Ajker Patrika

মধ্যাঞ্চলে বন্যার অবনতি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক
মধ্যাঞ্চলে বন্যার অবনতি

দেশের মধ্যাঞ্চলগুলোতে পদ্মাসহ বিভিন্ন নদনদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় নতুন করে আরও নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। দেখা দিয়েছে নদীভাঙন। পানিবন্দী জীবনযাপন করছে হাজার হাজার মানুষ। অনেকে ভিটেমাটি হারিয়ে আশ্রয় নিয়েছে অন্যত্র। দেশের উত্তরাঞ্চলের কিছু এলাকায় কমতে শুরু করেছে পানি। তবে দেখা দিয়েছে খাদ্য ও খাওয়ার পানির সংকট। পানিবাহিত বিভিন্ন রোগে ভুগছে তারা।

মানিকগঞ্জের হরিরামপুর প্রতিনিধি জানান, এ এলাকায় পদ্মার পানি বাড়ছেই। চরাঞ্চলের আজিমনগর, লেছড়াগঞ্জ ও সুতালড়ি ইউনিয়নে কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দী। এ ছাড়াও উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের বাহিরচর, পিয়াজচর, বকচর, জগন্নাথপুর, ভাওয়ারডাঙ্গী, বয়ড়া ইউনিয়নের দড়িকান্দি, খালপাড়, দাসকান্দি, হারুকান্দি ইউনিয়নের হারুকান্দি, ভেলাবাদ গ্রামে পানিবন্দী হাজার হাজার মানুষ।

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ প্রতিদিন জানান, কয়েক দিন ধরেই পদ্মার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। নদীতীরবর্তী ৪টি ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকার মানুষ পানিবন্দী। পদ্মাকন্যা খ্যাত রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলায় পদ্মার পানি গত ২৪ ঘণ্টায় ৩ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৭৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। দেবগ্রাম ও দৌলতদিয়া ইউনিয়নের পদ্মাতীরবর্তী অধিকাংশ এলাকায় বাড়ির উঠানে ও রাস্তায় হাঁটুপানি।

রাজবাড়ী প্রতিনিধি জানান, পদ্মায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ইতিমধ্যেই ৬৭টি গ্রামের মানুষ পানিবন্দী হয়ে কোমর ও হাঁটুপানির মধ্যে বসবাস করছেন। ৩০ হাজারের বেশি মানুষ পানিবন্দী থাকায় তাদের মাঝে দেখা দিয়েছে পানিবাহিত নানা ধরনের রোগ। বিশুদ্ধ পানি, খাবার ও পশুখাদ্যেরও সংকট রয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম।

সদর উপজেলার বরাট গ্রামের ফুলজান বেগম বলেন, ‘দুই সপ্তাহের বেশি সময় পানিতে বন্দী। ফলে ঘরের চৌকির উপরে রান্নার কাজ করছি। চেয়ারম্যান-মেম্বাররা তো কোনো খবর নেয় না।’ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী হাফিজুর রহমান জানান, আগামী দু-তিন দিন পদ্মার পানি বাড়বে। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আরিফুল হক জানান, ইতিমধ্যেই জেলার পানিবন্দীদের তালিকা করা হয়েছে। তালিকা অনুযায়ী সাড়ে সাত হাজার পরিবারের জন্য ১০ মেট্রিক টন চাল ও ২ লাখ টাকা নগদ প্রদান করা হয়েছে।

ফরিদপুরের সদরপুর প্রতিনিধি জানান, পদ্মা ও আড়িয়াল খাঁ নদের পানি ৩ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৭৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নারিকেলবাড়িয়া, চর নাছিরপুর, চর মানাইড়, ঢেউখালী, আকোটেরচর ইউনিয়নসহ ৫টি ইউনিয়নের প্রায় কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে গরু-ছাগল নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। চলাচলের একমাত্র বাহন ডিঙি।

মাদারীপুর প্রতিনিধি জানান, মাওয়া পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানি ৫ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ১৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সদর উপজেলার আড়িয়াল খাঁ নদে ৩ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে।

মাদারীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী পার্থ প্রমিত সাহা বলেন, যেভাবে পানি বাড়ছে তাতে এখনো বোঝা যাচ্ছে না ঠিক কত দিন বাড়বে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত