সৌগত বসু, ঢাকা

সেবার আওতা এবং আয় বাড়ানোকে লক্ষ্য দেখিয়ে রেলওয়ের জন্য গত এক যুগে কয়েক ডজন প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। আয় বাড়ানোর লক্ষ্যের কথা বলা হলেও এগুলোর মধ্যে অধিকাংশ প্রকল্প বরং রেলের ব্যয়ের বোঝা বাড়িয়েছে। রেলের তৎকালীন মন্ত্রী ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের উৎসাহে অগ্রাধিকার দেওয়া বিপুল ব্যয়ের এসব প্রকল্পে ট্রেন চলে মাত্র কয়েকটি। অথচ সম্ভাব্য লাভজনক প্রকল্পের কাজ চলেছে ধীরগতিতে। কোনোটি বন্ধও হয়ে গেছে। সব মিলিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রাষ্ট্র তথা জনস্বার্থ।
রেলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলেছেন, প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাদের ‘এলাকাপ্রীতির জন্য’ উৎসাহের সঙ্গে অগুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। কিন্তু থমকে গেছে অনেক ‘লাইফ লাইন’ (অতি প্রয়োজনীয়) প্রকল্প। এগুলোর মধ্যে রয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রাম কডলাইন (বিকল্প), বগুড়া-সিরাজগঞ্জ, জয়দেবপুর-ঈশ্বরদী ডাবল লাইন প্রকল্প, ঢাকা-সিলেট ডাবল লাইন, ঢাকা-জামালপুর ডাবল লাইন প্রকল্প। চাহিদা থাকা সত্ত্বেও এসব প্রকল্পের নির্মাণকাজ শুরু হয়নি। এগুলোর মধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম কডলাইন সমীক্ষার পর বন্ধই হয়ে গেছে।
রেলসূত্র বলছে, যখন যিনি রেলে মন্ত্রী হয়ে আসেন, তখন তাঁর এলাকা বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। নূরুল ইসলাম সুজন মন্ত্রী থাকার সময় উত্তরবঙ্গ বেশি অগ্রাধিকার পেয়েছে। আবার সর্বশেষ মন্ত্রী মো. জিল্লুল হাকিমের সময়ে অগ্রাধিকার ছিল দক্ষিণবঙ্গকেন্দ্রিক। অন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাও সুযোগ-সুবিধামতো নিজেদের এলাকাভিত্তিক প্রকল্প পাস করিয়ে নিয়েছেন। তবে এ রকম অনেক প্রকল্প চালু হলেও প্রত্যাশা অনুযায়ী ট্রেন চলছে না।
রেলওয়ের সবচেয়ে বেশি ব্যয়ের প্রকল্প পদ্মা সেতু রেল সংযোগ। তারপর যথাক্রমে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার, খুলনা-মোংলা ও আখাউড়া-আগরতলা রেললাইন প্রকল্প। এ প্রকল্পগুলোর মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৬২ হাজার কোটি টাকার বেশি। অথচ এগুলোতে ট্রেন চলছে মাত্র ৭টি। এগুলোর মধ্যে ভারতের সঙ্গে দেশের রেলকে যুক্ত করা আখাউড়া-আগরতলা রুটে একটি ট্রেনও চলছে না। ৩৯ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্পে ট্রেন চালু রয়েছে ৪টি এবং ১৮ হাজার কোটি টাকার দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইনে মাত্র দুটি। রেলসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, পাবনার ঈশ্বরদী থেকে ঢালারচর, রাজবাড়ী থেকে গোপালগঞ্জ লাইনে প্রত্যাশা অনুযায়ী যাত্রী মেলেনি। মধুখালী-মাগুরা রেলপথের কাজ শেষ হলে একই অবস্থা হতে পারে।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. হাদীউজ্জামান বলেন, ‘রাজনৈতিক ব্যক্তি ও ঠিকাদারদের সুবিধায় রেলের অনেক প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এখানে লাভ-লোকসান কিংবা জনগণের জন্য কতটা উপযোগী, সেটা ভাবা হয়নি। এতে রাজনৈতিক নেতা ও ঠিকাদারদের দুষ্টচক্রই কেবল লাভবান হয়েছে।’
২০২২-২৩ অর্থবছরে রেলের আয় ছিল ১ হাজার ৭৮৩ কোটি টাকা, আর ব্যয় ৩ হাজার ৩০৭ কোটি টাকা। অর্থাৎ লোকসান হয় ১ হাজার ৫২৪ কোটি টাকা। রেলের লোকসানের বোঝা বাড়ানোর পেছনে অযৌক্তিক প্রকল্পের বড় ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
কথা আর কাজের ফারাকের নমুনা
রাজবাড়ী থেকে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া পর্যন্ত ২ হাজার কোটি টাকার বেশি ব্যয়ে নতুন রেললাইন নির্মাণ এবং পুরোনো লাইন সংস্কার প্রকল্পের বিষয়ে বলা হয়েছিল, এই লাইন দিয়ে দিনে ১৪টি ট্রেন চলবে। ২০১৮ সালের নভেম্বরে নতুন এই রেলপথের উদ্বোধন হয়। এখন পর্যন্ত এই পথে ট্রেন চলছে মাত্র দুটি।
ঈশ্বরদী-ঢালারচর লাইনের প্রকল্প অনুমোদিত হয় ২০১০ সালে। ২০১৫ সালের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা সম্পন্ন হয় ২০১৮ সালে। শুরুতে ধরা ৯৮৩ কোটি টাকা ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ১ হাজার ৭১৫ কোটিতে। এ পথের বিষয়ে কোনো সম্ভাব্যতা যাচাই সমীক্ষা হয়নি। উদ্বোধনের পর দুই বছর আদৌ কোনো ট্রেন চলেনি। ২০২০ সালে ‘ঢালারচর এক্সপ্রেস’ নামে এক জোড়া ট্রেন চালু করা হয়। চলার কথা ছিল ১০টি। রেলওয়ে সূত্র বলছে, প্রকল্পটি নেওয়া হয়েছিল তৎকালীন পরিকল্পনামন্ত্রী ও পাবনার বাসিন্দা প্রয়াত এ কে খোন্দকারের আগ্রহে।
রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ফরিদপুরের মধুখালী থেকে কামারখালী হয়ে মাগুরা পর্যন্ত চার বছর মেয়াদি ব্রডগেজ রেললাইন প্রকল্প শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২২ সালের ডিসেম্বরে। তবে জমি অধিগ্রহণ, করোনা মহামারিসহ নানা জটিলতার কারণে প্রকল্পের কাজ শুরুই হয় ২০২১ সালের মে মাসে। প্রকল্প পরিচালকের কার্যালয় জানিয়েছে, এর কাজ শেষ হবে ২০২৫ সালের মধ্যে। তবে ১ হাজার ২১৭ কোটি টাকার এ প্রকল্পে ২-৩টির বেশি আন্তনগর ট্রেন চলবে না। ফলে এটি হতে যাচ্ছে আরেকটি ‘সাদা হাতি’ প্রকল্প। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এপিএস ও সাবেক সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান শিখরের একক আগ্রহে এ প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছেন রেল কর্মকর্তারা।
ভারতের অর্থায়নে খুলনা থেকে মোংলা বন্দরে ট্রেনে পণ্য পরিবহনের লক্ষ্যে ৪ হাজার ২৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে রেলপথ বসানো হয়। মোংলা বন্দর থেকে খুলনা ও যশোর হয়ে ভারতে পণ্য আমদানি-রপ্তানি সহজ করা এ প্রকল্পের লক্ষ্য ছিল। তবে ২০২৩ সালের ১ নভেম্বর উদ্বোধনের দীর্ঘ সাত মাস পর গত ১ জুন থেকে পুরোনো ইঞ্জিন ও বগি দিয়ে ‘মোংলা কমিউটার’ নামে একটিমাত্র যাত্রীবাহী ট্রেন চলছে এই লাইনে।
গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলোর যা অবস্থা
দেশের রেল যোগাযোগের ‘লাইফ লাইন’ খ্যাত ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের দূরত্ব ৯০ কিলোমিটার কমিয়ে বিকল্প (কডলাইন) রেলরুট তৈরি করার প্রকল্প থমকে গেছে। ২৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ এ লাইন হলে ট্রেনে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে যেতে সময় লাগবে মাত্র তিন ঘণ্টা। কয়েক দশক ধরে আলোচনা চলার পরে ২০১০ সালে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের মাধ্যমে এ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। রেলের সূত্র বলেছে, মন্ত্রণালয়ের ‘অদৃশ্য ইশারায়’ কাজ বন্ধ হয়ে যায়। রেল কর্তৃপক্ষ এর কারণ বলতে পারছে না। প্রকল্প পরিচালক মাহবুবুর রহমান বলেছেন, গত ১২ মার্চ মন্ত্রণালয় একটি নির্দেশনাপত্র জারি করে কাজ স্থগিত করে।
বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের মেয়াদ ছিল ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত। অগ্রগতি না হওয়ায় দুই দফা সময় বাড়িয়ে তা ২০২৬ সাল পর্যন্ত করা হয়েছে। এ প্রকল্পে সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী স্টেশন থেকে বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার রানীরহাট পর্যন্ত ৮৫ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণের কথা। অর্থায়নের জটিলতায় ভারতীয় ঋণের এ প্রকল্পের অগ্রগতি নেই। ভারতের সঙ্গে বর্তমান সম্পর্কের টানাপোড়েনে দৃশ্যত তা আরও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
২০১৬ সালে চীনের ঋণে জয়দেবপুর-ঈশ্বরদী সেকশনে ডুয়েলগেজ লাইন তৈরির বিষয়ে সমঝোতা হয়। শর্ত অনুযায়ী কাজ পায় চীনের ঠিকাদার সিসিইসিসি। কিন্তু চীন ২০২০ সালে প্রকল্প থেকে সরে দাঁড়ায়। এরপর বাংলাদেশ রেলওয়ে জাপানের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থাকে (জাইকা) বিনিয়োগের প্রস্তাব দেয়। ২০২১ সালে জাইকা কাজ শুরু করলেও প্রকল্পের তেমন অগ্রগতি নেই। কারণ, জাইকা আবার সমীক্ষা করতে বলছে।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বগুড়া-সিরাজগঞ্জ এবং জয়দেবপুর-ঈশ্বরদী প্রকল্প আগামী পাঁচ বছরেও বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা নেই। অগ্রগতি নেই টঙ্গী-জামালপুর ডাবল রেললাইন ও ঢাকা-সিলেট ডাবল রেললাইন প্রকল্পেরও।
এ বিষয়ে রেলওয়ের মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলী বলেন, ‘পর্যায়ক্রমে দেশের সব গুরুত্বপূর্ণ রেলপথ ডাবল লাইনে উন্নীত করার পরিকল্পনা থাকলেও এডিবি, বিশ্বব্যাংক, জাইকার মতো উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলোর অর্থায়ন সঠিক সময়ে না হওয়ায় করতে পারি না। অনেক কিছু তো আমাদের হাতে নেই। তাদের ওপর আমাদের নির্ভর করতে হয়।’
গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের চেয়ে অগুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের দিকে নজর বেশি কেন—এ প্রশ্নের জবাবে মহাপরিচালক বলেন, ‘ঢাকা-চট্টগ্রাম কডলাইন মন্ত্রণালয় হঠাৎ চিঠি দিয়ে বন্ধ করে দেয়। বগুড়া-সিরাজগঞ্জসহ ভারতীয় ঋণের প্রকল্পে অর্থায়ন চেয়ে বারবার চিঠি দিলেও দাতার কোনো সাড়া নেই। একটা চিঠি দিলে জবাব পেতে ৬ মাস সময় লাগে।’

সেবার আওতা এবং আয় বাড়ানোকে লক্ষ্য দেখিয়ে রেলওয়ের জন্য গত এক যুগে কয়েক ডজন প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। আয় বাড়ানোর লক্ষ্যের কথা বলা হলেও এগুলোর মধ্যে অধিকাংশ প্রকল্প বরং রেলের ব্যয়ের বোঝা বাড়িয়েছে। রেলের তৎকালীন মন্ত্রী ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের উৎসাহে অগ্রাধিকার দেওয়া বিপুল ব্যয়ের এসব প্রকল্পে ট্রেন চলে মাত্র কয়েকটি। অথচ সম্ভাব্য লাভজনক প্রকল্পের কাজ চলেছে ধীরগতিতে। কোনোটি বন্ধও হয়ে গেছে। সব মিলিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রাষ্ট্র তথা জনস্বার্থ।
রেলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলেছেন, প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাদের ‘এলাকাপ্রীতির জন্য’ উৎসাহের সঙ্গে অগুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। কিন্তু থমকে গেছে অনেক ‘লাইফ লাইন’ (অতি প্রয়োজনীয়) প্রকল্প। এগুলোর মধ্যে রয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রাম কডলাইন (বিকল্প), বগুড়া-সিরাজগঞ্জ, জয়দেবপুর-ঈশ্বরদী ডাবল লাইন প্রকল্প, ঢাকা-সিলেট ডাবল লাইন, ঢাকা-জামালপুর ডাবল লাইন প্রকল্প। চাহিদা থাকা সত্ত্বেও এসব প্রকল্পের নির্মাণকাজ শুরু হয়নি। এগুলোর মধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম কডলাইন সমীক্ষার পর বন্ধই হয়ে গেছে।
রেলসূত্র বলছে, যখন যিনি রেলে মন্ত্রী হয়ে আসেন, তখন তাঁর এলাকা বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। নূরুল ইসলাম সুজন মন্ত্রী থাকার সময় উত্তরবঙ্গ বেশি অগ্রাধিকার পেয়েছে। আবার সর্বশেষ মন্ত্রী মো. জিল্লুল হাকিমের সময়ে অগ্রাধিকার ছিল দক্ষিণবঙ্গকেন্দ্রিক। অন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাও সুযোগ-সুবিধামতো নিজেদের এলাকাভিত্তিক প্রকল্প পাস করিয়ে নিয়েছেন। তবে এ রকম অনেক প্রকল্প চালু হলেও প্রত্যাশা অনুযায়ী ট্রেন চলছে না।
রেলওয়ের সবচেয়ে বেশি ব্যয়ের প্রকল্প পদ্মা সেতু রেল সংযোগ। তারপর যথাক্রমে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার, খুলনা-মোংলা ও আখাউড়া-আগরতলা রেললাইন প্রকল্প। এ প্রকল্পগুলোর মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৬২ হাজার কোটি টাকার বেশি। অথচ এগুলোতে ট্রেন চলছে মাত্র ৭টি। এগুলোর মধ্যে ভারতের সঙ্গে দেশের রেলকে যুক্ত করা আখাউড়া-আগরতলা রুটে একটি ট্রেনও চলছে না। ৩৯ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্পে ট্রেন চালু রয়েছে ৪টি এবং ১৮ হাজার কোটি টাকার দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইনে মাত্র দুটি। রেলসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, পাবনার ঈশ্বরদী থেকে ঢালারচর, রাজবাড়ী থেকে গোপালগঞ্জ লাইনে প্রত্যাশা অনুযায়ী যাত্রী মেলেনি। মধুখালী-মাগুরা রেলপথের কাজ শেষ হলে একই অবস্থা হতে পারে।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. হাদীউজ্জামান বলেন, ‘রাজনৈতিক ব্যক্তি ও ঠিকাদারদের সুবিধায় রেলের অনেক প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এখানে লাভ-লোকসান কিংবা জনগণের জন্য কতটা উপযোগী, সেটা ভাবা হয়নি। এতে রাজনৈতিক নেতা ও ঠিকাদারদের দুষ্টচক্রই কেবল লাভবান হয়েছে।’
২০২২-২৩ অর্থবছরে রেলের আয় ছিল ১ হাজার ৭৮৩ কোটি টাকা, আর ব্যয় ৩ হাজার ৩০৭ কোটি টাকা। অর্থাৎ লোকসান হয় ১ হাজার ৫২৪ কোটি টাকা। রেলের লোকসানের বোঝা বাড়ানোর পেছনে অযৌক্তিক প্রকল্পের বড় ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
কথা আর কাজের ফারাকের নমুনা
রাজবাড়ী থেকে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া পর্যন্ত ২ হাজার কোটি টাকার বেশি ব্যয়ে নতুন রেললাইন নির্মাণ এবং পুরোনো লাইন সংস্কার প্রকল্পের বিষয়ে বলা হয়েছিল, এই লাইন দিয়ে দিনে ১৪টি ট্রেন চলবে। ২০১৮ সালের নভেম্বরে নতুন এই রেলপথের উদ্বোধন হয়। এখন পর্যন্ত এই পথে ট্রেন চলছে মাত্র দুটি।
ঈশ্বরদী-ঢালারচর লাইনের প্রকল্প অনুমোদিত হয় ২০১০ সালে। ২০১৫ সালের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা সম্পন্ন হয় ২০১৮ সালে। শুরুতে ধরা ৯৮৩ কোটি টাকা ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ১ হাজার ৭১৫ কোটিতে। এ পথের বিষয়ে কোনো সম্ভাব্যতা যাচাই সমীক্ষা হয়নি। উদ্বোধনের পর দুই বছর আদৌ কোনো ট্রেন চলেনি। ২০২০ সালে ‘ঢালারচর এক্সপ্রেস’ নামে এক জোড়া ট্রেন চালু করা হয়। চলার কথা ছিল ১০টি। রেলওয়ে সূত্র বলছে, প্রকল্পটি নেওয়া হয়েছিল তৎকালীন পরিকল্পনামন্ত্রী ও পাবনার বাসিন্দা প্রয়াত এ কে খোন্দকারের আগ্রহে।
রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ফরিদপুরের মধুখালী থেকে কামারখালী হয়ে মাগুরা পর্যন্ত চার বছর মেয়াদি ব্রডগেজ রেললাইন প্রকল্প শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২২ সালের ডিসেম্বরে। তবে জমি অধিগ্রহণ, করোনা মহামারিসহ নানা জটিলতার কারণে প্রকল্পের কাজ শুরুই হয় ২০২১ সালের মে মাসে। প্রকল্প পরিচালকের কার্যালয় জানিয়েছে, এর কাজ শেষ হবে ২০২৫ সালের মধ্যে। তবে ১ হাজার ২১৭ কোটি টাকার এ প্রকল্পে ২-৩টির বেশি আন্তনগর ট্রেন চলবে না। ফলে এটি হতে যাচ্ছে আরেকটি ‘সাদা হাতি’ প্রকল্প। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এপিএস ও সাবেক সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান শিখরের একক আগ্রহে এ প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছেন রেল কর্মকর্তারা।
ভারতের অর্থায়নে খুলনা থেকে মোংলা বন্দরে ট্রেনে পণ্য পরিবহনের লক্ষ্যে ৪ হাজার ২৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে রেলপথ বসানো হয়। মোংলা বন্দর থেকে খুলনা ও যশোর হয়ে ভারতে পণ্য আমদানি-রপ্তানি সহজ করা এ প্রকল্পের লক্ষ্য ছিল। তবে ২০২৩ সালের ১ নভেম্বর উদ্বোধনের দীর্ঘ সাত মাস পর গত ১ জুন থেকে পুরোনো ইঞ্জিন ও বগি দিয়ে ‘মোংলা কমিউটার’ নামে একটিমাত্র যাত্রীবাহী ট্রেন চলছে এই লাইনে।
গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলোর যা অবস্থা
দেশের রেল যোগাযোগের ‘লাইফ লাইন’ খ্যাত ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের দূরত্ব ৯০ কিলোমিটার কমিয়ে বিকল্প (কডলাইন) রেলরুট তৈরি করার প্রকল্প থমকে গেছে। ২৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ এ লাইন হলে ট্রেনে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে যেতে সময় লাগবে মাত্র তিন ঘণ্টা। কয়েক দশক ধরে আলোচনা চলার পরে ২০১০ সালে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের মাধ্যমে এ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। রেলের সূত্র বলেছে, মন্ত্রণালয়ের ‘অদৃশ্য ইশারায়’ কাজ বন্ধ হয়ে যায়। রেল কর্তৃপক্ষ এর কারণ বলতে পারছে না। প্রকল্প পরিচালক মাহবুবুর রহমান বলেছেন, গত ১২ মার্চ মন্ত্রণালয় একটি নির্দেশনাপত্র জারি করে কাজ স্থগিত করে।
বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের মেয়াদ ছিল ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত। অগ্রগতি না হওয়ায় দুই দফা সময় বাড়িয়ে তা ২০২৬ সাল পর্যন্ত করা হয়েছে। এ প্রকল্পে সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী স্টেশন থেকে বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার রানীরহাট পর্যন্ত ৮৫ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণের কথা। অর্থায়নের জটিলতায় ভারতীয় ঋণের এ প্রকল্পের অগ্রগতি নেই। ভারতের সঙ্গে বর্তমান সম্পর্কের টানাপোড়েনে দৃশ্যত তা আরও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
২০১৬ সালে চীনের ঋণে জয়দেবপুর-ঈশ্বরদী সেকশনে ডুয়েলগেজ লাইন তৈরির বিষয়ে সমঝোতা হয়। শর্ত অনুযায়ী কাজ পায় চীনের ঠিকাদার সিসিইসিসি। কিন্তু চীন ২০২০ সালে প্রকল্প থেকে সরে দাঁড়ায়। এরপর বাংলাদেশ রেলওয়ে জাপানের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থাকে (জাইকা) বিনিয়োগের প্রস্তাব দেয়। ২০২১ সালে জাইকা কাজ শুরু করলেও প্রকল্পের তেমন অগ্রগতি নেই। কারণ, জাইকা আবার সমীক্ষা করতে বলছে।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বগুড়া-সিরাজগঞ্জ এবং জয়দেবপুর-ঈশ্বরদী প্রকল্প আগামী পাঁচ বছরেও বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা নেই। অগ্রগতি নেই টঙ্গী-জামালপুর ডাবল রেললাইন ও ঢাকা-সিলেট ডাবল রেললাইন প্রকল্পেরও।
এ বিষয়ে রেলওয়ের মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলী বলেন, ‘পর্যায়ক্রমে দেশের সব গুরুত্বপূর্ণ রেলপথ ডাবল লাইনে উন্নীত করার পরিকল্পনা থাকলেও এডিবি, বিশ্বব্যাংক, জাইকার মতো উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলোর অর্থায়ন সঠিক সময়ে না হওয়ায় করতে পারি না। অনেক কিছু তো আমাদের হাতে নেই। তাদের ওপর আমাদের নির্ভর করতে হয়।’
গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের চেয়ে অগুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের দিকে নজর বেশি কেন—এ প্রশ্নের জবাবে মহাপরিচালক বলেন, ‘ঢাকা-চট্টগ্রাম কডলাইন মন্ত্রণালয় হঠাৎ চিঠি দিয়ে বন্ধ করে দেয়। বগুড়া-সিরাজগঞ্জসহ ভারতীয় ঋণের প্রকল্পে অর্থায়ন চেয়ে বারবার চিঠি দিলেও দাতার কোনো সাড়া নেই। একটা চিঠি দিলে জবাব পেতে ৬ মাস সময় লাগে।’
সৌগত বসু, ঢাকা

সেবার আওতা এবং আয় বাড়ানোকে লক্ষ্য দেখিয়ে রেলওয়ের জন্য গত এক যুগে কয়েক ডজন প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। আয় বাড়ানোর লক্ষ্যের কথা বলা হলেও এগুলোর মধ্যে অধিকাংশ প্রকল্প বরং রেলের ব্যয়ের বোঝা বাড়িয়েছে। রেলের তৎকালীন মন্ত্রী ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের উৎসাহে অগ্রাধিকার দেওয়া বিপুল ব্যয়ের এসব প্রকল্পে ট্রেন চলে মাত্র কয়েকটি। অথচ সম্ভাব্য লাভজনক প্রকল্পের কাজ চলেছে ধীরগতিতে। কোনোটি বন্ধও হয়ে গেছে। সব মিলিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রাষ্ট্র তথা জনস্বার্থ।
রেলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলেছেন, প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাদের ‘এলাকাপ্রীতির জন্য’ উৎসাহের সঙ্গে অগুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। কিন্তু থমকে গেছে অনেক ‘লাইফ লাইন’ (অতি প্রয়োজনীয়) প্রকল্প। এগুলোর মধ্যে রয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রাম কডলাইন (বিকল্প), বগুড়া-সিরাজগঞ্জ, জয়দেবপুর-ঈশ্বরদী ডাবল লাইন প্রকল্প, ঢাকা-সিলেট ডাবল লাইন, ঢাকা-জামালপুর ডাবল লাইন প্রকল্প। চাহিদা থাকা সত্ত্বেও এসব প্রকল্পের নির্মাণকাজ শুরু হয়নি। এগুলোর মধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম কডলাইন সমীক্ষার পর বন্ধই হয়ে গেছে।
রেলসূত্র বলছে, যখন যিনি রেলে মন্ত্রী হয়ে আসেন, তখন তাঁর এলাকা বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। নূরুল ইসলাম সুজন মন্ত্রী থাকার সময় উত্তরবঙ্গ বেশি অগ্রাধিকার পেয়েছে। আবার সর্বশেষ মন্ত্রী মো. জিল্লুল হাকিমের সময়ে অগ্রাধিকার ছিল দক্ষিণবঙ্গকেন্দ্রিক। অন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাও সুযোগ-সুবিধামতো নিজেদের এলাকাভিত্তিক প্রকল্প পাস করিয়ে নিয়েছেন। তবে এ রকম অনেক প্রকল্প চালু হলেও প্রত্যাশা অনুযায়ী ট্রেন চলছে না।
রেলওয়ের সবচেয়ে বেশি ব্যয়ের প্রকল্প পদ্মা সেতু রেল সংযোগ। তারপর যথাক্রমে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার, খুলনা-মোংলা ও আখাউড়া-আগরতলা রেললাইন প্রকল্প। এ প্রকল্পগুলোর মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৬২ হাজার কোটি টাকার বেশি। অথচ এগুলোতে ট্রেন চলছে মাত্র ৭টি। এগুলোর মধ্যে ভারতের সঙ্গে দেশের রেলকে যুক্ত করা আখাউড়া-আগরতলা রুটে একটি ট্রেনও চলছে না। ৩৯ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্পে ট্রেন চালু রয়েছে ৪টি এবং ১৮ হাজার কোটি টাকার দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইনে মাত্র দুটি। রেলসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, পাবনার ঈশ্বরদী থেকে ঢালারচর, রাজবাড়ী থেকে গোপালগঞ্জ লাইনে প্রত্যাশা অনুযায়ী যাত্রী মেলেনি। মধুখালী-মাগুরা রেলপথের কাজ শেষ হলে একই অবস্থা হতে পারে।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. হাদীউজ্জামান বলেন, ‘রাজনৈতিক ব্যক্তি ও ঠিকাদারদের সুবিধায় রেলের অনেক প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এখানে লাভ-লোকসান কিংবা জনগণের জন্য কতটা উপযোগী, সেটা ভাবা হয়নি। এতে রাজনৈতিক নেতা ও ঠিকাদারদের দুষ্টচক্রই কেবল লাভবান হয়েছে।’
২০২২-২৩ অর্থবছরে রেলের আয় ছিল ১ হাজার ৭৮৩ কোটি টাকা, আর ব্যয় ৩ হাজার ৩০৭ কোটি টাকা। অর্থাৎ লোকসান হয় ১ হাজার ৫২৪ কোটি টাকা। রেলের লোকসানের বোঝা বাড়ানোর পেছনে অযৌক্তিক প্রকল্পের বড় ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
কথা আর কাজের ফারাকের নমুনা
রাজবাড়ী থেকে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া পর্যন্ত ২ হাজার কোটি টাকার বেশি ব্যয়ে নতুন রেললাইন নির্মাণ এবং পুরোনো লাইন সংস্কার প্রকল্পের বিষয়ে বলা হয়েছিল, এই লাইন দিয়ে দিনে ১৪টি ট্রেন চলবে। ২০১৮ সালের নভেম্বরে নতুন এই রেলপথের উদ্বোধন হয়। এখন পর্যন্ত এই পথে ট্রেন চলছে মাত্র দুটি।
ঈশ্বরদী-ঢালারচর লাইনের প্রকল্প অনুমোদিত হয় ২০১০ সালে। ২০১৫ সালের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা সম্পন্ন হয় ২০১৮ সালে। শুরুতে ধরা ৯৮৩ কোটি টাকা ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ১ হাজার ৭১৫ কোটিতে। এ পথের বিষয়ে কোনো সম্ভাব্যতা যাচাই সমীক্ষা হয়নি। উদ্বোধনের পর দুই বছর আদৌ কোনো ট্রেন চলেনি। ২০২০ সালে ‘ঢালারচর এক্সপ্রেস’ নামে এক জোড়া ট্রেন চালু করা হয়। চলার কথা ছিল ১০টি। রেলওয়ে সূত্র বলছে, প্রকল্পটি নেওয়া হয়েছিল তৎকালীন পরিকল্পনামন্ত্রী ও পাবনার বাসিন্দা প্রয়াত এ কে খোন্দকারের আগ্রহে।
রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ফরিদপুরের মধুখালী থেকে কামারখালী হয়ে মাগুরা পর্যন্ত চার বছর মেয়াদি ব্রডগেজ রেললাইন প্রকল্প শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২২ সালের ডিসেম্বরে। তবে জমি অধিগ্রহণ, করোনা মহামারিসহ নানা জটিলতার কারণে প্রকল্পের কাজ শুরুই হয় ২০২১ সালের মে মাসে। প্রকল্প পরিচালকের কার্যালয় জানিয়েছে, এর কাজ শেষ হবে ২০২৫ সালের মধ্যে। তবে ১ হাজার ২১৭ কোটি টাকার এ প্রকল্পে ২-৩টির বেশি আন্তনগর ট্রেন চলবে না। ফলে এটি হতে যাচ্ছে আরেকটি ‘সাদা হাতি’ প্রকল্প। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এপিএস ও সাবেক সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান শিখরের একক আগ্রহে এ প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছেন রেল কর্মকর্তারা।
ভারতের অর্থায়নে খুলনা থেকে মোংলা বন্দরে ট্রেনে পণ্য পরিবহনের লক্ষ্যে ৪ হাজার ২৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে রেলপথ বসানো হয়। মোংলা বন্দর থেকে খুলনা ও যশোর হয়ে ভারতে পণ্য আমদানি-রপ্তানি সহজ করা এ প্রকল্পের লক্ষ্য ছিল। তবে ২০২৩ সালের ১ নভেম্বর উদ্বোধনের দীর্ঘ সাত মাস পর গত ১ জুন থেকে পুরোনো ইঞ্জিন ও বগি দিয়ে ‘মোংলা কমিউটার’ নামে একটিমাত্র যাত্রীবাহী ট্রেন চলছে এই লাইনে।
গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলোর যা অবস্থা
দেশের রেল যোগাযোগের ‘লাইফ লাইন’ খ্যাত ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের দূরত্ব ৯০ কিলোমিটার কমিয়ে বিকল্প (কডলাইন) রেলরুট তৈরি করার প্রকল্প থমকে গেছে। ২৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ এ লাইন হলে ট্রেনে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে যেতে সময় লাগবে মাত্র তিন ঘণ্টা। কয়েক দশক ধরে আলোচনা চলার পরে ২০১০ সালে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের মাধ্যমে এ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। রেলের সূত্র বলেছে, মন্ত্রণালয়ের ‘অদৃশ্য ইশারায়’ কাজ বন্ধ হয়ে যায়। রেল কর্তৃপক্ষ এর কারণ বলতে পারছে না। প্রকল্প পরিচালক মাহবুবুর রহমান বলেছেন, গত ১২ মার্চ মন্ত্রণালয় একটি নির্দেশনাপত্র জারি করে কাজ স্থগিত করে।
বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের মেয়াদ ছিল ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত। অগ্রগতি না হওয়ায় দুই দফা সময় বাড়িয়ে তা ২০২৬ সাল পর্যন্ত করা হয়েছে। এ প্রকল্পে সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী স্টেশন থেকে বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার রানীরহাট পর্যন্ত ৮৫ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণের কথা। অর্থায়নের জটিলতায় ভারতীয় ঋণের এ প্রকল্পের অগ্রগতি নেই। ভারতের সঙ্গে বর্তমান সম্পর্কের টানাপোড়েনে দৃশ্যত তা আরও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
২০১৬ সালে চীনের ঋণে জয়দেবপুর-ঈশ্বরদী সেকশনে ডুয়েলগেজ লাইন তৈরির বিষয়ে সমঝোতা হয়। শর্ত অনুযায়ী কাজ পায় চীনের ঠিকাদার সিসিইসিসি। কিন্তু চীন ২০২০ সালে প্রকল্প থেকে সরে দাঁড়ায়। এরপর বাংলাদেশ রেলওয়ে জাপানের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থাকে (জাইকা) বিনিয়োগের প্রস্তাব দেয়। ২০২১ সালে জাইকা কাজ শুরু করলেও প্রকল্পের তেমন অগ্রগতি নেই। কারণ, জাইকা আবার সমীক্ষা করতে বলছে।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বগুড়া-সিরাজগঞ্জ এবং জয়দেবপুর-ঈশ্বরদী প্রকল্প আগামী পাঁচ বছরেও বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা নেই। অগ্রগতি নেই টঙ্গী-জামালপুর ডাবল রেললাইন ও ঢাকা-সিলেট ডাবল রেললাইন প্রকল্পেরও।
এ বিষয়ে রেলওয়ের মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলী বলেন, ‘পর্যায়ক্রমে দেশের সব গুরুত্বপূর্ণ রেলপথ ডাবল লাইনে উন্নীত করার পরিকল্পনা থাকলেও এডিবি, বিশ্বব্যাংক, জাইকার মতো উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলোর অর্থায়ন সঠিক সময়ে না হওয়ায় করতে পারি না। অনেক কিছু তো আমাদের হাতে নেই। তাদের ওপর আমাদের নির্ভর করতে হয়।’
গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের চেয়ে অগুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের দিকে নজর বেশি কেন—এ প্রশ্নের জবাবে মহাপরিচালক বলেন, ‘ঢাকা-চট্টগ্রাম কডলাইন মন্ত্রণালয় হঠাৎ চিঠি দিয়ে বন্ধ করে দেয়। বগুড়া-সিরাজগঞ্জসহ ভারতীয় ঋণের প্রকল্পে অর্থায়ন চেয়ে বারবার চিঠি দিলেও দাতার কোনো সাড়া নেই। একটা চিঠি দিলে জবাব পেতে ৬ মাস সময় লাগে।’

সেবার আওতা এবং আয় বাড়ানোকে লক্ষ্য দেখিয়ে রেলওয়ের জন্য গত এক যুগে কয়েক ডজন প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। আয় বাড়ানোর লক্ষ্যের কথা বলা হলেও এগুলোর মধ্যে অধিকাংশ প্রকল্প বরং রেলের ব্যয়ের বোঝা বাড়িয়েছে। রেলের তৎকালীন মন্ত্রী ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের উৎসাহে অগ্রাধিকার দেওয়া বিপুল ব্যয়ের এসব প্রকল্পে ট্রেন চলে মাত্র কয়েকটি। অথচ সম্ভাব্য লাভজনক প্রকল্পের কাজ চলেছে ধীরগতিতে। কোনোটি বন্ধও হয়ে গেছে। সব মিলিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রাষ্ট্র তথা জনস্বার্থ।
রেলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলেছেন, প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাদের ‘এলাকাপ্রীতির জন্য’ উৎসাহের সঙ্গে অগুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। কিন্তু থমকে গেছে অনেক ‘লাইফ লাইন’ (অতি প্রয়োজনীয়) প্রকল্প। এগুলোর মধ্যে রয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রাম কডলাইন (বিকল্প), বগুড়া-সিরাজগঞ্জ, জয়দেবপুর-ঈশ্বরদী ডাবল লাইন প্রকল্প, ঢাকা-সিলেট ডাবল লাইন, ঢাকা-জামালপুর ডাবল লাইন প্রকল্প। চাহিদা থাকা সত্ত্বেও এসব প্রকল্পের নির্মাণকাজ শুরু হয়নি। এগুলোর মধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম কডলাইন সমীক্ষার পর বন্ধই হয়ে গেছে।
রেলসূত্র বলছে, যখন যিনি রেলে মন্ত্রী হয়ে আসেন, তখন তাঁর এলাকা বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। নূরুল ইসলাম সুজন মন্ত্রী থাকার সময় উত্তরবঙ্গ বেশি অগ্রাধিকার পেয়েছে। আবার সর্বশেষ মন্ত্রী মো. জিল্লুল হাকিমের সময়ে অগ্রাধিকার ছিল দক্ষিণবঙ্গকেন্দ্রিক। অন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাও সুযোগ-সুবিধামতো নিজেদের এলাকাভিত্তিক প্রকল্প পাস করিয়ে নিয়েছেন। তবে এ রকম অনেক প্রকল্প চালু হলেও প্রত্যাশা অনুযায়ী ট্রেন চলছে না।
রেলওয়ের সবচেয়ে বেশি ব্যয়ের প্রকল্প পদ্মা সেতু রেল সংযোগ। তারপর যথাক্রমে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার, খুলনা-মোংলা ও আখাউড়া-আগরতলা রেললাইন প্রকল্প। এ প্রকল্পগুলোর মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৬২ হাজার কোটি টাকার বেশি। অথচ এগুলোতে ট্রেন চলছে মাত্র ৭টি। এগুলোর মধ্যে ভারতের সঙ্গে দেশের রেলকে যুক্ত করা আখাউড়া-আগরতলা রুটে একটি ট্রেনও চলছে না। ৩৯ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্পে ট্রেন চালু রয়েছে ৪টি এবং ১৮ হাজার কোটি টাকার দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইনে মাত্র দুটি। রেলসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, পাবনার ঈশ্বরদী থেকে ঢালারচর, রাজবাড়ী থেকে গোপালগঞ্জ লাইনে প্রত্যাশা অনুযায়ী যাত্রী মেলেনি। মধুখালী-মাগুরা রেলপথের কাজ শেষ হলে একই অবস্থা হতে পারে।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. হাদীউজ্জামান বলেন, ‘রাজনৈতিক ব্যক্তি ও ঠিকাদারদের সুবিধায় রেলের অনেক প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এখানে লাভ-লোকসান কিংবা জনগণের জন্য কতটা উপযোগী, সেটা ভাবা হয়নি। এতে রাজনৈতিক নেতা ও ঠিকাদারদের দুষ্টচক্রই কেবল লাভবান হয়েছে।’
২০২২-২৩ অর্থবছরে রেলের আয় ছিল ১ হাজার ৭৮৩ কোটি টাকা, আর ব্যয় ৩ হাজার ৩০৭ কোটি টাকা। অর্থাৎ লোকসান হয় ১ হাজার ৫২৪ কোটি টাকা। রেলের লোকসানের বোঝা বাড়ানোর পেছনে অযৌক্তিক প্রকল্পের বড় ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
কথা আর কাজের ফারাকের নমুনা
রাজবাড়ী থেকে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া পর্যন্ত ২ হাজার কোটি টাকার বেশি ব্যয়ে নতুন রেললাইন নির্মাণ এবং পুরোনো লাইন সংস্কার প্রকল্পের বিষয়ে বলা হয়েছিল, এই লাইন দিয়ে দিনে ১৪টি ট্রেন চলবে। ২০১৮ সালের নভেম্বরে নতুন এই রেলপথের উদ্বোধন হয়। এখন পর্যন্ত এই পথে ট্রেন চলছে মাত্র দুটি।
ঈশ্বরদী-ঢালারচর লাইনের প্রকল্প অনুমোদিত হয় ২০১০ সালে। ২০১৫ সালের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা সম্পন্ন হয় ২০১৮ সালে। শুরুতে ধরা ৯৮৩ কোটি টাকা ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ১ হাজার ৭১৫ কোটিতে। এ পথের বিষয়ে কোনো সম্ভাব্যতা যাচাই সমীক্ষা হয়নি। উদ্বোধনের পর দুই বছর আদৌ কোনো ট্রেন চলেনি। ২০২০ সালে ‘ঢালারচর এক্সপ্রেস’ নামে এক জোড়া ট্রেন চালু করা হয়। চলার কথা ছিল ১০টি। রেলওয়ে সূত্র বলছে, প্রকল্পটি নেওয়া হয়েছিল তৎকালীন পরিকল্পনামন্ত্রী ও পাবনার বাসিন্দা প্রয়াত এ কে খোন্দকারের আগ্রহে।
রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ফরিদপুরের মধুখালী থেকে কামারখালী হয়ে মাগুরা পর্যন্ত চার বছর মেয়াদি ব্রডগেজ রেললাইন প্রকল্প শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২২ সালের ডিসেম্বরে। তবে জমি অধিগ্রহণ, করোনা মহামারিসহ নানা জটিলতার কারণে প্রকল্পের কাজ শুরুই হয় ২০২১ সালের মে মাসে। প্রকল্প পরিচালকের কার্যালয় জানিয়েছে, এর কাজ শেষ হবে ২০২৫ সালের মধ্যে। তবে ১ হাজার ২১৭ কোটি টাকার এ প্রকল্পে ২-৩টির বেশি আন্তনগর ট্রেন চলবে না। ফলে এটি হতে যাচ্ছে আরেকটি ‘সাদা হাতি’ প্রকল্প। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এপিএস ও সাবেক সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান শিখরের একক আগ্রহে এ প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছেন রেল কর্মকর্তারা।
ভারতের অর্থায়নে খুলনা থেকে মোংলা বন্দরে ট্রেনে পণ্য পরিবহনের লক্ষ্যে ৪ হাজার ২৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে রেলপথ বসানো হয়। মোংলা বন্দর থেকে খুলনা ও যশোর হয়ে ভারতে পণ্য আমদানি-রপ্তানি সহজ করা এ প্রকল্পের লক্ষ্য ছিল। তবে ২০২৩ সালের ১ নভেম্বর উদ্বোধনের দীর্ঘ সাত মাস পর গত ১ জুন থেকে পুরোনো ইঞ্জিন ও বগি দিয়ে ‘মোংলা কমিউটার’ নামে একটিমাত্র যাত্রীবাহী ট্রেন চলছে এই লাইনে।
গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলোর যা অবস্থা
দেশের রেল যোগাযোগের ‘লাইফ লাইন’ খ্যাত ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের দূরত্ব ৯০ কিলোমিটার কমিয়ে বিকল্প (কডলাইন) রেলরুট তৈরি করার প্রকল্প থমকে গেছে। ২৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ এ লাইন হলে ট্রেনে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে যেতে সময় লাগবে মাত্র তিন ঘণ্টা। কয়েক দশক ধরে আলোচনা চলার পরে ২০১০ সালে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের মাধ্যমে এ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। রেলের সূত্র বলেছে, মন্ত্রণালয়ের ‘অদৃশ্য ইশারায়’ কাজ বন্ধ হয়ে যায়। রেল কর্তৃপক্ষ এর কারণ বলতে পারছে না। প্রকল্প পরিচালক মাহবুবুর রহমান বলেছেন, গত ১২ মার্চ মন্ত্রণালয় একটি নির্দেশনাপত্র জারি করে কাজ স্থগিত করে।
বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের মেয়াদ ছিল ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত। অগ্রগতি না হওয়ায় দুই দফা সময় বাড়িয়ে তা ২০২৬ সাল পর্যন্ত করা হয়েছে। এ প্রকল্পে সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী স্টেশন থেকে বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার রানীরহাট পর্যন্ত ৮৫ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণের কথা। অর্থায়নের জটিলতায় ভারতীয় ঋণের এ প্রকল্পের অগ্রগতি নেই। ভারতের সঙ্গে বর্তমান সম্পর্কের টানাপোড়েনে দৃশ্যত তা আরও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
২০১৬ সালে চীনের ঋণে জয়দেবপুর-ঈশ্বরদী সেকশনে ডুয়েলগেজ লাইন তৈরির বিষয়ে সমঝোতা হয়। শর্ত অনুযায়ী কাজ পায় চীনের ঠিকাদার সিসিইসিসি। কিন্তু চীন ২০২০ সালে প্রকল্প থেকে সরে দাঁড়ায়। এরপর বাংলাদেশ রেলওয়ে জাপানের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থাকে (জাইকা) বিনিয়োগের প্রস্তাব দেয়। ২০২১ সালে জাইকা কাজ শুরু করলেও প্রকল্পের তেমন অগ্রগতি নেই। কারণ, জাইকা আবার সমীক্ষা করতে বলছে।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বগুড়া-সিরাজগঞ্জ এবং জয়দেবপুর-ঈশ্বরদী প্রকল্প আগামী পাঁচ বছরেও বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা নেই। অগ্রগতি নেই টঙ্গী-জামালপুর ডাবল রেললাইন ও ঢাকা-সিলেট ডাবল রেললাইন প্রকল্পেরও।
এ বিষয়ে রেলওয়ের মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলী বলেন, ‘পর্যায়ক্রমে দেশের সব গুরুত্বপূর্ণ রেলপথ ডাবল লাইনে উন্নীত করার পরিকল্পনা থাকলেও এডিবি, বিশ্বব্যাংক, জাইকার মতো উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলোর অর্থায়ন সঠিক সময়ে না হওয়ায় করতে পারি না। অনেক কিছু তো আমাদের হাতে নেই। তাদের ওপর আমাদের নির্ভর করতে হয়।’
গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের চেয়ে অগুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের দিকে নজর বেশি কেন—এ প্রশ্নের জবাবে মহাপরিচালক বলেন, ‘ঢাকা-চট্টগ্রাম কডলাইন মন্ত্রণালয় হঠাৎ চিঠি দিয়ে বন্ধ করে দেয়। বগুড়া-সিরাজগঞ্জসহ ভারতীয় ঋণের প্রকল্পে অর্থায়ন চেয়ে বারবার চিঠি দিলেও দাতার কোনো সাড়া নেই। একটা চিঠি দিলে জবাব পেতে ৬ মাস সময় লাগে।’

বক্তারা বলেন, জলবায়ু অর্থায়ন নিয়ে ধনী দেশগুলোর গড়িমসির কারণে বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর কোটি কোটি মানুষ অস্তিত্ব সংকটে পড়ছে। বৈশ্বিক প্রতিশ্রুতি ও বাস্তব পদক্ষেপের মধ্যকার ব্যবধান ক্রমেই বাড়ছে বলে তাঁরা উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
১৮ মিনিট আগে
জাতীয় নির্বাচনে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিতকরণ, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ফ্যাসিস্ট টেররিস্টদের দমনের উদ্দেশ্যে অবিলম্বে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২’ চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। আজ দুপুরে বাংলাদেশ সচিবালয়ে এক সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এ
৪ ঘণ্টা আগে
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদির ওপর হামলাকারীকে ধরিয়ে দিতে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। একই সঙ্গে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সামনের সারিতে থাকা জুলাই যোদ্ধাদের বিশেষ নিরাপত্তা দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে।
৫ ঘণ্টা আগে
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনাকে ‘জুলাই অভ্যুত্থান’ নস্যাৎ করার সুদূরপ্রসারী ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে উল্লেখ করে, রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা এই অভ্যুত্থানের অর্জনকে ব্যর্থ করার সব অপচেষ্টা রুখে দিতে ঐক্যবদ্ধ অবস্থানে থাকার...
৫ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী ধনী দেশগুলোর জবাবদিহি, ক্ষতিপূরণ ও ন্যায্যতা নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা বলেছেন, ঋণ নয়, অনুদান ও ক্ষতিপূরণের মাধ্যমেই জলবায়ু ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর পাশে দাঁড়াতে হবে ধনী দেশগুলোকে।
রাজধানীতে শুরু হওয়া তৃতীয় জলবায়ু ন্যায্যতা সমাবেশ-২০২৫-এ বক্তারা এ আহ্বান জানান। আজ শনিবার রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই দিনব্যাপী এই সমাবেশের উদ্বোধন করা হয়।
নাগরিক প্ল্যাটফর্ম ধরিত্রী রক্ষায় আমরার (ধরা) আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে সরকারি প্রতিনিধি, আন্তর্জাতিক জলবায়ু আন্দোলনের কর্মী, গবেষক ও জলবায়ু-ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিসহ প্রায় দুই হাজার মানুষ অংশ নেন।
উদ্বোধনী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদার। সঞ্চালনা করেন ধরার সদস্যসচিব শরীফ জামিল। স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং।
বক্তারা বলেন, জলবায়ু অর্থায়ন নিয়ে ধনী দেশগুলোর গড়িমসির কারণে বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর কোটি কোটি মানুষ অস্তিত্ব সংকটে পড়ছে। বৈশ্বিক প্রতিশ্রুতি ও বাস্তব পদক্ষেপের মধ্যকার ব্যবধান ক্রমেই বাড়ছে বলে তাঁরা উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
সমাবেশের উদ্বোধনকালে সমাজকল্যাণ এবং নারী ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ বলেন, বৈশ্বিক কার্বন নিঃসরণে বাংলাদেশের দায় খুবই কম হলেও দেশটি জলবায়ু পরিবর্তনের অন্যতম বড় ভুক্তভোগী।
তিনি বলেন, ‘আমরা ধনী দেশগুলোর কাছে ঋণী নই, বরং তারা আমাদের কাছে ঋণী। জলবায়ু ন্যায্যতা এখন জবাবদিহি ও কার্যকর পদক্ষেপের প্রশ্ন।’
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনকে কেবল প্রযুক্তিগত বা অর্থনৈতিক সমস্যা হিসেবে দেখার সুযোগ নেই। জলবায়ু ন্যায্যতা মানে ন্যায়, টিকে থাকা এবং জবাবদিহি।’
জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা অব্যাহত রাখার সমালোচনা করে তিনি বলেন, প্যারিস জলবায়ু চুক্তিসহ বিভিন্ন বৈশ্বিক প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে এখনো বড় ঘাটতি রয়ে গেছে। গ্লোবাল নর্থ প্রায়ই ন্যায়বিচারের বদলে ঋণ চাপিয়ে দেয়।
ধরার সদস্যসচিব শরীফ জামিল বলেন, ‘জলবায়ু ন্যায্যতা বাংলাদেশের জন্য কেবল একটি দাবির বিষয় নয়, এটি দেশের টিকে থাকার প্রশ্ন। আমরা যদি নিজেদের ঘর থেকে ন্যায্যতা নিশ্চিত করতে না পারি, তাহলে বৈশ্বিক পর্যায়ে ন্যায্যতার দাবি প্রতিষ্ঠা করা কঠিন হবে।’
অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক প্রতিনিধিরাও ধনী দেশগুলোর জলবায়ু অর্থায়ন নীতির সমালোচনা করেন।

জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী ধনী দেশগুলোর জবাবদিহি, ক্ষতিপূরণ ও ন্যায্যতা নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা বলেছেন, ঋণ নয়, অনুদান ও ক্ষতিপূরণের মাধ্যমেই জলবায়ু ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর পাশে দাঁড়াতে হবে ধনী দেশগুলোকে।
রাজধানীতে শুরু হওয়া তৃতীয় জলবায়ু ন্যায্যতা সমাবেশ-২০২৫-এ বক্তারা এ আহ্বান জানান। আজ শনিবার রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই দিনব্যাপী এই সমাবেশের উদ্বোধন করা হয়।
নাগরিক প্ল্যাটফর্ম ধরিত্রী রক্ষায় আমরার (ধরা) আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে সরকারি প্রতিনিধি, আন্তর্জাতিক জলবায়ু আন্দোলনের কর্মী, গবেষক ও জলবায়ু-ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিসহ প্রায় দুই হাজার মানুষ অংশ নেন।
উদ্বোধনী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদার। সঞ্চালনা করেন ধরার সদস্যসচিব শরীফ জামিল। স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং।
বক্তারা বলেন, জলবায়ু অর্থায়ন নিয়ে ধনী দেশগুলোর গড়িমসির কারণে বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর কোটি কোটি মানুষ অস্তিত্ব সংকটে পড়ছে। বৈশ্বিক প্রতিশ্রুতি ও বাস্তব পদক্ষেপের মধ্যকার ব্যবধান ক্রমেই বাড়ছে বলে তাঁরা উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
সমাবেশের উদ্বোধনকালে সমাজকল্যাণ এবং নারী ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ বলেন, বৈশ্বিক কার্বন নিঃসরণে বাংলাদেশের দায় খুবই কম হলেও দেশটি জলবায়ু পরিবর্তনের অন্যতম বড় ভুক্তভোগী।
তিনি বলেন, ‘আমরা ধনী দেশগুলোর কাছে ঋণী নই, বরং তারা আমাদের কাছে ঋণী। জলবায়ু ন্যায্যতা এখন জবাবদিহি ও কার্যকর পদক্ষেপের প্রশ্ন।’
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনকে কেবল প্রযুক্তিগত বা অর্থনৈতিক সমস্যা হিসেবে দেখার সুযোগ নেই। জলবায়ু ন্যায্যতা মানে ন্যায়, টিকে থাকা এবং জবাবদিহি।’
জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা অব্যাহত রাখার সমালোচনা করে তিনি বলেন, প্যারিস জলবায়ু চুক্তিসহ বিভিন্ন বৈশ্বিক প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে এখনো বড় ঘাটতি রয়ে গেছে। গ্লোবাল নর্থ প্রায়ই ন্যায়বিচারের বদলে ঋণ চাপিয়ে দেয়।
ধরার সদস্যসচিব শরীফ জামিল বলেন, ‘জলবায়ু ন্যায্যতা বাংলাদেশের জন্য কেবল একটি দাবির বিষয় নয়, এটি দেশের টিকে থাকার প্রশ্ন। আমরা যদি নিজেদের ঘর থেকে ন্যায্যতা নিশ্চিত করতে না পারি, তাহলে বৈশ্বিক পর্যায়ে ন্যায্যতার দাবি প্রতিষ্ঠা করা কঠিন হবে।’
অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক প্রতিনিধিরাও ধনী দেশগুলোর জলবায়ু অর্থায়ন নীতির সমালোচনা করেন।

সেবার আওতা এবং আয় বাড়ানোকে লক্ষ্য দেখিয়ে রেলওয়ের জন্য গত এক যুগে কয়েক ডজন প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। আয় বাড়ানোর লক্ষ্যের কথা বলা হলেও এগুলোর মধ্যে অধিকাংশ প্রকল্প বরং রেলের ব্যয়ের বোঝা বাড়িয়েছে।
১৯ অক্টোবর ২০২৪
জাতীয় নির্বাচনে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিতকরণ, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ফ্যাসিস্ট টেররিস্টদের দমনের উদ্দেশ্যে অবিলম্বে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২’ চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। আজ দুপুরে বাংলাদেশ সচিবালয়ে এক সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এ
৪ ঘণ্টা আগে
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদির ওপর হামলাকারীকে ধরিয়ে দিতে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। একই সঙ্গে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সামনের সারিতে থাকা জুলাই যোদ্ধাদের বিশেষ নিরাপত্তা দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে।
৫ ঘণ্টা আগে
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনাকে ‘জুলাই অভ্যুত্থান’ নস্যাৎ করার সুদূরপ্রসারী ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে উল্লেখ করে, রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা এই অভ্যুত্থানের অর্জনকে ব্যর্থ করার সব অপচেষ্টা রুখে দিতে ঐক্যবদ্ধ অবস্থানে থাকার...
৫ ঘণ্টা আগেবিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা

জাতীয় নির্বাচনে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিতকরণ, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ফ্যাসিস্ট টেররিস্টদের দমনের উদ্দেশ্যে অবিলম্বে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২’ চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
আজ শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বাংলাদেশ সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত কোর কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এ কথা জানান।
উপদেষ্টা বলেন, লুট হওয়া ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান চলমান রয়েছে। এটিকে আরও জোরদার ও বেগবান করার জন্য এবং ফ্যাসিস্ট টেররিস্টদের দমনের উদ্দেশ্যে কোর কমিটি ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২’ অবিলম্বে চালু করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স ইস্যুর ক্ষেত্রে এত দিন শুধু সামরিক ও বেসামরিক কর্মচারীদের অনুকূলে ইস্যু করা হতো। তিনি বলেন, এখন জাতীয় নির্বাচনের প্রার্থীদের মধ্যে যাঁরা আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স চাইবেন, তাঁদেরও লাইসেন্স ইস্যু করা হবে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশে ফিরলে তাঁর নিরাপত্তায় কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে—এ-সংক্রান্ত সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, সরকার তারেক রহমানের নিরাপত্তায় সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে এবং তাঁর সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।
ব্রিফিংয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়-সংক্রান্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি, আইজিপি বাহারুল আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

জাতীয় নির্বাচনে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিতকরণ, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ফ্যাসিস্ট টেররিস্টদের দমনের উদ্দেশ্যে অবিলম্বে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২’ চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
আজ শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বাংলাদেশ সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত কোর কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এ কথা জানান।
উপদেষ্টা বলেন, লুট হওয়া ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান চলমান রয়েছে। এটিকে আরও জোরদার ও বেগবান করার জন্য এবং ফ্যাসিস্ট টেররিস্টদের দমনের উদ্দেশ্যে কোর কমিটি ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২’ অবিলম্বে চালু করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স ইস্যুর ক্ষেত্রে এত দিন শুধু সামরিক ও বেসামরিক কর্মচারীদের অনুকূলে ইস্যু করা হতো। তিনি বলেন, এখন জাতীয় নির্বাচনের প্রার্থীদের মধ্যে যাঁরা আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স চাইবেন, তাঁদেরও লাইসেন্স ইস্যু করা হবে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশে ফিরলে তাঁর নিরাপত্তায় কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে—এ-সংক্রান্ত সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, সরকার তারেক রহমানের নিরাপত্তায় সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে এবং তাঁর সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।
ব্রিফিংয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়-সংক্রান্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি, আইজিপি বাহারুল আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সেবার আওতা এবং আয় বাড়ানোকে লক্ষ্য দেখিয়ে রেলওয়ের জন্য গত এক যুগে কয়েক ডজন প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। আয় বাড়ানোর লক্ষ্যের কথা বলা হলেও এগুলোর মধ্যে অধিকাংশ প্রকল্প বরং রেলের ব্যয়ের বোঝা বাড়িয়েছে।
১৯ অক্টোবর ২০২৪
বক্তারা বলেন, জলবায়ু অর্থায়ন নিয়ে ধনী দেশগুলোর গড়িমসির কারণে বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর কোটি কোটি মানুষ অস্তিত্ব সংকটে পড়ছে। বৈশ্বিক প্রতিশ্রুতি ও বাস্তব পদক্ষেপের মধ্যকার ব্যবধান ক্রমেই বাড়ছে বলে তাঁরা উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
১৮ মিনিট আগে
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদির ওপর হামলাকারীকে ধরিয়ে দিতে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। একই সঙ্গে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সামনের সারিতে থাকা জুলাই যোদ্ধাদের বিশেষ নিরাপত্তা দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে।
৫ ঘণ্টা আগে
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনাকে ‘জুলাই অভ্যুত্থান’ নস্যাৎ করার সুদূরপ্রসারী ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে উল্লেখ করে, রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা এই অভ্যুত্থানের অর্জনকে ব্যর্থ করার সব অপচেষ্টা রুখে দিতে ঐক্যবদ্ধ অবস্থানে থাকার...
৫ ঘণ্টা আগেবিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদির ওপর হামলাকারী আততায়ীকে ধরিয়ে দিতে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। একই সঙ্গে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সামনের সারিতে থাকা জুলাই যোদ্ধাদের বিশেষ নিরাপত্তা দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে।
আজ শনিবার সচিবালয়ে আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত কোর কমিটির জরুরি বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান।
মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ অন্তর্বর্তী সরকার গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছে। এই বিষয়টিকে সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। অবিলম্বে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আশা করছি, অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে আমরা দুষ্কৃতকারীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে পারব। এই হামলায় জড়িত কাউকে কোনো প্রকার ছাড় দেওয়া হবে না। এ ব্যাপারে আমরা জনগণের সার্বিক সহযোগিতা পাব বলে বিশ্বাস করি। হাদির ওপর আক্রমণের ঘটনা আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার অপপ্রয়াস বলে আমরা মনে করি। নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত বা বানচাল করার সকল চেষ্টা সরকার দমন করবে।’
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বর্তমান সরকার জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখসারির যোদ্ধাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে বদ্ধপরিকর। সরকারের পক্ষ থেকে তাঁদের জন্য বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। লুট হওয়া ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার চলমান। ডেভিল হান্ট ফেস-২ অবিলম্বে চালু করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক হাদির ওপর হামলাকারী ফয়সালকে ধরিয়ে দিতে সরকার ৫০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছে বলে জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদির ওপর হামলাকারী আততায়ীকে ধরিয়ে দিতে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। একই সঙ্গে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সামনের সারিতে থাকা জুলাই যোদ্ধাদের বিশেষ নিরাপত্তা দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে।
আজ শনিবার সচিবালয়ে আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত কোর কমিটির জরুরি বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান।
মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ অন্তর্বর্তী সরকার গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছে। এই বিষয়টিকে সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। অবিলম্বে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আশা করছি, অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে আমরা দুষ্কৃতকারীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে পারব। এই হামলায় জড়িত কাউকে কোনো প্রকার ছাড় দেওয়া হবে না। এ ব্যাপারে আমরা জনগণের সার্বিক সহযোগিতা পাব বলে বিশ্বাস করি। হাদির ওপর আক্রমণের ঘটনা আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার অপপ্রয়াস বলে আমরা মনে করি। নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত বা বানচাল করার সকল চেষ্টা সরকার দমন করবে।’
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বর্তমান সরকার জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখসারির যোদ্ধাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে বদ্ধপরিকর। সরকারের পক্ষ থেকে তাঁদের জন্য বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। লুট হওয়া ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার চলমান। ডেভিল হান্ট ফেস-২ অবিলম্বে চালু করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক হাদির ওপর হামলাকারী ফয়সালকে ধরিয়ে দিতে সরকার ৫০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছে বলে জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।

সেবার আওতা এবং আয় বাড়ানোকে লক্ষ্য দেখিয়ে রেলওয়ের জন্য গত এক যুগে কয়েক ডজন প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। আয় বাড়ানোর লক্ষ্যের কথা বলা হলেও এগুলোর মধ্যে অধিকাংশ প্রকল্প বরং রেলের ব্যয়ের বোঝা বাড়িয়েছে।
১৯ অক্টোবর ২০২৪
বক্তারা বলেন, জলবায়ু অর্থায়ন নিয়ে ধনী দেশগুলোর গড়িমসির কারণে বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর কোটি কোটি মানুষ অস্তিত্ব সংকটে পড়ছে। বৈশ্বিক প্রতিশ্রুতি ও বাস্তব পদক্ষেপের মধ্যকার ব্যবধান ক্রমেই বাড়ছে বলে তাঁরা উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
১৮ মিনিট আগে
জাতীয় নির্বাচনে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিতকরণ, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ফ্যাসিস্ট টেররিস্টদের দমনের উদ্দেশ্যে অবিলম্বে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২’ চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। আজ দুপুরে বাংলাদেশ সচিবালয়ে এক সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এ
৪ ঘণ্টা আগে
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনাকে ‘জুলাই অভ্যুত্থান’ নস্যাৎ করার সুদূরপ্রসারী ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে উল্লেখ করে, রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা এই অভ্যুত্থানের অর্জনকে ব্যর্থ করার সব অপচেষ্টা রুখে দিতে ঐক্যবদ্ধ অবস্থানে থাকার...
৫ ঘণ্টা আগেযমুনায় বৈঠক
আজকের পত্রিকা ডেস্ক

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনাকে ‘জুলাই অভ্যুত্থান’ নস্যাৎ করার সুদূরপ্রসারী ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে উল্লেখ করে, রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা এই অভ্যুত্থানের অর্জনকে ব্যর্থ করার সব অপচেষ্টা রুখে দিতে ঐক্যবদ্ধ অবস্থানে থাকার জোরালো প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
আজ শনিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর শীর্ষ নেতারা এ বিষয়ে মতৈক্য প্রকাশ করেন।
বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ ও হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার ও সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যসচিব আবদুল্লাহ আল জাবের এবং আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল অংশগ্রহণ করেন।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ওসমান হাদির ওপর হামলা পূর্ব-পরিকল্পিত ও গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ; এর পেছনে বিরাট শক্তি কাজ করছে।
তিনি বলেন, ষড়যন্ত্রকারীদের উদ্দেশ্য হচ্ছে নির্বাচনটি হতে না দেওয়া। এই আক্রমণটি খুবই সিম্বলিক (প্রতীকী)। তারা তাদের শক্তি প্রদর্শন করতে চায়, নির্বাচনের সব আয়োজন ভেস্তে দিতে চায়। এগুলোকে ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করতে হবে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এখন পর্যন্ত যে তথ্য পাওয়া গেছে, তাতে মনে হচ্ছে ষড়যন্ত্রকারীরা তাদের নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করেছে। তারা প্রশিক্ষিত শুটার নিয়ে মাঠে নেমেছে।’
বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘এই পরিস্থিতিতে আমাদের অবশ্যই ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। কোনো অবস্থাতেই পরস্পরের দোষারোপ থেকে বিরত থাকতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়াজ তুলতে হবে। কোনো ধরনের অপশক্তিকে আমরা বরদাশত করব না।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের মধ্যে যতই রাজনৈতিক বক্তব্যের বিরোধিতা থাকুক না কেন, জাতির স্বার্থে এবং জুলাইয়ের স্বার্থে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতেই হবে।’
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এবং ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার করার পরামর্শ দেন সালাহউদ্দিন।
জামায়াত নেতা গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের নানা বক্তব্য একে অন্যকে দোষারোপ করার প্রবণতা বাড়িয়েছে, যার ফলে আমাদের বিরোধীরা সুযোগ পেয়েছে। আমাদের পূর্বের ন্যায় ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘ক্ষুদ্র দলীয় স্বার্থে আমরা একে অন্যকে প্রতিপক্ষ বানিয়ে ফেলেছি। জাতিকে বিভক্ত করে এমন কথা আমরা কেন বলব? সব দলকে তাদের কমিটমেন্ট ঠিক করতে হবে।’
এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানের পর থেকেই কিছু লোক এই অভ্যুত্থানকে খাটো করার জন্য নানা অপতৎপরতা চালিয়ে আসছে।’
তিনি বলেন, ‘সুসংগঠিতভাবে জুলাইয়ের বিরুদ্ধে ক্যাম্পেইন চলছে। মিডিয়া ও প্রশাসনের নানা স্তরে এই কাজ হচ্ছে। নির্বাচনের পর যারা ক্ষমতায় আসবে, তারাও এর ভুক্তভোগী হবে। কেউই একা সরকার চালাতে পারবে না।’
নাহিদ বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থান নিয়ে মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন ন্যারেটিভ তৈরি করা হচ্ছে যাতে মনে হয় যারা অভ্যুত্থান করেছে তারা অপরাধ করেছে। আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টিকে নরমালাইজ করতে নানা চেষ্টা চলছে। টিভি টকশোতে তারা নিয়মিত অংশ নিচ্ছে, প্রশাসনের বিভিন্ন জায়গায় বৈঠক করছে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মিলিত হচ্ছে এবং আদালত প্রাঙ্গণে স্লোগান দিচ্ছে।’
তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘আমাদের বিশেষ কোনো নিরাপত্তার প্রয়োজন নেই। আমরা এটা নেব না। জুলাইকে সবাই মিলে ওউন করতে হবে। জুলাইকে কে কী বলবে—এই টানাপোড়েনে আমরা জুলাইকে শেষ করে দিচ্ছি। ষড়যন্ত্রকারীরা আমাদের অনৈক্যকে আমাদের পরাজয় হিসেবে দেখছে। তারা ভারতে বসে যা ইচ্ছা তা-ই করছে, আর আমরা কিছুই করতে পারছি না।’
নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, ‘বুদ্ধিজীবী বেশে, সাংস্কৃতিক কর্মী বেশে আওয়ামী লীগের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নকারীদের থামাতে হবে। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে।’
এ সময় এনসিপির মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘আমরা নিজেরা ঐক্যবদ্ধ থাকতে না পারলে কোনো নিরাপত্তাই আমাদের কাজে আসবে না। রাজনৈতিক স্বার্থে দলগুলো আওয়ামী লীগকে নানা রকম সুযোগ তৈরি করে দিচ্ছে।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের চিন্তা করতে হবে—ভবিষ্যতের জন্য আমরা কী করতে পারি।’ তিনি বলেন, ‘শুধু সরকার নয়, সবাইকে শক্ত থাকতে হবে। নিজেদের মধ্যে যেন দ্বন্দ্ব ছড়িয়ে না পড়ে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। রাজনৈতিক বক্তব্য থাকবে, কিন্তু কাউকে শত্রু ভাবা বা আক্রমণ করার সংস্কৃতি থেকে সরে আসতে হবে।’
‘নির্বাচনের সময় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়, তবে মাথায় রাখতে হবে—এটি যেন একটি নির্দিষ্ট মাত্রার মধ্যে নিয়ন্ত্রণে থাকে, ’ দলগুলোর প্রতি এই পরামর্শ দেন প্রধান উপদেষ্টা।
এ সময় আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে হানাহানি শুরু হওয়ার পর থেকেই আওয়ামী লীগ শক্তিশালী হয়েছে।’
রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনাদের শুধু দলীয় স্বার্থ নয়, জাতীয় স্বার্থের বিষয়েও সজাগ থাকতে হবে।’

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনাকে ‘জুলাই অভ্যুত্থান’ নস্যাৎ করার সুদূরপ্রসারী ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে উল্লেখ করে, রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা এই অভ্যুত্থানের অর্জনকে ব্যর্থ করার সব অপচেষ্টা রুখে দিতে ঐক্যবদ্ধ অবস্থানে থাকার জোরালো প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
আজ শনিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর শীর্ষ নেতারা এ বিষয়ে মতৈক্য প্রকাশ করেন।
বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ ও হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার ও সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যসচিব আবদুল্লাহ আল জাবের এবং আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল অংশগ্রহণ করেন।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ওসমান হাদির ওপর হামলা পূর্ব-পরিকল্পিত ও গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ; এর পেছনে বিরাট শক্তি কাজ করছে।
তিনি বলেন, ষড়যন্ত্রকারীদের উদ্দেশ্য হচ্ছে নির্বাচনটি হতে না দেওয়া। এই আক্রমণটি খুবই সিম্বলিক (প্রতীকী)। তারা তাদের শক্তি প্রদর্শন করতে চায়, নির্বাচনের সব আয়োজন ভেস্তে দিতে চায়। এগুলোকে ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করতে হবে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এখন পর্যন্ত যে তথ্য পাওয়া গেছে, তাতে মনে হচ্ছে ষড়যন্ত্রকারীরা তাদের নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করেছে। তারা প্রশিক্ষিত শুটার নিয়ে মাঠে নেমেছে।’
বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘এই পরিস্থিতিতে আমাদের অবশ্যই ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। কোনো অবস্থাতেই পরস্পরের দোষারোপ থেকে বিরত থাকতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়াজ তুলতে হবে। কোনো ধরনের অপশক্তিকে আমরা বরদাশত করব না।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের মধ্যে যতই রাজনৈতিক বক্তব্যের বিরোধিতা থাকুক না কেন, জাতির স্বার্থে এবং জুলাইয়ের স্বার্থে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতেই হবে।’
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এবং ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার করার পরামর্শ দেন সালাহউদ্দিন।
জামায়াত নেতা গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের নানা বক্তব্য একে অন্যকে দোষারোপ করার প্রবণতা বাড়িয়েছে, যার ফলে আমাদের বিরোধীরা সুযোগ পেয়েছে। আমাদের পূর্বের ন্যায় ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘ক্ষুদ্র দলীয় স্বার্থে আমরা একে অন্যকে প্রতিপক্ষ বানিয়ে ফেলেছি। জাতিকে বিভক্ত করে এমন কথা আমরা কেন বলব? সব দলকে তাদের কমিটমেন্ট ঠিক করতে হবে।’
এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানের পর থেকেই কিছু লোক এই অভ্যুত্থানকে খাটো করার জন্য নানা অপতৎপরতা চালিয়ে আসছে।’
তিনি বলেন, ‘সুসংগঠিতভাবে জুলাইয়ের বিরুদ্ধে ক্যাম্পেইন চলছে। মিডিয়া ও প্রশাসনের নানা স্তরে এই কাজ হচ্ছে। নির্বাচনের পর যারা ক্ষমতায় আসবে, তারাও এর ভুক্তভোগী হবে। কেউই একা সরকার চালাতে পারবে না।’
নাহিদ বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থান নিয়ে মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন ন্যারেটিভ তৈরি করা হচ্ছে যাতে মনে হয় যারা অভ্যুত্থান করেছে তারা অপরাধ করেছে। আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টিকে নরমালাইজ করতে নানা চেষ্টা চলছে। টিভি টকশোতে তারা নিয়মিত অংশ নিচ্ছে, প্রশাসনের বিভিন্ন জায়গায় বৈঠক করছে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মিলিত হচ্ছে এবং আদালত প্রাঙ্গণে স্লোগান দিচ্ছে।’
তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘আমাদের বিশেষ কোনো নিরাপত্তার প্রয়োজন নেই। আমরা এটা নেব না। জুলাইকে সবাই মিলে ওউন করতে হবে। জুলাইকে কে কী বলবে—এই টানাপোড়েনে আমরা জুলাইকে শেষ করে দিচ্ছি। ষড়যন্ত্রকারীরা আমাদের অনৈক্যকে আমাদের পরাজয় হিসেবে দেখছে। তারা ভারতে বসে যা ইচ্ছা তা-ই করছে, আর আমরা কিছুই করতে পারছি না।’
নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, ‘বুদ্ধিজীবী বেশে, সাংস্কৃতিক কর্মী বেশে আওয়ামী লীগের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নকারীদের থামাতে হবে। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে।’
এ সময় এনসিপির মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘আমরা নিজেরা ঐক্যবদ্ধ থাকতে না পারলে কোনো নিরাপত্তাই আমাদের কাজে আসবে না। রাজনৈতিক স্বার্থে দলগুলো আওয়ামী লীগকে নানা রকম সুযোগ তৈরি করে দিচ্ছে।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের চিন্তা করতে হবে—ভবিষ্যতের জন্য আমরা কী করতে পারি।’ তিনি বলেন, ‘শুধু সরকার নয়, সবাইকে শক্ত থাকতে হবে। নিজেদের মধ্যে যেন দ্বন্দ্ব ছড়িয়ে না পড়ে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। রাজনৈতিক বক্তব্য থাকবে, কিন্তু কাউকে শত্রু ভাবা বা আক্রমণ করার সংস্কৃতি থেকে সরে আসতে হবে।’
‘নির্বাচনের সময় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়, তবে মাথায় রাখতে হবে—এটি যেন একটি নির্দিষ্ট মাত্রার মধ্যে নিয়ন্ত্রণে থাকে, ’ দলগুলোর প্রতি এই পরামর্শ দেন প্রধান উপদেষ্টা।
এ সময় আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে হানাহানি শুরু হওয়ার পর থেকেই আওয়ামী লীগ শক্তিশালী হয়েছে।’
রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনাদের শুধু দলীয় স্বার্থ নয়, জাতীয় স্বার্থের বিষয়েও সজাগ থাকতে হবে।’

সেবার আওতা এবং আয় বাড়ানোকে লক্ষ্য দেখিয়ে রেলওয়ের জন্য গত এক যুগে কয়েক ডজন প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। আয় বাড়ানোর লক্ষ্যের কথা বলা হলেও এগুলোর মধ্যে অধিকাংশ প্রকল্প বরং রেলের ব্যয়ের বোঝা বাড়িয়েছে।
১৯ অক্টোবর ২০২৪
বক্তারা বলেন, জলবায়ু অর্থায়ন নিয়ে ধনী দেশগুলোর গড়িমসির কারণে বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর কোটি কোটি মানুষ অস্তিত্ব সংকটে পড়ছে। বৈশ্বিক প্রতিশ্রুতি ও বাস্তব পদক্ষেপের মধ্যকার ব্যবধান ক্রমেই বাড়ছে বলে তাঁরা উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
১৮ মিনিট আগে
জাতীয় নির্বাচনে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিতকরণ, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ফ্যাসিস্ট টেররিস্টদের দমনের উদ্দেশ্যে অবিলম্বে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২’ চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। আজ দুপুরে বাংলাদেশ সচিবালয়ে এক সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এ
৪ ঘণ্টা আগে
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদির ওপর হামলাকারীকে ধরিয়ে দিতে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। একই সঙ্গে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সামনের সারিতে থাকা জুলাই যোদ্ধাদের বিশেষ নিরাপত্তা দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে।
৫ ঘণ্টা আগে