Ajker Patrika

ফিলিস্তিনে প্রতিনিয়ত মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে: সংসদে প্রধানমন্ত্রী 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ৩১ অক্টোবর ২০২৩, ০০: ১৪
ফিলিস্তিনে প্রতিনিয়ত মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে: সংসদে প্রধানমন্ত্রী 

বাংলাদেশ ফিলিস্তিনে হত্যাকাণ্ড, যুদ্ধ চায় না। সেখানে মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘মানবাধিকারের কথা বলা হয়। কিন্তু সেখানে (ফিলিস্তিনে) প্রতিনিয়ত মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে। এটা বন্ধ করতে হবে। এই হত্যাকাণ্ড, যুদ্ধ আমরা চাই না।’ 

আজ সোমবার সংসদে উত্থাপিত ১৪৭ বিধির সাধারণ প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন সরকারপ্রধান। এর আগে ফিলিস্তিনের গাজায় দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় জাতীয় সংসদে নিন্দা প্রস্তাব তোলেন সরকারদলীয় সংসদ সদস্য ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পর প্রস্তাবটি সংসদে তোলা হলে তা সর্বসম্মতক্রমে গ্রহণ করা হয়। 

স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের প্রতি সমর্থন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের কথা হচ্ছে, ফিলিস্তিনের ন্যায্য দাবি যেন মেনে নেওয়া হয়। তাদের রাষ্ট্র যেন তারা ফেরত পায়। সেটা আমরা চাই।’ এ সময় ফিলিস্তিনে সেবা খাত খুলে দেওয়ার জন্য জোর দাবি জানান তিনি। 

ফিলিস্তিনে অনবরত মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে, এতে নারী ও শিশুরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে সেখানে কী অবস্থা? আমরা মানবাধিকারের কথা শুনি। অনেক কিছু শুনি। আমাদের প্যালেস্টাইনের জনগণ যে অমানবিক জীবনযাপন করছে।’ 

গাজায় হাসপাতালে হামলার ঘটনা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একটা জঘন্য ঘটনা ঘটিয়েছে। এর নিন্দার ভাষা নেই। হাসপাতালের মতো জায়গায় তারা কী করে হামলা করতে পারল? মানুষ হত্যা করতে পারল?’ 

বাংলাদেশ ফিলিস্তিনিদের পক্ষে রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশ থেকে ইতিমধ্যে ওষুধ, খাদ্য ও নারী-শিশুদের জন্য পণ্যসামগ্রী পাঠিয়েছি। কিন্তু সেটা ওখানে পৌঁছানোর সুযোগ নেই। আমরা মিসরে পাঠিয়েছি। তারা গ্রহণ করেছে। সেখান থেকে পৌঁছে দেবে। সব থেকে দুর্ভাগ্য যে সেখানে খাবার, ওষুধ, কোনো কিছুই দিতে দিচ্ছে না।’ 

তিনি বলেন, চারদিক ইসরায়েলি বাহিনী বন্ধ করে রেখেছে। এটা কোন ধরনের কথা! যেকোনো যুদ্ধে নারী-শিশু ও হাসপাতালের ওপর এভাবে হামলা হয় না। খাবার বন্ধ হয় না। কিন্তু আজকে সেখানে খাবার-পানি সবকিছু বন্ধ করে দিয়ে অমানবিক যন্ত্রণা দেওয়া হচ্ছে। সেখানে মানুষ হাহাকার করছে। 

এই ঘটনার পর বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অনেক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করি মানুষের পাশে থাকতে। জাতিসংঘ থেকে যখন যে চেষ্টা হয় এবং কোথাও মানবাধিকার লঙ্ঘন ও হত্যাকাণ্ড হলে তার নিন্দা জানাই। এটাই আমাদের নীতি। আরব লিগের সঙ্গে আমরা স্পনসর হয়ে জাতিসংঘে, যুদ্ধ বন্ধের প্রস্তাব দিয়েছি। সেখানে ১২০ দেশ আমাদের সমর্থন দিয়েছে।’ 

ফিলিস্তিনের আগে অনেক জায়গা ছিল। কিন্তু তা দখল করতে করতে ক্ষুদ্র একটি জায়গা রয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এটা বড় দেশ ছিল। ধীরে ধীরে তা দখল করতে করতে এখন ক্ষুদ্র একটি অংশ তাদের। তারপরও একটি প্রস্তাব ছিল টু স্টেট ফর্মুলা। এটাও তারা মানছে না। আমাদের কথা হচ্ছে, ফিলিস্তিনের ন্যায্য দাবি যেন মেনে নেওয়া হয়। তাদের রাষ্ট্র যেন তারা ফেরত পায়। সেটা আমরা চাই। সেবাটা খুলে দেওয়া উচিত। শিশুদের এভাবে কষ্ট দেওয়া এটা কখনোই গ্রহণ করতে পারি না।’ 

ফিলিস্তিন-ইসরায়েল যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘আমরা দুঃখের সঙ্গে লক্ষ করছি, অনেকগুলো বড় দেশ, যারা মানবতা, মানবাধিকার, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং সমাবেশের স্বাধীনতা নিয়ে সোচ্চার; পরামর্শকের ভূমিকা পালন করে তারা গাজা উপত্যকায় হামলা নিয়ে ইতিবাচক ভূমিকা নেয়নি। এর জন্য তাদের লজ্জা পাওয়া ও অনুশোচনা করা উচিত।’ 

জাতীয় সংসদে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, তরীকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী, জাতীয় পার্টির শেখ ফিরোজ রশীদ, রুস্তম আলী ফরাজী, মসিউর রহমান রাঙ্গা প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত