আজকের পত্রিকা ডেস্ক
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানের ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে জুলাই জাতীয় সনদের চূড়ান্ত খসড়া তৈরি করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতের ভিত্তিতে সনদ চূড়ান্ত করা হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মতামতসহ কিছু শব্দ ও ভাষাগত সংশোধন শেষে খসড়াটি এরই মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠিয়েছে কমিশন। চূড়ান্ত খসড়ায় বেশ কিছু বিষয়ে বিএনপি ‘অসামঞ্জস্য’ দেখছে বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। দলটি শিগগির মতামত দেবে।
‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’— এই দলিলকে বিশেষ মর্যাদা ও আইনি ভিত্তি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি আছে চূড়ান্ত খসড়ায়। এতে রাষ্ট্র সংস্কার, সংবিধান সংশোধন, নির্বাচন ব্যবস্থা ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, জন প্রশাসন, পুলিশ এবং দুর্নীতি দমন— এসব ক্ষেত্রে কাঠামোগত পরিবর্তনের প্রস্তাব রাখা হয়েছে।
এসব পরিবর্তনের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ও মৌলিক বিষয়ের মধ্যে রয়েছে— বাংলাদেশের নাগরিকদের জাতীয়তা হিসেব ‘বাঙালি’ বাদ দেওয়া; সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অনুচ্ছেদে পরিবর্তনের প্রস্তাব— বিশেষ করে জরুরি অবস্থার ধারা ও সাংবিধানিক সংশোধনী প্রক্রিয়ায় গণভোট; রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে সংসদের উভয় কক্ষের সদস্যদের ভোট এবং প্রধানমন্ত্রী পদে একব্যক্তির মেয়াদ সর্বোচ্চ দশ বছর নির্ধারণ; নির্বাচনকালীন সময়ে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরিয়ে আনা, জাতীয় সংসদের পাশাপাশি ‘সেনেট’ নামে ১০০ সদস্যের উচ্চকক্ষ গঠনের প্রস্তাব; সংসদে নারীর জন্য ১০০ আসন করা।
জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫–এর চূড়ান্ত খসড়ায় অন্তর্ভুক্ত প্রধান সংস্কারক্ষেত্রগুলো আলাদা শিরোনামে বিস্তারিতভাবে উপস্থাপন করা হলো—
১. সংবিধান সংস্কার
— রাষ্ট্রভাষা বাংলাই থাকবে, তবে নাগরিক পরিচয় হবে কেবল ‘বাংলাদেশি’।
— সংবিধান সংশোধনের জন্য সংসদের উভয় কক্ষের দুই-তৃতীয়াংশ ভোট প্রয়োজন হবে। তবে কিছু অনুচ্ছেদ (যেমন: ৮, ৪৮, ৫৬, ১৪২ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার সম্পর্কিত ধারা) সংশোধনের ক্ষেত্রে গণভোটের বাধ্যবাধকতা থাকবে।
— সংবিধান লঙ্ঘন বা পরিবর্তন–সংক্রান্ত অপরাধকে আগের মতো রাষ্ট্রদ্রোহ হিসেবে গণ্য না করে সুনির্দিষ্ট আইন দ্বারা বিচার করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
— জরুরি অবস্থা জারির ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হবে। রাষ্ট্রপতির ঘোষণার পাশাপাশি সংসদের অনুমোদন বাধ্যতামূলক হবে। নাগরিকের মৌলিক অধিকার যেমন জীবনের অধিকার ও বিচার পাওয়ার অধিকার জরুরি অবস্থাতেও অক্ষুণ্ণ থাকবে।
২. নির্বাচন ব্যবস্থা
— জাতীয় সংসদের পাশাপাশি ‘সেনেট’ নামে ১০০ সদস্যবিশিষ্ট উচ্চকক্ষ গঠিত হবে।
— সেনেটের সদস্যরা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের (Proportional Representation–PR) ভিত্তিতে নির্বাচিত হবেন।
— স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর নির্বাচন সরাসরি নির্বাচন কমিশন পরিচালনা করবে এবং স্থানীয় সরকারের আর্থিক ও প্রশাসনিক পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত করা হবে।
— নির্বাচনকালীন সময়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার প্রস্তাব রাখা হয়েছে। এ সরকার গঠনের জন্য সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী দলগুলোর সমন্বয়ে একটি নির্বাচনকালীন প্রধানমন্ত্রী মনোনয়ন বোর্ড কাজ করবে।
৩. রাষ্ট্রপতি
— রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হবেন জাতীয় সংসদ ও সেনেটের সদস্যদের ভোটে।
— রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী হতে হলে কোনো রাজনৈতিক দল বা সরকারি পদে যুক্ত থাকা যাবে না।
— রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে। তিনি মানবাধিকার কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন, তথ্য কমিশন, আইন কমিশন, অডিট কমিশন ও নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্য নিয়োগ করবেন।
— রাষ্ট্রপতির অভিশংসন প্রক্রিয়া আরও স্পষ্টভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে— প্রথমে সংসদের নিম্নকক্ষে দুই-তৃতীয়াংশ ভোটে প্রস্তাব পাস, এরপর উচ্চকক্ষ তা অনুমোদন করবে।
৪. প্রধানমন্ত্রী ও সরকার ব্যবস্থা
— প্রধানমন্ত্রী পদে একব্যক্তির মেয়াদ সর্বোচ্চ দুইবার বা ১০ বছর নির্ধারণ করা হয়েছে।
— প্রধানমন্ত্রী একই সঙ্গে দলের প্রধান হতে পারবেন না। অর্থাৎ দলীয় প্রধান ও সরকার প্রধানের দায়িত্ব আলাদা রাখা হবে।
— তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগ প্রক্রিয়া ধাপে ধাপে বিস্তারিতভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে—সংসদীয় আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতা না হলে বিশেষ নির্বাচন বোর্ড এবং প্রয়োজনে বিচার বিভাগের অংশগ্রহণে সমাধান করা হবে।
৫. সংসদ
— সংসদ হবে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট—জাতীয় সংসদ (নিম্নকক্ষ) ও সেনেট (উচ্চকক্ষ)।
— সেনেট জাতীয় সংসদের আইন পর্যালোচনা করতে পারবে, তবে আইন পাসের ক্ষমতা থাকবে না।
— জাতীয় সংসদে ধাপে ধাপে নারীর জন্য ১০০ আসন নিশ্চিত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
— সংরক্ষিত নারী আসনের পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোকে তাদের প্রার্থীতালিকায় অন্তত ৫% নারী প্রার্থী মনোনয়ন বাধ্যতামূলক করা হবে।
— সংসদের গুরুত্বপূর্ণ স্থায়ী কমিটি যেমন—পাবলিক একাউন্টস কমিটি, অনুমিত হিসাব কমিটি, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান কমিটি—এসবের সভাপতি হবেন বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্যরা।
— দলীয় শৃঙ্খলা (সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ) শিথিল করার প্রস্তাব করা হয়েছে। শুধু বাজেট ও আস্থা ভোটে দলীয় নির্দেশ মানা বাধ্যতামূলক হবে; অন্য ক্ষেত্রে সাংসদরা স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারবেন।
৬. বিচার বিভাগ
— প্রধান বিচারপতি নিয়োগের প্রক্রিয়া পরিবর্তন করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতি নিয়োগ করলেও একটি সুপারিশ বোর্ড থাকবে, যেখানে সিনিয়র বিচারপতিরা অংশ নেবেন।
— বিচারকদের জবাবদিহিতা ও অপসারণ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা বাড়ানোর প্রস্তাব রাখা হয়েছে।
— আদালতের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার পাশাপাশি বিচারক নিয়োগে স্বজনপ্রীতি বা দলীয় প্রভাব প্রতিরোধে সাংবিধানিক নিরাপত্তা যুক্ত করার কথা বলা হয়েছে।
৭. দুর্নীতি দমন ও প্রশাসন
— দুর্নীতি দমন কমিশনের পূর্ণ স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হবে, কমিশন সদস্য নিয়োগে রাষ্ট্রপতির ভূমিকা থাকলেও সংসদীয় অনুমোদন বাধ্যতামূলক হবে।
— প্রশাসন ও পুলিশ সংস্কারের মাধ্যমে দলীয় নিয়ন্ত্রণমুক্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে।
পরিশেষে, জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ মূলত গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, সুশাসন, জবাবদিহি, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার ও দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ প্রবর্তনের মাধ্যমে রাষ্ট্র কাঠামোতে বড় ধরনের সংস্কারের রূপরেখা দিয়েছে। এটি ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে গড়ে ওঠা গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের পাশাপাশি ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের নতুন গণতান্ত্রিক যাত্রাপথের দিকনির্দেশনা হিসেবে প্রস্তাবিত হয়েছে।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানের ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে জুলাই জাতীয় সনদের চূড়ান্ত খসড়া তৈরি করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতের ভিত্তিতে সনদ চূড়ান্ত করা হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মতামতসহ কিছু শব্দ ও ভাষাগত সংশোধন শেষে খসড়াটি এরই মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠিয়েছে কমিশন। চূড়ান্ত খসড়ায় বেশ কিছু বিষয়ে বিএনপি ‘অসামঞ্জস্য’ দেখছে বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। দলটি শিগগির মতামত দেবে।
‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’— এই দলিলকে বিশেষ মর্যাদা ও আইনি ভিত্তি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি আছে চূড়ান্ত খসড়ায়। এতে রাষ্ট্র সংস্কার, সংবিধান সংশোধন, নির্বাচন ব্যবস্থা ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, জন প্রশাসন, পুলিশ এবং দুর্নীতি দমন— এসব ক্ষেত্রে কাঠামোগত পরিবর্তনের প্রস্তাব রাখা হয়েছে।
এসব পরিবর্তনের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ও মৌলিক বিষয়ের মধ্যে রয়েছে— বাংলাদেশের নাগরিকদের জাতীয়তা হিসেব ‘বাঙালি’ বাদ দেওয়া; সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অনুচ্ছেদে পরিবর্তনের প্রস্তাব— বিশেষ করে জরুরি অবস্থার ধারা ও সাংবিধানিক সংশোধনী প্রক্রিয়ায় গণভোট; রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে সংসদের উভয় কক্ষের সদস্যদের ভোট এবং প্রধানমন্ত্রী পদে একব্যক্তির মেয়াদ সর্বোচ্চ দশ বছর নির্ধারণ; নির্বাচনকালীন সময়ে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরিয়ে আনা, জাতীয় সংসদের পাশাপাশি ‘সেনেট’ নামে ১০০ সদস্যের উচ্চকক্ষ গঠনের প্রস্তাব; সংসদে নারীর জন্য ১০০ আসন করা।
জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫–এর চূড়ান্ত খসড়ায় অন্তর্ভুক্ত প্রধান সংস্কারক্ষেত্রগুলো আলাদা শিরোনামে বিস্তারিতভাবে উপস্থাপন করা হলো—
১. সংবিধান সংস্কার
— রাষ্ট্রভাষা বাংলাই থাকবে, তবে নাগরিক পরিচয় হবে কেবল ‘বাংলাদেশি’।
— সংবিধান সংশোধনের জন্য সংসদের উভয় কক্ষের দুই-তৃতীয়াংশ ভোট প্রয়োজন হবে। তবে কিছু অনুচ্ছেদ (যেমন: ৮, ৪৮, ৫৬, ১৪২ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার সম্পর্কিত ধারা) সংশোধনের ক্ষেত্রে গণভোটের বাধ্যবাধকতা থাকবে।
— সংবিধান লঙ্ঘন বা পরিবর্তন–সংক্রান্ত অপরাধকে আগের মতো রাষ্ট্রদ্রোহ হিসেবে গণ্য না করে সুনির্দিষ্ট আইন দ্বারা বিচার করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
— জরুরি অবস্থা জারির ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হবে। রাষ্ট্রপতির ঘোষণার পাশাপাশি সংসদের অনুমোদন বাধ্যতামূলক হবে। নাগরিকের মৌলিক অধিকার যেমন জীবনের অধিকার ও বিচার পাওয়ার অধিকার জরুরি অবস্থাতেও অক্ষুণ্ণ থাকবে।
২. নির্বাচন ব্যবস্থা
— জাতীয় সংসদের পাশাপাশি ‘সেনেট’ নামে ১০০ সদস্যবিশিষ্ট উচ্চকক্ষ গঠিত হবে।
— সেনেটের সদস্যরা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের (Proportional Representation–PR) ভিত্তিতে নির্বাচিত হবেন।
— স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর নির্বাচন সরাসরি নির্বাচন কমিশন পরিচালনা করবে এবং স্থানীয় সরকারের আর্থিক ও প্রশাসনিক পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত করা হবে।
— নির্বাচনকালীন সময়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার প্রস্তাব রাখা হয়েছে। এ সরকার গঠনের জন্য সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী দলগুলোর সমন্বয়ে একটি নির্বাচনকালীন প্রধানমন্ত্রী মনোনয়ন বোর্ড কাজ করবে।
৩. রাষ্ট্রপতি
— রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হবেন জাতীয় সংসদ ও সেনেটের সদস্যদের ভোটে।
— রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী হতে হলে কোনো রাজনৈতিক দল বা সরকারি পদে যুক্ত থাকা যাবে না।
— রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে। তিনি মানবাধিকার কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন, তথ্য কমিশন, আইন কমিশন, অডিট কমিশন ও নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্য নিয়োগ করবেন।
— রাষ্ট্রপতির অভিশংসন প্রক্রিয়া আরও স্পষ্টভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে— প্রথমে সংসদের নিম্নকক্ষে দুই-তৃতীয়াংশ ভোটে প্রস্তাব পাস, এরপর উচ্চকক্ষ তা অনুমোদন করবে।
৪. প্রধানমন্ত্রী ও সরকার ব্যবস্থা
— প্রধানমন্ত্রী পদে একব্যক্তির মেয়াদ সর্বোচ্চ দুইবার বা ১০ বছর নির্ধারণ করা হয়েছে।
— প্রধানমন্ত্রী একই সঙ্গে দলের প্রধান হতে পারবেন না। অর্থাৎ দলীয় প্রধান ও সরকার প্রধানের দায়িত্ব আলাদা রাখা হবে।
— তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগ প্রক্রিয়া ধাপে ধাপে বিস্তারিতভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে—সংসদীয় আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতা না হলে বিশেষ নির্বাচন বোর্ড এবং প্রয়োজনে বিচার বিভাগের অংশগ্রহণে সমাধান করা হবে।
৫. সংসদ
— সংসদ হবে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট—জাতীয় সংসদ (নিম্নকক্ষ) ও সেনেট (উচ্চকক্ষ)।
— সেনেট জাতীয় সংসদের আইন পর্যালোচনা করতে পারবে, তবে আইন পাসের ক্ষমতা থাকবে না।
— জাতীয় সংসদে ধাপে ধাপে নারীর জন্য ১০০ আসন নিশ্চিত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
— সংরক্ষিত নারী আসনের পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোকে তাদের প্রার্থীতালিকায় অন্তত ৫% নারী প্রার্থী মনোনয়ন বাধ্যতামূলক করা হবে।
— সংসদের গুরুত্বপূর্ণ স্থায়ী কমিটি যেমন—পাবলিক একাউন্টস কমিটি, অনুমিত হিসাব কমিটি, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান কমিটি—এসবের সভাপতি হবেন বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্যরা।
— দলীয় শৃঙ্খলা (সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ) শিথিল করার প্রস্তাব করা হয়েছে। শুধু বাজেট ও আস্থা ভোটে দলীয় নির্দেশ মানা বাধ্যতামূলক হবে; অন্য ক্ষেত্রে সাংসদরা স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারবেন।
৬. বিচার বিভাগ
— প্রধান বিচারপতি নিয়োগের প্রক্রিয়া পরিবর্তন করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতি নিয়োগ করলেও একটি সুপারিশ বোর্ড থাকবে, যেখানে সিনিয়র বিচারপতিরা অংশ নেবেন।
— বিচারকদের জবাবদিহিতা ও অপসারণ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা বাড়ানোর প্রস্তাব রাখা হয়েছে।
— আদালতের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার পাশাপাশি বিচারক নিয়োগে স্বজনপ্রীতি বা দলীয় প্রভাব প্রতিরোধে সাংবিধানিক নিরাপত্তা যুক্ত করার কথা বলা হয়েছে।
৭. দুর্নীতি দমন ও প্রশাসন
— দুর্নীতি দমন কমিশনের পূর্ণ স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হবে, কমিশন সদস্য নিয়োগে রাষ্ট্রপতির ভূমিকা থাকলেও সংসদীয় অনুমোদন বাধ্যতামূলক হবে।
— প্রশাসন ও পুলিশ সংস্কারের মাধ্যমে দলীয় নিয়ন্ত্রণমুক্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে।
পরিশেষে, জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ মূলত গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, সুশাসন, জবাবদিহি, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার ও দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ প্রবর্তনের মাধ্যমে রাষ্ট্র কাঠামোতে বড় ধরনের সংস্কারের রূপরেখা দিয়েছে। এটি ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে গড়ে ওঠা গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের পাশাপাশি ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের নতুন গণতান্ত্রিক যাত্রাপথের দিকনির্দেশনা হিসেবে প্রস্তাবিত হয়েছে।
আপাতত পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের ছাড়পত্র ছাড়াই ‘রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ স্থাপন’ প্রকল্প অনুমোদন করেছে সরকার। আজ রোববার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় পরিবেশ ছাড়পত্র নেওয়ার শর্তে সিরাজগঞ্জের ৫১৯ কোটি টাকা ব্যয় সাপেক্ষে প্রকল্পটি অনুমোদিত হয়।
৪ ঘণ্টা আগেকক্সবাজার থেকে অসুস্থ হয়ে ঢাকায় ফেরার পরদিন রাজধানী স্কয়ার হাসপাতালে সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর অ্যাপেন্ডিক্সের অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। আজ রোববার (১৭ আগস্ট) রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিষয়টি আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেছেন স্কয়ার হাসপাতালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইউসুফ সিদ্দিক।
৪ ঘণ্টা আগেমিয়ানমারের রাখাইনে যুদ্ধ পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় প্রায় ৫০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশ সীমান্তসংলগ্ন এলাকায় আশ্রয় নিয়েছে। পরিস্থিতি আরও খারাপ হলে তারা সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে ঢুকে পড়তে পারে বলে স্থানীয় কর্মকর্তারা আশঙ্কা করছেন। রোহিঙ্গাবিষয়ক জাতীয় টাস্কফোর্সের (এনটিএফ) এক সভায় বিষয়টি জানানো হয়।
৫ ঘণ্টা আগেঅর্থনীতিবিদ ড. আবুল বারকাতের মুক্তির দাবিতে বিবৃতি দিয়েছেন মানবাধিকারকর্মী, শিক্ষক, আইনজীবীসহ ১২২ জন নাগরিক। তাঁরা মনে করেন, আবুল বারকাতকে বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হওয়ার আগেই অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আজ রোববার সংবাদমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে এ কথা জানান তাঁরা।
৬ ঘণ্টা আগে