Ajker Patrika

সার্ক প্রোগ্রামিং কমিটির বৈঠক ২৮-৩০ এপ্রিল

  • প্রোগ্রামিং কমিটির বৈঠক আয়োজনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মহাসচিব।
  • সদস্যরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সার্ক অনুবিভাগের ডিজিরা এই কমিটির সদস্য।
সাহিদুল ইসলাম চৌধুরী, ঢাকা 
সার্ক প্রোগ্রামিং কমিটির বৈঠক ২৮-৩০ এপ্রিল

অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান মুহাম্মদ ইউনূস চান দক্ষিণ এশিয়া আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা (সার্ক) সক্রিয় করা হোক। সার্ক সক্রিয় করার প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে সংস্থার স্থায়ী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠানের তাগিদ দিয়েছেন তিনি। এমন পরিস্থিতিতে সংস্থার প্রোগ্রামিং কমিটির বৈঠক ডাকা হয়েছে। ২৮ থেকে ৩০ এপ্রিল নেপালের কাঠমান্ডুতে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

সার্কের প্রোগ্রামিং কমিটির বৈঠক আয়োজনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সংস্থার মহাসচিব মো. গোলাম সারওয়ার। আজকের পত্রিকাকে তিনি গত রোববার জানান, সব সদস্যরাষ্ট্র এ বৈঠক অনুষ্ঠানে সম্মতি দিয়েছে।

সদস্যরাষ্ট্রগুলোর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সার্ক অনুবিভাগের মহাপরিচালকেরা (ডিজি) প্রোগ্রামিং কমিটির সদস্য। আর সদস্যরাষ্ট্রগুলোর পররাষ্ট্রসচিবেরা সংস্থার স্থায়ী কমিটির সদস্য।

কূটনৈতিক বিশ্লেষকেরা অবশ্য বলছেন, সার্কের নিয়মিত কাজকর্ম কেমন চলছে, তা খতিয়ে দেখতে প্রোগ্রামিং কমিটির বৈঠক দরকার আছে। তবে রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবে প্রায় এক দশক ধুঁকতে থাকা সংস্থাটিকে চাঙা করতে হলে সরকারপ্রধান পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠান জরুরি হয়ে পড়েছে। তার আগে পররাষ্ট্রসচিব ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ে বৈঠক হতে হবে।

বাংলাদেশ ছাড়াও আফগানিস্তান, ভারত, ভুটান, মালদ্বীপ, নেপাল, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা সার্কের সদস্য।

২০১৬ সালের ৯ ও ১০ নভেম্বর পাকিস্তানে সার্কের সরকারপ্রধান পর্যায়ে ১৯তম শীর্ষ বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের সীমান্তে উত্তেজনার জেরে প্রথমে ভারত এবং পরে বাংলাদেশ, ভুটান ও মালদ্বীপ এ বৈঠকে অংশ নিতে অস্বীকৃতি জানালে তা স্থগিত হয়ে যায়।

বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের (বিইআই) প্রেসিডেন্ট ও সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবির মনে করেন, ‘ভারত দক্ষিণ এশিয়ায় একক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য সার্ক কার্যকর হতে দিচ্ছে না। দেশটির প্রধানমন্ত্রী যতক্ষণ না পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবেন, ততক্ষণ শীর্ষ বৈঠক হবে না।’

সার্ক সক্রিয় ও কার্যকর করতে হলে দেশগুলোর দৃঢ় রাজনৈতিক সদিচ্ছা দরকার হবে, এমনটি জানিয়ে এম হুমায়ুন কবির বলেন, ‘আগে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক খারাপ থাকার বিষয়টি অজুহাত হিসেবে আসত। এখন বাংলাদেশের সঙ্গেও ভারতের সম্পর্ক খারাপ। এমন পরিস্থিতিতে সরকারপ্রধান পর্যায়ে বৈঠক হওয়া প্রায় অসম্ভব।’

সার্ক সনদ অনুযায়ী, কোনো সদস্যরাষ্ট্র অংশ না নিলে কর্মকর্তা, মন্ত্রীপর্যায়ের বৈঠক ও শীর্ষ সম্মেলন হয় না। সর্বশেষ শীর্ষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় ২০১৪ সালের ২৬-২৭ নভেম্বর নেপালের কাঠমান্ডুতে।

সার্কব্যবস্থায় যুক্ত কূটনীতিকেরা বলছেন, ১৯৮৫ সালে গঠিত সংস্থাটির উদ্যোগে গত ৪০ বছরে ঢাকাভিত্তিক সাউথ এশিয়ান রিজিয়নাল স্ট্যান্ডার্ডস অর্গানাইজেশন ও সার্ক অ্যাগ্রিকালচারাল সেন্টার, দিল্লিভিত্তিক সাউথ এশিয়ান ইউনিভার্সিটি, গুজরাটভিত্তিক সার্ক ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট সেন্টার, ইসলামাবাদভিত্তিক সার্ক এনার্জি সেন্টার ও সার্ক আরবিট্রেশন কাউন্সিল, থিম্পুভিত্তিক সার্ক ডেভেলপমেন্ট ফান্ড, কলম্বোভিত্তিক সার্ক কালচারাল সেন্টার ও কাঠমান্ডুভিত্তিক সার্ক টিউবারকিউলসিস অ্যান্ড এইচআইভি/এইডস সেন্টার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এক দশকের বেশি সময় ধরে রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবে পররাষ্ট্রসচিব, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সরকারপ্রধান পর্যায়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত না হওয়ায় এসব প্রতিষ্ঠান পরিচালনার ক্ষেত্রে বহু জটিলতা দেখা দিচ্ছে।

মুহাম্মদ ইউনূস চলতি এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ব্যাংককে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে সার্কের পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ে বৈঠক অনুষ্ঠানের তাগিদ দেন।

পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ে (স্ট্যান্ডিং কমিটি) ও পররাষ্ট্র মন্ত্রীপর্যায়ে (কাউন্সিল অব মিনিস্টার্স) সার্কের সর্বশেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় নেপালের পোখারায় যথাক্রমে ২০১৬ সালের ১৬ ও ১৭ এপ্রিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত