Ajker Patrika

দেশে কোথাও সরকারের নিয়ন্ত্রণ আছে বলে টের পাই না: সংসদে চুন্নু

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০১ নভেম্বর ২০২৩, ১৯: ৫০
দেশে কোথাও সরকারের নিয়ন্ত্রণ আছে বলে টের পাই না: সংসদে চুন্নু

‘বাংলাদেশে কোথাও সরকারের নিয়ন্ত্রণ আছে বলে আমরা টের পাই না’—এমন মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু। আজ বুধবার জাতীয় সংসদে ফাইন্যান্স কোম্পানি বিল–২০২৩ পাসের আলোচনায় অংশ নিয়ে এ কথা বলেন চুন্নু। 

জাতীয় পার্টির মহাসচিব বলেন, ‘ভারতীয় পেঁয়াজ রপ্তানিকারকদের দাম বৃদ্ধির সংবাদে বাংলাদেশে পেঁয়াজের কেজি ১৫০ টাকা হয়ে গেছে। বাংলাদেশে কোথাও সরকারের নিয়ন্ত্রণ আছে বলে আমরা টের পাই না।’

জাপা মহাসচিব সরকারের সমালোচনা করে বক্তব্য দেওয়ার সময় সরকার দলীয় সংসদ সদস্যরা হাসাহাসি করেন। জবাবে চুন্নু বলেন, ‘আ হা করেন. . বাজারে যান না, পেঁয়াজ কত করে দেখেন, আ হা করেন।’ এ সময় সরকার দলীয় সংসদ সদস্যরা কথা বললে চুন্নু বলেন, ‘ভাই ডিস্টার্বটা করেন! ডিস্টার্ব কইরেন না, বাস্তবতায় আসেন। আ হা করেন, আ হা বাহা হয়ে যাবে।’ 

মুজিবুল হক বলেন, ‘ফাইন্যান্স কোম্পানির কথা মনে হলেই পিকে হালদার— যিনি এখন কলকাতায় আছেন... যিনি লিজিং কোম্পানির এমডি ছিলেন। বান্ধবীর নামে ১০০ কোটি, তিন নম্বর বান্ধবীর নামে ৫০ কোটি, স্ত্রীর নামে ১০০ কোটি, শালির নামে ৫০ কোটি... মানে শালি, বান্ধবী, স্ত্রীর নামে শত শত কোটি টাকা পাচার করেছেন। আইন তো ছিল, বাংলাদেশ ব্যাংক তো ছিল, তারা কি তখন ঘাস কেটেছিল? আইন করে লাভ কী? দিয়ে দেন না ফ্রি... যা।’

চুন্নু বলেন, ‘আইন করলে হবে না। আইনের প্রয়োগ না হলে লাভ কী। আমরা যখন মহাজোট করি তখন খেলাপি ঋণ ছিল ২১ হাজার কোটি টাকা। এখন ১ লাখ ৩২ হাজার কোটি টাকা। ঋণও বাড়ছে কিন্তু ব্যাংকের অবস্থা ভালো না। টাকা পাচার হচ্ছে। এটা আমার কথা না, সরকারি রিপোর্টে... বাংলাদেশ ব্যাংকের অডিট রিপোর্টে, বিভিন্ন সোর্স রিপোর্ট। এটার কোনো নিয়ন্ত্রণ না থাকলে... পাচার হয়ে যায়, লিজিং কোম্পানি মানুষের কাছ থেকে টাকা নিয়ে বিদেশে পাচার করে, তাহলে আইন করে লাভ কী? বরং আইন না করে যেগুলো আছে তার বাস্তবায়ন করে, যাতে কোনো রকম দুর্নীতি না হয় তার জন্য সরকারের প্রচেষ্টা নেওয়া উচিত।’ 

বিরোধী সদস্যদের জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে প্রেরণ ও সংশোধনী প্রস্তাবগুলো নিষ্পত্তি শেষে বিলটি কণ্ঠ ভোটে পাস হয়। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের পক্ষে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বিলটি উত্থাপন করেন।

বিলে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি বা একই পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ফাইন্যান্স কোম্পানির (আর্থিক প্রতিষ্ঠান) শেয়ার কেন্দ্রীভূত করা যাবে না। কোনো ব্যক্তি বা একই পরিবারের সদস্যরা কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানির ১৫ ভাগের বেশি শেয়ার কিনতে পারবেন না। এক পরিবার থেকে দুজনের বেশি পরিচালক নিয়োগ করা যাবে না। 

বিলে বলা হয়েছে, কোনো পরিবারের সদস্যদের মধ্য থেকে দুজনের বেশি পরিচালক থাকতে পারবে না। শতকরা ৫ ভাগের বেশি শেয়ারের অধিকারী হলে ওই পরিবারের সদস্যদের মধ্য থেকে সর্বোচ্চ দুজন পরিচালক থাকতে পারবেন। আর দুই থেকে শতকরা ৫ ভাগ শেয়ারের অধিকারী হলে ওই পরিবারের সদস্যদের মধ্য থেকে একজন ফাইন্যান্স কোম্পানির পরিচালক হতে পারবেন। 

বিলে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি বা তাঁর স্বার্থসংশ্লিষ্ট পক্ষ অথবা একই পরিবারের সদস্যরা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে একক বা যৌথভাবে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ১৫ ভাগের বেশি শেয়ার কিনতে পারবেন না। কোনো ব্যক্তি বা তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট পক্ষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে একক বা যৌথভাবে কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানির উল্লেখযোগ্য (কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানির পরিশোধিত মূলধনের শতকরা ৫ ভাগের বেশি শেয়ার) শেয়ার ধারক হলে অন্য কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি বা ব্যাংক কোম্পানির উল্লেখযোগ্য শেয়ার ধারক হতে পারবে না। 

বিলে বলা হয়েছে, কারও কাছে ১৫ শতাংশের অতিরিক্ত শেয়ার থাকলে এই আইন কার্যকর হওয়ার দুই বছরের মধ্যে অতিরিক্ত শেয়ার হস্তান্তর করতে হবে। এটি না করলে অতিরিক্ত শেয়ার সরকারের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত হবে। তবে এসব বিধান সরকারি মালিকানাধীন ফাইন্যান্স কোম্পানির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত