মো. ইমরান হোসাইন
চারদিকে পাহাড়ঘেরা সবুজ মাঠ। সুনসান পরিবেশ। হরেক রকম ফুল আর পাতাবাহারগাছে পাখিদের কলকাকলি। মাঠের এক পাশে পাহাড়ের গা বেয়ে ধাপে ধাপে সিঁড়ি ওপরের দিকে উঠে গেছে। সেই সিঁড়ি ধরে এগোলো দেখা যাবে কাচ দিয়ে ঘেরা মরিয়মের প্রতিকৃতি। আশপাশে বেশ কিছু দৃষ্টিনন্দন আশ্রম ও ধ্যানঘর।
চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার বড় উঠান ইউনিয়নের দেয়াঙ পাহাড়ের নিরিবিলি পরিবেশের এই আশ্রমের নাম মরিয়ম আশ্রম। পর্তুগিজ বণিকদের হাতে এর পত্তন হয়েছিল প্রায় ৫০০ বছর আগে।
চট্টগ্রাম শহর থেকে দেয়াঙ পাহাড়ে যেতে পার হতে হবে শাহ আমানত সেতু। সেখান থেকে গিয়ে নামতে হবে কেইপিজেড গেটে। পরে কেইপিজেড সড়ক ধরে এক কিলোমিটার গেলে দেয়াঙ পাহাড়ের মরিয়ম আশ্রম।
আশ্রমের প্রবেশপথে মূল ফটকের পাশে ক্রুশসহ একটি পাথরের ফলকে বড় করে লেখা—‘দিয়াঙে খ্রিষ্টবাণী প্রচারের গোড়াপত্তন’। সেখান থেকে জানা গেল, ১৫১৮ সালে চট্টগ্রামে আসেন পর্তুগিজ বণিকেরা। ১৫৩৭ সালের দিকে তাঁরা দেয়াঙ পাহাড় এলাকায় বসতি স্থাপন করেন। দক্ষিণ ভারতের কোচিন থেকে খ্রিষ্টধর্ম প্রচারের জন্য ১৫৯৮ সালে চট্টগ্রামে মিশনারি ও যাজকেরা আসতে থাকেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন জেজুইট ধর্ম সংঘের পুরোহিত ফাদার ফ্রান্সিসকো ফার্নান্দেজ। ১৫৯৯ সালে দেয়াঙে চট্টগ্রামের গির্জার নির্মাণকাজ শুরু করেন তিনি। ১৬০০ সালে ফাদার ফ্রান্সিসকো ফার্নান্দেজ চট্টগ্রাম শহরের বান্ডেল রোড ও জামালখান এলাকায় আরও দুটি গির্জা নির্মাণ করেন।
মরিয়ম আশ্রমের প্রতিষ্ঠাতা ব্রাদার ফ্লেভিয়ান লাপ্লান্তর স্মৃতিস্তম্ভ দেখা গেল পাহাড়ের ওপর। আশ্রম ঘুরে দেখার সময় একটি প্রার্থনার ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন ব্রাদার সিলভেস্টার মৃধা। তিনি জানান, দেয়াঙের ৫০০ বছরের ইতিহাসকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়। একটি হচ্ছে গোড়াপত্তনের, আরেকটি শেষের দিকের ১০০ বছরের ইতিহাস। মরিয়ম আশ্রমের পাশে বংশপরম্পরায় বসবাস করছেন যোজেফপাড়া ও মরিয়মপাড়ায় প্রায় ১ হাজার বাসিন্দা। ১৬২৯ থেকে ১৬৩১ সাল পর্যন্ত পর্তুগিজ বংশোদ্ভূত আগস্টিনিয়ান যাজকেরা দেয়াঙে ছিলেন। এখনো ওই পর্তুগিজ বংশের ১২ পরিবার এবং ডি রোজা বংশের ১১টি পরিবার দেয়াঙ পাহাড়ে বসবাস করছেন।
ব্রাদার সিলভেস্টার মৃধা আরও বলেন, ১৯৩২ সালের ১৭ অক্টোবর কানাডা থেকে চট্টগ্রামে আসেন ব্রাদার ফ্লেভিয়ান লাপ্লান্ত। তিনি দেয়াঙে এসে এখানকার বিভিন্ন সম্প্রদায়ের আর্থসামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি নানা সেবামূলক কাজের উদ্যোগ নেন এবং এই আশ্রম গড়ে তোলেন। আজকের মরিয়ম আশ্রম মা মরিয়মের পুণ্য তীর্থস্থান হিসেবে খ্রিষ্টান তীর্থযাত্রীদের কাছে সমাদৃত।
১৯৪৬ সালে ব্রাদার ফ্লেভিয়ান লাপ্লান্ত গড়ে তোলেন মরিয়ম আশ্রম উচ্চবিদ্যালয়। এখানে এখন দেড় হাজারের বেশি শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে। আশ্রমের পাশে গড়ে তোলা হয়েছে প্রার্থনার জায়গা, গির্জা, চিকিৎসাসেবা কেন্দ্র, ছাত্রাবাস। পাশাপাশি একটি ধ্যানকেন্দ্র গড়ে তোলা হচ্ছে। প্রতিবছরের ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে এখানে আয়োজন করা হয় দুই দিনব্যাপী মা মরিয়মের তীর্থ উৎসব।
১৯৭৬ সালের ২৬ ডিসেম্বর দেয়াঙ পাহাড়কে তীর্থস্থান ঘোষণা দেন তৎকালীন বিশপ যোয়াকিম রোজারিও। মা মরিয়মের উৎসব উপলক্ষে ২০২৪ সালে প্রকাশিত প্রকাশনা গ্রন্থ থেকে জানা গেছে, এই এলাকার খ্রিষ্টানদের ওপর আরাকানি সৈন্যদের অত্যাচারের প্রতিবাদ করতে গিয়ে মৃত্যুবরণ করেন যোয়াকিম রোজারিও। ওই বছর আরাকান রাজার নির্দেশে দেয়াঙে অবস্থানরত ৬০০ পর্তুগিজ শিশু, নারী ও পুরুষকে হত্যা করা হয়। সেই গণসমাধির ওপর দাঁড়িয়ে রয়েছে চট্টগ্রাম ক্যাথেড্রাল গির্জা।
মরিয়ম আশ্রম উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক দেবাশীষ দত্ত জানান, আশ্রমে প্রতিদিন শত শত লোক শুধু ঘুরতে আসেন না, তাঁরা ইতিহাসেরও পাঠ নেন। আশ্রমের প্রতিষ্ঠাতা ফ্লেভিয়ান লাপ্লান্ত ১৯৮১ সালের ১৯ জুন মৃত্যুবরণ করার পর ২০০০ সাল থেকে আশ্রমে দায়িত্ব পালন করছেন ব্রাদার লরেঞ্চ ডায়েস। ৯৫ বছর বয়সী ডায়েসকে আশ্রমের চতুর্থ গুরু ঘোষণা দেওয়া হয়।
চারদিকে পাহাড়ঘেরা সবুজ মাঠ। সুনসান পরিবেশ। হরেক রকম ফুল আর পাতাবাহারগাছে পাখিদের কলকাকলি। মাঠের এক পাশে পাহাড়ের গা বেয়ে ধাপে ধাপে সিঁড়ি ওপরের দিকে উঠে গেছে। সেই সিঁড়ি ধরে এগোলো দেখা যাবে কাচ দিয়ে ঘেরা মরিয়মের প্রতিকৃতি। আশপাশে বেশ কিছু দৃষ্টিনন্দন আশ্রম ও ধ্যানঘর।
চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার বড় উঠান ইউনিয়নের দেয়াঙ পাহাড়ের নিরিবিলি পরিবেশের এই আশ্রমের নাম মরিয়ম আশ্রম। পর্তুগিজ বণিকদের হাতে এর পত্তন হয়েছিল প্রায় ৫০০ বছর আগে।
চট্টগ্রাম শহর থেকে দেয়াঙ পাহাড়ে যেতে পার হতে হবে শাহ আমানত সেতু। সেখান থেকে গিয়ে নামতে হবে কেইপিজেড গেটে। পরে কেইপিজেড সড়ক ধরে এক কিলোমিটার গেলে দেয়াঙ পাহাড়ের মরিয়ম আশ্রম।
আশ্রমের প্রবেশপথে মূল ফটকের পাশে ক্রুশসহ একটি পাথরের ফলকে বড় করে লেখা—‘দিয়াঙে খ্রিষ্টবাণী প্রচারের গোড়াপত্তন’। সেখান থেকে জানা গেল, ১৫১৮ সালে চট্টগ্রামে আসেন পর্তুগিজ বণিকেরা। ১৫৩৭ সালের দিকে তাঁরা দেয়াঙ পাহাড় এলাকায় বসতি স্থাপন করেন। দক্ষিণ ভারতের কোচিন থেকে খ্রিষ্টধর্ম প্রচারের জন্য ১৫৯৮ সালে চট্টগ্রামে মিশনারি ও যাজকেরা আসতে থাকেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন জেজুইট ধর্ম সংঘের পুরোহিত ফাদার ফ্রান্সিসকো ফার্নান্দেজ। ১৫৯৯ সালে দেয়াঙে চট্টগ্রামের গির্জার নির্মাণকাজ শুরু করেন তিনি। ১৬০০ সালে ফাদার ফ্রান্সিসকো ফার্নান্দেজ চট্টগ্রাম শহরের বান্ডেল রোড ও জামালখান এলাকায় আরও দুটি গির্জা নির্মাণ করেন।
মরিয়ম আশ্রমের প্রতিষ্ঠাতা ব্রাদার ফ্লেভিয়ান লাপ্লান্তর স্মৃতিস্তম্ভ দেখা গেল পাহাড়ের ওপর। আশ্রম ঘুরে দেখার সময় একটি প্রার্থনার ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন ব্রাদার সিলভেস্টার মৃধা। তিনি জানান, দেয়াঙের ৫০০ বছরের ইতিহাসকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়। একটি হচ্ছে গোড়াপত্তনের, আরেকটি শেষের দিকের ১০০ বছরের ইতিহাস। মরিয়ম আশ্রমের পাশে বংশপরম্পরায় বসবাস করছেন যোজেফপাড়া ও মরিয়মপাড়ায় প্রায় ১ হাজার বাসিন্দা। ১৬২৯ থেকে ১৬৩১ সাল পর্যন্ত পর্তুগিজ বংশোদ্ভূত আগস্টিনিয়ান যাজকেরা দেয়াঙে ছিলেন। এখনো ওই পর্তুগিজ বংশের ১২ পরিবার এবং ডি রোজা বংশের ১১টি পরিবার দেয়াঙ পাহাড়ে বসবাস করছেন।
ব্রাদার সিলভেস্টার মৃধা আরও বলেন, ১৯৩২ সালের ১৭ অক্টোবর কানাডা থেকে চট্টগ্রামে আসেন ব্রাদার ফ্লেভিয়ান লাপ্লান্ত। তিনি দেয়াঙে এসে এখানকার বিভিন্ন সম্প্রদায়ের আর্থসামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি নানা সেবামূলক কাজের উদ্যোগ নেন এবং এই আশ্রম গড়ে তোলেন। আজকের মরিয়ম আশ্রম মা মরিয়মের পুণ্য তীর্থস্থান হিসেবে খ্রিষ্টান তীর্থযাত্রীদের কাছে সমাদৃত।
১৯৪৬ সালে ব্রাদার ফ্লেভিয়ান লাপ্লান্ত গড়ে তোলেন মরিয়ম আশ্রম উচ্চবিদ্যালয়। এখানে এখন দেড় হাজারের বেশি শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে। আশ্রমের পাশে গড়ে তোলা হয়েছে প্রার্থনার জায়গা, গির্জা, চিকিৎসাসেবা কেন্দ্র, ছাত্রাবাস। পাশাপাশি একটি ধ্যানকেন্দ্র গড়ে তোলা হচ্ছে। প্রতিবছরের ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে এখানে আয়োজন করা হয় দুই দিনব্যাপী মা মরিয়মের তীর্থ উৎসব।
১৯৭৬ সালের ২৬ ডিসেম্বর দেয়াঙ পাহাড়কে তীর্থস্থান ঘোষণা দেন তৎকালীন বিশপ যোয়াকিম রোজারিও। মা মরিয়মের উৎসব উপলক্ষে ২০২৪ সালে প্রকাশিত প্রকাশনা গ্রন্থ থেকে জানা গেছে, এই এলাকার খ্রিষ্টানদের ওপর আরাকানি সৈন্যদের অত্যাচারের প্রতিবাদ করতে গিয়ে মৃত্যুবরণ করেন যোয়াকিম রোজারিও। ওই বছর আরাকান রাজার নির্দেশে দেয়াঙে অবস্থানরত ৬০০ পর্তুগিজ শিশু, নারী ও পুরুষকে হত্যা করা হয়। সেই গণসমাধির ওপর দাঁড়িয়ে রয়েছে চট্টগ্রাম ক্যাথেড্রাল গির্জা।
মরিয়ম আশ্রম উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক দেবাশীষ দত্ত জানান, আশ্রমে প্রতিদিন শত শত লোক শুধু ঘুরতে আসেন না, তাঁরা ইতিহাসেরও পাঠ নেন। আশ্রমের প্রতিষ্ঠাতা ফ্লেভিয়ান লাপ্লান্ত ১৯৮১ সালের ১৯ জুন মৃত্যুবরণ করার পর ২০০০ সাল থেকে আশ্রমে দায়িত্ব পালন করছেন ব্রাদার লরেঞ্চ ডায়েস। ৯৫ বছর বয়সী ডায়েসকে আশ্রমের চতুর্থ গুরু ঘোষণা দেওয়া হয়।
শব–ই বরাতের খাবার হিসেবে হালুয়া ও রুটি খাওয়ার প্রচলন আমাদের অঞ্চলে বেশ পুরোনো। ব্যস্ততার ফাঁকে আয়োজন করে যদি রকমারি হালুয়া তৈরি না করতে পারেন, ক্ষতি নেই। খুব সহজে ঘরে থাকা সাধারণ উপকরণ দিয়ে বানিয়ে নেওয়া যায় এই খাবারটি। এমন সহজ দুটি হালুয়ার রেসিপি আনিসা আক্তার নূপুর।
৫ ঘণ্টা আগেবাশার আল-আসাদের ২৪ বছরের শাসনের অবসান ঘটেছে সিরিয়ায়। মুক্ত সিরিয়াকে নতুন করে সাজাতে এখন ব্যস্ত সে দেশের জনগণ। ভাবা হচ্ছে তাদের পর্যটনশিল্প নিয়েও। স্থানীয় পর্যটন উদ্যোক্তাদের আশা, সিরিয়ার ধ্বংসপ্রাপ্ত পর্যটনশিল্পকে পুনরুজ্জীবিত করতে সক্ষম হবেন তাঁরা।
১২ ঘণ্টা আগেবিশ্বের অন্যতম ভ্রমণ গন্তব্য হিসেবে তৈরি হওয়ার জন্য সৌদি আরবের ভিশন ২০৩০-এ প্রতিনিয়ত যোগ হচ্ছে নতুন পরিকল্পনা। কিছুদিন ধরে ভিসা নীতিতে বেশ জোর দিচ্ছে দেশটি। পর্যটক বাড়াতে ভারত ও চীনের সঙ্গে এরই মধ্যে চুক্তি করেছে তারা। এবার কর্তৃপক্ষ বিশেষ নজর দিয়েছে সৌদিয়া এয়ারলাইনসের গন্তব্য বাড়াতে। বিভিন্ন দেশ থে
১২ ঘণ্টা আগেঅবশেষে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত হয়েছে বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলার অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র দেবতাখুম। ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে পর্যটকেরা দেবতাখুম ভ্রমণে যাচ্ছেন। গত ১০ জানুয়ারি রাতে জেলা প্রশাসক শামীম আর রিনি স্বাক্ষরিত এক গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে দেশি-বিদেশি সব পর্যটকের জন্য দেবতাখুম উন্মুক্ত করার ঘোষ
১২ ঘণ্টা আগে