আজকের পত্রিকা ডেস্ক

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব, লেখক, গবেষক এবং বাম ধারার বুদ্ধিজীবী বদরুদ্দীন উমর ৯৪ বছর বয়সে মারা গেছেন। আজ রোববার সকালে ঢাকার বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি। তাঁর প্রয়াণে দেশের প্রগতিশীল ও বুদ্ধিবৃত্তিক মহলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
জন্ম ও শিক্ষা
বদরুদ্দীন উমর ১৯৩১ সালের ২০ ডিসেম্বর ব্রিটিশ ভারতের বর্ধমান শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম আবুল হাশিম ও মাতার নাম মাহমুদা আখতার মেহেরবানু বেগম। পিতা আবুল হাশিম একজন রাজনীতিবিদ ছিলেন। দেশভাগের পর পূর্ব পাকিস্তানে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন এবং ১৯৫০ সালে ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। উমর ১৯৪৮ সালে বর্ধমান টাউন স্কুল থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯৫০ সালে তিনি বর্ধমান রাজ কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫৩ সালে স্নাতক সম্মান ডিগ্রি অর্জন করেন। দর্শন বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন ১৯৫৫ সালে। ১৯৬১ সালে তিনি যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শন, রাজনীতি ও অর্থনীতি (পিপিই) ডিগ্রি লাভ করেন।
অক্সফোর্ডে ডিগ্রি নিয়ে দেশে ফিরে আসেন এবং ১৯৬৩ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেন। গভর্নর মোনায়েম খানের স্বৈরতান্ত্রিক আচরণের প্রতিবাদে ১৯৬৮ সালে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা ছেড়ে রাজনীতি ও লেখালেখিতে আত্মনিয়োগ করেন। তাঁর লেখা ‘পূর্ববাঙলার ভাষা আন্দোলন ও তৎকালীন রাজনীতি’ ভাষা আন্দোলনের ওপর প্রথম গবেষণাগ্রন্থ।
শিক্ষক থেকে বুদ্ধিজীবী
বদরুদ্দীন উমর তাঁর পেশাজীবন শুরু করেছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে। পরবর্তীকালে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেন, যা তাঁর প্রাতিষ্ঠানিক অবদানের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। শিক্ষকতা জীবনের পাশাপাশি তাঁর রাজনৈতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক কর্মকাণ্ডের বিস্তার ছিল ব্যাপক। তিনি বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের সভাপতি এবং গণতান্ত্রিক বিপ্লবী জোটের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। একসময় পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটিতেও ছিলেন। ২০০৩ সালে তিনি জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল নামে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করে আমৃত্যু সেটির সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন।
ভাষা আন্দোলনের সাহিত্যিক স্থপতি
বদরুদ্দীন উমরের সর্বজনস্বীকৃত এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কৃতি হচ্ছে তিনটি বিশাল খণ্ডে রচিত ‘পূর্ব বাঙলার ভাষা আন্দোলন ও তৎকালীন রাজনীতি’ শীর্ষক গ্রন্থটি। এই গ্রন্থের মাধ্যমে তিনি ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসকে একটি সুসংহত সাহিত্যিক রূপ দিয়েছেন। রাজনৈতিক সাহিত্য রচনার ক্ষেত্রে বাঙালির মননজগতে বদরুদ্দীন উমরের স্থান বৈশিষ্ট্যপূর্ণ এবং স্বীকৃত। সাহিত্যিক শংকর তাঁকে ‘ভাষা আন্দোলনের কাশীরাম দাশ’ হিসেবে অভিহিত করে তাঁর এ অবদানের গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। আবুল কাসেম ফজলুল হক তাঁর সম্পর্কে লিখেছিলেন, বদরুদ্দীন উমর সম্ভবত সেই সৃষ্টিশীল ধারার পথিকৃৎ, যা বিগত কয়েক দশক ধরে ধীরে ধীরে দানা বাঁধছিল।
এই গ্রন্থ রচনার পটভূমি ছিল ব্যাপক ও গবেষণামূলক। ১৯৬০ সালে পূর্ব পাকিস্তানের সাধারণ ইতিহাস রচনার জন্য তথ্য সংগ্রহ শুরু করলেও পরে তিনি ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস লেখার সিদ্ধান্ত নেন। এই কাজ সম্পন্ন করতে তাঁকে প্রায় কুড়ি বছর (১৯৬৩-৮২) ব্যয় করতে হয়েছে এবং তিন সহস্রাধিক তথ্য-উৎস ব্যবহার করতে হয়েছে। প্রায় ২০০ ব্যক্তির সাক্ষাৎকার ও প্রত্যক্ষ সহযোগিতা গ্রহণ করতে হয়েছিল তাঁকে। তাঁর প্রথম উল্লেখযোগ্য রচনাটিও ছিল ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে, যা ছিল তাঁর বাবা আবুল হাশিমের অনুরোধে লেখা ‘আমাদের ভাষার লড়াই’ শীর্ষক একটি পুস্তিকা।
গবেষণার নেপথ্যে: চ্যালেঞ্জ ও অধ্যবসায়
বদরুদ্দীন উমরের গবেষণামূলক কাজ ছিল অত্যন্ত শ্রমসাধ্য। ভাষা আন্দোলনের মতো একটি সংবেদনশীল বিষয়ে ইতিহাস লিখতে গিয়ে তিনি নানা সমস্যার সম্মুখীন হন। সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল লিখিত তথ্যসূত্রের অভাব এবং স্মৃতিচারণের বিভ্রান্তি। অনেক সময় দেখা গেছে, প্রত্যক্ষদর্শীরাও দুর্বল স্মৃতি বা ব্যক্তিগত স্বার্থের কারণে ভুল তথ্য দিয়েছেন। উদাহরণস্বরূপ, ১৯৪৮ সালের ২৪ মার্চ মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর সঙ্গে রাষ্ট্রভাষা কর্মপরিষদের সাক্ষাৎকারের ঘটনাটি যাচাই করতে গিয়ে তিনি দেখেন, আতাউর রহমান খান নিজেকে ওই সাক্ষাৎকারে উপস্থিত বলে দাবি করলেও অন্যান্য প্রত্যক্ষদর্শীর মাধ্যমে তা ভুল প্রমাণিত হয়। এসব সমস্যা সত্ত্বেও তিনি অকৃত্রিম নিষ্ঠা ও অধ্যবসায়ের সঙ্গে কাজ করে গেছেন।
তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে তিনি আধুনিক গবেষণা পদ্ধতি অনুসরণ করেন। তিনি সংবাদপত্র, বিভিন্ন আন্দোলন সম্পর্কিত পুস্তক-পুস্তিকা, পার্টি দলিলপত্র, ইশতেহার এবং তৎকালীন রাজনীতিবিদ ও আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ব্যাপক সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেন। সরকারি কোনো তথ্য উৎস থেকে খুব বেশি সাহায্য তিনি পাননি। তাঁর এই নিরলস পরিশ্রমের ফসল হিসেবেই বাংলা ভাষা আন্দোলন একটি সুসংবদ্ধ ঐতিহাসিক রূপ লাভ করে। তার গ্রন্থত্রয় সম্মিলিতভাবে একটি বিরাট জন-অঞ্চলের সামাজিক জীবনের গভীরতম দলিল, যা পূর্ব বাংলার উজ্জ্বল জীবন-নাট্যকে তুলে ধরে।
রাজনৈতিক দর্শন
বদরুদ্দীন উমর কেবল একজন ইতিহাসবিদ ছিলেন না, তাঁর রচনায় সমাজ, রাজনীতি এবং পার্টির অবিচ্ছিন্ন সম্পর্ক প্রাধান্য পেয়েছে। তাঁর লেখালেখির মূল লক্ষ্য ছিল সমাজের সার্বিক শোষণমুক্তির উদ্দেশ্যে আন্দোলন গড়ে তোলা। বিশ্লেষক হিসেবে তিনি ছিলেন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং তীক্ষ্ণ। তাঁর প্রতিটি গ্রন্থ বাংলাদেশের বুদ্ধিবৃত্তিক, রাজনৈতিক এবং সামাজিক বিকাশের জন্য একটি মূল্যবান দলিল।
একুশে ফেব্রুয়ারিকে তিনি কেবল ভাষার আন্দোলন হিসেবে দেখেননি, বরং এটিকে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক জীবনের বিকাশের সংগ্রাম হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। তাঁর মতে, ১৯৪৮ এবং ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন পূর্ব বাংলার রাজনীতির ক্ষেত্রে একটি মৌলিক পরিবর্তন এনেছিল, যা সাম্প্রদায়িক রাজনীতির গণবিরোধী চরিত্র সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করে তোলে। তাঁর মতে, ভাষা আন্দোলনই পাকিস্তানি নির্যাতনের বিরুদ্ধে সর্বপ্রথম ব্যাপক জাতীয় প্রতিরোধ। ভাষা আন্দোলনের ফলে বুর্জোয়া রাজনীতির সাম্প্রদায়িকতা ধর্মনিরপেক্ষতা লাভ করে এবং তা সামনে উঠে আসে।
তবে তিনি ভাষা আন্দোলনের কিছু দুর্বলতার দিকও তুলে ধরেছেন। যেমন, ভাষা আন্দোলনকে সমগ্র পাকিস্তানের সমস্যা হিসেবে দেখতে না পারা এবং এর সাম্রাজ্যবাদবিরোধী চরিত্রের অভাব। তাঁর মতে, ভাষা আন্দোলনের পরবর্তী পর্যায়গুলোতে এখানকার কমিউনিস্ট পার্টি এই আন্দোলনকে রাজনৈতিকভাবে উপস্থিত করতে ব্যর্থ হয়, কোনো শক্তিশালী সাহিত্যের জন্ম হয় না এবং এর ফসলকে শাসক-শোষকরাই ভোগ করে।
বদরুদ্দীন উমর তাঁর সহজ, অনাড়ম্বর এবং ধারালো গদ্যশৈলীর জন্য পরিচিত। তিনি বাংলা সাহিত্যের একজন অন্যতম শক্তিশালী গদ্যশিল্পী। তাঁর লেখালেখি, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড এবং শোষিত মানুষের মুক্তির জন্য তাঁর আপোসহীন সংগ্রাম তাঁকে চিরকাল স্মরণীয় করে রাখবে।
জীবনে কখনো পুরস্কার নেননি
বদরুদ্দীন উমরকে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে, কিন্তু তিনি কোনোটিই গ্রহণ করেননি। সর্বশেষ অন্তর্বর্তী সরকার তাঁকে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করলেও সেটিও তিনি প্রত্যাখ্যান করেছেন।
চলতি বছরের মার্চে স্বাধীনতা পুরস্কারের তালিকায় নাম ঘোষণা করলে এক বিবৃতিতে বদরুদ্দীন উমর বলেন, ‘১৯৭৩ সাল থেকে আমাকে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা থেকে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। আমি সেগুলোর কোনোটি গ্রহণ করিনি। এখন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার আমাকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা করেছে। এ জন্য তাদের ধন্যবাদ। কিন্তু তাদের দেওয়া এই পুরস্কারও আমার পক্ষে গ্রহণ করা সম্ভব নয়।’
এর আগে ১৯৭২ সালে বদরুদ্দীন উমরকে বাংলা একাডেমি পুরস্কার দেওয়া হয়, তবে তিনি তা তাৎক্ষণিক প্রত্যাখ্যান করেন। ১৯৭৪ সালে তিনি ইতিহাস পরিষদের পুরস্কার পান এবং তা প্রত্যাখ্যান করেন।
[১৯৮১ সালে সাপ্তাহিক বিচিত্রা পত্রিকার প্রচ্ছদ প্রতিবেদন অবলম্বনে]

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব, লেখক, গবেষক এবং বাম ধারার বুদ্ধিজীবী বদরুদ্দীন উমর ৯৪ বছর বয়সে মারা গেছেন। আজ রোববার সকালে ঢাকার বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি। তাঁর প্রয়াণে দেশের প্রগতিশীল ও বুদ্ধিবৃত্তিক মহলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
জন্ম ও শিক্ষা
বদরুদ্দীন উমর ১৯৩১ সালের ২০ ডিসেম্বর ব্রিটিশ ভারতের বর্ধমান শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম আবুল হাশিম ও মাতার নাম মাহমুদা আখতার মেহেরবানু বেগম। পিতা আবুল হাশিম একজন রাজনীতিবিদ ছিলেন। দেশভাগের পর পূর্ব পাকিস্তানে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন এবং ১৯৫০ সালে ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। উমর ১৯৪৮ সালে বর্ধমান টাউন স্কুল থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯৫০ সালে তিনি বর্ধমান রাজ কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫৩ সালে স্নাতক সম্মান ডিগ্রি অর্জন করেন। দর্শন বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন ১৯৫৫ সালে। ১৯৬১ সালে তিনি যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শন, রাজনীতি ও অর্থনীতি (পিপিই) ডিগ্রি লাভ করেন।
অক্সফোর্ডে ডিগ্রি নিয়ে দেশে ফিরে আসেন এবং ১৯৬৩ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেন। গভর্নর মোনায়েম খানের স্বৈরতান্ত্রিক আচরণের প্রতিবাদে ১৯৬৮ সালে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা ছেড়ে রাজনীতি ও লেখালেখিতে আত্মনিয়োগ করেন। তাঁর লেখা ‘পূর্ববাঙলার ভাষা আন্দোলন ও তৎকালীন রাজনীতি’ ভাষা আন্দোলনের ওপর প্রথম গবেষণাগ্রন্থ।
শিক্ষক থেকে বুদ্ধিজীবী
বদরুদ্দীন উমর তাঁর পেশাজীবন শুরু করেছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে। পরবর্তীকালে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেন, যা তাঁর প্রাতিষ্ঠানিক অবদানের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। শিক্ষকতা জীবনের পাশাপাশি তাঁর রাজনৈতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক কর্মকাণ্ডের বিস্তার ছিল ব্যাপক। তিনি বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের সভাপতি এবং গণতান্ত্রিক বিপ্লবী জোটের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। একসময় পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটিতেও ছিলেন। ২০০৩ সালে তিনি জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল নামে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করে আমৃত্যু সেটির সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন।
ভাষা আন্দোলনের সাহিত্যিক স্থপতি
বদরুদ্দীন উমরের সর্বজনস্বীকৃত এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কৃতি হচ্ছে তিনটি বিশাল খণ্ডে রচিত ‘পূর্ব বাঙলার ভাষা আন্দোলন ও তৎকালীন রাজনীতি’ শীর্ষক গ্রন্থটি। এই গ্রন্থের মাধ্যমে তিনি ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসকে একটি সুসংহত সাহিত্যিক রূপ দিয়েছেন। রাজনৈতিক সাহিত্য রচনার ক্ষেত্রে বাঙালির মননজগতে বদরুদ্দীন উমরের স্থান বৈশিষ্ট্যপূর্ণ এবং স্বীকৃত। সাহিত্যিক শংকর তাঁকে ‘ভাষা আন্দোলনের কাশীরাম দাশ’ হিসেবে অভিহিত করে তাঁর এ অবদানের গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। আবুল কাসেম ফজলুল হক তাঁর সম্পর্কে লিখেছিলেন, বদরুদ্দীন উমর সম্ভবত সেই সৃষ্টিশীল ধারার পথিকৃৎ, যা বিগত কয়েক দশক ধরে ধীরে ধীরে দানা বাঁধছিল।
এই গ্রন্থ রচনার পটভূমি ছিল ব্যাপক ও গবেষণামূলক। ১৯৬০ সালে পূর্ব পাকিস্তানের সাধারণ ইতিহাস রচনার জন্য তথ্য সংগ্রহ শুরু করলেও পরে তিনি ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস লেখার সিদ্ধান্ত নেন। এই কাজ সম্পন্ন করতে তাঁকে প্রায় কুড়ি বছর (১৯৬৩-৮২) ব্যয় করতে হয়েছে এবং তিন সহস্রাধিক তথ্য-উৎস ব্যবহার করতে হয়েছে। প্রায় ২০০ ব্যক্তির সাক্ষাৎকার ও প্রত্যক্ষ সহযোগিতা গ্রহণ করতে হয়েছিল তাঁকে। তাঁর প্রথম উল্লেখযোগ্য রচনাটিও ছিল ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে, যা ছিল তাঁর বাবা আবুল হাশিমের অনুরোধে লেখা ‘আমাদের ভাষার লড়াই’ শীর্ষক একটি পুস্তিকা।
গবেষণার নেপথ্যে: চ্যালেঞ্জ ও অধ্যবসায়
বদরুদ্দীন উমরের গবেষণামূলক কাজ ছিল অত্যন্ত শ্রমসাধ্য। ভাষা আন্দোলনের মতো একটি সংবেদনশীল বিষয়ে ইতিহাস লিখতে গিয়ে তিনি নানা সমস্যার সম্মুখীন হন। সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল লিখিত তথ্যসূত্রের অভাব এবং স্মৃতিচারণের বিভ্রান্তি। অনেক সময় দেখা গেছে, প্রত্যক্ষদর্শীরাও দুর্বল স্মৃতি বা ব্যক্তিগত স্বার্থের কারণে ভুল তথ্য দিয়েছেন। উদাহরণস্বরূপ, ১৯৪৮ সালের ২৪ মার্চ মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর সঙ্গে রাষ্ট্রভাষা কর্মপরিষদের সাক্ষাৎকারের ঘটনাটি যাচাই করতে গিয়ে তিনি দেখেন, আতাউর রহমান খান নিজেকে ওই সাক্ষাৎকারে উপস্থিত বলে দাবি করলেও অন্যান্য প্রত্যক্ষদর্শীর মাধ্যমে তা ভুল প্রমাণিত হয়। এসব সমস্যা সত্ত্বেও তিনি অকৃত্রিম নিষ্ঠা ও অধ্যবসায়ের সঙ্গে কাজ করে গেছেন।
তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে তিনি আধুনিক গবেষণা পদ্ধতি অনুসরণ করেন। তিনি সংবাদপত্র, বিভিন্ন আন্দোলন সম্পর্কিত পুস্তক-পুস্তিকা, পার্টি দলিলপত্র, ইশতেহার এবং তৎকালীন রাজনীতিবিদ ও আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ব্যাপক সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেন। সরকারি কোনো তথ্য উৎস থেকে খুব বেশি সাহায্য তিনি পাননি। তাঁর এই নিরলস পরিশ্রমের ফসল হিসেবেই বাংলা ভাষা আন্দোলন একটি সুসংবদ্ধ ঐতিহাসিক রূপ লাভ করে। তার গ্রন্থত্রয় সম্মিলিতভাবে একটি বিরাট জন-অঞ্চলের সামাজিক জীবনের গভীরতম দলিল, যা পূর্ব বাংলার উজ্জ্বল জীবন-নাট্যকে তুলে ধরে।
রাজনৈতিক দর্শন
বদরুদ্দীন উমর কেবল একজন ইতিহাসবিদ ছিলেন না, তাঁর রচনায় সমাজ, রাজনীতি এবং পার্টির অবিচ্ছিন্ন সম্পর্ক প্রাধান্য পেয়েছে। তাঁর লেখালেখির মূল লক্ষ্য ছিল সমাজের সার্বিক শোষণমুক্তির উদ্দেশ্যে আন্দোলন গড়ে তোলা। বিশ্লেষক হিসেবে তিনি ছিলেন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং তীক্ষ্ণ। তাঁর প্রতিটি গ্রন্থ বাংলাদেশের বুদ্ধিবৃত্তিক, রাজনৈতিক এবং সামাজিক বিকাশের জন্য একটি মূল্যবান দলিল।
একুশে ফেব্রুয়ারিকে তিনি কেবল ভাষার আন্দোলন হিসেবে দেখেননি, বরং এটিকে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক জীবনের বিকাশের সংগ্রাম হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। তাঁর মতে, ১৯৪৮ এবং ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন পূর্ব বাংলার রাজনীতির ক্ষেত্রে একটি মৌলিক পরিবর্তন এনেছিল, যা সাম্প্রদায়িক রাজনীতির গণবিরোধী চরিত্র সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করে তোলে। তাঁর মতে, ভাষা আন্দোলনই পাকিস্তানি নির্যাতনের বিরুদ্ধে সর্বপ্রথম ব্যাপক জাতীয় প্রতিরোধ। ভাষা আন্দোলনের ফলে বুর্জোয়া রাজনীতির সাম্প্রদায়িকতা ধর্মনিরপেক্ষতা লাভ করে এবং তা সামনে উঠে আসে।
তবে তিনি ভাষা আন্দোলনের কিছু দুর্বলতার দিকও তুলে ধরেছেন। যেমন, ভাষা আন্দোলনকে সমগ্র পাকিস্তানের সমস্যা হিসেবে দেখতে না পারা এবং এর সাম্রাজ্যবাদবিরোধী চরিত্রের অভাব। তাঁর মতে, ভাষা আন্দোলনের পরবর্তী পর্যায়গুলোতে এখানকার কমিউনিস্ট পার্টি এই আন্দোলনকে রাজনৈতিকভাবে উপস্থিত করতে ব্যর্থ হয়, কোনো শক্তিশালী সাহিত্যের জন্ম হয় না এবং এর ফসলকে শাসক-শোষকরাই ভোগ করে।
বদরুদ্দীন উমর তাঁর সহজ, অনাড়ম্বর এবং ধারালো গদ্যশৈলীর জন্য পরিচিত। তিনি বাংলা সাহিত্যের একজন অন্যতম শক্তিশালী গদ্যশিল্পী। তাঁর লেখালেখি, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড এবং শোষিত মানুষের মুক্তির জন্য তাঁর আপোসহীন সংগ্রাম তাঁকে চিরকাল স্মরণীয় করে রাখবে।
জীবনে কখনো পুরস্কার নেননি
বদরুদ্দীন উমরকে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে, কিন্তু তিনি কোনোটিই গ্রহণ করেননি। সর্বশেষ অন্তর্বর্তী সরকার তাঁকে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করলেও সেটিও তিনি প্রত্যাখ্যান করেছেন।
চলতি বছরের মার্চে স্বাধীনতা পুরস্কারের তালিকায় নাম ঘোষণা করলে এক বিবৃতিতে বদরুদ্দীন উমর বলেন, ‘১৯৭৩ সাল থেকে আমাকে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা থেকে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। আমি সেগুলোর কোনোটি গ্রহণ করিনি। এখন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার আমাকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা করেছে। এ জন্য তাদের ধন্যবাদ। কিন্তু তাদের দেওয়া এই পুরস্কারও আমার পক্ষে গ্রহণ করা সম্ভব নয়।’
এর আগে ১৯৭২ সালে বদরুদ্দীন উমরকে বাংলা একাডেমি পুরস্কার দেওয়া হয়, তবে তিনি তা তাৎক্ষণিক প্রত্যাখ্যান করেন। ১৯৭৪ সালে তিনি ইতিহাস পরিষদের পুরস্কার পান এবং তা প্রত্যাখ্যান করেন।
[১৯৮১ সালে সাপ্তাহিক বিচিত্রা পত্রিকার প্রচ্ছদ প্রতিবেদন অবলম্বনে]
আজকের পত্রিকা ডেস্ক

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব, লেখক, গবেষক এবং বাম ধারার বুদ্ধিজীবী বদরুদ্দীন উমর ৯৪ বছর বয়সে মারা গেছেন। আজ রোববার সকালে ঢাকার বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি। তাঁর প্রয়াণে দেশের প্রগতিশীল ও বুদ্ধিবৃত্তিক মহলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
জন্ম ও শিক্ষা
বদরুদ্দীন উমর ১৯৩১ সালের ২০ ডিসেম্বর ব্রিটিশ ভারতের বর্ধমান শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম আবুল হাশিম ও মাতার নাম মাহমুদা আখতার মেহেরবানু বেগম। পিতা আবুল হাশিম একজন রাজনীতিবিদ ছিলেন। দেশভাগের পর পূর্ব পাকিস্তানে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন এবং ১৯৫০ সালে ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। উমর ১৯৪৮ সালে বর্ধমান টাউন স্কুল থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯৫০ সালে তিনি বর্ধমান রাজ কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫৩ সালে স্নাতক সম্মান ডিগ্রি অর্জন করেন। দর্শন বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন ১৯৫৫ সালে। ১৯৬১ সালে তিনি যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শন, রাজনীতি ও অর্থনীতি (পিপিই) ডিগ্রি লাভ করেন।
অক্সফোর্ডে ডিগ্রি নিয়ে দেশে ফিরে আসেন এবং ১৯৬৩ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেন। গভর্নর মোনায়েম খানের স্বৈরতান্ত্রিক আচরণের প্রতিবাদে ১৯৬৮ সালে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা ছেড়ে রাজনীতি ও লেখালেখিতে আত্মনিয়োগ করেন। তাঁর লেখা ‘পূর্ববাঙলার ভাষা আন্দোলন ও তৎকালীন রাজনীতি’ ভাষা আন্দোলনের ওপর প্রথম গবেষণাগ্রন্থ।
শিক্ষক থেকে বুদ্ধিজীবী
বদরুদ্দীন উমর তাঁর পেশাজীবন শুরু করেছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে। পরবর্তীকালে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেন, যা তাঁর প্রাতিষ্ঠানিক অবদানের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। শিক্ষকতা জীবনের পাশাপাশি তাঁর রাজনৈতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক কর্মকাণ্ডের বিস্তার ছিল ব্যাপক। তিনি বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের সভাপতি এবং গণতান্ত্রিক বিপ্লবী জোটের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। একসময় পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটিতেও ছিলেন। ২০০৩ সালে তিনি জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল নামে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করে আমৃত্যু সেটির সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন।
ভাষা আন্দোলনের সাহিত্যিক স্থপতি
বদরুদ্দীন উমরের সর্বজনস্বীকৃত এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কৃতি হচ্ছে তিনটি বিশাল খণ্ডে রচিত ‘পূর্ব বাঙলার ভাষা আন্দোলন ও তৎকালীন রাজনীতি’ শীর্ষক গ্রন্থটি। এই গ্রন্থের মাধ্যমে তিনি ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসকে একটি সুসংহত সাহিত্যিক রূপ দিয়েছেন। রাজনৈতিক সাহিত্য রচনার ক্ষেত্রে বাঙালির মননজগতে বদরুদ্দীন উমরের স্থান বৈশিষ্ট্যপূর্ণ এবং স্বীকৃত। সাহিত্যিক শংকর তাঁকে ‘ভাষা আন্দোলনের কাশীরাম দাশ’ হিসেবে অভিহিত করে তাঁর এ অবদানের গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। আবুল কাসেম ফজলুল হক তাঁর সম্পর্কে লিখেছিলেন, বদরুদ্দীন উমর সম্ভবত সেই সৃষ্টিশীল ধারার পথিকৃৎ, যা বিগত কয়েক দশক ধরে ধীরে ধীরে দানা বাঁধছিল।
এই গ্রন্থ রচনার পটভূমি ছিল ব্যাপক ও গবেষণামূলক। ১৯৬০ সালে পূর্ব পাকিস্তানের সাধারণ ইতিহাস রচনার জন্য তথ্য সংগ্রহ শুরু করলেও পরে তিনি ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস লেখার সিদ্ধান্ত নেন। এই কাজ সম্পন্ন করতে তাঁকে প্রায় কুড়ি বছর (১৯৬৩-৮২) ব্যয় করতে হয়েছে এবং তিন সহস্রাধিক তথ্য-উৎস ব্যবহার করতে হয়েছে। প্রায় ২০০ ব্যক্তির সাক্ষাৎকার ও প্রত্যক্ষ সহযোগিতা গ্রহণ করতে হয়েছিল তাঁকে। তাঁর প্রথম উল্লেখযোগ্য রচনাটিও ছিল ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে, যা ছিল তাঁর বাবা আবুল হাশিমের অনুরোধে লেখা ‘আমাদের ভাষার লড়াই’ শীর্ষক একটি পুস্তিকা।
গবেষণার নেপথ্যে: চ্যালেঞ্জ ও অধ্যবসায়
বদরুদ্দীন উমরের গবেষণামূলক কাজ ছিল অত্যন্ত শ্রমসাধ্য। ভাষা আন্দোলনের মতো একটি সংবেদনশীল বিষয়ে ইতিহাস লিখতে গিয়ে তিনি নানা সমস্যার সম্মুখীন হন। সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল লিখিত তথ্যসূত্রের অভাব এবং স্মৃতিচারণের বিভ্রান্তি। অনেক সময় দেখা গেছে, প্রত্যক্ষদর্শীরাও দুর্বল স্মৃতি বা ব্যক্তিগত স্বার্থের কারণে ভুল তথ্য দিয়েছেন। উদাহরণস্বরূপ, ১৯৪৮ সালের ২৪ মার্চ মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর সঙ্গে রাষ্ট্রভাষা কর্মপরিষদের সাক্ষাৎকারের ঘটনাটি যাচাই করতে গিয়ে তিনি দেখেন, আতাউর রহমান খান নিজেকে ওই সাক্ষাৎকারে উপস্থিত বলে দাবি করলেও অন্যান্য প্রত্যক্ষদর্শীর মাধ্যমে তা ভুল প্রমাণিত হয়। এসব সমস্যা সত্ত্বেও তিনি অকৃত্রিম নিষ্ঠা ও অধ্যবসায়ের সঙ্গে কাজ করে গেছেন।
তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে তিনি আধুনিক গবেষণা পদ্ধতি অনুসরণ করেন। তিনি সংবাদপত্র, বিভিন্ন আন্দোলন সম্পর্কিত পুস্তক-পুস্তিকা, পার্টি দলিলপত্র, ইশতেহার এবং তৎকালীন রাজনীতিবিদ ও আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ব্যাপক সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেন। সরকারি কোনো তথ্য উৎস থেকে খুব বেশি সাহায্য তিনি পাননি। তাঁর এই নিরলস পরিশ্রমের ফসল হিসেবেই বাংলা ভাষা আন্দোলন একটি সুসংবদ্ধ ঐতিহাসিক রূপ লাভ করে। তার গ্রন্থত্রয় সম্মিলিতভাবে একটি বিরাট জন-অঞ্চলের সামাজিক জীবনের গভীরতম দলিল, যা পূর্ব বাংলার উজ্জ্বল জীবন-নাট্যকে তুলে ধরে।
রাজনৈতিক দর্শন
বদরুদ্দীন উমর কেবল একজন ইতিহাসবিদ ছিলেন না, তাঁর রচনায় সমাজ, রাজনীতি এবং পার্টির অবিচ্ছিন্ন সম্পর্ক প্রাধান্য পেয়েছে। তাঁর লেখালেখির মূল লক্ষ্য ছিল সমাজের সার্বিক শোষণমুক্তির উদ্দেশ্যে আন্দোলন গড়ে তোলা। বিশ্লেষক হিসেবে তিনি ছিলেন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং তীক্ষ্ণ। তাঁর প্রতিটি গ্রন্থ বাংলাদেশের বুদ্ধিবৃত্তিক, রাজনৈতিক এবং সামাজিক বিকাশের জন্য একটি মূল্যবান দলিল।
একুশে ফেব্রুয়ারিকে তিনি কেবল ভাষার আন্দোলন হিসেবে দেখেননি, বরং এটিকে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক জীবনের বিকাশের সংগ্রাম হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। তাঁর মতে, ১৯৪৮ এবং ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন পূর্ব বাংলার রাজনীতির ক্ষেত্রে একটি মৌলিক পরিবর্তন এনেছিল, যা সাম্প্রদায়িক রাজনীতির গণবিরোধী চরিত্র সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করে তোলে। তাঁর মতে, ভাষা আন্দোলনই পাকিস্তানি নির্যাতনের বিরুদ্ধে সর্বপ্রথম ব্যাপক জাতীয় প্রতিরোধ। ভাষা আন্দোলনের ফলে বুর্জোয়া রাজনীতির সাম্প্রদায়িকতা ধর্মনিরপেক্ষতা লাভ করে এবং তা সামনে উঠে আসে।
তবে তিনি ভাষা আন্দোলনের কিছু দুর্বলতার দিকও তুলে ধরেছেন। যেমন, ভাষা আন্দোলনকে সমগ্র পাকিস্তানের সমস্যা হিসেবে দেখতে না পারা এবং এর সাম্রাজ্যবাদবিরোধী চরিত্রের অভাব। তাঁর মতে, ভাষা আন্দোলনের পরবর্তী পর্যায়গুলোতে এখানকার কমিউনিস্ট পার্টি এই আন্দোলনকে রাজনৈতিকভাবে উপস্থিত করতে ব্যর্থ হয়, কোনো শক্তিশালী সাহিত্যের জন্ম হয় না এবং এর ফসলকে শাসক-শোষকরাই ভোগ করে।
বদরুদ্দীন উমর তাঁর সহজ, অনাড়ম্বর এবং ধারালো গদ্যশৈলীর জন্য পরিচিত। তিনি বাংলা সাহিত্যের একজন অন্যতম শক্তিশালী গদ্যশিল্পী। তাঁর লেখালেখি, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড এবং শোষিত মানুষের মুক্তির জন্য তাঁর আপোসহীন সংগ্রাম তাঁকে চিরকাল স্মরণীয় করে রাখবে।
জীবনে কখনো পুরস্কার নেননি
বদরুদ্দীন উমরকে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে, কিন্তু তিনি কোনোটিই গ্রহণ করেননি। সর্বশেষ অন্তর্বর্তী সরকার তাঁকে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করলেও সেটিও তিনি প্রত্যাখ্যান করেছেন।
চলতি বছরের মার্চে স্বাধীনতা পুরস্কারের তালিকায় নাম ঘোষণা করলে এক বিবৃতিতে বদরুদ্দীন উমর বলেন, ‘১৯৭৩ সাল থেকে আমাকে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা থেকে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। আমি সেগুলোর কোনোটি গ্রহণ করিনি। এখন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার আমাকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা করেছে। এ জন্য তাদের ধন্যবাদ। কিন্তু তাদের দেওয়া এই পুরস্কারও আমার পক্ষে গ্রহণ করা সম্ভব নয়।’
এর আগে ১৯৭২ সালে বদরুদ্দীন উমরকে বাংলা একাডেমি পুরস্কার দেওয়া হয়, তবে তিনি তা তাৎক্ষণিক প্রত্যাখ্যান করেন। ১৯৭৪ সালে তিনি ইতিহাস পরিষদের পুরস্কার পান এবং তা প্রত্যাখ্যান করেন।
[১৯৮১ সালে সাপ্তাহিক বিচিত্রা পত্রিকার প্রচ্ছদ প্রতিবেদন অবলম্বনে]

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব, লেখক, গবেষক এবং বাম ধারার বুদ্ধিজীবী বদরুদ্দীন উমর ৯৪ বছর বয়সে মারা গেছেন। আজ রোববার সকালে ঢাকার বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি। তাঁর প্রয়াণে দেশের প্রগতিশীল ও বুদ্ধিবৃত্তিক মহলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
জন্ম ও শিক্ষা
বদরুদ্দীন উমর ১৯৩১ সালের ২০ ডিসেম্বর ব্রিটিশ ভারতের বর্ধমান শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম আবুল হাশিম ও মাতার নাম মাহমুদা আখতার মেহেরবানু বেগম। পিতা আবুল হাশিম একজন রাজনীতিবিদ ছিলেন। দেশভাগের পর পূর্ব পাকিস্তানে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন এবং ১৯৫০ সালে ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। উমর ১৯৪৮ সালে বর্ধমান টাউন স্কুল থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯৫০ সালে তিনি বর্ধমান রাজ কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫৩ সালে স্নাতক সম্মান ডিগ্রি অর্জন করেন। দর্শন বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন ১৯৫৫ সালে। ১৯৬১ সালে তিনি যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শন, রাজনীতি ও অর্থনীতি (পিপিই) ডিগ্রি লাভ করেন।
অক্সফোর্ডে ডিগ্রি নিয়ে দেশে ফিরে আসেন এবং ১৯৬৩ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেন। গভর্নর মোনায়েম খানের স্বৈরতান্ত্রিক আচরণের প্রতিবাদে ১৯৬৮ সালে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা ছেড়ে রাজনীতি ও লেখালেখিতে আত্মনিয়োগ করেন। তাঁর লেখা ‘পূর্ববাঙলার ভাষা আন্দোলন ও তৎকালীন রাজনীতি’ ভাষা আন্দোলনের ওপর প্রথম গবেষণাগ্রন্থ।
শিক্ষক থেকে বুদ্ধিজীবী
বদরুদ্দীন উমর তাঁর পেশাজীবন শুরু করেছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে। পরবর্তীকালে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেন, যা তাঁর প্রাতিষ্ঠানিক অবদানের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। শিক্ষকতা জীবনের পাশাপাশি তাঁর রাজনৈতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক কর্মকাণ্ডের বিস্তার ছিল ব্যাপক। তিনি বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের সভাপতি এবং গণতান্ত্রিক বিপ্লবী জোটের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। একসময় পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটিতেও ছিলেন। ২০০৩ সালে তিনি জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল নামে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করে আমৃত্যু সেটির সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন।
ভাষা আন্দোলনের সাহিত্যিক স্থপতি
বদরুদ্দীন উমরের সর্বজনস্বীকৃত এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কৃতি হচ্ছে তিনটি বিশাল খণ্ডে রচিত ‘পূর্ব বাঙলার ভাষা আন্দোলন ও তৎকালীন রাজনীতি’ শীর্ষক গ্রন্থটি। এই গ্রন্থের মাধ্যমে তিনি ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসকে একটি সুসংহত সাহিত্যিক রূপ দিয়েছেন। রাজনৈতিক সাহিত্য রচনার ক্ষেত্রে বাঙালির মননজগতে বদরুদ্দীন উমরের স্থান বৈশিষ্ট্যপূর্ণ এবং স্বীকৃত। সাহিত্যিক শংকর তাঁকে ‘ভাষা আন্দোলনের কাশীরাম দাশ’ হিসেবে অভিহিত করে তাঁর এ অবদানের গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। আবুল কাসেম ফজলুল হক তাঁর সম্পর্কে লিখেছিলেন, বদরুদ্দীন উমর সম্ভবত সেই সৃষ্টিশীল ধারার পথিকৃৎ, যা বিগত কয়েক দশক ধরে ধীরে ধীরে দানা বাঁধছিল।
এই গ্রন্থ রচনার পটভূমি ছিল ব্যাপক ও গবেষণামূলক। ১৯৬০ সালে পূর্ব পাকিস্তানের সাধারণ ইতিহাস রচনার জন্য তথ্য সংগ্রহ শুরু করলেও পরে তিনি ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস লেখার সিদ্ধান্ত নেন। এই কাজ সম্পন্ন করতে তাঁকে প্রায় কুড়ি বছর (১৯৬৩-৮২) ব্যয় করতে হয়েছে এবং তিন সহস্রাধিক তথ্য-উৎস ব্যবহার করতে হয়েছে। প্রায় ২০০ ব্যক্তির সাক্ষাৎকার ও প্রত্যক্ষ সহযোগিতা গ্রহণ করতে হয়েছিল তাঁকে। তাঁর প্রথম উল্লেখযোগ্য রচনাটিও ছিল ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে, যা ছিল তাঁর বাবা আবুল হাশিমের অনুরোধে লেখা ‘আমাদের ভাষার লড়াই’ শীর্ষক একটি পুস্তিকা।
গবেষণার নেপথ্যে: চ্যালেঞ্জ ও অধ্যবসায়
বদরুদ্দীন উমরের গবেষণামূলক কাজ ছিল অত্যন্ত শ্রমসাধ্য। ভাষা আন্দোলনের মতো একটি সংবেদনশীল বিষয়ে ইতিহাস লিখতে গিয়ে তিনি নানা সমস্যার সম্মুখীন হন। সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল লিখিত তথ্যসূত্রের অভাব এবং স্মৃতিচারণের বিভ্রান্তি। অনেক সময় দেখা গেছে, প্রত্যক্ষদর্শীরাও দুর্বল স্মৃতি বা ব্যক্তিগত স্বার্থের কারণে ভুল তথ্য দিয়েছেন। উদাহরণস্বরূপ, ১৯৪৮ সালের ২৪ মার্চ মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর সঙ্গে রাষ্ট্রভাষা কর্মপরিষদের সাক্ষাৎকারের ঘটনাটি যাচাই করতে গিয়ে তিনি দেখেন, আতাউর রহমান খান নিজেকে ওই সাক্ষাৎকারে উপস্থিত বলে দাবি করলেও অন্যান্য প্রত্যক্ষদর্শীর মাধ্যমে তা ভুল প্রমাণিত হয়। এসব সমস্যা সত্ত্বেও তিনি অকৃত্রিম নিষ্ঠা ও অধ্যবসায়ের সঙ্গে কাজ করে গেছেন।
তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে তিনি আধুনিক গবেষণা পদ্ধতি অনুসরণ করেন। তিনি সংবাদপত্র, বিভিন্ন আন্দোলন সম্পর্কিত পুস্তক-পুস্তিকা, পার্টি দলিলপত্র, ইশতেহার এবং তৎকালীন রাজনীতিবিদ ও আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ব্যাপক সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেন। সরকারি কোনো তথ্য উৎস থেকে খুব বেশি সাহায্য তিনি পাননি। তাঁর এই নিরলস পরিশ্রমের ফসল হিসেবেই বাংলা ভাষা আন্দোলন একটি সুসংবদ্ধ ঐতিহাসিক রূপ লাভ করে। তার গ্রন্থত্রয় সম্মিলিতভাবে একটি বিরাট জন-অঞ্চলের সামাজিক জীবনের গভীরতম দলিল, যা পূর্ব বাংলার উজ্জ্বল জীবন-নাট্যকে তুলে ধরে।
রাজনৈতিক দর্শন
বদরুদ্দীন উমর কেবল একজন ইতিহাসবিদ ছিলেন না, তাঁর রচনায় সমাজ, রাজনীতি এবং পার্টির অবিচ্ছিন্ন সম্পর্ক প্রাধান্য পেয়েছে। তাঁর লেখালেখির মূল লক্ষ্য ছিল সমাজের সার্বিক শোষণমুক্তির উদ্দেশ্যে আন্দোলন গড়ে তোলা। বিশ্লেষক হিসেবে তিনি ছিলেন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং তীক্ষ্ণ। তাঁর প্রতিটি গ্রন্থ বাংলাদেশের বুদ্ধিবৃত্তিক, রাজনৈতিক এবং সামাজিক বিকাশের জন্য একটি মূল্যবান দলিল।
একুশে ফেব্রুয়ারিকে তিনি কেবল ভাষার আন্দোলন হিসেবে দেখেননি, বরং এটিকে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক জীবনের বিকাশের সংগ্রাম হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। তাঁর মতে, ১৯৪৮ এবং ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন পূর্ব বাংলার রাজনীতির ক্ষেত্রে একটি মৌলিক পরিবর্তন এনেছিল, যা সাম্প্রদায়িক রাজনীতির গণবিরোধী চরিত্র সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করে তোলে। তাঁর মতে, ভাষা আন্দোলনই পাকিস্তানি নির্যাতনের বিরুদ্ধে সর্বপ্রথম ব্যাপক জাতীয় প্রতিরোধ। ভাষা আন্দোলনের ফলে বুর্জোয়া রাজনীতির সাম্প্রদায়িকতা ধর্মনিরপেক্ষতা লাভ করে এবং তা সামনে উঠে আসে।
তবে তিনি ভাষা আন্দোলনের কিছু দুর্বলতার দিকও তুলে ধরেছেন। যেমন, ভাষা আন্দোলনকে সমগ্র পাকিস্তানের সমস্যা হিসেবে দেখতে না পারা এবং এর সাম্রাজ্যবাদবিরোধী চরিত্রের অভাব। তাঁর মতে, ভাষা আন্দোলনের পরবর্তী পর্যায়গুলোতে এখানকার কমিউনিস্ট পার্টি এই আন্দোলনকে রাজনৈতিকভাবে উপস্থিত করতে ব্যর্থ হয়, কোনো শক্তিশালী সাহিত্যের জন্ম হয় না এবং এর ফসলকে শাসক-শোষকরাই ভোগ করে।
বদরুদ্দীন উমর তাঁর সহজ, অনাড়ম্বর এবং ধারালো গদ্যশৈলীর জন্য পরিচিত। তিনি বাংলা সাহিত্যের একজন অন্যতম শক্তিশালী গদ্যশিল্পী। তাঁর লেখালেখি, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড এবং শোষিত মানুষের মুক্তির জন্য তাঁর আপোসহীন সংগ্রাম তাঁকে চিরকাল স্মরণীয় করে রাখবে।
জীবনে কখনো পুরস্কার নেননি
বদরুদ্দীন উমরকে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে, কিন্তু তিনি কোনোটিই গ্রহণ করেননি। সর্বশেষ অন্তর্বর্তী সরকার তাঁকে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করলেও সেটিও তিনি প্রত্যাখ্যান করেছেন।
চলতি বছরের মার্চে স্বাধীনতা পুরস্কারের তালিকায় নাম ঘোষণা করলে এক বিবৃতিতে বদরুদ্দীন উমর বলেন, ‘১৯৭৩ সাল থেকে আমাকে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা থেকে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। আমি সেগুলোর কোনোটি গ্রহণ করিনি। এখন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার আমাকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা করেছে। এ জন্য তাদের ধন্যবাদ। কিন্তু তাদের দেওয়া এই পুরস্কারও আমার পক্ষে গ্রহণ করা সম্ভব নয়।’
এর আগে ১৯৭২ সালে বদরুদ্দীন উমরকে বাংলা একাডেমি পুরস্কার দেওয়া হয়, তবে তিনি তা তাৎক্ষণিক প্রত্যাখ্যান করেন। ১৯৭৪ সালে তিনি ইতিহাস পরিষদের পুরস্কার পান এবং তা প্রত্যাখ্যান করেন।
[১৯৮১ সালে সাপ্তাহিক বিচিত্রা পত্রিকার প্রচ্ছদ প্রতিবেদন অবলম্বনে]

কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম ও চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় খেলা করার সময় পানিতে পড়ে ছয় শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। আজ শুক্রবার অষ্টগ্রাম উপজেলার দেওঘর ইউনিয়ন ও রাঙ্গুনিয়ার পারুয়া ইউনিয়নে ঘটনা দুটি ঘটে। এতে ওইসব এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
১৪ ঘণ্টা আগে
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে আজ বেলা ৩টার দিকে ‘চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েট পরিষদ’-এর ব্যানারে পদযাত্রা শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। শাহবাগ থানার সামনে পৌঁছালে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে তা আটকে দেয়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে পুলিশ তাঁদের সড়ক থেকে....
১৬ ঘণ্টা আগে
কক্সবাজার অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে ঘোষণা করে জারি করা প্রজ্ঞাপন স্থগিত করেছে সরকার। ফলে আপাতত কক্সবাজার থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা শুরু হচ্ছে না।
১৮ ঘণ্টা আগে
আজ শুক্রবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ দৃঢ়ভাবে পুনর্ব্যক্ত করছে যে, পূর্ব জেরুজালেমসহ দখল করা ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের কোনো অংশে ইসরায়েলের কোনো সার্বভৌমত্ব নেই।
১৯ ঘণ্টা আগেঅষ্টগ্রাম (কিশোরগঞ্জ) ও রাঙ্গুনিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম ও চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় খেলা করার সময় পানিতে পড়ে ছয় শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। আজ শুক্রবার অষ্টগ্রাম উপজেলার দেওঘর ইউনিয়ন ও রাঙ্গুনিয়ার পারুয়া ইউনিয়নে ঘটনা দুটি ঘটে। এতে ওইসব এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
আজ বিকেলে অষ্টগ্রাম উপজেলার দেওঘর ইউনিয়নের পশ্চিম আলীনগর এলাকায় বাড়িসংলগ্ন বিলের পাশে খেলা করছিল মিশকাত (৫), মাহিন (৬) ও সাত্তার তানিল মিয়া (৫)। হঠাৎ সবার অজান্তে তিন শিশু বিলে পড়ে ডুবে যায়।
খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে বিল থেকে মিশকাত ও মাহিনকে উদ্ধার করা হয়। পরে অষ্টগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। সন্ধ্যা ৭টার দিকে খবর পেয়ে অষ্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা গিয়ে ঘটনাস্থল থেকে অপর শিশু তানিলের মরদেহ উদ্ধার করে।
এ বিষয়ে মাহিনের চাচা মোবারক হোসেন বলেন, প্রতিদিনের মতো তিন শিশু খেলাধুলা করছিল। কিন্তু কখন যে বিলের পানিতে ডুবে গেল, কেউ বোঝেনি। পরে তাদের দেখতে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি করে পানিতে প্রথমে দুজন, পরে অন্যজনকে পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে দেওঘর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আক্তার হোসেন বলেন, দুঃখজনক খবর, একই বাড়ির তিনটা শিশুর মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
অপর দিকে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পারুয়া ইউনিয়নে একই দিন বিকেলে উত্তর পারুয়া গ্রামের একটি পুকুরে পড়ে মারা যায় তিন শিশু। তারা হলো সুমাইয়া আক্তার (৫), হাবীবা আক্তার (৬) ও জান্নাত আক্তার (৫)।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বিকেলে খেলার ছলে তারা তিনজনই বাড়ির পাশে পুকুরে যায়। কিছুক্ষণ পর না পেয়ে পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজি শুরু করে। পরে পুকুরে ভাসমান অবস্থায় তাদের মরদেহ উদ্ধার করে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে পারুয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান একতেহার হোসেন বলেন, ‘তিনটি নিষ্পাপ শিশুর এমন মৃত্যুর ঘটনা আমাদের সবাইকে স্তব্ধ করে দিয়েছে। পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।’

কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম ও চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় খেলা করার সময় পানিতে পড়ে ছয় শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। আজ শুক্রবার অষ্টগ্রাম উপজেলার দেওঘর ইউনিয়ন ও রাঙ্গুনিয়ার পারুয়া ইউনিয়নে ঘটনা দুটি ঘটে। এতে ওইসব এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
আজ বিকেলে অষ্টগ্রাম উপজেলার দেওঘর ইউনিয়নের পশ্চিম আলীনগর এলাকায় বাড়িসংলগ্ন বিলের পাশে খেলা করছিল মিশকাত (৫), মাহিন (৬) ও সাত্তার তানিল মিয়া (৫)। হঠাৎ সবার অজান্তে তিন শিশু বিলে পড়ে ডুবে যায়।
খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে বিল থেকে মিশকাত ও মাহিনকে উদ্ধার করা হয়। পরে অষ্টগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। সন্ধ্যা ৭টার দিকে খবর পেয়ে অষ্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা গিয়ে ঘটনাস্থল থেকে অপর শিশু তানিলের মরদেহ উদ্ধার করে।
এ বিষয়ে মাহিনের চাচা মোবারক হোসেন বলেন, প্রতিদিনের মতো তিন শিশু খেলাধুলা করছিল। কিন্তু কখন যে বিলের পানিতে ডুবে গেল, কেউ বোঝেনি। পরে তাদের দেখতে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি করে পানিতে প্রথমে দুজন, পরে অন্যজনকে পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে দেওঘর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আক্তার হোসেন বলেন, দুঃখজনক খবর, একই বাড়ির তিনটা শিশুর মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
অপর দিকে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পারুয়া ইউনিয়নে একই দিন বিকেলে উত্তর পারুয়া গ্রামের একটি পুকুরে পড়ে মারা যায় তিন শিশু। তারা হলো সুমাইয়া আক্তার (৫), হাবীবা আক্তার (৬) ও জান্নাত আক্তার (৫)।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বিকেলে খেলার ছলে তারা তিনজনই বাড়ির পাশে পুকুরে যায়। কিছুক্ষণ পর না পেয়ে পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজি শুরু করে। পরে পুকুরে ভাসমান অবস্থায় তাদের মরদেহ উদ্ধার করে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে পারুয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান একতেহার হোসেন বলেন, ‘তিনটি নিষ্পাপ শিশুর এমন মৃত্যুর ঘটনা আমাদের সবাইকে স্তব্ধ করে দিয়েছে। পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।’

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব, লেখক, গবেষক এবং বাম ধারার বুদ্ধিজীবী বদরুদ্দীন উমর ৯৪ বছর বয়সে মারা গেছেন। আজ রোববার সকালে ঢাকার বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি। তাঁর প্রয়াণে...
০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে আজ বেলা ৩টার দিকে ‘চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েট পরিষদ’-এর ব্যানারে পদযাত্রা শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। শাহবাগ থানার সামনে পৌঁছালে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে তা আটকে দেয়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে পুলিশ তাঁদের সড়ক থেকে....
১৬ ঘণ্টা আগে
কক্সবাজার অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে ঘোষণা করে জারি করা প্রজ্ঞাপন স্থগিত করেছে সরকার। ফলে আপাতত কক্সবাজার থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা শুরু হচ্ছে না।
১৮ ঘণ্টা আগে
আজ শুক্রবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ দৃঢ়ভাবে পুনর্ব্যক্ত করছে যে, পূর্ব জেরুজালেমসহ দখল করা ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের কোনো অংশে ইসরায়েলের কোনো সার্বভৌমত্ব নেই।
১৯ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানো, বিশেষ নিয়োগব্যবস্থা, স্বতন্ত্র কোটা সংরক্ষণসহ পাঁচ দফা দাবিতে আজ শুক্রবার আবারও যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা করেছেন চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েটরা। তবে গতকাল বৃহস্পতিবারের মতো আজও তাঁদের পদযাত্রা শাহবাগ থানার সামনে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে আজ বেলা ৩টার দিকে ‘চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েট পরিষদ’-এর ব্যানারে পদযাত্রা শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। শাহবাগ থানার সামনে পৌঁছালে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে তা আটকে দেয়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে পুলিশ তাঁদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়।
এর আগে গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজু ভাস্কর্য থেকে যমুনা অভিমুখে থালাবাটি নিয়ে ভুখা মিছিল করেন প্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েটরা। শাহবাগ থানার সামনে মিছিলটি পুলিশ আটকে দিলে সেখানেই বিক্ষোভ করেন তাঁরা। একপর্যায়ে সেখান থেকে তাঁদের সরিয়ে দেওয়া হয়।
গত রোববার থেকে পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলন করা চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধীদের ভাষ্য, শিক্ষিত, যোগ্য ও কর্মক্ষম যুব প্রতিবন্ধীরা দীর্ঘদিন ধরে কর্মসংস্থান থেকে বঞ্চিত। ২০১৮ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে ন্যায্য অধিকারের দাবি জানিয়ে আসছেন তাঁরা। তবে এখনো কর্মসংস্থানে অন্তর্ভুক্তি ও প্রতিবন্ধী কোটা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা হয়নি।
চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েট পরিষদের সদস্যসচিব আলিফ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পাঁচ দফা দাবিতে গত রোববার শাহবাগে অবস্থান করে যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা করা হয়। সেদিন পুলিশ আমাদের আটকে দেয়। এরপর সমাজকল্যাণ উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আমাদের দাবি জানানো হয়। তাঁর কাছ থেকে কোনো সমাধান না পেয়ে আমরা বেশ কয়েকবার যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা করি, কিন্তু পুলিশ আমাদের ব্যারিকেড দিয়ে আটকে রাখে।’
আলিফ হোসেন আরও বলেন, ‘আজও শাহবাগ থানার সামনে আমাদের পদযাত্রা আটকে দেওয়া হয় এবং বেশ কয়েকজনকে পুলিশ মারধরও করেছে।’
এ বিষয়ে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ খালিদ মনসুর বলেন, প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন এলাকায় সভা-সমাবেশ করা নিষেধ। তাই চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধীরা দাবিদাওয়া নিয়ে যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা করায় তাঁদের আটকে দেওয়া হয়েছে।
চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধীদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে—
১. প্রতিবন্ধিতার ধরন অনুযায়ী বেকার, শিক্ষিত প্রতিবন্ধীদের জন্য প্রধান উপদেষ্টার নির্বাহী আদেশে বিশেষ নিয়োগ দিতে হবে।
২. প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে ২ শতাংশ এবং তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণিতে ৫ শতাংশ স্বতন্ত্র প্রতিবন্ধী কোটা সংরক্ষণ ও বাস্তবায়ন করতে হবে।
৩. দৃষ্টি বা শারীরিক প্রতিবন্ধীরা নিজেদের পছন্দমতো শ্রুতিলেখক (বিকল্প সহকারী) মনোনয়নের স্বাধীনতা পাবেন—এমনভাবে নীতিমালা হালনাগাদ করতে হবে।
৪. সমাজসেবা অধিদপ্তর এবং সংশ্লিষ্ট শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য নির্দিষ্ট পদসংখ্যায় নিশ্চিত নিয়োগ দিতে হবে।
৫. প্রতিবন্ধী প্রার্থীদের সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছরে উন্নীত করতে হবে। সাধারণ প্রার্থীদের ক্ষেত্রে ৩৫ হলে তা ৩৭ বছর করতে হবে।

সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানো, বিশেষ নিয়োগব্যবস্থা, স্বতন্ত্র কোটা সংরক্ষণসহ পাঁচ দফা দাবিতে আজ শুক্রবার আবারও যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা করেছেন চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েটরা। তবে গতকাল বৃহস্পতিবারের মতো আজও তাঁদের পদযাত্রা শাহবাগ থানার সামনে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে আজ বেলা ৩টার দিকে ‘চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েট পরিষদ’-এর ব্যানারে পদযাত্রা শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। শাহবাগ থানার সামনে পৌঁছালে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে তা আটকে দেয়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে পুলিশ তাঁদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়।
এর আগে গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজু ভাস্কর্য থেকে যমুনা অভিমুখে থালাবাটি নিয়ে ভুখা মিছিল করেন প্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েটরা। শাহবাগ থানার সামনে মিছিলটি পুলিশ আটকে দিলে সেখানেই বিক্ষোভ করেন তাঁরা। একপর্যায়ে সেখান থেকে তাঁদের সরিয়ে দেওয়া হয়।
গত রোববার থেকে পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলন করা চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধীদের ভাষ্য, শিক্ষিত, যোগ্য ও কর্মক্ষম যুব প্রতিবন্ধীরা দীর্ঘদিন ধরে কর্মসংস্থান থেকে বঞ্চিত। ২০১৮ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে ন্যায্য অধিকারের দাবি জানিয়ে আসছেন তাঁরা। তবে এখনো কর্মসংস্থানে অন্তর্ভুক্তি ও প্রতিবন্ধী কোটা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা হয়নি।
চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েট পরিষদের সদস্যসচিব আলিফ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পাঁচ দফা দাবিতে গত রোববার শাহবাগে অবস্থান করে যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা করা হয়। সেদিন পুলিশ আমাদের আটকে দেয়। এরপর সমাজকল্যাণ উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আমাদের দাবি জানানো হয়। তাঁর কাছ থেকে কোনো সমাধান না পেয়ে আমরা বেশ কয়েকবার যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা করি, কিন্তু পুলিশ আমাদের ব্যারিকেড দিয়ে আটকে রাখে।’
আলিফ হোসেন আরও বলেন, ‘আজও শাহবাগ থানার সামনে আমাদের পদযাত্রা আটকে দেওয়া হয় এবং বেশ কয়েকজনকে পুলিশ মারধরও করেছে।’
এ বিষয়ে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ খালিদ মনসুর বলেন, প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন এলাকায় সভা-সমাবেশ করা নিষেধ। তাই চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধীরা দাবিদাওয়া নিয়ে যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা করায় তাঁদের আটকে দেওয়া হয়েছে।
চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধীদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে—
১. প্রতিবন্ধিতার ধরন অনুযায়ী বেকার, শিক্ষিত প্রতিবন্ধীদের জন্য প্রধান উপদেষ্টার নির্বাহী আদেশে বিশেষ নিয়োগ দিতে হবে।
২. প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে ২ শতাংশ এবং তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণিতে ৫ শতাংশ স্বতন্ত্র প্রতিবন্ধী কোটা সংরক্ষণ ও বাস্তবায়ন করতে হবে।
৩. দৃষ্টি বা শারীরিক প্রতিবন্ধীরা নিজেদের পছন্দমতো শ্রুতিলেখক (বিকল্প সহকারী) মনোনয়নের স্বাধীনতা পাবেন—এমনভাবে নীতিমালা হালনাগাদ করতে হবে।
৪. সমাজসেবা অধিদপ্তর এবং সংশ্লিষ্ট শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য নির্দিষ্ট পদসংখ্যায় নিশ্চিত নিয়োগ দিতে হবে।
৫. প্রতিবন্ধী প্রার্থীদের সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছরে উন্নীত করতে হবে। সাধারণ প্রার্থীদের ক্ষেত্রে ৩৫ হলে তা ৩৭ বছর করতে হবে।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব, লেখক, গবেষক এবং বাম ধারার বুদ্ধিজীবী বদরুদ্দীন উমর ৯৪ বছর বয়সে মারা গেছেন। আজ রোববার সকালে ঢাকার বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি। তাঁর প্রয়াণে...
০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম ও চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় খেলা করার সময় পানিতে পড়ে ছয় শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। আজ শুক্রবার অষ্টগ্রাম উপজেলার দেওঘর ইউনিয়ন ও রাঙ্গুনিয়ার পারুয়া ইউনিয়নে ঘটনা দুটি ঘটে। এতে ওইসব এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
১৪ ঘণ্টা আগে
কক্সবাজার অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে ঘোষণা করে জারি করা প্রজ্ঞাপন স্থগিত করেছে সরকার। ফলে আপাতত কক্সবাজার থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা শুরু হচ্ছে না।
১৮ ঘণ্টা আগে
আজ শুক্রবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ দৃঢ়ভাবে পুনর্ব্যক্ত করছে যে, পূর্ব জেরুজালেমসহ দখল করা ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের কোনো অংশে ইসরায়েলের কোনো সার্বভৌমত্ব নেই।
১৯ ঘণ্টা আগেবিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা

কক্সবাজার অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে ঘোষণা করে জারি করা প্রজ্ঞাপন স্থগিত করেছে সরকার। ফলে আপাতত কক্সবাজার থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা শুরু হচ্ছে না।
আজ শুক্রবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার বিমানবন্দরের আন্তর্জাতিক বিমান উড্ডয়ন কমিটির সভাপতি ও বিমানবন্দর পরিচালক এয়ার কমোডর মো. নুর-ই-আজম।
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) সূত্রে জানা গেছে, সরকারের পক্ষ থেকে বিমানবন্দরটিকে আন্তর্জাতিক ঘোষণা করার প্রজ্ঞাপন স্থগিত করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত আগের মতোই অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট পরিচালনা চলবে।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে ঘোষণা করে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছিল। এর মাধ্যমে কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালুর প্রাথমিক প্রস্তুতি শুরু হয়।
বিমানবন্দরসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, অবকাঠামোগত ও প্রশাসনিক কিছু প্রস্তুতি সম্পূর্ণ না হওয়ায় সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
উল্লেখ্য, দেশের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন নগরী কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালুর উদ্যোগ পর্যটন খাতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দেবে বলে আশা করা হচ্ছিল। বিশেষ করে, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও ভারতের সঙ্গে সরাসরি আকাশপথে সংযোগের পরিকল্পনাও ছিল সরকারের।

কক্সবাজার অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে ঘোষণা করে জারি করা প্রজ্ঞাপন স্থগিত করেছে সরকার। ফলে আপাতত কক্সবাজার থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা শুরু হচ্ছে না।
আজ শুক্রবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার বিমানবন্দরের আন্তর্জাতিক বিমান উড্ডয়ন কমিটির সভাপতি ও বিমানবন্দর পরিচালক এয়ার কমোডর মো. নুর-ই-আজম।
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) সূত্রে জানা গেছে, সরকারের পক্ষ থেকে বিমানবন্দরটিকে আন্তর্জাতিক ঘোষণা করার প্রজ্ঞাপন স্থগিত করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত আগের মতোই অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট পরিচালনা চলবে।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে ঘোষণা করে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছিল। এর মাধ্যমে কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালুর প্রাথমিক প্রস্তুতি শুরু হয়।
বিমানবন্দরসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, অবকাঠামোগত ও প্রশাসনিক কিছু প্রস্তুতি সম্পূর্ণ না হওয়ায় সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
উল্লেখ্য, দেশের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন নগরী কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালুর উদ্যোগ পর্যটন খাতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দেবে বলে আশা করা হচ্ছিল। বিশেষ করে, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও ভারতের সঙ্গে সরাসরি আকাশপথে সংযোগের পরিকল্পনাও ছিল সরকারের।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব, লেখক, গবেষক এবং বাম ধারার বুদ্ধিজীবী বদরুদ্দীন উমর ৯৪ বছর বয়সে মারা গেছেন। আজ রোববার সকালে ঢাকার বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি। তাঁর প্রয়াণে...
০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম ও চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় খেলা করার সময় পানিতে পড়ে ছয় শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। আজ শুক্রবার অষ্টগ্রাম উপজেলার দেওঘর ইউনিয়ন ও রাঙ্গুনিয়ার পারুয়া ইউনিয়নে ঘটনা দুটি ঘটে। এতে ওইসব এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
১৪ ঘণ্টা আগে
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে আজ বেলা ৩টার দিকে ‘চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েট পরিষদ’-এর ব্যানারে পদযাত্রা শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। শাহবাগ থানার সামনে পৌঁছালে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে তা আটকে দেয়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে পুলিশ তাঁদের সড়ক থেকে....
১৬ ঘণ্টা আগে
আজ শুক্রবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ দৃঢ়ভাবে পুনর্ব্যক্ত করছে যে, পূর্ব জেরুজালেমসহ দখল করা ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের কোনো অংশে ইসরায়েলের কোনো সার্বভৌমত্ব নেই।
১৯ ঘণ্টা আগেবাসস, ঢাকা

ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরকে ইসরায়েলের সঙ্গে যুক্ত করতে সম্প্রতি খসড়া আইন অনুমোদন দিয়েছে দেশটির পার্লামেন্ট নেসেট।
তথাকথিত ‘ইসরায়েলি সার্বভৌমত্ব’ আরোপের নামে এই আইনের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ।
আজ শুক্রবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ দৃঢ়ভাবে পুনর্ব্যক্ত করছে যে, পূর্ব জেরুজালেমসহ দখল করা ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের কোনো অংশে ইসরায়েলের কোনো সার্বভৌমত্ব নেই।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ইসরায়েল পশ্চিম তীরে অবৈধ বসতি সম্প্রসারণের মাধ্যমে বেআইনি দখলদারি চালিয়ে যাচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক আইন, জাতিসংঘ সনদ ও নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব, বিশেষ করে রেজল্যুশন ২৩৩৪-এর স্পষ্ট লঙ্ঘন।
২২ অক্টোবর আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) দেওয়া অ্যাডভাইজরি ওপিনিয়ন বা পরামর্শমূলক মতামতকে স্বাগত জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
ওই মতামতে আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের অধীনে ইসরায়েলের বাধ্যবাধকতাগুলো তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, সাধারণ জনগণকে, ক্ষুধাকে যুদ্ধাস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা নিষিদ্ধ।
বিবৃতিতে ফিলিস্তিনি জনগণের অবিচ্ছেদ্য অধিকার, তাদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার এবং ১৯৬৭ সালের আগের সীমানার ভিত্তিতে পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পক্ষে সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছে বাংলাদেশ।

ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরকে ইসরায়েলের সঙ্গে যুক্ত করতে সম্প্রতি খসড়া আইন অনুমোদন দিয়েছে দেশটির পার্লামেন্ট নেসেট।
তথাকথিত ‘ইসরায়েলি সার্বভৌমত্ব’ আরোপের নামে এই আইনের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ।
আজ শুক্রবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ দৃঢ়ভাবে পুনর্ব্যক্ত করছে যে, পূর্ব জেরুজালেমসহ দখল করা ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের কোনো অংশে ইসরায়েলের কোনো সার্বভৌমত্ব নেই।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ইসরায়েল পশ্চিম তীরে অবৈধ বসতি সম্প্রসারণের মাধ্যমে বেআইনি দখলদারি চালিয়ে যাচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক আইন, জাতিসংঘ সনদ ও নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব, বিশেষ করে রেজল্যুশন ২৩৩৪-এর স্পষ্ট লঙ্ঘন।
২২ অক্টোবর আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) দেওয়া অ্যাডভাইজরি ওপিনিয়ন বা পরামর্শমূলক মতামতকে স্বাগত জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
ওই মতামতে আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের অধীনে ইসরায়েলের বাধ্যবাধকতাগুলো তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, সাধারণ জনগণকে, ক্ষুধাকে যুদ্ধাস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা নিষিদ্ধ।
বিবৃতিতে ফিলিস্তিনি জনগণের অবিচ্ছেদ্য অধিকার, তাদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার এবং ১৯৬৭ সালের আগের সীমানার ভিত্তিতে পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পক্ষে সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব, লেখক, গবেষক এবং বাম ধারার বুদ্ধিজীবী বদরুদ্দীন উমর ৯৪ বছর বয়সে মারা গেছেন। আজ রোববার সকালে ঢাকার বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি। তাঁর প্রয়াণে...
০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম ও চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় খেলা করার সময় পানিতে পড়ে ছয় শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। আজ শুক্রবার অষ্টগ্রাম উপজেলার দেওঘর ইউনিয়ন ও রাঙ্গুনিয়ার পারুয়া ইউনিয়নে ঘটনা দুটি ঘটে। এতে ওইসব এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
১৪ ঘণ্টা আগে
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে আজ বেলা ৩টার দিকে ‘চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েট পরিষদ’-এর ব্যানারে পদযাত্রা শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। শাহবাগ থানার সামনে পৌঁছালে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে তা আটকে দেয়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে পুলিশ তাঁদের সড়ক থেকে....
১৬ ঘণ্টা আগে
কক্সবাজার অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে ঘোষণা করে জারি করা প্রজ্ঞাপন স্থগিত করেছে সরকার। ফলে আপাতত কক্সবাজার থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা শুরু হচ্ছে না।
১৮ ঘণ্টা আগে