আজকের পত্রিকা ডেস্ক
‘আমাদের পুরো গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। সবাই বাড়ি ছেড়ে গরু-ছাগল নিয়ে বেড়িবাঁধে চলে এসেছে। বন্যা আগেও দেখেছি, তবে এমন বন্যা কখনো দেখিনি।’ কথাগুলো বলছিলেন কুমিল্লার তিতাস উপজেলার আফজলকান্দি গ্রামের বাসিন্দা হাতেম মাস্টার। তাঁর মতো দেশের পূর্বাঞ্চলে এমন আকস্মিক বন্যা দেখেননি অনেকে।
বৃষ্টির সঙ্গে পাহাড়ি ঢল এবং ভারতের ত্রিপুরা থেকে আসা পানিতে ভুগছে বাংলাদেশের ১২ জেলা। কোথাও ভেঙেছে সড়ক, কোথাও বাঁধ। আবার কোথাও তলিয়ে গেছে ঘরবাড়ি, কোথাও কোথাও পানিয়ে ছুঁয়েছে টিনের চাল। তবে গতকাল বৃষ্টি কমে আসায় মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, সিলেট ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পানি কমতে শুরু করেছে।
এদিকে ভারতের যে অঞ্চল থেকে পানি ঢুকেছে বাংলাদেশে, সেই ত্রিপুরাতেও মানুষ ভালো নেই। হিন্দুস্তান টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, বন্যায় রাজ্যে ২২ জন মারা গেছে। ১৭ লাখ মানুষ বন্যাকবলিত হয়েছে। জেলা জেলায় জারি করা হয়েছে সর্বোচ্চ সতর্কতা। আর বাংলাদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের হিসাবে দেশের ৭৭ উপজেলার ৪৫ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বন্যায়। এতে শিশু, নারীসহ ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এলাকাবাসী, পুলিশ, প্রশাসনের বরাত দিয়ে আজকের পত্রিকার নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:
লক্ষ্মীপুরে গতকাল বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। এখনো পানিবন্দী ৭ লাখ মানুষ। জেলায় বিশুদ্ধ পানির সংকট প্রকট আকার ধারণ করছে। গতকাল সকাল থেকে সদর, রায়পুর, রামগতি ও কমলনগর উপজেলায় পানিবন্দী ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করতে দেখা গেছে। গতকাল পর্যন্ত জেলায় বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে গেছে ২০ হাজারের বেশি মানুষ।
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের পুরো উপজেলা প্লাবিত হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গুণবতী, আলকরা, জগন্নাথ, চিওড়া, বাতিসা, শুভপুর, মুন্সিরহাট, কাশিনগর ও চৌদ্দগ্রাম পৌর এলাকাগুলোতে এখনো বন্যার পানি স্থিতিশীল। এদিকে বৃষ্টি এবং ভারত থেকে আসা পানিতে কুমিল্লার হোমনা ও তিতাস উপজেলার ৩০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে প্রায় দেড় লাখ মানুষ।
বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাহিদা আক্তার জানান, গোমতী নদীর বুড়িচং উপজেলার ষোলনল ইউনিয়নের বুড়বুড়িয়া অংশে বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকেছে। প্রবল বর্ষণের ফলে এই উপজেলার ৬০ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়ে। এতে ১ লাখ ৭০ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
পানি উন্নয়ন বোর্ড কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী খান মোহাম্মদ ওয়ালিউজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, টানা বৃষ্টি ও ভারতীয় ঢলে পানি বেড়েছে কুমিল্লার গোমতী নদী ও খালগুলোতে। সর্বশেষ গতকাল বিকেল ৫টা পর্যন্ত গোমতী নদীর পানি বিপৎসীমার ১০৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পুরো কুমিল্লার চিত্র তুলে ধরে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) পঙ্কজ বড়ুয়া বলেন, জেলার ১৭টি উপজেলার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত ৭২৪টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। সেখানে প্রায় ৪৫ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে, ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে শুকনো খাবারের।
নোয়াখালীর বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। জেলার ৮টি উপজেলায় পানিবন্দী প্রায় ২০ লাখ মানুষ। তাদের মধ্যে আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছে প্রায় ৭৬ হাজার জন। জেলাজুড়ে দেখা দিয়েছে খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকট। জেলা প্রশাসকের তথ্যমতে, বন্যার শুরুতে জেলায় ৩৮৮টি কেন্দ্র প্রস্তুত করা হলেও পরে বন্যা ভয়াবহ রূপ নেওয়ায় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ মোট ৫০২টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। গতকাল বিকেল পর্যন্ত এসব আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় ৭৬ হাজার ২০০ জন আশ্রয় নিয়েছে।
বন্যার কারণে গত বৃহস্পতিবার থেকে ফেনী জেলা বিদ্যুৎবিহীন। একই সঙ্গে মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন জেলার বাসিন্দারা। এদিকে ফেনীতে বন্যার্তদের উদ্ধারকাজে গিয়ে পানিতে ডুবে লক্ষ্মীপুরের সাইফুল ইসলাম সাগর নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। জেলার ১০ লাখের বেশি মানুষ পানিবন্দী।
চট্টগ্রামে বন্যার সঙ্গে হালদা নদীর বাঁধ ভেঙে ১৬ উপজেলা প্লাবিত হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে ফটিকছড়ি উপজেলায়। সেখানে হাজারো মানুষ পানিবন্দী। তবে গতকাল বিকেল থেকে পানি কমা শুরু হয়েছে। পানি কমেছে চট্টগ্রাম শহরের নিম্নাঞ্চলেও। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রামে কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। অতিবৃষ্টি, জলাবদ্ধতা ও পাহাড়ধসের কারণে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) ৪৮টি স্কুলকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার দুই লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী রয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে সেখানে বিদ্যুতায়িত হয়ে একজন মারা গেছে। এ ছাড়া কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায় বন্যার পানিতে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
বন্যায় প্লাবিত হয়ে চরম বিপর্যয়ে পড়েছে খাগড়াছড়ি জেলার লক্ষাধিক বাসিন্দা। এরই মধ্যে চেঙ্গি, মাইনি ও কাসালং নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ২ থেকে ৬ ফুট অতিক্রম করায় আশপাশের এলাকা পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। সেখানে উদ্ধারকাজ ও ত্রাণ বিতরণে কাজ করছে সেনাবাহিনী।
বাসস জানায়, কয়েক দিনের টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে পার্বত্য জেলা রাঙামাটির কয়েকটি উপজেলার বন্যা পরিস্থিতির অবনতিসহ জেলার রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কের কয়েক জায়গায় পাহাড়ধসের ঘটনা ঘটেছে। জেলার বাঘাইছড়ি, কাউখালী উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। নতুন করে প্লাবিত হয়েছে লংগদু উপজেলার বিভিন্ন এলাকা। এতে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে শত শত পরিবার। হ্রদের পানি বেড়ে যাওয়ায় রাঙামাটির অন্যতম ঝুলন্ত সেতুটি প্রায় এক ফুট পানিতে ডুবে গেছে।
গত বৃহস্পতিবার ও আগের দিন বুধবার বিপৎসীমা ছাড়িয়ে ভয়াবহ রূপ নেয় হবিগঞ্জের খোয়াই নদ। তবে বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে ভারতের ত্রিপুরায় চাকমা গেট নামে খোয়াই নদের ব্যারাজ বন্ধ করা হয়। এরপর থেকে পানি কমতে শুরু করেছে। হবিগঞ্জের খোয়াই নদের পানি কমলেও পানিবন্দী হয়ে পড়েছে প্রায় ৫৭ হাজার ৫৬০ জন।
মৌলভীবাজারে এক সপ্তাহ পর শুক্রবার দুপুরে রোদের দেখা মিলেছে। জেলার মনু ও ধলাই নদের পানি কমতে শুরু করলেও রাজনগর, কমলগঞ্জ, কুলাউড়া, জুড়ী, বড়লেখা ও সদর উপজেলায় এখনো ৩ লাখ মানুষ পানিবন্দী রয়েছে।
সিলেটে নদ-নদীর পানি কিছুটা কমেছে। তবে এখনো কুশিয়ারা নদীর তিনটি পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। পাউবো সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ আজকের পত্রিকাকে বলেন, জেলার কোথাও বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি। ভারী বৃষ্টি আর উজানের ঢল না এলে বন্যারও আশঙ্কা নেই।
মৌলভীবাজারে মনু ও ধলাই নদের পানি কমতে শুরু করেছে। একই সঙ্গে বন্যাকবলিত বিভিন্ন এলাকার পানি ধীরগতিতে নামা শুরু করেছে। তবে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় এখনো প্রায় তিন লাখ মানুষ পানিবন্দী। আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছে ৭ হাজার ১৪৫ জন।
‘আমাদের পুরো গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। সবাই বাড়ি ছেড়ে গরু-ছাগল নিয়ে বেড়িবাঁধে চলে এসেছে। বন্যা আগেও দেখেছি, তবে এমন বন্যা কখনো দেখিনি।’ কথাগুলো বলছিলেন কুমিল্লার তিতাস উপজেলার আফজলকান্দি গ্রামের বাসিন্দা হাতেম মাস্টার। তাঁর মতো দেশের পূর্বাঞ্চলে এমন আকস্মিক বন্যা দেখেননি অনেকে।
বৃষ্টির সঙ্গে পাহাড়ি ঢল এবং ভারতের ত্রিপুরা থেকে আসা পানিতে ভুগছে বাংলাদেশের ১২ জেলা। কোথাও ভেঙেছে সড়ক, কোথাও বাঁধ। আবার কোথাও তলিয়ে গেছে ঘরবাড়ি, কোথাও কোথাও পানিয়ে ছুঁয়েছে টিনের চাল। তবে গতকাল বৃষ্টি কমে আসায় মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, সিলেট ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পানি কমতে শুরু করেছে।
এদিকে ভারতের যে অঞ্চল থেকে পানি ঢুকেছে বাংলাদেশে, সেই ত্রিপুরাতেও মানুষ ভালো নেই। হিন্দুস্তান টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, বন্যায় রাজ্যে ২২ জন মারা গেছে। ১৭ লাখ মানুষ বন্যাকবলিত হয়েছে। জেলা জেলায় জারি করা হয়েছে সর্বোচ্চ সতর্কতা। আর বাংলাদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের হিসাবে দেশের ৭৭ উপজেলার ৪৫ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বন্যায়। এতে শিশু, নারীসহ ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এলাকাবাসী, পুলিশ, প্রশাসনের বরাত দিয়ে আজকের পত্রিকার নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:
লক্ষ্মীপুরে গতকাল বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। এখনো পানিবন্দী ৭ লাখ মানুষ। জেলায় বিশুদ্ধ পানির সংকট প্রকট আকার ধারণ করছে। গতকাল সকাল থেকে সদর, রায়পুর, রামগতি ও কমলনগর উপজেলায় পানিবন্দী ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করতে দেখা গেছে। গতকাল পর্যন্ত জেলায় বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে গেছে ২০ হাজারের বেশি মানুষ।
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের পুরো উপজেলা প্লাবিত হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গুণবতী, আলকরা, জগন্নাথ, চিওড়া, বাতিসা, শুভপুর, মুন্সিরহাট, কাশিনগর ও চৌদ্দগ্রাম পৌর এলাকাগুলোতে এখনো বন্যার পানি স্থিতিশীল। এদিকে বৃষ্টি এবং ভারত থেকে আসা পানিতে কুমিল্লার হোমনা ও তিতাস উপজেলার ৩০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে প্রায় দেড় লাখ মানুষ।
বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাহিদা আক্তার জানান, গোমতী নদীর বুড়িচং উপজেলার ষোলনল ইউনিয়নের বুড়বুড়িয়া অংশে বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকেছে। প্রবল বর্ষণের ফলে এই উপজেলার ৬০ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়ে। এতে ১ লাখ ৭০ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
পানি উন্নয়ন বোর্ড কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী খান মোহাম্মদ ওয়ালিউজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, টানা বৃষ্টি ও ভারতীয় ঢলে পানি বেড়েছে কুমিল্লার গোমতী নদী ও খালগুলোতে। সর্বশেষ গতকাল বিকেল ৫টা পর্যন্ত গোমতী নদীর পানি বিপৎসীমার ১০৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পুরো কুমিল্লার চিত্র তুলে ধরে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) পঙ্কজ বড়ুয়া বলেন, জেলার ১৭টি উপজেলার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত ৭২৪টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। সেখানে প্রায় ৪৫ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে, ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে শুকনো খাবারের।
নোয়াখালীর বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। জেলার ৮টি উপজেলায় পানিবন্দী প্রায় ২০ লাখ মানুষ। তাদের মধ্যে আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছে প্রায় ৭৬ হাজার জন। জেলাজুড়ে দেখা দিয়েছে খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকট। জেলা প্রশাসকের তথ্যমতে, বন্যার শুরুতে জেলায় ৩৮৮টি কেন্দ্র প্রস্তুত করা হলেও পরে বন্যা ভয়াবহ রূপ নেওয়ায় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ মোট ৫০২টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। গতকাল বিকেল পর্যন্ত এসব আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় ৭৬ হাজার ২০০ জন আশ্রয় নিয়েছে।
বন্যার কারণে গত বৃহস্পতিবার থেকে ফেনী জেলা বিদ্যুৎবিহীন। একই সঙ্গে মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন জেলার বাসিন্দারা। এদিকে ফেনীতে বন্যার্তদের উদ্ধারকাজে গিয়ে পানিতে ডুবে লক্ষ্মীপুরের সাইফুল ইসলাম সাগর নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। জেলার ১০ লাখের বেশি মানুষ পানিবন্দী।
চট্টগ্রামে বন্যার সঙ্গে হালদা নদীর বাঁধ ভেঙে ১৬ উপজেলা প্লাবিত হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে ফটিকছড়ি উপজেলায়। সেখানে হাজারো মানুষ পানিবন্দী। তবে গতকাল বিকেল থেকে পানি কমা শুরু হয়েছে। পানি কমেছে চট্টগ্রাম শহরের নিম্নাঞ্চলেও। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রামে কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। অতিবৃষ্টি, জলাবদ্ধতা ও পাহাড়ধসের কারণে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) ৪৮টি স্কুলকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার দুই লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী রয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে সেখানে বিদ্যুতায়িত হয়ে একজন মারা গেছে। এ ছাড়া কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায় বন্যার পানিতে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
বন্যায় প্লাবিত হয়ে চরম বিপর্যয়ে পড়েছে খাগড়াছড়ি জেলার লক্ষাধিক বাসিন্দা। এরই মধ্যে চেঙ্গি, মাইনি ও কাসালং নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ২ থেকে ৬ ফুট অতিক্রম করায় আশপাশের এলাকা পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। সেখানে উদ্ধারকাজ ও ত্রাণ বিতরণে কাজ করছে সেনাবাহিনী।
বাসস জানায়, কয়েক দিনের টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে পার্বত্য জেলা রাঙামাটির কয়েকটি উপজেলার বন্যা পরিস্থিতির অবনতিসহ জেলার রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কের কয়েক জায়গায় পাহাড়ধসের ঘটনা ঘটেছে। জেলার বাঘাইছড়ি, কাউখালী উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। নতুন করে প্লাবিত হয়েছে লংগদু উপজেলার বিভিন্ন এলাকা। এতে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে শত শত পরিবার। হ্রদের পানি বেড়ে যাওয়ায় রাঙামাটির অন্যতম ঝুলন্ত সেতুটি প্রায় এক ফুট পানিতে ডুবে গেছে।
গত বৃহস্পতিবার ও আগের দিন বুধবার বিপৎসীমা ছাড়িয়ে ভয়াবহ রূপ নেয় হবিগঞ্জের খোয়াই নদ। তবে বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে ভারতের ত্রিপুরায় চাকমা গেট নামে খোয়াই নদের ব্যারাজ বন্ধ করা হয়। এরপর থেকে পানি কমতে শুরু করেছে। হবিগঞ্জের খোয়াই নদের পানি কমলেও পানিবন্দী হয়ে পড়েছে প্রায় ৫৭ হাজার ৫৬০ জন।
মৌলভীবাজারে এক সপ্তাহ পর শুক্রবার দুপুরে রোদের দেখা মিলেছে। জেলার মনু ও ধলাই নদের পানি কমতে শুরু করলেও রাজনগর, কমলগঞ্জ, কুলাউড়া, জুড়ী, বড়লেখা ও সদর উপজেলায় এখনো ৩ লাখ মানুষ পানিবন্দী রয়েছে।
সিলেটে নদ-নদীর পানি কিছুটা কমেছে। তবে এখনো কুশিয়ারা নদীর তিনটি পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। পাউবো সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ আজকের পত্রিকাকে বলেন, জেলার কোথাও বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি। ভারী বৃষ্টি আর উজানের ঢল না এলে বন্যারও আশঙ্কা নেই।
মৌলভীবাজারে মনু ও ধলাই নদের পানি কমতে শুরু করেছে। একই সঙ্গে বন্যাকবলিত বিভিন্ন এলাকার পানি ধীরগতিতে নামা শুরু করেছে। তবে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় এখনো প্রায় তিন লাখ মানুষ পানিবন্দী। আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছে ৭ হাজার ১৪৫ জন।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি ভবন নির্মাণে অনিয়ম পেয়েছে শিক্ষা অডিট অধিদপ্তর। ১৬০ কোটি টাকার বেশি ব্যয়ে এসব ভবন নির্মাণে কোনো প্রকল্প করা হয়নি। অর্থ মন্ত্রণালয়ের ছাড়পত্রও নেওয়া হয়নি। খরচ করা হয়েছে কর্তৃপক্ষের ‘ইচ্ছেমতো’। নিরীক্ষার তথ্য অনুযায়ী, সব মিলিয়ে দুই অর্থবছরে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ১০টি অনিয়মে
৪ ঘণ্টা আগেজুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের পরিবারকে আর্থিক সুবিধা প্রদান এবং আহত ব্যক্তিদের পুনর্বাসনে অন্তর্বর্তী সরকার যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে, সেগুলোকে আইনি কাঠামোর মধ্যে আনতে অধ্যাদেশ হচ্ছে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থান অধিদপ্তরকে এই আইনের আওতায় আনা হবে। এই অধিদপ্তরের মাধ্যমেই শহীদদের পরিবারকে
৪ ঘণ্টা আগেমিয়ানমারের সামরিক জান্তা দেশটির সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি-নিয়ন্ত্রিত রাখাইনে বাংলাদেশ হয়ে মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর কোনো ধরনের ব্যবস্থা চায় না। আবার অন্তর্বর্তী সরকার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে আগামী সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্কে যে আন্তর্জাতিক সম্মেলন করতে চায়, তাতেও জান্তার আপত্তি আছে।
৪ ঘণ্টা আগেহেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে করা ২০৩টি মামলা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। পুলিশের একাধিক সূত্র জানায়, আগামী তিন মাসের মধ্যে এসব মামলা প্রত্যাহারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ জন্য থানাগুলোতে তদন্ত শুরু হয়েছে, দেওয়া হবে চূড়ান্ত প্রতিবেদন। যেসব মামলার অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দেওয়া হয়ে
৪ ঘণ্টা আগে