মানুষ তার ন্যূনতম নাগরিক অধিকার, ভোটাধিকার পর্যন্ত প্রয়োগ করতে পারেনি। নির্বাচনের কোনো অধিকার তখন ছিল না। স্থানীয় থেকে জাতীয়—সব নির্বাচনই ছিল কারচুপিতে পূর্ণ। দীর্ঘ ১৫ বছর ভোটাধিকারবঞ্চিত মানুষ স্বাভাবিকভাবেই আশা করে ৫ আগস্টের এই পটপরিবর্তনের পর তারা তাদের পছন্দের প্রতিনিধি বেছে নিতে পারবে, উৎসবমুখর পরিবেশে আবার একটি নির্বাচন হবে, যেখানে কোনো ভীতি বা চাপ থাকবে না। বিএনপি যেহেতু একটি গণতান্ত্রিক জনমুখী রাজনৈতিক দল, তাই মানুষের এই প্রত্যাশার কথাই বিএনপি বারবার তুলে ধরেছে। শেষ যে সংলাপ হলো প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে, যেখানে বিএনপি বারবার নির্বাচনী রোডম্যাপ চেয়েছে, সেখানেও কিন্তু সরকার থেকে স্পষ্ট কিছু জানানো হলো না। এখানেই বিএনপির অস্বস্তি এবং অসন্তোষ। বিএনপি মহাসচিব আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে অনির্বাচিত সরকার বেশি দিন থাকলে দেশের রাজনৈতিক, সামাজিক এবং অর্থনৈতিক সমস্যা বৃদ্ধি পাবে।
আমরা যখন সংলাপের কথা বলি, সেটা হচ্ছে একটি অন্তর্গত রাজনৈতিক ঐকমত্য তৈরির প্রক্রিয়া, কিন্তু বর্তমান সরকার সেটিকে বরাবরই সময়ক্ষেপণের কৌশল হিসেবে ব্যবহার করেছে। মহাসচিব সাহেবের অসন্তুষ্টি আসলে বিএনপির পক্ষ থেকে জনগণের হতাশা ও ক্ষোভের প্রতিধ্বনি। আমরা আশাবাদী হতে চাই, কিন্তু রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা আর প্রতারণার ইতিহাস আমাদের বাস্তববাদী করে তুলেছে।
বিএনপি এখনো ২০০১ সালের শাসনকালকে সোনালি সময় হিসেবে তুলে ধরে, অথচ সেই সময়ই দুর্নীতি, বিচারবহির্ভূত হত্যা ও সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার অভিযোগ ওঠে—আপনি কি একে সৎভাবে ব্যাখ্যা করতে প্রস্তুত?
একটি শাসনকালকে বিচার করতে গেলে তাকে সময়ের বাস্তবতায় দেখতে হয়। ২০০১-২০০৬ বিএনপি-জামায়াত সরকারের সময়ে দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন দ্বিগুণ বৃদ্ধি, যোগাযোগব্যবস্থায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা, রপ্তানিতে সাফল্য, নারীর উন্নয়ন, শিক্ষায় অগ্রগতি, অর্থনৈতিক অবস্থা স্থিতিশীল থাকা—এসব বাস্তব অগ্রগতি ছিল। তখন আজকের মতো হাজার কোটি টাকা পাচার হয়নি, ঋণের নামে ব্যাংক খালি করা হয়নি, সরকারদলীয় মানুষজন শতকোটি টাকার মালিক হয়নি, রাষ্ট্রীয় বাহিনী দলীয় ক্যাডারদের মতো আচরণ করেনি। হ্যাঁ, কিছু অভিযোগও ছিল, সেটি সব সরকারের বিরুদ্ধেই থাকে।
আমরা এসব বিষয় এড়িয়ে যাইনি। দলীয়ভাবে আমরা একাধিকবার আত্মসমালোচনা করেছি, এমনকি সেটিই ছিল আমাদের ২০০৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারের ভিত্তি। কিন্তু আমরা কি পরবর্তী সরকারের সময়ের রাষ্ট্রীয় দুর্নীতি, গুম, নিপীড়নের মাত্রার সঙ্গে তুলনা করছি? রাষ্ট্রীয় বাহিনী দিয়েই বিরোধী নেতাদের গায়েব করে দেওয়া হয়—সেটি কি সেই সময়ও হয়েছিল? অতএব, সোনালি সময় বলার পেছনে উদ্দেশ্য হচ্ছে একটি তুলনামূলকভাবে কার্যকর প্রশাসনের কথা বলা, তা একেবারে নিখুঁত নয়।
আপনাদের আন্দোলনের মূল চালিকাশক্তি এখন কী—জনগণের ক্ষোভ, না দলীয় দিকনির্দেশনার অভাব?
আন্দোলনের মূল শক্তি হচ্ছে জনগণের আকাঙ্ক্ষা—ভোটের অধিকার ফিরে পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, জীবনের নিরাপত্তা, দ্রব্যমূল্যের বিরুদ্ধে ক্ষোভ। বিএনপি একটি রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম হিসেবে মানুষের এই চাওয়ার সঙ্গে ঐকমত্য প্রকাশ করেছে।
দিকনির্দেশনার অভাব নয়, বরং আমাদের প্রতিটি ধাপ—নির্বাচন বর্জন থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কূটনৈতিক তৎপরতা—সবই ছিল পরিকল্পিত। তবে আমাদের সংগঠনের ওপর যেভাবে গত ১৫ বছরে একতরফাভাবে আঘাত এসেছে—নেতা-কর্মীদের হত্যা, গুম, মামলা, জেল—তার প্রভাব তো থাকবেই। বিএনপি আগেও জনগণের শক্তিতে শক্তিশালী ছিল, এখনো তা-ই।
বিএনপির কেন্দ্র থেকে শুরু করে উপজেলা পর্যন্ত যে সাংগঠনিক শূন্যতা দেখা যাচ্ছে, এটা কি দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে থাকার ফল, নাকি নেতৃত্বের ব্যর্থতা?
বিএনপির কেন্দ্র থেকে উপজেলা পর্যন্ত কোথাও সাংগঠনিক শূন্যতা আছে, আমি সেটি একেবারেই মনে করি না। তবে হ্যাঁ, দীর্ঘদিন স্বৈরশাসনের মধ্যে থাকা যে একটি প্রভাব ফেলেছে, তা সত্যি। তবে আরও গভীর কারণ আছে—যেমন প্রত্যেক নেতাকে হয়রানি করা, মিথ্যা মামলা দেওয়া, কারান্তরীণ রাখা, গুম করা, এলাকাছাড়া করা, এমনকি হত্যা করা। কিন্তু এত অত্যাচারের পরও বিএনপি ভাঙেনি বরং আগের চেয়ে বেশি ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। কারণ, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নিরলসভাবে দলকে শক্তিশালী করতে কাজ করে গেছেন।
আপনি আইনজীবী সমাজে প্রভাবশালী, কিন্তু বার কাউন্সিল নির্বাচনেও বিএনপি প্যানেল অনেক সময় পরাজিত হয়—এই ব্যর্থতা কী বলছে? দলের জনপ্রিয়তার, না কৌশলের অভাব?
বার কাউন্সিল নির্বাচনকে এখন আর পেশাজীবীদের অবাধ প্রতিযোগিতা বলা যায় না। সেখানে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ, ভোটার তালিকা নিয়ে কারচুপি, নির্বাচনী পরিবেশে একতরফা আচরণ—এ সবই বড় কারণ। শুধু জনপ্রিয়তার বা কৌশলের অভাব দিয়ে বিচার করলে বাস্তব পরিস্থিতি অবমূল্যায়ন হবে। আমরা অনেক সময় বার কাউন্সিল নির্বাচনেও সরকারপন্থীদের হাতে প্রশাসনিক সুবিধার কারণে হারি, তবে অনেক
সময় জয়ও পাই। এর মানে এই নয় যে বিএনপির জনপ্রিয়তা হারিয়ে গেছে, বরং এর মানে হচ্ছে—আমরা একটি রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের বিপরীতে দাঁড়িয়ে আছি।
তারেক রহমানের নেতৃত্ব নিয়ে যাঁরা প্রশ্ন তোলেন, তাঁদের জন্য আপনার বক্তব্য কী? আপনি কি মনে করেন তিনি এখনো বাংলাদেশের রাজনীতির জন্য ‘নির্ভরযোগ্য’ নেতা?
তারেক রহমান শুধু একজন রাজনীতিক নন, তিনি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সন্তান, একজন রাজনৈতিক দর্শন বহনকারী নেতা। তিনি দলের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে শুরু করে একেবারে তৃণমূল পর্যন্ত সবার প্রাণের নেতা, আস্থার প্রতীক। বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে তাঁর উদ্ভাবনী শক্তি ছিল, উন্নয়নমুখী চিন্তা ছিল। এরপর গত ১৫ বছর রাজনৈতিক নির্যাতনের মুখে থেকে দল পরিচালনা করে আসা একটি বিরল দৃঢ়তার নিদর্শন। তাঁর নেতৃত্বে আমরা একটা গণতান্ত্রিক রূপরেখা তৈরি করেছি। যাঁরা প্রশ্ন তোলেন, তাঁরা রাজনীতিকে শুধু অতীত দিয়ে বিচার করছেন, বর্তমান নেতৃত্বগুণ বা ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনা দেখছেন না। আমি বিশ্বাস করি, তারেক রহমান বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি আস্থা, যুক্তিনির্ভর নেতৃত্বের প্রতীক।
আন্দোলন আর নির্বাচন—দুটো পথেই যখন বারবার ধাক্কা খাচ্ছে বিএনপি, তখন কি ‘রাজনৈতিক পুনর্গঠন’-এর চিন্তা করার সময় আসেনি?
আমরা ‘পুনর্গঠন’ শব্দটা একেবারে এড়িয়ে যাইনি। আমরা বুঝি যে একটি দলকে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হয়। তাই আমরা দীর্ঘদিন ধরে নীতিনির্ধারক সভাগুলোতে এই বিষয়ে আলোচনা করেছি। ইতিমধ্যে জাতীয় স্থায়ী কমিটির গঠনেও পরিবর্তন এসেছে, তৃণমূলে পুনর্গঠনের কাজ চলছে। তবে এটা আমরা বিশ্বাস করি না যে নির্বাচনে না যেতে পারা মানেই ব্যর্থতা। যেখানে নির্বাচন মানে আগে থেকে লেখা ফলাফলের ঘোষণা, সেখানে অংশগ্রহণের প্রশ্নই আসে না। রাজনৈতিক পুনর্গঠন মানে নিজেদের আদর্শ বিসর্জন দেওয়া নয়, বরং নতুন কৌশল, নতুন নেতৃত্ব এবং নতুন সামাজিক জোট গড়ার সময় এসেছে, সেটি আমরা বিবেচনায় নিচ্ছি।
আপনি বরাবরই যুক্তির মানুষ, কিন্তু আপনার দলে এখন অনেক আবেগতাড়িত বক্তব্যপ্রবণ নেতা—এই মেরুকরণ নিয়ে আপনি উদ্বিগ্ন কি না?
রাজনীতি মানেই আবেগ ও যুক্তির সম্মিলন। কখনো কখনো আবেগের ভাষা মানুষের হৃদয় স্পর্শ করে, আবার কখনো কেবল যুক্তি দিয়ে পথ দেখাতে হয়। তবে আবেগ যদি বাস্তবতাকে অস্বীকার করে, সেটি অবশ্যই সমস্যা। আমি সব সময়ই যুক্তিবাদী অবস্থান নিয়েছি এবং মনে করি আমাদের বক্তব্যে ভারসাম্য থাকা জরুরি। আমাদের দলেও এ নিয়ে আলোচনার জায়গা রয়েছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বারবার সতর্ক করেছেন অতি আবেগপ্রবণ না হয়ে ভারসাম্যপূর্ণ বক্তব্য দিতে। তবে রাজনৈতিক দল মানেই মতের ভিন্নতা থাকবে। আমি উদ্বিগ্ন নই, বরং আমি আশা করি এই বৈচিত্র্য আমাদের দলকে আরও শক্তিশালী করবে।
বিএনপির রাজনীতিকে অনেকে ‘নেতিবাচক’ বলছেন—শুধু সরকারের বিরোধিতা নয়, জনগণের সামনে কি ইতিবাচক রূপরেখা তুলে ধরছেন আপনারা?
আমরা শুধু সরকারের বিরোধিতা করি—এই কথাটি বিভ্রান্তিকর। আমরাই ২০১৬ সালে প্রথম সংস্কারের কথা বলি। প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার ভারসাম্য, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ, ৭০ অনুচ্ছেদ সংস্কার—এগুলো বিএনপিই প্রথম বলে। আমরা গত কয়েক বছরে ‘ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ’ গঠনের ৩১ দফা রূপরেখা দিয়েছি, অর্থনৈতিক সংস্কার পরিকল্পনা দিয়েছি, প্রশাসনিক নিরপেক্ষতা, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, শিক্ষাব্যবস্থার রূপান্তর, স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়ন—এসব বিষয়ে পরিকল্পনা পেশ করেছি। ইতিবাচক রাজনীতি মানে শুধু বাহারি শব্দ নয়, জনসম্পৃক্ত বাস্তব পরিকল্পনা। আমরা সেটাই করছি।
দেশে যখন বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি গড়ে ওঠার কথা বলা হচ্ছে, তখন বিএনপির ভবিষ্যৎ কীভাবে দেখছেন? আদৌ কি নিজেকে আদর্শিকভাবে আপডেট করছে দলটি?
বিকল্প শক্তি গড়ার কথা নতুন নয়। বহু বছর ধরেই কিছু মিডিয়া, এনজিও, আন্তর্জাতিক শক্তি এই কথাটি বলছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, সেই বিকল্প কারা? আদর্শ, ইতিহাস, আন্দোলনের ভিত্তি ছাড়া কোনো দল বিকল্প হয় না। বিএনপি একটি জাতীয় ঐতিহ্য বহনকারী দল, যেটি জনগণের অধিকার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করছে। আমরা এখন নতুন প্রজন্মকে জায়গা দিতে চাই, তথ্যপ্রযুক্তিকে কাজে লাগাতে চাই, সুশাসনের নতুন আদর্শ গড়তে চাই। আমরা অবশ্যই আপডেট হচ্ছি, তবে নিজের শিকড় ভুলে নয়।
ব্যক্তি রুমিন ফারহানা হিসেবে আপনি নারী রাজনীতিকদের নেতৃত্বে কী ধরনের ভবিষ্যৎ দেখছেন বিএনপির রাজনীতিতে?
আমি মনে করি, বিএনপিই একমাত্র দল, যেখানে একজন নারী প্রধানমন্ত্রী, একজন নারী সংসদ নেতা, নারী আইনজীবী ও পেশাজীবী নেত্রীরা প্রভাবশালী ভূমিকা রেখেছেন। আমি নিজেও যে জায়গায় দাঁড়িয়ে কথা বলছি, সেটা দলের নারীবান্ধব কাঠামোর ফল। বিএনপি ভবিষ্যতে আরও বেশি সংখ্যায় নারী নেতৃত্ব তৈরি করবে—শুধু সংখ্যা নয়, সিদ্ধান্ত গ্রহণের স্তরে নারী থাকবে। রাজনৈতিক সহিংসতার মধ্যে থেকেও নারী নেতৃত্বে আমরা সাহস, যুক্তি এবং সৌজন্যের চর্চা রাখতে চাই।
বিএনপি আজ শুধু একটি রাজনৈতিক দল নয়, এটি একটি জন-আকাঙ্ক্ষার নাম। দমন-পীড়ন, গুম-খুন, হয়রানি—সব পেরিয়ে আজ আমরা গণতন্ত্রের সংগ্রামে দাঁড়িয়ে আছি। আমি বিশ্বাস করি, কোনো ত্বরিত সমাধান নয়, একটি দীর্ঘ সময়ের রাষ্ট্রীয় পুনর্গঠনের সূচনা করতে হবে এবং সেই পথেই বিএনপি জনগণের সঙ্গে থেকে কাজ করে যাচ্ছে।
সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
আপনাকেও ধন্যবাদ। আপনার মাধ্যমে আজকের পত্রিকার পাঠকদেরও আমার শুভেচ্ছা।
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা শেষে বিএনপি মহাসচিব অসন্তুষ্টির কথা জানিয়েছেন। আপনি কি মনে করেন, বিএনপির জন্য সহসাই কোনো সন্তোষজনক খবর আসবে?
আমরা দীর্ঘ ১৫ বছর এমন এক রাজনৈতিক বাস্তবতায় ছিলাম, যেখানে রাষ্ট্রযন্ত্রের প্রতিটি স্তর সরকারি দলের হুকুমে চলত। দেশে স্বাধীন নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠান বলতে কিছু ছিল না। মানুষ তার ন্যূনতম নাগরিক অধিকার, ভোটাধিকার পর্যন্ত প্রয়োগ করতে পারেনি। নির্বাচনের কোনো অধিকার তখন ছিল না। স্থানীয় থেকে জাতীয়—সব নির্বাচনই ছিল কারচুপিতে পূর্ণ। দীর্ঘ ১৫ বছর ভোটাধিকারবঞ্চিত মানুষ স্বাভাবিকভাবেই আশা করে ৫ আগস্টের এই পটপরিবর্তনের পর তারা তাদের পছন্দের প্রতিনিধি বেছে নিতে পারবে, উৎসবমুখর পরিবেশে আবার একটি নির্বাচন হবে, যেখানে কোনো ভীতি বা চাপ থাকবে না। বিএনপি যেহেতু একটি গণতান্ত্রিক জনমুখী রাজনৈতিক দল, তাই মানুষের এই প্রত্যাশার কথাই বিএনপি বারবার তুলে ধরেছে। শেষ যে সংলাপ হলো প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে, যেখানে বিএনপি বারবার নির্বাচনী রোডম্যাপ চেয়েছে, সেখানেও কিন্তু সরকার থেকে স্পষ্ট কিছু জানানো হলো না। এখানেই বিএনপির অস্বস্তি এবং অসন্তোষ। বিএনপি মহাসচিব আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে অনির্বাচিত সরকার বেশি দিন থাকলে দেশের রাজনৈতিক, সামাজিক এবং অর্থনৈতিক সমস্যা বৃদ্ধি পাবে।
আমরা যখন সংলাপের কথা বলি, সেটা হচ্ছে একটি অন্তর্গত রাজনৈতিক ঐকমত্য তৈরির প্রক্রিয়া, কিন্তু বর্তমান সরকার সেটিকে বরাবরই সময়ক্ষেপণের কৌশল হিসেবে ব্যবহার করেছে। মহাসচিব সাহেবের অসন্তুষ্টি আসলে বিএনপির পক্ষ থেকে জনগণের হতাশা ও ক্ষোভের প্রতিধ্বনি। আমরা আশাবাদী হতে চাই, কিন্তু রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা আর প্রতারণার ইতিহাস আমাদের বাস্তববাদী করে তুলেছে।
বিএনপি এখনো ২০০১ সালের শাসনকালকে সোনালি সময় হিসেবে তুলে ধরে, অথচ সেই সময়ই দুর্নীতি, বিচারবহির্ভূত হত্যা ও সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার অভিযোগ ওঠে—আপনি কি একে সৎভাবে ব্যাখ্যা করতে প্রস্তুত?
একটি শাসনকালকে বিচার করতে গেলে তাকে সময়ের বাস্তবতায় দেখতে হয়। ২০০১-২০০৬ বিএনপি-জামায়াত সরকারের সময়ে দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন দ্বিগুণ বৃদ্ধি, যোগাযোগব্যবস্থায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা, রপ্তানিতে সাফল্য, নারীর উন্নয়ন, শিক্ষায় অগ্রগতি, অর্থনৈতিক অবস্থা স্থিতিশীল থাকা—এসব বাস্তব অগ্রগতি ছিল। তখন আজকের মতো হাজার কোটি টাকা পাচার হয়নি, ঋণের নামে ব্যাংক খালি করা হয়নি, সরকারদলীয় মানুষজন শতকোটি টাকার মালিক হয়নি, রাষ্ট্রীয় বাহিনী দলীয় ক্যাডারদের মতো আচরণ করেনি। হ্যাঁ, কিছু অভিযোগও ছিল, সেটি সব সরকারের বিরুদ্ধেই থাকে।
আমরা এসব বিষয় এড়িয়ে যাইনি। দলীয়ভাবে আমরা একাধিকবার আত্মসমালোচনা করেছি, এমনকি সেটিই ছিল আমাদের ২০০৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারের ভিত্তি। কিন্তু আমরা কি পরবর্তী সরকারের সময়ের রাষ্ট্রীয় দুর্নীতি, গুম, নিপীড়নের মাত্রার সঙ্গে তুলনা করছি? রাষ্ট্রীয় বাহিনী দিয়েই বিরোধী নেতাদের গায়েব করে দেওয়া হয়—সেটি কি সেই সময়ও হয়েছিল? অতএব, সোনালি সময় বলার পেছনে উদ্দেশ্য হচ্ছে একটি তুলনামূলকভাবে কার্যকর প্রশাসনের কথা বলা, তা একেবারে নিখুঁত নয়।
আপনাদের আন্দোলনের মূল চালিকাশক্তি এখন কী—জনগণের ক্ষোভ, না দলীয় দিকনির্দেশনার অভাব?
আন্দোলনের মূল শক্তি হচ্ছে জনগণের আকাঙ্ক্ষা—ভোটের অধিকার ফিরে পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, জীবনের নিরাপত্তা, দ্রব্যমূল্যের বিরুদ্ধে ক্ষোভ। বিএনপি একটি রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম হিসেবে মানুষের এই চাওয়ার সঙ্গে ঐকমত্য প্রকাশ করেছে।
দিকনির্দেশনার অভাব নয়, বরং আমাদের প্রতিটি ধাপ—নির্বাচন বর্জন থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কূটনৈতিক তৎপরতা—সবই ছিল পরিকল্পিত। তবে আমাদের সংগঠনের ওপর যেভাবে গত ১৫ বছরে একতরফাভাবে আঘাত এসেছে—নেতা-কর্মীদের হত্যা, গুম, মামলা, জেল—তার প্রভাব তো থাকবেই। বিএনপি আগেও জনগণের শক্তিতে শক্তিশালী ছিল, এখনো তা-ই।
বিএনপির কেন্দ্র থেকে শুরু করে উপজেলা পর্যন্ত যে সাংগঠনিক শূন্যতা দেখা যাচ্ছে, এটা কি দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে থাকার ফল, নাকি নেতৃত্বের ব্যর্থতা?
বিএনপির কেন্দ্র থেকে উপজেলা পর্যন্ত কোথাও সাংগঠনিক শূন্যতা আছে, আমি সেটি একেবারেই মনে করি না। তবে হ্যাঁ, দীর্ঘদিন স্বৈরশাসনের মধ্যে থাকা যে একটি প্রভাব ফেলেছে, তা সত্যি। তবে আরও গভীর কারণ আছে—যেমন প্রত্যেক নেতাকে হয়রানি করা, মিথ্যা মামলা দেওয়া, কারান্তরীণ রাখা, গুম করা, এলাকাছাড়া করা, এমনকি হত্যা করা। কিন্তু এত অত্যাচারের পরও বিএনপি ভাঙেনি বরং আগের চেয়ে বেশি ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। কারণ, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নিরলসভাবে দলকে শক্তিশালী করতে কাজ করে গেছেন।
আপনি আইনজীবী সমাজে প্রভাবশালী, কিন্তু বার কাউন্সিল নির্বাচনেও বিএনপি প্যানেল অনেক সময় পরাজিত হয়—এই ব্যর্থতা কী বলছে? দলের জনপ্রিয়তার, না কৌশলের অভাব?
বার কাউন্সিল নির্বাচনকে এখন আর পেশাজীবীদের অবাধ প্রতিযোগিতা বলা যায় না। সেখানে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ, ভোটার তালিকা নিয়ে কারচুপি, নির্বাচনী পরিবেশে একতরফা আচরণ—এ সবই বড় কারণ। শুধু জনপ্রিয়তার বা কৌশলের অভাব দিয়ে বিচার করলে বাস্তব পরিস্থিতি অবমূল্যায়ন হবে। আমরা অনেক সময় বার কাউন্সিল নির্বাচনেও সরকারপন্থীদের হাতে প্রশাসনিক সুবিধার কারণে হারি, তবে অনেক
সময় জয়ও পাই। এর মানে এই নয় যে বিএনপির জনপ্রিয়তা হারিয়ে গেছে, বরং এর মানে হচ্ছে—আমরা একটি রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের বিপরীতে দাঁড়িয়ে আছি।
তারেক রহমানের নেতৃত্ব নিয়ে যাঁরা প্রশ্ন তোলেন, তাঁদের জন্য আপনার বক্তব্য কী? আপনি কি মনে করেন তিনি এখনো বাংলাদেশের রাজনীতির জন্য ‘নির্ভরযোগ্য’ নেতা?
তারেক রহমান শুধু একজন রাজনীতিক নন, তিনি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সন্তান, একজন রাজনৈতিক দর্শন বহনকারী নেতা। তিনি দলের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে শুরু করে একেবারে তৃণমূল পর্যন্ত সবার প্রাণের নেতা, আস্থার প্রতীক। বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে তাঁর উদ্ভাবনী শক্তি ছিল, উন্নয়নমুখী চিন্তা ছিল। এরপর গত ১৫ বছর রাজনৈতিক নির্যাতনের মুখে থেকে দল পরিচালনা করে আসা একটি বিরল দৃঢ়তার নিদর্শন। তাঁর নেতৃত্বে আমরা একটা গণতান্ত্রিক রূপরেখা তৈরি করেছি। যাঁরা প্রশ্ন তোলেন, তাঁরা রাজনীতিকে শুধু অতীত দিয়ে বিচার করছেন, বর্তমান নেতৃত্বগুণ বা ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনা দেখছেন না। আমি বিশ্বাস করি, তারেক রহমান বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি আস্থা, যুক্তিনির্ভর নেতৃত্বের প্রতীক।
আন্দোলন আর নির্বাচন—দুটো পথেই যখন বারবার ধাক্কা খাচ্ছে বিএনপি, তখন কি ‘রাজনৈতিক পুনর্গঠন’-এর চিন্তা করার সময় আসেনি?
আমরা ‘পুনর্গঠন’ শব্দটা একেবারে এড়িয়ে যাইনি। আমরা বুঝি যে একটি দলকে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হয়। তাই আমরা দীর্ঘদিন ধরে নীতিনির্ধারক সভাগুলোতে এই বিষয়ে আলোচনা করেছি। ইতিমধ্যে জাতীয় স্থায়ী কমিটির গঠনেও পরিবর্তন এসেছে, তৃণমূলে পুনর্গঠনের কাজ চলছে। তবে এটা আমরা বিশ্বাস করি না যে নির্বাচনে না যেতে পারা মানেই ব্যর্থতা। যেখানে নির্বাচন মানে আগে থেকে লেখা ফলাফলের ঘোষণা, সেখানে অংশগ্রহণের প্রশ্নই আসে না। রাজনৈতিক পুনর্গঠন মানে নিজেদের আদর্শ বিসর্জন দেওয়া নয়, বরং নতুন কৌশল, নতুন নেতৃত্ব এবং নতুন সামাজিক জোট গড়ার সময় এসেছে, সেটি আমরা বিবেচনায় নিচ্ছি।
আপনি বরাবরই যুক্তির মানুষ, কিন্তু আপনার দলে এখন অনেক আবেগতাড়িত বক্তব্যপ্রবণ নেতা—এই মেরুকরণ নিয়ে আপনি উদ্বিগ্ন কি না?
রাজনীতি মানেই আবেগ ও যুক্তির সম্মিলন। কখনো কখনো আবেগের ভাষা মানুষের হৃদয় স্পর্শ করে, আবার কখনো কেবল যুক্তি দিয়ে পথ দেখাতে হয়। তবে আবেগ যদি বাস্তবতাকে অস্বীকার করে, সেটি অবশ্যই সমস্যা। আমি সব সময়ই যুক্তিবাদী অবস্থান নিয়েছি এবং মনে করি আমাদের বক্তব্যে ভারসাম্য থাকা জরুরি। আমাদের দলেও এ নিয়ে আলোচনার জায়গা রয়েছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বারবার সতর্ক করেছেন অতি আবেগপ্রবণ না হয়ে ভারসাম্যপূর্ণ বক্তব্য দিতে। তবে রাজনৈতিক দল মানেই মতের ভিন্নতা থাকবে। আমি উদ্বিগ্ন নই, বরং আমি আশা করি এই বৈচিত্র্য আমাদের দলকে আরও শক্তিশালী করবে।
বিএনপির রাজনীতিকে অনেকে ‘নেতিবাচক’ বলছেন—শুধু সরকারের বিরোধিতা নয়, জনগণের সামনে কি ইতিবাচক রূপরেখা তুলে ধরছেন আপনারা?
আমরা শুধু সরকারের বিরোধিতা করি—এই কথাটি বিভ্রান্তিকর। আমরাই ২০১৬ সালে প্রথম সংস্কারের কথা বলি। প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার ভারসাম্য, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ, ৭০ অনুচ্ছেদ সংস্কার—এগুলো বিএনপিই প্রথম বলে। আমরা গত কয়েক বছরে ‘ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ’ গঠনের ৩১ দফা রূপরেখা দিয়েছি, অর্থনৈতিক সংস্কার পরিকল্পনা দিয়েছি, প্রশাসনিক নিরপেক্ষতা, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, শিক্ষাব্যবস্থার রূপান্তর, স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়ন—এসব বিষয়ে পরিকল্পনা পেশ করেছি। ইতিবাচক রাজনীতি মানে শুধু বাহারি শব্দ নয়, জনসম্পৃক্ত বাস্তব পরিকল্পনা। আমরা সেটাই করছি।
দেশে যখন বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি গড়ে ওঠার কথা বলা হচ্ছে, তখন বিএনপির ভবিষ্যৎ কীভাবে দেখছেন? আদৌ কি নিজেকে আদর্শিকভাবে আপডেট করছে দলটি?
বিকল্প শক্তি গড়ার কথা নতুন নয়। বহু বছর ধরেই কিছু মিডিয়া, এনজিও, আন্তর্জাতিক শক্তি এই কথাটি বলছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, সেই বিকল্প কারা? আদর্শ, ইতিহাস, আন্দোলনের ভিত্তি ছাড়া কোনো দল বিকল্প হয় না। বিএনপি একটি জাতীয় ঐতিহ্য বহনকারী দল, যেটি জনগণের অধিকার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করছে। আমরা এখন নতুন প্রজন্মকে জায়গা দিতে চাই, তথ্যপ্রযুক্তিকে কাজে লাগাতে চাই, সুশাসনের নতুন আদর্শ গড়তে চাই। আমরা অবশ্যই আপডেট হচ্ছি, তবে নিজের শিকড় ভুলে নয়।
ব্যক্তি রুমিন ফারহানা হিসেবে আপনি নারী রাজনীতিকদের নেতৃত্বে কী ধরনের ভবিষ্যৎ দেখছেন বিএনপির রাজনীতিতে?
আমি মনে করি, বিএনপিই একমাত্র দল, যেখানে একজন নারী প্রধানমন্ত্রী, একজন নারী সংসদ নেতা, নারী আইনজীবী ও পেশাজীবী নেত্রীরা প্রভাবশালী ভূমিকা রেখেছেন। আমি নিজেও যে জায়গায় দাঁড়িয়ে কথা বলছি, সেটা দলের নারীবান্ধব কাঠামোর ফল। বিএনপি ভবিষ্যতে আরও বেশি সংখ্যায় নারী নেতৃত্ব তৈরি করবে—শুধু সংখ্যা নয়, সিদ্ধান্ত গ্রহণের স্তরে নারী থাকবে। রাজনৈতিক সহিংসতার মধ্যে থেকেও নারী নেতৃত্বে আমরা সাহস, যুক্তি এবং সৌজন্যের চর্চা রাখতে চাই।
বিএনপি আজ শুধু একটি রাজনৈতিক দল নয়, এটি একটি জন-আকাঙ্ক্ষার নাম। দমন-পীড়ন, গুম-খুন, হয়রানি—সব পেরিয়ে আজ আমরা গণতন্ত্রের সংগ্রামে দাঁড়িয়ে আছি। আমি বিশ্বাস করি, কোনো ত্বরিত সমাধান নয়, একটি দীর্ঘ সময়ের রাষ্ট্রীয় পুনর্গঠনের সূচনা করতে হবে এবং সেই পথেই বিএনপি জনগণের সঙ্গে থেকে কাজ করে যাচ্ছে।
সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
আপনাকেও ধন্যবাদ। আপনার মাধ্যমে আজকের পত্রিকার পাঠকদেরও আমার শুভেচ্ছা।
দেশে প্রতিবছর বহু প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়। বাস্তবায়নের সময় মাঝে মাঝে সংবাদ চোখে পড়ে যে প্রকল্পের ভবন নির্মাণ করতে গিয়ে গাছ কাটা পড়ছে, বনভূমি উজাড় হচ্ছে, খাল ও জলাভূমি ভরাট হচ্ছে, নির্মাণস্থলে নির্মাণকাজের ফলে পরিবেশ দূষণ হচ্ছে, এমনকি কোনো কোনো প্রকল্প গ্রহণের ফলে পরিবেশের ওপর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব...
৩ ঘণ্টা আগেপাহাড় রক্ষা করা যখন খুবই জরুরি, তখন সে পাহাড় কেটে গোটা অঞ্চলের জন্য বিপদ ডেকে আনছে একদল দুর্বৃত্ত। খাগড়াছড়ির পানছড়ি এলাকায় অবাধে পাহাড় কাটা হচ্ছে, অথচ সরকারি কর্মকর্তারা এ বিষয়ে দায়সারা বক্তব্য দিয়ে নিজেদের ব্যর্থতাকে ঢাকার চেষ্টা করছেন।
৩ ঘণ্টা আগে১৯৪৯ সালের ২৩ জুন মওলানা ভাসানীকে সভাপতি এবং শামসুল হককে সাধারণ সম্পাদক করে গঠিত হয়েছিল আওয়ামী লীগ। তখন শেখ মুজিবুর রহমান জেলে ছিলেন, তাঁকে করা হয়েছিল দলের যুগ্ম সম্পাদক। পরবর্তী সময়ে শামসুল হক অপ্রকৃতিস্থ হয়ে যাওয়ায় শেখ মুজিবুর রহমানকে দলের সাধারণ সম্পাদক করা হয়।
১ দিন আগেআমাদের দেশে অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদসংক্রান্ত সুনির্দিষ্ট কোনো আইনকানুন কিংবা বিধিবিধান নেই। তাহলে এই সরকারের মেয়াদ কত দিন হবে? একটি সফল গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে, সেই অভ্যুত্থানের চালিকাশক্তির আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী এই সরকার গঠিত ও ক্ষমতায়িত হয়েছে।
১ দিন আগে