সুলতান মাহমুদ
‘ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন, ২০২৩’ জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে গত ১২ সেপ্টেম্বর। আর ১৮ সেপ্টেম্বর গেজেট প্রকাশ হয়েছে। এত দিন যাবৎ ভূমি সংক্রান্ত ফৌজদারি মামলাগুলো দণ্ডবিধির ৪০৬ / ৪২০ / ৪৬৭ / ৪৬৮ / ৪৭১ ধারাসহ বিভিন্ন ধারার অধীনে হতো। নতুন আইনে ভূমি সম্পর্কিত অপরাধগুলোকে সুনির্দিষ্ট করা হয়েছে।
ভূমি সংক্রান্ত প্রতারণা/জালিয়াতিকে এই আইনের ৪ ও ৫ ধারায় সুনির্দিষ্টভাবে দণ্ডনীয় করা হয়েছে। প্রতারণা সম্পর্কিত দণ্ডবিধির ৪২০ ধারা ‘জামিনযোগ্য’। নতুন আইনের ১৯ ধারায় ভূমি সম্পর্কিত প্রতারণাকে ‘আমলযোগ্য’ এবং ‘জামিন অযোগ্য’ করা হয়েছে। আমলযোগ্য কথার অর্থ হচ্ছে, থানায় মামলা হলে আদালতের পরোয়ানা ছাড়াই পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারবে।
এই আইনের প্রায় সব অপরাধের বিচারে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের একসঙ্গে এখতিয়ার দেওয়ার সুযোগ রাখা হলেও ভূমি সম্পর্কিত প্রতারণা (ধারা ৪) ও জালিয়াতির (ধারা ৫) বিচারের এখতিয়ার ন্যস্ত করা হয়েছে কেবল জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটদের ওপর (ধারা ১৯ ও ২২)।
থানায় ভূমি সংক্রান্ত অপরাধের মামলা করা যাবে
ভূমি সংক্রান্ত অপরাধের অভিযোগে দণ্ডবিধির যেসব ধারায় এত দিন মামলা হতো, তার বড় একটি অংশ ‘আমল অযোগ্য’ ছিল। ফলে এসব মামলা করতে বিচারপ্রার্থীদের আদালতে যেতে হতো। নতুন ভূমি আইনে প্রতিটি অপরাধ ‘আমলযোগ্য’ (cognizable) করা হয়েছে (ধারা ১৯)। ফলে বিচারপ্রার্থী এখন থেকে এসব মামলা থানাতেই করতে পারবেন। ভূমি সংক্রান্ত এসব অপরাধের মামলায় আসামিকে বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তার করতে পারবে পুলিশ।
মানুষ এই আইনের মাধ্যমে কতটুকু সুফল পাবে জানতে চাইলে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, ‘নতুন এই আইনের কারণে ভূমি সংক্রান্ত অপরাধ আগের চেয়ে কমবে বলে মনে হচ্ছে। যেহেতু আইনটি একটু কঠোর, থানায় মামলা করা যাবে, সেহেতু মানুষ ভয়ে অপরাধ থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করবে বলে মনে হচ্ছে। তবে আইনের সুফল পেতে হলে যারা এই আইন প্রয়োগ করবে তাদের নিরপেক্ষ থাকাটা জরুরি। আইন প্রয়োগকারী ব্যক্তিরা নিরপেক্ষ না হলে বিপদ বাড়তেও পারে, তবে তা আগাম বলা কঠিন।’
দলিল বাতিলের মামলায় দেওয়ানি আদালতে যেতে হবে না
দলিল বাতিলের মামলা এখন থেকে দেওয়ানি আদালতে করার আর প্রয়োজন পড়বে না। কারণ প্রতারণা বা জালিয়াতির মাধ্যমে সৃজিত/প্রস্তুতকৃত দলিলের বিরুদ্ধে এই আইনের ৪ ও ৫ ধারায় জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে মামলা করা যাবে। বিচার শেষে কোনো দলিল ‘প্রতারণামূলক’ বা ‘জাল’ সাব্যস্ত হলে জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট যেকোনো কর্তৃপক্ষকে নথি বা রেজিস্টারে নোট দেওয়ার আদেশ দেবেন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট।
দেওয়ানি আদালতের এখতিয়ার বাড়বে ডিসিদের ওপর
এই আইনের ফলে জেলা প্রশাসকের ওপর দেওয়ানি আদালতের এখতিয়ার বাড়বে। কারণ আইনটির ৬ ধারা জাল/প্রতারণামূলক দলিলের বিরুদ্ধে নথি/রেজিস্টারে নোট দেওয়ার আদেশ দেওয়ার ক্ষমতা দেওয়ানি আদালতকেও দেওয়া হয়েছে। সুতরাং দেওয়ানি আদালত কোনো মামলায় (যেমন: ঘোষণামূলক মোকদ্দমা) যদি কোনো দলিলকে প্রতারণামূলক/জাল গণ্য করেন, সে ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসক বা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষকে সংশ্লিষ্ট নথিতে নোট দেওয়ার আদেশ দিতে পারবেন।
আবার এই আইন অনুসারে ‘দলিল’ বলতে কেবল সাবরেজিস্ট্রি অফিসের দলিলকে বোঝাবে না বরং খতিয়ান, রসিদ, আম মোক্তারনামা, নকশা, স্কেচ, ম্যাপ, হাত নকশা, খতিয়ান, ডুপ্লিকেট কার্বন রসিদ, ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধের দাখিলা, বরাদ্দপত্র, ছাড়পত্র, অনাপত্তিপত্র ও পর্চাসহ ভূমি সম্পর্কিত যাবতীয় কাগজপত্রই ‘দলিল’ হিসেবে গণ্য হবে (ধারা ২ (৫))।
দেওয়ানি আদালতে দখল উদ্ধার প্রক্রিয়া সহজ হবে
আইনের ৮ (৭) ধারার বিধান অনুসারে, দেওয়ানি আদালত কোনো পক্ষের আবেদনক্রমে বা স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে কোনো জমির দখল উদ্ধার করে দেওয়ার দায়িত্ব নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ওপর অর্পণ করতে পারবেন। ফলে দেওয়ানি আদালত থেকে বিনা খরচে দখল উদ্ধারের একটা সুযোগ তৈরি হবে।
ভূমির সীমানা নিয়ে মামলা বাড়বে
নতুন আইনের ১০ ধারায় ‘আইনানুগভাবে’ দখলকৃত ভূমির সীমানা বা সীমানা চিহ্নের ক্ষতিসাধন করাকে দণ্ডনীয় অপরাধ গণ্য করা হয়েছে এবং জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উভয়কে বিচারের এখতিয়ার দেওয়া হয়েছে। দেশে সীমানা সংক্রান্ত বিরোধ প্রচুর। অনেক ক্ষেত্রেই দলিল, খতিয়ান ও মৌজা ম্যাপে একই জমির পরিমাণ ভিন্ন ভিন্ন। দখলকৃত ভূমির সীমানা আইনানুগভাবে সঠিক কি না, সেটি নিরূপণ করা জটিল ও সময়সাপেক্ষ বিচারিক কাজ। এই আইন কার্যকর হওয়ায় সীমানা বিষয়ক ফৌজদারি মামলা বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
লেখক: সহ–সম্পাদক, আজকের পত্রিকা
‘ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন, ২০২৩’ জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে গত ১২ সেপ্টেম্বর। আর ১৮ সেপ্টেম্বর গেজেট প্রকাশ হয়েছে। এত দিন যাবৎ ভূমি সংক্রান্ত ফৌজদারি মামলাগুলো দণ্ডবিধির ৪০৬ / ৪২০ / ৪৬৭ / ৪৬৮ / ৪৭১ ধারাসহ বিভিন্ন ধারার অধীনে হতো। নতুন আইনে ভূমি সম্পর্কিত অপরাধগুলোকে সুনির্দিষ্ট করা হয়েছে।
ভূমি সংক্রান্ত প্রতারণা/জালিয়াতিকে এই আইনের ৪ ও ৫ ধারায় সুনির্দিষ্টভাবে দণ্ডনীয় করা হয়েছে। প্রতারণা সম্পর্কিত দণ্ডবিধির ৪২০ ধারা ‘জামিনযোগ্য’। নতুন আইনের ১৯ ধারায় ভূমি সম্পর্কিত প্রতারণাকে ‘আমলযোগ্য’ এবং ‘জামিন অযোগ্য’ করা হয়েছে। আমলযোগ্য কথার অর্থ হচ্ছে, থানায় মামলা হলে আদালতের পরোয়ানা ছাড়াই পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারবে।
এই আইনের প্রায় সব অপরাধের বিচারে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের একসঙ্গে এখতিয়ার দেওয়ার সুযোগ রাখা হলেও ভূমি সম্পর্কিত প্রতারণা (ধারা ৪) ও জালিয়াতির (ধারা ৫) বিচারের এখতিয়ার ন্যস্ত করা হয়েছে কেবল জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটদের ওপর (ধারা ১৯ ও ২২)।
থানায় ভূমি সংক্রান্ত অপরাধের মামলা করা যাবে
ভূমি সংক্রান্ত অপরাধের অভিযোগে দণ্ডবিধির যেসব ধারায় এত দিন মামলা হতো, তার বড় একটি অংশ ‘আমল অযোগ্য’ ছিল। ফলে এসব মামলা করতে বিচারপ্রার্থীদের আদালতে যেতে হতো। নতুন ভূমি আইনে প্রতিটি অপরাধ ‘আমলযোগ্য’ (cognizable) করা হয়েছে (ধারা ১৯)। ফলে বিচারপ্রার্থী এখন থেকে এসব মামলা থানাতেই করতে পারবেন। ভূমি সংক্রান্ত এসব অপরাধের মামলায় আসামিকে বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তার করতে পারবে পুলিশ।
মানুষ এই আইনের মাধ্যমে কতটুকু সুফল পাবে জানতে চাইলে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, ‘নতুন এই আইনের কারণে ভূমি সংক্রান্ত অপরাধ আগের চেয়ে কমবে বলে মনে হচ্ছে। যেহেতু আইনটি একটু কঠোর, থানায় মামলা করা যাবে, সেহেতু মানুষ ভয়ে অপরাধ থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করবে বলে মনে হচ্ছে। তবে আইনের সুফল পেতে হলে যারা এই আইন প্রয়োগ করবে তাদের নিরপেক্ষ থাকাটা জরুরি। আইন প্রয়োগকারী ব্যক্তিরা নিরপেক্ষ না হলে বিপদ বাড়তেও পারে, তবে তা আগাম বলা কঠিন।’
দলিল বাতিলের মামলায় দেওয়ানি আদালতে যেতে হবে না
দলিল বাতিলের মামলা এখন থেকে দেওয়ানি আদালতে করার আর প্রয়োজন পড়বে না। কারণ প্রতারণা বা জালিয়াতির মাধ্যমে সৃজিত/প্রস্তুতকৃত দলিলের বিরুদ্ধে এই আইনের ৪ ও ৫ ধারায় জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে মামলা করা যাবে। বিচার শেষে কোনো দলিল ‘প্রতারণামূলক’ বা ‘জাল’ সাব্যস্ত হলে জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট যেকোনো কর্তৃপক্ষকে নথি বা রেজিস্টারে নোট দেওয়ার আদেশ দেবেন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট।
দেওয়ানি আদালতের এখতিয়ার বাড়বে ডিসিদের ওপর
এই আইনের ফলে জেলা প্রশাসকের ওপর দেওয়ানি আদালতের এখতিয়ার বাড়বে। কারণ আইনটির ৬ ধারা জাল/প্রতারণামূলক দলিলের বিরুদ্ধে নথি/রেজিস্টারে নোট দেওয়ার আদেশ দেওয়ার ক্ষমতা দেওয়ানি আদালতকেও দেওয়া হয়েছে। সুতরাং দেওয়ানি আদালত কোনো মামলায় (যেমন: ঘোষণামূলক মোকদ্দমা) যদি কোনো দলিলকে প্রতারণামূলক/জাল গণ্য করেন, সে ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসক বা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষকে সংশ্লিষ্ট নথিতে নোট দেওয়ার আদেশ দিতে পারবেন।
আবার এই আইন অনুসারে ‘দলিল’ বলতে কেবল সাবরেজিস্ট্রি অফিসের দলিলকে বোঝাবে না বরং খতিয়ান, রসিদ, আম মোক্তারনামা, নকশা, স্কেচ, ম্যাপ, হাত নকশা, খতিয়ান, ডুপ্লিকেট কার্বন রসিদ, ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধের দাখিলা, বরাদ্দপত্র, ছাড়পত্র, অনাপত্তিপত্র ও পর্চাসহ ভূমি সম্পর্কিত যাবতীয় কাগজপত্রই ‘দলিল’ হিসেবে গণ্য হবে (ধারা ২ (৫))।
দেওয়ানি আদালতে দখল উদ্ধার প্রক্রিয়া সহজ হবে
আইনের ৮ (৭) ধারার বিধান অনুসারে, দেওয়ানি আদালত কোনো পক্ষের আবেদনক্রমে বা স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে কোনো জমির দখল উদ্ধার করে দেওয়ার দায়িত্ব নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ওপর অর্পণ করতে পারবেন। ফলে দেওয়ানি আদালত থেকে বিনা খরচে দখল উদ্ধারের একটা সুযোগ তৈরি হবে।
ভূমির সীমানা নিয়ে মামলা বাড়বে
নতুন আইনের ১০ ধারায় ‘আইনানুগভাবে’ দখলকৃত ভূমির সীমানা বা সীমানা চিহ্নের ক্ষতিসাধন করাকে দণ্ডনীয় অপরাধ গণ্য করা হয়েছে এবং জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উভয়কে বিচারের এখতিয়ার দেওয়া হয়েছে। দেশে সীমানা সংক্রান্ত বিরোধ প্রচুর। অনেক ক্ষেত্রেই দলিল, খতিয়ান ও মৌজা ম্যাপে একই জমির পরিমাণ ভিন্ন ভিন্ন। দখলকৃত ভূমির সীমানা আইনানুগভাবে সঠিক কি না, সেটি নিরূপণ করা জটিল ও সময়সাপেক্ষ বিচারিক কাজ। এই আইন কার্যকর হওয়ায় সীমানা বিষয়ক ফৌজদারি মামলা বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
লেখক: সহ–সম্পাদক, আজকের পত্রিকা
নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন বাতিলের দাবিতে ডাকা হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে জুলাইয়ের সম্মুখসারির নারীদের নোংরা ভাষায় গালি-গালাজের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব রিফাত রশিদ।
২৬ মিনিট আগেনারী সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন বাতিল করা হলে অন্য কমিশনগুলোর রিপোর্টও বাতিলযোগ্য বলে মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা। শনিবার (৩ মে) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ কথা বলেন।
১ ঘণ্টা আগেপররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ফেসবুক পেজ হ্যাক হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের জনকূটনীতি বিভাগের পরিচালক এ এইচ এম মাসুম বিল্লাহ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
৪ ঘণ্টা আগেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আবার বৃত্তি পরীক্ষা চালু হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার। আজ শনিবার লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে
৫ ঘণ্টা আগে