Ajker Patrika

বদলি ঠেকাতে আদালতে মাদক নিয়ন্ত্রণের এডি

  • ‘অন্যায় ও অবিচারের’ অভিযোগ সহকারী পরিচালকের।
  • এলাকার লোকদের পদায়নের অভিযোগ ডিজির বিরুদ্ধে।
 শাহরিয়ার হাসান, ঢাকা
আপডেট : ৩১ জানুয়ারি ২০২৫, ১১: ৫৩
বদলি ঠেকাতে আদালতে মাদক নিয়ন্ত্রণের এডি

তুলনামূলকভাবে অল্প সময়ের মধ্যে বদলি করায় ‘সংক্ষুব্ধ হয়ে’ উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন করেছেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের একজন সহকারী পরিচালক (এডি)। কর্মকর্তাদের অনেকেই বলছেন, সরকারি কর্মচারী হিসেবে এ রকম রিট কোনো ভালো নজির নয়। তবে একই সঙ্গে কর্মকর্তাদের কেউ কেউ তাঁর বদলির পেছনে বিশেষ উদ্দেশ্য থাকারও ইঙ্গিত দিয়েছেন।

সহকারী পরিচালক রাহুল সেন গত বছরের ১২ মে ঢাকা মেট্রো. উত্তরে যোগ দেন। দাপ্তরিক চিঠিপত্র ঘেঁটে দেখা যায়, সাত মাসের মাথায় অধিদপ্তর তাঁকে গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর এক অফিস আদেশে পরবর্তী পদায়নের জন্য প্রধান কার্যালয়ে ন্যস্ত করে। ২৩ ডিসেম্বর তিনি প্রধান কার্যালয়ে যোগ দেন। ২৬ ডিসেম্বর আরেক অফিস আদেশে তাঁকে ঠাকুরগাঁও জেলা কার্যালয়ে বদলি করে পদায়ন করা হয়। রাহুল ৩১ ডিসেম্বর ঠাকুরগাঁওয়ে সহকারী পরিচালক হিসেবে যোগ দেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, ঠাকুরগাঁওয়ে যোগ দেওয়ার পর রাহুল সেন ‘সংক্ষুব্ধ হয়ে’ ১৪ জানুয়ারি উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন করেন। সেখানে তিনি অভিযোগ করেন, কোনো কারণ ছাড়াই সময়ের আগে বদলি করে তাঁর সঙ্গে অবিচার করা হয়েছে। উচ্চ আদালত বদলির দুটি অফিস আদেশ ৩০ দিনের জন্য স্থগিত করেন।

বদলি নিয়ে সরকারি কর্মচারী হিসেবে কার্যত নজিরবিহীন এমন রিট করার বিষয়ে জানতে চাইলে রাহুল সেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার সঙ্গে অন্যায় ও অবিচার করা হয়েছে। এ জন্যই আমি রিট করেছি।’

অধিদপ্তরের জ্যেষ্ঠ কয়েকজন কর্মকর্তা বলেছেন, সরকারি সার্ভিস রুলস অনুযায়ী কোনো কর্মকর্তাকে কোথাও বদলি করা হলে সেখানে তিনি তিন বছর পর্যন্ত থাকবেন। তবে অধিদপ্তর চাইলে বা কোনো সুনির্দিষ্ট কারণ, মামলা, অভিযোগের কারণে কর্মচারীকে যেকোনো সময়ে বদলি করতে পারে। সেটা নিয়ে আপত্তি করা যাবে না। রাহুল সেনের দাবি, তাঁকে কোনো কারণ ছাড়াই বদলি করা হয়।

রাহুল সেন বদলি আদেশে উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশের বলে ১৯ জানুয়ারি আবার ঢাকার কার্যালয়ে যোগদানের অনুমতি চেয়ে অধিদপ্তরের পরিচালক প্রশাসনের কাছে আবেদন করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অধিদপ্তরের পদস্থ এক কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে বলেন, রাহুল সেন আবেদন করলেও অধিদপ্তর তাৎক্ষণিকভাবে অনুমতি না দিয়ে করণীয় জানতে অ্যাটর্নি জেনারেলের মতামত চেয়ে পাঠিয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত অধিদপ্তর কোনো মতামত পায়নি।

এদিকে ওয়াকিবহাল একটি সূত্র বলেছে, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের বর্তমান মহাপরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান (ডিজি) দায়িত্বে থাকবেন সর্বোচ্চ আর এক মাস। এই অবস্থায় অভিযোগ উঠেছে, যাওয়ার আগে তিনি নিজের এলাকার পরিচিতদের গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানোর চেষ্টা করছেন। জানা গেছে, এনায়েত হোসেন নামের এক দশম গ্রেডের কর্মকর্তাকে ঢাকা মেট্রো উত্তরের সহকারী পরিচালক হিসেবে ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এডি হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত এনায়েতের বাড়ি ডিজির এলাকা বরিশালের বাকেরগঞ্জে। অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কেউ কেউ বলছেন, নিয়মিত এত সহকারী পরিচালক থাকার পরও ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ এ জায়গায় দশম গ্রেডের কাউকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়ায় ইঙ্গিত মেলে, এর পেছনে বিশেষ কোনো উদ্দেশ্য রয়েছে।

এ বিষয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ডিজি মোস্তাফিজুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সাত মাসের মাথায় রাহুল সেনের বদলির সিদ্ধান্ত আমার একক নয়। পাঁচ সদস্যদের একটি কমিটি বদলির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে। সংগত কারণেই তাঁকে বদলি করা হয়েছে।’

রাহুল সেনের আগের কর্মস্থল নিজ এলাকা বাকেরগঞ্জের অধিবাসীকে বদলি করার বিষয়ে ডিজি বলেন, ‘বাকেরগঞ্জের কর্মকর্তার কী ঢাকায় চাকরি করার অধিকার নেই?’

অধিদপ্তরের পরিচালক প্রশাসন মো. আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, ‘রাহুল সেনের রিটের বিরুদ্ধে অধিদপ্তর আপিল করেছিল। আপিলের পর আদালত বদলির আদেশের ওপর স্থগিতাদেশের মেয়াদ কমিয়ে ১৫ দিন করেছেন।... তিনি সংক্ষুব্ধ হয়ে রিটটা করেছিলেন, তা ঠিক আছে। কিন্তু একজন দায়িত্বশীল পদের কর্মকর্তা হিসেবে এ প্রক্রিয়ায় যাওয়া তাঁর উচিত হয়নি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

লুটপাটে শেষ ৫ কোটির প্রকল্প

‘ওরা সোনার তৈরি, আমরা মাটির’, কারখানার ভেতর আত্মহত্যার আগে শ্রমিকের ফেসবুক পোস্ট

দিনাজপুরে হিন্দু নেতাকে অপহরণ করে হত্যা: ভারত সরকার ও বিরোধী দল কংগ্রেসের উদ্বেগ

যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল, বেশির ভাগই ভারতীয়, আছে বাংলাদেশিও

আজ থেকে ৫০০ টাকায় মিলবে ১০ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত