Ajker Patrika

দেশে স্বাস্থ্যবিমা চালু করতে চায় সরকার: প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০১ মার্চ ২০২২, ১৫: ০০
দেশে স্বাস্থ্যবিমা চালু করতে চায় সরকার: প্রধানমন্ত্রী

সরকার দেশে স্বাস্থ্যবিমা চালু করতে চায় বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘আমরা স্বাস্থ্যবিমাও চালু করতে চাই। এ জন্য কাজ শুরু করতে হবে।’

‘জাতীয় বিমা দিবস-২০২২’ উদ্‌যাপন উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে যুক্ত হন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘উন্নত বিশ্বের মতো বিমাব্যবস্থা আমাদের দেশেও চালু হোক, সেটাই আমরা চাই। আমাদের সরকার বেশ কয়েকটি ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিকে অনুমতি দিয়েছে, এগুলো আরও কার্যকর করতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘নির্বাচনী ওয়াদা অনুযায়ী আমরা সবার জন্য সর্বজনীন পেনশন-ব্যবস্থা চালু করতে যাচ্ছি। এতে সবার জীবনের নিশ্চয়তা প্রদান সম্ভব হবে।’

বিমা নিয়ে মানুষের আস্থা বাড়াতে হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গ্রাহকের স্বার্থকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সেবা প্রদান করতে হবে। মানুষকে বিমার বিষয়ে আগ্রহী করতে নতুন নতুন পদ্ধতি কাজে লাগাতে হবে। জনগণকে উৎসাহী করতে আরও ব্যাপক প্রচার চালাতে হবে।’

বিমাসেবা জনপ্রিয় করাসহ জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সরকারি-বেসরকারি বিমা কোম্পানিগুলোকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অনেকেই ব্যবসা করতে গিয়ে বিমা করে। এর পরে ভুল বা অসত্য তথ্য দিয়ে কিংবা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে প্রিমিয়াম থেকে টাকা দাবি করে। আসলে হয়তো এই দাবি সঠিক নয়। এসব বিষয়ে আমাদের সতর্ক হতে হবে। যারা এসব পরীক্ষা করে, তাদেরও ভালোভাবে শিক্ষা দিতে হবে। তারা যেন আবার অন্য কোনোভাবে ওই অল্প ক্ষতিকে বড় ক্ষতি করে না দেখায়।’

গ্রাহক যাতে হয়রানির শিকার না হয়, সে বিষয়ে খেয়াল রাখার অনুরোধ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিমা মানে আমানত। তাই কেউ যেন তার প্রাপ্য চাইতে গিয়ে হয়রানির শিকার না হয়। বিমা নিয়ে নানা হয়রানি হয়—এসব বন্ধ করতে হবে।’

বিমা দাবি নিষ্পত্তি ও বিমার আর্থিক লেনদেনে আমাদের আরও সতর্ক হতে হবে জানিয়ে সরকার প্রধান বলেন, ‘গ্রাহকেরা বিমার ক্ষেত্রে প্রিমিয়ামটা যাতে সঠিকভাবে দেন, সেটাও যেমন প্রয়োজন, আবার বিমার টাকাও যেন সঠিকভাবে পান, সে বিষয়েও যত্নবান হওয়া প্রয়োজন।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিদেশগামী বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য প্রবাসী কর্মী বিমা, বন্যা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষতি মোকাবিলায় হাওর এলাকায় সীমিত পরিসরে আবহাওয়া সূচকভিত্তিক শস্যবিমা চালু করা হয়েছে। পদ্মা বহুমুখী সেতু, ঢাকা মেট্রোরেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের মতো মেগা প্রকল্পগুলোর বিমা ঝুঁকি সাধারণ বিমা করপোরেশন গ্রহণ করেছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের পিতা-মাতা/অভিভাবকের অকালমৃত্যুতে/শারীরিক অক্ষমতায় তাঁদের শিক্ষাজীবন যাতে ব্যাহত না হয়, সে বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে ‘বঙ্গবন্ধু শিক্ষা বিমা’ পরিকল্প চালু করা হয়েছে। সর্বসাধারণের দুর্ঘটনাজনিত ক্ষয়ক্ষতি কমাতে সাধারণ বিমা করপোরেশন ‘বঙ্গবন্ধু সুরক্ষা বিমা’ চালু করেছে। বাংলাদেশ এখন ডিজিটাল। বিমাব্যবস্থাকেও ডিজিটালাইজ ও অটোমেশনের মধ্যে আনতে হবে এবং নতুন নতুন প্রযুক্তি বিমা খাতে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।’

জাতির পিতা বেঁচে থাকলে ৪০ বছর আগেই বাংলাদেশ উন্নত দেশে পরিণত হতো জানিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘স্বাধীনতা-পরবর্তী মাত্র সাড়ে তিন বছরে তিনি বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশের মর্যাদা এনে দেন। তাঁর সময়ে ৯ ভাগের বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছিল।’

বিমাশিল্পের উন্নয়নে বঙ্গবন্ধুর কার্যক্রম তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বিমাপ্রতিষ্ঠানসমূহকে তত্ত্বাবধান করতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে বিমা অধিদপ্তর গঠন করেন। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেন।’

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিআইএ) সভাপতি শেখ কবির হোসেন প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত