Ajker Patrika

তিন দেশে বেনজীরের সম্পদের খোঁজে দুদক

মারুফ কিবরিয়া, ঢাকা
আপডেট : ২৯ মে ২০২৪, ১০: ২১
তিন দেশে বেনজীরের সম্পদের খোঁজে দুদক

শুধু দেশে নয়, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের সম্পদ রয়েছে–এমন খবরে বিষয়টি অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দেশ তিনটিতে বেনজীরের কী পরিমাণ সম্পদ রয়েছে, তা জানতে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) মাধ্যমে ওই সব দেশে তথ্য চেয়েছে সংস্থাটি। দুদকের উচ্চপর্যায়ের একাধিক সূত্র আজকের পত্রিকাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।

সূত্র জানায়, অনুসন্ধান শুরুর এক মাসের মধ্যে দেশের বিভিন্ন জেলায় বেনজীর পরিবারের বিপুল সম্পদের তথ্য পাওয়ার পর তিনি বিদেশেও অর্থ পাচার করেছেন বলে সন্দেহ করছে দুদক। এ কারণে দুবাই, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্রে তাঁর কোনো সম্পদ থাকলে সেসবের নথিপত্র চেয়ে মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স রিকোয়েস্ট (এমএলএআর) পাঠানোর অনুরোধ জানিয়ে বিএফআইইউকে চিঠি দিয়েছে দুদকের অনুসন্ধান টিম।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুদকের এক কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে বলেন, বেনজীর আহমেদের বিদেশে সম্পদের বিষয়ে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে গোয়েন্দা সূত্র বলছে, দুবাই, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় তাঁর সম্পদ রয়েছে। সেসবের তথ্য চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব
এদিকে সম্পদের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বেনজীর আহমেদ, তাঁর স্ত্রী জীশান মির্জা ও তিন মেয়েকে তলব করেছে দুদক। গতকাল মঙ্গলবার সংস্থাটির প্রধান কার্যালয় থেকে তাঁদের তলবি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। দুদক উপপরিচালক হাফিজুল ইসলাম স্বাক্ষরিত চিঠিতে আগামী ৬ জুন বেনজীর আহমেদকে এবং ৯ জুন তাঁর স্ত্রী জীশান মির্জাসহ সন্তানদের দুদকে হাজির হতে বলা হয়।

দুদকের এক কর্মকর্তা বলেন, অনুসন্ধানের শুরুতে বেনজীর পরিবারের বিপুল পরিমাণ সম্পদের তথ্য উঠে এসেছে। এসব সম্পদের বিষয়ে ওই পরিবারের সদস্যদের আয়কর নথি যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। কীভাবে তাঁরা এসব সম্পদ গড়েছেন, তার ব্যাখ্যা দরকার। সে কারণে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন মনে করছে অনুসন্ধানী দল। আগামী ৬ জুন বেনজীর আহমেদকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অনুসন্ধানী দলের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে কমিশন অনুমোদন দিয়েছে।

এ বিষয়ে দুদক কমিশনার (তদন্ত) জহুরুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ‘তাঁকে (বেনজীর আহমেদ) বলতে হবে, এই সম্পত্তি কোত্থেকে এল, কীভাবে এল। দুদক সব সময় বৈধ সম্পত্তি দেখবে, সম্পত্তির উৎস দেখবে। তাঁর সম্পত্তি যদি অবৈধ হয়, তাহলে সেগুলো রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করতে পারবে। সে জন্য সম্পদ ফ্রিজ (জব্দ) করা হচ্ছে। ফ্রিজ না করলে সম্পদ হস্তান্তর হয়ে যেতে পারে।’

বেনজীর আহমেদের পরিবারের নামে থাকা ১৯৬টি দলিলে ৬২৭ বিঘা জমি (২০ হাজার ৭০৩ শতক) এরই মধ্যে জব্দ করা হয়েছে। এসব সম্পদের মধ্যে মাত্র ২৮ বিঘা নিজের নামে রেখে বাকি সম্পদ স্ত্রী ও তিন মেয়ের নামে করেছেন বেনজীর। স্ত্রী জীশান মীর্জার নামেই কিনেছেন ৫৪৩ বিঘা জমি। নিজের জেলা গোপালগঞ্জের তিন উপজেলা ছাড়াও মাদারীপুরের রাজৈরে এসব জমি কেনা হয়েছে। এ ছাড়া পর্যটন জেলা কক্সবাজারের সেন্ট মার্টিন ও উখিয়ার ইনানী সমুদ্রসৈকতে বেনজীর আহমেদ নিজে, স্ত্রী ও তিন মেয়ের নামে জমি কিনেছেন।

এ ছাড়া বেনজীর পরিবারের কেনা রাজধানীর গুলশানে ৯ হাজার ১৯৩ বর্গফুটের চারটি ফ্ল্যাটও জব্দ করা হয়েছে। এই পরিবারের নামে থাকা ৩৩টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এবং ২৫টি কোম্পানিতে শতভাগ ও আংশিক বিনিয়োগ করা অর্থ অবরুদ্ধ করার নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।

২০১৪ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ৯ বছরে এসব সম্পদ কিনেছেন বেনজীর আহমেদ। তিনি ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার আগে ২০২১ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে শুধু মাদারীপুরের রাজৈরে জীশান মীর্জার নামে প্রায় ২৭৩ বিঘা জমি কেনেন। এ ছাড়া অবসর নেওয়ার ৬ মাসের মধ্যে ২০২৩ সালের ৫ মার্চ এক দিনেই গুলশানে ৪টি ফ্ল্যাট কিনেছেন। এগুলোর মধ্যে স্ত্রীর নামে তিনটি ও তাঁর নাবালিকা এক মেয়ের নামে একটি ফ্ল্যাট কিনেছেন।

অনুসন্ধানসংশ্লিষ্ট আরেক কর্মকর্তা বলেন, বেনজীর আহমেদের পরিবারের নামে দেশে-বিদেশে আরও সম্পদ থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। যেসব এলাকায় তাঁর আরও সম্পদ থাকতে পারে, সেসব এলাকার সংশ্লিষ্ট ভূমি অফিস ও সাবরেজিস্ট্রি অফিসে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

সম্পদের নোটিশ জারি শিগগির
দুদকের চলমান অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে বেনজীরের কাছ থেকে শিগগির সম্পদ বিবরণীর নোটিশ চাওয়া হবে বলে জানা গেছে। দুদকের অনুসন্ধানী দলের সদস্যরা ইতিমধ্যে এ-সংক্রান্ত প্রস্তুতি নিয়ে কমিশন বরাবর আবেদন করেছেন।

চাওয়া হবে বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা
বেনজীর ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে চলমান অনুসন্ধান বাধাগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কায় তাঁদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আদালত বরাবর আবেদন করবে দুদক। সূত্র জানায়, চলতি সপ্তাহেই এ-সংক্রান্ত আবেদন আদালতে দাখিল করবেন অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা।

বেনজীর আহমেদ ২০২০ সালের ১৫ এপ্রিল থেকে ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আইজিপি ছিলেন। এর আগে তিনি ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার ও র‍্যাবের মহাপরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে র‍্যাব এবং র‍্যাবের সাবেক ও বর্তমান যে সাত কর্মকর্তার ওপর যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দেয়, তাঁদের মধ্যে বেনজীর আহমেদের নামও ছিল। তখন তিনি আইজিপির দায়িত্বে ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষকেরা ভাতা পান না, নতুন গাড়ি-অফিস চান সদস্যসচিব

আজকের রাশিফল: দূরদেশ থেকে ফোন করে কেউ ক্ষমা চাইবে, প্রপোজ করার মোক্ষম দিন

ইসির তালিকায় যুক্ত নতুন নির্বাচনী প্রতীক ‘শাপলা কলি’

৫ বছরে যুক্তরাষ্ট্রকে ‘ধরে ফেলবে’ চীন, নতুন পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার নির্দেশ ট্রাম্পের

ভারত-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে এমন ‘অদ্ভুতুড়ে’ ঘটনার কারণ তাহলে এটাই

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কারও দাবিতে ‘শাপলা কলি’ আনা হয়নি: ইসি সচিব

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
নির্বাচন কমিশনের জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত
নির্বাচন কমিশনের জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত

কোনো রাজনৈতিক দল বা গোষ্ঠীর চাপে প্রতীকের তফসিল সংশোধন করে তালিকায় ‘শাপলা কলি’ যুক্ত করা হয়নি বলে জানিয়েছেন ইসি সচিব আখতার আহমেদ। যদিও কয়েক মাস ধরে ‘শাপলা’ প্রতীক নিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সঙ্গে টানাপোড়েন চলছিল ইসির। তবে শাপলা কলি যুক্ত করে ইসির জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ বলছেন, শাপলা ও শাপলা কলি এক নয়।

আজ বৃহস্পতিবার আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এসব কথা জানান তিনি।

ইসি কোন বিধির আলোকে শাপলা কলি প্রতীক যুক্ত করে প্রতীকের তালিকা সংশোধন করল—এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, ‘এটা ইলেকশন কমিশন মনে করেছে যে, শাপলা কলিটা রাখা যেতে পারে। ওভার দ্য পিরিয়ড অব টাইম, কোনো একটা পর্যায়ে কমিশন মনে করেছে, এটা সংশোধন করলে করা যেতে পারে। সে হিসেবে সংশোধন হয়েছে। যদি ভবিষ্যতে প্রয়োজন হয়, আবার সংশোধন করবে। এটা তো কোনো স্ট্যাটিক বিষয় নয়। কোনো আইন-বিধির প্রয়োজন হয় না।’

এনসিপির চাপে প্রতীকের তফসিলে ‘শাপলা কলি’ যুক্ত করা হয়েছে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব আখতার আহমেদ বলেন, ‘আপনারা জানেন, এনসিপি শাপলা প্রতীকটা চেয়েছে। শাপলা ও শাপলা কলির ভেতরে পার্থক্য আছে। আমার মনে হয় এটা ব্যাখার অবকাশ রাখে না। এটা কারোর কোনো দাবিতে করা হয়নি।’

আখতার আহমেদ বলেন, ‘আমরা নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালার তফসিলটা সংশোধন করেছি। কিছু কিছু প্রতীক নিয়ে কিছু মন্তব্য আমরা শুনেছি—যেমন কেউ বলেছে, এটা রাখলে কেন, না রাখলে ভালো হতো, রাখা যৌক্তিক হয়েছে কি না ইত্যাদি। এ বিবেচনায়, আগে যে ১১৫টি প্রতীক ছিল, তার থেকে আমরা ১৬টি বাদ দিয়ে নতুন করে প্রতীক নিয়ে ১১৯টি এবার রিশিডিউল করেছি।’

এনসিপি বলেছিল, ‘ইসি শাপলা প্রতীক যুক্ত না করে ‘স্বৈরাচারী আচরণ’ করছে, এখন ইসি কি মনে করেন যে ‘স্বৈরাচার আচরণ’ থেকে ফিরে এসেছে—এমন প্রশ্নের জবাবে আখতার আহমেদ বলেন, ‘এটা আমার এখতিয়ারাধীন নয় এবং আমার মতামত দেওয়াটাও উচিত না। এখন আমাকে কে ভালো বলল বা খারাপ বলল... আমরা আমাদের নৈতিক দায়িত্বটা পালন করে থাকি।’

ইসি ভুল সংশোধন করল কি না ও কেন করল—জানতে চাইলে ইসি সচিব বলেন, ‘আমি বারবার, বলছি যে, কিছু প্রতীক সম্পর্কে বিরূপ মতামত ও মন্তব্য এসেছে। ওভার দ্য পিরিয়ড অব টাইম, কোনো একটা পর্যায়ে কমিশন মনে করেছে, এটা সংশোধন করলে করা যেতে পারে। সে হিসেবে সংশোধন হয়েছে। ব্যাপারটা এখন আর তখনের নয়। যদি ভবিষ্যতে প্রয়োজন হয়, আবার সংশোধন করবে। এটা তো কোনো স্ট্যাটিক বিষয় নয়। কোনো আইন-বিধির প্রয়োজন হয় না... এখানে নতুন করে বিতর্কের সুযোগ দেখছি না।’

হ্যান্ডশেকের মতো প্রতীক নতুন করে তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে, এটা বাস্তবসম্মত কি না—জানতে চাইলে ইসি সচিব বলেন, ‘আপনি যদি বলেন, এটা কেন করা হলো, ওটা কেন করা হলো না—এর জবাব তো মুশকিলের ব্যাপার। কেন এটাকে রাখা হলো না, কেন ওইটাকে রাখা হলো, এটা তো আপেক্ষিক প্রশ্ন।’

প্রতিদিন ইসিতে বিভিন্ন দল আসছে বিভিন্ন দাবি নিয়ে, এটাকে কি ইসি চাপ মনে করছে কি না—জানতে চাইলে ইসি সচিব আখতার আহমেদ বলেন, ‘নির্বাচনের তিনটা মূল ধারা। একটা হচ্ছে রাজনৈতিক দল, আরেকটা ভোটার এবং নির্বাচন কমিশন নিজেই। এই তিনটা একটা আরেকটার সঙ্গে ইন্টারেক্ট করতেই আসবে এবং করতে আসার অর্থ এই নয় যে, আমরা চাপের মধ্যে আছি। এটা চিন্তা করাটা অত্যন্ত অমূলক।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষকেরা ভাতা পান না, নতুন গাড়ি-অফিস চান সদস্যসচিব

আজকের রাশিফল: দূরদেশ থেকে ফোন করে কেউ ক্ষমা চাইবে, প্রপোজ করার মোক্ষম দিন

ইসির তালিকায় যুক্ত নতুন নির্বাচনী প্রতীক ‘শাপলা কলি’

৫ বছরে যুক্তরাষ্ট্রকে ‘ধরে ফেলবে’ চীন, নতুন পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার নির্দেশ ট্রাম্পের

ভারত-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে এমন ‘অদ্ভুতুড়ে’ ঘটনার কারণ তাহলে এটাই

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

২৭০ দিন আলাপ-আলোচনার পরও দলগুলোতে অনৈক্যের সুর হতাশাব্যঞ্জক: আসিফ নজরুল

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। ছবি: পিআইডি
ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। ছবি: পিআইডি

জুলাই জাতীয় সনদ নিয়ে ২৭০ দিন আলাপ-আলোচনার পরও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ‘অনৈক্যের সুর’ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। আজ বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক নিয়ে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

জুলাই সনদ ও গণভোট নিয়ে বিএনপি ও জামায়াতসহ রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতবিরোধ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘এটা দুর্ভাগ্যজনক। ২৭০ দিন যাবৎ আলাপ-আলোচনার পর প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর বক্তব্যে যে অনৈক্যের সুর দেখছি, এটা হতাশাব্যঞ্জক। এই তীব্র বিরোধের মধ্যে কীভাবে সমঝোতার দলিল পাস হবে? এটা খুব দুরূহ একটা চ্যালেঞ্জ আমাদের সামনে এনে দিয়েছে।’

আসিফ নজরুল বলেন, ‘উনাদের (রাজনৈতিক দল) তো আসলে ঐকমত্য হয় নাই। কিছু ভাইটাল (গুরুত্বপূর্ণ) প্রশ্নে এর আগে আমরা জেনেছিলাম, কনটেন্ট নিয়ে বিরোধ ছিল। যে সংস্কার হবে, সেই বিষয়বস্তু নিয়ে বিরোধ ছিল। এখন আবার দেখলাম, আরও দুই ধরনের বিরোধ তৈরি হয়েছে। একটা হচ্ছে, এটা (জুলাই সনদ) কী পদ্ধতিতে পাস করা হবে; আরেকটা হচ্ছে এর জন্য গণভোট হলে গণভোট কবে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিরোধ তীব্রতম পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। এসব ব্যাপারে একটা সময় সরকারকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সিদ্ধান্ত নিবেন প্রধান উপদেষ্টা।’

এ সময় মতানৈক্য থাকা রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘বিরোধ এত দৃঢ় এবং পরস্পরবিরোধী—কী বলব? যে উত্তেজিত ভূমিকা নিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলো, যারা জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পক্ষে ছিল, আপনারা যদি এ রকম একটা ভূমিকা নেন, তাহলে সরকার কী করবে? আমরা ঠিক বুঝতে পারছি না। এত দিন আলোচনার পর যদি আপনাদের মধ্যে ঐকমত্য না আসে, আমরা আসলে এখন কীভাবে কী করব—এটা নিয়ে সত্যি আমাদের একটু চিন্তা করতে হচ্ছে।’

রাজনৈতিক দলগুলোর আলটিমেটাম নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘কোনো রাজনৈতিক দল যদি এককভাবে তাদের অবস্থান নেওয়ার জন্য আমাদের আলটিমেটাম বেঁধে দেয় বা জোর করে, তার মানে হচ্ছে উনাদের মধ্যে ঐকমত্য নাই এবং উনারা চাচ্ছেন, উনাদের দলীয় পজিশনটা যেন এই সরকার আপহোল্ড (সমুন্নত) করে—এটা দুর্ভাগ্যজনক। উনাদেরকে তো যথেষ্ট আলোচনার সময় দেওয়া হয়েছে। উনারা যে অনৈক্য দেখাচ্ছেন, জুলাই স্পিরিটকে উনারা কোথায় নিয়ে গেছেন—এটা উনাদের বিবেচনা করা উচিত।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষকেরা ভাতা পান না, নতুন গাড়ি-অফিস চান সদস্যসচিব

আজকের রাশিফল: দূরদেশ থেকে ফোন করে কেউ ক্ষমা চাইবে, প্রপোজ করার মোক্ষম দিন

ইসির তালিকায় যুক্ত নতুন নির্বাচনী প্রতীক ‘শাপলা কলি’

৫ বছরে যুক্তরাষ্ট্রকে ‘ধরে ফেলবে’ চীন, নতুন পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার নির্দেশ ট্রাম্পের

ভারত-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে এমন ‘অদ্ভুতুড়ে’ ঘটনার কারণ তাহলে এটাই

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পরিবারের সদস্যদের বাইরে ঘনিষ্ঠরাও দিতে পারবে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ: আইন উপদেষ্টা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বক্তব্য দেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। ছবি: পিআইডি
ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বক্তব্য দেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। ছবি: পিআইডি

‘মানবদেহে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সংযোজন অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। নতুন এই আইনে পরিবারের সদস্য ছাড়াও ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের নিঃস্বার্থভাবে কিডনিসহ বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ দান করার সুযোগ রাখা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

পরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক নিয়ে ব্রিফ করেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল ও প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, ‘আমাদের এখানে কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট করতে হোক বা অন্য যেকোনো অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ট্রান্সপ্ল্যান্ট করতে প্রচলিত আইনে রয়েছে যে, পরিবারের সদস্যরা শুধু অঙ্গপ্রত্যঙ্গ দান করতে পারবেন। এতে প্রায়োগিক ক্ষেত্রে যেটা হতো, অন্য কোনো দেশে গিয়ে পরিবারের সদস্যদের বাইরেও টাকাপয়সা দিয়ে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ দান যারা করবে, তাদের থেকে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ প্রতিস্থাপনের চেষ্টা করা হতো।’

আইন উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘আমরা এইটা দূর করার জন্য শুধু পরিবারের সদস্য না, যাদের সঙ্গে ইমোশনাল অ্যাটাচমেন্ট (ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক) আছে, সেটা কাদের সঙ্গে—এটা আমরা একটু ব্যাখ্যা করে বলব। তাদের কেউ যদি অন্য কাউকে নিঃস্বার্থভাবে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ দান করতে চায়, সেটাকে আমরা লিগ্যালাইজ (বৈধতা) করার স্কোপ (সুযোগ) করেছি।’

আসিফ নজরুল বলেন, ‘যাদের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সংযোজনের জন্য বিদেশে যেতে হতো, তারা বাংলাদেশে এখন প্রচলিত আইনের মধ্য থেকে এই কাজটা করার সুযোগ পাবেন আশা করি। এতে ব্যয়বহুল চিকিৎসার ক্ষেত্রে সাশ্রয় হবে, মানুষের অনেক ভোগান্তির কমবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষকেরা ভাতা পান না, নতুন গাড়ি-অফিস চান সদস্যসচিব

আজকের রাশিফল: দূরদেশ থেকে ফোন করে কেউ ক্ষমা চাইবে, প্রপোজ করার মোক্ষম দিন

ইসির তালিকায় যুক্ত নতুন নির্বাচনী প্রতীক ‘শাপলা কলি’

৫ বছরে যুক্তরাষ্ট্রকে ‘ধরে ফেলবে’ চীন, নতুন পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার নির্দেশ ট্রাম্পের

ভারত-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে এমন ‘অদ্ভুতুড়ে’ ঘটনার কারণ তাহলে এটাই

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

প্রয়াত মন্ত্রী নাসিমের পরিবারের ৩ কোটি ২৮ লাখ টাকার ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রয়াত মন্ত্রী নাসিমের পরিবারের ৩ কোটি ২৮ লাখ টাকার ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ

আওয়ামী সরকারের সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত মো. নাসিমের ছেলে সিরাজগঞ্জ-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য তানভির শাকিল জয়, তাঁর পরিবার ও স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নামে থাকা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে ১২০৮ কোটি টাকার অস্বাভাবিক লেনদেনের তথ্য পেয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এসব হিসাবের মধ্যে ৩ কোটি ২৮ লাখ টাকা আদালতের নির্দেশে অবরুদ্ধ করা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, বর্তমানে তানভির শাকিল জয় ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে মানি লন্ডারিং অনুসন্ধান কার্যক্রম চালাচ্ছে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট। তদন্তের অংশ হিসেবে দেশের বিভিন্ন স্থানে তাদের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। অভিযোগসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তথ্য উদ্‌ঘাটন, অপরাপর সদস্যদের শনাক্ত অভিযানও অব্যাহত রয়েছে।

সিআইডির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিটের অনুসন্ধানে জানা গেছে, তানভির শাকিল জয়, তাঁর মা লায়লা আরজুমান্দ বানু, স্ত্রী সাবরিনা সুলতানা চৌধুরী ও পরিবারের অন্য সদস্যদের নামে বিভিন্ন ব্যাংকে মোট ৯৬টি হিসাব রয়েছে। এসব হিসাবের লেনদেন পর্যালোচনায় দেখা যায়, সেখানে ১২০৮ কোটি টাকার অস্বাভাবিক লেনদেন হয়। আদালতের মাধ্যমে এসব ব্যাংক হিসাবে থাকা ৩ কোটি ২৮ লাখ টাকা ফ্রিজ করেছে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট।

সিআইডি বলছে, প্রাথমিক অনুসন্ধানে আরও জানা গেছে, তানভির শাকিল জয় প্রতারণা, জালিয়াতি, চাঁদাবাজি, সংঘবদ্ধ অপরাধ এবং বিদেশে অর্থ পাচারের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। তিনি ও তাঁর ভাই তমাল মনসুর ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে টেন্ডার জালিয়াতি, বালু উত্তোলন, নিয়োগ-বাণিজ্য ও চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত ছিলেন।

সিআইডির প্রাথমিক ধারণা অনুযায়ী, তানভির জয় পরিবারের সদস্যদের নামে অর্জিত এই অবৈধ অর্থ দেশের বাইরে পাচারের পাশাপাশি স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ হিসেবে বিনিয়োগ করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষকেরা ভাতা পান না, নতুন গাড়ি-অফিস চান সদস্যসচিব

আজকের রাশিফল: দূরদেশ থেকে ফোন করে কেউ ক্ষমা চাইবে, প্রপোজ করার মোক্ষম দিন

ইসির তালিকায় যুক্ত নতুন নির্বাচনী প্রতীক ‘শাপলা কলি’

৫ বছরে যুক্তরাষ্ট্রকে ‘ধরে ফেলবে’ চীন, নতুন পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার নির্দেশ ট্রাম্পের

ভারত-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে এমন ‘অদ্ভুতুড়ে’ ঘটনার কারণ তাহলে এটাই

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত