Ajker Patrika

আইসিটি বিভাগের জিপিটি প্ল্যাটফর্ম জি-ব্রেইনের যাত্রা শুরু 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৩ জুলাই ২০২৪, ১৬: ০১
আইসিটি বিভাগের জিপিটি প্ল্যাটফর্ম জি-ব্রেইনের যাত্রা শুরু 

বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের উদ্যোগে এআইভিত্তিক জিপিটি (জেনারেটিভ প্রি-ট্রেইনড ট্রান্সফরমারস) প্ল্যাটফর্ম জি-ব্রেইনের উদ্বোধন করা হয়েছে। এর পূর্ণ রূপ ‘গভর্নমেন্ট ব্রেইন’। এই প্ল্যাটফরম কনস্টিটিউশন (সংবিধান) জিপিটি, বাজেট জিপিটি ও স্টার্টআপ জিপিটি—এই তিন মডেলের সমন্বয়ে কাজ করবে।

আজ বুধবার রাজধানীর আইসিটি টাওয়ারে জি-ব্রেইন প্ল্যাটফরমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ সব তথ্য জানানো হয়। তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের উদ্যোগে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি ও ওরিয়ন ইনফরমেটিক্সের সহায়তায় জি-ব্রেইন প্ল্যাটফরমটি তৈরি করা হয়েছে। 

অনুষ্ঠানে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘এআই (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) আসলেই ভয়ংকর দৈত্যে পরিণত হচ্ছে। বিষয়টা যদি আমরা পারমাণবিক শক্তির সঙ্গে তুলনা করি, তাহলে দেখা যাবে—পারমাণবিক শক্তি বিদ্যুৎ তৈরিতে ব্যবহার হচ্ছে। আবার এটা দিয়ে পৃথিবী ধ্বংসও করা সম্ভব। একদিক থেকে পারমাণবিক অস্ত্রের চেয়েও এআই ভয়ংকর হতে পারে। কারণ পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারে মানুষের প্রয়োজন হয়। কিন্তু এআই এত শক্তিশালী হয়ে উঠছে যে, এটা নিজেরাই অনেক কিছু করে ফেলতে পারছে।’ 

অনুষ্ঠানে মূল নিবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান কাজী জামিল আজহার। তিনি বলেন, ‘প্রতিটি দেশ তাদের ন্যাশনাল এআই সিস্টেম বানাচ্ছে। এখন যদি আমরা এটা না করি, তাহলে ১০০ বছর পরে অন্যেরটা ব্যবহার করতে হবে।’ অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন স্থপতি ইকবাল হাবিব, আইসিটি বিভাগের সচিব শামসুল আরেফিন প্রমুখ। 

অনুষ্ঠানে বলা হয়, বর্তমান বিশ্বে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত করেছে। সেই ধারাবাহিকতায় ওপেন এআই তাদের সর্বোত্তম হাতিয়ার চ্যাটজিপিটি দিয়ে পুরো বিশ্বকে চমকে দিয়েছে। 

স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগ জি-ব্রেইন তৈরির উদ্যোগ নেয়। নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সরকারি উদ্যোগে শিক্ষার্থী, গবেষক, নীতিনির্ধারক, অর্থনীতিবিদ, উদ্যোক্তা, বিনিয়োগকারী এবং সাধারণ নাগরিকদের জন্য এআই সংবলিত এই জিপিটি মডেলটি তৈরি করা হয়েছে। বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে বলে মনে করছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ। 

উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, জি-ব্রেইনের মাধ্যমে বাংলাদেশের সংবিধান, বাজেট নির্ধারণ ও স্টার্টআপ প্রস্তুতির ক্ষেত্রে ব্যাপক ও সহজলভ্য তথ্যের অধ্যয়ন সম্ভব হবে। এর মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশে অগ্রযাত্রা আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে। এই উদ্যোগ দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতকে আরও শক্তিশালী করবে এবং নাগরিকদের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সচেতনতা বাড়াবে। 

জিপিটির পূর্ণ রূপ হলো জেনারেটিভ প্রি-ট্রেইনড ট্রান্সফরমারস। এখানে জেনারেটিভ বলতে এমন একটি মডেলকে বোঝায়, যা টেক্সট বা লেখা তৈরি করতে পারে এবং প্রি-ট্রেইনডের অর্থ হলো, এই মডেলের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে তথ্য বা ডেটা আগে থেকেই সংরক্ষণ করা আছে। ট্রান্সফরমার হলো এআই মডেলের আর্কিটেকচার বা গঠন। 

এআইভিত্তিক জিপিটি প্ল্যাটফরম ‘জি-ব্রেইনের’ প্রথম মডেল সংবিধান জিপিটি। স্মার্ট বাংলাদেশের অন্যতম স্তম্ভ হচ্ছে স্মার্ট নাগরিক। আর এই স্মার্ট নাগরিক হওয়ার একটি পূর্বশর্ত সংবিধান সম্পর্কিত জ্ঞানার্জন। সেই জ্ঞানার্জনের অন্যতম মাধ্যম হতে যাচ্ছে এই সংবিধান জিপিটি বা কনস্টিটিউশন জিপিটি। 

জি-ব্রেইন কনস্টিটিউশন জিপিটি একটি উন্নত এআই মডেল যা বাংলাদেশের সংবিধান সম্পর্কিত যেকোনো প্রশ্নের উত্তর দিতে সক্ষম। এই টুলটির মাধ্যমে খুব সহজেই ও অল্প সময়ে ছাত্র-ছাত্রীরা, নাগরিক কিংবা আইনজীবীরা বাংলাদেশের সংবিধান ও এর সংশোধনী সম্পর্কে জানতে কিংবা গবেষণা করতে পারবেন। আইনজীবীদের জন্য এটি আইনি গবেষণা ও মামলার প্রস্তুতির ক্ষেত্রে দক্ষতা বৃদ্ধি করবে। 

জি-ব্রেইনের দ্বিতীয় মডেল জিপিটি। এই মডেল জাতীয় বাজেটের জটিল বিষয়গুলো সহজে বুঝতে সাহায্য করে। আমাদের দেশের অর্থনৈতিক নীতিমালা ও কৌশল সম্পর্কে জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাজেট জিপিটি মডেলটি নীতিনির্ধারক, অর্থনীতিবিদ এবং সাধারণ মানুষের জন্য উপকারী, যারা বাজেট বরাদ্দ, অর্থনৈতিক নীতিমালা এবং অর্থনৈতিক কৌশল সম্পর্কে জানতে আগ্রহী। এটি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটের বিশ্লেষণ এবং অর্থনৈতিক সিদ্ধান্তের প্রভাব সম্পর্কে তথ্য সরবরাহ করে। এর মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা বাজেটের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন এবং দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি সম্পর্কে ধারণা পাবেন। 

জি-ব্রেইনের তৃতীয় মডেল স্টার্টআপ জিপিটি। এটি এমন একটি টুল, যা নিত্যনতুন স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমকে তহবিল, যোগ্যতা এবং প্রয়োজনীয় তথ্য সম্পর্কে বিস্তারিত নির্দেশনা প্রদান করে। স্টার্টআপ জিপিটি উদ্যোক্তা ও বিনিয়োগকারীদের জন্য অমূল্য সব তথ্য সরবরাহ করবে। এর মাধ্যমে অনায়াসে কোথায় কোথায় তহবিল আছে, কারা কারা এর যোগ্য হবেন, কী কী ডকুমেন্টস লাগবে—এ ধরনের সমস্ত প্রয়োজনীয় তথ্য এক নিমেষেই জানা যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

অগ্নিদুর্ঘটনা এড়াতে সারা দেশের ভূমি অফিসের নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা ­­
আপডেট : ২২ অক্টোবর ২০২৫, ১৭: ৩৮
অগ্নিদুর্ঘটনা এড়াতে সারা দেশের ভূমি অফিসের নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ

ভূমি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন মাঠ পর্যায়ের ভূমি অফিসগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। গত সোমবার ভূমি মন্ত্রণালয়ের মাঠ প্রশাসন-২ শাখা থেকে সব জেলা প্রশাসকদের পাঠানো এক চিঠিতে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে, দেশের বিভিন্ন স্থানে আকস্মিক অগ্নি দুর্ঘটনা সংঘটিত হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের রেকর্ডরুমে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনসহ ভূমি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন মাঠ পর্যায়ের সব উপজেলা ভূমি অফিস, রাজস্ব সার্কেল, ইউনিয়ন ভূমি অফিসে এ ধরনের আকস্মিক দুর্ঘটনা এড়াতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারসহ যাবতীয় সতর্কতামূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি।

চিঠিতে সব জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের রেকর্ডরুমে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনসহ উপজেলা ভূমি অফিস, রাজস্ব সার্কেল, ইউনিয়ন ভূমি অফিসগুলোতে আকস্মিক অগ্নি দুর্ঘটনা, যে কোনো ক্ষয়ক্ষতি বা বিপর্যয় এড়াতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারসহ যাবতীয় সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ করা হয়েছে।

সব বিভাগীয় কমিশনার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এবং সহকারী কমিশনারদের (ভূমি) চিঠির অনুলিপি দেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের চাওয়ার আগেই ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২২ অক্টোবর ২০২৫, ১৫: ৩৫
ফাওজুল কবির খান। ফাইল ছবি
ফাওজুল কবির খান। ফাইল ছবি

সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা সরকার নির্ধারিত ক্ষতিপূরণ পেতে নানা হয়রানি ও দীর্ঘসূত্রতার মুখে পড়েন। এমনকি অনেক ক্ষেত্রে তাঁরা কিছুই পান না। এই জটিলতা দূর করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা যাতে চাওয়ার আগেই ক্ষতিপূরণ পান, সে ব্যাপারে বিআরটিএকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আজ বুধবার এক অনুষ্ঠানে এসব কথা জানান সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস উপলক্ষে তেজগাঁওয়ে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের অডিটরিয়ামে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

সড়ক উপদেষ্টা বলেন, ‘ফিটনেসবিহীন গাড়ি ডাম্পিংয়ে পাঠানো হচ্ছে এবং এই অভিযান আরও বাড়ানো হবে। তিনি গাড়ির মালিকদের ফিটনেস ঠিক রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘ফিটনেসবিহীন যানবাহন কোনো অবস্থাতেই সড়কে চলতে দেওয়া হবে না। কারণ, এটি দুর্ঘটনার বড় কারণ।’

মোটরসাইকেল বিষয়ে মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘মোটরসাইকেলের সংখ্যা বাড়ায় দুর্ঘটনা ও মৃত্যুর হারও বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে হেলমেট ব্যবহারে সচেতনতা বাড়াতে হবে। এবার জাতীয় সড়ক দিবস উপলক্ষে ১০ হাজার মোটরসাইকেল চালকের মধ্যে হেলমেট বিতরণ করা হবে, বিশেষ করে যেসব এলাকায় সড়ক নির্মাণকাজ চলছে বা মানুষ ভোগান্তিতে আছে।’

সড়ক দুর্ঘটনার পরিসংখ্যান নিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনা আমাদের জন্য এক ধরনের গ্লানি ও ব্যর্থতা। ২০১৫ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত প্রতিদিন গড়ে ১৬টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। এতে গড়ে ২৭ জন নিহত ও ৩৮ জন আহত হন।’

উপদেষ্টার মতে, সাম্প্রতিক সময়ে মোটরসাইকেলের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় দুর্ঘটনাও বেড়েছে।

দুর্ঘটনার ক্ষতিপূরণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আইন অনুযায়ী সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তির পরিবার ৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ পাওয়ার অধিকারী, কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই তারা তা পান না।’

উপদেষ্টা আরও জানান, বিআরটিএকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যেন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো চাওয়ার আগেই ক্ষতিপূরণের টাকা পায়।

সড়ক ব্যবস্থাপনা বিষয়ে ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘সড়ক নিরাপত্তা শুধু সড়ক বিভাগের দায়িত্ব নয়, বরং এটি করতে হবে সকল সংস্থার সমন্বয়ে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ড্রাইভিং লাইসেন্সে বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণ থাকছে না: উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২২ অক্টোবর ২০২৫, ১৭: ৩২
জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। ছবি: আজকের পত্রিকা
জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। ছবি: আজকের পত্রিকা

ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদানের বর্তমান পদ্ধতিতে আমূল পরিবর্তন আনা হচ্ছে। এখন থেকে প্রশিক্ষণ ছাড়া কেউ ড্রাইভিং লাইসেন্স পাবেন না। লাইসেন্স দেওয়ার সব কমিটি বাতিল করে আন্তর্জাতিক মানে নতুন ব্যবস্থা চালু করা হবে। লাইসেন্স পাওয়ার পূর্বশর্ত হিসেবে অন্তত ৬০ ঘণ্টার প্রশিক্ষণ নিতে হবে। এর আয়োজন করবে সরকার। প্রশিক্ষণকালে প্রশিক্ষণার্থীদের ভাতার ব্যবস্থাও থাকবে।

আজ বুধবার এক অনুষ্ঠানে এসব কথা জানান সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস উপলক্ষে তেজগাঁওয়ে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের অডিটরিয়ামে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

উপদেষ্টা বলেন, ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে হলে চালকদের স্বীকৃত প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে বাধ্যতামূলক প্রশিক্ষণ নিতে হবে। বর্তমানে বিআরটিসিসহ দেশে বেশ কয়েকটি বৈধ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে, যেখান থেকে এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।

তিনি বলেন, প্রশিক্ষণে দুটি বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হবে—প্রথমত, সড়কের বিভিন্ন সাইন ও চিহ্ন সম্পর্কে জ্ঞান এবং দ্বিতীয়ত, যানবাহন সঠিকভাবে চালানো ও নিয়ন্ত্রণ করার দক্ষতা। কারণ, বেশির ভাগ দুর্ঘটনা ঘটে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ হারানোর কারণে।

ফাওজুল কবির খান আরও বলেন, ড্রাইভিং লাইসেন্স-সংক্রান্ত কাজগুলো বিআরটিএ থেকে সরিয়ে প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটগুলোর মাধ্যমে পরিচালনা করা হবে। এতে বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণমূলক ক্ষমতা থাকবে না।

তিনি আশা প্রকাশ করেন, আগামী মাসের মধ্যেই এই নতুন প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হবে।

সড়ক পরিবহন উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, সড়কে যানজট ও দুর্ঘটনার মূল কারণ প্রশিক্ষণহীন চালকেরা।

তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, ‘কিছুদিন আগে আমি সরাইল এলাকায় গিয়েছিলাম। যাওয়ার আগে সেখানে নিয়মিত যানজট ছিল, কিন্তু আমার পরিদর্শনের দুই দিন পর থেকেই আর জ্যাম নেই। আমার হাতে কোনো জাদুর কাঠি নেই—শুধু কিছু শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করেছি।’

এদিকে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখস চৌধুরী, সেতু বিভাগের সচিব মোহাম্মদ আবদুর রউফ, বিআরটিএ চেয়ারম্যান আবু মমতাজ সাদ উদ্দিন আহমেদ, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ মঈনুল হাসান, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব সাইফুল আলম প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের অগ্রগতিতে কাটবে ভোটের সংশয়, আশা আসিফ নজরুলের

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা ­­
আপডেট : ২২ অক্টোবর ২০২৫, ১৪: ৪৫
উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। ফাইল ছবি
উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। ফাইল ছবি

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের বাস্তব অগ্রগতিতে নির্বাচন নিয়ে ‘সব সংশয় কেটে যাবে’ বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।

আজ বুধবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে সংশয়ের কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে আসিফ নজরুল বলেন, ‘মাঠে-ঘাটে মানুষের মধ্যে আস্থার অভাব আছে কি না, আমি জানি না। আমার মনে হয়, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যেভাবে অনৈক্য থাকে, তারা একজন আরেকজনের বিরুদ্ধে যেভাবে বলে, ওটার কারণে হয়তো নির্বাচন নিয়ে মানুষের মধ্যে সংশয় কাজ করছে। তবে আশা করি, আমরা যখন জুলাই সনদ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বাস্তব অগ্রগতি দেখব, এ সম্পর্কে সব সংশয় খুব দ্রুত কেটে যাবে।’

রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির প্রতিনিধিদলের ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক হয়। বৈঠকে অন্তর্বর্তী সরকারকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূমিকা পালন করতে প্রধান উপদেষ্টাকে পরামর্শ দেন বিএনপির নেতারা।

এ বিষয়ে আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি বিএনপির সঙ্গে আলোচনায় যেটা বুঝেছি, উনারা তত্ত্বাবধায়ক সরকার চাননি। অন্তর্বর্তী সরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করবে, সেটা বলেছে। তারা আমাদের কাছ থেকে নিরপেক্ষ ভূমিকা চেয়েছে। আমরা উনাদেরকে বলেছি, আমরা নিরপেক্ষ ভূমিকাই পালন করছি। নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করার জন্য এমনকি প্রধান উপদেষ্টা এই নিশ্চয়তাও দিয়েছেন—জনপ্রশাসন বা অন্যান্য ক্ষেত্রে বড় বদলির ব্যাপারটা উনি নিজে দেখবেন।’

আসিফ নজরুল বলেন, ‘বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায়, এটা বলেনি। বলেছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূমিকা পালন করতে। আমাদের নিরপেক্ষ ভূমিকা চেয়েছে। সে বিষয়ে তাদের নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে।’

নির্বাচনের সময় উপদেষ্টা পরিষদ ছোট হবে কি না, সেই প্রশ্নে আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘এ ধরনের কথা কোথাও আলোচনা হয়নি। এটা উপদেষ্টা পরিষদে আলোচনার বিষয়। নির্বাচনকালীন সরকার ছোট হবে কি না, এ ধরনের কোনো দাবিও কোনো মহল থেকে উত্থাপন হয়নি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত