
দেশের বাজারে সয়াবিন তেল সাধারণ মানুষের একপ্রকার নাগালের বাইরে। লিটারপ্রতি দাম বাড়িয়েও কোনো লাভ হয়নি। খোলা বা বোতলজাত— তেল পাওয়াই কঠিন হয়ে গেছে। পাওয়া গেলেও সাধারণ ভোক্তাকে কিনতে হচ্ছে নির্ধারিত দামের চেয়ে অনেক বেশিতে। অথচ এমন নয় যে, সয়াবিন তেলের সরবরাহ নেই। আছে, তবে দোকানে নয়, গুদামে। বাজার তদারকির অভাবের সুযোগ নিয়ে ব্যবসায়ীদের একটি অংশ বিপুল পরিমাণে সয়াবিন তেল মজুত করে রেখেছেন। এখন দেরিতে শুরু হওয়া অভিযানের সূত্র ধরে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে তেল জব্দের খবর আসছে।
রাজশাহীর বাগমারার একটি গুদাম থেকেই উদ্ধার করা হয়েছে ২০ হাজার ৪০০ লিটার ভোজ্যতেল। বাগমারা উপজেলা ও রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি জানিয়েছেন, উপজেলার তাহেরপুর বাজারের এক গুদাম থেকে আজ রাতে ৮টার দিকে পরিচালিত অভিযানে ২০ হাজার ৪০০ লিটার ভোজ্যতেল জব্দ করে পুলিশ।
জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইফতেখায়ের আলম জানান, ‘অসৎ উদ্দেশ্যে গুদামে ভোজ্যতেল মজুত রাখার তথ্যের ভিত্তিতে তারা অভিযানে চালান। এ সময় তাহেরপুর বাজারের শহিদুল ইসলাম ওরফে স্বপন নামের এক ব্যক্তির গুদামে ১০০ ব্যারেল তেল পাওয়া যায়।’
রাজশাহীর এ ঘটনায় একজনকে আটকও করা হয়েছে। শুধু রাজশাহী কেন অন্য অঞ্চলগুলোতেও এমন অভিযান চালানো হচ্ছে। কাউকে জরিমানা করা হচ্ছে। কাউকে আবার আটক করা হচ্ছে। তবু এই মজুতদারি বন্ধ করা যাচ্ছে না।
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী থেকেও এসেছে ভোজ্যতেল নিয়ে তেলেসমাতির খবর। ঈদের আগ থেকেই দাম বাড়বে—এমন আশায় ব্যবসায়ীরা সে সময় থেকেই ভোজ্যতেল মজুত শুরু করেন। শুরু হয় ভোজ্যতেল, বিশেষত সয়াবিন তেলের কৃত্রিম সংকট। আজকের পত্রিকার নাগেশ্বরী প্রতিনিধি জানান, ঈদের পর বোতলজাত সয়াবিন তেলের লিটারপ্রতি দাম ৪৪ টাকা ও খোলা সয়াবিনের দাম ৩৮ টাকা বাড়ানো হয়। বাজারে এখনো বর্ধিত দামের সয়াবিন তেল না এলেও আগে মজুত করা তেলই এখন বর্ধিত দামে বিক্রি হচ্ছে। শুধু তাই নয়, কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে নির্ধারিত দামের চেয়েও বেশি দাম হাঁকছেন তাঁরা। বিশেষত, গ্রামের দোকানে প্রতি লিটার সয়াবিন তেল ২১৫-২২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ অবস্থায় ভোক্তারা রীতিমতো জিম্মি হয়ে পড়েছেন।
উপজেলার কেদার ইউনিয়নের বাহের কেদার গ্রামের জহুরুল ইসলাম বোতলজাত সয়াবিন তেল কিনেছেন ২২০ টাকায়। তাঁর অভিযোগ, বাড়তি দাম নিলেও তেল কিনতে ঘাম ছুটে যাচ্ছে। এ দাম বৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে খাবার হোটেল-রেস্তোরাঁতেও। অনেক হোটেল-রেস্তোরাঁয় পরোটা, মোগলাই, শিঙারা জাতীয় খাবার তৈরি বন্ধ রয়েছে বলে জানান নাগেশ্বরী প্রতিনিধি।
ভোক্তাদের দিক থেকে এত এত অভিযোগ সত্ত্বেও প্রশাসন বলছে সংকট নেই। কুড়িগ্রাম জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘বাজারে ভোজ্যতেলের কোনো সংকট নেই। আমরা বাজার মনিটরিং অব্যাহত রেখেছি। প্রয়োজনে আরও জোরদার করা হবে। আইনের ব্যত্যয় ঘটলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
একই অবস্থা রংপুরেও। জেলার গঙ্গাচড়া প্রতিনিধি জানান, রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার গঙ্গাচড়া বাজার, মন্থানা বাজার, বেতগাড়ি বাজারসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে ভোজ্যতেলের সংকট দেখা গেছে। এর সরাসরি প্রভাব পড়ছে ভোক্তাদের ওপর। বিশেষত নিম্ন আয়ের মানুষেরা পড়েছেন ভীষণ বিপাকে।
কোলকন্দ ইউনিয়নের স্কুল পাড়ার ভ্যান চালক হানিফ মিয়া (৭৮) জানান, দামের কারণে তেল কিনতে না পারায় কয়েক দিন ধরে শুধু পাটশাকের শোলকা রান্না করে খাচ্ছেন তিনি। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘এভাবে তেলের দাম বাড়লে হামার আর তেল দিয়া তরকারি খাওয়া লাগবে না। হামরা ভাতের জোগান দিম, নাকি তেলের টাকা জোগান দিম? সবারে দাম বাড়ছে খালি হামার গুলার ভ্যানের ভাড়ার দাম বাড়ে নাই।’
হানিফ মিয়ার সরাসরি অভিযোগ সরকারের দিকে। তিনি বলেন, ‘সরকার তো হামার মতো ভ্যান চালকের কথা চিন্তা করির নেয়। খালি চিন্তা করে বড় লোকের কথা, এখন তো মনে হওচে সরকার চায় হামরা না খেয়া মরি।’
বাজারে তেলের দাম সম্পর্কে ধারণা পাওয়া গেল এরশাদুল ইসলামের কথায়। বাড়াইবাড়ী বাজারে তেল কিনতে আসা এরশাদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকার তো পেপার-পত্রিকাত খবর দিবার লাগছে তেলের দাম এখন থাকি নাকি ১৮০ থেকে ১৯৮ টাকা করছে। সে তেল কিনির আসি দেখি চোল ২২০-২৩০ টাকা ছাড়া তেলে না ব্যাচায় দেকানদাররা। দোকানিরা কওচে সরকার দাম কমাইলে কি হইবে তেল না পাইলে কি হামরা তোমাক চুরি করি আনি তেল দিম। হামাকো তো বেশি দামে কেনা লাগে এ জন্যে তো হামরাও বেশি দামে ব্যাচাওছি।’
সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন বাজার তদারকি অব্যাহত থাকলে সঠিক দামে ভোজ্যতেল বিক্রি করতেন ব্যবসায়ীরা। উপজেলার বাজারগুলোতে তদারকির ব্যবস্থা নেই বললেই চলে। ফলে সেখানে ইচ্ছামতো দাম হাকানো হচ্ছে। একই ধরনের পরিস্থিতির খবর পাওয়া গেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকেও।
এদিকে টাঙ্গাইলের মধুপুর ও কালিহাতী উপজেলা প্রতিনিধিরাও একই পরিস্থিতির কথা জানিয়েছেন। তাঁরা জানান, সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে সয়াবিন তেলের দাম ব্যাপক হারে বেড়েছে। ভোক্তা পর্যায়ে বোতলজাত সয়াবিন দুষ্প্রাপ্য হয়ে উঠেছে। খোলা তেলই এখন ২২০-২৩০ টাকা লিটার দরে কিনতে বাধ্য হচ্ছেন ভোক্তারা।
মধুপুর ও কালিহাতীর একাধিক ব্যবসায়ী জানান, ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে ভোজ্যতেলের চাহিদা বেড়েছিল। এমন সময় দেশীয় কোম্পানিগুলো বোতলজাত সয়াবিন সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। আবার কোনো কোনো কোম্পানি সয়াবিন তেলের বোতলের সঙ্গে অপ্রচলিত পণ্য চাপিয়ে দেওয়ায় অনেক ব্যবসায়ী সয়াবিন তেল কিনতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। এখনকার সংকটের মূলে রয়েছে এই বিষয়গুলোই।
এ বিষয়ে মধুপুরের সাবেক সাংসদ ও ব্যবসায়ী খন্দকার আনোয়ারুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দেশীয় বড়বড় কোম্পানির মালিকদের সঙ্গে প্রভাবশালী রাজনৈতিক দলের ব্যক্তি ও প্রশাসনিক আমলারা কমিশন বাণিজ্য করায় দেশের বাজার অস্থির হয়ে উঠেছে।’
কোথায় জট লেগেছে, তা খুঁজতে গিয়ে দেখা গেল একেকজন একেক পর্যায়ের ব্যবসায়ীদের দিকে আঙুল তুলছেন। মধুপুর শিল্প ও বণিক সমিতির সহসম্পাদক ও ব্যবসায়ী স্বপন কুমার সাহা বলেন, ‘আমরা নির্ধারিত দামে কিনি, নির্ধারিত দামে বিক্রি করি। আমাদের লাভ হলো কমিশন। আগে ৫ লিটার সয়াবিন ৬০০ টাকা ছিল, এখন কোম্পানি দাম হয়েছে ৯৪৫ টাকা। আমরা বিক্রি করি ৯৬৫ টাকা, খুচরা ব্যবসায়ীরা বিক্রি করছেন বোতলের গায়ে লেখা দাম ৯৮৫ টাকায়।’
কেউ আঙুল তুলছেন কোম্পানির দিকে, কেউ পাইকারের দিকে। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, তাঁরা আগে থেকেই টাকা দিয়ে রাখলেও এখনো তেল সরবরাহ পাননি। আবার অনেকে ভোজ্যতেলের সঙ্গে অপ্রচলিত পণ্য কিনতে বাধ্য করার বিষয়টিকে সামনে আনছেন। কিন্তু এর কোনোটি নিয়েই প্রশাসনিক তদারকি নেই। কালিহাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নাজমুল হুসেইন এ বিষয়ে এখনই জানলেন বলে জানালেন। তিনি বলেন, ‘বিষয়টি ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরকে আমরা অবহিত করব। বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহ বাড়াতে ও খোলা তেলে মান নিয়ন্ত্রণে দ্রুত অভিযান পরিচালনা করা হবে।’
প্রশাসনের তরফ থেকে এ ধরনের বক্তব্য অবশ্য নতুন নয়। সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশের পরই অনেকে ক্ষেত্রে বাজার তদারকিতে নামতে দেখা যাচ্ছে তাদের। নারায়ণগঞ্জেই যেমন পাইকারি ও খুচরা বাজারে সয়াবিন তেলের সংকটের প্রতিবেদন প্রকাশের পর অভিযান পরিচালনা করেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। আজ সোমবার দুপুরে শহরের নিতাইগঞ্জ ও দ্বিগুবাবু বাজারের ফলপট্টি এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন সংস্থাটির জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সেলিমুজ্জামান।
অভিযানের বিষয়ে সেলিমুজ্জামান বলেন, ‘আজ আমরা নিতাইগঞ্জ ও দ্বিগুবাবু বাজারের ফলপট্টি এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেছি। যদি কেউ তেল মজুত করে, তাহলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিব। আমরা আজকে দুটি প্রতিষ্ঠানে গিয়েছি। সেখানে তারা গতকাল ১ লাখ লিটার খোলা তেল মজুত করে এবং আজ (সোমবার) তা বাজারে বিক্রি করছে। আপাতত বাজারে সয়াবিন ও পাম তেলের সংকট নেই।’ তিনি বলেন, ‘আগের দামে কেনা ৫৪০ লিটার তেল পাওয়া গেছে। সেসব তেল আমাদের উপস্থিতিতে ১৫৬ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।’
অথচ প্রশাসন আগে থেকে খোঁজ না পেলেও বিভিন্ন এলাকা থেকেই আসছে বিপুল পরিমাণ ভোজ্যতেল মজুতের খবর। শুরুতেই রাজশাহীর বাগমারার কথা বলা হয়েছে। একইভাবে চট্টগ্রাম নগরীর পাহাড়তলী রেলওয়ে বাজারের দিল্লি গলির সিরাজ স্টোর নামের একটি দোকানের তিন গুদাম থেকে ১৫ হাজার লিটার সয়াবিন তেল জব্দ করে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। সোমবার ওই বাজারে অভিযানে গিয়ে দোকানগুলো তেলশূন্য পেলেও গুদামে ঠিকই বিপুল পরিমাণ সয়াবিন তেলের অস্তিত্ব মেলে। ওই দোকানিকে তেল মজুতের দায়ে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। গতকাল রোববারও নগরীর চৌমুহনীর সিডিএ মার্কেটের খাজা স্টোরের গুদাম থেকে ১ হাজার ৫০ লিটার সয়াবিন তেল জব্দ করা হয়েছিল।
দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকেই এই মজুতদারি ও ভোক্তা দুর্ভোগের খবর আসছে। এসবের প্রতিবাদে আন্দোলনের খবরও আসছে। বরিশাল প্রতিনিধি জানান, ভোজ্যতেলসহ নিত্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে বরিশালে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) নেতা–কর্মীরা সোমবার বিক্ষোভ করেছেন। সোমবার সকালে সদর রোড অশ্বিনী কুমার হল চত্বরে বাসদ নেতা–কর্মীরা এ সমাবেশ করেন। পরে তাঁদের বিক্ষোভ মিছিল নগরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, বাজার ব্যবস্থা এখন পুরোপুরি সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণে। বাণিজ্যসচিব ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করে সয়াবিন তেলের দাম বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছেন। এতে জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধিসহ জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।’
এ ধরনের প্রতিবাদের খবর সারা দেশ থেকেই আসছে। এই পরিস্থিতিতে করণীয় ঠিক করতে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনায় বসছে প্রশাসন। সিলেটে আজ জেলার তেল ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের সঙ্গে জরুরি মতবিনিময় ও অবহিতকরণ সভা করে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। সোমবার সকাল সাড়ে ১১টায় সিলেটের প্রধান পাইকারি ও খুচরা বাজার কালীঘাট এলাকার ব্যবসায়ী সমিতির কার্যালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত এ অস্থিতিশীলতা থামার কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি। কোম্পানির পক্ষ থেকে এখনো যুদ্ধই দেখানো হচ্ছে। কিন্তু মানুষ দেখছে যুদ্ধ তার হেঁশেলে ঢুকে গেছে।
এমন পরিস্থিতিতে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলছেন অসহায়ত্বের কথা। ব্যবসায়ী, মিল মালিক ও সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের সঙ্গে সোমবার হওয়া বৈঠকে তিনি বলেন, ‘ব্যবসায়ীদের আমি বিশ্বাস করে বলেছিলাম আপনারা দাম বাড়াবেন না। কিন্তু তারা দাম বাড়িয়েছে। তাদের ভালোবেসে বিশ্বাস করেছিলাম যে আপনারা দাম বাড়াবেন না। কিন্তু তাদের বিশ্বাস করা ছিল আমার ব্যর্থতা। এভাবে বলা আমার ঠিক হয়নি।’
এই ব্যর্থতার ঘানি এখন নিম্ন আয়ের মানুষেরা টানছেন। প্রত্যন্ত অঞ্চল শুধু নয়, শহরের কেন্দ্রগুলোতেও চলছে ভোজ্যতেলের তেলেসমাতি। বাজার তদারকি বরাবরের মতোই হাপিত্যেশের পর্যায়ে। এ অবস্থায় যদিও বাণিজ্যমন্ত্রী কিছু আশা দেখিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘আগামী জুন মাস থেকে এক কোটি পরিবারকে সুলভ মূল্যে তেল দেওয়া হবে টিসিবির মাধ্যমে। আপাতত টিসিবির তেলের দাম বাড়ানোর পরিকল্পনা নেই। প্রতি লিটার তেল ১১০ টাকা করেই বিক্রি হবে। তেল নিয়ে সিন্ডিকেট হয়নি। তবে খুচরা ব্যবসায়ীরা সুযোগ নিয়েছেন।’

দেশের বাজারে সয়াবিন তেল সাধারণ মানুষের একপ্রকার নাগালের বাইরে। লিটারপ্রতি দাম বাড়িয়েও কোনো লাভ হয়নি। খোলা বা বোতলজাত— তেল পাওয়াই কঠিন হয়ে গেছে। পাওয়া গেলেও সাধারণ ভোক্তাকে কিনতে হচ্ছে নির্ধারিত দামের চেয়ে অনেক বেশিতে। অথচ এমন নয় যে, সয়াবিন তেলের সরবরাহ নেই। আছে, তবে দোকানে নয়, গুদামে। বাজার তদারকির অভাবের সুযোগ নিয়ে ব্যবসায়ীদের একটি অংশ বিপুল পরিমাণে সয়াবিন তেল মজুত করে রেখেছেন। এখন দেরিতে শুরু হওয়া অভিযানের সূত্র ধরে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে তেল জব্দের খবর আসছে।
রাজশাহীর বাগমারার একটি গুদাম থেকেই উদ্ধার করা হয়েছে ২০ হাজার ৪০০ লিটার ভোজ্যতেল। বাগমারা উপজেলা ও রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি জানিয়েছেন, উপজেলার তাহেরপুর বাজারের এক গুদাম থেকে আজ রাতে ৮টার দিকে পরিচালিত অভিযানে ২০ হাজার ৪০০ লিটার ভোজ্যতেল জব্দ করে পুলিশ।
জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইফতেখায়ের আলম জানান, ‘অসৎ উদ্দেশ্যে গুদামে ভোজ্যতেল মজুত রাখার তথ্যের ভিত্তিতে তারা অভিযানে চালান। এ সময় তাহেরপুর বাজারের শহিদুল ইসলাম ওরফে স্বপন নামের এক ব্যক্তির গুদামে ১০০ ব্যারেল তেল পাওয়া যায়।’
রাজশাহীর এ ঘটনায় একজনকে আটকও করা হয়েছে। শুধু রাজশাহী কেন অন্য অঞ্চলগুলোতেও এমন অভিযান চালানো হচ্ছে। কাউকে জরিমানা করা হচ্ছে। কাউকে আবার আটক করা হচ্ছে। তবু এই মজুতদারি বন্ধ করা যাচ্ছে না।
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী থেকেও এসেছে ভোজ্যতেল নিয়ে তেলেসমাতির খবর। ঈদের আগ থেকেই দাম বাড়বে—এমন আশায় ব্যবসায়ীরা সে সময় থেকেই ভোজ্যতেল মজুত শুরু করেন। শুরু হয় ভোজ্যতেল, বিশেষত সয়াবিন তেলের কৃত্রিম সংকট। আজকের পত্রিকার নাগেশ্বরী প্রতিনিধি জানান, ঈদের পর বোতলজাত সয়াবিন তেলের লিটারপ্রতি দাম ৪৪ টাকা ও খোলা সয়াবিনের দাম ৩৮ টাকা বাড়ানো হয়। বাজারে এখনো বর্ধিত দামের সয়াবিন তেল না এলেও আগে মজুত করা তেলই এখন বর্ধিত দামে বিক্রি হচ্ছে। শুধু তাই নয়, কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে নির্ধারিত দামের চেয়েও বেশি দাম হাঁকছেন তাঁরা। বিশেষত, গ্রামের দোকানে প্রতি লিটার সয়াবিন তেল ২১৫-২২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ অবস্থায় ভোক্তারা রীতিমতো জিম্মি হয়ে পড়েছেন।
উপজেলার কেদার ইউনিয়নের বাহের কেদার গ্রামের জহুরুল ইসলাম বোতলজাত সয়াবিন তেল কিনেছেন ২২০ টাকায়। তাঁর অভিযোগ, বাড়তি দাম নিলেও তেল কিনতে ঘাম ছুটে যাচ্ছে। এ দাম বৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে খাবার হোটেল-রেস্তোরাঁতেও। অনেক হোটেল-রেস্তোরাঁয় পরোটা, মোগলাই, শিঙারা জাতীয় খাবার তৈরি বন্ধ রয়েছে বলে জানান নাগেশ্বরী প্রতিনিধি।
ভোক্তাদের দিক থেকে এত এত অভিযোগ সত্ত্বেও প্রশাসন বলছে সংকট নেই। কুড়িগ্রাম জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘বাজারে ভোজ্যতেলের কোনো সংকট নেই। আমরা বাজার মনিটরিং অব্যাহত রেখেছি। প্রয়োজনে আরও জোরদার করা হবে। আইনের ব্যত্যয় ঘটলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
একই অবস্থা রংপুরেও। জেলার গঙ্গাচড়া প্রতিনিধি জানান, রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার গঙ্গাচড়া বাজার, মন্থানা বাজার, বেতগাড়ি বাজারসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে ভোজ্যতেলের সংকট দেখা গেছে। এর সরাসরি প্রভাব পড়ছে ভোক্তাদের ওপর। বিশেষত নিম্ন আয়ের মানুষেরা পড়েছেন ভীষণ বিপাকে।
কোলকন্দ ইউনিয়নের স্কুল পাড়ার ভ্যান চালক হানিফ মিয়া (৭৮) জানান, দামের কারণে তেল কিনতে না পারায় কয়েক দিন ধরে শুধু পাটশাকের শোলকা রান্না করে খাচ্ছেন তিনি। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘এভাবে তেলের দাম বাড়লে হামার আর তেল দিয়া তরকারি খাওয়া লাগবে না। হামরা ভাতের জোগান দিম, নাকি তেলের টাকা জোগান দিম? সবারে দাম বাড়ছে খালি হামার গুলার ভ্যানের ভাড়ার দাম বাড়ে নাই।’
হানিফ মিয়ার সরাসরি অভিযোগ সরকারের দিকে। তিনি বলেন, ‘সরকার তো হামার মতো ভ্যান চালকের কথা চিন্তা করির নেয়। খালি চিন্তা করে বড় লোকের কথা, এখন তো মনে হওচে সরকার চায় হামরা না খেয়া মরি।’
বাজারে তেলের দাম সম্পর্কে ধারণা পাওয়া গেল এরশাদুল ইসলামের কথায়। বাড়াইবাড়ী বাজারে তেল কিনতে আসা এরশাদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকার তো পেপার-পত্রিকাত খবর দিবার লাগছে তেলের দাম এখন থাকি নাকি ১৮০ থেকে ১৯৮ টাকা করছে। সে তেল কিনির আসি দেখি চোল ২২০-২৩০ টাকা ছাড়া তেলে না ব্যাচায় দেকানদাররা। দোকানিরা কওচে সরকার দাম কমাইলে কি হইবে তেল না পাইলে কি হামরা তোমাক চুরি করি আনি তেল দিম। হামাকো তো বেশি দামে কেনা লাগে এ জন্যে তো হামরাও বেশি দামে ব্যাচাওছি।’
সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন বাজার তদারকি অব্যাহত থাকলে সঠিক দামে ভোজ্যতেল বিক্রি করতেন ব্যবসায়ীরা। উপজেলার বাজারগুলোতে তদারকির ব্যবস্থা নেই বললেই চলে। ফলে সেখানে ইচ্ছামতো দাম হাকানো হচ্ছে। একই ধরনের পরিস্থিতির খবর পাওয়া গেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকেও।
এদিকে টাঙ্গাইলের মধুপুর ও কালিহাতী উপজেলা প্রতিনিধিরাও একই পরিস্থিতির কথা জানিয়েছেন। তাঁরা জানান, সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে সয়াবিন তেলের দাম ব্যাপক হারে বেড়েছে। ভোক্তা পর্যায়ে বোতলজাত সয়াবিন দুষ্প্রাপ্য হয়ে উঠেছে। খোলা তেলই এখন ২২০-২৩০ টাকা লিটার দরে কিনতে বাধ্য হচ্ছেন ভোক্তারা।
মধুপুর ও কালিহাতীর একাধিক ব্যবসায়ী জানান, ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে ভোজ্যতেলের চাহিদা বেড়েছিল। এমন সময় দেশীয় কোম্পানিগুলো বোতলজাত সয়াবিন সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। আবার কোনো কোনো কোম্পানি সয়াবিন তেলের বোতলের সঙ্গে অপ্রচলিত পণ্য চাপিয়ে দেওয়ায় অনেক ব্যবসায়ী সয়াবিন তেল কিনতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। এখনকার সংকটের মূলে রয়েছে এই বিষয়গুলোই।
এ বিষয়ে মধুপুরের সাবেক সাংসদ ও ব্যবসায়ী খন্দকার আনোয়ারুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দেশীয় বড়বড় কোম্পানির মালিকদের সঙ্গে প্রভাবশালী রাজনৈতিক দলের ব্যক্তি ও প্রশাসনিক আমলারা কমিশন বাণিজ্য করায় দেশের বাজার অস্থির হয়ে উঠেছে।’
কোথায় জট লেগেছে, তা খুঁজতে গিয়ে দেখা গেল একেকজন একেক পর্যায়ের ব্যবসায়ীদের দিকে আঙুল তুলছেন। মধুপুর শিল্প ও বণিক সমিতির সহসম্পাদক ও ব্যবসায়ী স্বপন কুমার সাহা বলেন, ‘আমরা নির্ধারিত দামে কিনি, নির্ধারিত দামে বিক্রি করি। আমাদের লাভ হলো কমিশন। আগে ৫ লিটার সয়াবিন ৬০০ টাকা ছিল, এখন কোম্পানি দাম হয়েছে ৯৪৫ টাকা। আমরা বিক্রি করি ৯৬৫ টাকা, খুচরা ব্যবসায়ীরা বিক্রি করছেন বোতলের গায়ে লেখা দাম ৯৮৫ টাকায়।’
কেউ আঙুল তুলছেন কোম্পানির দিকে, কেউ পাইকারের দিকে। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, তাঁরা আগে থেকেই টাকা দিয়ে রাখলেও এখনো তেল সরবরাহ পাননি। আবার অনেকে ভোজ্যতেলের সঙ্গে অপ্রচলিত পণ্য কিনতে বাধ্য করার বিষয়টিকে সামনে আনছেন। কিন্তু এর কোনোটি নিয়েই প্রশাসনিক তদারকি নেই। কালিহাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নাজমুল হুসেইন এ বিষয়ে এখনই জানলেন বলে জানালেন। তিনি বলেন, ‘বিষয়টি ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরকে আমরা অবহিত করব। বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহ বাড়াতে ও খোলা তেলে মান নিয়ন্ত্রণে দ্রুত অভিযান পরিচালনা করা হবে।’
প্রশাসনের তরফ থেকে এ ধরনের বক্তব্য অবশ্য নতুন নয়। সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশের পরই অনেকে ক্ষেত্রে বাজার তদারকিতে নামতে দেখা যাচ্ছে তাদের। নারায়ণগঞ্জেই যেমন পাইকারি ও খুচরা বাজারে সয়াবিন তেলের সংকটের প্রতিবেদন প্রকাশের পর অভিযান পরিচালনা করেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। আজ সোমবার দুপুরে শহরের নিতাইগঞ্জ ও দ্বিগুবাবু বাজারের ফলপট্টি এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন সংস্থাটির জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সেলিমুজ্জামান।
অভিযানের বিষয়ে সেলিমুজ্জামান বলেন, ‘আজ আমরা নিতাইগঞ্জ ও দ্বিগুবাবু বাজারের ফলপট্টি এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেছি। যদি কেউ তেল মজুত করে, তাহলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিব। আমরা আজকে দুটি প্রতিষ্ঠানে গিয়েছি। সেখানে তারা গতকাল ১ লাখ লিটার খোলা তেল মজুত করে এবং আজ (সোমবার) তা বাজারে বিক্রি করছে। আপাতত বাজারে সয়াবিন ও পাম তেলের সংকট নেই।’ তিনি বলেন, ‘আগের দামে কেনা ৫৪০ লিটার তেল পাওয়া গেছে। সেসব তেল আমাদের উপস্থিতিতে ১৫৬ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।’
অথচ প্রশাসন আগে থেকে খোঁজ না পেলেও বিভিন্ন এলাকা থেকেই আসছে বিপুল পরিমাণ ভোজ্যতেল মজুতের খবর। শুরুতেই রাজশাহীর বাগমারার কথা বলা হয়েছে। একইভাবে চট্টগ্রাম নগরীর পাহাড়তলী রেলওয়ে বাজারের দিল্লি গলির সিরাজ স্টোর নামের একটি দোকানের তিন গুদাম থেকে ১৫ হাজার লিটার সয়াবিন তেল জব্দ করে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। সোমবার ওই বাজারে অভিযানে গিয়ে দোকানগুলো তেলশূন্য পেলেও গুদামে ঠিকই বিপুল পরিমাণ সয়াবিন তেলের অস্তিত্ব মেলে। ওই দোকানিকে তেল মজুতের দায়ে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। গতকাল রোববারও নগরীর চৌমুহনীর সিডিএ মার্কেটের খাজা স্টোরের গুদাম থেকে ১ হাজার ৫০ লিটার সয়াবিন তেল জব্দ করা হয়েছিল।
দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকেই এই মজুতদারি ও ভোক্তা দুর্ভোগের খবর আসছে। এসবের প্রতিবাদে আন্দোলনের খবরও আসছে। বরিশাল প্রতিনিধি জানান, ভোজ্যতেলসহ নিত্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে বরিশালে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) নেতা–কর্মীরা সোমবার বিক্ষোভ করেছেন। সোমবার সকালে সদর রোড অশ্বিনী কুমার হল চত্বরে বাসদ নেতা–কর্মীরা এ সমাবেশ করেন। পরে তাঁদের বিক্ষোভ মিছিল নগরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, বাজার ব্যবস্থা এখন পুরোপুরি সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণে। বাণিজ্যসচিব ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করে সয়াবিন তেলের দাম বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছেন। এতে জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধিসহ জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।’
এ ধরনের প্রতিবাদের খবর সারা দেশ থেকেই আসছে। এই পরিস্থিতিতে করণীয় ঠিক করতে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনায় বসছে প্রশাসন। সিলেটে আজ জেলার তেল ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের সঙ্গে জরুরি মতবিনিময় ও অবহিতকরণ সভা করে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। সোমবার সকাল সাড়ে ১১টায় সিলেটের প্রধান পাইকারি ও খুচরা বাজার কালীঘাট এলাকার ব্যবসায়ী সমিতির কার্যালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত এ অস্থিতিশীলতা থামার কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি। কোম্পানির পক্ষ থেকে এখনো যুদ্ধই দেখানো হচ্ছে। কিন্তু মানুষ দেখছে যুদ্ধ তার হেঁশেলে ঢুকে গেছে।
এমন পরিস্থিতিতে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলছেন অসহায়ত্বের কথা। ব্যবসায়ী, মিল মালিক ও সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের সঙ্গে সোমবার হওয়া বৈঠকে তিনি বলেন, ‘ব্যবসায়ীদের আমি বিশ্বাস করে বলেছিলাম আপনারা দাম বাড়াবেন না। কিন্তু তারা দাম বাড়িয়েছে। তাদের ভালোবেসে বিশ্বাস করেছিলাম যে আপনারা দাম বাড়াবেন না। কিন্তু তাদের বিশ্বাস করা ছিল আমার ব্যর্থতা। এভাবে বলা আমার ঠিক হয়নি।’
এই ব্যর্থতার ঘানি এখন নিম্ন আয়ের মানুষেরা টানছেন। প্রত্যন্ত অঞ্চল শুধু নয়, শহরের কেন্দ্রগুলোতেও চলছে ভোজ্যতেলের তেলেসমাতি। বাজার তদারকি বরাবরের মতোই হাপিত্যেশের পর্যায়ে। এ অবস্থায় যদিও বাণিজ্যমন্ত্রী কিছু আশা দেখিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘আগামী জুন মাস থেকে এক কোটি পরিবারকে সুলভ মূল্যে তেল দেওয়া হবে টিসিবির মাধ্যমে। আপাতত টিসিবির তেলের দাম বাড়ানোর পরিকল্পনা নেই। প্রতি লিটার তেল ১১০ টাকা করেই বিক্রি হবে। তেল নিয়ে সিন্ডিকেট হয়নি। তবে খুচরা ব্যবসায়ীরা সুযোগ নিয়েছেন।’

দেশের বাজারে সয়াবিন তেল সাধারণ মানুষের একপ্রকার নাগালের বাইরে। লিটারপ্রতি দাম বাড়িয়েও কোনো লাভ হয়নি। খোলা বা বোতলজাত— তেল পাওয়াই কঠিন হয়ে গেছে। পাওয়া গেলেও সাধারণ ভোক্তাকে কিনতে হচ্ছে নির্ধারিত দামের চেয়ে অনেক বেশিতে। অথচ এমন নয় যে, সয়াবিন তেলের সরবরাহ নেই। আছে, তবে দোকানে নয়, গুদামে। বাজার তদারকির অভাবের সুযোগ নিয়ে ব্যবসায়ীদের একটি অংশ বিপুল পরিমাণে সয়াবিন তেল মজুত করে রেখেছেন। এখন দেরিতে শুরু হওয়া অভিযানের সূত্র ধরে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে তেল জব্দের খবর আসছে।
রাজশাহীর বাগমারার একটি গুদাম থেকেই উদ্ধার করা হয়েছে ২০ হাজার ৪০০ লিটার ভোজ্যতেল। বাগমারা উপজেলা ও রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি জানিয়েছেন, উপজেলার তাহেরপুর বাজারের এক গুদাম থেকে আজ রাতে ৮টার দিকে পরিচালিত অভিযানে ২০ হাজার ৪০০ লিটার ভোজ্যতেল জব্দ করে পুলিশ।
জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইফতেখায়ের আলম জানান, ‘অসৎ উদ্দেশ্যে গুদামে ভোজ্যতেল মজুত রাখার তথ্যের ভিত্তিতে তারা অভিযানে চালান। এ সময় তাহেরপুর বাজারের শহিদুল ইসলাম ওরফে স্বপন নামের এক ব্যক্তির গুদামে ১০০ ব্যারেল তেল পাওয়া যায়।’
রাজশাহীর এ ঘটনায় একজনকে আটকও করা হয়েছে। শুধু রাজশাহী কেন অন্য অঞ্চলগুলোতেও এমন অভিযান চালানো হচ্ছে। কাউকে জরিমানা করা হচ্ছে। কাউকে আবার আটক করা হচ্ছে। তবু এই মজুতদারি বন্ধ করা যাচ্ছে না।
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী থেকেও এসেছে ভোজ্যতেল নিয়ে তেলেসমাতির খবর। ঈদের আগ থেকেই দাম বাড়বে—এমন আশায় ব্যবসায়ীরা সে সময় থেকেই ভোজ্যতেল মজুত শুরু করেন। শুরু হয় ভোজ্যতেল, বিশেষত সয়াবিন তেলের কৃত্রিম সংকট। আজকের পত্রিকার নাগেশ্বরী প্রতিনিধি জানান, ঈদের পর বোতলজাত সয়াবিন তেলের লিটারপ্রতি দাম ৪৪ টাকা ও খোলা সয়াবিনের দাম ৩৮ টাকা বাড়ানো হয়। বাজারে এখনো বর্ধিত দামের সয়াবিন তেল না এলেও আগে মজুত করা তেলই এখন বর্ধিত দামে বিক্রি হচ্ছে। শুধু তাই নয়, কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে নির্ধারিত দামের চেয়েও বেশি দাম হাঁকছেন তাঁরা। বিশেষত, গ্রামের দোকানে প্রতি লিটার সয়াবিন তেল ২১৫-২২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ অবস্থায় ভোক্তারা রীতিমতো জিম্মি হয়ে পড়েছেন।
উপজেলার কেদার ইউনিয়নের বাহের কেদার গ্রামের জহুরুল ইসলাম বোতলজাত সয়াবিন তেল কিনেছেন ২২০ টাকায়। তাঁর অভিযোগ, বাড়তি দাম নিলেও তেল কিনতে ঘাম ছুটে যাচ্ছে। এ দাম বৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে খাবার হোটেল-রেস্তোরাঁতেও। অনেক হোটেল-রেস্তোরাঁয় পরোটা, মোগলাই, শিঙারা জাতীয় খাবার তৈরি বন্ধ রয়েছে বলে জানান নাগেশ্বরী প্রতিনিধি।
ভোক্তাদের দিক থেকে এত এত অভিযোগ সত্ত্বেও প্রশাসন বলছে সংকট নেই। কুড়িগ্রাম জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘বাজারে ভোজ্যতেলের কোনো সংকট নেই। আমরা বাজার মনিটরিং অব্যাহত রেখেছি। প্রয়োজনে আরও জোরদার করা হবে। আইনের ব্যত্যয় ঘটলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
একই অবস্থা রংপুরেও। জেলার গঙ্গাচড়া প্রতিনিধি জানান, রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার গঙ্গাচড়া বাজার, মন্থানা বাজার, বেতগাড়ি বাজারসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে ভোজ্যতেলের সংকট দেখা গেছে। এর সরাসরি প্রভাব পড়ছে ভোক্তাদের ওপর। বিশেষত নিম্ন আয়ের মানুষেরা পড়েছেন ভীষণ বিপাকে।
কোলকন্দ ইউনিয়নের স্কুল পাড়ার ভ্যান চালক হানিফ মিয়া (৭৮) জানান, দামের কারণে তেল কিনতে না পারায় কয়েক দিন ধরে শুধু পাটশাকের শোলকা রান্না করে খাচ্ছেন তিনি। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘এভাবে তেলের দাম বাড়লে হামার আর তেল দিয়া তরকারি খাওয়া লাগবে না। হামরা ভাতের জোগান দিম, নাকি তেলের টাকা জোগান দিম? সবারে দাম বাড়ছে খালি হামার গুলার ভ্যানের ভাড়ার দাম বাড়ে নাই।’
হানিফ মিয়ার সরাসরি অভিযোগ সরকারের দিকে। তিনি বলেন, ‘সরকার তো হামার মতো ভ্যান চালকের কথা চিন্তা করির নেয়। খালি চিন্তা করে বড় লোকের কথা, এখন তো মনে হওচে সরকার চায় হামরা না খেয়া মরি।’
বাজারে তেলের দাম সম্পর্কে ধারণা পাওয়া গেল এরশাদুল ইসলামের কথায়। বাড়াইবাড়ী বাজারে তেল কিনতে আসা এরশাদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকার তো পেপার-পত্রিকাত খবর দিবার লাগছে তেলের দাম এখন থাকি নাকি ১৮০ থেকে ১৯৮ টাকা করছে। সে তেল কিনির আসি দেখি চোল ২২০-২৩০ টাকা ছাড়া তেলে না ব্যাচায় দেকানদাররা। দোকানিরা কওচে সরকার দাম কমাইলে কি হইবে তেল না পাইলে কি হামরা তোমাক চুরি করি আনি তেল দিম। হামাকো তো বেশি দামে কেনা লাগে এ জন্যে তো হামরাও বেশি দামে ব্যাচাওছি।’
সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন বাজার তদারকি অব্যাহত থাকলে সঠিক দামে ভোজ্যতেল বিক্রি করতেন ব্যবসায়ীরা। উপজেলার বাজারগুলোতে তদারকির ব্যবস্থা নেই বললেই চলে। ফলে সেখানে ইচ্ছামতো দাম হাকানো হচ্ছে। একই ধরনের পরিস্থিতির খবর পাওয়া গেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকেও।
এদিকে টাঙ্গাইলের মধুপুর ও কালিহাতী উপজেলা প্রতিনিধিরাও একই পরিস্থিতির কথা জানিয়েছেন। তাঁরা জানান, সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে সয়াবিন তেলের দাম ব্যাপক হারে বেড়েছে। ভোক্তা পর্যায়ে বোতলজাত সয়াবিন দুষ্প্রাপ্য হয়ে উঠেছে। খোলা তেলই এখন ২২০-২৩০ টাকা লিটার দরে কিনতে বাধ্য হচ্ছেন ভোক্তারা।
মধুপুর ও কালিহাতীর একাধিক ব্যবসায়ী জানান, ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে ভোজ্যতেলের চাহিদা বেড়েছিল। এমন সময় দেশীয় কোম্পানিগুলো বোতলজাত সয়াবিন সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। আবার কোনো কোনো কোম্পানি সয়াবিন তেলের বোতলের সঙ্গে অপ্রচলিত পণ্য চাপিয়ে দেওয়ায় অনেক ব্যবসায়ী সয়াবিন তেল কিনতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। এখনকার সংকটের মূলে রয়েছে এই বিষয়গুলোই।
এ বিষয়ে মধুপুরের সাবেক সাংসদ ও ব্যবসায়ী খন্দকার আনোয়ারুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দেশীয় বড়বড় কোম্পানির মালিকদের সঙ্গে প্রভাবশালী রাজনৈতিক দলের ব্যক্তি ও প্রশাসনিক আমলারা কমিশন বাণিজ্য করায় দেশের বাজার অস্থির হয়ে উঠেছে।’
কোথায় জট লেগেছে, তা খুঁজতে গিয়ে দেখা গেল একেকজন একেক পর্যায়ের ব্যবসায়ীদের দিকে আঙুল তুলছেন। মধুপুর শিল্প ও বণিক সমিতির সহসম্পাদক ও ব্যবসায়ী স্বপন কুমার সাহা বলেন, ‘আমরা নির্ধারিত দামে কিনি, নির্ধারিত দামে বিক্রি করি। আমাদের লাভ হলো কমিশন। আগে ৫ লিটার সয়াবিন ৬০০ টাকা ছিল, এখন কোম্পানি দাম হয়েছে ৯৪৫ টাকা। আমরা বিক্রি করি ৯৬৫ টাকা, খুচরা ব্যবসায়ীরা বিক্রি করছেন বোতলের গায়ে লেখা দাম ৯৮৫ টাকায়।’
কেউ আঙুল তুলছেন কোম্পানির দিকে, কেউ পাইকারের দিকে। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, তাঁরা আগে থেকেই টাকা দিয়ে রাখলেও এখনো তেল সরবরাহ পাননি। আবার অনেকে ভোজ্যতেলের সঙ্গে অপ্রচলিত পণ্য কিনতে বাধ্য করার বিষয়টিকে সামনে আনছেন। কিন্তু এর কোনোটি নিয়েই প্রশাসনিক তদারকি নেই। কালিহাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নাজমুল হুসেইন এ বিষয়ে এখনই জানলেন বলে জানালেন। তিনি বলেন, ‘বিষয়টি ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরকে আমরা অবহিত করব। বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহ বাড়াতে ও খোলা তেলে মান নিয়ন্ত্রণে দ্রুত অভিযান পরিচালনা করা হবে।’
প্রশাসনের তরফ থেকে এ ধরনের বক্তব্য অবশ্য নতুন নয়। সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশের পরই অনেকে ক্ষেত্রে বাজার তদারকিতে নামতে দেখা যাচ্ছে তাদের। নারায়ণগঞ্জেই যেমন পাইকারি ও খুচরা বাজারে সয়াবিন তেলের সংকটের প্রতিবেদন প্রকাশের পর অভিযান পরিচালনা করেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। আজ সোমবার দুপুরে শহরের নিতাইগঞ্জ ও দ্বিগুবাবু বাজারের ফলপট্টি এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন সংস্থাটির জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সেলিমুজ্জামান।
অভিযানের বিষয়ে সেলিমুজ্জামান বলেন, ‘আজ আমরা নিতাইগঞ্জ ও দ্বিগুবাবু বাজারের ফলপট্টি এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেছি। যদি কেউ তেল মজুত করে, তাহলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিব। আমরা আজকে দুটি প্রতিষ্ঠানে গিয়েছি। সেখানে তারা গতকাল ১ লাখ লিটার খোলা তেল মজুত করে এবং আজ (সোমবার) তা বাজারে বিক্রি করছে। আপাতত বাজারে সয়াবিন ও পাম তেলের সংকট নেই।’ তিনি বলেন, ‘আগের দামে কেনা ৫৪০ লিটার তেল পাওয়া গেছে। সেসব তেল আমাদের উপস্থিতিতে ১৫৬ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।’
অথচ প্রশাসন আগে থেকে খোঁজ না পেলেও বিভিন্ন এলাকা থেকেই আসছে বিপুল পরিমাণ ভোজ্যতেল মজুতের খবর। শুরুতেই রাজশাহীর বাগমারার কথা বলা হয়েছে। একইভাবে চট্টগ্রাম নগরীর পাহাড়তলী রেলওয়ে বাজারের দিল্লি গলির সিরাজ স্টোর নামের একটি দোকানের তিন গুদাম থেকে ১৫ হাজার লিটার সয়াবিন তেল জব্দ করে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। সোমবার ওই বাজারে অভিযানে গিয়ে দোকানগুলো তেলশূন্য পেলেও গুদামে ঠিকই বিপুল পরিমাণ সয়াবিন তেলের অস্তিত্ব মেলে। ওই দোকানিকে তেল মজুতের দায়ে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। গতকাল রোববারও নগরীর চৌমুহনীর সিডিএ মার্কেটের খাজা স্টোরের গুদাম থেকে ১ হাজার ৫০ লিটার সয়াবিন তেল জব্দ করা হয়েছিল।
দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকেই এই মজুতদারি ও ভোক্তা দুর্ভোগের খবর আসছে। এসবের প্রতিবাদে আন্দোলনের খবরও আসছে। বরিশাল প্রতিনিধি জানান, ভোজ্যতেলসহ নিত্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে বরিশালে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) নেতা–কর্মীরা সোমবার বিক্ষোভ করেছেন। সোমবার সকালে সদর রোড অশ্বিনী কুমার হল চত্বরে বাসদ নেতা–কর্মীরা এ সমাবেশ করেন। পরে তাঁদের বিক্ষোভ মিছিল নগরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, বাজার ব্যবস্থা এখন পুরোপুরি সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণে। বাণিজ্যসচিব ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করে সয়াবিন তেলের দাম বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছেন। এতে জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধিসহ জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।’
এ ধরনের প্রতিবাদের খবর সারা দেশ থেকেই আসছে। এই পরিস্থিতিতে করণীয় ঠিক করতে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনায় বসছে প্রশাসন। সিলেটে আজ জেলার তেল ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের সঙ্গে জরুরি মতবিনিময় ও অবহিতকরণ সভা করে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। সোমবার সকাল সাড়ে ১১টায় সিলেটের প্রধান পাইকারি ও খুচরা বাজার কালীঘাট এলাকার ব্যবসায়ী সমিতির কার্যালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত এ অস্থিতিশীলতা থামার কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি। কোম্পানির পক্ষ থেকে এখনো যুদ্ধই দেখানো হচ্ছে। কিন্তু মানুষ দেখছে যুদ্ধ তার হেঁশেলে ঢুকে গেছে।
এমন পরিস্থিতিতে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলছেন অসহায়ত্বের কথা। ব্যবসায়ী, মিল মালিক ও সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের সঙ্গে সোমবার হওয়া বৈঠকে তিনি বলেন, ‘ব্যবসায়ীদের আমি বিশ্বাস করে বলেছিলাম আপনারা দাম বাড়াবেন না। কিন্তু তারা দাম বাড়িয়েছে। তাদের ভালোবেসে বিশ্বাস করেছিলাম যে আপনারা দাম বাড়াবেন না। কিন্তু তাদের বিশ্বাস করা ছিল আমার ব্যর্থতা। এভাবে বলা আমার ঠিক হয়নি।’
এই ব্যর্থতার ঘানি এখন নিম্ন আয়ের মানুষেরা টানছেন। প্রত্যন্ত অঞ্চল শুধু নয়, শহরের কেন্দ্রগুলোতেও চলছে ভোজ্যতেলের তেলেসমাতি। বাজার তদারকি বরাবরের মতোই হাপিত্যেশের পর্যায়ে। এ অবস্থায় যদিও বাণিজ্যমন্ত্রী কিছু আশা দেখিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘আগামী জুন মাস থেকে এক কোটি পরিবারকে সুলভ মূল্যে তেল দেওয়া হবে টিসিবির মাধ্যমে। আপাতত টিসিবির তেলের দাম বাড়ানোর পরিকল্পনা নেই। প্রতি লিটার তেল ১১০ টাকা করেই বিক্রি হবে। তেল নিয়ে সিন্ডিকেট হয়নি। তবে খুচরা ব্যবসায়ীরা সুযোগ নিয়েছেন।’

দেশের বাজারে সয়াবিন তেল সাধারণ মানুষের একপ্রকার নাগালের বাইরে। লিটারপ্রতি দাম বাড়িয়েও কোনো লাভ হয়নি। খোলা বা বোতলজাত— তেল পাওয়াই কঠিন হয়ে গেছে। পাওয়া গেলেও সাধারণ ভোক্তাকে কিনতে হচ্ছে নির্ধারিত দামের চেয়ে অনেক বেশিতে। অথচ এমন নয় যে, সয়াবিন তেলের সরবরাহ নেই। আছে, তবে দোকানে নয়, গুদামে। বাজার তদারকির অভাবের সুযোগ নিয়ে ব্যবসায়ীদের একটি অংশ বিপুল পরিমাণে সয়াবিন তেল মজুত করে রেখেছেন। এখন দেরিতে শুরু হওয়া অভিযানের সূত্র ধরে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে তেল জব্দের খবর আসছে।
রাজশাহীর বাগমারার একটি গুদাম থেকেই উদ্ধার করা হয়েছে ২০ হাজার ৪০০ লিটার ভোজ্যতেল। বাগমারা উপজেলা ও রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি জানিয়েছেন, উপজেলার তাহেরপুর বাজারের এক গুদাম থেকে আজ রাতে ৮টার দিকে পরিচালিত অভিযানে ২০ হাজার ৪০০ লিটার ভোজ্যতেল জব্দ করে পুলিশ।
জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইফতেখায়ের আলম জানান, ‘অসৎ উদ্দেশ্যে গুদামে ভোজ্যতেল মজুত রাখার তথ্যের ভিত্তিতে তারা অভিযানে চালান। এ সময় তাহেরপুর বাজারের শহিদুল ইসলাম ওরফে স্বপন নামের এক ব্যক্তির গুদামে ১০০ ব্যারেল তেল পাওয়া যায়।’
রাজশাহীর এ ঘটনায় একজনকে আটকও করা হয়েছে। শুধু রাজশাহী কেন অন্য অঞ্চলগুলোতেও এমন অভিযান চালানো হচ্ছে। কাউকে জরিমানা করা হচ্ছে। কাউকে আবার আটক করা হচ্ছে। তবু এই মজুতদারি বন্ধ করা যাচ্ছে না।
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী থেকেও এসেছে ভোজ্যতেল নিয়ে তেলেসমাতির খবর। ঈদের আগ থেকেই দাম বাড়বে—এমন আশায় ব্যবসায়ীরা সে সময় থেকেই ভোজ্যতেল মজুত শুরু করেন। শুরু হয় ভোজ্যতেল, বিশেষত সয়াবিন তেলের কৃত্রিম সংকট। আজকের পত্রিকার নাগেশ্বরী প্রতিনিধি জানান, ঈদের পর বোতলজাত সয়াবিন তেলের লিটারপ্রতি দাম ৪৪ টাকা ও খোলা সয়াবিনের দাম ৩৮ টাকা বাড়ানো হয়। বাজারে এখনো বর্ধিত দামের সয়াবিন তেল না এলেও আগে মজুত করা তেলই এখন বর্ধিত দামে বিক্রি হচ্ছে। শুধু তাই নয়, কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে নির্ধারিত দামের চেয়েও বেশি দাম হাঁকছেন তাঁরা। বিশেষত, গ্রামের দোকানে প্রতি লিটার সয়াবিন তেল ২১৫-২২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ অবস্থায় ভোক্তারা রীতিমতো জিম্মি হয়ে পড়েছেন।
উপজেলার কেদার ইউনিয়নের বাহের কেদার গ্রামের জহুরুল ইসলাম বোতলজাত সয়াবিন তেল কিনেছেন ২২০ টাকায়। তাঁর অভিযোগ, বাড়তি দাম নিলেও তেল কিনতে ঘাম ছুটে যাচ্ছে। এ দাম বৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে খাবার হোটেল-রেস্তোরাঁতেও। অনেক হোটেল-রেস্তোরাঁয় পরোটা, মোগলাই, শিঙারা জাতীয় খাবার তৈরি বন্ধ রয়েছে বলে জানান নাগেশ্বরী প্রতিনিধি।
ভোক্তাদের দিক থেকে এত এত অভিযোগ সত্ত্বেও প্রশাসন বলছে সংকট নেই। কুড়িগ্রাম জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘বাজারে ভোজ্যতেলের কোনো সংকট নেই। আমরা বাজার মনিটরিং অব্যাহত রেখেছি। প্রয়োজনে আরও জোরদার করা হবে। আইনের ব্যত্যয় ঘটলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
একই অবস্থা রংপুরেও। জেলার গঙ্গাচড়া প্রতিনিধি জানান, রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার গঙ্গাচড়া বাজার, মন্থানা বাজার, বেতগাড়ি বাজারসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে ভোজ্যতেলের সংকট দেখা গেছে। এর সরাসরি প্রভাব পড়ছে ভোক্তাদের ওপর। বিশেষত নিম্ন আয়ের মানুষেরা পড়েছেন ভীষণ বিপাকে।
কোলকন্দ ইউনিয়নের স্কুল পাড়ার ভ্যান চালক হানিফ মিয়া (৭৮) জানান, দামের কারণে তেল কিনতে না পারায় কয়েক দিন ধরে শুধু পাটশাকের শোলকা রান্না করে খাচ্ছেন তিনি। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘এভাবে তেলের দাম বাড়লে হামার আর তেল দিয়া তরকারি খাওয়া লাগবে না। হামরা ভাতের জোগান দিম, নাকি তেলের টাকা জোগান দিম? সবারে দাম বাড়ছে খালি হামার গুলার ভ্যানের ভাড়ার দাম বাড়ে নাই।’
হানিফ মিয়ার সরাসরি অভিযোগ সরকারের দিকে। তিনি বলেন, ‘সরকার তো হামার মতো ভ্যান চালকের কথা চিন্তা করির নেয়। খালি চিন্তা করে বড় লোকের কথা, এখন তো মনে হওচে সরকার চায় হামরা না খেয়া মরি।’
বাজারে তেলের দাম সম্পর্কে ধারণা পাওয়া গেল এরশাদুল ইসলামের কথায়। বাড়াইবাড়ী বাজারে তেল কিনতে আসা এরশাদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকার তো পেপার-পত্রিকাত খবর দিবার লাগছে তেলের দাম এখন থাকি নাকি ১৮০ থেকে ১৯৮ টাকা করছে। সে তেল কিনির আসি দেখি চোল ২২০-২৩০ টাকা ছাড়া তেলে না ব্যাচায় দেকানদাররা। দোকানিরা কওচে সরকার দাম কমাইলে কি হইবে তেল না পাইলে কি হামরা তোমাক চুরি করি আনি তেল দিম। হামাকো তো বেশি দামে কেনা লাগে এ জন্যে তো হামরাও বেশি দামে ব্যাচাওছি।’
সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন বাজার তদারকি অব্যাহত থাকলে সঠিক দামে ভোজ্যতেল বিক্রি করতেন ব্যবসায়ীরা। উপজেলার বাজারগুলোতে তদারকির ব্যবস্থা নেই বললেই চলে। ফলে সেখানে ইচ্ছামতো দাম হাকানো হচ্ছে। একই ধরনের পরিস্থিতির খবর পাওয়া গেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকেও।
এদিকে টাঙ্গাইলের মধুপুর ও কালিহাতী উপজেলা প্রতিনিধিরাও একই পরিস্থিতির কথা জানিয়েছেন। তাঁরা জানান, সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে সয়াবিন তেলের দাম ব্যাপক হারে বেড়েছে। ভোক্তা পর্যায়ে বোতলজাত সয়াবিন দুষ্প্রাপ্য হয়ে উঠেছে। খোলা তেলই এখন ২২০-২৩০ টাকা লিটার দরে কিনতে বাধ্য হচ্ছেন ভোক্তারা।
মধুপুর ও কালিহাতীর একাধিক ব্যবসায়ী জানান, ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে ভোজ্যতেলের চাহিদা বেড়েছিল। এমন সময় দেশীয় কোম্পানিগুলো বোতলজাত সয়াবিন সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। আবার কোনো কোনো কোম্পানি সয়াবিন তেলের বোতলের সঙ্গে অপ্রচলিত পণ্য চাপিয়ে দেওয়ায় অনেক ব্যবসায়ী সয়াবিন তেল কিনতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। এখনকার সংকটের মূলে রয়েছে এই বিষয়গুলোই।
এ বিষয়ে মধুপুরের সাবেক সাংসদ ও ব্যবসায়ী খন্দকার আনোয়ারুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দেশীয় বড়বড় কোম্পানির মালিকদের সঙ্গে প্রভাবশালী রাজনৈতিক দলের ব্যক্তি ও প্রশাসনিক আমলারা কমিশন বাণিজ্য করায় দেশের বাজার অস্থির হয়ে উঠেছে।’
কোথায় জট লেগেছে, তা খুঁজতে গিয়ে দেখা গেল একেকজন একেক পর্যায়ের ব্যবসায়ীদের দিকে আঙুল তুলছেন। মধুপুর শিল্প ও বণিক সমিতির সহসম্পাদক ও ব্যবসায়ী স্বপন কুমার সাহা বলেন, ‘আমরা নির্ধারিত দামে কিনি, নির্ধারিত দামে বিক্রি করি। আমাদের লাভ হলো কমিশন। আগে ৫ লিটার সয়াবিন ৬০০ টাকা ছিল, এখন কোম্পানি দাম হয়েছে ৯৪৫ টাকা। আমরা বিক্রি করি ৯৬৫ টাকা, খুচরা ব্যবসায়ীরা বিক্রি করছেন বোতলের গায়ে লেখা দাম ৯৮৫ টাকায়।’
কেউ আঙুল তুলছেন কোম্পানির দিকে, কেউ পাইকারের দিকে। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, তাঁরা আগে থেকেই টাকা দিয়ে রাখলেও এখনো তেল সরবরাহ পাননি। আবার অনেকে ভোজ্যতেলের সঙ্গে অপ্রচলিত পণ্য কিনতে বাধ্য করার বিষয়টিকে সামনে আনছেন। কিন্তু এর কোনোটি নিয়েই প্রশাসনিক তদারকি নেই। কালিহাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নাজমুল হুসেইন এ বিষয়ে এখনই জানলেন বলে জানালেন। তিনি বলেন, ‘বিষয়টি ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরকে আমরা অবহিত করব। বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহ বাড়াতে ও খোলা তেলে মান নিয়ন্ত্রণে দ্রুত অভিযান পরিচালনা করা হবে।’
প্রশাসনের তরফ থেকে এ ধরনের বক্তব্য অবশ্য নতুন নয়। সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশের পরই অনেকে ক্ষেত্রে বাজার তদারকিতে নামতে দেখা যাচ্ছে তাদের। নারায়ণগঞ্জেই যেমন পাইকারি ও খুচরা বাজারে সয়াবিন তেলের সংকটের প্রতিবেদন প্রকাশের পর অভিযান পরিচালনা করেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। আজ সোমবার দুপুরে শহরের নিতাইগঞ্জ ও দ্বিগুবাবু বাজারের ফলপট্টি এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন সংস্থাটির জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সেলিমুজ্জামান।
অভিযানের বিষয়ে সেলিমুজ্জামান বলেন, ‘আজ আমরা নিতাইগঞ্জ ও দ্বিগুবাবু বাজারের ফলপট্টি এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেছি। যদি কেউ তেল মজুত করে, তাহলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিব। আমরা আজকে দুটি প্রতিষ্ঠানে গিয়েছি। সেখানে তারা গতকাল ১ লাখ লিটার খোলা তেল মজুত করে এবং আজ (সোমবার) তা বাজারে বিক্রি করছে। আপাতত বাজারে সয়াবিন ও পাম তেলের সংকট নেই।’ তিনি বলেন, ‘আগের দামে কেনা ৫৪০ লিটার তেল পাওয়া গেছে। সেসব তেল আমাদের উপস্থিতিতে ১৫৬ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।’
অথচ প্রশাসন আগে থেকে খোঁজ না পেলেও বিভিন্ন এলাকা থেকেই আসছে বিপুল পরিমাণ ভোজ্যতেল মজুতের খবর। শুরুতেই রাজশাহীর বাগমারার কথা বলা হয়েছে। একইভাবে চট্টগ্রাম নগরীর পাহাড়তলী রেলওয়ে বাজারের দিল্লি গলির সিরাজ স্টোর নামের একটি দোকানের তিন গুদাম থেকে ১৫ হাজার লিটার সয়াবিন তেল জব্দ করে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। সোমবার ওই বাজারে অভিযানে গিয়ে দোকানগুলো তেলশূন্য পেলেও গুদামে ঠিকই বিপুল পরিমাণ সয়াবিন তেলের অস্তিত্ব মেলে। ওই দোকানিকে তেল মজুতের দায়ে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। গতকাল রোববারও নগরীর চৌমুহনীর সিডিএ মার্কেটের খাজা স্টোরের গুদাম থেকে ১ হাজার ৫০ লিটার সয়াবিন তেল জব্দ করা হয়েছিল।
দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকেই এই মজুতদারি ও ভোক্তা দুর্ভোগের খবর আসছে। এসবের প্রতিবাদে আন্দোলনের খবরও আসছে। বরিশাল প্রতিনিধি জানান, ভোজ্যতেলসহ নিত্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে বরিশালে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) নেতা–কর্মীরা সোমবার বিক্ষোভ করেছেন। সোমবার সকালে সদর রোড অশ্বিনী কুমার হল চত্বরে বাসদ নেতা–কর্মীরা এ সমাবেশ করেন। পরে তাঁদের বিক্ষোভ মিছিল নগরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, বাজার ব্যবস্থা এখন পুরোপুরি সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণে। বাণিজ্যসচিব ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করে সয়াবিন তেলের দাম বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছেন। এতে জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধিসহ জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।’
এ ধরনের প্রতিবাদের খবর সারা দেশ থেকেই আসছে। এই পরিস্থিতিতে করণীয় ঠিক করতে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনায় বসছে প্রশাসন। সিলেটে আজ জেলার তেল ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের সঙ্গে জরুরি মতবিনিময় ও অবহিতকরণ সভা করে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। সোমবার সকাল সাড়ে ১১টায় সিলেটের প্রধান পাইকারি ও খুচরা বাজার কালীঘাট এলাকার ব্যবসায়ী সমিতির কার্যালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত এ অস্থিতিশীলতা থামার কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি। কোম্পানির পক্ষ থেকে এখনো যুদ্ধই দেখানো হচ্ছে। কিন্তু মানুষ দেখছে যুদ্ধ তার হেঁশেলে ঢুকে গেছে।
এমন পরিস্থিতিতে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলছেন অসহায়ত্বের কথা। ব্যবসায়ী, মিল মালিক ও সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের সঙ্গে সোমবার হওয়া বৈঠকে তিনি বলেন, ‘ব্যবসায়ীদের আমি বিশ্বাস করে বলেছিলাম আপনারা দাম বাড়াবেন না। কিন্তু তারা দাম বাড়িয়েছে। তাদের ভালোবেসে বিশ্বাস করেছিলাম যে আপনারা দাম বাড়াবেন না। কিন্তু তাদের বিশ্বাস করা ছিল আমার ব্যর্থতা। এভাবে বলা আমার ঠিক হয়নি।’
এই ব্যর্থতার ঘানি এখন নিম্ন আয়ের মানুষেরা টানছেন। প্রত্যন্ত অঞ্চল শুধু নয়, শহরের কেন্দ্রগুলোতেও চলছে ভোজ্যতেলের তেলেসমাতি। বাজার তদারকি বরাবরের মতোই হাপিত্যেশের পর্যায়ে। এ অবস্থায় যদিও বাণিজ্যমন্ত্রী কিছু আশা দেখিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘আগামী জুন মাস থেকে এক কোটি পরিবারকে সুলভ মূল্যে তেল দেওয়া হবে টিসিবির মাধ্যমে। আপাতত টিসিবির তেলের দাম বাড়ানোর পরিকল্পনা নেই। প্রতি লিটার তেল ১১০ টাকা করেই বিক্রি হবে। তেল নিয়ে সিন্ডিকেট হয়নি। তবে খুচরা ব্যবসায়ীরা সুযোগ নিয়েছেন।’

রাজনৈতিক দল ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠকের পর জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে সুপারিশ প্রায় চূড়ান্ত করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। গণভোটের পর সংবিধান সংস্কার পরিষদে বাস্তবায়ন আদেশ পাস হয়ে গেলে আগামী সংসদেই সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্বের (পিআর) ভিত্তিতে উচ্চকক্ষ গঠনের সুপারিশ থাকতে পারে বলে একাধিক সূত্
৩ ঘণ্টা আগে
সহকারী উপজেলা বা থানা নির্বাচন কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে সহকারী উপজেলা ও থানা ইলেকশন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের ৫১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়েছে।
৬ ঘণ্টা আগে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সরকার গ্রাহকপ্রতি মোবাইল সিম কার্ডের সংখ্যা কমিয়ে আনার কথা ভাবছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। আজ রোববার দুপুরে আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি। বৈঠকে ত্রয়োদশ
৮ ঘণ্টা আগে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও নিরপেক্ষভাবে আয়োজনের লক্ষ্যে সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ মতবিনিময় ও প্রস্তুতিমূলক সভা ৩০ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) বেলা ৩টায় আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত হবে।
৮ ঘণ্টা আগেকমিশনের বৈঠক
তানিম আহমেদ, ঢাকা

রাজনৈতিক দল ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠকের পর জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে সুপারিশ প্রায় চূড়ান্ত করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। গণভোটের পর সংবিধান সংস্কার পরিষদে বাস্তবায়ন আদেশ পাস হয়ে গেলে আগামী সংসদেই সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্বের (পিআর) ভিত্তিতে উচ্চকক্ষ গঠনের সুপারিশ থাকতে পারে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। নতুন সংসদ নির্ধারিত ২৭০ দিনের মধ্যে সংস্কার বাস্তবায়ন না করলে কী হবে, সে বিষয়েও একটি বিকল্প ভাবা হচ্ছে।
সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে সুপারিশের খসড়া তৈরির কাজ গতকাল রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত ৯০ শতাংশ শেষ হয়েছে বলে কমিশন সূত্রে জানা গেছে। প্রস্তাবিত সময়ের মধ্যে নতুন সংসদ সংস্কার বাস্তবায়ন না করলে করণীয় কী হবে, তা গতকাল রাত বা আজ (সোমবার) সকালের মধ্যে চূড়ান্ত করা হবে। আজ সকালে কমিশনের আবার বৈঠকের মাধ্যমে সুপারিশ চূড়ান্ত করে দুপুরে প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দেওয়ার পরিকল্পনা আছে।
সনদ বাস্তবায়নে কমিশন সুপারিশের যে রূপরেখা ঠিক করেছে, তাতে প্রথমে গণ-অভ্যুত্থানকে ভিত্তি ধরে প্রথমে ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন (সংবিধান সংস্কার) আদেশ’ নামে একটি আদেশ জারি করা হবে। তার অধীনে অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে করা হবে গণভোট। একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত (২৭০ দিন বা প্রথম ৯ মাস) আগামী সংসদ কাজ করবে সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে। এ সময়ের মধ্যেই সংবিধান-সংক্রান্ত সংস্কার প্রস্তাবগুলো সংসদে অনুমোদন করা হবে।
কমিশন সূত্র জানায়, বাস্তবায়নের এই পুরো প্রক্রিয়া জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশে উল্লেখ থাকবে। আদেশ জারির পর এর কিছু অংশ তাৎক্ষণিকভাবে এবং কিছু কিছু বিষয় পরবর্তী সময়ে কার্যকর হবে। আদেশের কোন ধারা কবে কার্যকর হবে, তা উল্লেখ থাকবে। জুলাই সনদের সর্বসম্মত ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাব আদেশের পরিশিষ্টে উল্লেখ থাকবে। সেখানে কোনো দলের ভিন্নমতের উল্লেখ থাকবে না।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ গতকাল সন্ধ্যায় বলেন, ‘আমরা সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ প্রায় চূড়ান্ত করেছি। কমিশন আশা করছে, আগামীকালের (আজ সোমবার) মধ্যে সুপারিশ প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দেওয়া সম্ভব হবে।’
দ্বিকক্ষের সংসদ নিয়ে অধিকাংশ রাজনৈতিক দল একমত হলেও গঠনপ্রক্রিয়া নিয়ে দ্বিমত আছে। বিএনপিসহ সমমনা কয়েকটি দল নিম্নকক্ষের আসনের অনুপাতে উচ্চকক্ষের আসন বণ্টনের পক্ষে। অন্যদিকে জামায়াত, এনসিপিসহ সংলাপে অংশ নেওয়া বেশির ভাগ দল পিআর ভোটের ভিত্তিতে উচ্চকক্ষের দাবি জানিয়েছে। আবার জামায়াত, ইসলামী আন্দোলনসহ ইসলামপন্থী কয়েকটি দল উভয় কক্ষেই পিআরের ভিত্তিতে ভোট চেয়েছে। একাধিক সূত্র বলছে, বিএনপি পিআরে উচ্চকক্ষ মানলে নিম্নকক্ষের পিআরের দাবি থেকে দলগুলো সরে যাবে। বিষয়টি আদেশে আলাদা করে রাখার পক্ষে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
বৈঠক সূত্র জানায়, গণভোটে যদি সনদ বেশি ‘হ্যাঁ’ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়, তাহলে আগামী সংসদে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্বের (পিআর) ভিত্তিতে উচ্চকক্ষ গঠন বাধ্যতামূলক হবে। সে ক্ষেত্রে বিষয়টি আদেশে আলাদা করে লেখা থাকবে। সংবিধান সংস্কার পরিষদেও সংস্কার প্রস্তাব পাস হলে এর পরের ১৫ দিনের মধ্যে দলগুলো তাদের উচ্চকক্ষের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করবে।
আগামী সংসদ ২৭০ দিনের মধ্যে সনদ বাস্তবায়ন না করলে কী হবে, সে বিষয়ে কমিশন নানা বিকল্প নিয়ে আলোচনা করেছে। গতকাল বিশেষজ্ঞরা মত দিয়েছেন, গণভোটে সংস্কার প্রস্তাবগুলো পাস হলে আগামী সংসদে সেগুলো বাস্তবায়ন করা বাধ্যতামূলক হবে। কমিশন এটিকেই গুরুত্ব দিচ্ছে। এর বাইরে কোনো নিশ্চয়তা বিধান করা যায় কি না, তা-ও কমিশনের বিবেচনায় আছে।
সংসদ বাস্তবায়ন না করলে কী হবে, এমন প্রশ্নের জবাবে এক বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘জুলাই সনদ যেহেতু রাজনৈতিক দলিল, তাই নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই বাস্তবায়ন করবেন বলে আমরা বিশ্বাস করি। রাজনীতিকদের ওপর আমাদের আস্থা ও বিশ্বাস রাখতে হবে।’
কমিশনের পক্ষ থেকে আদেশের সঙ্গে বিকল্প একটি প্রস্তাব দেওয়া হতে পারে বলে সূত্রে জানা গেছে। কমিশন সরকারকে গণভোট নিয়ে একটি আইন তৈরি করতে বলার কথা ভেবেছে। এতে সনদের সংবিধান-সংক্রান্ত প্রস্তাবগুলো থাকবে। সে ক্ষেত্রে সব প্রস্তাবের সমন্বয়ে একটি আইন বানাতে হবে। গণভোটে এটা উঠবে। সমন্বিত আইনটি পাস হয়ে গেলে ২৭০ দিনের মধ্যে সংবিধান পরিষদ পুরো বাস্তবায়ন না করতে পারলেও আইনটি সংবিধানে স্বয়ংক্রিয়ভাবে যুক্ত হয়ে যাবে। তবে কমিশনের এই প্রস্তাবে বিশেষজ্ঞদের সায় নেই বলে জানা গেছে।
এক বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘কমিশনের বিকল্প প্রস্তাবে বিষয়টি থাকবে। তবে আইনগত ও রাজনৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য না হওয়ায় আমরা এটা সমর্থন করিনি।’
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এখন পর্যন্ত ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ অনুমোদন করেন কি না’ এবং ‘সংস্কার প্রস্তাবের বাস্তবায়ন চান কি না’—গণভোটে এ রকম প্রশ্ন রাখার কথা বিবেচনা করছে ঐকমত্য কমিশন। গণভোটে ‘হ্যাঁ’ জয়ী হলে ঐকমত্য কমিশন যেভাবে সংস্কার প্রস্তাব তৈরি করেছে, সেভাবেই বাস্তবায়িত হবে। এখানে কোনো দলের ভিন্নমত গুরুত্ব পাবে না।
গণভোটের বিষয়ে রাজনৈতিক ঐকমত্য থাকলেও গণভোট কবে হবে, এর ভিত্তি কী হবে, ভিন্নমত থাকা প্রস্তাবগুলোর বাস্তবায়ন কীভাবে হবে, এসব ক্ষেত্রে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির মধ্যে মতবিরোধ আছে। ঐকমত্য কমিশন সূত্র জানায়, গণভোটের দিন-তারিখ কবে হবে এবং জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ রাষ্ট্রপতি, নাকি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা জারি করবেন, সে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার সরকারের ওপর ছেড়ে দেওয়া হবে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গতকাল তাদের সংসদ ভবনের কার্যালয় থেকে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে ভার্চুয়াল সভা করে। বিশেষজ্ঞদের মধ্যে যুক্ত হন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এম এ মতিন, সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ড. শরিফ ভূইয়া, ব্যারিস্টার তানিম হোসেইন শাওন। আলোচনায় কমিশনের পক্ষে অংশ নেন সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, সফর রাজ হোসেন ও ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া। জাতীয় ঐকমত্য গঠনপ্রক্রিয়ায় যুক্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারও সভায় উপস্থিত ছিলেন।

রাজনৈতিক দল ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠকের পর জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে সুপারিশ প্রায় চূড়ান্ত করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। গণভোটের পর সংবিধান সংস্কার পরিষদে বাস্তবায়ন আদেশ পাস হয়ে গেলে আগামী সংসদেই সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্বের (পিআর) ভিত্তিতে উচ্চকক্ষ গঠনের সুপারিশ থাকতে পারে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। নতুন সংসদ নির্ধারিত ২৭০ দিনের মধ্যে সংস্কার বাস্তবায়ন না করলে কী হবে, সে বিষয়েও একটি বিকল্প ভাবা হচ্ছে।
সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে সুপারিশের খসড়া তৈরির কাজ গতকাল রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত ৯০ শতাংশ শেষ হয়েছে বলে কমিশন সূত্রে জানা গেছে। প্রস্তাবিত সময়ের মধ্যে নতুন সংসদ সংস্কার বাস্তবায়ন না করলে করণীয় কী হবে, তা গতকাল রাত বা আজ (সোমবার) সকালের মধ্যে চূড়ান্ত করা হবে। আজ সকালে কমিশনের আবার বৈঠকের মাধ্যমে সুপারিশ চূড়ান্ত করে দুপুরে প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দেওয়ার পরিকল্পনা আছে।
সনদ বাস্তবায়নে কমিশন সুপারিশের যে রূপরেখা ঠিক করেছে, তাতে প্রথমে গণ-অভ্যুত্থানকে ভিত্তি ধরে প্রথমে ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন (সংবিধান সংস্কার) আদেশ’ নামে একটি আদেশ জারি করা হবে। তার অধীনে অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে করা হবে গণভোট। একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত (২৭০ দিন বা প্রথম ৯ মাস) আগামী সংসদ কাজ করবে সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে। এ সময়ের মধ্যেই সংবিধান-সংক্রান্ত সংস্কার প্রস্তাবগুলো সংসদে অনুমোদন করা হবে।
কমিশন সূত্র জানায়, বাস্তবায়নের এই পুরো প্রক্রিয়া জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশে উল্লেখ থাকবে। আদেশ জারির পর এর কিছু অংশ তাৎক্ষণিকভাবে এবং কিছু কিছু বিষয় পরবর্তী সময়ে কার্যকর হবে। আদেশের কোন ধারা কবে কার্যকর হবে, তা উল্লেখ থাকবে। জুলাই সনদের সর্বসম্মত ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাব আদেশের পরিশিষ্টে উল্লেখ থাকবে। সেখানে কোনো দলের ভিন্নমতের উল্লেখ থাকবে না।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ গতকাল সন্ধ্যায় বলেন, ‘আমরা সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ প্রায় চূড়ান্ত করেছি। কমিশন আশা করছে, আগামীকালের (আজ সোমবার) মধ্যে সুপারিশ প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দেওয়া সম্ভব হবে।’
দ্বিকক্ষের সংসদ নিয়ে অধিকাংশ রাজনৈতিক দল একমত হলেও গঠনপ্রক্রিয়া নিয়ে দ্বিমত আছে। বিএনপিসহ সমমনা কয়েকটি দল নিম্নকক্ষের আসনের অনুপাতে উচ্চকক্ষের আসন বণ্টনের পক্ষে। অন্যদিকে জামায়াত, এনসিপিসহ সংলাপে অংশ নেওয়া বেশির ভাগ দল পিআর ভোটের ভিত্তিতে উচ্চকক্ষের দাবি জানিয়েছে। আবার জামায়াত, ইসলামী আন্দোলনসহ ইসলামপন্থী কয়েকটি দল উভয় কক্ষেই পিআরের ভিত্তিতে ভোট চেয়েছে। একাধিক সূত্র বলছে, বিএনপি পিআরে উচ্চকক্ষ মানলে নিম্নকক্ষের পিআরের দাবি থেকে দলগুলো সরে যাবে। বিষয়টি আদেশে আলাদা করে রাখার পক্ষে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
বৈঠক সূত্র জানায়, গণভোটে যদি সনদ বেশি ‘হ্যাঁ’ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়, তাহলে আগামী সংসদে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্বের (পিআর) ভিত্তিতে উচ্চকক্ষ গঠন বাধ্যতামূলক হবে। সে ক্ষেত্রে বিষয়টি আদেশে আলাদা করে লেখা থাকবে। সংবিধান সংস্কার পরিষদেও সংস্কার প্রস্তাব পাস হলে এর পরের ১৫ দিনের মধ্যে দলগুলো তাদের উচ্চকক্ষের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করবে।
আগামী সংসদ ২৭০ দিনের মধ্যে সনদ বাস্তবায়ন না করলে কী হবে, সে বিষয়ে কমিশন নানা বিকল্প নিয়ে আলোচনা করেছে। গতকাল বিশেষজ্ঞরা মত দিয়েছেন, গণভোটে সংস্কার প্রস্তাবগুলো পাস হলে আগামী সংসদে সেগুলো বাস্তবায়ন করা বাধ্যতামূলক হবে। কমিশন এটিকেই গুরুত্ব দিচ্ছে। এর বাইরে কোনো নিশ্চয়তা বিধান করা যায় কি না, তা-ও কমিশনের বিবেচনায় আছে।
সংসদ বাস্তবায়ন না করলে কী হবে, এমন প্রশ্নের জবাবে এক বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘জুলাই সনদ যেহেতু রাজনৈতিক দলিল, তাই নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই বাস্তবায়ন করবেন বলে আমরা বিশ্বাস করি। রাজনীতিকদের ওপর আমাদের আস্থা ও বিশ্বাস রাখতে হবে।’
কমিশনের পক্ষ থেকে আদেশের সঙ্গে বিকল্প একটি প্রস্তাব দেওয়া হতে পারে বলে সূত্রে জানা গেছে। কমিশন সরকারকে গণভোট নিয়ে একটি আইন তৈরি করতে বলার কথা ভেবেছে। এতে সনদের সংবিধান-সংক্রান্ত প্রস্তাবগুলো থাকবে। সে ক্ষেত্রে সব প্রস্তাবের সমন্বয়ে একটি আইন বানাতে হবে। গণভোটে এটা উঠবে। সমন্বিত আইনটি পাস হয়ে গেলে ২৭০ দিনের মধ্যে সংবিধান পরিষদ পুরো বাস্তবায়ন না করতে পারলেও আইনটি সংবিধানে স্বয়ংক্রিয়ভাবে যুক্ত হয়ে যাবে। তবে কমিশনের এই প্রস্তাবে বিশেষজ্ঞদের সায় নেই বলে জানা গেছে।
এক বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘কমিশনের বিকল্প প্রস্তাবে বিষয়টি থাকবে। তবে আইনগত ও রাজনৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য না হওয়ায় আমরা এটা সমর্থন করিনি।’
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এখন পর্যন্ত ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ অনুমোদন করেন কি না’ এবং ‘সংস্কার প্রস্তাবের বাস্তবায়ন চান কি না’—গণভোটে এ রকম প্রশ্ন রাখার কথা বিবেচনা করছে ঐকমত্য কমিশন। গণভোটে ‘হ্যাঁ’ জয়ী হলে ঐকমত্য কমিশন যেভাবে সংস্কার প্রস্তাব তৈরি করেছে, সেভাবেই বাস্তবায়িত হবে। এখানে কোনো দলের ভিন্নমত গুরুত্ব পাবে না।
গণভোটের বিষয়ে রাজনৈতিক ঐকমত্য থাকলেও গণভোট কবে হবে, এর ভিত্তি কী হবে, ভিন্নমত থাকা প্রস্তাবগুলোর বাস্তবায়ন কীভাবে হবে, এসব ক্ষেত্রে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির মধ্যে মতবিরোধ আছে। ঐকমত্য কমিশন সূত্র জানায়, গণভোটের দিন-তারিখ কবে হবে এবং জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ রাষ্ট্রপতি, নাকি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা জারি করবেন, সে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার সরকারের ওপর ছেড়ে দেওয়া হবে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গতকাল তাদের সংসদ ভবনের কার্যালয় থেকে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে ভার্চুয়াল সভা করে। বিশেষজ্ঞদের মধ্যে যুক্ত হন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এম এ মতিন, সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ড. শরিফ ভূইয়া, ব্যারিস্টার তানিম হোসেইন শাওন। আলোচনায় কমিশনের পক্ষে অংশ নেন সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, সফর রাজ হোসেন ও ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া। জাতীয় ঐকমত্য গঠনপ্রক্রিয়ায় যুক্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারও সভায় উপস্থিত ছিলেন।

দেশের বাজারে সয়াবিন তেল সাধারণ মানুষের জন্য এখন এক হাহাকারের নাম হয়ে উঠেছে। লিটারপ্রতি দাম বাড়িয়েও কোনো লাভ হয়নি। খোলা বা বোতলজাত কোনো তেলই পাওয়া কঠিন হয়ে গেছে। পাওয়া গেলেও তা সাধারণ ভোক্তাকে কিনতে হচ্ছে অত্যধিক দামে। অথচ এমন নয় যে, সয়াবিন তেল নেই। আছে, তবে দোকানে নয়, গুদামে। বাজার তদারকির অভাবের সু
০৯ মে ২০২২
সহকারী উপজেলা বা থানা নির্বাচন কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে সহকারী উপজেলা ও থানা ইলেকশন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের ৫১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়েছে।
৬ ঘণ্টা আগে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সরকার গ্রাহকপ্রতি মোবাইল সিম কার্ডের সংখ্যা কমিয়ে আনার কথা ভাবছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। আজ রোববার দুপুরে আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি। বৈঠকে ত্রয়োদশ
৮ ঘণ্টা আগে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও নিরপেক্ষভাবে আয়োজনের লক্ষ্যে সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ মতবিনিময় ও প্রস্তুতিমূলক সভা ৩০ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) বেলা ৩টায় আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত হবে।
৮ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সহকারী উপজেলা বা থানা নির্বাচন কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে সহকারী উপজেলা ও থানা ইলেকশন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের ৫১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়েছে।
সম্প্রতি আগারগাঁওয়ের নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে (ইটিআই) উপজেলা বা থানা বা সমমান ইলেকশন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক মোহাম্মদ আশফাকুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক জরুরি সভায় পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়।
এরপর এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সভায় সর্বসম্মতিক্রমে গাজীপুর সদর উপজেলার সহকারী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলমকে সভাপতি এবং গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার সহকারী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শরীফ আল রায়হানকে মহাসচিব করা হয়েছে।
এ ছাড়া কমিটিতে আরও যাঁরা যাঁরা আছেন—

সহকারী উপজেলা বা থানা নির্বাচন কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে সহকারী উপজেলা ও থানা ইলেকশন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের ৫১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়েছে।
সম্প্রতি আগারগাঁওয়ের নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে (ইটিআই) উপজেলা বা থানা বা সমমান ইলেকশন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক মোহাম্মদ আশফাকুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক জরুরি সভায় পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়।
এরপর এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সভায় সর্বসম্মতিক্রমে গাজীপুর সদর উপজেলার সহকারী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলমকে সভাপতি এবং গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার সহকারী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শরীফ আল রায়হানকে মহাসচিব করা হয়েছে।
এ ছাড়া কমিটিতে আরও যাঁরা যাঁরা আছেন—

দেশের বাজারে সয়াবিন তেল সাধারণ মানুষের জন্য এখন এক হাহাকারের নাম হয়ে উঠেছে। লিটারপ্রতি দাম বাড়িয়েও কোনো লাভ হয়নি। খোলা বা বোতলজাত কোনো তেলই পাওয়া কঠিন হয়ে গেছে। পাওয়া গেলেও তা সাধারণ ভোক্তাকে কিনতে হচ্ছে অত্যধিক দামে। অথচ এমন নয় যে, সয়াবিন তেল নেই। আছে, তবে দোকানে নয়, গুদামে। বাজার তদারকির অভাবের সু
০৯ মে ২০২২
রাজনৈতিক দল ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠকের পর জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে সুপারিশ প্রায় চূড়ান্ত করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। গণভোটের পর সংবিধান সংস্কার পরিষদে বাস্তবায়ন আদেশ পাস হয়ে গেলে আগামী সংসদেই সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্বের (পিআর) ভিত্তিতে উচ্চকক্ষ গঠনের সুপারিশ থাকতে পারে বলে একাধিক সূত্
৩ ঘণ্টা আগে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সরকার গ্রাহকপ্রতি মোবাইল সিম কার্ডের সংখ্যা কমিয়ে আনার কথা ভাবছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। আজ রোববার দুপুরে আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি। বৈঠকে ত্রয়োদশ
৮ ঘণ্টা আগে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও নিরপেক্ষভাবে আয়োজনের লক্ষ্যে সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ মতবিনিময় ও প্রস্তুতিমূলক সভা ৩০ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) বেলা ৩টায় আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত হবে।
৮ ঘণ্টা আগেআইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সরকার গ্রাহকপ্রতি মোবাইল সিম কার্ডের সংখ্যা কমিয়ে আনার কথা ভাবছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। আজ রোববার দুপুরে আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি। বৈঠকে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি, দেশের বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠকের পর স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেন, বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী একজন গ্রাহক তাঁর জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) বিপরীতে সর্বোচ্চ ১৫টি মোবাইল সিম নিবন্ধন করতে পারেন। ৩০ অক্টোবরের পর একটি এনআইডির বিপরীতে সিম নিবন্ধনের সংখ্যা ১০টিতে নামিয়ে আনা হবে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে গ্রাহকপ্রতি সিমের সংখ্যা আরও কমিয়ে আনার চেষ্টা করা হবে।
উপদেষ্টা বলেন, কোনো ঘটনা ঘটার পর দেখা যায়, সিমটি সেই ব্যক্তির নামে নিবন্ধন করা নয়। একজনের নামের সিম কার্ড অন্যজন ব্যবহার করে অপরাধ করে। এতে প্রকৃত দোষী ব্যক্তি অনেক সময় ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকে। এ জন্য নির্বাচনের আগে ব্যক্তিপর্যায়ে নিবন্ধন করা সিম কার্ড কমিয়ে আনা হবে।
নির্বাচনে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো আপত্তি আসেনি। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড আগেও ছিল, বর্তমানেও আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোতে নিয়োগ ও পদায়নের ক্ষেত্রে কোনো পক্ষপাতিত্ব করা হয়নি। কারও বিরুদ্ধে কোনো ধরনের অভিযোগ পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। স্বচ্ছতার সঙ্গে নিয়োগ ও পদায়ন করা হয়েছে। সুষ্ঠু নির্বাচনের সব প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। তিনি নির্বাচন সুষ্ঠু ও ভালোভাবে সম্পন্ন হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির এ বৈঠকে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের আগে দেশের বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ বিভিন্ন বিষয় উঠেছে। দেশব্যাপী চুরি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও সংঘবদ্ধ দুষ্কৃতকারীদের কর্মকাণ্ড রোধ, জুলাই হত্যাকাণ্ডের মামলার রেকর্ড, তদন্ত অগ্রগতি, দেশে অস্থিরতা সৃষ্টিকারী উসকানিমূলক সাইবার প্রচারণার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা, নারী ও শিশু নির্যাতন এবং ধর্ষণের বিরুদ্ধে আইনগত ও সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়।
এ ছাড়া মাদকের অপব্যবহার রোধ, শীর্ষ সন্ত্রাসীদের জামিনপরবর্তী সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও প্রতিরোধ, নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠনগুলোর অপতৎপরতা রোধ, পোশাক কারখানা–ওষুধশিল্পসহ বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির তৎপরতা রোধ, অস্ত্র জমা ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান, সীমান্ত ও পার্বত্যাঞ্চল পরিস্থিতি, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং মা ইলিশ সংরক্ষণ নিয়েও আলোচনা হয়।
ব্রিফিংয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম, বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী, বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সরকার গ্রাহকপ্রতি মোবাইল সিম কার্ডের সংখ্যা কমিয়ে আনার কথা ভাবছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। আজ রোববার দুপুরে আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি। বৈঠকে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি, দেশের বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠকের পর স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেন, বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী একজন গ্রাহক তাঁর জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) বিপরীতে সর্বোচ্চ ১৫টি মোবাইল সিম নিবন্ধন করতে পারেন। ৩০ অক্টোবরের পর একটি এনআইডির বিপরীতে সিম নিবন্ধনের সংখ্যা ১০টিতে নামিয়ে আনা হবে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে গ্রাহকপ্রতি সিমের সংখ্যা আরও কমিয়ে আনার চেষ্টা করা হবে।
উপদেষ্টা বলেন, কোনো ঘটনা ঘটার পর দেখা যায়, সিমটি সেই ব্যক্তির নামে নিবন্ধন করা নয়। একজনের নামের সিম কার্ড অন্যজন ব্যবহার করে অপরাধ করে। এতে প্রকৃত দোষী ব্যক্তি অনেক সময় ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকে। এ জন্য নির্বাচনের আগে ব্যক্তিপর্যায়ে নিবন্ধন করা সিম কার্ড কমিয়ে আনা হবে।
নির্বাচনে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো আপত্তি আসেনি। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড আগেও ছিল, বর্তমানেও আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোতে নিয়োগ ও পদায়নের ক্ষেত্রে কোনো পক্ষপাতিত্ব করা হয়নি। কারও বিরুদ্ধে কোনো ধরনের অভিযোগ পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। স্বচ্ছতার সঙ্গে নিয়োগ ও পদায়ন করা হয়েছে। সুষ্ঠু নির্বাচনের সব প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। তিনি নির্বাচন সুষ্ঠু ও ভালোভাবে সম্পন্ন হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির এ বৈঠকে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের আগে দেশের বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ বিভিন্ন বিষয় উঠেছে। দেশব্যাপী চুরি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও সংঘবদ্ধ দুষ্কৃতকারীদের কর্মকাণ্ড রোধ, জুলাই হত্যাকাণ্ডের মামলার রেকর্ড, তদন্ত অগ্রগতি, দেশে অস্থিরতা সৃষ্টিকারী উসকানিমূলক সাইবার প্রচারণার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা, নারী ও শিশু নির্যাতন এবং ধর্ষণের বিরুদ্ধে আইনগত ও সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়।
এ ছাড়া মাদকের অপব্যবহার রোধ, শীর্ষ সন্ত্রাসীদের জামিনপরবর্তী সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও প্রতিরোধ, নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠনগুলোর অপতৎপরতা রোধ, পোশাক কারখানা–ওষুধশিল্পসহ বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির তৎপরতা রোধ, অস্ত্র জমা ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান, সীমান্ত ও পার্বত্যাঞ্চল পরিস্থিতি, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং মা ইলিশ সংরক্ষণ নিয়েও আলোচনা হয়।
ব্রিফিংয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম, বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী, বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

দেশের বাজারে সয়াবিন তেল সাধারণ মানুষের জন্য এখন এক হাহাকারের নাম হয়ে উঠেছে। লিটারপ্রতি দাম বাড়িয়েও কোনো লাভ হয়নি। খোলা বা বোতলজাত কোনো তেলই পাওয়া কঠিন হয়ে গেছে। পাওয়া গেলেও তা সাধারণ ভোক্তাকে কিনতে হচ্ছে অত্যধিক দামে। অথচ এমন নয় যে, সয়াবিন তেল নেই। আছে, তবে দোকানে নয়, গুদামে। বাজার তদারকির অভাবের সু
০৯ মে ২০২২
রাজনৈতিক দল ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠকের পর জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে সুপারিশ প্রায় চূড়ান্ত করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। গণভোটের পর সংবিধান সংস্কার পরিষদে বাস্তবায়ন আদেশ পাস হয়ে গেলে আগামী সংসদেই সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্বের (পিআর) ভিত্তিতে উচ্চকক্ষ গঠনের সুপারিশ থাকতে পারে বলে একাধিক সূত্
৩ ঘণ্টা আগে
সহকারী উপজেলা বা থানা নির্বাচন কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে সহকারী উপজেলা ও থানা ইলেকশন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের ৫১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়েছে।
৬ ঘণ্টা আগে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও নিরপেক্ষভাবে আয়োজনের লক্ষ্যে সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ মতবিনিময় ও প্রস্তুতিমূলক সভা ৩০ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) বেলা ৩টায় আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত হবে।
৮ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও নিরপেক্ষভাবে আয়োজনের লক্ষ্যে সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ মতবিনিময় ও প্রস্তুতিমূলক সভা ৩০ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) বেলা ৩টায় আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত হবে।
আজ রোববার সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো সভার চিঠি থেকে জানা যায়, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সভাটি অনুষ্ঠিত হবে। সভায় সভাপতিত্ব করবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। সভায় অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার উপস্থিত থাকবেন।
চিঠিতে বলা হয়, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, অংশগ্রহণমূলক ও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগ/কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মতবিনিময় ও প্রাক-প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হবে।
ইসির চিঠি অনুযায়ী, অন্তত ৩১ জন জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তাকে সভায় অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আমন্ত্রিত কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন—মন্ত্রিপরিষদসচিব; স্বরাষ্ট্র, জনপ্রশাসন, নৌপরিবহন, প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব; পররাষ্ট্র, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ (সমন্বয় ও সংস্কার), অর্থ বিভাগ, আইন ও বিচার বিভাগ, স্বাস্থ্যশিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগ, আইন ও বিচার বিভাগ, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, বিদ্যুৎ বিভাগ, কৃষি মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিবেরা। এর পাশাপাশি জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সচিবকেও বৈঠকে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে।
চিঠিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে তাঁর প্রতিনিধি হিসেবে ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরোর নির্বাহী পরিচালক বা উপযুক্ত কোনো কর্মকর্তাকে সভায় পাঠানোর অনুরোধ করা হয়েছে।
এ ছাড়া ডাক অধিদপ্তর, চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর, বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতারের মহাপরিচালক, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ও শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী এবং কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজনস), ঢাকাকেও সভায় আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
এর আগে ২০ অক্টোবর ইসি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভা করেছে।
কমিশন গত ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে ধারাবাহিক সংলাপ শুরু করে। এর অংশ হিসেবে ২৮ সেপ্টেম্বর নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয় এবং একই দিন শিক্ষকদের সঙ্গেও আলোচনা করে ইসি। সংসদ নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলসহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট পক্ষের সঙ্গেও আরও সংলাপ আয়োজনের পরিকল্পনা নিয়েছে কমিশন।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও নিরপেক্ষভাবে আয়োজনের লক্ষ্যে সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ মতবিনিময় ও প্রস্তুতিমূলক সভা ৩০ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) বেলা ৩টায় আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত হবে।
আজ রোববার সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো সভার চিঠি থেকে জানা যায়, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সভাটি অনুষ্ঠিত হবে। সভায় সভাপতিত্ব করবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। সভায় অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার উপস্থিত থাকবেন।
চিঠিতে বলা হয়, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, অংশগ্রহণমূলক ও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগ/কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মতবিনিময় ও প্রাক-প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হবে।
ইসির চিঠি অনুযায়ী, অন্তত ৩১ জন জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তাকে সভায় অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আমন্ত্রিত কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন—মন্ত্রিপরিষদসচিব; স্বরাষ্ট্র, জনপ্রশাসন, নৌপরিবহন, প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব; পররাষ্ট্র, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ (সমন্বয় ও সংস্কার), অর্থ বিভাগ, আইন ও বিচার বিভাগ, স্বাস্থ্যশিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগ, আইন ও বিচার বিভাগ, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, বিদ্যুৎ বিভাগ, কৃষি মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিবেরা। এর পাশাপাশি জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সচিবকেও বৈঠকে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে।
চিঠিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে তাঁর প্রতিনিধি হিসেবে ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরোর নির্বাহী পরিচালক বা উপযুক্ত কোনো কর্মকর্তাকে সভায় পাঠানোর অনুরোধ করা হয়েছে।
এ ছাড়া ডাক অধিদপ্তর, চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর, বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতারের মহাপরিচালক, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ও শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী এবং কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজনস), ঢাকাকেও সভায় আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
এর আগে ২০ অক্টোবর ইসি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভা করেছে।
কমিশন গত ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে ধারাবাহিক সংলাপ শুরু করে। এর অংশ হিসেবে ২৮ সেপ্টেম্বর নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয় এবং একই দিন শিক্ষকদের সঙ্গেও আলোচনা করে ইসি। সংসদ নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলসহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট পক্ষের সঙ্গেও আরও সংলাপ আয়োজনের পরিকল্পনা নিয়েছে কমিশন।

দেশের বাজারে সয়াবিন তেল সাধারণ মানুষের জন্য এখন এক হাহাকারের নাম হয়ে উঠেছে। লিটারপ্রতি দাম বাড়িয়েও কোনো লাভ হয়নি। খোলা বা বোতলজাত কোনো তেলই পাওয়া কঠিন হয়ে গেছে। পাওয়া গেলেও তা সাধারণ ভোক্তাকে কিনতে হচ্ছে অত্যধিক দামে। অথচ এমন নয় যে, সয়াবিন তেল নেই। আছে, তবে দোকানে নয়, গুদামে। বাজার তদারকির অভাবের সু
০৯ মে ২০২২
রাজনৈতিক দল ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠকের পর জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে সুপারিশ প্রায় চূড়ান্ত করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। গণভোটের পর সংবিধান সংস্কার পরিষদে বাস্তবায়ন আদেশ পাস হয়ে গেলে আগামী সংসদেই সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্বের (পিআর) ভিত্তিতে উচ্চকক্ষ গঠনের সুপারিশ থাকতে পারে বলে একাধিক সূত্
৩ ঘণ্টা আগে
সহকারী উপজেলা বা থানা নির্বাচন কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে সহকারী উপজেলা ও থানা ইলেকশন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের ৫১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়েছে।
৬ ঘণ্টা আগে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সরকার গ্রাহকপ্রতি মোবাইল সিম কার্ডের সংখ্যা কমিয়ে আনার কথা ভাবছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। আজ রোববার দুপুরে আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি। বৈঠকে ত্রয়োদশ
৮ ঘণ্টা আগে