তানিম আহমেদ, ঢাকা
সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা ও দুর্ঘটনা কমাতে সড়ক পরিবহন আইন আরও যুগোপযোগী করার দাবি উঠেছে। অন্যদিকে চালকদের ক্ষেত্রে জামিন অযোগ্য গ্রেপ্তারের ধারা বাতিলের দাবি জানিয়ে আন্দোলনের হুমকি দিচ্ছেন পরিবহন খাতসংশ্লিষ্টরা। এমন অবস্থায় সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮ সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। পরিবহন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সড়কের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য যা যা প্রয়োজন, তা করতে হবে। এ ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া ঠিক হবে না।
পরিবহনশ্রমিকদের আপত্তির বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের মত হচ্ছে, আগে পরিবহন আইনে সর্বোচ্চ শাস্তি ছিল ৩০৪ ধারায় ৩ বছর সাজা। রাজধানীতে শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী দিয়া খানম মীম ও আবদুল করিম রাজীবকে বাসচাপা দেওয়ার মতো ঘটনায় বলা হয়েছিল, ৩০২ ধারায় হত্যা মামলা হবে; যেখানে যাবজ্জীবন ও মৃত্যুদণ্ডের বিধান আছে। সেটিতে আপত্তি পরিবহনসংশ্লিষ্টদের। তাঁদের চাপের মুখে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার আইনটি পুনর্বিবেচনা করে সংশোধনের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিল ২০২৪ সালে।
কিন্তু ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার কারণে সেটি সম্ভব হয়নি। সড়কে শৃঙ্খলা আনতে সরকার কঠোর অবস্থানের হুঁশিয়ারি দেওয়ার পরও আইনটি সংশোধনের দাবিতে আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছিলেন পরিবহনশ্রমিকেরা। গত ১০ আগস্ট সরকারের সঙ্গে বৈঠকের পরে আন্দোলন প্রত্যাহার করেন তাঁরা।
সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮ সংশোধনের জন্য মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, চালকদের সাজা ছাড়াও আইনের আরও কিছু দিক নিয়ে পরিবহন খাতসংশ্লিষ্টদের আপত্তি রয়েছে। তবে শুধু চালক নয়, জনগণের স্বার্থটাও দেখা হবে। কমিটি পরিবহন খাত ছাড়াও যেসব সংগঠন নিরাপদ সড়কের দাবিতে কাজ করে, তাদেরও মতামত নেবে। সবার মতামত নিয়ে আইনের সংশোধনী প্রস্তাব তৈরি করা হবে।
সড়ক পরিবহন আইনে চালকদের জামিন অযোগ্য ধারায় গ্রেপ্তারের সুযোগ বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করছেন সড়ক পরিবহনের মালিক ও শ্রমিকেরা। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব মো. সাইফুল আলম বলেন, ‘এটা তো মৌলিক অধিকারের বিরুদ্ধে। আমাদের দাবি যথাযথ তদন্ত করে দোষীদের চিহ্নিত করতে হবে। সেটি আমলে নিয়ে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। একই সঙ্গে চালকের গ্রেপ্তারের বিধানটি জামিনযোগ্য করতে হবে।’
২০১১ সালে মানিকগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান চলচ্চিত্র নির্মাতা তারেক মাসুদ, এটিএন নিউজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আশফাক মুনীর মিশুকসহ তাঁদের তিন সহকর্মী; যে মামলায় বাসচালককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি অর্থদণ্ডের রায় দেওয়া হয়। রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের শুনানি চলমান রয়েছে উচ্চ আদালতে।
এরপর ২০১৮ সালের ২৯ জুলাই রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সামনের বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় নিহত হয় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের দুই শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় বিচার চেয়ে প্রথমে মাঠে নামে ওই স্কুলের শিক্ষার্থীরা। পরে নিরাপদ সড়কের দাবিতে এই আন্দোলন ঢাকাসহ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর সাত বছর পেরিয়ে গেলেও সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানির চিত্র বদলায়নি।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) প্রতিবেদন অনুযায়ী, সড়ক দুর্ঘটনায় ২০২৪ সালে দেশে প্রাণহানি হয়েছে ৫ হাজার ৩৮০ জনের। রোড সেফটি ফাউন্ডেশন তাদের হিসাবে গত বছর সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা বলেছে ৭ হাজার ২৯৪ জনের। আবার যাত্রী কল্যাণ সমিতি ওই বছরে ৮ হাজার ৫৪৩ জনের মৃত্যুর তথ্য দিয়েছিল।
দেশের পরিবহন খাত দীর্ঘদিন ধরে ১৯৩৯ সালের ‘বেঙ্গল মোটর ভেহিকেল অ্যাক্ট’ এবং পরে ১৯৮৩ সালে মোটরযান অধ্যাদেশের মাধ্যমে পরিচালিত হতো। এই আইনে অপরাধের সাজা খুব কম ছিল। এরপর ২০১০ সালে নতুন সড়ক আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ২০১২, ২০১৩, ২০১৫ ও ২০১৬ সালে চার দফা খসড়া প্রণয়ন করা হয়। শুরুতে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর দায়ে সাত বছর থেকে যাবজ্জীবন পর্যন্ত শাস্তির বিধান রাখা হয়েছিল। কিন্তু প্রতিবার খসড়ার সময় পরিবহনমালিক-শ্রমিকদের পক্ষ থেকে শাস্তি কমানোর দাবি আসে। শেষ পর্যন্ত পাঁচ বছরের সাজার বিধান রেখে আইন পাস হয়।
সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮ তৈরির সময় পরিবহনমালিক-শ্রমিকেরা বিভিন্নভাবে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন বলে অভিযোগ করেছেন পরিবহন বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা চালকদের লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালানোর সুযোগ রাখার বিরোধিতাও করেছিলেন। ওই বছর সব পক্ষের সম্মতি নিয়েই আইনটি তৈরি করা হয়; যা পরে জাতীয় সংসদে পাস হয়। সে সময় বলা হয়েছিল, প্রজ্ঞাপন হলেই আইনটি বাস্তবায়িত হবে; যে প্রজ্ঞাপন হয়েছিল ২০১৯ সালের শেষের দিকে; যার জন্য আদালতে রিটও করেছিলেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।
২০১৮ সালের সড়ক পরিবহন আইনের মাধ্যমে প্রত্যাশার ৮০ শতাংশ পূরণ হয়েছে বলে মনে করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। তিনি বলেন, ঘাটতি থাকলেও আইনটি কার্যকর করা হোক। এর মাধ্যমে সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। দুর্ঘটনায় জীবনহানি নিয়ন্ত্রণে আসবে।
তবে মাঠপর্যায়ে সড়ক পরিবহন আইনের অনেক বিধান কার্যকর নয় বলে মনে করেন পরিবহন বিশেষজ্ঞরা। দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে তদন্ত সাপেক্ষে চালকদের নেতিবাচক নম্বর দেওয়ার বিধান আছে আইনে; যার একপর্যায়ে লাইসেন্স বাতিলের কথা বলা আছে। কিন্তু বাস্তবে তেমনটি প্রয়োগ হচ্ছে না বলেও মনে করেন তাঁরা।
এ ছাড়া সড়ক পরিবহন আইনে ক্ষতিপূরণের কথা বলা হলেও আইন দ্বারা গঠিত তহবিল সক্রিয় নয় বলে মনে করেন পরিবহন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ বা দেওয়ার জন্য কোনো মানদণ্ড বা প্রক্রিয়া কার্যকর নয়। অবহেলার কারণে হওয়া সড়ক দুর্ঘটনাকে মানবিক বিপর্যয় হিসেবে স্বীকৃতির পাশাপাশি বাধ্যতামূলক এবং সমন্বিত যাত্রীবিমা (জলপথ, সড়ক ও বিমানপথের আওতাভুক্ত), ক্ষতিগ্রস্তদের হারিয়ে যাওয়া কর্মক্ষম সময়সীমা, মৃত্যুর কারণে নির্ভরশীল পরিবারের সদস্যদের মানসিক ও শারীরিক ক্ষয়ক্ষতি ও দুর্ভোগ এবং দীর্ঘমেয়াদি আর্থিক ক্ষতি তাদের উন্নতি ও কল্যাণকে প্রভাবিত করে এমন বিধান আইনে সংযুক্ত করার দাবি বিশেষজ্ঞদের।
সড়ক পরিবহন আইনের মূল লক্ষ্য সড়কের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা বলে মনে করেন যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ও বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের (এআরআই) সাবেক পরিচালক অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান। তিনি বলেন, যদি কোনো পক্ষ বা গোষ্ঠী সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে, তবে রাষ্ট্রের দায়িত্ব হবে নাগরিকদের নিরাপত্তা দেওয়া। এ জায়গায় কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া উচিত নয়। সড়কের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য যা যা প্রয়োজন, তা করতে হবে।
নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) আন্দোলনের ভাইস চেয়ারম্যান লিটন এরশাদ মনে করেন, সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮ পূর্ণাঙ্গ নয়। তিনি বলেন, ‘আইনের শিরোনামটিই ভুল বলে মনে করি। এটি হওয়া উচিত ছিল সড়ক পরিবহন ও সড়ক নিরাপত্তা আইন। সেটা হলে সড়ক নিরাপত্তার সব বিষয় আইনে আনা যেত। কিন্তু সড়ক পরিবহন আইন হওয়ায় সব বিষয় থাকলেও ব্যাখ্যার জায়গাতে অসম্পূর্ণতা থাকে।’
সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা ও দুর্ঘটনা কমাতে সড়ক পরিবহন আইন আরও যুগোপযোগী করার দাবি উঠেছে। অন্যদিকে চালকদের ক্ষেত্রে জামিন অযোগ্য গ্রেপ্তারের ধারা বাতিলের দাবি জানিয়ে আন্দোলনের হুমকি দিচ্ছেন পরিবহন খাতসংশ্লিষ্টরা। এমন অবস্থায় সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮ সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। পরিবহন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সড়কের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য যা যা প্রয়োজন, তা করতে হবে। এ ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া ঠিক হবে না।
পরিবহনশ্রমিকদের আপত্তির বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের মত হচ্ছে, আগে পরিবহন আইনে সর্বোচ্চ শাস্তি ছিল ৩০৪ ধারায় ৩ বছর সাজা। রাজধানীতে শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী দিয়া খানম মীম ও আবদুল করিম রাজীবকে বাসচাপা দেওয়ার মতো ঘটনায় বলা হয়েছিল, ৩০২ ধারায় হত্যা মামলা হবে; যেখানে যাবজ্জীবন ও মৃত্যুদণ্ডের বিধান আছে। সেটিতে আপত্তি পরিবহনসংশ্লিষ্টদের। তাঁদের চাপের মুখে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার আইনটি পুনর্বিবেচনা করে সংশোধনের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিল ২০২৪ সালে।
কিন্তু ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার কারণে সেটি সম্ভব হয়নি। সড়কে শৃঙ্খলা আনতে সরকার কঠোর অবস্থানের হুঁশিয়ারি দেওয়ার পরও আইনটি সংশোধনের দাবিতে আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছিলেন পরিবহনশ্রমিকেরা। গত ১০ আগস্ট সরকারের সঙ্গে বৈঠকের পরে আন্দোলন প্রত্যাহার করেন তাঁরা।
সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮ সংশোধনের জন্য মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, চালকদের সাজা ছাড়াও আইনের আরও কিছু দিক নিয়ে পরিবহন খাতসংশ্লিষ্টদের আপত্তি রয়েছে। তবে শুধু চালক নয়, জনগণের স্বার্থটাও দেখা হবে। কমিটি পরিবহন খাত ছাড়াও যেসব সংগঠন নিরাপদ সড়কের দাবিতে কাজ করে, তাদেরও মতামত নেবে। সবার মতামত নিয়ে আইনের সংশোধনী প্রস্তাব তৈরি করা হবে।
সড়ক পরিবহন আইনে চালকদের জামিন অযোগ্য ধারায় গ্রেপ্তারের সুযোগ বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করছেন সড়ক পরিবহনের মালিক ও শ্রমিকেরা। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব মো. সাইফুল আলম বলেন, ‘এটা তো মৌলিক অধিকারের বিরুদ্ধে। আমাদের দাবি যথাযথ তদন্ত করে দোষীদের চিহ্নিত করতে হবে। সেটি আমলে নিয়ে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। একই সঙ্গে চালকের গ্রেপ্তারের বিধানটি জামিনযোগ্য করতে হবে।’
২০১১ সালে মানিকগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান চলচ্চিত্র নির্মাতা তারেক মাসুদ, এটিএন নিউজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আশফাক মুনীর মিশুকসহ তাঁদের তিন সহকর্মী; যে মামলায় বাসচালককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি অর্থদণ্ডের রায় দেওয়া হয়। রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের শুনানি চলমান রয়েছে উচ্চ আদালতে।
এরপর ২০১৮ সালের ২৯ জুলাই রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সামনের বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় নিহত হয় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের দুই শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় বিচার চেয়ে প্রথমে মাঠে নামে ওই স্কুলের শিক্ষার্থীরা। পরে নিরাপদ সড়কের দাবিতে এই আন্দোলন ঢাকাসহ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর সাত বছর পেরিয়ে গেলেও সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানির চিত্র বদলায়নি।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) প্রতিবেদন অনুযায়ী, সড়ক দুর্ঘটনায় ২০২৪ সালে দেশে প্রাণহানি হয়েছে ৫ হাজার ৩৮০ জনের। রোড সেফটি ফাউন্ডেশন তাদের হিসাবে গত বছর সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা বলেছে ৭ হাজার ২৯৪ জনের। আবার যাত্রী কল্যাণ সমিতি ওই বছরে ৮ হাজার ৫৪৩ জনের মৃত্যুর তথ্য দিয়েছিল।
দেশের পরিবহন খাত দীর্ঘদিন ধরে ১৯৩৯ সালের ‘বেঙ্গল মোটর ভেহিকেল অ্যাক্ট’ এবং পরে ১৯৮৩ সালে মোটরযান অধ্যাদেশের মাধ্যমে পরিচালিত হতো। এই আইনে অপরাধের সাজা খুব কম ছিল। এরপর ২০১০ সালে নতুন সড়ক আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ২০১২, ২০১৩, ২০১৫ ও ২০১৬ সালে চার দফা খসড়া প্রণয়ন করা হয়। শুরুতে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর দায়ে সাত বছর থেকে যাবজ্জীবন পর্যন্ত শাস্তির বিধান রাখা হয়েছিল। কিন্তু প্রতিবার খসড়ার সময় পরিবহনমালিক-শ্রমিকদের পক্ষ থেকে শাস্তি কমানোর দাবি আসে। শেষ পর্যন্ত পাঁচ বছরের সাজার বিধান রেখে আইন পাস হয়।
সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮ তৈরির সময় পরিবহনমালিক-শ্রমিকেরা বিভিন্নভাবে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন বলে অভিযোগ করেছেন পরিবহন বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা চালকদের লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালানোর সুযোগ রাখার বিরোধিতাও করেছিলেন। ওই বছর সব পক্ষের সম্মতি নিয়েই আইনটি তৈরি করা হয়; যা পরে জাতীয় সংসদে পাস হয়। সে সময় বলা হয়েছিল, প্রজ্ঞাপন হলেই আইনটি বাস্তবায়িত হবে; যে প্রজ্ঞাপন হয়েছিল ২০১৯ সালের শেষের দিকে; যার জন্য আদালতে রিটও করেছিলেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।
২০১৮ সালের সড়ক পরিবহন আইনের মাধ্যমে প্রত্যাশার ৮০ শতাংশ পূরণ হয়েছে বলে মনে করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। তিনি বলেন, ঘাটতি থাকলেও আইনটি কার্যকর করা হোক। এর মাধ্যমে সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। দুর্ঘটনায় জীবনহানি নিয়ন্ত্রণে আসবে।
তবে মাঠপর্যায়ে সড়ক পরিবহন আইনের অনেক বিধান কার্যকর নয় বলে মনে করেন পরিবহন বিশেষজ্ঞরা। দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে তদন্ত সাপেক্ষে চালকদের নেতিবাচক নম্বর দেওয়ার বিধান আছে আইনে; যার একপর্যায়ে লাইসেন্স বাতিলের কথা বলা আছে। কিন্তু বাস্তবে তেমনটি প্রয়োগ হচ্ছে না বলেও মনে করেন তাঁরা।
এ ছাড়া সড়ক পরিবহন আইনে ক্ষতিপূরণের কথা বলা হলেও আইন দ্বারা গঠিত তহবিল সক্রিয় নয় বলে মনে করেন পরিবহন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ বা দেওয়ার জন্য কোনো মানদণ্ড বা প্রক্রিয়া কার্যকর নয়। অবহেলার কারণে হওয়া সড়ক দুর্ঘটনাকে মানবিক বিপর্যয় হিসেবে স্বীকৃতির পাশাপাশি বাধ্যতামূলক এবং সমন্বিত যাত্রীবিমা (জলপথ, সড়ক ও বিমানপথের আওতাভুক্ত), ক্ষতিগ্রস্তদের হারিয়ে যাওয়া কর্মক্ষম সময়সীমা, মৃত্যুর কারণে নির্ভরশীল পরিবারের সদস্যদের মানসিক ও শারীরিক ক্ষয়ক্ষতি ও দুর্ভোগ এবং দীর্ঘমেয়াদি আর্থিক ক্ষতি তাদের উন্নতি ও কল্যাণকে প্রভাবিত করে এমন বিধান আইনে সংযুক্ত করার দাবি বিশেষজ্ঞদের।
সড়ক পরিবহন আইনের মূল লক্ষ্য সড়কের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা বলে মনে করেন যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ও বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের (এআরআই) সাবেক পরিচালক অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান। তিনি বলেন, যদি কোনো পক্ষ বা গোষ্ঠী সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে, তবে রাষ্ট্রের দায়িত্ব হবে নাগরিকদের নিরাপত্তা দেওয়া। এ জায়গায় কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া উচিত নয়। সড়কের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য যা যা প্রয়োজন, তা করতে হবে।
নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) আন্দোলনের ভাইস চেয়ারম্যান লিটন এরশাদ মনে করেন, সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮ পূর্ণাঙ্গ নয়। তিনি বলেন, ‘আইনের শিরোনামটিই ভুল বলে মনে করি। এটি হওয়া উচিত ছিল সড়ক পরিবহন ও সড়ক নিরাপত্তা আইন। সেটা হলে সড়ক নিরাপত্তার সব বিষয় আইনে আনা যেত। কিন্তু সড়ক পরিবহন আইন হওয়ায় সব বিষয় থাকলেও ব্যাখ্যার জায়গাতে অসম্পূর্ণতা থাকে।’
তানিম আহমেদ, ঢাকা
সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা ও দুর্ঘটনা কমাতে সড়ক পরিবহন আইন আরও যুগোপযোগী করার দাবি উঠেছে। অন্যদিকে চালকদের ক্ষেত্রে জামিন অযোগ্য গ্রেপ্তারের ধারা বাতিলের দাবি জানিয়ে আন্দোলনের হুমকি দিচ্ছেন পরিবহন খাতসংশ্লিষ্টরা। এমন অবস্থায় সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮ সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। পরিবহন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সড়কের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য যা যা প্রয়োজন, তা করতে হবে। এ ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া ঠিক হবে না।
পরিবহনশ্রমিকদের আপত্তির বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের মত হচ্ছে, আগে পরিবহন আইনে সর্বোচ্চ শাস্তি ছিল ৩০৪ ধারায় ৩ বছর সাজা। রাজধানীতে শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী দিয়া খানম মীম ও আবদুল করিম রাজীবকে বাসচাপা দেওয়ার মতো ঘটনায় বলা হয়েছিল, ৩০২ ধারায় হত্যা মামলা হবে; যেখানে যাবজ্জীবন ও মৃত্যুদণ্ডের বিধান আছে। সেটিতে আপত্তি পরিবহনসংশ্লিষ্টদের। তাঁদের চাপের মুখে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার আইনটি পুনর্বিবেচনা করে সংশোধনের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিল ২০২৪ সালে।
কিন্তু ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার কারণে সেটি সম্ভব হয়নি। সড়কে শৃঙ্খলা আনতে সরকার কঠোর অবস্থানের হুঁশিয়ারি দেওয়ার পরও আইনটি সংশোধনের দাবিতে আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছিলেন পরিবহনশ্রমিকেরা। গত ১০ আগস্ট সরকারের সঙ্গে বৈঠকের পরে আন্দোলন প্রত্যাহার করেন তাঁরা।
সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮ সংশোধনের জন্য মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, চালকদের সাজা ছাড়াও আইনের আরও কিছু দিক নিয়ে পরিবহন খাতসংশ্লিষ্টদের আপত্তি রয়েছে। তবে শুধু চালক নয়, জনগণের স্বার্থটাও দেখা হবে। কমিটি পরিবহন খাত ছাড়াও যেসব সংগঠন নিরাপদ সড়কের দাবিতে কাজ করে, তাদেরও মতামত নেবে। সবার মতামত নিয়ে আইনের সংশোধনী প্রস্তাব তৈরি করা হবে।
সড়ক পরিবহন আইনে চালকদের জামিন অযোগ্য ধারায় গ্রেপ্তারের সুযোগ বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করছেন সড়ক পরিবহনের মালিক ও শ্রমিকেরা। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব মো. সাইফুল আলম বলেন, ‘এটা তো মৌলিক অধিকারের বিরুদ্ধে। আমাদের দাবি যথাযথ তদন্ত করে দোষীদের চিহ্নিত করতে হবে। সেটি আমলে নিয়ে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। একই সঙ্গে চালকের গ্রেপ্তারের বিধানটি জামিনযোগ্য করতে হবে।’
২০১১ সালে মানিকগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান চলচ্চিত্র নির্মাতা তারেক মাসুদ, এটিএন নিউজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আশফাক মুনীর মিশুকসহ তাঁদের তিন সহকর্মী; যে মামলায় বাসচালককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি অর্থদণ্ডের রায় দেওয়া হয়। রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের শুনানি চলমান রয়েছে উচ্চ আদালতে।
এরপর ২০১৮ সালের ২৯ জুলাই রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সামনের বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় নিহত হয় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের দুই শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় বিচার চেয়ে প্রথমে মাঠে নামে ওই স্কুলের শিক্ষার্থীরা। পরে নিরাপদ সড়কের দাবিতে এই আন্দোলন ঢাকাসহ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর সাত বছর পেরিয়ে গেলেও সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানির চিত্র বদলায়নি।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) প্রতিবেদন অনুযায়ী, সড়ক দুর্ঘটনায় ২০২৪ সালে দেশে প্রাণহানি হয়েছে ৫ হাজার ৩৮০ জনের। রোড সেফটি ফাউন্ডেশন তাদের হিসাবে গত বছর সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা বলেছে ৭ হাজার ২৯৪ জনের। আবার যাত্রী কল্যাণ সমিতি ওই বছরে ৮ হাজার ৫৪৩ জনের মৃত্যুর তথ্য দিয়েছিল।
দেশের পরিবহন খাত দীর্ঘদিন ধরে ১৯৩৯ সালের ‘বেঙ্গল মোটর ভেহিকেল অ্যাক্ট’ এবং পরে ১৯৮৩ সালে মোটরযান অধ্যাদেশের মাধ্যমে পরিচালিত হতো। এই আইনে অপরাধের সাজা খুব কম ছিল। এরপর ২০১০ সালে নতুন সড়ক আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ২০১২, ২০১৩, ২০১৫ ও ২০১৬ সালে চার দফা খসড়া প্রণয়ন করা হয়। শুরুতে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর দায়ে সাত বছর থেকে যাবজ্জীবন পর্যন্ত শাস্তির বিধান রাখা হয়েছিল। কিন্তু প্রতিবার খসড়ার সময় পরিবহনমালিক-শ্রমিকদের পক্ষ থেকে শাস্তি কমানোর দাবি আসে। শেষ পর্যন্ত পাঁচ বছরের সাজার বিধান রেখে আইন পাস হয়।
সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮ তৈরির সময় পরিবহনমালিক-শ্রমিকেরা বিভিন্নভাবে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন বলে অভিযোগ করেছেন পরিবহন বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা চালকদের লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালানোর সুযোগ রাখার বিরোধিতাও করেছিলেন। ওই বছর সব পক্ষের সম্মতি নিয়েই আইনটি তৈরি করা হয়; যা পরে জাতীয় সংসদে পাস হয়। সে সময় বলা হয়েছিল, প্রজ্ঞাপন হলেই আইনটি বাস্তবায়িত হবে; যে প্রজ্ঞাপন হয়েছিল ২০১৯ সালের শেষের দিকে; যার জন্য আদালতে রিটও করেছিলেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।
২০১৮ সালের সড়ক পরিবহন আইনের মাধ্যমে প্রত্যাশার ৮০ শতাংশ পূরণ হয়েছে বলে মনে করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। তিনি বলেন, ঘাটতি থাকলেও আইনটি কার্যকর করা হোক। এর মাধ্যমে সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। দুর্ঘটনায় জীবনহানি নিয়ন্ত্রণে আসবে।
তবে মাঠপর্যায়ে সড়ক পরিবহন আইনের অনেক বিধান কার্যকর নয় বলে মনে করেন পরিবহন বিশেষজ্ঞরা। দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে তদন্ত সাপেক্ষে চালকদের নেতিবাচক নম্বর দেওয়ার বিধান আছে আইনে; যার একপর্যায়ে লাইসেন্স বাতিলের কথা বলা আছে। কিন্তু বাস্তবে তেমনটি প্রয়োগ হচ্ছে না বলেও মনে করেন তাঁরা।
এ ছাড়া সড়ক পরিবহন আইনে ক্ষতিপূরণের কথা বলা হলেও আইন দ্বারা গঠিত তহবিল সক্রিয় নয় বলে মনে করেন পরিবহন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ বা দেওয়ার জন্য কোনো মানদণ্ড বা প্রক্রিয়া কার্যকর নয়। অবহেলার কারণে হওয়া সড়ক দুর্ঘটনাকে মানবিক বিপর্যয় হিসেবে স্বীকৃতির পাশাপাশি বাধ্যতামূলক এবং সমন্বিত যাত্রীবিমা (জলপথ, সড়ক ও বিমানপথের আওতাভুক্ত), ক্ষতিগ্রস্তদের হারিয়ে যাওয়া কর্মক্ষম সময়সীমা, মৃত্যুর কারণে নির্ভরশীল পরিবারের সদস্যদের মানসিক ও শারীরিক ক্ষয়ক্ষতি ও দুর্ভোগ এবং দীর্ঘমেয়াদি আর্থিক ক্ষতি তাদের উন্নতি ও কল্যাণকে প্রভাবিত করে এমন বিধান আইনে সংযুক্ত করার দাবি বিশেষজ্ঞদের।
সড়ক পরিবহন আইনের মূল লক্ষ্য সড়কের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা বলে মনে করেন যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ও বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের (এআরআই) সাবেক পরিচালক অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান। তিনি বলেন, যদি কোনো পক্ষ বা গোষ্ঠী সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে, তবে রাষ্ট্রের দায়িত্ব হবে নাগরিকদের নিরাপত্তা দেওয়া। এ জায়গায় কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া উচিত নয়। সড়কের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য যা যা প্রয়োজন, তা করতে হবে।
নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) আন্দোলনের ভাইস চেয়ারম্যান লিটন এরশাদ মনে করেন, সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮ পূর্ণাঙ্গ নয়। তিনি বলেন, ‘আইনের শিরোনামটিই ভুল বলে মনে করি। এটি হওয়া উচিত ছিল সড়ক পরিবহন ও সড়ক নিরাপত্তা আইন। সেটা হলে সড়ক নিরাপত্তার সব বিষয় আইনে আনা যেত। কিন্তু সড়ক পরিবহন আইন হওয়ায় সব বিষয় থাকলেও ব্যাখ্যার জায়গাতে অসম্পূর্ণতা থাকে।’
সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা ও দুর্ঘটনা কমাতে সড়ক পরিবহন আইন আরও যুগোপযোগী করার দাবি উঠেছে। অন্যদিকে চালকদের ক্ষেত্রে জামিন অযোগ্য গ্রেপ্তারের ধারা বাতিলের দাবি জানিয়ে আন্দোলনের হুমকি দিচ্ছেন পরিবহন খাতসংশ্লিষ্টরা। এমন অবস্থায় সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮ সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। পরিবহন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সড়কের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য যা যা প্রয়োজন, তা করতে হবে। এ ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া ঠিক হবে না।
পরিবহনশ্রমিকদের আপত্তির বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের মত হচ্ছে, আগে পরিবহন আইনে সর্বোচ্চ শাস্তি ছিল ৩০৪ ধারায় ৩ বছর সাজা। রাজধানীতে শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী দিয়া খানম মীম ও আবদুল করিম রাজীবকে বাসচাপা দেওয়ার মতো ঘটনায় বলা হয়েছিল, ৩০২ ধারায় হত্যা মামলা হবে; যেখানে যাবজ্জীবন ও মৃত্যুদণ্ডের বিধান আছে। সেটিতে আপত্তি পরিবহনসংশ্লিষ্টদের। তাঁদের চাপের মুখে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার আইনটি পুনর্বিবেচনা করে সংশোধনের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিল ২০২৪ সালে।
কিন্তু ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার কারণে সেটি সম্ভব হয়নি। সড়কে শৃঙ্খলা আনতে সরকার কঠোর অবস্থানের হুঁশিয়ারি দেওয়ার পরও আইনটি সংশোধনের দাবিতে আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছিলেন পরিবহনশ্রমিকেরা। গত ১০ আগস্ট সরকারের সঙ্গে বৈঠকের পরে আন্দোলন প্রত্যাহার করেন তাঁরা।
সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮ সংশোধনের জন্য মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, চালকদের সাজা ছাড়াও আইনের আরও কিছু দিক নিয়ে পরিবহন খাতসংশ্লিষ্টদের আপত্তি রয়েছে। তবে শুধু চালক নয়, জনগণের স্বার্থটাও দেখা হবে। কমিটি পরিবহন খাত ছাড়াও যেসব সংগঠন নিরাপদ সড়কের দাবিতে কাজ করে, তাদেরও মতামত নেবে। সবার মতামত নিয়ে আইনের সংশোধনী প্রস্তাব তৈরি করা হবে।
সড়ক পরিবহন আইনে চালকদের জামিন অযোগ্য ধারায় গ্রেপ্তারের সুযোগ বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করছেন সড়ক পরিবহনের মালিক ও শ্রমিকেরা। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব মো. সাইফুল আলম বলেন, ‘এটা তো মৌলিক অধিকারের বিরুদ্ধে। আমাদের দাবি যথাযথ তদন্ত করে দোষীদের চিহ্নিত করতে হবে। সেটি আমলে নিয়ে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। একই সঙ্গে চালকের গ্রেপ্তারের বিধানটি জামিনযোগ্য করতে হবে।’
২০১১ সালে মানিকগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান চলচ্চিত্র নির্মাতা তারেক মাসুদ, এটিএন নিউজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আশফাক মুনীর মিশুকসহ তাঁদের তিন সহকর্মী; যে মামলায় বাসচালককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি অর্থদণ্ডের রায় দেওয়া হয়। রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের শুনানি চলমান রয়েছে উচ্চ আদালতে।
এরপর ২০১৮ সালের ২৯ জুলাই রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সামনের বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় নিহত হয় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের দুই শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় বিচার চেয়ে প্রথমে মাঠে নামে ওই স্কুলের শিক্ষার্থীরা। পরে নিরাপদ সড়কের দাবিতে এই আন্দোলন ঢাকাসহ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর সাত বছর পেরিয়ে গেলেও সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানির চিত্র বদলায়নি।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) প্রতিবেদন অনুযায়ী, সড়ক দুর্ঘটনায় ২০২৪ সালে দেশে প্রাণহানি হয়েছে ৫ হাজার ৩৮০ জনের। রোড সেফটি ফাউন্ডেশন তাদের হিসাবে গত বছর সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা বলেছে ৭ হাজার ২৯৪ জনের। আবার যাত্রী কল্যাণ সমিতি ওই বছরে ৮ হাজার ৫৪৩ জনের মৃত্যুর তথ্য দিয়েছিল।
দেশের পরিবহন খাত দীর্ঘদিন ধরে ১৯৩৯ সালের ‘বেঙ্গল মোটর ভেহিকেল অ্যাক্ট’ এবং পরে ১৯৮৩ সালে মোটরযান অধ্যাদেশের মাধ্যমে পরিচালিত হতো। এই আইনে অপরাধের সাজা খুব কম ছিল। এরপর ২০১০ সালে নতুন সড়ক আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ২০১২, ২০১৩, ২০১৫ ও ২০১৬ সালে চার দফা খসড়া প্রণয়ন করা হয়। শুরুতে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর দায়ে সাত বছর থেকে যাবজ্জীবন পর্যন্ত শাস্তির বিধান রাখা হয়েছিল। কিন্তু প্রতিবার খসড়ার সময় পরিবহনমালিক-শ্রমিকদের পক্ষ থেকে শাস্তি কমানোর দাবি আসে। শেষ পর্যন্ত পাঁচ বছরের সাজার বিধান রেখে আইন পাস হয়।
সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮ তৈরির সময় পরিবহনমালিক-শ্রমিকেরা বিভিন্নভাবে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন বলে অভিযোগ করেছেন পরিবহন বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা চালকদের লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালানোর সুযোগ রাখার বিরোধিতাও করেছিলেন। ওই বছর সব পক্ষের সম্মতি নিয়েই আইনটি তৈরি করা হয়; যা পরে জাতীয় সংসদে পাস হয়। সে সময় বলা হয়েছিল, প্রজ্ঞাপন হলেই আইনটি বাস্তবায়িত হবে; যে প্রজ্ঞাপন হয়েছিল ২০১৯ সালের শেষের দিকে; যার জন্য আদালতে রিটও করেছিলেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।
২০১৮ সালের সড়ক পরিবহন আইনের মাধ্যমে প্রত্যাশার ৮০ শতাংশ পূরণ হয়েছে বলে মনে করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। তিনি বলেন, ঘাটতি থাকলেও আইনটি কার্যকর করা হোক। এর মাধ্যমে সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। দুর্ঘটনায় জীবনহানি নিয়ন্ত্রণে আসবে।
তবে মাঠপর্যায়ে সড়ক পরিবহন আইনের অনেক বিধান কার্যকর নয় বলে মনে করেন পরিবহন বিশেষজ্ঞরা। দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে তদন্ত সাপেক্ষে চালকদের নেতিবাচক নম্বর দেওয়ার বিধান আছে আইনে; যার একপর্যায়ে লাইসেন্স বাতিলের কথা বলা আছে। কিন্তু বাস্তবে তেমনটি প্রয়োগ হচ্ছে না বলেও মনে করেন তাঁরা।
এ ছাড়া সড়ক পরিবহন আইনে ক্ষতিপূরণের কথা বলা হলেও আইন দ্বারা গঠিত তহবিল সক্রিয় নয় বলে মনে করেন পরিবহন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ বা দেওয়ার জন্য কোনো মানদণ্ড বা প্রক্রিয়া কার্যকর নয়। অবহেলার কারণে হওয়া সড়ক দুর্ঘটনাকে মানবিক বিপর্যয় হিসেবে স্বীকৃতির পাশাপাশি বাধ্যতামূলক এবং সমন্বিত যাত্রীবিমা (জলপথ, সড়ক ও বিমানপথের আওতাভুক্ত), ক্ষতিগ্রস্তদের হারিয়ে যাওয়া কর্মক্ষম সময়সীমা, মৃত্যুর কারণে নির্ভরশীল পরিবারের সদস্যদের মানসিক ও শারীরিক ক্ষয়ক্ষতি ও দুর্ভোগ এবং দীর্ঘমেয়াদি আর্থিক ক্ষতি তাদের উন্নতি ও কল্যাণকে প্রভাবিত করে এমন বিধান আইনে সংযুক্ত করার দাবি বিশেষজ্ঞদের।
সড়ক পরিবহন আইনের মূল লক্ষ্য সড়কের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা বলে মনে করেন যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ও বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের (এআরআই) সাবেক পরিচালক অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান। তিনি বলেন, যদি কোনো পক্ষ বা গোষ্ঠী সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে, তবে রাষ্ট্রের দায়িত্ব হবে নাগরিকদের নিরাপত্তা দেওয়া। এ জায়গায় কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া উচিত নয়। সড়কের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য যা যা প্রয়োজন, তা করতে হবে।
নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) আন্দোলনের ভাইস চেয়ারম্যান লিটন এরশাদ মনে করেন, সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮ পূর্ণাঙ্গ নয়। তিনি বলেন, ‘আইনের শিরোনামটিই ভুল বলে মনে করি। এটি হওয়া উচিত ছিল সড়ক পরিবহন ও সড়ক নিরাপত্তা আইন। সেটা হলে সড়ক নিরাপত্তার সব বিষয় আইনে আনা যেত। কিন্তু সড়ক পরিবহন আইন হওয়ায় সব বিষয় থাকলেও ব্যাখ্যার জায়গাতে অসম্পূর্ণতা থাকে।’
আসিফ নজরুল বলেন, শ্রম আইনের ৯০ সেকশনে সংশোধন আনা হয়েছে। আইএলও বিশেষজ্ঞদের সুপারিশে আইনটি সংশোধন করা হয়েছে। কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানির বিষয়ে শাস্তির বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। প্রসূতিদের ওয়েলফেয়ার সুবিধা বাড়ানো হয়েছে।
২৪ মিনিট আগেপলাতক হিসেবে কারা বিবেচিত হবেন—এ প্রশ্নের জবাবে আসিফ নজরুল বলেন, আদালতে যাঁদের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে, তাঁদের হাজির হওয়ার জন্য বলা হয়েছে, অথচ হাজির হননি, পরে তাঁদের হাজির হওয়ার জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে—তাঁরাই পলাতক বলে গণ্য হবেন।
১ ঘণ্টা আগেআসামিদের কোনো অনুশোচনা হয়নি, তাঁরা উল্টো সেনাবাহিনীকে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে উসকানি দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সারা দেশে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আজ
৪ ঘণ্টা আগেঅ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা প্রত্যাশা করছি। বিচার যত কঠিনই হোক, বাধার প্রাচীর ভেঙে যদি ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা সম্ভব না হয়, তাহলে জাতি হিসেবে আমরা আগামী দিনে এগোতে পারব না। এই আসামিদের মৃত্যুদণ্ড হওয়া, মৃত্যুদণ্ডের মাধ্যমে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা একটি বড় ঘটনা হিসেবে অনেকেই দেখবেন
৫ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
গৃহকর্মী ও নাবিকদের শ্রমিকের মর্যাদা দিয়ে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) সুপারিশে সংশোধিত শ্রম অধ্যাদেশ-২০২৫ পাস করা হয়েছে।
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
তিনি বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের আজকের বৈঠকে এই অধ্যাদেশ পাস হয়।
আসিফ নজরুল বলেন, শ্রম আইনের ৯০ সেকশনে সংশোধন আনা হয়েছে। আইএলও বিশেষজ্ঞদের সুপারিশে আইনটি সংশোধন করা হয়েছে। কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানির বিষয়ে শাস্তির বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। প্রসূতিদের ওয়েলফেয়ার সুবিধা বাড়ানো হয়েছে।
উপদেষ্টা বলেন, আগে কর্মক্ষেত্রে নারী-পুরুষের মধ্যে বেতন বৈষম্য ছিল। সেটি তুলে দেওয়া হয়েছে। একই কাজের জন্য আগে নারীরা কম বেতন পেতেন। সেটিও তুলে দেওয়া হয়েছে। এখন তাঁরা সমহারে বেতন পাবেন। কর্মক্ষেত্রে কোনো দুর্ঘটনায় অঙ্গহানি হলে সেখানে ফান্ড গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই ফান্ডের সহায়তায় পুনর্বাসন ও চিকিৎসা হবে।
গৃহকর্মী ও নাবিকদের শ্রমিকের মর্যাদা দিয়ে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) সুপারিশে সংশোধিত শ্রম অধ্যাদেশ-২০২৫ পাস করা হয়েছে।
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
তিনি বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের আজকের বৈঠকে এই অধ্যাদেশ পাস হয়।
আসিফ নজরুল বলেন, শ্রম আইনের ৯০ সেকশনে সংশোধন আনা হয়েছে। আইএলও বিশেষজ্ঞদের সুপারিশে আইনটি সংশোধন করা হয়েছে। কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানির বিষয়ে শাস্তির বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। প্রসূতিদের ওয়েলফেয়ার সুবিধা বাড়ানো হয়েছে।
উপদেষ্টা বলেন, আগে কর্মক্ষেত্রে নারী-পুরুষের মধ্যে বেতন বৈষম্য ছিল। সেটি তুলে দেওয়া হয়েছে। একই কাজের জন্য আগে নারীরা কম বেতন পেতেন। সেটিও তুলে দেওয়া হয়েছে। এখন তাঁরা সমহারে বেতন পাবেন। কর্মক্ষেত্রে কোনো দুর্ঘটনায় অঙ্গহানি হলে সেখানে ফান্ড গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই ফান্ডের সহায়তায় পুনর্বাসন ও চিকিৎসা হবে।
সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা ও দুর্ঘটনা কমাতে সড়ক পরিবহন আইন আরও যুগোপযোগী করার দাবি উঠেছে। অন্যদিকে চালকদের ক্ষেত্রে জামিন অযোগ্য গ্রেপ্তারের ধারা বাতিলের দাবি জানিয়ে আন্দোলনের হুমকি দিচ্ছেন পরিবহন খাতসংশ্লিষ্টরা। এমন অবস্থায় সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮ সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
৩০ আগস্ট ২০২৫পলাতক হিসেবে কারা বিবেচিত হবেন—এ প্রশ্নের জবাবে আসিফ নজরুল বলেন, আদালতে যাঁদের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে, তাঁদের হাজির হওয়ার জন্য বলা হয়েছে, অথচ হাজির হননি, পরে তাঁদের হাজির হওয়ার জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে—তাঁরাই পলাতক বলে গণ্য হবেন।
১ ঘণ্টা আগেআসামিদের কোনো অনুশোচনা হয়নি, তাঁরা উল্টো সেনাবাহিনীকে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে উসকানি দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সারা দেশে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আজ
৪ ঘণ্টা আগেঅ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা প্রত্যাশা করছি। বিচার যত কঠিনই হোক, বাধার প্রাচীর ভেঙে যদি ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা সম্ভব না হয়, তাহলে জাতি হিসেবে আমরা আগামী দিনে এগোতে পারব না। এই আসামিদের মৃত্যুদণ্ড হওয়া, মৃত্যুদণ্ডের মাধ্যমে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা একটি বড় ঘটনা হিসেবে অনেকেই দেখবেন
৫ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
সংসদ নির্বাচনে কোনো পলাতক আসামি অংশ নিতে পারবেন না—এমন বিধান যুক্ত করে নির্বাচনসংক্রান্ত আইন গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধনের খসড়া অনুমোদন করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
আইন উপদেষ্টা জানিয়েছেন, তেজগাঁওয়ে আজ প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় আরপিও সংশোধনের খসড়া অনুমোদন করে উপদেষ্টা পরিষদ।
পলাতক হিসেবে কারা বিবেচিত হবেন—এ প্রশ্নের জবাবে আসিফ নজরুল বলেন, আদালতে যাঁদের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে, তাঁদের হাজির হওয়ার জন্য বলা হয়েছে, অথচ হাজির হননি, পরে তাঁদের হাজির হওয়ার জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে—তাঁরাই পলাতক বলে গণ্য হবেন।
উপদেষ্টা পরিষদ ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) প্রথা বাতিল করেছে জানিয়ে আসিফ নজরুল বলেন, নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীদের আয়-ব্যয়ের যাবতীয় হিসাব ছাড়াও দেশে-বিদেশে থাকা সব সম্পত্তির বিবরণ হলফনামায় দিতে হবে। এই হলফনামা নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে দেওয়া হবে।
সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের জনপ্রতি জামানত বাড়ানো হয়েছে বলেও জানান আইন উপদেষ্টা।
উপদেষ্টা বলেন, আগে জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের জনপ্রতি জামানত ছিল ২০ হাজার টাকা। সেটি বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করা হয়েছে। অধ্যাদেশে ‘না’ ভোটের বিধান রাখা হয়েছে। কোনো নির্বাচনী এলাকায় মাত্র একজন প্রার্থী থাকলে সেখানে ‘না’ ভোট হবে। ‘না’ ভোট বেশি পড়লে ওই আসনে পুনরায় ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
আসিফ নজরুল বলেন, আগে নির্বাচনী কাজে সম্পৃক্ত প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তাসহ হাজারখানেক মানুষ ভোটদানে বিরত থাকতেন। তাঁদের জন্য এবার পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। একই সঙ্গে প্রবাসীদের জন্যও পোস্টাল ব্যালটে ভোটের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
আইন উপদেষ্টা বলেন, আগে কোনো কেন্দ্রে গন্ডগোল হলে সেখানে ভোট বাতিল করা হতো। সংশোধিত আদেশে নির্বাচন কমিশন চাইলে এখন পুরো আসনের ভোট বাতিল করতে পারবে। সে ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনকে দেওয়া হয়েছে।
সংসদ নির্বাচনে কোনো পলাতক আসামি অংশ নিতে পারবেন না—এমন বিধান যুক্ত করে নির্বাচনসংক্রান্ত আইন গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধনের খসড়া অনুমোদন করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
আইন উপদেষ্টা জানিয়েছেন, তেজগাঁওয়ে আজ প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় আরপিও সংশোধনের খসড়া অনুমোদন করে উপদেষ্টা পরিষদ।
পলাতক হিসেবে কারা বিবেচিত হবেন—এ প্রশ্নের জবাবে আসিফ নজরুল বলেন, আদালতে যাঁদের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে, তাঁদের হাজির হওয়ার জন্য বলা হয়েছে, অথচ হাজির হননি, পরে তাঁদের হাজির হওয়ার জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে—তাঁরাই পলাতক বলে গণ্য হবেন।
উপদেষ্টা পরিষদ ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) প্রথা বাতিল করেছে জানিয়ে আসিফ নজরুল বলেন, নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীদের আয়-ব্যয়ের যাবতীয় হিসাব ছাড়াও দেশে-বিদেশে থাকা সব সম্পত্তির বিবরণ হলফনামায় দিতে হবে। এই হলফনামা নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে দেওয়া হবে।
সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের জনপ্রতি জামানত বাড়ানো হয়েছে বলেও জানান আইন উপদেষ্টা।
উপদেষ্টা বলেন, আগে জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের জনপ্রতি জামানত ছিল ২০ হাজার টাকা। সেটি বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করা হয়েছে। অধ্যাদেশে ‘না’ ভোটের বিধান রাখা হয়েছে। কোনো নির্বাচনী এলাকায় মাত্র একজন প্রার্থী থাকলে সেখানে ‘না’ ভোট হবে। ‘না’ ভোট বেশি পড়লে ওই আসনে পুনরায় ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
আসিফ নজরুল বলেন, আগে নির্বাচনী কাজে সম্পৃক্ত প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তাসহ হাজারখানেক মানুষ ভোটদানে বিরত থাকতেন। তাঁদের জন্য এবার পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। একই সঙ্গে প্রবাসীদের জন্যও পোস্টাল ব্যালটে ভোটের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
আইন উপদেষ্টা বলেন, আগে কোনো কেন্দ্রে গন্ডগোল হলে সেখানে ভোট বাতিল করা হতো। সংশোধিত আদেশে নির্বাচন কমিশন চাইলে এখন পুরো আসনের ভোট বাতিল করতে পারবে। সে ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনকে দেওয়া হয়েছে।
সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা ও দুর্ঘটনা কমাতে সড়ক পরিবহন আইন আরও যুগোপযোগী করার দাবি উঠেছে। অন্যদিকে চালকদের ক্ষেত্রে জামিন অযোগ্য গ্রেপ্তারের ধারা বাতিলের দাবি জানিয়ে আন্দোলনের হুমকি দিচ্ছেন পরিবহন খাতসংশ্লিষ্টরা। এমন অবস্থায় সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮ সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
৩০ আগস্ট ২০২৫আসিফ নজরুল বলেন, শ্রম আইনের ৯০ সেকশনে সংশোধন আনা হয়েছে। আইএলও বিশেষজ্ঞদের সুপারিশে আইনটি সংশোধন করা হয়েছে। কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানির বিষয়ে শাস্তির বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। প্রসূতিদের ওয়েলফেয়ার সুবিধা বাড়ানো হয়েছে।
২৪ মিনিট আগেআসামিদের কোনো অনুশোচনা হয়নি, তাঁরা উল্টো সেনাবাহিনীকে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে উসকানি দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সারা দেশে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আজ
৪ ঘণ্টা আগেঅ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা প্রত্যাশা করছি। বিচার যত কঠিনই হোক, বাধার প্রাচীর ভেঙে যদি ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা সম্ভব না হয়, তাহলে জাতি হিসেবে আমরা আগামী দিনে এগোতে পারব না। এই আসামিদের মৃত্যুদণ্ড হওয়া, মৃত্যুদণ্ডের মাধ্যমে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা একটি বড় ঘটনা হিসেবে অনেকেই দেখবেন
৫ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আসামিদের কোনো অনুশোচনা হয়নি, তাঁরা উল্টো সেনাবাহিনীকে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে উসকানি দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সারা দেশে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আজ বৃহস্পতিবার যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের সময় এ কথা বলেন তিনি।
তাজুল ইসলাম বলেন, সবকিছু অকাট্যভাবে প্রমাণ করা হয়েছে। পৃথিবীর যেকোনো আদালতে এগুলো অকাট্য হিসেবে প্রমাণিত হবে। যাঁদের এখানে আসামি করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে কোনো অনুশোচনা হয়নি। উল্টো কদিন আগে সেনাবাহিনীকে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে উসকানি দিয়েছে। তবে সেনাবাহিনী সে ফাঁদে পা দেয়নি।
আইনের প্রসঙ্গে চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, ‘এটি বিশেষ আইন। এটাকে সুরক্ষা দেওয়া হয়েছে সংবিধান দ্বারা। আন্তর্জাতিক আদালতের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এই আইন সংশোধন করা হয়েছে।’
তাজুল ইসলাম বলেন, ভবিষ্যতে কোনো শাসক যদি জনগণকে হত্যা করার চেষ্টা করে; এই বিচার তাঁদের জন্য প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করবে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ছাড়া এই মামলার অপর আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। তিনি দায় স্বীকার করে রাজসাক্ষী হয়েছেন।
শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে মামলায় আজকে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়েছে। আগামী ১৩ নভেম্বর রায়ের দিন নির্ধারণ করবেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
এ ছাড়া শেষ দিনে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের সময় শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন বলেন, ‘শেখ হাসিনা পালিয়ে যাননি। তাঁকে যেতে বাধ্য করা হয়েছে। আর সাবেক আইজিপি নিজে বাঁচার জন্য অন্যের ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা করেছেন। তাঁর বক্তব্য গ্রহণযোগ্য নয়।’
আমির হোসেন মনে করেন, ন্যায়বিচার হলে আসামিরা খালাস পাবেন।
আরও খবর পড়ুন:
আসামিদের কোনো অনুশোচনা হয়নি, তাঁরা উল্টো সেনাবাহিনীকে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে উসকানি দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সারা দেশে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আজ বৃহস্পতিবার যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের সময় এ কথা বলেন তিনি।
তাজুল ইসলাম বলেন, সবকিছু অকাট্যভাবে প্রমাণ করা হয়েছে। পৃথিবীর যেকোনো আদালতে এগুলো অকাট্য হিসেবে প্রমাণিত হবে। যাঁদের এখানে আসামি করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে কোনো অনুশোচনা হয়নি। উল্টো কদিন আগে সেনাবাহিনীকে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে উসকানি দিয়েছে। তবে সেনাবাহিনী সে ফাঁদে পা দেয়নি।
আইনের প্রসঙ্গে চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, ‘এটি বিশেষ আইন। এটাকে সুরক্ষা দেওয়া হয়েছে সংবিধান দ্বারা। আন্তর্জাতিক আদালতের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এই আইন সংশোধন করা হয়েছে।’
তাজুল ইসলাম বলেন, ভবিষ্যতে কোনো শাসক যদি জনগণকে হত্যা করার চেষ্টা করে; এই বিচার তাঁদের জন্য প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করবে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ছাড়া এই মামলার অপর আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। তিনি দায় স্বীকার করে রাজসাক্ষী হয়েছেন।
শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে মামলায় আজকে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়েছে। আগামী ১৩ নভেম্বর রায়ের দিন নির্ধারণ করবেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
এ ছাড়া শেষ দিনে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের সময় শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন বলেন, ‘শেখ হাসিনা পালিয়ে যাননি। তাঁকে যেতে বাধ্য করা হয়েছে। আর সাবেক আইজিপি নিজে বাঁচার জন্য অন্যের ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা করেছেন। তাঁর বক্তব্য গ্রহণযোগ্য নয়।’
আমির হোসেন মনে করেন, ন্যায়বিচার হলে আসামিরা খালাস পাবেন।
আরও খবর পড়ুন:
সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা ও দুর্ঘটনা কমাতে সড়ক পরিবহন আইন আরও যুগোপযোগী করার দাবি উঠেছে। অন্যদিকে চালকদের ক্ষেত্রে জামিন অযোগ্য গ্রেপ্তারের ধারা বাতিলের দাবি জানিয়ে আন্দোলনের হুমকি দিচ্ছেন পরিবহন খাতসংশ্লিষ্টরা। এমন অবস্থায় সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮ সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
৩০ আগস্ট ২০২৫আসিফ নজরুল বলেন, শ্রম আইনের ৯০ সেকশনে সংশোধন আনা হয়েছে। আইএলও বিশেষজ্ঞদের সুপারিশে আইনটি সংশোধন করা হয়েছে। কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানির বিষয়ে শাস্তির বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। প্রসূতিদের ওয়েলফেয়ার সুবিধা বাড়ানো হয়েছে।
২৪ মিনিট আগেপলাতক হিসেবে কারা বিবেচিত হবেন—এ প্রশ্নের জবাবে আসিফ নজরুল বলেন, আদালতে যাঁদের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে, তাঁদের হাজির হওয়ার জন্য বলা হয়েছে, অথচ হাজির হননি, পরে তাঁদের হাজির হওয়ার জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে—তাঁরাই পলাতক বলে গণ্য হবেন।
১ ঘণ্টা আগেঅ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা প্রত্যাশা করছি। বিচার যত কঠিনই হোক, বাধার প্রাচীর ভেঙে যদি ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা সম্ভব না হয়, তাহলে জাতি হিসেবে আমরা আগামী দিনে এগোতে পারব না। এই আসামিদের মৃত্যুদণ্ড হওয়া, মৃত্যুদণ্ডের মাধ্যমে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা একটি বড় ঘটনা হিসেবে অনেকেই দেখবেন
৫ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সর্বোচ্চ সাজা চেয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। তিনি বলেছেন, ‘এই আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা না হলে তাদের হাতে বাংলাদেশের নিরপরাধ মানুষ গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যাবে, পাঁচ বছরের শিশু মারা যাবে, আনাসরা মারা যাবে, পানি বিতরণ করতে গিয়ে মুগ্ধ মারা যাবে, বুক চিতিয়ে আবার রাজপথে দাঁড়িয়ে আবু সাঈদরা মারা যাবে। আমরা যদি ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে না পারি, এই দুজনের বিচার যদি ব্যাহত হয়, এই দুজনের যদি শাস্তি না হয়, তাহলে বাংলাদেশের মানুষ ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে ভীরু-কাপুরুষের উপমা হয়ে রয়ে যাবে। সে কারণে আমরা মনে করি, আমরা যা উপস্থাপন করেছি, তা সন্দেহাতীত।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সারা দেশে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আজ বৃহস্পতিবার যুক্তি উপস্থাপনের সময় তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল ছাড়া এই মামলার অপর আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। তিনি দায় স্বীকার করে রাজসাক্ষী হয়েছেন।
শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে যুক্তি উপস্থাপনকালে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা প্রত্যাশা করছি। বিচার যত কঠিনই হোক, বাধার প্রাচীর ভেঙে যদি ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা সম্ভব না হয়, তাহলে জাতি হিসেবে আমরা আগামী দিনে এগোতে পারব না। এই আসামিদের মৃত্যুদণ্ড হওয়া, মৃত্যুদণ্ডের মাধ্যমে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা একটি বড় ঘটনা হিসেবে অনেকেই দেখবেন। এই আসামিদের যদি শাস্তি নিশ্চিত করতে না পারি, তাহলে তাদের হাতে বাংলাদেশের অসংখ্য মানুষের জীবন বিপন্ন হবে।’
মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘ন্যায়বিচারের সাক্ষী হতে এসেছি। ১ হাজার ৪০০ লোক মারা গেছে। ৩০ হাজার পঙ্গুত্ব বরণ করেছে। রাষ্ট্রপক্ষ দেখিয়েছে—কে নির্দেশ দিয়েছে, কাকে দিয়েছে, কে পালন করেছে, কীভাবে বাস্তবায়ন হয়েছে। এই খুনের পর গোটা জাতি জেগে উঠেছে। অপরাধীরা পালিয়ে গেছে। তারা বিচারকাজ প্রতিহত করতে নানা রকম নির্দেশনা দিচ্ছে। আমাদের বক্তব্য হচ্ছে, প্রসিকিউশন তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে। যে সাক্ষ্যপ্রমাণ এসেছে, তা যেকোনো দেশে, যেকোনো আদালতে উপস্থাপন করলে আসামিদের সাজা ছাড়া বিকল্প কিছু হবে না।’
মানবতাবিরোধী অপরাধে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের উদাহরণ এ সময় তুলে ধরেন অ্যাটর্নি জেনারেল।
তিনি বলেন, ‘এটা দিবালোকের ন্যায় সত্য, এখানে গণহত্যার মতো ঘটনা ঘটেছে। এখানে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। কারা ঘটিয়েছে, কীভাবে ঘটিয়েছে, তা আমরা প্রমাণ করেছি। আমরা মনে করি, এই আদালতে যদি আসামিদের শাস্তি না হয়, তাহলে এ দেশের খুন হওয়া মানুষ, পঙ্গুত্ব বরণ করা মানুষ, এই রাষ্ট্র অবিচারের শিকার হবে। আমরা দাঁড়িয়েছি ইতিহাসের দায় পরিশোধ করার জন্য। আপনারা ন্যায়বিচার করলে গোটা বিশ্ব দেখবে—এই দেশে ন্যায়বিচার হয়।’
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সর্বোচ্চ সাজা চেয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। তিনি বলেছেন, ‘এই আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা না হলে তাদের হাতে বাংলাদেশের নিরপরাধ মানুষ গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যাবে, পাঁচ বছরের শিশু মারা যাবে, আনাসরা মারা যাবে, পানি বিতরণ করতে গিয়ে মুগ্ধ মারা যাবে, বুক চিতিয়ে আবার রাজপথে দাঁড়িয়ে আবু সাঈদরা মারা যাবে। আমরা যদি ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে না পারি, এই দুজনের বিচার যদি ব্যাহত হয়, এই দুজনের যদি শাস্তি না হয়, তাহলে বাংলাদেশের মানুষ ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে ভীরু-কাপুরুষের উপমা হয়ে রয়ে যাবে। সে কারণে আমরা মনে করি, আমরা যা উপস্থাপন করেছি, তা সন্দেহাতীত।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সারা দেশে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আজ বৃহস্পতিবার যুক্তি উপস্থাপনের সময় তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল ছাড়া এই মামলার অপর আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। তিনি দায় স্বীকার করে রাজসাক্ষী হয়েছেন।
শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে যুক্তি উপস্থাপনকালে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা প্রত্যাশা করছি। বিচার যত কঠিনই হোক, বাধার প্রাচীর ভেঙে যদি ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা সম্ভব না হয়, তাহলে জাতি হিসেবে আমরা আগামী দিনে এগোতে পারব না। এই আসামিদের মৃত্যুদণ্ড হওয়া, মৃত্যুদণ্ডের মাধ্যমে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা একটি বড় ঘটনা হিসেবে অনেকেই দেখবেন। এই আসামিদের যদি শাস্তি নিশ্চিত করতে না পারি, তাহলে তাদের হাতে বাংলাদেশের অসংখ্য মানুষের জীবন বিপন্ন হবে।’
মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘ন্যায়বিচারের সাক্ষী হতে এসেছি। ১ হাজার ৪০০ লোক মারা গেছে। ৩০ হাজার পঙ্গুত্ব বরণ করেছে। রাষ্ট্রপক্ষ দেখিয়েছে—কে নির্দেশ দিয়েছে, কাকে দিয়েছে, কে পালন করেছে, কীভাবে বাস্তবায়ন হয়েছে। এই খুনের পর গোটা জাতি জেগে উঠেছে। অপরাধীরা পালিয়ে গেছে। তারা বিচারকাজ প্রতিহত করতে নানা রকম নির্দেশনা দিচ্ছে। আমাদের বক্তব্য হচ্ছে, প্রসিকিউশন তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে। যে সাক্ষ্যপ্রমাণ এসেছে, তা যেকোনো দেশে, যেকোনো আদালতে উপস্থাপন করলে আসামিদের সাজা ছাড়া বিকল্প কিছু হবে না।’
মানবতাবিরোধী অপরাধে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের উদাহরণ এ সময় তুলে ধরেন অ্যাটর্নি জেনারেল।
তিনি বলেন, ‘এটা দিবালোকের ন্যায় সত্য, এখানে গণহত্যার মতো ঘটনা ঘটেছে। এখানে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। কারা ঘটিয়েছে, কীভাবে ঘটিয়েছে, তা আমরা প্রমাণ করেছি। আমরা মনে করি, এই আদালতে যদি আসামিদের শাস্তি না হয়, তাহলে এ দেশের খুন হওয়া মানুষ, পঙ্গুত্ব বরণ করা মানুষ, এই রাষ্ট্র অবিচারের শিকার হবে। আমরা দাঁড়িয়েছি ইতিহাসের দায় পরিশোধ করার জন্য। আপনারা ন্যায়বিচার করলে গোটা বিশ্ব দেখবে—এই দেশে ন্যায়বিচার হয়।’
সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা ও দুর্ঘটনা কমাতে সড়ক পরিবহন আইন আরও যুগোপযোগী করার দাবি উঠেছে। অন্যদিকে চালকদের ক্ষেত্রে জামিন অযোগ্য গ্রেপ্তারের ধারা বাতিলের দাবি জানিয়ে আন্দোলনের হুমকি দিচ্ছেন পরিবহন খাতসংশ্লিষ্টরা। এমন অবস্থায় সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮ সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
৩০ আগস্ট ২০২৫আসিফ নজরুল বলেন, শ্রম আইনের ৯০ সেকশনে সংশোধন আনা হয়েছে। আইএলও বিশেষজ্ঞদের সুপারিশে আইনটি সংশোধন করা হয়েছে। কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানির বিষয়ে শাস্তির বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। প্রসূতিদের ওয়েলফেয়ার সুবিধা বাড়ানো হয়েছে।
২৪ মিনিট আগেপলাতক হিসেবে কারা বিবেচিত হবেন—এ প্রশ্নের জবাবে আসিফ নজরুল বলেন, আদালতে যাঁদের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে, তাঁদের হাজির হওয়ার জন্য বলা হয়েছে, অথচ হাজির হননি, পরে তাঁদের হাজির হওয়ার জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে—তাঁরাই পলাতক বলে গণ্য হবেন।
১ ঘণ্টা আগেআসামিদের কোনো অনুশোচনা হয়নি, তাঁরা উল্টো সেনাবাহিনীকে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে উসকানি দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সারা দেশে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আজ
৪ ঘণ্টা আগে