Ajker Patrika

দালালের দৌরাত্ম্যে কৃষিপণ্যের দাম বাড়ে ৩ গুণ: কৃষিমন্ত্রী  

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৯ জানুয়ারি ২০২২, ১৭: ২৮
দালালের দৌরাত্ম্যে কৃষিপণ্যের দাম বাড়ে ৩ গুণ: কৃষিমন্ত্রী  

গ্রামে উৎপাদিত কৃষিপণ্য দালালদের দৌরাত্ম্যে ৩ গুণ বেশি দামে শহরে বিক্রি হয় বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, ‘দিনাজপুর বা ঈশ্বরদী কিংবা সাতক্ষীরায় ফসল হলো। চাষি মাঠপর্যায়ে বিক্রি করে প্রতি কেজিতে ১৫ টাকা পাচ্ছে। আর এটা ঢাকায় এসে ৩ গুণ বেড়ে দাম হয় ৪০-৪৫ টাকা। এটা হওয়ার কারণ হচ্ছে, মধ্যস্বত্বভোগী বা দালালদের দৌরাত্ম্য।’ 

আজ বুধবার রাজধানীর ওসামানী স্মৃতি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনের দ্বিতীয় অধিবেশন শেষে এসব কথা বলেন কৃষিমন্ত্রী। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। 

কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘কৃষিপণ্য ঢাকায় আনতে বিভিন্ন জায়গায় আরও এক্সট্রা খরচ হয়। এটা কেন হয়, তার মনিটরিং করার জন্য ডিসিদের সহযোগিতা চেয়েছি। এই যে বাড়তি টাকাটা এটা কমানোর জন্য ব্যবস্থা নিতে বলেছি। তাঁরা বলেছেন, দায়িত্ব নেবেন।’

আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘আমাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে আসলে গ্রাম থেকে ঢাকায় আসা অবদি কোথায় কোথায় টাকাটা দিতে হয়, সেটা বের করা। সেটা বের করা গেলে জাতীয় পর্যায়ে ব্যবস্থার মাধ্যমে এটা কীভাবে বন্ধ করা যায়, তা নিয়ে কাজ করা যাবে।’ 

দেশে খাদ্য ঘাটতি নেই জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘একটা সময়ে আমরা আধুনিক ও বিজ্ঞানভিত্তিক কৃষিতে যেতে পারিনি বলে দেশে খাদ্যের ঘাটতি ছিল। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসে অনেকগুলো কর্মসূচি নিয়েছে কৃষকদের প্রণোদনা দেওয়ার জন্য। সারের দাম অস্বাভাবিকভাবে কমানো হয়েছে। কৃষকদের ১৬টি কৃষিপণ্যে ৪ শতাংশ সুদে ঋণ দেওয়া হচ্ছে। এখন বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ হলো, কৃষিপণ্য বিক্রি করে কীভাবে কৃষকেরা লাভ করতে পারে, যা দিয়ে চাষিদের আয় বাড়ে জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি পায়। কৃষি খাতের উন্নয়ন হলে অর্থনীতির অন্যান্য খাতের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হয়।’

বর্তমানে দেশে খাদ্যের মজুত যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি জানিয়ে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘খাদ্যের মজুত এখন যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। দেশে এখন মোট ২০ লাখ টন খাদ্য মজুত আছে। এর মধ্যে চাল ১৭ লাখ টন রয়েছে।’

এ সময় মন্ত্রী জানান, বিদেশে কৃষিপণ্য রপ্তানিতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক মানের ল্যাব স্থাপনে আমরা একটা উদ্যোগ নিয়েছি। আমরা নেদারল্যান্ডস গিয়েছিলাম। তাদের সঙ্গে আমাদের একটি সমঝোতা হচ্ছে। টেকনোলজিক্যাল সাপোর্ট দেবে তারা।

করোনা মহামারির কারণে দুই বছর বিরতির পর মঙ্গলবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তিন দিনব্যাপী জেলা প্রশাসক সম্মেলনের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকারপ্রধান দেশের জনগণের জন্য কাজ করার পাশাপাশি জেলা পর্যায়ের এই শীর্ষ কর্মকর্তাদের ২৪টি নির্দেশনা দেন। সম্মেলন শুরুর দিন রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ বঙ্গভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন। রাষ্ট্রপতি তাঁর বক্তব্যে দায়িত্ব পালনে জনগণের সেবা দেওয়ার বিষয়টিতে অগ্রাধিকার দিতে ডিসিদের প্রতি অনুরোধ করেন।

করোনা মহামারির কারণে এবার ভেন্যু বদলে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক সম্মেলন হচ্ছে। অন্যান্য বছর জেলা প্রশাসকদের অধিবেশনগুলো হয় সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষে। মঙ্গলবার শুরু হওয়া এ সম্মেলন শেষ হবে বৃহস্পতিবার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত