Ajker Patrika

আমিরাতে আটক বাকি ২৫ বাংলাদেশি ‘শিগগির’ দেশে ফিরবেন, আশা অন্তর্বর্তী সরকারের

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা ­­
আপডেট : ০৯ অক্টোবর ২০২৫, ১৭: ৪৭
আমিরাতে আটক বাকি ২৫ বাংলাদেশি ‘শিগগির’ দেশে ফিরবেন, আশা অন্তর্বর্তী সরকারের

ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংযুক্ত আরব আমিরাতে আটক হওয়া বাংলাদেশের অবশিষ্ট ২৫ জন নাগরিকের মুক্তির বিষয়ে কূটনৈতিক ও আইনি প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। এরই মধ্যে ১৮৮ জন বন্দী মুক্ত হয়ে দেশে ফিরেছেন।

অন্তর্বর্তী সরকার আশা করছে, ‘খুব শিগগিরই’ বাকি ২৫ জনও দেশে ফিরতে পারবেন। আজ বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শেফায়েত হোসেন বলেন, ‘আটককৃতদের মুক্তির জন্য কূটনৈতিক ও আইনি পদক্ষেপ অব্যাহত রয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। আমরা আশাবাদী, খুব দ্রুতই তাঁরা দেশে ফিরতে পারবেন।’

প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এ বছরের ২২ এপ্রিল আবুধাবিতে বাংলাদেশ দূতাবাস অবশিষ্ট বন্দীদের মুক্তির জন্য কার্যক্রম শুরু করে। এর ধারাবাহিকতায় আমিরাতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি তালিকা পাঠিয়ে সহযোগিতা চাওয়া হয়।

এরপর গত মে মাসে আমিরাতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে বিষয়টি উত্থাপন করেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ।

বৈঠকে তিনি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের উদ্যোগে আগে মুক্তি পাওয়া ১৮৮ জন বাংলাদেশির উদাহরণ টেনে বর্তমানে আটক ২৫ জনের মুক্তির আহ্বান জানান।

এরপরও কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি না হওয়ায় গত ১ জুলাই দূতাবাস থেকে নতুন নোট ভারবালের মাধ্যমে বন্দীদের বিষয়ে কনস্যুলার অ্যাকসেস চাওয়া হয়।

একই সঙ্গে ৮ জুলাই আমিরাতের আইন সংস্থা হামদান আল কাবি ল ফার্মকে নিযুক্ত করা হয় বন্দীদের মুক্তির আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য।

ল ফার্ম জানায়, আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে স্টেট সিকিউরিটি আইনে মামলা থাকায় মুক্তির প্রক্রিয়া সময়সাপেক্ষ হলেও তারা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে এবং অগ্রগতি বিষয়ে দূতাবাসকে নিয়মিত অবহিত করছে।

এদিকে গত ৭ আগস্ট বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আবুধাবিতে আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ আবদুল্লাহ বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের সঙ্গে বৈঠকে ২৫ জন বন্দীর বিস্তারিত তালিকা ও সংশ্লিষ্ট নথি হস্তান্তর করেন।

বন্দীদের মুক্তি ত্বরান্বিত করতে গত ২১ সেপ্টেম্বর আমিরাতের ন্যায়বিচারমন্ত্রী আবদুল্লাহ বিন সুলতান বিন আওয়াদ আল নুয়াইমির কাছে একটি আনুষ্ঠানিক অনুরোধপত্র পাঠান প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।

এর পরিপ্রেক্ষিতে ২২ সেপ্টেম্বর আমিরাতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ২৫ জন বন্দীর পাসপোর্ট কপি ও ভিসা নম্বর চেয়ে দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করে।

দূতাবাস দ্রুততার সঙ্গে সবার তথ্য সংগ্রহ করে ৩০ সেপ্টেম্বর নোট ভারবাল আকারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে প্রেরণ করে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ডিজির সঙ্গে তর্ক: অব্যাহতির ৪ দিনের মাথায় পুনর্বহাল ময়মনসিংহের চিকিৎসক

রাশেদ খানের পদত্যাগ চেয়ে গণঅধিকারের উচ্চতর পরিষদ সদস্যের অনাস্থা

মোদির সঙ্গে রাহুলের ৮৮ মিনিটের বৈঠক, কী আলোচনা হলো

মধ্যরাতে দেশে দুই দফা ভূমিকম্প, উৎপত্তিস্থল সিলেট ও মৌলভীবাজার

বাড়ির পাশে পরিত্যক্ত ৩ গর্ত, শাস্তি চান সাজিদের মা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রয়টার্সের প্রতিবেদন /নির্বাচনের পর রাষ্ট্রপতির পদ ছাড়তে চান সাহাবুদ্দিন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ২২
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

আগামী ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর রাষ্ট্রপতির পদ ছাড়তে চান মো. সাহাবুদ্দিন। তাঁর এ পরিকল্পনা তুলে ধরে আজ বৃহস্পতিবার বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

রয়টার্স বলছে, রাষ্ট্রপতি বঙ্গভবন থেকে হোয়াটসঅ্যাপে সাক্ষাৎকারটি দিয়েছেন। মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারে তিনি ‘অপমানিত বোধ’ করছেন বলে প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে।

রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে সাহাবুদ্দিন বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক। এর বাইরে পদটি মূলত আনুষ্ঠানিক। দেশের কার্যনির্বাহী ক্ষমতা থাকে প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভার হাতে।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিল্লিতে চলে যাওয়ার পর সাহাবুদ্দিনের অবস্থান গুরুত্ব পায়। সংসদ ভেঙে দেওয়ার পর সাহাবুদ্দিনই ছিলেন দেশের শেষ সাংবিধানিক কর্তৃপক্ষ।

হোয়াটসঅ্যাপে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রয়টার্সকে তিনি বলেন, ‘আমি বিদায় নিতে আগ্রহী। আমি এখান থেকে চলে যেতে চাই। নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত আমাকে দায়িত্ব পালন করতে হবে। সাংবিধানিকভাবে রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব রয়েছে বলেই আমি এ অবস্থানে আছি।’

রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন বলেন, প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস তাঁর সঙ্গে প্রায় সাত মাস কোনো ধরনের সাক্ষাৎ করেননি। রাষ্ট্রপতির গণমাধ্যম বিভাগ কেড়ে নেওয়া হয়েছে।

বিভিন্ন দেশের দূতাবাস থেকে নিজের ছবি সরিয়ে ফেলার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘সব কনস্যুলেট, দূতাবাস ও হাই কমিশনে রাষ্ট্রপতির ছবি ছিল। এগুলো হঠাৎ করে এক রাতের মধ্যে সরিয়ে ফেলা হয়।’

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘এতে মানুষের কাছে ভুল বার্তা যায়। মানুষজন ভাবতে পারে, রাষ্ট্রপতিকে হয়ত সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আমি খুব অপমানিত বোধ করেছি।’

সাহাবুদ্দিনের ভাষ্য, ছবি সরিয়ে ফেলার বিষয়ে তিনি মুহাম্মদ ইউনূসকে চিঠি লিখেছিলেন, কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

রয়টার্স দাবি করেছে, রাষ্ট্রপতির মন্তব্যগুলো নিয়ে তাঁরা প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসের প্রেস উইংয়ের কাছে মন্তব্য চেয়েছিল, কিন্তু তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া মেলেনি।

রাষ্ট্রপতি জানান, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন তিনি। জেনারেল ওয়াকার তাঁকে স্পষ্ট বলে দিয়েছেন, ক্ষমতা দখলের কোনো ইচ্ছা তাঁর নেই।

রয়টার্স লিখেছে, ২০২৪ সালের আগস্টে প্রাণঘাতী বিক্ষোভের সময় সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার হস্তক্ষেপ না করায় শেখ হাসিনা সরকারের পতন নির্ধারিত হয়ে যায়। বাংলাদেশের সামরিক শাসনের অতীত থাকলেও জেনারেল ওয়াকার ‘গণতন্ত্রের প্রত্যাবর্তন চান’।

রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন বলেন, শুরুতে কিছু শিক্ষার্থী তাঁর পদত্যাগের দাবি জানালেও সাম্প্রতিক মাসগুলোতে কোনো রাজনৈতিক দল তাঁর পদত্যাগ চাননি।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপি এবং ইসলামী দল জামায়াতে ইসলামীর আগামী সরকার গঠনের দৌড়ে এগিয়ে থাকতে পারে বলে জনমত জরিপের ইঙ্গিত দিচ্ছে। এর আগে এই দুই দল ২০০৬ সাল পর্যন্ত জোট সরকারে ছিল।

শেখ হাসিনা দেশত্যাগের পর তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিলেন কি না জানতে চাইলে সাহাবুদ্দিন উত্তর দিতে চাননি। তিনি রয়টার্সকে বলেন, রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর থেকেই তিনি স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালন করছেন, কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন।

বঙ্গভবনের দরবার হলে ২০২৩ সালের ২৪ এপ্রিল রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: পিআইডি
বঙ্গভবনের দরবার হলে ২০২৩ সালের ২৪ এপ্রিল রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: পিআইডি

৭৫ বছর বয়সী সাহাবুদ্দিন ২০২৩ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় পাঁচ বছরের জন্য বাংলাদেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। চুপ্পু নামেই বেশি পরিচিত সাবেক এই ছাত্রলীগ নেতা মো. আবদুল হামিদের উত্তরসূরি হন।

ছাত্রজীবনে পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ও সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন সাহাবুদ্দিন। পরে সামলেছেন পাবনা যুবলীগের সভাপতির দায়িত্ব। ১৯৭১ সালে পাবনা জেলার স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক ছিলেন তিনি, মুক্তিযুদ্ধেও সক্রিয়ভাবে অংশ নেন।

১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর তার দল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকে গ্রেপ্তার করে সে সময় ক্ষমতাদখলকারীরা। সাহাবুদ্দিনকেও তখন কারাবরণ করতে হয়।

পেশায় আইনজীবী মো. সাহাবুদ্দিন ১৯৮২ সালে বিসিএস (বিচার) ক্যাডারে যোগ দেন। বিচারকের বিভিন্ন পদে চাকরি শেষে ২০০৬ সালে জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে অবসর নেন।

২০০১ সালের বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী এবং সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর ওপর হামলার অভিযোগ তদন্তে যে কমিশন হয়েছিল, সাহাবুদ্দিন ছিলেন তার প্রধান।

জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক মহাসচিব সাহাবুদ্দিন বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় আইন মন্ত্রণালয়ের নিযুক্ত করা সমন্বয়কারী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।

তিনি ২০১১ সাল থেকে ২০১৬ সাল দুদকের কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মনোনীত হন। আওয়ামী লীগের সর্বশেষ জাতীয় কাউন্সিলে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ডিজির সঙ্গে তর্ক: অব্যাহতির ৪ দিনের মাথায় পুনর্বহাল ময়মনসিংহের চিকিৎসক

রাশেদ খানের পদত্যাগ চেয়ে গণঅধিকারের উচ্চতর পরিষদ সদস্যের অনাস্থা

মোদির সঙ্গে রাহুলের ৮৮ মিনিটের বৈঠক, কী আলোচনা হলো

মধ্যরাতে দেশে দুই দফা ভূমিকম্প, উৎপত্তিস্থল সিলেট ও মৌলভীবাজার

বাড়ির পাশে পরিত্যক্ত ৩ গর্ত, শাস্তি চান সাজিদের মা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গুলশানে ফ্ল্যাট নেওয়ার মামলায় টিউলিপের নামে দুদকের অভিযোগপত্র

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাৎ এবং লন্ডনে উপহার পাওয়া দুটি ফ্ল্যাটের তথ্য গোপন করায় ক্রমবর্ধমান চাপের মুখে ব্রিটেনের সিটি ও অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে পদত্যাগে বাধ্য হয়েছেন শেখ হাসিনার ভাগনি টিউলিপ সিদ্দিক। ছবি: সংগৃহীত
দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাৎ এবং লন্ডনে উপহার পাওয়া দুটি ফ্ল্যাটের তথ্য গোপন করায় ক্রমবর্ধমান চাপের মুখে ব্রিটেনের সিটি ও অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে পদত্যাগে বাধ্য হয়েছেন শেখ হাসিনার ভাগনি টিউলিপ সিদ্দিক। ছবি: সংগৃহীত

ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেডকে অবৈধ সুবিধা দিয়ে রাজধানীর গুলশান এলাকায় ‘পারিতোষিক’ হিসেবে ফ্ল্যাট নেওয়ার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি ও যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রতিমন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় এবার চার্জশিট অনুমোদন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। টিউলিপ ছাড়াও রাজউকের সাবেক দুই আইন উপদেষ্টার নামও রয়েছে দুদকের চার্জশিটে।

আজ বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) দুদকের সেগুনবাগিচা প্রধান কার্যালয়ে সংবাদ ব্রিফিংয়ে কমিশনের পক্ষ থেকে এসব তথ্য গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন সংস্থাটির মহাপরিচালক আক্তার হোসেন। এর আগে গত ১৫ এপ্রিল একই বিষয়ে কমিশনের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১-এ দুদকের সহকারী পরিচালক মনিরুল ইসলাম বাদী হয়ে এই সংক্রান্ত মামলাটি দায়ের করেন।

চার্জশিটে আসামিরা হলেন, টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) সাবেক সহকারী আইন উপদেষ্টা শাহ মো. খসরুজ্জামান এবং সাবেক সহকারী আইন উপদেষ্টা-১ সরদার মোশারফ হোসেন।

এই তিন আসামি ছাড়াও মৃত্যুর কারণে মামলা ও তৎপরবর্তী চার্জশিট থেকে গুরুত্বপূর্ণ দুই আসামিকে বাদ দেওয়া হয়েছে। তাঁরা হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মো. নাসিমের ভাই রাজউকের সাবেক আইন উপদেষ্টা ড. মো. সেলিম ও ইস্টার্ন হাউজিংয়ের সাবেক চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম।

চার্জশিট অভিযোগের বিষয়ে বলা হয়েছে, ক্ষমতার অপব্যবহার করে ঢাকার গুলশান-২-এর কূটনৈতিক এলাকায় ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেডকে একটি প্লট ‘অবৈধভাবে হস্তান্তরের ব্যবস্থা’ করিয়ে দেন টিউলিপ। এর বিনিময়ে অবৈধ ‘পারিতোষিক’ হিসেবে ওই প্লটের একটি ফ্ল্যাট পান তিনি। ফ্ল্যাটের দাম ২৩ লাখ টাকা ধার্য করা করা হলেও এই ফ্ল্যাট বাবদ ইস্টার্ন হাউজিংকে এক টাকাও পরিশোধ করেননি সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ভাগনি।

অনুমোদিত চার্জশিটে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে কোনো টাকা পরিশোধ না করেই অবৈধ ঘুষ হিসেবে ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেডের একটি ফ্ল্যাট দখলে নেয়। এরপর অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, অপরাধমূলক অসদাচরণ ও অপরাধমূলক বিশ্বাস ভঙ্গের মাধ্যমে গুলশান-২-এর ফ্ল্যাটটি (ফ্ল্যাট নম্বর বি/ ২০১, বাড়ি নম্বর ৫এ ও ৫বি (পুরোনো), বর্তমানে ১১৩, ১১বি (নতুন), রোড নম্বর ৭১, রেজিস্ট্রি মূলে খতিয়ান গ্রহণ ও প্রদান করেছেন।

দুদকের চার্জশিটের সূত্র থেকে আরও জানা গেছে, ইস্টার্ন হাউজিং গুলশানের যে জমিতে ফ্ল্যাট নির্মাণ করেছেন সেটিও হাউজিং প্রতিষ্ঠানটির নয়। জমিটি মূলত তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান সরকার সাবেক প্রধান বিচারপতি ইমাম হোসেন চৌধুরীকে ডিআইটি থেকে ১ বিঘা ১৯ কাঠা ১৩ ছটাক জমি ৯৯ বছরের জন্য লিজ প্রদান করে। ২০৬৩ সালের আগে এই জমি বিক্রি বা বরাদ্দের নিয়ম নেই। সেই জমি নিয়মবহির্ভূতভাবে রাজউকের সাবেক আইন উপদেষ্টার সহযোগিতায় আমমোক্তারনামা করে লিখে নেন ইস্টার্ন হাউজিং। ইস্টার্ন হাউজিংয়ের করা সেই জমিতে প্লট বরাদ্দ নেন টিউলিপ সিদ্দিক। তবে জমির ক্রয় বাবদ তিনি কোনো টাকা পরিশোধ করেননি।

দুদক সূত্রটি আরও জানায়, ১৯৯৭ সালে ইস্টার্ন হাউজিং থেকে বরাদ্দ নেন টিউলিপ সিদ্দিক। সেই ফ্ল্যাট ২০০২ সালে তাঁকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। তবে ফ্ল্যাট প্রদানের বিপরীতে ইস্টার্ন হাউজিং ফ্ল্যাট কেনা বাবদ টাকা প্রদানের কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। দুদকের কাছে তাঁরা স্বীকারোক্তি দিয়েছেন এই ফ্ল্যাট বাবদ সর্বশেষ ২০২২ পর্যন্ত টাকা পরিশোধের তাগাদা দিলেও টিউলিপ টাকা প্রদান করেননি।

আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ১২০বি ৪০৯/১৬১/১৬২/১৬৩/১৬৪/১৬৫ (ক)/১০৯ ধারাসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারায় চার্জশিটে অভিযোগ আনা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ডিজির সঙ্গে তর্ক: অব্যাহতির ৪ দিনের মাথায় পুনর্বহাল ময়মনসিংহের চিকিৎসক

রাশেদ খানের পদত্যাগ চেয়ে গণঅধিকারের উচ্চতর পরিষদ সদস্যের অনাস্থা

মোদির সঙ্গে রাহুলের ৮৮ মিনিটের বৈঠক, কী আলোচনা হলো

মধ্যরাতে দেশে দুই দফা ভূমিকম্প, উৎপত্তিস্থল সিলেট ও মৌলভীবাজার

বাড়ির পাশে পরিত্যক্ত ৩ গর্ত, শাস্তি চান সাজিদের মা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিলের শুনানি ৫ মার্চ পর্যন্ত মুলতবি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

পঞ্চদশ সংশোধনী আইন পুরোটা বাতিল চেয়ে করা আপিলের শুনানি আগামী ৫ মার্চ পর্যন্ত মুলতবি করা হয়েছে।

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ আজ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন। এর আগে গত ১৩ নভেম্বর হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি দেন আপিল বিভাগ। এরপর আপিল শুনানি শুরু হয়।

পঞ্চদশ সংশোধনীর অংশবিশেষ অসাংবিধানিক ঘোষণা করে গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর রায় দেন হাইকোর্ট। রায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলুপ্তি-সংক্রান্ত পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের ২০ ও ২১ ধারা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও বাতিল ঘোষণা করা হয়।

সেই সঙ্গে পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের মাধ্যমে সংবিধানে যুক্ত ৭ক, ৭খ, ৪৪ (২) অনুচ্ছেদও বাতিল ঘোষণা করা হয়।

এ বছরের ৮ জুলাই হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয়। এরপর পঞ্চদশ সংশোধনী আইন সম্পূর্ণ বাতিল চেয়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ চার ব্যক্তি।

জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার পৃথক লিভ টু আপিল করেন। এ ছাড়া মোফাজ্জল হোসেন নামের এক ব্যক্তি আরেকটি লিভ টু আপিল করেন।

বদিউল আলম মজুমদারসহ চার ব্যক্তির পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শরীফ ভূঁইয়া। জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেলের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।

এ ছাড়া মোফাজ্জল হোসেনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এ এস এম শাহরিয়ার কবির। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ডিজির সঙ্গে তর্ক: অব্যাহতির ৪ দিনের মাথায় পুনর্বহাল ময়মনসিংহের চিকিৎসক

রাশেদ খানের পদত্যাগ চেয়ে গণঅধিকারের উচ্চতর পরিষদ সদস্যের অনাস্থা

মোদির সঙ্গে রাহুলের ৮৮ মিনিটের বৈঠক, কী আলোচনা হলো

মধ্যরাতে দেশে দুই দফা ভূমিকম্প, উৎপত্তিস্থল সিলেট ও মৌলভীবাজার

বাড়ির পাশে পরিত্যক্ত ৩ গর্ত, শাস্তি চান সাজিদের মা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তফসিল ঘোষণা করায় নির্বাচন কমিশনকে প্রধান উপদেষ্টার শুভেচ্ছা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আজ জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন। ছবি: পিআইডি
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আজ জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন। ছবি: পিআইডি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ বাস্তবায়ন আদেশের ওপর গণভোটের তফসিল ঘোষণা করায় নির্বাচন কমিশনকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

আজ বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) এক শুভেচ্ছা বার্তায় তিনি বলেন, ‘এই তফসিল ঘোষণার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক অতিক্রম করল। ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থানের পর দেশ এখন যে নতুন পথে অগ্রসর হচ্ছে—এই নির্বাচন ও গণভোট সেই পথরেখাকে দৃঢ় করবে, গণমানুষের মতকে প্রাধান্য দেবে এবং নতুন বাংলাদেশের ভিত্তি আরও সুসংহত করবে।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, নির্বাচন কমিশন তাদের সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করবে স্বাধীনভাবে, নিরপেক্ষভাবে এবং সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের সঙ্গে। নির্বাচন ও গণভোটকে উৎসবমুখর, অংশগ্রহণমূলক ও সম্পূর্ণ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নির্বাচন কমিশনকে সব ধরনের প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করবে।’

দেশের রাজনৈতিক দলসমূহ, প্রার্থী, গণমাধ্যম, সুশীল সমাজ এবং সর্বোপরি দেশের জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এই নির্বাচন ও গণভোটকে একটি জাতীয় ঐক্যের উদ্যোগ হিসেবে গ্রহণ করুন। ভিন্নমতের প্রতি শ্রদ্ধা, শান্তিপূর্ণ পরিবেশ এবং গণতান্ত্রিক আচরণ আমাদের সামনের দিনগুলোকে আরও স্থিতিশীল করবে।

ড. ইউনূস বলেন, ‘বাংলাদেশ আজ নতুন ভবিষ্যতের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে। আপনাদের সকলের সক্রিয় অংশগ্রহণ ও দায়িত্বশীল আচরণের মধ্য দিয়ে আমরা একটি আধুনিক, ন্যায়ভিত্তিক ও সমৃদ্ধ রাষ্ট্র নির্মাণে সফল হব—এই আমার দৃঢ় বিশ্বাস।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ডিজির সঙ্গে তর্ক: অব্যাহতির ৪ দিনের মাথায় পুনর্বহাল ময়মনসিংহের চিকিৎসক

রাশেদ খানের পদত্যাগ চেয়ে গণঅধিকারের উচ্চতর পরিষদ সদস্যের অনাস্থা

মোদির সঙ্গে রাহুলের ৮৮ মিনিটের বৈঠক, কী আলোচনা হলো

মধ্যরাতে দেশে দুই দফা ভূমিকম্প, উৎপত্তিস্থল সিলেট ও মৌলভীবাজার

বাড়ির পাশে পরিত্যক্ত ৩ গর্ত, শাস্তি চান সাজিদের মা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত