মো. হুমায়ূন কবীর, ঢাকা
ভোটার তালিকা হালনাগাদের জন্য দেশব্যাপী বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহের কাজ গত সোমবার শেষ হয়েছে। তবে নিবন্ধন এবং মৃত ভোটারের নাম কাটা—কোনোটির সংখ্যার ক্ষেত্রেই নির্বাচন কমিশনের (ইসি) লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নির্দেশনা উপেক্ষা করে এবার অনেক তথ্য সংগ্রহকারী বাড়ি বাড়ি যাননি বলে অভিযোগ উঠেছে। পর্যবেক্ষকদের ধারণা, লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ার সম্ভাব্য কারণ এটা।
ইসির লক্ষ্য ছিল, বিদ্যমান ভোটারের ৫ শতাংশ অর্থাৎ ৬১ লাখ ৮৯ হাজার ৩৭৫ জনকে ভোটারকে নিবন্ধনের আওতায় আনা। আর ফরম পূরণ করেছেন ৫০ লাখ ৯০ হাজার ৩৭ জন। মৃত ভোটার কর্তনের ফরমও পূরণ করা হয়েছে কম। ২০২২ সালে ২২ লাখের বেশি মৃত ভোটারের নাম কর্তন করা হয়েছিল। এ বছর কর্তনের জন্য ১৫ লাখ ৭৫ হাজার ৫৯৩টি ফরম পূরণ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
তথ্য সংগ্রহের কাজ শেষ হওয়ার পরদিন গত মঙ্গলবার এ বিষয়ে ইসির সিনিয়র সচিব আখতার হোসেন বলেন, কতটা তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে এবং কম হলে সমস্যা কী ছিল, তা পর্যালোচনা করা হবে। তিনি বলেন, ‘আমরা বাড়ি বাড়ি যেতে পেরেছি কি না, না পেরে থাকলে কী সীমাবদ্ধতা ছিল, তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করব। তথ্য সংগ্রহকারীরা অনেক বাড়িতেই গিয়েছেন, কাউকে না পেলে ফোন নম্বর দিয়ে এসেছেন ৷ তবে আমরা যেখানে যেতে পারিনি, সেটা নিয়ে সীমাবদ্ধতা চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতে হবে।’
সরেজমিন রাজধানীর কয়েকটি এলাকা
রাজধানীর পশ্চিম আগারগাঁও এবং পশ্চিম কাফরুল এলাকার কয়েকটি বাড়িতে যাওয়া ছাড়াও উত্তরা, মগবাজার, মতিঝিল এজিবি কলোনি, পূর্ব রায়েরবাজার এলাকার কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার কয়েকজন সংবাদকর্মী। তাঁরা পশ্চিম আগারগাঁও ও পশ্চিম কাফরুলের যে ১১টি বাড়িতে গিয়েছিলেন, সেগুলোর মধ্যে ৭টি বাড়িতেই যাননি তথ্য সংগ্রহকারীরা। যে চারটি বাড়িতে গেছেন, সেগুলোর সবই রাস্তার লাগোয়া। যেসব বাড়িতে তথ্য সংগ্রহকারীরা গেছেন, সেগুলোর কেয়ারটেকাররা জানিয়েছেন, কেউ বাদ পড়লে যোগাযোগ করার জন্য মোবাইল নম্বরসহ একটি স্টিকার সাঁটিয়ে দেওয়া হয়েছে।
পশ্চিম আগারগাঁওয়ের ৫ নম্বর বাড়ি রোকন আহমেদ সুপারভিলার কেয়ারটেকার মো. জুয়েল জানান, বাড়িটিতে কেউ তথ্য সংগ্রহে আসেননি। একই কথা বলেন পশ্চিম কাফরুলের ১৫৫/৮ নম্বর বাসার কেয়ারটেকার রাশেদ। ৫৫/১ বাড়ির বাসিন্দা ও ১৫৫/৩/১ নম্বর বাসা দেখভালের দায়িত্বে থাকা মোমেনা বেগম জানান, তাঁদের বাসায় কেউ তথ্য সংগ্রহ করতে যাননি।
পশ্চিম কাফরুলের বাসিন্দা হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘আমার ছেলে ভোটার হবে। কিন্তু কেউ তথ্য সংগ্রহ করতে আসেননি।’
একই এলাকার বাসিন্দা একটি রিকশা গ্যারেজের মালিক মো. বিল্লাল হোসেন বলেন, জন্মনিবন্ধন সনদ হারিয়ে ফেলায় তাঁর মা ভোটার হতে পারেননি। ভেবেছিলেন, তথ্য সংগ্রহকারীরা এলে তাঁদের কাছে এ বিষয়ে খোঁজ নেবেন। তাঁরা না আসায় মায়ের ভোটার হওয়া নিয়ে উদ্বেগে আছেন।
তথ্য সংগ্রহকারীরা বাড়ি বাড়ি যাননি অভিযোগ করে মগবাজারের বাসিন্দা হাবিবুর রহমান জানান, তাঁর বাসায় কোনো তথ্য সংগ্রহকারী যাননি। শুক্রাবাদের রিয়াদ হোসেনের বাসায়ও কেউ হালনাগাদ তথ্য সংগ্রহের জন্য যাননি।
উত্তরার ১৮ নম্বর সেক্টরের বাসিন্দা মো. আরিফ বলেন, দুজন ভোটারযোগ্য সদস্য বাসায় রয়েছেন, কিন্তু তথ্য সংগ্রহকারীরা আসেননি। মতিঝিল এজিবি কলোনির বাসিন্দা গোলাম সামদানি বলেন, ‘আমার স্ত্রী ও শ্যালিকার ভোটার এলাকা পরিবর্তন করব। কিন্তু তথ্য সংগ্রহকারীরা বাসায় না আসায় কাজটি করতে পারছি না।’
ঢাকার বাইরের খণ্ডচিত্র
উত্তরের জয়পুরহাটে ভোটার তালিকা হালনাগাদের বিষয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে। সদরসহ জেলার পাঁচটি উপজেলার কোমর গ্রামের আব্দুল ওয়ারেছ, করিম নগর গ্রামের লুৎফর রহমান জাকের, কালাই উপজেলার তালুকদার পাড়ার লিটন, বাখড়া গ্রামের গাজিউল, খলিলুর, নওপাড়া গ্রামের জিয়াউর রহমান, পশ্চিম পাড়ুলিয়া গ্রামের আরমান, তারাকুলের হাসেম, মিনিগারির আব্দুর রাজ্জাক, গোপীনাথপুরের মোস্তফা আলী, কাটাপুকুর গ্রামের মোফাজ্জল হোসেনসহ ২৫ জনের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ১৪ জনের বাড়িতে তথ্য সংগ্রহকারীরা গেছেন। ছয়জন বলেছেন, গ্রামের মাইকে প্রচার করে এক জায়গায় বসে তথ্য হালনাগাদের কাজ করা হয়েছে। তিনজনের বাড়িতে কেউ যাননি।
বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার চারটি ইউনিয়নের ১৬টি পরিবারে দৈবচয়ন ভিত্তিতে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, প্রায় ৫০ শতাংশ বাড়িতে তথ্য সংগ্রহকারী যাননি। ১৬টি বাড়ির মধ্যে ৯টির লোকজন বলেছেন, তাঁরা একবার মাইকে ভোটার হালনাগাদের কথা প্রচার করতে শুনেছেন, কিন্তু কেউ তথ্য নিতে আসেননি।
এর মধ্যে বাহিরদিয়া-মানসা ইউনিয়নের আট্টাকী গ্রামের ইদ্রিস হাওলাদারের মেয়ে মুক্তা আক্তার বলেন, ‘আমি নতুন ভোটার হব। সব কাগজ গুছিয়ে রেখেছি; কিন্তু কেউ আসেননি।’
ঝালকাঠি সদর উপজেলার পোনাবালিয়া ইউনিয়নের নতুন ভোটার মশিউর রহমান বলেন, ‘আমার এলাকায় অনেক বাড়িতেই এসে তথ্য সংগ্রহ করতে দেখেছি।’
সাতক্ষীরা পৌর শহরসহ আশপাশের অনেক এলাকায় যাননি তথ্য সংগ্রহকারীরা। সাতক্ষীরার কাটিয়া লস্করপাড়া এলাকার বাসিন্দা রুকসানা আক্তার বলেন, ‘আমার বাড়িতে কেউ আসেননি। জানামতে, আমাদের মহল্লার কোনো বাড়িতেই তাঁরা আসেননি।’
একই কথা বলেন পলাশপোল এলাকার বাসিন্দা লাভলী চৌধুরী ও আনিসুর রহমান।
ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার অনেকের অভিযোগ, তথ্য সংগ্রহকারীরা তাঁদের বাড়িতে যাননি। ভোটার হতে আগ্রহী তথ্য সংগ্রহকারীকে ফোন করেও তথ্য দিতে পারেননি বলে অভিযোগ রয়েছে। কেউ কেউ বলেছেন, ডিজিটাল জন্মসনদ, নাগরিকত্ব সার্টিফিকেট, কাবিননামা, ভাড়াটেদের ক্ষেত্রে বাড়িমালিকের এনআইডি ও বিদ্যুৎ বিলের কপি পেতে বিপাকে পড়েছেন।
রংপুরের মিঠাপুকুরে তথ্য সংগ্রহকারীদের অনেকে বাড়িতে গিয়ে ভোটারের তথ্য সংগ্রহ করেননি বলে অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার তুলশীপুর গ্রামের অনন্ত রায় জানান, তাঁর মেয়ে ভোটার হওয়ার যোগ্য। কিন্তু তথ্য সংগ্রহকারী বাড়িতে গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করেননি। চিথলী দক্ষিণ পাড়া গ্রামের খোরশেদ আলম জানান, ছেলের তথ্য নেওয়ার জন্য যোগাযোগ করার পরও তথ্য সংগ্রহকারী তাঁর বাড়িতে যাননি। পরে তিনি নিজ দায়িত্বে সুপারভাইজারের কাছ থেকে ফরম সংগ্রহ করে তথ্য সংগ্রহকারীর বাড়িতে গিয়ে তথ্য ফরমে স্বাক্ষর নিয়েছেন।
তথ্য সংগ্রহকারীরা বাড়ি বাড়ি না গেলে তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না—এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইসির সিনিয়র সচিব বলেন, বাদ পড়া ভোটাররা বুধবার থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত নিবন্ধনকেন্দ্রে গিয়ে ভোটার হতে পারবেন। এ ছাড়া অনলাইনে আবেদন করে সংশ্লিষ্ট উপজেলা, থানা নির্বাচন অফিসে গিয়েও ভোটার হওয়া যাবে। কেউ দায়িত্ব পালনে অবহেলা করে থাকলে কারণ জানার চেষ্টা করব। পর্যালোচনা করে অবহেলা পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
[প্রতিবেদনে তথ্য দিয়েছেন আবুল কাসেম, সাতক্ষীরা; মো. আতাউর রহমান, জয়পুরহাট; আরিফ রহমান, ঝালকাঠি;আবুল আহসান টিটু, ফকিরহাট (বাগেরহাট); মিন্টু মিয়া, নান্দাইল (ময়মনসিংহ) ও প্রদীপ কুমার গোস্বামী, মিঠাপুকুর (রংপুর)]
ভোটার তালিকা হালনাগাদের জন্য দেশব্যাপী বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহের কাজ গত সোমবার শেষ হয়েছে। তবে নিবন্ধন এবং মৃত ভোটারের নাম কাটা—কোনোটির সংখ্যার ক্ষেত্রেই নির্বাচন কমিশনের (ইসি) লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নির্দেশনা উপেক্ষা করে এবার অনেক তথ্য সংগ্রহকারী বাড়ি বাড়ি যাননি বলে অভিযোগ উঠেছে। পর্যবেক্ষকদের ধারণা, লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ার সম্ভাব্য কারণ এটা।
ইসির লক্ষ্য ছিল, বিদ্যমান ভোটারের ৫ শতাংশ অর্থাৎ ৬১ লাখ ৮৯ হাজার ৩৭৫ জনকে ভোটারকে নিবন্ধনের আওতায় আনা। আর ফরম পূরণ করেছেন ৫০ লাখ ৯০ হাজার ৩৭ জন। মৃত ভোটার কর্তনের ফরমও পূরণ করা হয়েছে কম। ২০২২ সালে ২২ লাখের বেশি মৃত ভোটারের নাম কর্তন করা হয়েছিল। এ বছর কর্তনের জন্য ১৫ লাখ ৭৫ হাজার ৫৯৩টি ফরম পূরণ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
তথ্য সংগ্রহের কাজ শেষ হওয়ার পরদিন গত মঙ্গলবার এ বিষয়ে ইসির সিনিয়র সচিব আখতার হোসেন বলেন, কতটা তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে এবং কম হলে সমস্যা কী ছিল, তা পর্যালোচনা করা হবে। তিনি বলেন, ‘আমরা বাড়ি বাড়ি যেতে পেরেছি কি না, না পেরে থাকলে কী সীমাবদ্ধতা ছিল, তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করব। তথ্য সংগ্রহকারীরা অনেক বাড়িতেই গিয়েছেন, কাউকে না পেলে ফোন নম্বর দিয়ে এসেছেন ৷ তবে আমরা যেখানে যেতে পারিনি, সেটা নিয়ে সীমাবদ্ধতা চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতে হবে।’
সরেজমিন রাজধানীর কয়েকটি এলাকা
রাজধানীর পশ্চিম আগারগাঁও এবং পশ্চিম কাফরুল এলাকার কয়েকটি বাড়িতে যাওয়া ছাড়াও উত্তরা, মগবাজার, মতিঝিল এজিবি কলোনি, পূর্ব রায়েরবাজার এলাকার কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার কয়েকজন সংবাদকর্মী। তাঁরা পশ্চিম আগারগাঁও ও পশ্চিম কাফরুলের যে ১১টি বাড়িতে গিয়েছিলেন, সেগুলোর মধ্যে ৭টি বাড়িতেই যাননি তথ্য সংগ্রহকারীরা। যে চারটি বাড়িতে গেছেন, সেগুলোর সবই রাস্তার লাগোয়া। যেসব বাড়িতে তথ্য সংগ্রহকারীরা গেছেন, সেগুলোর কেয়ারটেকাররা জানিয়েছেন, কেউ বাদ পড়লে যোগাযোগ করার জন্য মোবাইল নম্বরসহ একটি স্টিকার সাঁটিয়ে দেওয়া হয়েছে।
পশ্চিম আগারগাঁওয়ের ৫ নম্বর বাড়ি রোকন আহমেদ সুপারভিলার কেয়ারটেকার মো. জুয়েল জানান, বাড়িটিতে কেউ তথ্য সংগ্রহে আসেননি। একই কথা বলেন পশ্চিম কাফরুলের ১৫৫/৮ নম্বর বাসার কেয়ারটেকার রাশেদ। ৫৫/১ বাড়ির বাসিন্দা ও ১৫৫/৩/১ নম্বর বাসা দেখভালের দায়িত্বে থাকা মোমেনা বেগম জানান, তাঁদের বাসায় কেউ তথ্য সংগ্রহ করতে যাননি।
পশ্চিম কাফরুলের বাসিন্দা হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘আমার ছেলে ভোটার হবে। কিন্তু কেউ তথ্য সংগ্রহ করতে আসেননি।’
একই এলাকার বাসিন্দা একটি রিকশা গ্যারেজের মালিক মো. বিল্লাল হোসেন বলেন, জন্মনিবন্ধন সনদ হারিয়ে ফেলায় তাঁর মা ভোটার হতে পারেননি। ভেবেছিলেন, তথ্য সংগ্রহকারীরা এলে তাঁদের কাছে এ বিষয়ে খোঁজ নেবেন। তাঁরা না আসায় মায়ের ভোটার হওয়া নিয়ে উদ্বেগে আছেন।
তথ্য সংগ্রহকারীরা বাড়ি বাড়ি যাননি অভিযোগ করে মগবাজারের বাসিন্দা হাবিবুর রহমান জানান, তাঁর বাসায় কোনো তথ্য সংগ্রহকারী যাননি। শুক্রাবাদের রিয়াদ হোসেনের বাসায়ও কেউ হালনাগাদ তথ্য সংগ্রহের জন্য যাননি।
উত্তরার ১৮ নম্বর সেক্টরের বাসিন্দা মো. আরিফ বলেন, দুজন ভোটারযোগ্য সদস্য বাসায় রয়েছেন, কিন্তু তথ্য সংগ্রহকারীরা আসেননি। মতিঝিল এজিবি কলোনির বাসিন্দা গোলাম সামদানি বলেন, ‘আমার স্ত্রী ও শ্যালিকার ভোটার এলাকা পরিবর্তন করব। কিন্তু তথ্য সংগ্রহকারীরা বাসায় না আসায় কাজটি করতে পারছি না।’
ঢাকার বাইরের খণ্ডচিত্র
উত্তরের জয়পুরহাটে ভোটার তালিকা হালনাগাদের বিষয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে। সদরসহ জেলার পাঁচটি উপজেলার কোমর গ্রামের আব্দুল ওয়ারেছ, করিম নগর গ্রামের লুৎফর রহমান জাকের, কালাই উপজেলার তালুকদার পাড়ার লিটন, বাখড়া গ্রামের গাজিউল, খলিলুর, নওপাড়া গ্রামের জিয়াউর রহমান, পশ্চিম পাড়ুলিয়া গ্রামের আরমান, তারাকুলের হাসেম, মিনিগারির আব্দুর রাজ্জাক, গোপীনাথপুরের মোস্তফা আলী, কাটাপুকুর গ্রামের মোফাজ্জল হোসেনসহ ২৫ জনের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ১৪ জনের বাড়িতে তথ্য সংগ্রহকারীরা গেছেন। ছয়জন বলেছেন, গ্রামের মাইকে প্রচার করে এক জায়গায় বসে তথ্য হালনাগাদের কাজ করা হয়েছে। তিনজনের বাড়িতে কেউ যাননি।
বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার চারটি ইউনিয়নের ১৬টি পরিবারে দৈবচয়ন ভিত্তিতে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, প্রায় ৫০ শতাংশ বাড়িতে তথ্য সংগ্রহকারী যাননি। ১৬টি বাড়ির মধ্যে ৯টির লোকজন বলেছেন, তাঁরা একবার মাইকে ভোটার হালনাগাদের কথা প্রচার করতে শুনেছেন, কিন্তু কেউ তথ্য নিতে আসেননি।
এর মধ্যে বাহিরদিয়া-মানসা ইউনিয়নের আট্টাকী গ্রামের ইদ্রিস হাওলাদারের মেয়ে মুক্তা আক্তার বলেন, ‘আমি নতুন ভোটার হব। সব কাগজ গুছিয়ে রেখেছি; কিন্তু কেউ আসেননি।’
ঝালকাঠি সদর উপজেলার পোনাবালিয়া ইউনিয়নের নতুন ভোটার মশিউর রহমান বলেন, ‘আমার এলাকায় অনেক বাড়িতেই এসে তথ্য সংগ্রহ করতে দেখেছি।’
সাতক্ষীরা পৌর শহরসহ আশপাশের অনেক এলাকায় যাননি তথ্য সংগ্রহকারীরা। সাতক্ষীরার কাটিয়া লস্করপাড়া এলাকার বাসিন্দা রুকসানা আক্তার বলেন, ‘আমার বাড়িতে কেউ আসেননি। জানামতে, আমাদের মহল্লার কোনো বাড়িতেই তাঁরা আসেননি।’
একই কথা বলেন পলাশপোল এলাকার বাসিন্দা লাভলী চৌধুরী ও আনিসুর রহমান।
ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার অনেকের অভিযোগ, তথ্য সংগ্রহকারীরা তাঁদের বাড়িতে যাননি। ভোটার হতে আগ্রহী তথ্য সংগ্রহকারীকে ফোন করেও তথ্য দিতে পারেননি বলে অভিযোগ রয়েছে। কেউ কেউ বলেছেন, ডিজিটাল জন্মসনদ, নাগরিকত্ব সার্টিফিকেট, কাবিননামা, ভাড়াটেদের ক্ষেত্রে বাড়িমালিকের এনআইডি ও বিদ্যুৎ বিলের কপি পেতে বিপাকে পড়েছেন।
রংপুরের মিঠাপুকুরে তথ্য সংগ্রহকারীদের অনেকে বাড়িতে গিয়ে ভোটারের তথ্য সংগ্রহ করেননি বলে অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার তুলশীপুর গ্রামের অনন্ত রায় জানান, তাঁর মেয়ে ভোটার হওয়ার যোগ্য। কিন্তু তথ্য সংগ্রহকারী বাড়িতে গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করেননি। চিথলী দক্ষিণ পাড়া গ্রামের খোরশেদ আলম জানান, ছেলের তথ্য নেওয়ার জন্য যোগাযোগ করার পরও তথ্য সংগ্রহকারী তাঁর বাড়িতে যাননি। পরে তিনি নিজ দায়িত্বে সুপারভাইজারের কাছ থেকে ফরম সংগ্রহ করে তথ্য সংগ্রহকারীর বাড়িতে গিয়ে তথ্য ফরমে স্বাক্ষর নিয়েছেন।
তথ্য সংগ্রহকারীরা বাড়ি বাড়ি না গেলে তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না—এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইসির সিনিয়র সচিব বলেন, বাদ পড়া ভোটাররা বুধবার থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত নিবন্ধনকেন্দ্রে গিয়ে ভোটার হতে পারবেন। এ ছাড়া অনলাইনে আবেদন করে সংশ্লিষ্ট উপজেলা, থানা নির্বাচন অফিসে গিয়েও ভোটার হওয়া যাবে। কেউ দায়িত্ব পালনে অবহেলা করে থাকলে কারণ জানার চেষ্টা করব। পর্যালোচনা করে অবহেলা পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
[প্রতিবেদনে তথ্য দিয়েছেন আবুল কাসেম, সাতক্ষীরা; মো. আতাউর রহমান, জয়পুরহাট; আরিফ রহমান, ঝালকাঠি;আবুল আহসান টিটু, ফকিরহাট (বাগেরহাট); মিন্টু মিয়া, নান্দাইল (ময়মনসিংহ) ও প্রদীপ কুমার গোস্বামী, মিঠাপুকুর (রংপুর)]
অমর একুশে বইমেলার পরিসর এবার অনেকখানি বেড়েছে। প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা গতবারের চেয়ে ৬৬টি বেশি। সব মিলিয়ে ৭০৮। এর মধ্যে এক শর বেশি প্রকাশনী এবারই মেলায় প্রথম এসেছে। বই বিক্রির চেয়ে পাঠকের কাছে পৌঁছানোই তাদের অনেকের এবারের মেলায় অংশগ্রহণের প্রধান কারণ। বিক্রিটা যেন উপরি পাওনা।
৩ ঘণ্টা আগেরাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অভিযোগে অভিনেত্রী সোহানা সাবাকে আটক করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁকে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে ধানমন্ডি থেকে তাঁকে আটক করা হয়।
৪ ঘণ্টা আগেশত্রুদের ফাঁদে পা না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। তিনি বলেছেন, ‘থামুন! শান্ত হোন। সরকারকে কাজ করতে দিন। বিচার ও সংস্কার হবেই। আমি জানি এ উত্তপ্ত মৌসুমে কেউ থামতে বলবে না আপনাদের। কিন্তু, আপনারা
৪ ঘণ্টা আগেশান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্র সংস্কারে গুরুত্ব দিচ্ছে। এই সংস্কারের জন্য ছয়টি সংস্কার কমিশনও গঠন করেছে। তবে সব কমিশন এখনো পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দেয়নি।
৫ ঘণ্টা আগে