Ajker Patrika

জলবায়ু সম্মেলনে ‘থ্রি জিরো’ তত্ত্ব তুলে ধরলেন ড. ইউনূস

  • ওয়ার্ল্ড লিডারস ক্লাইমেট অ্যাকশন সামিটের উদ্বোধনী অধিবেশনে বক্তব্য দেন প্রধান উপদেষ্টা।
  • নতুন বিশ্ব গড়তে শূন্য বর্জ্য, শূন্য কার্বন ও শূন্য বেকারত্বে জোর ড. ইউনূসের।
  • জলবায়ু পরিবর্তনের সমস্যাগুলো মানবসৃষ্ট, এর সমাধানও মানুষের হাতে।
সৈয়দ ঋয়াদ, আজারবাইজান থেকে
আপডেট : ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১১: ০৯
কপ২৯-এর ওয়ার্ল্ড লিডারস ক্লাইমেট অ্যাকশন সামিটের উদ্বোধনী অধিবেশনে বক্তব্য দেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে। ছবি: এএফপি
কপ২৯-এর ওয়ার্ল্ড লিডারস ক্লাইমেট অ্যাকশন সামিটের উদ্বোধনী অধিবেশনে বক্তব্য দেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে। ছবি: এএফপি

জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলা করে নতুন বিশ্ব গড়তে জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলনে ‘থ্রি জিরো’ তত্ত্ব তুলে ধরেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের সমস্যাগুলো মানবসৃষ্ট। এ সমস্যার সমাধানে ও সভ্যতা টিকিয়ে রাখতে মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে। এর জন্য জরুরি ‘শূন্য বর্জ্য, শূন্য কার্বন ও শূন্য বেকারত্ব’।

আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে গতকাল বুধবার কপ২৯-এর ওয়ার্ল্ড লিডারস ক্লাইমেট অ্যাকশন সামিটের উদ্বোধনী অধিবেশনে দেওয়া বক্তৃতায় ড. ইউনূস এসব কথা বলেন।

প্রধান উপদেষ্টা নতুন পৃথিবী বিনির্মাণে নিজের আগের থ্রি জিরো তত্ত্বের সঙ্গে এবার তরুণদের যুক্ত করেছেন। তিনি বলেছেন, নিত্যপণ্যের ব্যবহার সীমিত করতে হবে, যেন কোনো বর্জ্য অবশিষ্ট না থাকে। জীবনযাত্রাও হবে শূন্য কার্বনের ওপর ভিত্তি করে, যেখানে কোনো জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার থাকবে না, থাকবে শুধু নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার। পাশাপাশি বেকারত্বের হার শূন্যে নামাতে হবে। তিনি এই ‘তিন শূন্যের’ ওপর ভিত্তি করে নতুন জীবনধারা গড়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

ড. ইউনূস বলেন, ‘পরিবেশ বিপর্যয় একটি বড় সমস্যা। এর থেকে উত্তরণে এখনই আমাদের সোচ্চার হতে হবে। তা না হলে জলবায়ু পরিবর্তনের যে করাল থাবা, তার থেকে কেউ রক্ষা পাবে না। আমি মনে করি, জলবায়ু পরিবর্তনে বিরূপ প্রভাব কোনো ব্যক্তিগত সমস্যা নয় বা কোনো একক জাতির একক সমস্যা নয়। তাই এর থেকে উত্তরণে সবাইকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘তরুণেরা এই জীবনধারাকে পছন্দ হিসেবে বেছে নেবে। প্রতিটি যুবক তিন শূন্যভিত্তিক ব্যক্তি হিসেবে গড়ে উঠবে। এ গ্রহের নিরাপত্তার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ একটি নতুন জীবনধারা গ্রহণ করা প্রয়োজন, যেখানে সবাই বসবাস করতে পারবে। তরুণ প্রজন্ম আমাদের এগিয়ে নেবে। আমরা যদি একসঙ্গে স্বপ্ন দেখি, তবে তা সম্ভব হবে।’

বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘জলবায়ু সংকট তীব্রতর হচ্ছে এবং সে কারণে মানবসভ্যতা মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। মানুষ সভ্যতা বিধ্বংসী ও বিপজ্জনক বিষয়গুলোকে সামনে আনছে। একটি নতুন সভ্যতার ভিত্তি স্থাপনের জন্য আমাদের বুদ্ধিবৃত্তিক, আর্থিক ও যুবশক্তিকে কাজে লাগাতে হবে। কিন্তু আমরা এমন একটি জীবনধারা বেছে নিয়েছি, যা পরিবেশ ও মানবসভ্যতার বিরুদ্ধে কাজ করছে। এর থেকে আমাদের দ্রুত বেরিয়ে আসতে হবে।’

জলবায়ু সম্মেলনের তৃতীয় দিনে প্রধান উপদেষ্টা তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধি ও বিভিন্ন দেশের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে পৃথক বৈঠকে অংশ নেন। এসব বৈঠকে তিনি বাংলাদেশের জলবায়ুঝুঁকির পাশাপাশি এর থেকে পরিত্রাণের সম্ভাব্য উপায়গুলো নিয়ে আলোচনা করেন। নতুন বাসযোগ্য বিশ্ব তৈরির যে স্বপ্ন তিনি দেখছেন, সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে তরুণদের পাশাপাশি বিশ্বনেতাদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত