Ajker Patrika

উচ্চকক্ষের পিআর নিয়ে কমিশনের বৈঠকে উত্তেজনা, পরে কোলাকুলি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ৩১ জুলাই ২০২৫, ১৮: ৩২
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষের প্রস্তাব করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এই আলোচনায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম আহ্বায়ক জাবেদ রাসিনের উদ্দেশে জাতীয় দলের চেয়ারম্যান ও ১২-দলীয় জোটের সমন্বয়ক সৈয়দ এহসানুল হুদা কটাক্ষ করে ‘২৩ সালে কোথায় ছিলেন’ মন্তব্য করলে সংলাপে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। যদিও পরে ক্ষমা চান হুদা।

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় ধাপের ২৩তম দিনের সংলাপে একপর্যায়ে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। বাংলাদেশ টেলিভিশনের সরাসরি সম্প্রচারে দেখা গেছে, বেলা ১টা ৫০ মিনিটের পরে পিআর নিয়ে বিএনপির অবস্থান ব্যাখ্যা করে স্থায়ী কমিটির সালাহউদ্দিন আহমদ যখন বলেন, তাঁরা সংবিধান সংশোধনের ক্ষমতা উচ্চকক্ষের হাতে দিতে চান না।

উচ্চকক্ষের প্রতিনিধিদের অনির্বাচিত আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, পৃথিবীর কোনো দেশেই অনির্বাচিত ব্যক্তিদের হাতে সংবিধান সংশোধনের ক্ষমতা থাকে না।

সালাহউদ্দিন আহমদের বক্তব্য শেষ হলে জাবেদ রাসিন বলেন, ভোটের সংখ্যানুপাতিকে উচ্চকক্ষ গঠিত হলে সেটি তো জনগণের প্রতিনিধিত্বের প্রতিফলন হয়। এ বিষয়ে সালাহউদ্দিনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি। তখন সালাহউদ্দিন ব্যাখ্যা দেন।

ঠিক তখনই সৈয়দ এহসানুল হুদা মাইক ছাড়াই জাবেদ রাসিনের উদ্দেশে বলেন, ‘২০২৩ সালে যখন আন্দোলন হচ্ছিল, তখন আপনারা কোথায় ছিলেন।’ জাবেদ রাসিন এ সময় মাইক ছাড়াই তাঁর মন্তব্যের প্রতিবাদ করেন। ফলে সংলাপে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।

তাঁরা দুজনই মাইক ছাড়া পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দেন। তখন কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ বলেন, ‘হুদা ভাই, এর আগেও আপনারা একজনের বক্তব্য নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন। তখন আমরা থামিয়েছিলাম। এখানে আমরা কে, কেন এসেছি, সে প্রশ্ন তুললে বিপজ্জনক পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। কারণ, আজ যদি সে প্রশ্ন করেন, তাহলে রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে আমাকেও সে প্রশ্ন করতে পারেন। আমরা সে আলোচনায় যাচ্ছি না।’

তারপর এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, তিনি (হুদা) এ কথা বলতেই পারেন না। এ সময় সালাহউদ্দিন তাঁর পিঠ চাপড়ে থামতে অনুরোধ করেন। আখতার তখনো বলতে থাকেন, ‘আমরা বাচ্চাকাল থেকে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে আসছি।’

তখন আলী রীয়াজ বলেন, কারও লোকাস স্ট্যান্ডার্ড (লোকাস স্ট্যান্ডি—রাজনীতির প্রেক্ষাপটে ব্যক্তি বা গোষ্ঠী যখন কোনো কর্মকাণ্ড, নীতি বা সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে, তখন অবস্থান বোঝাতে এই শব্দবন্ধ ব্যবহৃত হয়) গুরুত্বপূর্ণ। তা নিয়ে প্রশ্ন করার দরকার নেই।

তিনি বলেন, ‘প্রত্যেকের লোকাস স্ট্যান্ডার্ড আছে বলেই আমরা এই জায়গায় আসতে পেরেছি।’ তখন আখতার বলেন, ‘গায়ের জোরে এসব প্রশ্ন করলে তো আমরা মানব না।’ জবাবে আলী রীয়াজ বলেন, ‘আমি তো হস্তক্ষেপ করলাম।’ আখতার তখনো বলেন, ‘সবাইকে নিয়ে আমরা গণ-অভ্যুত্থান করেছি। গোটা অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতা মাঠে নেমে আসল, সেটার অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছে। এটার জন্য উনার ক্ষমা চাওয়া উচিত।’

এ সময় সালাহউদ্দিন আহমদকে বলতে শোনা যায়, ‘হুদা ভাই, আপনি সরি বলেন।’ এ সময় গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি এ বিষয়ে কথা বলতে উঠে দাঁড়ালে আলী রীয়াজ তাঁকে অনুরোধ করে বসিয়ে দেন। এ সময় সাকি কিছু একটা বলার চেষ্টা করলেও মাইক না থাকায় তা শোনা যায়নি।

এরপর সালাহউদ্দিন আহমদ হুদার উদ্দেশে বলেন, ‘কেউ যদি মনে কষ্ট পেয়ে থাকে, তার জন্য সরি বলেন।’ এরপর এহসানুল হুদা মাইক নিয়ে বলেন, ‘আমি বলতে চেয়েছিলাম, ২০২৩ সালে আমরা উচ্চকক্ষের প্রস্তাব দিয়েছিলাম, তখন সে প্রস্তাবটি (পিআর) কোথায় ছিল। তারপরও কেউ যদি আঘাত পেয়ে থাকে, আমি দুঃখিত।’

এরপরই আলী রীয়াজ মধ্যাহ্নভোজের বিরতির ঘোষণা করেন। বিরতির সময় সম্মেলন কক্ষে হুদাকে আবার আখতারের কাছে তাঁর বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়ে কোলাকুলি করতে দেখা যায়। হুদাকে বলতে শোনা যায়, ‘আমার অনুরোধ, আমরা এটা নিয়ে আর সিন ক্রিয়েট না করি। আমার আপনাদের নিয়ে প্রশ্ন করার ইনটেনশন ছিল না।’ পরে আখতার হুদাকে জাবেদ রাসিনের সঙ্গে কোলাকুলি করিয়ে দেন।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাজনৈতিক দলের কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার অভিযোগ, হেফাজতে সেনা কর্মকর্তা

পত্রিকায় নিবন্ধ লেখার পর বাংলাদেশ দূতাবাস কর্মকর্তাকে ফেরত নেওয়ার অনুরোধ কাতারের

পিআর পদ্ধতিতেই হবে ১০০ আসনের উচ্চকক্ষ, ঐকমত্য কমিশনের সিদ্ধান্ত

বাংলাদেশ মাতিয়ে যাওয়া জার্মান টিকটকার ভারতে আটক

শেখ হাসিনার ‘ফেরার পরিকল্পনা’ ঘিরে গোপন বৈঠক, গ্রেপ্তার ২২ নেতা-কর্মী কারাগারে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত