Ajker Patrika

দক্ষিণ এশিয়া ও আসিয়ানের মধ্যে সেতুবন্ধ গড়তে চায় বাংলাদেশ: ড. ইউনূস

অনলাইন ডেস্ক
টোকিওতে নিক্কেই বার্ষিক ‘ফিউচার অব এশিয়া’ সম্মেলনে ড. ইউনূস। ছবি: নিক্কেই এশিয়ার সৌজন্যে
টোকিওতে নিক্কেই বার্ষিক ‘ফিউচার অব এশিয়া’ সম্মেলনে ড. ইউনূস। ছবি: নিক্কেই এশিয়ার সৌজন্যে

বর্তমান অস্থির বিশ্বে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বাড়ানোর জন্য বাংলাদেশকে আঞ্চলিক জোটগুলোর মধ্যে সেতুবন্ধকারী হিসেবে গড়ে তোলার আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আজ বৃহস্পতিবার (২৯ মে) টোকিওতে নিক্কেই বার্ষিক ‘ফিউচার অব এশিয়া’ সম্মেলনে মূল বক্তা হিসেবে তিনি এই আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করেন। ড. ইউনূস বলেন, ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক অনিশ্চয়তার মধ্যে দেশগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। বাংলাদেশ আসিয়ানের সীমান্তবর্তী দেশ উল্লেখ করে তিনি এই জোটে যোগদানের ইচ্ছাও প্রকাশ করেন।

সম্মেলনে ড. ইউনূস বলেন, ‘আঞ্চলিক বাণিজ্য অংশীদারত্ব উন্নত করতে আমাদের এখনই কাজ করতে হবে। ক্রমবর্ধমান সংরক্ষণবাদের বিরুদ্ধে আমাদের একটি শক্তিশালী প্রযুক্তি ইকোসিস্টেম গড়ে তোলা উচিত, যা হবে অন্তর্ভুক্তিমূলক, ন্যায্য ও টেকসই।’

তিনি জানান, বাংলাদেশ বঙ্গোপসাগরীয় দেশগুলোর আঞ্চলিক সহযোগিতা জোটে (বিমসটেক) সক্রিয়ভাবে জড়িত। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক অনিশ্চয়তার মধ্যে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই সাতটি দেশ (বিমসটেক) এক জোট হয়ে নিজেদের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করতে পারে।

১৯৮৫ সালে ঢাকায় প্রতিষ্ঠিত আরেকটি আঞ্চলিক চুক্তি সার্কের অপূর্ণ আকাঙ্ক্ষা নিয়েও আক্ষেপ প্রকাশ করেন তিনি। ড. ইউনূস বলেন, সার্ক প্রতিষ্ঠার সময় এর প্রবক্তারা ‘আমাদের নিজস্ব ইউরোপীয় ইউনিয়ন, এমন একধরনের জোট তৈরি করার আকাঙ্ক্ষা করেছিলেন, যাতে আমরা একে অপরকে দেখতে যেতে পারি।’ কিন্তু তিনি হতাশা প্রকাশ করেন বলেন, তিনি যখন তাঁর দেশের নেতৃত্ব দিতে আসেন, তখন অভ্যন্তরীণ সংঘাত সার্ককে কার্যত অর্থহীন করে তুলেছে। তবে তিনি আশা প্রকাশ করেন, ‘বিমসটেক, সার্ক, আসিয়ানের মতো সংস্থা সবাইকে একত্রিত হওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানাবে।’

গত বছরের আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পতন হলে ড. ইউনূস বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব নেন। ক্ষুদ্রঋণের পথিকৃৎ ও নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী ড. ইউনূস ইতিমধ্যেই সংস্কারের মাধ্যমে একটি আনুষ্ঠানিক সরকার গঠনের লক্ষ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতির কথাও জানিয়েছেন।

সম্মেলনে ড. ইউনূস এই নির্বাচনের বিষয়েও কথা বলেন। সম্প্রতি আসন্ন নির্বাচনের সময় নিয়ে বাংলাদেশে উত্তেজনা বেড়েছে। তিনি ২০২৬ সালের মাঝামাঝি নাগাদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিলেন। তবে গত সপ্তাহে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের কথা বললে দেশের অভ্যন্তরে চাপ বাড়ে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যেও এই বিষয়টি নিয়ে অসন্তুষ্টি লক্ষ করা গেছে।

তবে ড. ইউনূস বলেন, ‘সবকিছু নির্ভর করবে আমরা কতটা সংস্কার করতে পেরেছি তার ওপর। আমরা দেশকে পুরোনো প্রতিষ্ঠানগুলোর দুর্নীতি ও তাদের দুর্বল কাঠামোর ওপর ছেড়ে দিতে চাই না। আমাদের কাজ হলো সংস্কার প্রক্রিয়া সমাপ্ত করা। তারপর নবনির্বাচিত নেতৃত্বের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা।’

উল্লেখ্য, এ বছরের ‘ফিউচার অব এশিয়া’ সম্মেলনে ‘একটি অস্থির বিশ্বে এশিয়ার চ্যালেঞ্জ’ থিম নিয়ে আলোচনা করার জন্য রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক ব্যক্তিত্বরা একত্রিত হয়েছেন। সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন বাণিজ্য নীতি দীর্ঘদিনের প্রতিষ্ঠিত বৈশ্বিক নিয়মগুলোকে ব্যাহত করেছে। এমন পরিস্থিতিতে আঞ্চলিক জোটগুলো একত্রিত হয়ে কীভাবে এই সংকট কাটাতে পারে সেটিও এই সম্মেলনের আলোচনার বিষয়।

সম্মেলনে অন্য বক্তাদের মধ্যে সিঙ্গাপুরের উপপ্রধানমন্ত্রী গান কিম ইয়ং, জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা এবং পলাউয়ের প্রেসিডেন্ট সুরাঙ্গেল হুইপস জুনিয়র উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শেখ হাসিনা যাঁকে ঢাকায় ‘হত্যা করলেন’, তিনি ময়মনসিংহে জীবিত!

চরফ্যাশন থেকে গেটিসবার্গ কলেজ

জীবিত ভাইকে জুলাই আন্দোলনে নিহত দেখিয়ে মামলায় সাক্ষীও দুই ভাই, নেপথ্যে যা জানা গেল

নগদে স্ত্রীর চাকরি, স্বার্থের সংঘাতে জড়ালেন নাহিদের সাবেক পিএ আতিক মুর্শেদ

যুক্তরাষ্ট্রে সি চিন পিংয়ের মেয়েকে বহিষ্কারের দাবি, হঠাৎ কেন এই বিতর্ক

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত