Ajker Patrika

বারিধারায় থাকি, এখানেও অনেক মশা: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
বারিধারায় থাকি, এখানেও অনেক মশা: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

রাজধানী ঢাকার বারিধারা কূটনৈতিক এলাকা হিসেবে খ্যাত। সেখানকার আবাসিক এলাকায় থাকেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, রাজধানীর এই অভিজাত এলাকায় থেকেও তিনি মশার উপদ্রব থেকে রক্ষা পাচ্ছেন না। 

আজ সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আসেন নেপাল এবং সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত। সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মশার উপদ্রব নিয়ে এ কথা বলেন। 

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, ১ জানুয়ারি থেকে আজ সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ২৫৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। বাংলাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সর্বোচ্চ রেকর্ড এটি। এ সময় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন ৫৮ হাজার ৯২৭ জন। এর মধ্যে ঢাকাতেই ৩৭ হাজার ৩৯০ জন। 

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ‘বারিধারায় থাকি, এখানেও অনেক মশা। আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। নিজের বাড়ি পরিষ্কার রাখতে হবে। গ্রামে কিন্তু এত মশা নেই, ঢাকা শহরে এটা বেশি। তাই ঢাকা শহর অন্যান্য সিটি করপোরেশনগুলোতে যদি বেশি নজরদারি করা হয় তাহলে হয়তো আগামীতে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব কমবে। স্প্রে যে পরিমাণ দরকার ছিল সে পরিমাণ দেওয়া সম্ভব হয়নি। কিন্তু তারা যথেষ্ট চেষ্টা করেছে, সে জন্যই ডেঙ্গু কমে এসেছে। আশা করি, সামনে ভালো ওষুধ যথা সময়ে দেওয়া হবে।’ 

ওষুধের কার্যকারিতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘স্প্রে যথেষ্ট করার পরও যখন মশা এত বাড়ে তখন অনেক সময় মনে হয় এই ওষুধটা মশার জন্য কার্যকর হয়নি। মানুষের শরীরে যেভাবে অ্যান্টিবডি ডেভেলপ করেছে, মশারও তেমন অ্যান্টিবডি ডেভেলপ করেছে।’ 

অসচেতনতার কারণে অনেকে দেরি করে হাসপাতালে যাওয়ার কারণ পরিস্থিতি জটিল হয়েছে মন্তব্য করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেখা যাচ্ছে রোগী যখন ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে তখন অনেকে মনে করছেন সর্দি জ্বর হয়েছে। সেটা ভেবে অনেকে দেরিতে চিকিৎসা নিতে আসছে। ততক্ষণে রোগ জটিল হয়ে যাচ্ছে। হেমোরেজিক একটা ভাইরাস আছে ডেঙ্গুর যা ইন্টারনাল ব্লিডিং ঘটায়। সেটি শুরু হলে রোগীকে বাঁচানো কঠিন হয়ে যায়। দেরি করে আসার কারণে অনেক রোগী মারা গেছে।’ 

মন্ত্রী জানান, হাসপাতালে দেরিতে চিকিৎসা নিতে আসায় ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী বেশি মারা যাচ্ছে। ভর্তির তিন দিনের মধ্যে মারা গেছেন ৭২ শতাংশ রোগী। 

ঢাকায় ঘরবাড়ি বেশি, যেখানে আবর্জনা ও পানি জমে থাকে, অবকাঠামো নির্মাণযজ্ঞও অনেক বেশি—এ কারণেই এখানে মশা বেশি উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সব জায়গায় স্প্রে করা প্রয়োজন। স্প্রে সিটি করপোরেশন ও পৌরসভা করে থাকে। এ বছর দেখা গেল তারপরও মশা অনেক বেড়েছিল। এতে রোগীর সংখ্যাও বেড়েছে। সার্বক্ষণিক স্প্রে করলেও দেখি মশা দূর হয় না। সে জন্য সবাইকে সচেতন হতে হবে।’ 

বাংলাদেশে ডেঙ্গু রোগীর পাশাপাশি মৃত্যুর হারও বেড়েছিল উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, ‘আশপাশের দেশগুলোর মধ্যে থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুরে ডেঙ্গু রোগী বেড়েছিল। দেশে ৫৮ হাজার ডেঙ্গু রোগী পেয়েছি। তার মধ্যে ৩৬ হাজারই ঢাকায়, তাও সিটি করপোরেশন এলাকায়। সিটি করপোরেশনেই সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু রোগী। সিটি করপোরেশনে লোকও বেশি বাস করে। এখানে অনেক ড্রেনেজ সিস্টেম আছে। অনেক রকমের পানি জমে আছে, সেটাও বেশি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত