Ajker Patrika

সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ: সংসদে কামরুল 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৭ জুন ২০২৪, ২২: ১৬
Thumbnail image

পুলিশ ও প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠাকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে মনে করেন সরকারদলীয় এমপি ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম। কিন্তু তারপরও এগুলো সত্য বলে প্রতীয়মান হয় উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, ‘আইনকে ভয় পায় মানে হচ্ছে, তারা দুর্নীতিগ্রস্ত। তাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ, সেগুলো সত্য।’ 

আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে এ অভিযোগ করেন ঢাকা-২ আসনের এমপি। 

দলীয় নেতা-কর্মীদের দুর্নীতিতে ছাড় দেওয়া হয় না দাবি করে কামরুল ইসলাম বলেন, ‘ইদানীং যে সমস্ত ঘটনা ঘটে যাচ্ছে, আমি বিশ্বাস করি, এগুলো একটা ষড়যন্ত্রের অংশ। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের হিসেবে হঠাৎ করে কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রচার–প্রোপাগান্ডা হচ্ছে। দেশের মানুষের সন্দেহ হয়, আজকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে দুর্নীতির বিষয়টি সামনে এসেছে।’

তিনি বলেন, ‘কিন্তু এ কথা স্বীকার করতে হবে, যাদের বিরুদ্ধে আজকে অভিযোগ তারা কেন আইনকে ভয় পায়? আইনকে ভয় পেয়ে বিদেশে কেন চলে যায়? আজকে বেনজীর সাহেব, ছাগল–কাণ্ডের কর্মকর্তারা (এনবিআরের সাবেক সদস্য মতিউর রহমান) কেন আইনকে ভয় পায়? আইনকে ভয় পায় মানে হচ্ছে তারা দুর্নীতিগ্রস্ত। তাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ সেগুলো সত্য। এটা ষড়যন্ত্রের অংশ, কিন্তু তারপরও এগুলো সত্য বলে প্রতীয়মান হয়।’ 

কামরুল বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী (শেখ হাসিনা) আজকে বিশ্বের অন্যতম সৎ নেতা হিসেবে পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। সেখানে বাংলাদেশ কোনো অবস্থানে দুর্নীতিগ্রস্ত বা দুর্নীতিবাজদের সহ্য করতে পারে না। বিএনপি কখনো তাদের দুর্নীতিবাজদের শায়েস্তা করতে পারে নাই। আওয়ামী বিভিন্ন সময় মন্ত্রী-এমপিদের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে প্রমাণ করেছে। কিছুদিন আগে ক্যাসিনো–কাণ্ডে আমাদের অনেকেই গ্রেপ্তার হয়েছেন। বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়েছেন।’

কামরুল ইসলাম বলেন, ‘বিশ্বের অন্যতম সৎ রাষ্ট্রনায়ক আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশের ব্যাংক লুটেরা, অর্থ পাচারকারীরা এবং এ সমস্ত দুর্নীতিবাজেরা আমাদের গায়ে চুনকালি মাখতে পারে না। ক্যাসিনো–কাণ্ডে যেমনিভাবে বিচার করা হয়েছিল, তেমনিভাবে তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহথির মোহাম্মদকে ছাড়িয়ে যাবে উল্লেখ করে কামরুল ইসলাম বলেন, ‘যদি দুর্নীতি, ব্যাংক লুটেরা এবং অপকর্মকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়, আমি বিশ্বাস করি, তিনি আবার ক্ষমতায় আসবেন। এখনই সময় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের। আমরা রাজনীতি যারা করি, আমাদের লজ্জা হয় এ সমস্ত দুর্নীতিবাজ, ব্যাংক লুটেরাদের চিত্র দেখি।’

সংরক্ষিত মহিলা আসনের সরকারদলীয় এমপি আরমা দত্ত বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করে আসছেন। কিন্তু কতিপয় সুবিধাবাদী মানুষ দুর্নীতি করে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে। এটার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা প্রয়োজন।’

স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য হুছামুদ্দীন চৌধুরী বলেন, ‘যারা পুকুর চুরি করে তাদের বিচারের আওতায় এনে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। কালোটাকা সাদা করার সুযোগ রাখা হয়েছে। এর যৌক্তিক কারণ থাকতে পারে। এই সুযোগে যেন দুর্নীতিবাজরা উৎসাহিত না হয় সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে।’

সংসদ সদস্যের জন্য শুল্কমুক্ত গাড়ি সুবিধা রাখার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলাম, ভাবলাম যে একটি ট্যাক্সমুক্ত গাড়ি পাব। এখানে আমাদের ওপর ট্যাক্স আরোপ করে দেওয়া হয়েছে। জীবনে প্রথম স্বপ্নটি কি বাস্তবায়ন হবে না! কত গাড়ি মিসইউজ হচ্ছে, পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। সরকারের বিভিন্ন বিভাগে এগুলো অব্যবস্থাপনায় পড়ে আছে। আর ৩০০ সংসদ সদস্য একটি করে গাড়ি পাবেন, সেখানেও আবার ২৫ শতাংশ কর দিতে হবে, এটি আমাদের কাম্য নয়।’

স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য আখতারুজ্জামান বলেন, মূল্যস্ফীতি কমাতে হবে। অর্থমন্ত্রী এ জন্য পরিকল্পনা নিয়েছেন। কিন্তু অর্থমন্ত্রী যে মডেল নিয়েছেন, একই মডেল যুক্তরাষ্ট্র অনুসরণ করে পাঁচ বছরেও সফল হয়নি। তিনি অর্থমন্ত্রীকে সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর সঙ্গে আবার বসার আহ্বান জানান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত