তৌফিকুল ইসলাম, ঢাকা

ট্রেন দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ গণপরিবহন। অপেক্ষাকৃত নিম্ন আয়ের মানুষসহ বিশাল জনগোষ্ঠী এর ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু সাম্প্রতিককালে এতে ভ্রমণকালে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। নিয়মিত যাত্রীদের অভিযোগ, চলন্ত ট্রেনে প্রায়ই ঘটছে চুরি, ছিনতাই। কখনো কখনো ঘটছে ধর্ষণ এবং ট্রেন থেকে ফেলে দেওয়ার মতো গুরুতর অপরাধও। এতে যাত্রীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। প্রশ্ন উঠেছে ট্রেনে যাত্রীর নিরাপত্তায় কর্তৃপক্ষের গৃহীত ব্যবস্থা নিয়ে।
গত কয়েক বছরে ট্রেনে ধর্ষণের একাধিক ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ ২৫ জুন সকালে ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশন এলাকায় রংপুর এক্সপ্রেসের টয়লেটে এক নারী যাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে রেলওয়ের অস্থায়ী কর্মচারী সাইফুল ইসলামকে (২৮) আটক করা হয়েছে।
ট্রেনে ধর্ষণের এ পর্যন্ত সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটে ২০২৪ সালের ২৬ জুন। এদিন চট্টগ্রামগামী উদয়ন এক্সপ্রেসে এক তরুণী গণধর্ষণের শিকার হন। অভিযুক্তরা রেলের খাবার সরবরাহকারী বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী ছিলেন।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ থেকে ২০২৫ সালের ২৫ জুন পর্যন্ত ট্রেনে ধর্ষণ বা শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটেছে অন্তত ১০টি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অভিযুক্ত ছিলেন রেলকর্মী বা রেলসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি। এসব ঘটনায় মামলা হলেও বিচারপ্রক্রিয়ার গতি ধীর। অনেক ক্ষেত্রে বিচারের মুখ দেখেননি ভুক্তভোগীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ধর্ষণের ঘটনা বেশি ঘটে ট্রেনের টয়লেটে। এরপর খাবার বগিতে। অনেক নারীই সম্মানহানির ভয়ে যৌন হয়রানির বিষয়টি চেপে রাখার চেষ্টা করেন। তবে কেউ কেউ আবার পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন। সে ঘটনাগুলোই মূলত সামনে আসছে।
রেলের অস্থায়ী কর্মচারীরা এ ধরনের ঘটনা বেশি ঘটাচ্ছেন বলে তাঁদের নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তাঁদের হাতে যাত্রীরা নিরাপদ কি না, এ প্রশ্ন তুলেছে যাত্রী অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন ও ব্যক্তিরা।
গণপরিবহনের যাত্রী অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, রেলে জিআরপি এবং আরএনবির মতো দুটি বাহিনী কাজ করছে। কিন্তু যাত্রীরা তারপরও নিরাপদ নয়। ট্রেনে শুধু মালপত্র চুরি নয়, ধর্ষণ ও ডাকাতির মতো বড় অপরাধের ঘটনা ঘটছে। ডাকাতির সময় যাত্রীকে শ্বাস রোধ করে মেরে বাইরে ফেলে দেওয়া হচ্ছে। ফলে যাত্রীরা ট্রেনে অনিরাপদ। যাঁরা যাত্রী ও রেললাইনের নিরাপত্তায় নিয়োজিত, তাঁদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। মামলা ও শাস্তি নিশ্চিত করা গেলে অপরাধ কমবে।
চুরি, ছিনতাই নিয়মিত ঘটনা
চলন্ত ট্রেনে যাত্রীদের মালামাল চুরি, মোবাইল ছিনতাইয়ের অভিযোগ নিয়মিত পাওয়া যায়। একাধিক যাত্রী অভিযোগ করেছেন, অনেক সময় অপরিচিত লোক ট্রেনের কামরায় ঢুকে টিকিটধারী বৈধ যাত্রীর আসনকে নিজের দাবি করে হুমকি-ধমকি দেয়। একপর্যায়ে ব্যাগ বা মোবাইল কেড়ে নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। ছুরি ঠেকিয়েও লুট করা হয়। যাত্রীদের ট্রেনের দরজা দিয়ে ধাক্কা মেরে নিচে ফেলে দেওয়ার ঘটনাও ঘটে।
গত বৃহস্পতিবার রাজধানী তথা দেশের প্রধান রেলস্টেশন কমলাপুরে ঘুরে শিথিল নিরাপত্তাব্যবস্থা দেখা যায়। টিকিট ছাড়া যাত্রীরা অনায়াসে স্টেশনে প্রবেশ করছিল। টিকিটহীন বা উটকো লোকের প্ল্যাটফর্মে প্রবেশ ঠেকানোর কোনো তৎপরতা নেই। এ ছাড়া ট্রেনে নির্বিঘ্নে উঠছিল হকার। কয়েকজন যাত্রী বললেন, হকারসহ অনাকাঙ্ক্ষিত এসব লোকজনের উপস্থিতি শুধু বিরক্তিকর না, তা নিরাপত্তার দিক থেকেও অগ্রহণযোগ্য।
সুমি হালদার নামের রেলের এক নিয়মিত যাত্রী এ সময় বলেন, ‘ট্রেনযাত্রা এখন অনেকটা আতঙ্কের বিষয়েই পরিণত হয়েছে। এসি চেয়ারেও অযাচিত লোক ঘোরাফেরা করে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লোকদের দেখা যায় না বললেই চলে। যা দু-একজন থাকে, তাদের বিনা টিকিটের যাত্রীদের নিয়ে ব্যস্ত থাকতে দেখি।’
পাথর ছোড়াও বন্ধ হচ্ছে না
রেলযাত্রার আরেক পুরোনো সমস্যা লাইনের পাশ থেকে লোকজনের চলন্ত ট্রেনে পাথর ছুড়ে মারা। এ ঘটনায় বহু যাত্রী আহত হয়েছে চোখে-মুখে পাথর বা জানালার ভাঙা কাচ লেগে। ঘটনার পরপর বা চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর ঘটনাও আছে। ট্রেনে দায়িত্বরত গার্ড, চালক, পুলিশসহ অন্য কর্মীদেরও আহত হওয়ার নজির আছে। ২০১৩ সালে চলন্ত ট্রেনে ছোড়া ঢিলে প্রীতি দাস নামের একজন প্রকৌশলীর মৃত্যু হয়। প্রাপ্ত তথ্যমতে, শুধু ২০২৩-২৪ অর্থবছরেই ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে ৫০টির বেশি। রেল কর্তৃপক্ষের প্রচারণা, আবেদন-নিবেদন, অপরাধী ধরিয়ে দিতে পারলে পুরস্কারের ঘোষণা ইত্যাদির পরও এ বিষয়ে তেমন অগ্রগতি নেই। রেলওয়ে আইনের ১২৭ ধারা অনুযায়ী, ট্রেনে পাথর ছোড়ার শাস্তি সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা। পাথর নিক্ষেপে কারও মৃত্যু হলে ৩০২ ধারায় মৃত্যুদণ্ডের বিধানও রয়েছে। তবে পাথর ছোড়ার জন্য এ আইনে কারও শাস্তির কোনো নজির নেই বলেই কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
নিরাপত্তার অপ্রতুল ব্যবস্থা
সারা দেশে বর্তমানে মোট ৩৮৮টি যাত্রীবাহী ট্রেন চলে। এর মধ্যে ১০৬টি আন্তনগর ট্রেন, ১৮০টি মেইল ও কমিউটার ট্রেন এবং ১০২টি লোকাল ট্রেন। প্রতিদিন হাজারো মানুষ এসব ট্রেনে যাতায়াত করে। আন্তনগর ট্রেনে রেল পুলিশের তিনজন সদস্য দায়িত্ব পালন করেন। তাঁদের কাজ যাত্রীদের সার্বিক নিরাপত্তা ও মালামালের দেখভাল করা। শত শত যাত্রীবাহী অনেকগুলো কামরার পুরো একটি ট্রেনে ৩ জন পুলিশ সদস্য কতটা নিরাপত্তা দিতে পারেন, এ নিয়ে যাত্রীরা প্রশ্ন তুলেছে। তার ওপর একই পথে চলাচল করা মেইল, কমিউটার ও লোকাল ট্রেনগুলোয় এ ধরনের নিরাপত্তাব্যবস্থাও নেই। ফলে মূলত এসব ট্রেনেই অপরাধ ঘটছে। কিছু ট্রেনে সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে, যার অনেকগুলোই নষ্ট বা অকার্যকর। ৪৬৬টি রেলস্টেশনের মধ্যে সিসিটিভি আছে মাত্র ৩৭ শতাংশ স্টেশনে।
কর্মকর্তারা যা বললেন
বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আফজাল হোসেন গত বৃহস্পতিবার বলেন, ‘ট্রেনে যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব রেল পুলিশের (জিআরপি)। আমাদের সুপারিশ ছিল, প্রতিটি ট্রেনে অন্তত পাঁচজন পুলিশ সদস্য রাখার, যদিও তা-ও সে অর্থে পর্যাপ্ত নয়। যাত্রী নিরাপত্তা আরও জোরদার করতে আমরা জিআরপিকে বলব। রেলের নিরাপত্তা বাহিনী (আরএনবি) মূলত রেলওয়ের স্থাপনাসমূহ ও সম্পদ রক্ষায় কাজ করে। ট্রেনের ভেতরে যাত্রী নিরাপত্তা ও অপরাধ দমনের দায়িত্ব জিআরপির ওপরই বর্তায়। তবে রেলের জনবলসংকট রয়েছে। তাই কিছু জায়গায় আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে অস্থায়ী জনবল দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে।’
রেল পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) বি এম হারুন-অর-রশিদ বলেন, ‘সারা দেশে অনেকগুলো ট্রেন চলাচল করে। সব ট্রেনে ৩-৪ জন পুলিশ সদস্য দেওয়া সম্ভব হয় না। কারণ, আমাদের লোকবলের সংকট আছে। আর একটি ট্রেনে মাত্র ৩ জন পুলিশ দিয়েও নিরাপত্তা দেওয়া যায় না। ফলে যাত্রীদের নিরাপত্তায় কিছুটা তো ঘাটতি থেকেই যাচ্ছে। তবে সীমাবদ্ধতা থাকলেও যাত্রীদের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’

ট্রেন দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ গণপরিবহন। অপেক্ষাকৃত নিম্ন আয়ের মানুষসহ বিশাল জনগোষ্ঠী এর ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু সাম্প্রতিককালে এতে ভ্রমণকালে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। নিয়মিত যাত্রীদের অভিযোগ, চলন্ত ট্রেনে প্রায়ই ঘটছে চুরি, ছিনতাই। কখনো কখনো ঘটছে ধর্ষণ এবং ট্রেন থেকে ফেলে দেওয়ার মতো গুরুতর অপরাধও। এতে যাত্রীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। প্রশ্ন উঠেছে ট্রেনে যাত্রীর নিরাপত্তায় কর্তৃপক্ষের গৃহীত ব্যবস্থা নিয়ে।
গত কয়েক বছরে ট্রেনে ধর্ষণের একাধিক ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ ২৫ জুন সকালে ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশন এলাকায় রংপুর এক্সপ্রেসের টয়লেটে এক নারী যাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে রেলওয়ের অস্থায়ী কর্মচারী সাইফুল ইসলামকে (২৮) আটক করা হয়েছে।
ট্রেনে ধর্ষণের এ পর্যন্ত সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটে ২০২৪ সালের ২৬ জুন। এদিন চট্টগ্রামগামী উদয়ন এক্সপ্রেসে এক তরুণী গণধর্ষণের শিকার হন। অভিযুক্তরা রেলের খাবার সরবরাহকারী বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী ছিলেন।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ থেকে ২০২৫ সালের ২৫ জুন পর্যন্ত ট্রেনে ধর্ষণ বা শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটেছে অন্তত ১০টি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অভিযুক্ত ছিলেন রেলকর্মী বা রেলসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি। এসব ঘটনায় মামলা হলেও বিচারপ্রক্রিয়ার গতি ধীর। অনেক ক্ষেত্রে বিচারের মুখ দেখেননি ভুক্তভোগীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ধর্ষণের ঘটনা বেশি ঘটে ট্রেনের টয়লেটে। এরপর খাবার বগিতে। অনেক নারীই সম্মানহানির ভয়ে যৌন হয়রানির বিষয়টি চেপে রাখার চেষ্টা করেন। তবে কেউ কেউ আবার পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন। সে ঘটনাগুলোই মূলত সামনে আসছে।
রেলের অস্থায়ী কর্মচারীরা এ ধরনের ঘটনা বেশি ঘটাচ্ছেন বলে তাঁদের নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তাঁদের হাতে যাত্রীরা নিরাপদ কি না, এ প্রশ্ন তুলেছে যাত্রী অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন ও ব্যক্তিরা।
গণপরিবহনের যাত্রী অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, রেলে জিআরপি এবং আরএনবির মতো দুটি বাহিনী কাজ করছে। কিন্তু যাত্রীরা তারপরও নিরাপদ নয়। ট্রেনে শুধু মালপত্র চুরি নয়, ধর্ষণ ও ডাকাতির মতো বড় অপরাধের ঘটনা ঘটছে। ডাকাতির সময় যাত্রীকে শ্বাস রোধ করে মেরে বাইরে ফেলে দেওয়া হচ্ছে। ফলে যাত্রীরা ট্রেনে অনিরাপদ। যাঁরা যাত্রী ও রেললাইনের নিরাপত্তায় নিয়োজিত, তাঁদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। মামলা ও শাস্তি নিশ্চিত করা গেলে অপরাধ কমবে।
চুরি, ছিনতাই নিয়মিত ঘটনা
চলন্ত ট্রেনে যাত্রীদের মালামাল চুরি, মোবাইল ছিনতাইয়ের অভিযোগ নিয়মিত পাওয়া যায়। একাধিক যাত্রী অভিযোগ করেছেন, অনেক সময় অপরিচিত লোক ট্রেনের কামরায় ঢুকে টিকিটধারী বৈধ যাত্রীর আসনকে নিজের দাবি করে হুমকি-ধমকি দেয়। একপর্যায়ে ব্যাগ বা মোবাইল কেড়ে নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। ছুরি ঠেকিয়েও লুট করা হয়। যাত্রীদের ট্রেনের দরজা দিয়ে ধাক্কা মেরে নিচে ফেলে দেওয়ার ঘটনাও ঘটে।
গত বৃহস্পতিবার রাজধানী তথা দেশের প্রধান রেলস্টেশন কমলাপুরে ঘুরে শিথিল নিরাপত্তাব্যবস্থা দেখা যায়। টিকিট ছাড়া যাত্রীরা অনায়াসে স্টেশনে প্রবেশ করছিল। টিকিটহীন বা উটকো লোকের প্ল্যাটফর্মে প্রবেশ ঠেকানোর কোনো তৎপরতা নেই। এ ছাড়া ট্রেনে নির্বিঘ্নে উঠছিল হকার। কয়েকজন যাত্রী বললেন, হকারসহ অনাকাঙ্ক্ষিত এসব লোকজনের উপস্থিতি শুধু বিরক্তিকর না, তা নিরাপত্তার দিক থেকেও অগ্রহণযোগ্য।
সুমি হালদার নামের রেলের এক নিয়মিত যাত্রী এ সময় বলেন, ‘ট্রেনযাত্রা এখন অনেকটা আতঙ্কের বিষয়েই পরিণত হয়েছে। এসি চেয়ারেও অযাচিত লোক ঘোরাফেরা করে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লোকদের দেখা যায় না বললেই চলে। যা দু-একজন থাকে, তাদের বিনা টিকিটের যাত্রীদের নিয়ে ব্যস্ত থাকতে দেখি।’
পাথর ছোড়াও বন্ধ হচ্ছে না
রেলযাত্রার আরেক পুরোনো সমস্যা লাইনের পাশ থেকে লোকজনের চলন্ত ট্রেনে পাথর ছুড়ে মারা। এ ঘটনায় বহু যাত্রী আহত হয়েছে চোখে-মুখে পাথর বা জানালার ভাঙা কাচ লেগে। ঘটনার পরপর বা চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর ঘটনাও আছে। ট্রেনে দায়িত্বরত গার্ড, চালক, পুলিশসহ অন্য কর্মীদেরও আহত হওয়ার নজির আছে। ২০১৩ সালে চলন্ত ট্রেনে ছোড়া ঢিলে প্রীতি দাস নামের একজন প্রকৌশলীর মৃত্যু হয়। প্রাপ্ত তথ্যমতে, শুধু ২০২৩-২৪ অর্থবছরেই ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে ৫০টির বেশি। রেল কর্তৃপক্ষের প্রচারণা, আবেদন-নিবেদন, অপরাধী ধরিয়ে দিতে পারলে পুরস্কারের ঘোষণা ইত্যাদির পরও এ বিষয়ে তেমন অগ্রগতি নেই। রেলওয়ে আইনের ১২৭ ধারা অনুযায়ী, ট্রেনে পাথর ছোড়ার শাস্তি সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা। পাথর নিক্ষেপে কারও মৃত্যু হলে ৩০২ ধারায় মৃত্যুদণ্ডের বিধানও রয়েছে। তবে পাথর ছোড়ার জন্য এ আইনে কারও শাস্তির কোনো নজির নেই বলেই কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
নিরাপত্তার অপ্রতুল ব্যবস্থা
সারা দেশে বর্তমানে মোট ৩৮৮টি যাত্রীবাহী ট্রেন চলে। এর মধ্যে ১০৬টি আন্তনগর ট্রেন, ১৮০টি মেইল ও কমিউটার ট্রেন এবং ১০২টি লোকাল ট্রেন। প্রতিদিন হাজারো মানুষ এসব ট্রেনে যাতায়াত করে। আন্তনগর ট্রেনে রেল পুলিশের তিনজন সদস্য দায়িত্ব পালন করেন। তাঁদের কাজ যাত্রীদের সার্বিক নিরাপত্তা ও মালামালের দেখভাল করা। শত শত যাত্রীবাহী অনেকগুলো কামরার পুরো একটি ট্রেনে ৩ জন পুলিশ সদস্য কতটা নিরাপত্তা দিতে পারেন, এ নিয়ে যাত্রীরা প্রশ্ন তুলেছে। তার ওপর একই পথে চলাচল করা মেইল, কমিউটার ও লোকাল ট্রেনগুলোয় এ ধরনের নিরাপত্তাব্যবস্থাও নেই। ফলে মূলত এসব ট্রেনেই অপরাধ ঘটছে। কিছু ট্রেনে সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে, যার অনেকগুলোই নষ্ট বা অকার্যকর। ৪৬৬টি রেলস্টেশনের মধ্যে সিসিটিভি আছে মাত্র ৩৭ শতাংশ স্টেশনে।
কর্মকর্তারা যা বললেন
বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আফজাল হোসেন গত বৃহস্পতিবার বলেন, ‘ট্রেনে যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব রেল পুলিশের (জিআরপি)। আমাদের সুপারিশ ছিল, প্রতিটি ট্রেনে অন্তত পাঁচজন পুলিশ সদস্য রাখার, যদিও তা-ও সে অর্থে পর্যাপ্ত নয়। যাত্রী নিরাপত্তা আরও জোরদার করতে আমরা জিআরপিকে বলব। রেলের নিরাপত্তা বাহিনী (আরএনবি) মূলত রেলওয়ের স্থাপনাসমূহ ও সম্পদ রক্ষায় কাজ করে। ট্রেনের ভেতরে যাত্রী নিরাপত্তা ও অপরাধ দমনের দায়িত্ব জিআরপির ওপরই বর্তায়। তবে রেলের জনবলসংকট রয়েছে। তাই কিছু জায়গায় আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে অস্থায়ী জনবল দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে।’
রেল পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) বি এম হারুন-অর-রশিদ বলেন, ‘সারা দেশে অনেকগুলো ট্রেন চলাচল করে। সব ট্রেনে ৩-৪ জন পুলিশ সদস্য দেওয়া সম্ভব হয় না। কারণ, আমাদের লোকবলের সংকট আছে। আর একটি ট্রেনে মাত্র ৩ জন পুলিশ দিয়েও নিরাপত্তা দেওয়া যায় না। ফলে যাত্রীদের নিরাপত্তায় কিছুটা তো ঘাটতি থেকেই যাচ্ছে। তবে সীমাবদ্ধতা থাকলেও যাত্রীদের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’
তৌফিকুল ইসলাম, ঢাকা

ট্রেন দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ গণপরিবহন। অপেক্ষাকৃত নিম্ন আয়ের মানুষসহ বিশাল জনগোষ্ঠী এর ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু সাম্প্রতিককালে এতে ভ্রমণকালে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। নিয়মিত যাত্রীদের অভিযোগ, চলন্ত ট্রেনে প্রায়ই ঘটছে চুরি, ছিনতাই। কখনো কখনো ঘটছে ধর্ষণ এবং ট্রেন থেকে ফেলে দেওয়ার মতো গুরুতর অপরাধও। এতে যাত্রীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। প্রশ্ন উঠেছে ট্রেনে যাত্রীর নিরাপত্তায় কর্তৃপক্ষের গৃহীত ব্যবস্থা নিয়ে।
গত কয়েক বছরে ট্রেনে ধর্ষণের একাধিক ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ ২৫ জুন সকালে ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশন এলাকায় রংপুর এক্সপ্রেসের টয়লেটে এক নারী যাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে রেলওয়ের অস্থায়ী কর্মচারী সাইফুল ইসলামকে (২৮) আটক করা হয়েছে।
ট্রেনে ধর্ষণের এ পর্যন্ত সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটে ২০২৪ সালের ২৬ জুন। এদিন চট্টগ্রামগামী উদয়ন এক্সপ্রেসে এক তরুণী গণধর্ষণের শিকার হন। অভিযুক্তরা রেলের খাবার সরবরাহকারী বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী ছিলেন।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ থেকে ২০২৫ সালের ২৫ জুন পর্যন্ত ট্রেনে ধর্ষণ বা শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটেছে অন্তত ১০টি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অভিযুক্ত ছিলেন রেলকর্মী বা রেলসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি। এসব ঘটনায় মামলা হলেও বিচারপ্রক্রিয়ার গতি ধীর। অনেক ক্ষেত্রে বিচারের মুখ দেখেননি ভুক্তভোগীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ধর্ষণের ঘটনা বেশি ঘটে ট্রেনের টয়লেটে। এরপর খাবার বগিতে। অনেক নারীই সম্মানহানির ভয়ে যৌন হয়রানির বিষয়টি চেপে রাখার চেষ্টা করেন। তবে কেউ কেউ আবার পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন। সে ঘটনাগুলোই মূলত সামনে আসছে।
রেলের অস্থায়ী কর্মচারীরা এ ধরনের ঘটনা বেশি ঘটাচ্ছেন বলে তাঁদের নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তাঁদের হাতে যাত্রীরা নিরাপদ কি না, এ প্রশ্ন তুলেছে যাত্রী অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন ও ব্যক্তিরা।
গণপরিবহনের যাত্রী অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, রেলে জিআরপি এবং আরএনবির মতো দুটি বাহিনী কাজ করছে। কিন্তু যাত্রীরা তারপরও নিরাপদ নয়। ট্রেনে শুধু মালপত্র চুরি নয়, ধর্ষণ ও ডাকাতির মতো বড় অপরাধের ঘটনা ঘটছে। ডাকাতির সময় যাত্রীকে শ্বাস রোধ করে মেরে বাইরে ফেলে দেওয়া হচ্ছে। ফলে যাত্রীরা ট্রেনে অনিরাপদ। যাঁরা যাত্রী ও রেললাইনের নিরাপত্তায় নিয়োজিত, তাঁদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। মামলা ও শাস্তি নিশ্চিত করা গেলে অপরাধ কমবে।
চুরি, ছিনতাই নিয়মিত ঘটনা
চলন্ত ট্রেনে যাত্রীদের মালামাল চুরি, মোবাইল ছিনতাইয়ের অভিযোগ নিয়মিত পাওয়া যায়। একাধিক যাত্রী অভিযোগ করেছেন, অনেক সময় অপরিচিত লোক ট্রেনের কামরায় ঢুকে টিকিটধারী বৈধ যাত্রীর আসনকে নিজের দাবি করে হুমকি-ধমকি দেয়। একপর্যায়ে ব্যাগ বা মোবাইল কেড়ে নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। ছুরি ঠেকিয়েও লুট করা হয়। যাত্রীদের ট্রেনের দরজা দিয়ে ধাক্কা মেরে নিচে ফেলে দেওয়ার ঘটনাও ঘটে।
গত বৃহস্পতিবার রাজধানী তথা দেশের প্রধান রেলস্টেশন কমলাপুরে ঘুরে শিথিল নিরাপত্তাব্যবস্থা দেখা যায়। টিকিট ছাড়া যাত্রীরা অনায়াসে স্টেশনে প্রবেশ করছিল। টিকিটহীন বা উটকো লোকের প্ল্যাটফর্মে প্রবেশ ঠেকানোর কোনো তৎপরতা নেই। এ ছাড়া ট্রেনে নির্বিঘ্নে উঠছিল হকার। কয়েকজন যাত্রী বললেন, হকারসহ অনাকাঙ্ক্ষিত এসব লোকজনের উপস্থিতি শুধু বিরক্তিকর না, তা নিরাপত্তার দিক থেকেও অগ্রহণযোগ্য।
সুমি হালদার নামের রেলের এক নিয়মিত যাত্রী এ সময় বলেন, ‘ট্রেনযাত্রা এখন অনেকটা আতঙ্কের বিষয়েই পরিণত হয়েছে। এসি চেয়ারেও অযাচিত লোক ঘোরাফেরা করে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লোকদের দেখা যায় না বললেই চলে। যা দু-একজন থাকে, তাদের বিনা টিকিটের যাত্রীদের নিয়ে ব্যস্ত থাকতে দেখি।’
পাথর ছোড়াও বন্ধ হচ্ছে না
রেলযাত্রার আরেক পুরোনো সমস্যা লাইনের পাশ থেকে লোকজনের চলন্ত ট্রেনে পাথর ছুড়ে মারা। এ ঘটনায় বহু যাত্রী আহত হয়েছে চোখে-মুখে পাথর বা জানালার ভাঙা কাচ লেগে। ঘটনার পরপর বা চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর ঘটনাও আছে। ট্রেনে দায়িত্বরত গার্ড, চালক, পুলিশসহ অন্য কর্মীদেরও আহত হওয়ার নজির আছে। ২০১৩ সালে চলন্ত ট্রেনে ছোড়া ঢিলে প্রীতি দাস নামের একজন প্রকৌশলীর মৃত্যু হয়। প্রাপ্ত তথ্যমতে, শুধু ২০২৩-২৪ অর্থবছরেই ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে ৫০টির বেশি। রেল কর্তৃপক্ষের প্রচারণা, আবেদন-নিবেদন, অপরাধী ধরিয়ে দিতে পারলে পুরস্কারের ঘোষণা ইত্যাদির পরও এ বিষয়ে তেমন অগ্রগতি নেই। রেলওয়ে আইনের ১২৭ ধারা অনুযায়ী, ট্রেনে পাথর ছোড়ার শাস্তি সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা। পাথর নিক্ষেপে কারও মৃত্যু হলে ৩০২ ধারায় মৃত্যুদণ্ডের বিধানও রয়েছে। তবে পাথর ছোড়ার জন্য এ আইনে কারও শাস্তির কোনো নজির নেই বলেই কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
নিরাপত্তার অপ্রতুল ব্যবস্থা
সারা দেশে বর্তমানে মোট ৩৮৮টি যাত্রীবাহী ট্রেন চলে। এর মধ্যে ১০৬টি আন্তনগর ট্রেন, ১৮০টি মেইল ও কমিউটার ট্রেন এবং ১০২টি লোকাল ট্রেন। প্রতিদিন হাজারো মানুষ এসব ট্রেনে যাতায়াত করে। আন্তনগর ট্রেনে রেল পুলিশের তিনজন সদস্য দায়িত্ব পালন করেন। তাঁদের কাজ যাত্রীদের সার্বিক নিরাপত্তা ও মালামালের দেখভাল করা। শত শত যাত্রীবাহী অনেকগুলো কামরার পুরো একটি ট্রেনে ৩ জন পুলিশ সদস্য কতটা নিরাপত্তা দিতে পারেন, এ নিয়ে যাত্রীরা প্রশ্ন তুলেছে। তার ওপর একই পথে চলাচল করা মেইল, কমিউটার ও লোকাল ট্রেনগুলোয় এ ধরনের নিরাপত্তাব্যবস্থাও নেই। ফলে মূলত এসব ট্রেনেই অপরাধ ঘটছে। কিছু ট্রেনে সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে, যার অনেকগুলোই নষ্ট বা অকার্যকর। ৪৬৬টি রেলস্টেশনের মধ্যে সিসিটিভি আছে মাত্র ৩৭ শতাংশ স্টেশনে।
কর্মকর্তারা যা বললেন
বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আফজাল হোসেন গত বৃহস্পতিবার বলেন, ‘ট্রেনে যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব রেল পুলিশের (জিআরপি)। আমাদের সুপারিশ ছিল, প্রতিটি ট্রেনে অন্তত পাঁচজন পুলিশ সদস্য রাখার, যদিও তা-ও সে অর্থে পর্যাপ্ত নয়। যাত্রী নিরাপত্তা আরও জোরদার করতে আমরা জিআরপিকে বলব। রেলের নিরাপত্তা বাহিনী (আরএনবি) মূলত রেলওয়ের স্থাপনাসমূহ ও সম্পদ রক্ষায় কাজ করে। ট্রেনের ভেতরে যাত্রী নিরাপত্তা ও অপরাধ দমনের দায়িত্ব জিআরপির ওপরই বর্তায়। তবে রেলের জনবলসংকট রয়েছে। তাই কিছু জায়গায় আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে অস্থায়ী জনবল দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে।’
রেল পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) বি এম হারুন-অর-রশিদ বলেন, ‘সারা দেশে অনেকগুলো ট্রেন চলাচল করে। সব ট্রেনে ৩-৪ জন পুলিশ সদস্য দেওয়া সম্ভব হয় না। কারণ, আমাদের লোকবলের সংকট আছে। আর একটি ট্রেনে মাত্র ৩ জন পুলিশ দিয়েও নিরাপত্তা দেওয়া যায় না। ফলে যাত্রীদের নিরাপত্তায় কিছুটা তো ঘাটতি থেকেই যাচ্ছে। তবে সীমাবদ্ধতা থাকলেও যাত্রীদের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’

ট্রেন দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ গণপরিবহন। অপেক্ষাকৃত নিম্ন আয়ের মানুষসহ বিশাল জনগোষ্ঠী এর ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু সাম্প্রতিককালে এতে ভ্রমণকালে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। নিয়মিত যাত্রীদের অভিযোগ, চলন্ত ট্রেনে প্রায়ই ঘটছে চুরি, ছিনতাই। কখনো কখনো ঘটছে ধর্ষণ এবং ট্রেন থেকে ফেলে দেওয়ার মতো গুরুতর অপরাধও। এতে যাত্রীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। প্রশ্ন উঠেছে ট্রেনে যাত্রীর নিরাপত্তায় কর্তৃপক্ষের গৃহীত ব্যবস্থা নিয়ে।
গত কয়েক বছরে ট্রেনে ধর্ষণের একাধিক ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ ২৫ জুন সকালে ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশন এলাকায় রংপুর এক্সপ্রেসের টয়লেটে এক নারী যাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে রেলওয়ের অস্থায়ী কর্মচারী সাইফুল ইসলামকে (২৮) আটক করা হয়েছে।
ট্রেনে ধর্ষণের এ পর্যন্ত সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটে ২০২৪ সালের ২৬ জুন। এদিন চট্টগ্রামগামী উদয়ন এক্সপ্রেসে এক তরুণী গণধর্ষণের শিকার হন। অভিযুক্তরা রেলের খাবার সরবরাহকারী বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী ছিলেন।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ থেকে ২০২৫ সালের ২৫ জুন পর্যন্ত ট্রেনে ধর্ষণ বা শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটেছে অন্তত ১০টি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অভিযুক্ত ছিলেন রেলকর্মী বা রেলসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি। এসব ঘটনায় মামলা হলেও বিচারপ্রক্রিয়ার গতি ধীর। অনেক ক্ষেত্রে বিচারের মুখ দেখেননি ভুক্তভোগীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ধর্ষণের ঘটনা বেশি ঘটে ট্রেনের টয়লেটে। এরপর খাবার বগিতে। অনেক নারীই সম্মানহানির ভয়ে যৌন হয়রানির বিষয়টি চেপে রাখার চেষ্টা করেন। তবে কেউ কেউ আবার পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন। সে ঘটনাগুলোই মূলত সামনে আসছে।
রেলের অস্থায়ী কর্মচারীরা এ ধরনের ঘটনা বেশি ঘটাচ্ছেন বলে তাঁদের নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তাঁদের হাতে যাত্রীরা নিরাপদ কি না, এ প্রশ্ন তুলেছে যাত্রী অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন ও ব্যক্তিরা।
গণপরিবহনের যাত্রী অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, রেলে জিআরপি এবং আরএনবির মতো দুটি বাহিনী কাজ করছে। কিন্তু যাত্রীরা তারপরও নিরাপদ নয়। ট্রেনে শুধু মালপত্র চুরি নয়, ধর্ষণ ও ডাকাতির মতো বড় অপরাধের ঘটনা ঘটছে। ডাকাতির সময় যাত্রীকে শ্বাস রোধ করে মেরে বাইরে ফেলে দেওয়া হচ্ছে। ফলে যাত্রীরা ট্রেনে অনিরাপদ। যাঁরা যাত্রী ও রেললাইনের নিরাপত্তায় নিয়োজিত, তাঁদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। মামলা ও শাস্তি নিশ্চিত করা গেলে অপরাধ কমবে।
চুরি, ছিনতাই নিয়মিত ঘটনা
চলন্ত ট্রেনে যাত্রীদের মালামাল চুরি, মোবাইল ছিনতাইয়ের অভিযোগ নিয়মিত পাওয়া যায়। একাধিক যাত্রী অভিযোগ করেছেন, অনেক সময় অপরিচিত লোক ট্রেনের কামরায় ঢুকে টিকিটধারী বৈধ যাত্রীর আসনকে নিজের দাবি করে হুমকি-ধমকি দেয়। একপর্যায়ে ব্যাগ বা মোবাইল কেড়ে নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। ছুরি ঠেকিয়েও লুট করা হয়। যাত্রীদের ট্রেনের দরজা দিয়ে ধাক্কা মেরে নিচে ফেলে দেওয়ার ঘটনাও ঘটে।
গত বৃহস্পতিবার রাজধানী তথা দেশের প্রধান রেলস্টেশন কমলাপুরে ঘুরে শিথিল নিরাপত্তাব্যবস্থা দেখা যায়। টিকিট ছাড়া যাত্রীরা অনায়াসে স্টেশনে প্রবেশ করছিল। টিকিটহীন বা উটকো লোকের প্ল্যাটফর্মে প্রবেশ ঠেকানোর কোনো তৎপরতা নেই। এ ছাড়া ট্রেনে নির্বিঘ্নে উঠছিল হকার। কয়েকজন যাত্রী বললেন, হকারসহ অনাকাঙ্ক্ষিত এসব লোকজনের উপস্থিতি শুধু বিরক্তিকর না, তা নিরাপত্তার দিক থেকেও অগ্রহণযোগ্য।
সুমি হালদার নামের রেলের এক নিয়মিত যাত্রী এ সময় বলেন, ‘ট্রেনযাত্রা এখন অনেকটা আতঙ্কের বিষয়েই পরিণত হয়েছে। এসি চেয়ারেও অযাচিত লোক ঘোরাফেরা করে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লোকদের দেখা যায় না বললেই চলে। যা দু-একজন থাকে, তাদের বিনা টিকিটের যাত্রীদের নিয়ে ব্যস্ত থাকতে দেখি।’
পাথর ছোড়াও বন্ধ হচ্ছে না
রেলযাত্রার আরেক পুরোনো সমস্যা লাইনের পাশ থেকে লোকজনের চলন্ত ট্রেনে পাথর ছুড়ে মারা। এ ঘটনায় বহু যাত্রী আহত হয়েছে চোখে-মুখে পাথর বা জানালার ভাঙা কাচ লেগে। ঘটনার পরপর বা চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর ঘটনাও আছে। ট্রেনে দায়িত্বরত গার্ড, চালক, পুলিশসহ অন্য কর্মীদেরও আহত হওয়ার নজির আছে। ২০১৩ সালে চলন্ত ট্রেনে ছোড়া ঢিলে প্রীতি দাস নামের একজন প্রকৌশলীর মৃত্যু হয়। প্রাপ্ত তথ্যমতে, শুধু ২০২৩-২৪ অর্থবছরেই ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে ৫০টির বেশি। রেল কর্তৃপক্ষের প্রচারণা, আবেদন-নিবেদন, অপরাধী ধরিয়ে দিতে পারলে পুরস্কারের ঘোষণা ইত্যাদির পরও এ বিষয়ে তেমন অগ্রগতি নেই। রেলওয়ে আইনের ১২৭ ধারা অনুযায়ী, ট্রেনে পাথর ছোড়ার শাস্তি সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা। পাথর নিক্ষেপে কারও মৃত্যু হলে ৩০২ ধারায় মৃত্যুদণ্ডের বিধানও রয়েছে। তবে পাথর ছোড়ার জন্য এ আইনে কারও শাস্তির কোনো নজির নেই বলেই কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
নিরাপত্তার অপ্রতুল ব্যবস্থা
সারা দেশে বর্তমানে মোট ৩৮৮টি যাত্রীবাহী ট্রেন চলে। এর মধ্যে ১০৬টি আন্তনগর ট্রেন, ১৮০টি মেইল ও কমিউটার ট্রেন এবং ১০২টি লোকাল ট্রেন। প্রতিদিন হাজারো মানুষ এসব ট্রেনে যাতায়াত করে। আন্তনগর ট্রেনে রেল পুলিশের তিনজন সদস্য দায়িত্ব পালন করেন। তাঁদের কাজ যাত্রীদের সার্বিক নিরাপত্তা ও মালামালের দেখভাল করা। শত শত যাত্রীবাহী অনেকগুলো কামরার পুরো একটি ট্রেনে ৩ জন পুলিশ সদস্য কতটা নিরাপত্তা দিতে পারেন, এ নিয়ে যাত্রীরা প্রশ্ন তুলেছে। তার ওপর একই পথে চলাচল করা মেইল, কমিউটার ও লোকাল ট্রেনগুলোয় এ ধরনের নিরাপত্তাব্যবস্থাও নেই। ফলে মূলত এসব ট্রেনেই অপরাধ ঘটছে। কিছু ট্রেনে সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে, যার অনেকগুলোই নষ্ট বা অকার্যকর। ৪৬৬টি রেলস্টেশনের মধ্যে সিসিটিভি আছে মাত্র ৩৭ শতাংশ স্টেশনে।
কর্মকর্তারা যা বললেন
বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আফজাল হোসেন গত বৃহস্পতিবার বলেন, ‘ট্রেনে যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব রেল পুলিশের (জিআরপি)। আমাদের সুপারিশ ছিল, প্রতিটি ট্রেনে অন্তত পাঁচজন পুলিশ সদস্য রাখার, যদিও তা-ও সে অর্থে পর্যাপ্ত নয়। যাত্রী নিরাপত্তা আরও জোরদার করতে আমরা জিআরপিকে বলব। রেলের নিরাপত্তা বাহিনী (আরএনবি) মূলত রেলওয়ের স্থাপনাসমূহ ও সম্পদ রক্ষায় কাজ করে। ট্রেনের ভেতরে যাত্রী নিরাপত্তা ও অপরাধ দমনের দায়িত্ব জিআরপির ওপরই বর্তায়। তবে রেলের জনবলসংকট রয়েছে। তাই কিছু জায়গায় আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে অস্থায়ী জনবল দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে।’
রেল পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) বি এম হারুন-অর-রশিদ বলেন, ‘সারা দেশে অনেকগুলো ট্রেন চলাচল করে। সব ট্রেনে ৩-৪ জন পুলিশ সদস্য দেওয়া সম্ভব হয় না। কারণ, আমাদের লোকবলের সংকট আছে। আর একটি ট্রেনে মাত্র ৩ জন পুলিশ দিয়েও নিরাপত্তা দেওয়া যায় না। ফলে যাত্রীদের নিরাপত্তায় কিছুটা তো ঘাটতি থেকেই যাচ্ছে। তবে সীমাবদ্ধতা থাকলেও যাত্রীদের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’

বিমানবন্দরের ভয়াবহ আগুন লাগার কারণ ও দায়ীদের খুঁজে বের করতে চারটি দেশ থেকে বিশেষজ্ঞ আনা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
৪ ঘণ্টা আগে
কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম ও চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় খেলা করার সময় পানিতে পড়ে ছয় শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। আজ শুক্রবার অষ্টগ্রাম উপজেলার দেওঘর ইউনিয়ন ও রাঙ্গুনিয়ার পারুয়া ইউনিয়নে ঘটনা দুটি ঘটে। এতে ওইসব এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
২১ ঘণ্টা আগে
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে আজ বেলা ৩টার দিকে ‘চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েট পরিষদ’-এর ব্যানারে পদযাত্রা শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। শাহবাগ থানার সামনে পৌঁছালে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে তা আটকে দেয়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে পুলিশ তাঁদের সড়ক থেকে....
১ দিন আগে
কক্সবাজার অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে ঘোষণা করে জারি করা প্রজ্ঞাপন স্থগিত করেছে সরকার। ফলে আপাতত কক্সবাজার থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা শুরু হচ্ছে না।
১ দিন আগেউত্তরা-বিমানবন্দর (ঢাকা) প্রতিনিধি

বিমানবন্দরের ভয়াবহ আগুন লাগার কারণ ও দায়ীদের খুঁজে বের করতে চারটি দেশ থেকে বিশেষজ্ঞ আনা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
আজ শনিবার (২৫ অক্টোবর) দুপুরে বিমানবন্দরে অগ্নিকাণ্ডের ক্ষতিগ্রস্ত কার্গো ভিলেজ ও ই-গেট পরিদর্শন শেষে বিমানবন্দরের অ্যারাইভাল গেটে সাংবাদিকদের তিনি এই তথ্য জানান।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘অব্যবস্থাপনার বিষয়টি তদন্তের জন্য আমরা চারটি দেশকে ইনভাইট করেছি। ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, চীন ও তুরস্ককে আসতে বলেছি। তাদের স্পেশালিস্ট আমরা আনতে চাচ্ছি। তারা তদন্ত করে কারণটা কী এবং কে দায়ী বের করবে।’
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘বিমানবন্দরের ভেতরে চারটি ইউনিট আছে। চারটি ইউনিটই কাজ করছে। আমরা আশা করছিলাম তাড়াতাড়ি কন্ট্রোলে আসবে। কন্ট্রোলে আসতে একটু সময় লাগছে। যেহেতু বিভিন্ন পারিপার্শ্বিক অবস্থা চিন্তা করতে হয়। যেহেতু দাহ্য পদার্থ খুব বেশি ছিল। অনেক সময় বাতাস থাকলে নেভাতে সময় লাগে।’
কার্গো ভিলেজে বিশেষায়িত ফায়ার সার্ভিস ইউনিট কেন ছিল না—এই প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আগুন নেভানোর জন্য বিমানে যে ইউনিট থাকে, সেটা কার্গো ভিলেজেও কাজ করতে পারে। এটিতে কোনো অসুবিধা নাই।’
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী আরও বলেন, ‘আগুন নেভাতে কেউ ফেল করেনি। কিন্তু সময় লাগছে। ফেল করলে সব জ্বলে যেত। ওই দিন রাত ৯টার সময় বিমানবন্দর চালু করে দিয়েছে।’
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘বিমানবন্দর অথরিটির চারটি ফায়ার সার্ভিস ইউনিট আছে। সেগুলো ৩০ সেকেন্ডের ভেতরে চলে আসছিল। ফায়ার সার্ভিসের যে ইউনিটগুলো আছে, তার একটি দিয়াবাড়ির মেট্রোরেলের ওখানে, আরেকটি কুর্মিটোলায়। সেগুলো ২০ মিনিটের ভেতরে চলে আসছে।’
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘যেখানে আগুন ধরেছে, সেখানে কেমিক্যাল ও গার্মেন্টস ম্যাটেরিয়াল ছিল। দাহ্য পদার্থ খুব বেশি ছিল। যার কারণে আগুনটা ছড়িয়ে গেছে তাড়াতাড়ি। কন্ট্রোল করতে সময় নিয়েছে।’
১৮ অক্টোবর বেলা আড়াইটার দিকে বিমানবন্দরের ৮ নম্বর গেট-সংলগ্ন আমদানি কার্গো ভিলেজে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি স্টেশনের ৩৭টি ইউনিটের চেষ্টায় রাতে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। কিন্তু পুরোপুরি নির্বাপণ হয় ২৬ ঘণ্টা পর ১৯ অক্টোবর বিকেল ৫টার দিকে।
আরও খবর পড়ুন:

বিমানবন্দরের ভয়াবহ আগুন লাগার কারণ ও দায়ীদের খুঁজে বের করতে চারটি দেশ থেকে বিশেষজ্ঞ আনা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
আজ শনিবার (২৫ অক্টোবর) দুপুরে বিমানবন্দরে অগ্নিকাণ্ডের ক্ষতিগ্রস্ত কার্গো ভিলেজ ও ই-গেট পরিদর্শন শেষে বিমানবন্দরের অ্যারাইভাল গেটে সাংবাদিকদের তিনি এই তথ্য জানান।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘অব্যবস্থাপনার বিষয়টি তদন্তের জন্য আমরা চারটি দেশকে ইনভাইট করেছি। ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, চীন ও তুরস্ককে আসতে বলেছি। তাদের স্পেশালিস্ট আমরা আনতে চাচ্ছি। তারা তদন্ত করে কারণটা কী এবং কে দায়ী বের করবে।’
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘বিমানবন্দরের ভেতরে চারটি ইউনিট আছে। চারটি ইউনিটই কাজ করছে। আমরা আশা করছিলাম তাড়াতাড়ি কন্ট্রোলে আসবে। কন্ট্রোলে আসতে একটু সময় লাগছে। যেহেতু বিভিন্ন পারিপার্শ্বিক অবস্থা চিন্তা করতে হয়। যেহেতু দাহ্য পদার্থ খুব বেশি ছিল। অনেক সময় বাতাস থাকলে নেভাতে সময় লাগে।’
কার্গো ভিলেজে বিশেষায়িত ফায়ার সার্ভিস ইউনিট কেন ছিল না—এই প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আগুন নেভানোর জন্য বিমানে যে ইউনিট থাকে, সেটা কার্গো ভিলেজেও কাজ করতে পারে। এটিতে কোনো অসুবিধা নাই।’
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী আরও বলেন, ‘আগুন নেভাতে কেউ ফেল করেনি। কিন্তু সময় লাগছে। ফেল করলে সব জ্বলে যেত। ওই দিন রাত ৯টার সময় বিমানবন্দর চালু করে দিয়েছে।’
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘বিমানবন্দর অথরিটির চারটি ফায়ার সার্ভিস ইউনিট আছে। সেগুলো ৩০ সেকেন্ডের ভেতরে চলে আসছিল। ফায়ার সার্ভিসের যে ইউনিটগুলো আছে, তার একটি দিয়াবাড়ির মেট্রোরেলের ওখানে, আরেকটি কুর্মিটোলায়। সেগুলো ২০ মিনিটের ভেতরে চলে আসছে।’
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘যেখানে আগুন ধরেছে, সেখানে কেমিক্যাল ও গার্মেন্টস ম্যাটেরিয়াল ছিল। দাহ্য পদার্থ খুব বেশি ছিল। যার কারণে আগুনটা ছড়িয়ে গেছে তাড়াতাড়ি। কন্ট্রোল করতে সময় নিয়েছে।’
১৮ অক্টোবর বেলা আড়াইটার দিকে বিমানবন্দরের ৮ নম্বর গেট-সংলগ্ন আমদানি কার্গো ভিলেজে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি স্টেশনের ৩৭টি ইউনিটের চেষ্টায় রাতে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। কিন্তু পুরোপুরি নির্বাপণ হয় ২৬ ঘণ্টা পর ১৯ অক্টোবর বিকেল ৫টার দিকে।
আরও খবর পড়ুন:

ট্রেন দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ গণপরিবহন। অপেক্ষাকৃত নিম্ন আয়ের মানুষসহ বিশাল জনগোষ্ঠী এর ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু সাম্প্রতিককালে এতে ভ্রমণকালে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। নিয়মিত যাত্রীদের অভিযোগ, চলন্ত ট্রেনে প্রায়ই ঘটছে চুরি, ছিনতাই। কখনো কখনো ঘটছে ধর্ষণ এবং ট্রেন থেকে ফেলে দেওয়ার মতো গুরুতর অপরাধও।
০২ জুলাই ২০২৫
কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম ও চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় খেলা করার সময় পানিতে পড়ে ছয় শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। আজ শুক্রবার অষ্টগ্রাম উপজেলার দেওঘর ইউনিয়ন ও রাঙ্গুনিয়ার পারুয়া ইউনিয়নে ঘটনা দুটি ঘটে। এতে ওইসব এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
২১ ঘণ্টা আগে
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে আজ বেলা ৩টার দিকে ‘চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েট পরিষদ’-এর ব্যানারে পদযাত্রা শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। শাহবাগ থানার সামনে পৌঁছালে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে তা আটকে দেয়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে পুলিশ তাঁদের সড়ক থেকে....
১ দিন আগে
কক্সবাজার অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে ঘোষণা করে জারি করা প্রজ্ঞাপন স্থগিত করেছে সরকার। ফলে আপাতত কক্সবাজার থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা শুরু হচ্ছে না।
১ দিন আগেঅষ্টগ্রাম (কিশোরগঞ্জ) ও রাঙ্গুনিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম ও চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় খেলা করার সময় পানিতে পড়ে ছয় শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। আজ শুক্রবার অষ্টগ্রাম উপজেলার দেওঘর ইউনিয়ন ও রাঙ্গুনিয়ার পারুয়া ইউনিয়নে ঘটনা দুটি ঘটে। এতে ওইসব এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
আজ বিকেলে অষ্টগ্রাম উপজেলার দেওঘর ইউনিয়নের পশ্চিম আলীনগর এলাকায় বাড়িসংলগ্ন বিলের পাশে খেলা করছিল মিশকাত (৫), মাহিন (৬) ও সাত্তার তানিল মিয়া (৫)। হঠাৎ সবার অজান্তে তিন শিশু বিলে পড়ে ডুবে যায়।
খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে বিল থেকে মিশকাত ও মাহিনকে উদ্ধার করা হয়। পরে অষ্টগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। সন্ধ্যা ৭টার দিকে খবর পেয়ে অষ্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা গিয়ে ঘটনাস্থল থেকে অপর শিশু তানিলের মরদেহ উদ্ধার করে।
এ বিষয়ে মাহিনের চাচা মোবারক হোসেন বলেন, প্রতিদিনের মতো তিন শিশু খেলাধুলা করছিল। কিন্তু কখন যে বিলের পানিতে ডুবে গেল, কেউ বোঝেনি। পরে তাদের দেখতে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি করে পানিতে প্রথমে দুজন, পরে অন্যজনকে পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে দেওঘর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আক্তার হোসেন বলেন, দুঃখজনক খবর, একই বাড়ির তিনটা শিশুর মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
অপর দিকে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পারুয়া ইউনিয়নে একই দিন বিকেলে উত্তর পারুয়া গ্রামের একটি পুকুরে পড়ে মারা যায় তিন শিশু। তারা হলো সুমাইয়া আক্তার (৫), হাবীবা আক্তার (৬) ও জান্নাত আক্তার (৫)।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বিকেলে খেলার ছলে তারা তিনজনই বাড়ির পাশে পুকুরে যায়। কিছুক্ষণ পর না পেয়ে পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজি শুরু করে। পরে পুকুরে ভাসমান অবস্থায় তাদের মরদেহ উদ্ধার করে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে পারুয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান একতেহার হোসেন বলেন, ‘তিনটি নিষ্পাপ শিশুর এমন মৃত্যুর ঘটনা আমাদের সবাইকে স্তব্ধ করে দিয়েছে। পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।’

কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম ও চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় খেলা করার সময় পানিতে পড়ে ছয় শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। আজ শুক্রবার অষ্টগ্রাম উপজেলার দেওঘর ইউনিয়ন ও রাঙ্গুনিয়ার পারুয়া ইউনিয়নে ঘটনা দুটি ঘটে। এতে ওইসব এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
আজ বিকেলে অষ্টগ্রাম উপজেলার দেওঘর ইউনিয়নের পশ্চিম আলীনগর এলাকায় বাড়িসংলগ্ন বিলের পাশে খেলা করছিল মিশকাত (৫), মাহিন (৬) ও সাত্তার তানিল মিয়া (৫)। হঠাৎ সবার অজান্তে তিন শিশু বিলে পড়ে ডুবে যায়।
খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে বিল থেকে মিশকাত ও মাহিনকে উদ্ধার করা হয়। পরে অষ্টগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। সন্ধ্যা ৭টার দিকে খবর পেয়ে অষ্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা গিয়ে ঘটনাস্থল থেকে অপর শিশু তানিলের মরদেহ উদ্ধার করে।
এ বিষয়ে মাহিনের চাচা মোবারক হোসেন বলেন, প্রতিদিনের মতো তিন শিশু খেলাধুলা করছিল। কিন্তু কখন যে বিলের পানিতে ডুবে গেল, কেউ বোঝেনি। পরে তাদের দেখতে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি করে পানিতে প্রথমে দুজন, পরে অন্যজনকে পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে দেওঘর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আক্তার হোসেন বলেন, দুঃখজনক খবর, একই বাড়ির তিনটা শিশুর মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
অপর দিকে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পারুয়া ইউনিয়নে একই দিন বিকেলে উত্তর পারুয়া গ্রামের একটি পুকুরে পড়ে মারা যায় তিন শিশু। তারা হলো সুমাইয়া আক্তার (৫), হাবীবা আক্তার (৬) ও জান্নাত আক্তার (৫)।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বিকেলে খেলার ছলে তারা তিনজনই বাড়ির পাশে পুকুরে যায়। কিছুক্ষণ পর না পেয়ে পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজি শুরু করে। পরে পুকুরে ভাসমান অবস্থায় তাদের মরদেহ উদ্ধার করে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে পারুয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান একতেহার হোসেন বলেন, ‘তিনটি নিষ্পাপ শিশুর এমন মৃত্যুর ঘটনা আমাদের সবাইকে স্তব্ধ করে দিয়েছে। পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।’

ট্রেন দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ গণপরিবহন। অপেক্ষাকৃত নিম্ন আয়ের মানুষসহ বিশাল জনগোষ্ঠী এর ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু সাম্প্রতিককালে এতে ভ্রমণকালে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। নিয়মিত যাত্রীদের অভিযোগ, চলন্ত ট্রেনে প্রায়ই ঘটছে চুরি, ছিনতাই। কখনো কখনো ঘটছে ধর্ষণ এবং ট্রেন থেকে ফেলে দেওয়ার মতো গুরুতর অপরাধও।
০২ জুলাই ২০২৫
বিমানবন্দরের ভয়াবহ আগুন লাগার কারণ ও দায়ীদের খুঁজে বের করতে চারটি দেশ থেকে বিশেষজ্ঞ আনা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
৪ ঘণ্টা আগে
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে আজ বেলা ৩টার দিকে ‘চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েট পরিষদ’-এর ব্যানারে পদযাত্রা শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। শাহবাগ থানার সামনে পৌঁছালে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে তা আটকে দেয়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে পুলিশ তাঁদের সড়ক থেকে....
১ দিন আগে
কক্সবাজার অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে ঘোষণা করে জারি করা প্রজ্ঞাপন স্থগিত করেছে সরকার। ফলে আপাতত কক্সবাজার থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা শুরু হচ্ছে না।
১ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানো, বিশেষ নিয়োগব্যবস্থা, স্বতন্ত্র কোটা সংরক্ষণসহ পাঁচ দফা দাবিতে আজ শুক্রবার আবারও যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা করেছেন চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েটরা। তবে গতকাল বৃহস্পতিবারের মতো আজও তাঁদের পদযাত্রা শাহবাগ থানার সামনে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে আজ বেলা ৩টার দিকে ‘চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েট পরিষদ’-এর ব্যানারে পদযাত্রা শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। শাহবাগ থানার সামনে পৌঁছালে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে তা আটকে দেয়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে পুলিশ তাঁদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়।
এর আগে গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজু ভাস্কর্য থেকে যমুনা অভিমুখে থালাবাটি নিয়ে ভুখা মিছিল করেন প্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েটরা। শাহবাগ থানার সামনে মিছিলটি পুলিশ আটকে দিলে সেখানেই বিক্ষোভ করেন তাঁরা। একপর্যায়ে সেখান থেকে তাঁদের সরিয়ে দেওয়া হয়।
গত রোববার থেকে পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলন করা চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধীদের ভাষ্য, শিক্ষিত, যোগ্য ও কর্মক্ষম যুব প্রতিবন্ধীরা দীর্ঘদিন ধরে কর্মসংস্থান থেকে বঞ্চিত। ২০১৮ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে ন্যায্য অধিকারের দাবি জানিয়ে আসছেন তাঁরা। তবে এখনো কর্মসংস্থানে অন্তর্ভুক্তি ও প্রতিবন্ধী কোটা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা হয়নি।
চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েট পরিষদের সদস্যসচিব আলিফ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পাঁচ দফা দাবিতে গত রোববার শাহবাগে অবস্থান করে যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা করা হয়। সেদিন পুলিশ আমাদের আটকে দেয়। এরপর সমাজকল্যাণ উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আমাদের দাবি জানানো হয়। তাঁর কাছ থেকে কোনো সমাধান না পেয়ে আমরা বেশ কয়েকবার যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা করি, কিন্তু পুলিশ আমাদের ব্যারিকেড দিয়ে আটকে রাখে।’
আলিফ হোসেন আরও বলেন, ‘আজও শাহবাগ থানার সামনে আমাদের পদযাত্রা আটকে দেওয়া হয় এবং বেশ কয়েকজনকে পুলিশ মারধরও করেছে।’
এ বিষয়ে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ খালিদ মনসুর বলেন, প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন এলাকায় সভা-সমাবেশ করা নিষেধ। তাই চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধীরা দাবিদাওয়া নিয়ে যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা করায় তাঁদের আটকে দেওয়া হয়েছে।
চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধীদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে—
১. প্রতিবন্ধিতার ধরন অনুযায়ী বেকার, শিক্ষিত প্রতিবন্ধীদের জন্য প্রধান উপদেষ্টার নির্বাহী আদেশে বিশেষ নিয়োগ দিতে হবে।
২. প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে ২ শতাংশ এবং তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণিতে ৫ শতাংশ স্বতন্ত্র প্রতিবন্ধী কোটা সংরক্ষণ ও বাস্তবায়ন করতে হবে।
৩. দৃষ্টি বা শারীরিক প্রতিবন্ধীরা নিজেদের পছন্দমতো শ্রুতিলেখক (বিকল্প সহকারী) মনোনয়নের স্বাধীনতা পাবেন—এমনভাবে নীতিমালা হালনাগাদ করতে হবে।
৪. সমাজসেবা অধিদপ্তর এবং সংশ্লিষ্ট শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য নির্দিষ্ট পদসংখ্যায় নিশ্চিত নিয়োগ দিতে হবে।
৫. প্রতিবন্ধী প্রার্থীদের সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছরে উন্নীত করতে হবে। সাধারণ প্রার্থীদের ক্ষেত্রে ৩৫ হলে তা ৩৭ বছর করতে হবে।

সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানো, বিশেষ নিয়োগব্যবস্থা, স্বতন্ত্র কোটা সংরক্ষণসহ পাঁচ দফা দাবিতে আজ শুক্রবার আবারও যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা করেছেন চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েটরা। তবে গতকাল বৃহস্পতিবারের মতো আজও তাঁদের পদযাত্রা শাহবাগ থানার সামনে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে আজ বেলা ৩টার দিকে ‘চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েট পরিষদ’-এর ব্যানারে পদযাত্রা শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। শাহবাগ থানার সামনে পৌঁছালে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে তা আটকে দেয়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে পুলিশ তাঁদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়।
এর আগে গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজু ভাস্কর্য থেকে যমুনা অভিমুখে থালাবাটি নিয়ে ভুখা মিছিল করেন প্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েটরা। শাহবাগ থানার সামনে মিছিলটি পুলিশ আটকে দিলে সেখানেই বিক্ষোভ করেন তাঁরা। একপর্যায়ে সেখান থেকে তাঁদের সরিয়ে দেওয়া হয়।
গত রোববার থেকে পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলন করা চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধীদের ভাষ্য, শিক্ষিত, যোগ্য ও কর্মক্ষম যুব প্রতিবন্ধীরা দীর্ঘদিন ধরে কর্মসংস্থান থেকে বঞ্চিত। ২০১৮ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে ন্যায্য অধিকারের দাবি জানিয়ে আসছেন তাঁরা। তবে এখনো কর্মসংস্থানে অন্তর্ভুক্তি ও প্রতিবন্ধী কোটা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা হয়নি।
চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েট পরিষদের সদস্যসচিব আলিফ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পাঁচ দফা দাবিতে গত রোববার শাহবাগে অবস্থান করে যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা করা হয়। সেদিন পুলিশ আমাদের আটকে দেয়। এরপর সমাজকল্যাণ উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আমাদের দাবি জানানো হয়। তাঁর কাছ থেকে কোনো সমাধান না পেয়ে আমরা বেশ কয়েকবার যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা করি, কিন্তু পুলিশ আমাদের ব্যারিকেড দিয়ে আটকে রাখে।’
আলিফ হোসেন আরও বলেন, ‘আজও শাহবাগ থানার সামনে আমাদের পদযাত্রা আটকে দেওয়া হয় এবং বেশ কয়েকজনকে পুলিশ মারধরও করেছে।’
এ বিষয়ে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ খালিদ মনসুর বলেন, প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন এলাকায় সভা-সমাবেশ করা নিষেধ। তাই চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধীরা দাবিদাওয়া নিয়ে যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা করায় তাঁদের আটকে দেওয়া হয়েছে।
চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধীদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে—
১. প্রতিবন্ধিতার ধরন অনুযায়ী বেকার, শিক্ষিত প্রতিবন্ধীদের জন্য প্রধান উপদেষ্টার নির্বাহী আদেশে বিশেষ নিয়োগ দিতে হবে।
২. প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে ২ শতাংশ এবং তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণিতে ৫ শতাংশ স্বতন্ত্র প্রতিবন্ধী কোটা সংরক্ষণ ও বাস্তবায়ন করতে হবে।
৩. দৃষ্টি বা শারীরিক প্রতিবন্ধীরা নিজেদের পছন্দমতো শ্রুতিলেখক (বিকল্প সহকারী) মনোনয়নের স্বাধীনতা পাবেন—এমনভাবে নীতিমালা হালনাগাদ করতে হবে।
৪. সমাজসেবা অধিদপ্তর এবং সংশ্লিষ্ট শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য নির্দিষ্ট পদসংখ্যায় নিশ্চিত নিয়োগ দিতে হবে।
৫. প্রতিবন্ধী প্রার্থীদের সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছরে উন্নীত করতে হবে। সাধারণ প্রার্থীদের ক্ষেত্রে ৩৫ হলে তা ৩৭ বছর করতে হবে।

ট্রেন দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ গণপরিবহন। অপেক্ষাকৃত নিম্ন আয়ের মানুষসহ বিশাল জনগোষ্ঠী এর ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু সাম্প্রতিককালে এতে ভ্রমণকালে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। নিয়মিত যাত্রীদের অভিযোগ, চলন্ত ট্রেনে প্রায়ই ঘটছে চুরি, ছিনতাই। কখনো কখনো ঘটছে ধর্ষণ এবং ট্রেন থেকে ফেলে দেওয়ার মতো গুরুতর অপরাধও।
০২ জুলাই ২০২৫
বিমানবন্দরের ভয়াবহ আগুন লাগার কারণ ও দায়ীদের খুঁজে বের করতে চারটি দেশ থেকে বিশেষজ্ঞ আনা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
৪ ঘণ্টা আগে
কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম ও চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় খেলা করার সময় পানিতে পড়ে ছয় শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। আজ শুক্রবার অষ্টগ্রাম উপজেলার দেওঘর ইউনিয়ন ও রাঙ্গুনিয়ার পারুয়া ইউনিয়নে ঘটনা দুটি ঘটে। এতে ওইসব এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
২১ ঘণ্টা আগে
কক্সবাজার অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে ঘোষণা করে জারি করা প্রজ্ঞাপন স্থগিত করেছে সরকার। ফলে আপাতত কক্সবাজার থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা শুরু হচ্ছে না।
১ দিন আগেবিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা

কক্সবাজার অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে ঘোষণা করে জারি করা প্রজ্ঞাপন স্থগিত করেছে সরকার। ফলে আপাতত কক্সবাজার থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা শুরু হচ্ছে না।
আজ শুক্রবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার বিমানবন্দরের আন্তর্জাতিক বিমান উড্ডয়ন কমিটির সভাপতি ও বিমানবন্দর পরিচালক এয়ার কমোডর মো. নুর-ই-আজম।
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) সূত্রে জানা গেছে, সরকারের পক্ষ থেকে বিমানবন্দরটিকে আন্তর্জাতিক ঘোষণা করার প্রজ্ঞাপন স্থগিত করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত আগের মতোই অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট পরিচালনা চলবে।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে ঘোষণা করে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছিল। এর মাধ্যমে কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালুর প্রাথমিক প্রস্তুতি শুরু হয়।
বিমানবন্দরসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, অবকাঠামোগত ও প্রশাসনিক কিছু প্রস্তুতি সম্পূর্ণ না হওয়ায় সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
উল্লেখ্য, দেশের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন নগরী কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালুর উদ্যোগ পর্যটন খাতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দেবে বলে আশা করা হচ্ছিল। বিশেষ করে, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও ভারতের সঙ্গে সরাসরি আকাশপথে সংযোগের পরিকল্পনাও ছিল সরকারের।

কক্সবাজার অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে ঘোষণা করে জারি করা প্রজ্ঞাপন স্থগিত করেছে সরকার। ফলে আপাতত কক্সবাজার থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা শুরু হচ্ছে না।
আজ শুক্রবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার বিমানবন্দরের আন্তর্জাতিক বিমান উড্ডয়ন কমিটির সভাপতি ও বিমানবন্দর পরিচালক এয়ার কমোডর মো. নুর-ই-আজম।
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) সূত্রে জানা গেছে, সরকারের পক্ষ থেকে বিমানবন্দরটিকে আন্তর্জাতিক ঘোষণা করার প্রজ্ঞাপন স্থগিত করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত আগের মতোই অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট পরিচালনা চলবে।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে ঘোষণা করে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছিল। এর মাধ্যমে কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালুর প্রাথমিক প্রস্তুতি শুরু হয়।
বিমানবন্দরসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, অবকাঠামোগত ও প্রশাসনিক কিছু প্রস্তুতি সম্পূর্ণ না হওয়ায় সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
উল্লেখ্য, দেশের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন নগরী কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালুর উদ্যোগ পর্যটন খাতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দেবে বলে আশা করা হচ্ছিল। বিশেষ করে, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও ভারতের সঙ্গে সরাসরি আকাশপথে সংযোগের পরিকল্পনাও ছিল সরকারের।

ট্রেন দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ গণপরিবহন। অপেক্ষাকৃত নিম্ন আয়ের মানুষসহ বিশাল জনগোষ্ঠী এর ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু সাম্প্রতিককালে এতে ভ্রমণকালে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। নিয়মিত যাত্রীদের অভিযোগ, চলন্ত ট্রেনে প্রায়ই ঘটছে চুরি, ছিনতাই। কখনো কখনো ঘটছে ধর্ষণ এবং ট্রেন থেকে ফেলে দেওয়ার মতো গুরুতর অপরাধও।
০২ জুলাই ২০২৫
বিমানবন্দরের ভয়াবহ আগুন লাগার কারণ ও দায়ীদের খুঁজে বের করতে চারটি দেশ থেকে বিশেষজ্ঞ আনা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
৪ ঘণ্টা আগে
কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম ও চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় খেলা করার সময় পানিতে পড়ে ছয় শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। আজ শুক্রবার অষ্টগ্রাম উপজেলার দেওঘর ইউনিয়ন ও রাঙ্গুনিয়ার পারুয়া ইউনিয়নে ঘটনা দুটি ঘটে। এতে ওইসব এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
২১ ঘণ্টা আগে
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে আজ বেলা ৩টার দিকে ‘চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েট পরিষদ’-এর ব্যানারে পদযাত্রা শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। শাহবাগ থানার সামনে পৌঁছালে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে তা আটকে দেয়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে পুলিশ তাঁদের সড়ক থেকে....
১ দিন আগে