Ajker Patrika

বাণিজ্য সংগঠনে প্রশাসক বসাতে পারবে সরকার 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
বাণিজ্য সংগঠনে প্রশাসক বসাতে পারবে সরকার 

বিদেশি ব্যবসায়ীদের নিয়ে দেশে যৌথ বাণিজ্য সংগঠন তৈরির সুযোগ রেখে ‘বাণিজ্য সংগঠন বিল-২০২২’ জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে। যদিও এই বিলের সমালোচনা করেছেন বিরোধী দলের সাংসদেরা। তারা বলছেন, ‘সরকার বাণিজ্য সংগঠনকে নিয়ন্ত্রণ আনতে বিলটি আনা হয়েছে।’
 
আজ মঙ্গলবার বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি সংসদে বিলটি পাসের প্রস্তাব করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। এর আগে বিলের ওপর দেওয়া জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে পাঠানো এবং সংশোধনী প্রস্তাবগুলোর নিষ্পত্তি করা হয়। গত ২৩ জানুয়ারি বিলটি সংসদে তোলার পর পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।
 
১৯৬১ সালের ‘ট্রেড অর্গানাইজেশন অরডিনান্স’ বাতিল করে বাংলায় নতুন করে আইন করতে বিলটি তোলা হয়েছে।
 
বাংলাদেশের সঙ্গে কূটনৈতিক বা বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে এমন কোনো দেশ বা অঞ্চলে ব্যবসা শিল্প বা বাণিজ্য ও সেবা খাতে প্রতিনিধিত্ব করার জন্য যৌথ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি এবং একাধিক যৌথ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সমন্বয়ে গঠিত চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি জোটের বিধান রাখা হয়েছে।
 
বিলে বলা হয়েছে, অন্য দেশ থেকে বাংলাদেশে এসে বিদেশি ব্যবসায়ীরা একটি যৌথ চেম্বার করতে পারবে। তবে এ ক্ষেত্রে স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মতামত নিতে হবে।
 
বিলে বলা হয়েছে, কোনো বাণিজ্য সংগঠন অথবা ফেডারেশনের আবেদন বা অভিযোগের প্রেক্ষিতে অথবা সরকারের স্বীয় বিবেচনায় কোনো নিবন্ধিত বাণিজ্য সংগঠন বা তার কোনো শাখা বা দপ্তরের কার্যক্রম, ব্যবসা, শিল্প, বাণিজ্য, সেবা খাতের স্বার্থে সঠিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে না মর্মে সরকারের কাছে প্রতীয়মান হয়, এই ক্ষেত্রে সরকার লিখিত আদেশ দ্বারা বাণিজ্য সংগঠনের নির্বাহী কমিটি বা পরিচালনা পর্ষদ বাতিল করতে পারবে। বাতিল করার পর এক বছরের জন্য সরকার একজন প্রশাসক নিয়োগ করতে পারবে।
 
বিলে বলা হয়েছে, প্রতিটি জেলায় নারী উদ্যোক্তাদের জন্য আলাদা চেম্বার গঠনের সুযোগ থাকবে।
 
বিলে বাণিজ্য সংগঠনে নারী উদ্যোক্তাদের লাইসেন্সের মাধ্যমে সদস্য হওয়ার আইনি ভিত্তির বিধান রাখা হয়েছে। বাণিজ্য সংগঠন ছাড়া কোনো সংগঠন বা কোম্পানি ‘ফেডারেশন’, ‘চেম্বার’, ‘কাউন্সিল’, ‘গ্রুপ’, ‘অ্যালায়েন্স’ শব্দ ব্যবহার করতে পারবে না।
 
বিলে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি ট্রেড লাইসেন্সে উল্লেখ করা ব্যবসার শ্রেণি ছাড়া অন্য কোনো শ্রেণির সংগঠনের সদস্য হতে পারবে না। ট্রেড লাইসেন্সে উল্লেখ করা জেলা বা মেট্রোপলিটন চেম্বার ছাড়া অন্য কোনো চেম্বারের সদস্য হতে পারবে না। 

বাণিজ্য সংগঠনকে সরকারের কাছ থেকে সনদ ও নিবন্ধন নিতে হবে বলে বিলে বলা হয়েছে।
 
বিলটির সমালোচনা করে বিএনপির দলীয় সাংসদ হারুনুর রশিদ বলেন, ‘এটার একটা অসৎ উদ্দেশ্য আছে। বাণিজ্য সংগঠনগুলোকে সরকার নিয়ন্ত্রণ নিতে চায়। আজকে ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা, পৌরসভা, সিটি করপোরেশন সরকারের নিয়ন্ত্রণে, এমনকি সংসদও।’
 
হারুনুর রশিদ বলেন, ‘এই সমস্ত সংগঠনগুলো নির্বাচনের মাধ্যমে যে জবাবদিহিতা ছিল, সেই জায়গাগুলোকে সরকার নিয়ন্ত্রণে আনতে চায়।’
 
জাতীয় পার্টির সাংসদ কাজী ফিরোজ রশিদ বলেন, ‘আমরা ব্যক্তিগতভাবে কোন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে বলি না, আমরা নীতির উপরে কথা বলি। বাণিজ্য সংগঠন বিলটি আনা হয়েছে একটি সিন্ডিকেটকে উৎসাহী করার জন্য, তাদের স্বার্থ সংরক্ষণ করার জন্যই করা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত