Ajker Patrika

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে এখন বৈঠকে রাজি নন

কূটনৈতিক প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১২ জুন ২০২৫, ১৬: ৪৮
মুহাম্মদ ইউনূস ও কিয়ার স্টারমার। ফাইল ছবি
মুহাম্মদ ইউনূস ও কিয়ার স্টারমার। ফাইল ছবি

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের বহুল আলোচিত বৈঠকটি শেষ পর্যন্ত হচ্ছে না। সরকারি সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টার সফরের আমন্ত্রণ আসার পর থেকেই তাঁর ও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর একটি বৈঠকের জন্য বাংলাদেশ কূটনৈতিক ও অন্যান্য উপায়ে চেষ্টা চালায়। বৈঠকটি যদি হয় তাহলে আজ বৃহস্পতিবার অথবা আগামীকাল শুক্রবার হতে পারে, এমন আভাস বাংলাদেশ পক্ষকে ব্রিটিশরা দেয়। শেষ পর্যন্ত এ বৈঠকটি হচ্ছে না।

ব্রিটিশ ইংরেজি দৈনিক ফিন্যান্সিয়াল টাইমস আজ ‘স্টারমার ডিক্লাইনস টু মিট বাংলাদেশ লিডার ট্র্যাকিং ডাউন মিসিং বিলিয়নস’ শিরোনামে এক প্রতিবেদনে দাবি করেছে, বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া বিপুল অর্থসম্পদের খোঁজে লন্ডনে আশা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী রাজি হননি।

এ রিপোর্টটি ঠিক আছে কি না, আজকের পত্রিকার ঢাকা অফিস থেকে জানতে চাওয়া হলে লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনের একজন কূটনীতিক বলেন, ‘এ বৈঠকটি হবে এমনটা কখনোই চূড়ান্ত হয়নি।’

অন্য একজন কূটনীতিকের দাবি, ‘ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের সরকার প্রধান বা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আদৌ সাক্ষাৎ করতে চান না, বিষয়টি এমন নয়। তবে এ মুহূর্তে তিনি সম্ভবত (ব্রিটেনের) অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক কারণে এ সাক্ষাতে রাজি নন।’

চারদিনের সফরে মুহাম্মদ ইউনূস গত মঙ্গলবার থেকে লন্ডনে রয়েছেন। ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লসের কাছ থেকে ‘কিং চার্লস হারমনি অ্যাওয়ার্ড ২০২৫’ গ্রহণের জন্য তাঁর এ সফর।

আজ বৃহস্পতিবার লন্ডনের সেন্ট জেমস প্যালেসে এক অনুষ্ঠানে এই পুরস্কার প্রদান করার কথা রয়েছে।

কিয়ার স্টারমার লেবার পার্টি থেকে নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী। একই দল থেকে ব্রিটিশ এমপি হয়েছেন বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিকী। টিউলিপ শেখ হাসিনার একমাত্র ছোটবোন শেখ রেহানার মেয়ে।

বাংলাদেশে প্রভাবশালী শেখ পরিবারের এই তিন সদস্যের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অর্থপাচারের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। পাচারের টাকায় লন্ডনে বাড়ি কেনার অভিযোগে টিউলিপের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হওয়ার পর স্টারমারের মন্ত্রিসভা থেকে টিউলিপকে পদত্যাগ করতে হয়।

বাংলাদেশ সরকারের দাবি, শেখ হাসিনা ও তাঁর ঘনিষ্টজনদের দ্বারা পাচার হওয়া অর্থসম্পদের বড় একটি অংশ গেছে যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের কয়েকটি দেশে।

ব্রিটিশ সরকার যুক্তরাজ্যে অবস্থিত শেখ হাসিনার সরকারের ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর সম্পদ জব্দ করেছে। কাতারভিত্তিক আল-জাজিরা গতকাল বুধবার এক প্রতিবেদনে এ কথা বলেছে।

আল-জাজিরা এর আগে এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে যুক্তরাজ্য সাইফুজ্জামানের কমপক্ষে ৩৫০টি বাড়ি থাকার কথা জানায়।

অন্য ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান এর আগে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলেছে, ড. ইউনূসের লন্ডন সফরকালে রাজা চার্লস ও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ নির্ধারিত রয়েছে। টিউলিপ ওই সময় তাঁর সঙ্গে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে গিয়ে সাক্ষাৎ করার জন্য লন্ডনে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশনের মাধ্যমে ইউনূসকে চিঠি দেন।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলমের বক্তব্য অনুযায়ী, টিউলিপের এ অভিপ্রায় পূরণ হচ্ছে না।

মুহাম্মদ ইউনূসের অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে আগামীকাল শুক্রবার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠকের কথা রয়েছে। আগামীকালই তিনি দেশের উদ্দেশে লন্ডন ত্যাগ করবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত