Ajker Patrika

রোহিঙ্গা নিপীড়নকে ‘গণহত্যা’ স্বীকৃতি দিল যুক্তরাষ্ট্র

কূটনৈতিক প্রতিবেদক, ঢাকা
রোহিঙ্গা নিপীড়নকে ‘গণহত্যা’ স্বীকৃতি দিল যুক্তরাষ্ট্র

মিয়ানমারের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠীর ওপর দেশটির সামরিক বাহিনীর চালানো নিপীড়নকে প্রথমবারের মতো ‘গণহত্যা’ বলে বর্ণনা করল যুক্তরাষ্ট্র। 

মার্কিন সম্প্রচার মাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। 

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছেন, তিনি নিশ্চিত যে, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ২০১৬ এবং ২০১৭ সালে দেশের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে গণহত্যা এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ করেছে। 

মার্কিন হলোকাস্ট মেমোরিয়াল মিউজিয়ামে দেওয়া আনুষ্ঠানিক এ ঘোষণাকে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। যেখানে এর আগে ট্রাম্প প্রশাসন গণহত্যা, ধর্ষণ এবং নির্যাতনসহ নৃশংসতাকে গণহত্যা বা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করতে অস্বীকার করে। 

মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী অভ্যুত্থান করে দেশটির নির্বাচিত বেসামরিক সরকারকে উৎখাত করার এক বছরেরও বেশি সময় পরে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এমন ঘোষণা এল। 

ব্লিঙ্কেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে যে, হলোকাস্টের বাইরে গণহত্যা আরও সাতবার সংঘটিত হয়েছিল। আজ অষ্টম ঘটনা হিসেবে আমি বলছি যে, বার্মিজ সামরিক বাহিনীর সদস্যরা রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ করেছে। 

রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যার বিষয়ে বাইডেন প্রশাসন আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছে—এ খবর কয়েক দিন আগে প্রথম প্রকাশ করে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। 

মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর যে নির্মমতা চালানো হয়েছে, জাতিসংঘ সেটিকে জাতিগত নিধনযজ্ঞ বলে আসছিল শুরু থেকেই। তবে হত্যা, ধর্ষণ, জ্বালাও-পোড়াও এসব ঘটনাকে ‘গণহত্যা’ বলতে দ্বিধায় ছিল মার্কিন প্রশাসন। 

 ২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমারের দক্ষিণ-পশ্চিমে মুসলিম সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠীর ওপর দেশটির সেনাবাহিনী ব্যাপক দমন-পীড়ন শুরু করলে প্রায় ১০ লাখ মানুষ সীমান্ত পার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। 

ওই ঘটনায় মিয়ানমারের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ আনার প্রস্তাব করে জাতিসংঘে গতকাল রোববার এক বিবৃতিতে মার্কিন সিনেটের পররাষ্ট্র সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির সদস্য ও ডেমোক্রেট সিনেটর জেফ মার্কলে বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের ওপর বর্বরতাকে বাইডেন প্রশাসন শেষ পর্যন্ত গণহত্যা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ায় আমি তাদের প্রশংসা করছি। এ ঘোষণাটি দীর্ঘ প্রতীক্ষিত হলেও শেষ পর্যন্ত তা এসেছে এবং এই নিষ্ঠুর শাসকগোষ্ঠীকে জবাবদিহির আওতায় আনতে এটা একটি শক্তিশালী ও বিশেষভাবে গুরুত্ববহ পদক্ষেপ। আমেরিকাকে অবশ্যই এ ক্ষেত্রে বিশ্বের সামনে নেতৃত্বে আসতে হবে এটা স্পষ্ট করার জন্য যে, এ ধরনের নৃশংসতা কখনোই মেনে নেওয়া হবে না, ধামাচাপা পড়ে যাবে না, সেটা যেখানেই ঘটুক না কেন।’ 

 ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, মিয়ানমারের উত্তরের রাখাইন রাজ্যে ভয়ানক, বিস্তৃত ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সেখানকার জনগোষ্ঠীর মধ্যে ত্রাস সৃষ্টি করেছে এবং রোহিঙ্গাদের আবাস থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। 

মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় জড়িত হিসেবে মিয়ানমারের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা মিন অং হ্লায়িংসহ কয়েকজন সামরিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এরই মধ্যে নিষেধাজ্ঞাও দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। 

এদিকে ইউরোপিয়ান রোহিঙ্গা কাউন্সিল (ইআরসি) টুইটারে এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের এ পদক্ষেপকে স্বাগত জানানো হয়েছে। এর মাধ্যমে দোষীরা জবাবদিহির আওতায় আসবে এবং ভবিষ্যতে গণহত্যা বন্ধ করা সম্ভব হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল নিয়ে ভারতের সঙ্গে উত্তেজনা, চ্যালেঞ্জের মুখে বাংলাদেশ

ডিএনসিসির পদ ছাড়লেন এস্তোনিয়ার নাগরিক আমিনুল ইসলাম

কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর অতর্কিত গুলি, নিহত ২৬

র‍্যাবের গুলিতে নিহত কলেজছাত্র সিয়াম মাদক কারবারি নয়, দাবি পরিবারের

চীনা পণ্যে শুল্ক ‘উল্লেখযোগ্য’ পরিমাণে কমিয়ে সুখে বসবাসের ঘোষণা ট্রাম্পের

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত