ইশতিয়াক হাসান

কালিম্পংয়ে ঘুরতে যাবেন যেসব জায়গায়
ভারতের পাহাড়ি শহর কালিম্পং সম্পর্কে ভালোভাবে জানা সমরেশ মজুমদারের অর্জুন সিরিজের বই পড়ে। অর্জুনের সঙ্গে কালিম্পংয়ে ‘সীতাহরণ রহস্যে’ বুঁদ হয়ে ছিলাম রীতিমতো। সেই কালিম্পংয়ে যাওয়া হয় হঠাৎ করেই। দার্জিলিং গিয়েছিলাম। ভ্রমণের তৃতীয় রাতে মনে হলো, কালিম্পং গেলে কেমন হয়! ব্যাস পরদিন সকালেই একটি গাড়ি ভাড়া করে চললাম কালিম্পং। ভ্রমণে আমার সঙ্গী স্ত্রী পুনম, মেয়ে ওয়াফিকা, শাশুড়ি ও খালা শাশুড়ি।
কালিম্পংয়ের পথে
‘ঘুম’ পর্যন্ত পরিচিত পথ মানে তেনজিং নোরগে রোড ধরে চলল গাড়ি। তারপর জোড় বাংলো পেরিয়ে নতুন এক রাস্তায় ঢুকল। এটা পেশক-রিশি রোড। মুহূর্তে বদলে গেল প্রকৃতি। দার্জিলিং এসে সে অর্থে কোনো জঙ্গলে ঢুঁ না মারায় মন ভার ছিল। এখন দেখলাম দুই পাশে গভীর বনানী। উঁচু উঁচু পাইন, বার্চ গাছ দাঁড়িয়ে।
আমাদের চালক হিন্দিতে যা বলল, তা আরও আশা জোগাল মনে। দুই পাশের জঙ্গলে ল্যাপার্ড ও লাল পান্ডা আছে। অনুমান করলাম এই উঁচু পাহাড়ি বনটা সেনচাল ওয়াইল্ড লাইফ স্যাংচুয়েরির মধ্যে পড়েছে। ১৯১৫ সালে প্রতিষ্ঠিত সেনচাল, ভারতের সবচেয়ে পুরোনো বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যগুলোর একটি। বড় দুটো লেক আছে জঙ্গলের সীমানায়। দার্জিলিংয়ের অন্য অংশে সিংগালিলার জঙ্গলে লাল পান্ডারা আছে জানি, তবে সেনচালে লাল পান্ডার ব্যাপারে পুরোপুরি নিশ্চিত হতে পারিনি আসার পরও।
গাড়ি চালকের কথা অনুয়ায়ী পথের ওপর ভোরে বা সন্ধ্যার দিকে হরিণ ওঠে আসে। একটু পরেই মোটামুটি মাঝ রাস্তায় বসে ভোজে ব্যস্ত দুই জোড়া বানরের দেখা মিলল। আমাদের দেখে কেবল এক পাশে সরে পড়ল। ওয়াফিকা এদের দেখে, খোলা জানালা পথে মুখ বের করে, চিৎকার জুড়ে দিল। বানরের দল নতুন পাগলের আমদানিতে একটু অবাকই হলো মনে হয়!
পাহাড়ি শহরের দেখা
দুই পাশে পাহাড়, অরণ্যের মাঝ দিয়ে গাড়ি যখন ছুটছিল তখন মনে হচ্ছিল আহ এই পথ যদি শেষ না হতো! কোনো গন্তব্যে পৌঁছার চেয়ে পথের সৌন্দর্যটা কখনোই কম আনন্দদায়ক নয় আমার কাছে। একটু পর গাড়িটা যখন বাঁক নিচ্ছে আশ্চর্য একটা জিনিস খেয়াল করলাম। অনেক দূরে উঁচু পাহাড়ের গায়ে অনেকই বাড়ি ঘর। যেন পাহাড়ের বুকে কোনো শহর। চালককে জিজ্ঞেস করে যে উত্তর পেলাম তাতে চমকালাম, ওটাই সিকিমের রাজধানী গ্যাংটক। একটু পর দূরের আরেক পাহাড়রাজ্যে বাড়ি-ঘর দেখিয়ে নেপালি লোকটা বলল, ওটা কালিম্পং। এরপর আমার চোখ একবার যায় গ্যাংটকের দিকে, আরেকবার কালিম্পংয়ের দিকে।
তিস্তায় মুগ্ধ
পথের চমক এখানেই শেষ হলো না, নেপালি চালক, জানাল সামনে একটা ভিউ পয়েন্ট আছে। ওখান থেকে তিস্তাকে দেখায় অপরূপ! আমরা খুশি মনে নেমে পড়লাম। ডান পাশে পাইনের জঙ্গল। ভিউ পয়েন্টটা একটু উঁচুতে। শান বাধানো এক জায়গা। চারপাশে কয়েকটা দোকান। চা, বিস্কুট, চকলেট এমনকি আশপাশের বাগান থেকে তুলে আনা কমলাও আছে। এক কাপ কফি হাতে এসে দাঁড়ালাম শান বাধানো জায়গাটির কিনারে। সঙ্গে সঙ্গে একটা ধাক্কা খেলাম, এতটাই যে আরেকটু হলে হাত থেকে কাপই পড়ে যেত, বুনো সৌন্দর্যের ধাক্কা।
সবুজ গাছপালায় ঢাকা উঁচু উঁচু পাহাড়, মাঝখান দিয়ে এঁকেবেঁকে বয়ে চলেছে তিস্তা। কোথাও কোথাও পাহাড়ি নদীর পাড়ে চিকন বালুর রেখা, কোথাও আবার জঙ্গলের মধ্যে ছোট্ট একটা বালিয়াড়ির মতো দেখা যাচ্ছে। ভাবছিলাম ইস যদি ওখানে, ওই জল-পাহাড়ের রাজ্যে কতকটা সময় কাটানো যেত! যেন সম্মোহিত এক মানুষ আমি, চোখ সরাতে পারছিলাম না। তারপর অনিচ্ছা সত্ত্বেও আবার চেপে বসলাম গাড়িতে। আমাদের গোমড়ামুখো কিন্তু ভালোমানুষ চালক এই পর্যায়ে দিল নতুন তথ্য পাহাড়ি নদী তিস্তায় আছে র্যাফটিং করার ব্যবস্থা।
কালিম্পংয়ের সীমানায়
এক সময় নিচে নেমে এলো গাড়ি, তারপর আবার উঠতে শুরু করল, কালিম্পংয়ের দিকে। এদিকটায়ও পথ অনেকই সুন্দর। এক পাশে রাস্তার পরেই পাহাড়, অন্য পাশে ঢালু হয়ে নেমে গেছে জমি, দূরে পাহাড়ের রেখা। আমাদের পাশ কাটিয়ে টুরিস্ট মিনি বাস গেল, জানলাম কালিম্পং-শিলিগুড়ি রোডে চলে ওগুলো। এক সময় ডানে একটা-দুটো বাড়ি-ঘর, হোটেল দেখা যেতে লাগল। বুঝলাম কালিম্পংয়ের সীমানায় চলে এসেছি।
কালিম্পংয়ের বেশি হোটেল-মোটেল বাজারের ধারে, জায়গাটি বেশ ঘিঞ্জি। একটু খুঁজে-পেতে এখানেই একটা হোটেল ঠিক করে ফেলি। ভাড়া ১৮০০ রুপি। নিচে বার থাকায় কড়া একটা গন্ধ সব সময় মাথা ধরিয়ে তুলত আমার। তবে অন্যদের তেমন হেলদোল দেখিনি। এখানে কালিম্পংয়ের আশপাশে বেশ কয়েকটি দ্রষ্টব্য স্থান দেখার জন্য গাড়ি ঠিক করি। কালিম্পং থেকে গাড়িতে চেপে লাভা, ললেগাঁও, রিসপের মতো জায়গায় চলে যাওয়া যায় অনায়াসে। তবে আজ পাঠকদের পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে শহরের ভেতরের কিংবা শহরলগোয়া কিছু স্পটের সঙ্গে। এগুলোর বেশিরভাগেই সশরীরে গিয়েছিলাম কালিম্পং ভ্রমণে।
হনুমান মন্দির
হনুমান টেম্পল বা হনুমান মন্দির আমার আর ওয়াফিকার দুজনেরই দারুণ পছন্দ হয়। শহর থেকে খুব একটা দূরে নয়, একেবারে কাছেও নয়। আট কিলোমিটার পাহাড়ি পথ পেরিয়ে তবে পৌঁছাই দেলো পাহাড়ের হনুমান টেম্পলের সামনে। কেউ কেউ চেনেন জায়গাটিকে হনুমান পিক নামে। সিঁড়ি ধরে সোজা পৌঁছে যাওয়া যায় বিশালদেহী হনুমান ভাস্কর্যের কাছে।
তবে সোজা পথটা না ধরে, বেশ কতকটা আঁকাবাঁকা কংক্রিটের ঢালাই দেওয়া ঘুরপথটা ব্যবহার করলে বেশি আনন্দ পাবেন। এখান থেকে চারপাশের পাহাড়রাজ্যের অনেকটাই চোখে পড়ে। একেবারে গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে দেখার চেয়ে একটু দূর থেকে দেখলেই হনুমানের ওপর সমীহ জাগে বেশি। ২০০৪ সালে উদ্বোধন হওয়া মূর্তিটির উচ্চতা ত্রিশ ফুট।
দুর্গা মন্দির
হনুমান টেম্পলের কাছেই দুর্গা মন্দির। কাজেই দেখার সুযোগ হাতছাড়া করবেন না। সব ধরনের পর্যটকই জায়গাটিতে একবার ঢুঁ মেরে যান। কিছুক্ষণ সময় কাটানোর এর জন্য তুলনা নেই। চারপাশে গাছপালা লাগিয়ে বাগানের মতো করা হয়েছে, সুদৃশ্য একটা ঘণ্টা আছে, আমরা সবাই ওটা বাজালাম, এমনকি ওয়াফিকাকেও উঁচু করে ধরতে হলো। এখান থেকে চারপাশের পাহাড়রাজ্যের অসাধারণ দৃশ্য চোখে পড়ে।
দেলো পার্ক
যাওয়ার পথটা অনেকই সুন্দর। দেলো হিল কালিম্পং শহরের সবচেয়ে উচ্চতম পয়েন্ট। এটি এখানকার সবচেয়ে মশহুর পর্যটনকেন্দ্রগুলোর একটি। পরিষ্কার দিনে হিমালয় পর্বতমালা, আশপাশের রাজ্য এবং রেল্লি ও তিস্তা উপত্যকার গ্রামগুলোর চমৎকার দৃশ্য উপভোগের সুযোগ পাবেন এখান থেকে। এখানে নানা ধরনের রাইডের ব্যবস্থা আছে। এর মধ্যে বিখ্যাত প্যারা গ্লাইডিং।
পাইন ভিউ নার্সারি
আতিশা রোডের এই নার্সারিটি উত্তর, দক্ষিণ ও মধ্য আমেরিকায় পাওয়া যাওয়া হরেক জাতের ক্যাকটাসে ভরপুর। একসঙ্গে এত জাতের কাটার রাজাদের আর কোথাও দেখিনি। কিছুটা সময় কাটিয়েছিলাম এই নার্সারিতে। ওয়াফিকা তো কোনোভাবেই নার্সারি ছেড়ে আসতে রাজি হচ্ছিল না।
মঙ্গলধাম
মঙ্গলধামটাও ঘুরে আসতে ভুলবেন না। মন্দিরটির নির্মাণশৈলী চোখে পড়ার মতো। দুই একর জায়গা নিয়ে মন্দিরটি, ঢোকার মুখেই বাহারি সব বৃক্ষ দেখে মনটা খুশি হয়ে উঠেছিল। ওপরের তলায় মন্দিরের প্রার্থনার জায়গা।
থংসা গুম্ফা
মঙ্গলধামের কাছেই থংসা গুম্ফা। কালিম্পংয়ের সবচেয়ে পুরোনো বৌদ্ধ মন্দির এটি। ভুটান গুম্ফা নামে পরিচিত মনাস্ট্রিটি ১৬৯২ সালে ভুটানের রাজার সরাসরি তত্ত্বাবধানে তৈরি হয়। পরে কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় উনিশ শতকে নতুন করে তৈরি করা হয়।
আর্মি গলফ কোর্স
বেশ কতকটা জঙ্গল, পাহাড়কে সঙ্গী করে এগোতে হয় বলে আবার খুব পছন্দ হয়েছিল আর্মি গলফ কোর্সটা। পাহাড়ের ওপর ৯ গর্তের গলফ মাঠটা। ক্লাবের রেস্তোরাঁটি বনেদি, তবে খাবার-দাবারের দাম চড়া। এখানে বসে অনেকটা সময় গলফারদের মনের আনন্দে খেলে বেড়াতে দেখেছি মাঠে।
লেপচা জাদুঘর
মূল শহর থেকে মাত্র দুই কিলোমিটার দূরত্বে লেপচা মিউজিয়ামের অবস্থান। এটি একই সঙ্গে একটি সাংস্কৃতিক কেন্দ্রও। স্থানীয়দের ঐতিহ্য সম্পর্কে ধারণা পেতে জায়গাটিতে ভ্রমণ জরুরি। স্থানীয় বাদ্যযন্ত্র, পোশাকসহ নানা সামগ্রী আপনাকে লেপচাদের জীবন সম্পর্কে ধারণা পেতে সাহায্য করবে।
মরগান’স হাউস
এখন ওয়েস্ট বেঙ্গল টুরিস্ট ডেভেলপমেন্ট করপোরেশনের আওতাধীন পর্যটন বাংলোটি ব্রিটিশ আমলের পুরোনো এক বাংলো। এর নির্মাণশৈলী আপনাকে আকৃষ্ট করবে। তেমনি প্রকৃতিপ্রেমিক হলে ভেতরের নানা জাতের গাছপালা আর পাখিও টানবে। উত্তম কুমার, কিশোর কুমারের মতো মানুষেরা এখানে থেকেছিলেন। শুনে অবাক হবেন ভুতুড়ে হিসেবেও নাম আছে এর।
খাওয়া-দাওয়া ও অন্যান্য
কালিম্পংয়ে খাওয়া নিয়ে আমার একটু ঝামেলা হয়েছে। পুনম অবশ্য ওদের থালিতে বেশ মানিয়ে নিয়েছিল। আমার ওদের ভাতটা খুব শক্ত লেগেছে। তবে রাস্তার ধারে এক দোকানে মমোটা ভালো জমেছিল। রাতে বাজারের পাশের একটা পথ ধরে হেঁটেছি অনেকটা, তখন গা কেমন ছম ছম করেছে নির্জনতায়, এখান থেকেই সবুজ পাহাড়গুলোকে দিনে ভারি সুন্দর লেগেছিল।
এ ছাড়াও কালিম্পংয়ে পাবেন আরও অনেক গুম্ফা, জাদুঘর ইত্যাদি ইত্যাদি। আমরা বাজারের কাছে একটা হোটেলে ওঠায় কিছু সুবিধা পেয়েছি সত্যি, তবে আমি বলব আপনারা একটু নীরব এলাকায় কোনো হোটেল কিংবা হোম স্টেতে উঠবেন, যেখান থেকে পাহাড়রাজ্য এমনকি কাঞ্চনজঙ্ঘার ভালো ভিউ পাওয়া যায়। অবশ্য দুনিয়ার তৃতীয় উচ্চতম পাহাড়ের দেখা পেতেই হবে তা নয়, এ ছাড়াও কালিম্পংয়ের সবুজ, কখনো বরফে ঢাকা পাহাড়, বনাঞ্চল অনেকই সুন্দর। কালিম্পং থেকে গিয়েছিলাম লাভা। সেখানকার গল্প জমা থাকুক অন্য কোনো দিনের জন্য।
কীভাবে যাবেন
ভারত যাওয়ার জন্য ভিসাটা করে নিতে হবে শুরুতে। বাসে গেলে চেংড়াবান্দা (বাংলাদেশ অংশে বুড়িমারী) হয়ে শিলিগুড়ি যাবেন। এ ছাড়া ট্রেন মিতালী এক্সপ্রেসে করে চলে যেতে পারবেন নিউ জলপাইগুড়ি। জলপাইগুড়ি বা শিলিগুড়ি থেকে জিপ বা বাসে চলে যেতে পারবেন কালিম্পং। সেখান থেকে এক দিনের জন্য গাড়ি ভাড়া করে এই জায়গাগুলি ঘুরে আসতে পারবেন অনায়াসে।
তথ্য সূত্র: ট্রাভেল ট্রায়াঙ্গল

কালিম্পংয়ে ঘুরতে যাবেন যেসব জায়গায়
ভারতের পাহাড়ি শহর কালিম্পং সম্পর্কে ভালোভাবে জানা সমরেশ মজুমদারের অর্জুন সিরিজের বই পড়ে। অর্জুনের সঙ্গে কালিম্পংয়ে ‘সীতাহরণ রহস্যে’ বুঁদ হয়ে ছিলাম রীতিমতো। সেই কালিম্পংয়ে যাওয়া হয় হঠাৎ করেই। দার্জিলিং গিয়েছিলাম। ভ্রমণের তৃতীয় রাতে মনে হলো, কালিম্পং গেলে কেমন হয়! ব্যাস পরদিন সকালেই একটি গাড়ি ভাড়া করে চললাম কালিম্পং। ভ্রমণে আমার সঙ্গী স্ত্রী পুনম, মেয়ে ওয়াফিকা, শাশুড়ি ও খালা শাশুড়ি।
কালিম্পংয়ের পথে
‘ঘুম’ পর্যন্ত পরিচিত পথ মানে তেনজিং নোরগে রোড ধরে চলল গাড়ি। তারপর জোড় বাংলো পেরিয়ে নতুন এক রাস্তায় ঢুকল। এটা পেশক-রিশি রোড। মুহূর্তে বদলে গেল প্রকৃতি। দার্জিলিং এসে সে অর্থে কোনো জঙ্গলে ঢুঁ না মারায় মন ভার ছিল। এখন দেখলাম দুই পাশে গভীর বনানী। উঁচু উঁচু পাইন, বার্চ গাছ দাঁড়িয়ে।
আমাদের চালক হিন্দিতে যা বলল, তা আরও আশা জোগাল মনে। দুই পাশের জঙ্গলে ল্যাপার্ড ও লাল পান্ডা আছে। অনুমান করলাম এই উঁচু পাহাড়ি বনটা সেনচাল ওয়াইল্ড লাইফ স্যাংচুয়েরির মধ্যে পড়েছে। ১৯১৫ সালে প্রতিষ্ঠিত সেনচাল, ভারতের সবচেয়ে পুরোনো বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যগুলোর একটি। বড় দুটো লেক আছে জঙ্গলের সীমানায়। দার্জিলিংয়ের অন্য অংশে সিংগালিলার জঙ্গলে লাল পান্ডারা আছে জানি, তবে সেনচালে লাল পান্ডার ব্যাপারে পুরোপুরি নিশ্চিত হতে পারিনি আসার পরও।
গাড়ি চালকের কথা অনুয়ায়ী পথের ওপর ভোরে বা সন্ধ্যার দিকে হরিণ ওঠে আসে। একটু পরেই মোটামুটি মাঝ রাস্তায় বসে ভোজে ব্যস্ত দুই জোড়া বানরের দেখা মিলল। আমাদের দেখে কেবল এক পাশে সরে পড়ল। ওয়াফিকা এদের দেখে, খোলা জানালা পথে মুখ বের করে, চিৎকার জুড়ে দিল। বানরের দল নতুন পাগলের আমদানিতে একটু অবাকই হলো মনে হয়!
পাহাড়ি শহরের দেখা
দুই পাশে পাহাড়, অরণ্যের মাঝ দিয়ে গাড়ি যখন ছুটছিল তখন মনে হচ্ছিল আহ এই পথ যদি শেষ না হতো! কোনো গন্তব্যে পৌঁছার চেয়ে পথের সৌন্দর্যটা কখনোই কম আনন্দদায়ক নয় আমার কাছে। একটু পর গাড়িটা যখন বাঁক নিচ্ছে আশ্চর্য একটা জিনিস খেয়াল করলাম। অনেক দূরে উঁচু পাহাড়ের গায়ে অনেকই বাড়ি ঘর। যেন পাহাড়ের বুকে কোনো শহর। চালককে জিজ্ঞেস করে যে উত্তর পেলাম তাতে চমকালাম, ওটাই সিকিমের রাজধানী গ্যাংটক। একটু পর দূরের আরেক পাহাড়রাজ্যে বাড়ি-ঘর দেখিয়ে নেপালি লোকটা বলল, ওটা কালিম্পং। এরপর আমার চোখ একবার যায় গ্যাংটকের দিকে, আরেকবার কালিম্পংয়ের দিকে।
তিস্তায় মুগ্ধ
পথের চমক এখানেই শেষ হলো না, নেপালি চালক, জানাল সামনে একটা ভিউ পয়েন্ট আছে। ওখান থেকে তিস্তাকে দেখায় অপরূপ! আমরা খুশি মনে নেমে পড়লাম। ডান পাশে পাইনের জঙ্গল। ভিউ পয়েন্টটা একটু উঁচুতে। শান বাধানো এক জায়গা। চারপাশে কয়েকটা দোকান। চা, বিস্কুট, চকলেট এমনকি আশপাশের বাগান থেকে তুলে আনা কমলাও আছে। এক কাপ কফি হাতে এসে দাঁড়ালাম শান বাধানো জায়গাটির কিনারে। সঙ্গে সঙ্গে একটা ধাক্কা খেলাম, এতটাই যে আরেকটু হলে হাত থেকে কাপই পড়ে যেত, বুনো সৌন্দর্যের ধাক্কা।
সবুজ গাছপালায় ঢাকা উঁচু উঁচু পাহাড়, মাঝখান দিয়ে এঁকেবেঁকে বয়ে চলেছে তিস্তা। কোথাও কোথাও পাহাড়ি নদীর পাড়ে চিকন বালুর রেখা, কোথাও আবার জঙ্গলের মধ্যে ছোট্ট একটা বালিয়াড়ির মতো দেখা যাচ্ছে। ভাবছিলাম ইস যদি ওখানে, ওই জল-পাহাড়ের রাজ্যে কতকটা সময় কাটানো যেত! যেন সম্মোহিত এক মানুষ আমি, চোখ সরাতে পারছিলাম না। তারপর অনিচ্ছা সত্ত্বেও আবার চেপে বসলাম গাড়িতে। আমাদের গোমড়ামুখো কিন্তু ভালোমানুষ চালক এই পর্যায়ে দিল নতুন তথ্য পাহাড়ি নদী তিস্তায় আছে র্যাফটিং করার ব্যবস্থা।
কালিম্পংয়ের সীমানায়
এক সময় নিচে নেমে এলো গাড়ি, তারপর আবার উঠতে শুরু করল, কালিম্পংয়ের দিকে। এদিকটায়ও পথ অনেকই সুন্দর। এক পাশে রাস্তার পরেই পাহাড়, অন্য পাশে ঢালু হয়ে নেমে গেছে জমি, দূরে পাহাড়ের রেখা। আমাদের পাশ কাটিয়ে টুরিস্ট মিনি বাস গেল, জানলাম কালিম্পং-শিলিগুড়ি রোডে চলে ওগুলো। এক সময় ডানে একটা-দুটো বাড়ি-ঘর, হোটেল দেখা যেতে লাগল। বুঝলাম কালিম্পংয়ের সীমানায় চলে এসেছি।
কালিম্পংয়ের বেশি হোটেল-মোটেল বাজারের ধারে, জায়গাটি বেশ ঘিঞ্জি। একটু খুঁজে-পেতে এখানেই একটা হোটেল ঠিক করে ফেলি। ভাড়া ১৮০০ রুপি। নিচে বার থাকায় কড়া একটা গন্ধ সব সময় মাথা ধরিয়ে তুলত আমার। তবে অন্যদের তেমন হেলদোল দেখিনি। এখানে কালিম্পংয়ের আশপাশে বেশ কয়েকটি দ্রষ্টব্য স্থান দেখার জন্য গাড়ি ঠিক করি। কালিম্পং থেকে গাড়িতে চেপে লাভা, ললেগাঁও, রিসপের মতো জায়গায় চলে যাওয়া যায় অনায়াসে। তবে আজ পাঠকদের পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে শহরের ভেতরের কিংবা শহরলগোয়া কিছু স্পটের সঙ্গে। এগুলোর বেশিরভাগেই সশরীরে গিয়েছিলাম কালিম্পং ভ্রমণে।
হনুমান মন্দির
হনুমান টেম্পল বা হনুমান মন্দির আমার আর ওয়াফিকার দুজনেরই দারুণ পছন্দ হয়। শহর থেকে খুব একটা দূরে নয়, একেবারে কাছেও নয়। আট কিলোমিটার পাহাড়ি পথ পেরিয়ে তবে পৌঁছাই দেলো পাহাড়ের হনুমান টেম্পলের সামনে। কেউ কেউ চেনেন জায়গাটিকে হনুমান পিক নামে। সিঁড়ি ধরে সোজা পৌঁছে যাওয়া যায় বিশালদেহী হনুমান ভাস্কর্যের কাছে।
তবে সোজা পথটা না ধরে, বেশ কতকটা আঁকাবাঁকা কংক্রিটের ঢালাই দেওয়া ঘুরপথটা ব্যবহার করলে বেশি আনন্দ পাবেন। এখান থেকে চারপাশের পাহাড়রাজ্যের অনেকটাই চোখে পড়ে। একেবারে গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে দেখার চেয়ে একটু দূর থেকে দেখলেই হনুমানের ওপর সমীহ জাগে বেশি। ২০০৪ সালে উদ্বোধন হওয়া মূর্তিটির উচ্চতা ত্রিশ ফুট।
দুর্গা মন্দির
হনুমান টেম্পলের কাছেই দুর্গা মন্দির। কাজেই দেখার সুযোগ হাতছাড়া করবেন না। সব ধরনের পর্যটকই জায়গাটিতে একবার ঢুঁ মেরে যান। কিছুক্ষণ সময় কাটানোর এর জন্য তুলনা নেই। চারপাশে গাছপালা লাগিয়ে বাগানের মতো করা হয়েছে, সুদৃশ্য একটা ঘণ্টা আছে, আমরা সবাই ওটা বাজালাম, এমনকি ওয়াফিকাকেও উঁচু করে ধরতে হলো। এখান থেকে চারপাশের পাহাড়রাজ্যের অসাধারণ দৃশ্য চোখে পড়ে।
দেলো পার্ক
যাওয়ার পথটা অনেকই সুন্দর। দেলো হিল কালিম্পং শহরের সবচেয়ে উচ্চতম পয়েন্ট। এটি এখানকার সবচেয়ে মশহুর পর্যটনকেন্দ্রগুলোর একটি। পরিষ্কার দিনে হিমালয় পর্বতমালা, আশপাশের রাজ্য এবং রেল্লি ও তিস্তা উপত্যকার গ্রামগুলোর চমৎকার দৃশ্য উপভোগের সুযোগ পাবেন এখান থেকে। এখানে নানা ধরনের রাইডের ব্যবস্থা আছে। এর মধ্যে বিখ্যাত প্যারা গ্লাইডিং।
পাইন ভিউ নার্সারি
আতিশা রোডের এই নার্সারিটি উত্তর, দক্ষিণ ও মধ্য আমেরিকায় পাওয়া যাওয়া হরেক জাতের ক্যাকটাসে ভরপুর। একসঙ্গে এত জাতের কাটার রাজাদের আর কোথাও দেখিনি। কিছুটা সময় কাটিয়েছিলাম এই নার্সারিতে। ওয়াফিকা তো কোনোভাবেই নার্সারি ছেড়ে আসতে রাজি হচ্ছিল না।
মঙ্গলধাম
মঙ্গলধামটাও ঘুরে আসতে ভুলবেন না। মন্দিরটির নির্মাণশৈলী চোখে পড়ার মতো। দুই একর জায়গা নিয়ে মন্দিরটি, ঢোকার মুখেই বাহারি সব বৃক্ষ দেখে মনটা খুশি হয়ে উঠেছিল। ওপরের তলায় মন্দিরের প্রার্থনার জায়গা।
থংসা গুম্ফা
মঙ্গলধামের কাছেই থংসা গুম্ফা। কালিম্পংয়ের সবচেয়ে পুরোনো বৌদ্ধ মন্দির এটি। ভুটান গুম্ফা নামে পরিচিত মনাস্ট্রিটি ১৬৯২ সালে ভুটানের রাজার সরাসরি তত্ত্বাবধানে তৈরি হয়। পরে কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় উনিশ শতকে নতুন করে তৈরি করা হয়।
আর্মি গলফ কোর্স
বেশ কতকটা জঙ্গল, পাহাড়কে সঙ্গী করে এগোতে হয় বলে আবার খুব পছন্দ হয়েছিল আর্মি গলফ কোর্সটা। পাহাড়ের ওপর ৯ গর্তের গলফ মাঠটা। ক্লাবের রেস্তোরাঁটি বনেদি, তবে খাবার-দাবারের দাম চড়া। এখানে বসে অনেকটা সময় গলফারদের মনের আনন্দে খেলে বেড়াতে দেখেছি মাঠে।
লেপচা জাদুঘর
মূল শহর থেকে মাত্র দুই কিলোমিটার দূরত্বে লেপচা মিউজিয়ামের অবস্থান। এটি একই সঙ্গে একটি সাংস্কৃতিক কেন্দ্রও। স্থানীয়দের ঐতিহ্য সম্পর্কে ধারণা পেতে জায়গাটিতে ভ্রমণ জরুরি। স্থানীয় বাদ্যযন্ত্র, পোশাকসহ নানা সামগ্রী আপনাকে লেপচাদের জীবন সম্পর্কে ধারণা পেতে সাহায্য করবে।
মরগান’স হাউস
এখন ওয়েস্ট বেঙ্গল টুরিস্ট ডেভেলপমেন্ট করপোরেশনের আওতাধীন পর্যটন বাংলোটি ব্রিটিশ আমলের পুরোনো এক বাংলো। এর নির্মাণশৈলী আপনাকে আকৃষ্ট করবে। তেমনি প্রকৃতিপ্রেমিক হলে ভেতরের নানা জাতের গাছপালা আর পাখিও টানবে। উত্তম কুমার, কিশোর কুমারের মতো মানুষেরা এখানে থেকেছিলেন। শুনে অবাক হবেন ভুতুড়ে হিসেবেও নাম আছে এর।
খাওয়া-দাওয়া ও অন্যান্য
কালিম্পংয়ে খাওয়া নিয়ে আমার একটু ঝামেলা হয়েছে। পুনম অবশ্য ওদের থালিতে বেশ মানিয়ে নিয়েছিল। আমার ওদের ভাতটা খুব শক্ত লেগেছে। তবে রাস্তার ধারে এক দোকানে মমোটা ভালো জমেছিল। রাতে বাজারের পাশের একটা পথ ধরে হেঁটেছি অনেকটা, তখন গা কেমন ছম ছম করেছে নির্জনতায়, এখান থেকেই সবুজ পাহাড়গুলোকে দিনে ভারি সুন্দর লেগেছিল।
এ ছাড়াও কালিম্পংয়ে পাবেন আরও অনেক গুম্ফা, জাদুঘর ইত্যাদি ইত্যাদি। আমরা বাজারের কাছে একটা হোটেলে ওঠায় কিছু সুবিধা পেয়েছি সত্যি, তবে আমি বলব আপনারা একটু নীরব এলাকায় কোনো হোটেল কিংবা হোম স্টেতে উঠবেন, যেখান থেকে পাহাড়রাজ্য এমনকি কাঞ্চনজঙ্ঘার ভালো ভিউ পাওয়া যায়। অবশ্য দুনিয়ার তৃতীয় উচ্চতম পাহাড়ের দেখা পেতেই হবে তা নয়, এ ছাড়াও কালিম্পংয়ের সবুজ, কখনো বরফে ঢাকা পাহাড়, বনাঞ্চল অনেকই সুন্দর। কালিম্পং থেকে গিয়েছিলাম লাভা। সেখানকার গল্প জমা থাকুক অন্য কোনো দিনের জন্য।
কীভাবে যাবেন
ভারত যাওয়ার জন্য ভিসাটা করে নিতে হবে শুরুতে। বাসে গেলে চেংড়াবান্দা (বাংলাদেশ অংশে বুড়িমারী) হয়ে শিলিগুড়ি যাবেন। এ ছাড়া ট্রেন মিতালী এক্সপ্রেসে করে চলে যেতে পারবেন নিউ জলপাইগুড়ি। জলপাইগুড়ি বা শিলিগুড়ি থেকে জিপ বা বাসে চলে যেতে পারবেন কালিম্পং। সেখান থেকে এক দিনের জন্য গাড়ি ভাড়া করে এই জায়গাগুলি ঘুরে আসতে পারবেন অনায়াসে।
তথ্য সূত্র: ট্রাভেল ট্রায়াঙ্গল

প্রতিবছর, অক্টোবরের শেষ শনি ও রোববার, সাপ্তাহিক ছুটির দিনে এই ছোট্ট নির্জন গ্রামের নৈঃশব্দ্য ভেঙে ভিড় করে বহু মানুষ। দূরদূরান্ত থেকে দেশ-বিদেশের মরিচপ্রেমীরা এখানে ভিড় করেন—বসে এক মহা মিলনমেলা। ৫৬ বছর ধরে, অর্থাৎ ১৯৬৯ সাল থেকে এমনটাই চলে আসছে। এমন জাঁকজমক আর জমজমাট আয়োজনের কেন্দ্রে আছে এই বিশেষ...
৯ ঘণ্টা আগে
যাঁরা প্রতিদিন ওয়ার্কআউট করেন, তাঁদের মনে একটা প্রশ্ন রয়েই যায়, প্রতিদিনই কি চুলে শ্যাম্পু ব্যবহার করা উচিত? আবার কী করে চুল বাঁধলে ব্যায়ামের ফলে চুলের গোড়ায় বেশি ঘাম জমবে না, এ নিয়েও অনেকের প্রশ্ন রয়েছে। আন্তর্জাতিক ‘ভোগ’ ম্যাগাজিন...
১০ ঘণ্টা আগে
শহরের অলিগলিতে এখন কতবেল মাখা বিক্রি হচ্ছে। ঝাল বাড়িয়ে জম্পেশ করে সেগুলো বিক্রি করা হচ্ছে। কিন্তু স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে প্রশ্ন থাহলে ঘরেই তৈরি করে নিন জিবে জল আনা কতবেল মাখা। আপনাদের জন্য একটু ভিন্ন স্বাদের কতবেল মাখার রেসিপি ও ছবি পাঠিয়েছেন ‘সেরা রাঁধুনি ১৪২৭’ প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় রানার্সআপ...
১১ ঘণ্টা আগে
তিতাস একটি নদীর নাম। এই নদীতীরে গোকর্ণ গ্রাম। এখন অবশ্য তা গোকর্ণ ঘাট নামে পরিচিত। সেই ঘাটে এসে ভিড়ল আমাদের বহনকারী বোট। তবে যাত্রার শুরুটা হয়েছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের আনন্দবাজার ঘাট থেকে। সেখান থেকে শুরু করে কুরুলিয়া নদী হয়ে আবার তিতাসে—কিছুটা শর্টকাট রাস্তা।
১৫ ঘণ্টা আগেমইনুল হাসান, ফ্রান্স

ফ্রান্সের দক্ষিণ-পশ্চিমে একদম স্পেনের সীমান্ত ঘেঁষে পিরিনিজ পর্বতমালা। এই পর্বতমালার পাদদেশে দুই দেশ মিলিয়ে ছবির মতো বিশাল পাহাড়ি উপত্যকায় প্রাচীনকাল থেকে বসবাস বাস্ক জাতির মানুষেরা। নিজস্ব ভাষা, সমৃদ্ধ সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের ধারক এ জাতির মানুষ নিজেদের বাস্ক হিসেবে পরিচয় দিতেই গর্ববোধ করে।

একদিকে পর্বত, অন্যদিকে অতল অতলান্তিক মহাসাগরের বিশাল জলরাশির মিলে অপার্থিব নৈসর্গিক সৌন্দর্যের সবটুকু যেন এখানেই ঘনীভূত হয়েছে। এই অঞ্চলেই ফ্রান্সের বাইওন শহর থেকে ২২ কিলোমিটার বা ১৮ মাইল দূরে পর্বতের কোলে আছে নির্জন, নিভৃত ছোট্ট একটি গ্রাম—স্পোলেত।
প্রায় ৪০০ বছর ধরে এই অঞ্চলের মানুষের জীবন, সমাজ, অর্থনীতি ও সংস্কৃতিতে জড়িয়ে আছে একটি বিশেষে জাতের মরিচ। ফরাসি ভাষায় এর নাম দেওয়া হয়েছে, ‘পিমো দ্য স্পোলেত’ অর্থাৎ স্পোলেতের মরিচ। উদ্ভিদবিজ্ঞানীরা এর একটি খটমটে নাম দিয়েছেন, তা হলো ক্যাপসিকাম অ্যানুয়াম, প্রকরণ গোরিয়া। ১৬ শতকে স্প্যানিশ পরিব্রাজক খুয়ান সেবাস্তিয়ান এলকানো মেক্সিকো থেকে এই মরিচ ইউরোপের নিয়ে আসেন। সেই ১৬৫০ থেকে এই অঞ্চলের কৃষকেরা পিমো দ্য স্পোলেত নামে এই মরিচ চাষ করতে শুরু করেন।

উজ্জ্বল লাল রঙের, চমৎকার ঘ্রাণের, একটু মিষ্টি ও হালকা ঝালের এই বিশেষ জাতের মরিচ প্রথম দিকে শুধু ঔষধি এবং কাঁচা মাংস সংরক্ষণের জন্য ব্যবহৃত হতো। পরে গোলমরিচের অভাব পূরণে রান্না করা খাদ্যের স্বাদে আলাদা ব্যঞ্জনা আর ঝাঁজের জন্য ব্যবহার হতে শুরু করলে ফরাসি ও স্প্যানিশদের কাছে এটি বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। পিমো দ্য স্পোলেতকে ঘিরে গড়ে ওঠে আলাদা মাত্রার রন্ধনকৌলীন্য, এক সমৃদ্ধ ও সম্পূর্ণ ভিন্ন খাদ্যসংস্কৃতি। এই অঞ্চলের জীবন আবর্তিত হয় এই মরিচ ঘিরে। ফ্রান্স ও স্পেনের মানুষ এবং শেফদের খুব প্রিয় এই বিশেষ জাতের মসলা।
প্রতিবছর, অক্টোবরের শেষ শনি ও রোববার, সাপ্তাহিক ছুটির দিনে এই ছোট্ট নির্জন গ্রামের নৈঃশব্দ্য ভেঙে ভিড় করে বহু মানুষ। দূরদূরান্ত থেকে দেশ-বিদেশের মরিচপ্রেমীরা এখানে ভিড় করেন—বসে এক মহা মিলনমেলা। ৫৬ বছর ধরে, অর্থাৎ ১৯৬৯ সাল থেকে এমনটাই চলে আসছে। এমন জাঁকজমক আর জমজমাট আয়োজনের কেন্দ্রে আছে এই বিশেষ জাতের মরিচ।

২৫ অক্টোবর শনিবার, সকাল থেকে স্পোলেত গ্রামে ভিড় বাড়তে থাকে। পাহাড়ি পথ ধরে সারি সারি গাড়ির বহর। বিশাল অঙ্গনে পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ এবং চলাচলের সুবিধার জন্য সরকারি বাহিনীর সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবকদের দল গলদঘর্ম হচ্ছে। তারপরেও তাদের মুখে হাসির ঝিলিক। আমরাও মিশে গেলাম বহু ভিনদেশির সঙ্গে। বাদকদের দল বাদ্য বাজিয়ে বিয়েবাড়ির আমেজ সৃষ্টি করছিল। বাস্ক তরুণ-তরুণীরা ঐতিহ্যবাহী নাচে মুগ্ধ করছে আগতদের।
অনেকটা উঁচু এক বিশাল জায়গাজুড়ে স্পোলেতের মরিচ এবং মরিচজাত নানান পণ্য নিয়ে হাজির হয়েছেন উৎপাদনকারীরা। হাসিমুখে উৎসুক দর্শনার্থীদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন তাঁরা। দেখা হলো মসিয়ঁ পিয়ের ডিহার্চের সঙ্গে। তিনি এসেছেন স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে। বহু বছর ধরে তিনি এই মরিচের চাষ করেন এবং তা দিয়ে বিভিন্ন ধরনের পণ্য তৈরি করেন নিজ হাতে। তিনি জানালেন, মোট ১০টি গ্রামে এই মরিচের চাষ হয়। ১৫০ জন কৃষক বছরে প্রায় ১০০ টন মরিচ উৎপাদন করেন। আগস্ট থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ফলন হয়। আরও বললেন, ভিটামিনের ভালো উৎস এই মরিচ হজমশক্তি বাড়ায়। ওজন কমাতে, বিপাকে এবং রোগ প্রতিরোধে সহায়ক।

আমাদের সঙ্গে দেখা হয়ে গেল দুই মরিচকন্যার—ক্লারা ও রেবেকা। ছবি তুলতে চাইলে মিষ্টি হেসে রাজি হয়ে গেলেন। বাস্ক তরুণী জুলি, তাঁর মরিচ ও মরিচের পণ্য নিয়ে উপস্থিত হয়েছেন উৎসবে। অনেকের সঙ্গে দেখা হলো, আলাপ হলো। সবাই খুব আন্তরিক।
পরদিন রোববার একই রকম আয়োজন। শেষ হলো পুরস্কার বিতরণের মাধ্যমে। সেরা মরিচ উৎপাদনকারীকে পুরস্কারের মাধ্যমে সম্মানিত করা হয়।

এ বছর, ২০২৫-এ মরিচের তীর্থে এসেছিলেন প্রায় ২৫ হাজার মরিচ ভোক্তা ও ভক্ত। এমন করেই প্রতিবছর মরিচের প্রার্থনাসংগীত দিয়ে শুরু হয় দুদিনব্যাপী জমজমাট উৎসবের। উদ্যাপিত হয় মরিচের রাজধানীতে পৃথিবীর একমাত্র মরিচ উৎসব।

ফ্রান্সের দক্ষিণ-পশ্চিমে একদম স্পেনের সীমান্ত ঘেঁষে পিরিনিজ পর্বতমালা। এই পর্বতমালার পাদদেশে দুই দেশ মিলিয়ে ছবির মতো বিশাল পাহাড়ি উপত্যকায় প্রাচীনকাল থেকে বসবাস বাস্ক জাতির মানুষেরা। নিজস্ব ভাষা, সমৃদ্ধ সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের ধারক এ জাতির মানুষ নিজেদের বাস্ক হিসেবে পরিচয় দিতেই গর্ববোধ করে।

একদিকে পর্বত, অন্যদিকে অতল অতলান্তিক মহাসাগরের বিশাল জলরাশির মিলে অপার্থিব নৈসর্গিক সৌন্দর্যের সবটুকু যেন এখানেই ঘনীভূত হয়েছে। এই অঞ্চলেই ফ্রান্সের বাইওন শহর থেকে ২২ কিলোমিটার বা ১৮ মাইল দূরে পর্বতের কোলে আছে নির্জন, নিভৃত ছোট্ট একটি গ্রাম—স্পোলেত।
প্রায় ৪০০ বছর ধরে এই অঞ্চলের মানুষের জীবন, সমাজ, অর্থনীতি ও সংস্কৃতিতে জড়িয়ে আছে একটি বিশেষে জাতের মরিচ। ফরাসি ভাষায় এর নাম দেওয়া হয়েছে, ‘পিমো দ্য স্পোলেত’ অর্থাৎ স্পোলেতের মরিচ। উদ্ভিদবিজ্ঞানীরা এর একটি খটমটে নাম দিয়েছেন, তা হলো ক্যাপসিকাম অ্যানুয়াম, প্রকরণ গোরিয়া। ১৬ শতকে স্প্যানিশ পরিব্রাজক খুয়ান সেবাস্তিয়ান এলকানো মেক্সিকো থেকে এই মরিচ ইউরোপের নিয়ে আসেন। সেই ১৬৫০ থেকে এই অঞ্চলের কৃষকেরা পিমো দ্য স্পোলেত নামে এই মরিচ চাষ করতে শুরু করেন।

উজ্জ্বল লাল রঙের, চমৎকার ঘ্রাণের, একটু মিষ্টি ও হালকা ঝালের এই বিশেষ জাতের মরিচ প্রথম দিকে শুধু ঔষধি এবং কাঁচা মাংস সংরক্ষণের জন্য ব্যবহৃত হতো। পরে গোলমরিচের অভাব পূরণে রান্না করা খাদ্যের স্বাদে আলাদা ব্যঞ্জনা আর ঝাঁজের জন্য ব্যবহার হতে শুরু করলে ফরাসি ও স্প্যানিশদের কাছে এটি বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। পিমো দ্য স্পোলেতকে ঘিরে গড়ে ওঠে আলাদা মাত্রার রন্ধনকৌলীন্য, এক সমৃদ্ধ ও সম্পূর্ণ ভিন্ন খাদ্যসংস্কৃতি। এই অঞ্চলের জীবন আবর্তিত হয় এই মরিচ ঘিরে। ফ্রান্স ও স্পেনের মানুষ এবং শেফদের খুব প্রিয় এই বিশেষ জাতের মসলা।
প্রতিবছর, অক্টোবরের শেষ শনি ও রোববার, সাপ্তাহিক ছুটির দিনে এই ছোট্ট নির্জন গ্রামের নৈঃশব্দ্য ভেঙে ভিড় করে বহু মানুষ। দূরদূরান্ত থেকে দেশ-বিদেশের মরিচপ্রেমীরা এখানে ভিড় করেন—বসে এক মহা মিলনমেলা। ৫৬ বছর ধরে, অর্থাৎ ১৯৬৯ সাল থেকে এমনটাই চলে আসছে। এমন জাঁকজমক আর জমজমাট আয়োজনের কেন্দ্রে আছে এই বিশেষ জাতের মরিচ।

২৫ অক্টোবর শনিবার, সকাল থেকে স্পোলেত গ্রামে ভিড় বাড়তে থাকে। পাহাড়ি পথ ধরে সারি সারি গাড়ির বহর। বিশাল অঙ্গনে পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ এবং চলাচলের সুবিধার জন্য সরকারি বাহিনীর সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবকদের দল গলদঘর্ম হচ্ছে। তারপরেও তাদের মুখে হাসির ঝিলিক। আমরাও মিশে গেলাম বহু ভিনদেশির সঙ্গে। বাদকদের দল বাদ্য বাজিয়ে বিয়েবাড়ির আমেজ সৃষ্টি করছিল। বাস্ক তরুণ-তরুণীরা ঐতিহ্যবাহী নাচে মুগ্ধ করছে আগতদের।
অনেকটা উঁচু এক বিশাল জায়গাজুড়ে স্পোলেতের মরিচ এবং মরিচজাত নানান পণ্য নিয়ে হাজির হয়েছেন উৎপাদনকারীরা। হাসিমুখে উৎসুক দর্শনার্থীদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন তাঁরা। দেখা হলো মসিয়ঁ পিয়ের ডিহার্চের সঙ্গে। তিনি এসেছেন স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে। বহু বছর ধরে তিনি এই মরিচের চাষ করেন এবং তা দিয়ে বিভিন্ন ধরনের পণ্য তৈরি করেন নিজ হাতে। তিনি জানালেন, মোট ১০টি গ্রামে এই মরিচের চাষ হয়। ১৫০ জন কৃষক বছরে প্রায় ১০০ টন মরিচ উৎপাদন করেন। আগস্ট থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ফলন হয়। আরও বললেন, ভিটামিনের ভালো উৎস এই মরিচ হজমশক্তি বাড়ায়। ওজন কমাতে, বিপাকে এবং রোগ প্রতিরোধে সহায়ক।

আমাদের সঙ্গে দেখা হয়ে গেল দুই মরিচকন্যার—ক্লারা ও রেবেকা। ছবি তুলতে চাইলে মিষ্টি হেসে রাজি হয়ে গেলেন। বাস্ক তরুণী জুলি, তাঁর মরিচ ও মরিচের পণ্য নিয়ে উপস্থিত হয়েছেন উৎসবে। অনেকের সঙ্গে দেখা হলো, আলাপ হলো। সবাই খুব আন্তরিক।
পরদিন রোববার একই রকম আয়োজন। শেষ হলো পুরস্কার বিতরণের মাধ্যমে। সেরা মরিচ উৎপাদনকারীকে পুরস্কারের মাধ্যমে সম্মানিত করা হয়।

এ বছর, ২০২৫-এ মরিচের তীর্থে এসেছিলেন প্রায় ২৫ হাজার মরিচ ভোক্তা ও ভক্ত। এমন করেই প্রতিবছর মরিচের প্রার্থনাসংগীত দিয়ে শুরু হয় দুদিনব্যাপী জমজমাট উৎসবের। উদ্যাপিত হয় মরিচের রাজধানীতে পৃথিবীর একমাত্র মরিচ উৎসব।

ভারতের পাহাড়ি শহর কালিম্পং সম্পর্কে ভালোভাবে জানা সমরেশ মজুমদারের অর্জুন সিরিজের বই পড়ে। সেই কালিম্পংয়ে যাওয়া হয় হঠাৎ করেই। দার্জিলিং গিয়েছিলাম। ভ্রমণের তৃতীয় রাতে মনে হলো, কালিম্পং গেলে কেমন হয়! ব্যাস পরদিন সকালেই একটি গাড়ি ভাড়া করে চললাম কালিম্পং। সেখানকার চমৎকার কিছু জায়গার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেব
৩০ মার্চ ২০২৩
যাঁরা প্রতিদিন ওয়ার্কআউট করেন, তাঁদের মনে একটা প্রশ্ন রয়েই যায়, প্রতিদিনই কি চুলে শ্যাম্পু ব্যবহার করা উচিত? আবার কী করে চুল বাঁধলে ব্যায়ামের ফলে চুলের গোড়ায় বেশি ঘাম জমবে না, এ নিয়েও অনেকের প্রশ্ন রয়েছে। আন্তর্জাতিক ‘ভোগ’ ম্যাগাজিন...
১০ ঘণ্টা আগে
শহরের অলিগলিতে এখন কতবেল মাখা বিক্রি হচ্ছে। ঝাল বাড়িয়ে জম্পেশ করে সেগুলো বিক্রি করা হচ্ছে। কিন্তু স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে প্রশ্ন থাহলে ঘরেই তৈরি করে নিন জিবে জল আনা কতবেল মাখা। আপনাদের জন্য একটু ভিন্ন স্বাদের কতবেল মাখার রেসিপি ও ছবি পাঠিয়েছেন ‘সেরা রাঁধুনি ১৪২৭’ প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় রানার্সআপ...
১১ ঘণ্টা আগে
তিতাস একটি নদীর নাম। এই নদীতীরে গোকর্ণ গ্রাম। এখন অবশ্য তা গোকর্ণ ঘাট নামে পরিচিত। সেই ঘাটে এসে ভিড়ল আমাদের বহনকারী বোট। তবে যাত্রার শুরুটা হয়েছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের আনন্দবাজার ঘাট থেকে। সেখান থেকে শুরু করে কুরুলিয়া নদী হয়ে আবার তিতাসে—কিছুটা শর্টকাট রাস্তা।
১৫ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক, ঢাকা

জিমে ওয়ার্কআউট সেরে বাড়ি ফিরে চুল না ধোয়া পর্যন্ত শান্তি থাকে না। যাঁরা প্রতিদিন ওয়ার্কআউট করেন, তাঁদের মনে একটা প্রশ্ন রয়েই যায়, প্রতিদিনই কি চুলে শ্যাম্পু ব্যবহার করা উচিত? আবার কী করে চুল বাঁধলে ব্যায়ামের ফলে চুলের গোড়ায় বেশি ঘাম জমবে না, এ নিয়েও অনেকের প্রশ্ন রয়েছে। আন্তর্জাতিক ‘ভোগ’ ম্যাগাজিনের একটি প্রতিবেদনে মিলল এসব প্রশ্নের সমাধান। দেখে নিন একনজরে।
ঢিলেঢালা বেণি করুন

জিম করার সময় অনেকে চুল খোলা রাখেন। এতে করে চুল ভাঙার আশঙ্কা থাকে। আবার যাঁদের মুখে ব্রণ রয়েছে, বারবার চুল মুখে এসে লেগে যাওয়ার ফলে সংক্রমণও হতে পারে। অনেকে আবার খুব টাইট করে উঁচু পনিটেইল করে জিমে যান। তাঁদের চুলের গোড়া বেশি ঘাম জমে। এর ফলে মাথার ত্বকে চুলকানি ও অন্যান্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। এর চেয়ে জিমে যাওয়ার সময় যদি ঢিলেঢালা বেণি বা খোঁপা করে নেওয়া যায়, তাহলে চুলের ভেতর বাতাস চলাচল করতে পারে। এতে চুল খুব বেশি ঘামবে না, আবার চুল ভাঙার আশঙ্কাও থাকবে না।
ড্রাই শ্যাম্পু ব্যবহার করুন
ঘামের কারণে প্রতিদিন শ্যাম্পু করতে গিয়ে চুল রুক্ষ হয়ে উঠলে ড্রাই শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। ড্রাই শ্যাম্পু স্প্রে করার সময় তালুর এমন জায়গায় স্প্রে করুন যে অংশ বেশি তৈলাক্ত। ড্রাই শ্যাম্পুর বোতল মাথার ত্বক থেকে অন্তত ৯ ইঞ্চি দূরে ধরে স্প্রে করুন। এরপর আঙুলের ডগা দিয়ে মাথার ত্বকে হালকা ম্যাসাজ করে নিন। এতে শ্যাম্পু আরও ভালোভাবে মিশে যাবে। ড্রাই শ্যাম্পু ব্যবহার করলে সপ্তাহে তিন দিন চুল ধুয়ে নেওয়াই যথেষ্ট।

ভেজা চুলে ব্যায়াম করবেন না
ওয়ার্কআউটের ঠিক আগে গোসল করেছেন? বৃষ্টিতে ভিজে গেছেন? আপনার দিনের ব্যায়াম এখানেই শেষ। কারণ, ভেজা চুলে ব্যায়াম করা ঠিক নয়। ভেজা চুলে ব্যায়াম করার সময় যদি মাথার ত্বক ঘামে, তাহলে চুলের গোড়া নরম হয়ে চুল ঝরে পড়ার আশঙ্কা থাকে। আমাদের চারপাশের দূষণের কারণে বৃষ্টির পানিও ততটা পরিষ্কার নয় এবং এটি আপনার মাথার ত্বকে বসতে দিলে চুলের গোড়ার ক্ষতি এবং খুশকির মতো আরও সমস্যা হতে পারে।
মাথার ত্বক পরিষ্কার রাখুন
চুলের রুক্ষতা ও শুষ্কতা এড়াতে প্রতিদিন ওয়ার্কআউটের পরে চুল ধুতে নিষেধ করা হয়। তবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, না ধোয়া চুল ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাকের উৎস হতে পারে। এ জন্য মাথার ত্বকের ঘাম মুছে ফেলার জন্য আলাদা তোয়ালে বা টিস্যু ব্যবহার করা জরুরি। যাঁরা ওয়ার্কআউটের পর চুল না ধুয়ে থাকতে পারেন না, তাঁরা সালফেটমুক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। প্রতিবার ধোয়ার পর চুলে স্মুথিং সেরাম ব্যবহার করুন।
ব্যায়াম শেষে চুল ছেড়ে বাতাসে শুকাতে হবে
ওয়ার্কআউটের পর চুল বেঁধে রাখবেন। তখন আপনার মাথার ত্বককে শ্বাস নিতে দিতে হবে এবং ওয়ার্কআউটের সময় তৈরি হওয়া আর্দ্রতা বের করে দিতে হবে। ব্যায়াম শেষে মাথার ত্বকে তাপ ব্যবহার করা এড়িয়ে চলুন। সে জন্য ড্রায়ার ব্যবহারের পরিবর্তে ফ্যানের বাতাসে চুল শুকানোর চেষ্টা করুন। এ সময় আঙুল দিয়ে চুলের জট ছাড়ানোর পর চওড়া দাঁতের চিরুনি দিয়ে একবার আঁচড়ে নিন। যদি আপনি ব্লো-ড্রায়ার ব্যবহার করতেই চান, তাহলে কুল এয়ার ব্যবহার করুন। এটি আপনার মাথার ত্বকের আর্দ্রতা শুষে নেবে, কিন্তু চুলকে অতিরিক্ত শুষ্ক করবে না।
জেনে রাখা ভালো
ছবি: পেক্সেলস

জিমে ওয়ার্কআউট সেরে বাড়ি ফিরে চুল না ধোয়া পর্যন্ত শান্তি থাকে না। যাঁরা প্রতিদিন ওয়ার্কআউট করেন, তাঁদের মনে একটা প্রশ্ন রয়েই যায়, প্রতিদিনই কি চুলে শ্যাম্পু ব্যবহার করা উচিত? আবার কী করে চুল বাঁধলে ব্যায়ামের ফলে চুলের গোড়ায় বেশি ঘাম জমবে না, এ নিয়েও অনেকের প্রশ্ন রয়েছে। আন্তর্জাতিক ‘ভোগ’ ম্যাগাজিনের একটি প্রতিবেদনে মিলল এসব প্রশ্নের সমাধান। দেখে নিন একনজরে।
ঢিলেঢালা বেণি করুন

জিম করার সময় অনেকে চুল খোলা রাখেন। এতে করে চুল ভাঙার আশঙ্কা থাকে। আবার যাঁদের মুখে ব্রণ রয়েছে, বারবার চুল মুখে এসে লেগে যাওয়ার ফলে সংক্রমণও হতে পারে। অনেকে আবার খুব টাইট করে উঁচু পনিটেইল করে জিমে যান। তাঁদের চুলের গোড়া বেশি ঘাম জমে। এর ফলে মাথার ত্বকে চুলকানি ও অন্যান্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। এর চেয়ে জিমে যাওয়ার সময় যদি ঢিলেঢালা বেণি বা খোঁপা করে নেওয়া যায়, তাহলে চুলের ভেতর বাতাস চলাচল করতে পারে। এতে চুল খুব বেশি ঘামবে না, আবার চুল ভাঙার আশঙ্কাও থাকবে না।
ড্রাই শ্যাম্পু ব্যবহার করুন
ঘামের কারণে প্রতিদিন শ্যাম্পু করতে গিয়ে চুল রুক্ষ হয়ে উঠলে ড্রাই শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। ড্রাই শ্যাম্পু স্প্রে করার সময় তালুর এমন জায়গায় স্প্রে করুন যে অংশ বেশি তৈলাক্ত। ড্রাই শ্যাম্পুর বোতল মাথার ত্বক থেকে অন্তত ৯ ইঞ্চি দূরে ধরে স্প্রে করুন। এরপর আঙুলের ডগা দিয়ে মাথার ত্বকে হালকা ম্যাসাজ করে নিন। এতে শ্যাম্পু আরও ভালোভাবে মিশে যাবে। ড্রাই শ্যাম্পু ব্যবহার করলে সপ্তাহে তিন দিন চুল ধুয়ে নেওয়াই যথেষ্ট।

ভেজা চুলে ব্যায়াম করবেন না
ওয়ার্কআউটের ঠিক আগে গোসল করেছেন? বৃষ্টিতে ভিজে গেছেন? আপনার দিনের ব্যায়াম এখানেই শেষ। কারণ, ভেজা চুলে ব্যায়াম করা ঠিক নয়। ভেজা চুলে ব্যায়াম করার সময় যদি মাথার ত্বক ঘামে, তাহলে চুলের গোড়া নরম হয়ে চুল ঝরে পড়ার আশঙ্কা থাকে। আমাদের চারপাশের দূষণের কারণে বৃষ্টির পানিও ততটা পরিষ্কার নয় এবং এটি আপনার মাথার ত্বকে বসতে দিলে চুলের গোড়ার ক্ষতি এবং খুশকির মতো আরও সমস্যা হতে পারে।
মাথার ত্বক পরিষ্কার রাখুন
চুলের রুক্ষতা ও শুষ্কতা এড়াতে প্রতিদিন ওয়ার্কআউটের পরে চুল ধুতে নিষেধ করা হয়। তবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, না ধোয়া চুল ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাকের উৎস হতে পারে। এ জন্য মাথার ত্বকের ঘাম মুছে ফেলার জন্য আলাদা তোয়ালে বা টিস্যু ব্যবহার করা জরুরি। যাঁরা ওয়ার্কআউটের পর চুল না ধুয়ে থাকতে পারেন না, তাঁরা সালফেটমুক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। প্রতিবার ধোয়ার পর চুলে স্মুথিং সেরাম ব্যবহার করুন।
ব্যায়াম শেষে চুল ছেড়ে বাতাসে শুকাতে হবে
ওয়ার্কআউটের পর চুল বেঁধে রাখবেন। তখন আপনার মাথার ত্বককে শ্বাস নিতে দিতে হবে এবং ওয়ার্কআউটের সময় তৈরি হওয়া আর্দ্রতা বের করে দিতে হবে। ব্যায়াম শেষে মাথার ত্বকে তাপ ব্যবহার করা এড়িয়ে চলুন। সে জন্য ড্রায়ার ব্যবহারের পরিবর্তে ফ্যানের বাতাসে চুল শুকানোর চেষ্টা করুন। এ সময় আঙুল দিয়ে চুলের জট ছাড়ানোর পর চওড়া দাঁতের চিরুনি দিয়ে একবার আঁচড়ে নিন। যদি আপনি ব্লো-ড্রায়ার ব্যবহার করতেই চান, তাহলে কুল এয়ার ব্যবহার করুন। এটি আপনার মাথার ত্বকের আর্দ্রতা শুষে নেবে, কিন্তু চুলকে অতিরিক্ত শুষ্ক করবে না।
জেনে রাখা ভালো
ছবি: পেক্সেলস

ভারতের পাহাড়ি শহর কালিম্পং সম্পর্কে ভালোভাবে জানা সমরেশ মজুমদারের অর্জুন সিরিজের বই পড়ে। সেই কালিম্পংয়ে যাওয়া হয় হঠাৎ করেই। দার্জিলিং গিয়েছিলাম। ভ্রমণের তৃতীয় রাতে মনে হলো, কালিম্পং গেলে কেমন হয়! ব্যাস পরদিন সকালেই একটি গাড়ি ভাড়া করে চললাম কালিম্পং। সেখানকার চমৎকার কিছু জায়গার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেব
৩০ মার্চ ২০২৩
প্রতিবছর, অক্টোবরের শেষ শনি ও রোববার, সাপ্তাহিক ছুটির দিনে এই ছোট্ট নির্জন গ্রামের নৈঃশব্দ্য ভেঙে ভিড় করে বহু মানুষ। দূরদূরান্ত থেকে দেশ-বিদেশের মরিচপ্রেমীরা এখানে ভিড় করেন—বসে এক মহা মিলনমেলা। ৫৬ বছর ধরে, অর্থাৎ ১৯৬৯ সাল থেকে এমনটাই চলে আসছে। এমন জাঁকজমক আর জমজমাট আয়োজনের কেন্দ্রে আছে এই বিশেষ...
৯ ঘণ্টা আগে
শহরের অলিগলিতে এখন কতবেল মাখা বিক্রি হচ্ছে। ঝাল বাড়িয়ে জম্পেশ করে সেগুলো বিক্রি করা হচ্ছে। কিন্তু স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে প্রশ্ন থাহলে ঘরেই তৈরি করে নিন জিবে জল আনা কতবেল মাখা। আপনাদের জন্য একটু ভিন্ন স্বাদের কতবেল মাখার রেসিপি ও ছবি পাঠিয়েছেন ‘সেরা রাঁধুনি ১৪২৭’ প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় রানার্সআপ...
১১ ঘণ্টা আগে
তিতাস একটি নদীর নাম। এই নদীতীরে গোকর্ণ গ্রাম। এখন অবশ্য তা গোকর্ণ ঘাট নামে পরিচিত। সেই ঘাটে এসে ভিড়ল আমাদের বহনকারী বোট। তবে যাত্রার শুরুটা হয়েছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের আনন্দবাজার ঘাট থেকে। সেখান থেকে শুরু করে কুরুলিয়া নদী হয়ে আবার তিতাসে—কিছুটা শর্টকাট রাস্তা।
১৫ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক, ঢাকা

শহরের অলিগলিতে এখন কতবেল মাখা বিক্রি হচ্ছে। ঝাল বাড়িয়ে জম্পেশ করে সেগুলো বিক্রি করা হচ্ছে। কিন্তু স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে প্রশ্ন থাহলে ঘরেই তৈরি করে নিন জিবে জল আনা কতবেল মাখা। আপনাদের জন্য একটু ভিন্ন স্বাদের কতবেল মাখার রেসিপি ও ছবি পাঠিয়েছেন ‘সেরা রাঁধুনি ১৪২৭’ প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় রানার্সআপ ও রন্ধনশিল্পী মরিয়ম হোসেন নূপুর।
উপকরণ
পাকা কতবেল ১টি, লেবুর রস ১ চা-চামচ, চিনি ১ টেবিল চামচ, কাঁচা মরিচ মিহি কুচি ১টি, লবণ এক চিমটি, বিট লবণ ১ চা-চামচের ৪ ভাগের ১ ভাগ, ধনেপাতাকুচি ১ চা-চামচ, পুদিনাপাতার কুচি আধা চা-চামচ, সরিষার তেল ২ টেবিল চামচ।

প্রণালি
একটি পাত্রে কতবেল ও লেবুর রস বাদে বাকি উপকরণ একসঙ্গে মেখে নিতে হবে। এরপর মসলার মিশ্রণের সঙ্গে কতবেল আর লেবুর রস দিয়ে মেখে পরিবেশন করতে হবে।

শহরের অলিগলিতে এখন কতবেল মাখা বিক্রি হচ্ছে। ঝাল বাড়িয়ে জম্পেশ করে সেগুলো বিক্রি করা হচ্ছে। কিন্তু স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে প্রশ্ন থাহলে ঘরেই তৈরি করে নিন জিবে জল আনা কতবেল মাখা। আপনাদের জন্য একটু ভিন্ন স্বাদের কতবেল মাখার রেসিপি ও ছবি পাঠিয়েছেন ‘সেরা রাঁধুনি ১৪২৭’ প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় রানার্সআপ ও রন্ধনশিল্পী মরিয়ম হোসেন নূপুর।
উপকরণ
পাকা কতবেল ১টি, লেবুর রস ১ চা-চামচ, চিনি ১ টেবিল চামচ, কাঁচা মরিচ মিহি কুচি ১টি, লবণ এক চিমটি, বিট লবণ ১ চা-চামচের ৪ ভাগের ১ ভাগ, ধনেপাতাকুচি ১ চা-চামচ, পুদিনাপাতার কুচি আধা চা-চামচ, সরিষার তেল ২ টেবিল চামচ।

প্রণালি
একটি পাত্রে কতবেল ও লেবুর রস বাদে বাকি উপকরণ একসঙ্গে মেখে নিতে হবে। এরপর মসলার মিশ্রণের সঙ্গে কতবেল আর লেবুর রস দিয়ে মেখে পরিবেশন করতে হবে।

ভারতের পাহাড়ি শহর কালিম্পং সম্পর্কে ভালোভাবে জানা সমরেশ মজুমদারের অর্জুন সিরিজের বই পড়ে। সেই কালিম্পংয়ে যাওয়া হয় হঠাৎ করেই। দার্জিলিং গিয়েছিলাম। ভ্রমণের তৃতীয় রাতে মনে হলো, কালিম্পং গেলে কেমন হয়! ব্যাস পরদিন সকালেই একটি গাড়ি ভাড়া করে চললাম কালিম্পং। সেখানকার চমৎকার কিছু জায়গার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেব
৩০ মার্চ ২০২৩
প্রতিবছর, অক্টোবরের শেষ শনি ও রোববার, সাপ্তাহিক ছুটির দিনে এই ছোট্ট নির্জন গ্রামের নৈঃশব্দ্য ভেঙে ভিড় করে বহু মানুষ। দূরদূরান্ত থেকে দেশ-বিদেশের মরিচপ্রেমীরা এখানে ভিড় করেন—বসে এক মহা মিলনমেলা। ৫৬ বছর ধরে, অর্থাৎ ১৯৬৯ সাল থেকে এমনটাই চলে আসছে। এমন জাঁকজমক আর জমজমাট আয়োজনের কেন্দ্রে আছে এই বিশেষ...
৯ ঘণ্টা আগে
যাঁরা প্রতিদিন ওয়ার্কআউট করেন, তাঁদের মনে একটা প্রশ্ন রয়েই যায়, প্রতিদিনই কি চুলে শ্যাম্পু ব্যবহার করা উচিত? আবার কী করে চুল বাঁধলে ব্যায়ামের ফলে চুলের গোড়ায় বেশি ঘাম জমবে না, এ নিয়েও অনেকের প্রশ্ন রয়েছে। আন্তর্জাতিক ‘ভোগ’ ম্যাগাজিন...
১০ ঘণ্টা আগে
তিতাস একটি নদীর নাম। এই নদীতীরে গোকর্ণ গ্রাম। এখন অবশ্য তা গোকর্ণ ঘাট নামে পরিচিত। সেই ঘাটে এসে ভিড়ল আমাদের বহনকারী বোট। তবে যাত্রার শুরুটা হয়েছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের আনন্দবাজার ঘাট থেকে। সেখান থেকে শুরু করে কুরুলিয়া নদী হয়ে আবার তিতাসে—কিছুটা শর্টকাট রাস্তা।
১৫ ঘণ্টা আগেরজত কান্তি রায়, ঢাকা

তিতাস একটি নদীর নাম। এই নদীতীরে গোকর্ণ গ্রাম। এখন অবশ্য তা গোকর্ণ ঘাট নামে পরিচিত। সেই ঘাটে এসে ভিড়ল আমাদের বহনকারী বোট। তবে যাত্রার শুরুটা হয়েছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের আনন্দবাজার ঘাট থেকে। সেখান থেকে শুরু করে কুরুলিয়া নদী হয়ে আবার তিতাসে—কিছুটা শর্টকাট রাস্তা। কুরুলিয়া নদী যেখানে তিতাসের সঙ্গে মিলিত হলো, সেটাই গোকর্ণ গ্রাম তথা এখনকার গোকর্ণ ঘাট—অদ্বৈত মল্লবর্মণের জন্মভিটা। এখন আর বস্তুগত চিহ্ন নেই, আছে স্মৃতি। শোনা গেল, তাঁর দূরসম্পর্কের এক নাতি আছেন সেখানে। আর কেউ নেই। মল্লবাবু বহু আগে তখনকার রাজধানী শহর কলকাতায় চলে গিয়েছিলেন, ভাগ্যের অন্বেষণে। আমরা যেমন এখন দূরদূরান্ত থেকে রাজধানী ঢাকায় এসে ভিড় জমাই।
এখানে নদীর ওপর মস্ত প্রাচীরঘেরা গুদাম। সেটির ছোট ছোট মিনারে বসে আছে তিনটি বালক আর একটি কাক। অদ্বৈত মল্লবর্মণ একদিন সম্ভবত এই বালকদের মতোই ছিলেন—দুরন্ত। অথবা এই বালকেরাই হয়তো তাঁর কিশোর, সুবল, অনন্ত কিংবা বনমালীদের এই প্রজন্মের সংস্করণ।
কেমন ছিল অদ্বৈতের তিতাস? তিনি লিখেছেন, ‘তার কূলজোড়া জল, বুকভরা ঢেউ, প্রাণভরা উচ্ছ্বাস। স্বপ্নের ছন্দে সে বহিয়া যায়। ভোরের হাওয়ায় তার তন্দ্রা ভাঙ্গে, দিনের সূর্য তাকে তাতায়; রাতে চাঁদ ও তাঁরারা তাকে নিয়া ঘুম পাড়াইতে বসে, কিন্তু পারে না।’ বর্ষা থেকে হেমন্ত তিতাস হয়তো তেমনই থাকে। অন্তত হেমন্তের তিতাস দেখে তাই মনে হলো। কিন্তু বছরের বাকি সময় সে যক্ষ্মার রোগী—শুনেছি তার বুকে তখন গরু চরে।
গোকর্ণ ঘাট ছাড়তেই তিতাসের আকার সাগরের মতো! সঙ্গে মিশেছে হাওর। স্থানীয়দের সহায়তা ছাড়া চেনার উপায় নেই—কোনটা হাওর আর কোনটা নদী। এই বিশাল বিস্তারেই বসতি ছিল অদ্বৈত মল্লবর্মণের। নইলে তেমন নভেল লেখা যায়!
আমরা এগিয়ে চলেছি। সূর্য তখনো কুয়াশা আর মেঘের সঙ্গে লড়াই করছে। সকাল আটটাও বাজেনি। আমাদের পাড়ি দিতে হবে প্রায় ১২০ কিলোমিটার পথ। তিতাস থেকে বুড়িগঙ্গা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ঢাকার সদরঘাট। এত দীর্ঘ পথ এর আগে কখনো পাড়ি দিইনি নৌকায়। ভয়, উত্তেজনা আর রোমাঞ্চ—সব একসঙ্গে ঘিরে আছে। কারণ, সামনে পাড়ি দিতে হবে মেঘনা—দ্য গ্রেট মেঘনা!
নদীর নাম পাগলা। তিতাসের শরীর থেকে বেরিয়ে ডানে চলে গেছে। এখানে গ্রামের নাম রসুলপুর, রতনপুর ইত্যাদি। নদী থেকে আটপৌরে দৃশ্যের বাইরে গ্রাম বা শহর দেখা যায়। তার একটা মজা আছে। তবে নদীতে বসে জলজ জীবন দেখাই দস্তুর। তাই দেখতে দেখতে আমরা এগিয়ে চলেছি।
পাগলা নদী পেরিয়ে গেলাম। তিতাস এখানে বেশ প্রশস্ত। আমাদের উল্টো দিক থেকে অনেক নৌকা আসছে। গতিতে আমাদের পেছনে ফেলেও এগিয়ে যাচ্ছে অনেক নৌকা। তার বেশির ভাগই মালবাহী। প্রচুর কচুরিপানা। তাতে এখনো ফুল ফোটেনি। কৌতূহলী হয়ে দেখলাম, সেগুলো মূলত ঘের। মাছ ধরার প্রাকৃতিক ব্যবস্থা। ছোট ছোট নৌকায় জেলেরা সেগুলোতে মাছ ধরছে।
আমরা এগিয়ে চলেছি সদরঘাটের দিকে। ইঞ্চি ইঞ্চি করে দূরত্ব কমছে। কমলে কী হবে, এ পথ ফুরোতে সময় লাগবে পাক্কা দশ ঘণ্টা। মোবাইল ফোনের ঘড়ি দেখি—মাত্র ঘণ্টাখানেক এগিয়েছি। শোনা গেল, সামনেই মেঘনা। উত্তেজনার পারদ বাড়ল খানিক।
এই যাত্রার আয়োজন করেছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নদী রক্ষা আন্দোলনের অনন্যসাধারণ সংগঠন ‘তরী’। তাদের দাবি, পুরোনো এবং বন্ধ হয়ে যাওয়া নৌপথ আবার সচল করতে হবে। কিন্তু আমাদের দেশে নৌপথের দৈর্ঘ্য কত কিলোমিটার? আইইউসিএনের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৬০ সালে দেশে নৌপথের দৈর্ঘ্য ছিল প্রায় ১২ হাজার কিলোমিটার। পরের তিন দশকে তা কমে দাঁড়ায় ৬ হাজার কিলোমিটারে। বিআইডব্লিউটিএর তথ্য, ষাটের দশকে নদীপথের দৈর্ঘ্য ছিল ২৪ হাজার কিলোমিটার। গত ছয় দশকে তা নেমে এসেছে মাত্র ৬ হাজার কিলোমিটারে। শুকনো মৌসুমে তা-ও কমে দাঁড়ায় ৪ হাজার ৩৪৭ কিলোমিটারে। তরীর দাবি, নৌপথগুলো পুনরুদ্ধার করতে হবে, দেশ বাঁচাতে। সেই দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে ঢাকা থেকে ট্রেনযোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া। সেখান থেকে নৌকাযোগে ঢাকা উদ্দেশে যাত্রা।
জায়গাটা বিশাল। চারদিকে পানি আর পানি। বাল্কহেডের সংখ্যা যেন বেড়ে গেছে হঠাৎ করে। মাছ ধরার নৌকাগুলোর আকারও বদলেছে। বোটের অভিজ্ঞরা জানালেন, আমরা মেঘনায় চলে এসেছি। অর্থাৎ তিতাস পাড়ি দেওয়া শেষ। এখন আমাদের মেঘনা পাড়ি দিতে হবে।
অথই জলে এখানে ভাসছে প্লাস্টিকের তৈরি দিকনির্দেশক। রাতে তাতে বাতি জ্বলে। বড় বড় ড্রেজার দিয়ে বালু তুলে বাল্কহেডে ভরা হচ্ছে। শত শত বাল্কহেড সেই বালু নিয়ে পাড়ি দিচ্ছে বিভিন্ন দিকে। বেশির ভাগের গন্তব্য ঢাকা। আমাদের বোট এগিয়ে চলেছে। মহাসড়কে যেমন বাস-ট্রাক আর ছোট ছোট ব্যক্তিগত গাড়ির সারি থাকে, এখানে বাল্ডহেডের সারিও অনেকটা তেমনই। একটার পেছনে একটা, শত শত! মাঝি দক্ষ হাতে বোট সামলে চলেছেন। মাঝে কদাচিৎ দেখা যাচ্ছে যাত্রী ও পণ্যবাহী ইঞ্জিনচালিত নৌকা আর স্পিডবোট। কোথাও ঘাটে বাঁধা দেখলাম পুরোনো এক গয়না নৌকা। একসময় এগুলো নদীপথে দাপিয়ে বেড়াত পণ্য নিয়ে। এখন সে বিগত যৌবনা।
মেঘনা এক পবিত্র নদী। বরাক উপত্যকার সুরমা ও কুশিয়ারা এক হয়ে যে প্রবাহ তৈরি করেছে, তার নাম কালনী। ভাটিতে এর নাম মেঘনা। তাতে এসে মিশেছে হিমালয়ের মানস সরোবরের জল, পুরাতন ব্রহ্মপুত্র হয়ে। তারও ভাটিতে মেঘনার সঙ্গে মিলেছে পদ্মা। তারপর চলে গেছে সাগরপানে। আমরা এই পদ্মাসঙ্গমের আগেই হাতের ডানে চলে গেলাম। সেখানে দুটি নদী দুদিকে বেরিয়ে গেছে—একটি শীতলক্ষ্যা, অন্যটি ধলেশ্বরী। এখানে অসংখ্য বাল্কহেড আর মাদার ভ্যাসেলের টার্মিনাল। ধলেশ্বরী ধরে এগিয়ে গিয়ে পড়লাম বুড়িগঙ্গায়। সে পথে সদরঘাট।
টানা ১০ ঘণ্টার যাত্রা। পথে নৌকাতেই রান্না ও খাওয়া। সদরঘাটের দিকে যতই এগিয়ে চলেছি, পানির রং ততই কালো হয়ে উঠছে। বুঝতে পারছি, বহু ব্যবহারে জীর্ণ বুড়িগঙ্গা। কিন্তু নদী থেকে রাজধানী শহর দেখতে সুন্দর।

তিতাস একটি নদীর নাম। এই নদীতীরে গোকর্ণ গ্রাম। এখন অবশ্য তা গোকর্ণ ঘাট নামে পরিচিত। সেই ঘাটে এসে ভিড়ল আমাদের বহনকারী বোট। তবে যাত্রার শুরুটা হয়েছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের আনন্দবাজার ঘাট থেকে। সেখান থেকে শুরু করে কুরুলিয়া নদী হয়ে আবার তিতাসে—কিছুটা শর্টকাট রাস্তা। কুরুলিয়া নদী যেখানে তিতাসের সঙ্গে মিলিত হলো, সেটাই গোকর্ণ গ্রাম তথা এখনকার গোকর্ণ ঘাট—অদ্বৈত মল্লবর্মণের জন্মভিটা। এখন আর বস্তুগত চিহ্ন নেই, আছে স্মৃতি। শোনা গেল, তাঁর দূরসম্পর্কের এক নাতি আছেন সেখানে। আর কেউ নেই। মল্লবাবু বহু আগে তখনকার রাজধানী শহর কলকাতায় চলে গিয়েছিলেন, ভাগ্যের অন্বেষণে। আমরা যেমন এখন দূরদূরান্ত থেকে রাজধানী ঢাকায় এসে ভিড় জমাই।
এখানে নদীর ওপর মস্ত প্রাচীরঘেরা গুদাম। সেটির ছোট ছোট মিনারে বসে আছে তিনটি বালক আর একটি কাক। অদ্বৈত মল্লবর্মণ একদিন সম্ভবত এই বালকদের মতোই ছিলেন—দুরন্ত। অথবা এই বালকেরাই হয়তো তাঁর কিশোর, সুবল, অনন্ত কিংবা বনমালীদের এই প্রজন্মের সংস্করণ।
কেমন ছিল অদ্বৈতের তিতাস? তিনি লিখেছেন, ‘তার কূলজোড়া জল, বুকভরা ঢেউ, প্রাণভরা উচ্ছ্বাস। স্বপ্নের ছন্দে সে বহিয়া যায়। ভোরের হাওয়ায় তার তন্দ্রা ভাঙ্গে, দিনের সূর্য তাকে তাতায়; রাতে চাঁদ ও তাঁরারা তাকে নিয়া ঘুম পাড়াইতে বসে, কিন্তু পারে না।’ বর্ষা থেকে হেমন্ত তিতাস হয়তো তেমনই থাকে। অন্তত হেমন্তের তিতাস দেখে তাই মনে হলো। কিন্তু বছরের বাকি সময় সে যক্ষ্মার রোগী—শুনেছি তার বুকে তখন গরু চরে।
গোকর্ণ ঘাট ছাড়তেই তিতাসের আকার সাগরের মতো! সঙ্গে মিশেছে হাওর। স্থানীয়দের সহায়তা ছাড়া চেনার উপায় নেই—কোনটা হাওর আর কোনটা নদী। এই বিশাল বিস্তারেই বসতি ছিল অদ্বৈত মল্লবর্মণের। নইলে তেমন নভেল লেখা যায়!
আমরা এগিয়ে চলেছি। সূর্য তখনো কুয়াশা আর মেঘের সঙ্গে লড়াই করছে। সকাল আটটাও বাজেনি। আমাদের পাড়ি দিতে হবে প্রায় ১২০ কিলোমিটার পথ। তিতাস থেকে বুড়িগঙ্গা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ঢাকার সদরঘাট। এত দীর্ঘ পথ এর আগে কখনো পাড়ি দিইনি নৌকায়। ভয়, উত্তেজনা আর রোমাঞ্চ—সব একসঙ্গে ঘিরে আছে। কারণ, সামনে পাড়ি দিতে হবে মেঘনা—দ্য গ্রেট মেঘনা!
নদীর নাম পাগলা। তিতাসের শরীর থেকে বেরিয়ে ডানে চলে গেছে। এখানে গ্রামের নাম রসুলপুর, রতনপুর ইত্যাদি। নদী থেকে আটপৌরে দৃশ্যের বাইরে গ্রাম বা শহর দেখা যায়। তার একটা মজা আছে। তবে নদীতে বসে জলজ জীবন দেখাই দস্তুর। তাই দেখতে দেখতে আমরা এগিয়ে চলেছি।
পাগলা নদী পেরিয়ে গেলাম। তিতাস এখানে বেশ প্রশস্ত। আমাদের উল্টো দিক থেকে অনেক নৌকা আসছে। গতিতে আমাদের পেছনে ফেলেও এগিয়ে যাচ্ছে অনেক নৌকা। তার বেশির ভাগই মালবাহী। প্রচুর কচুরিপানা। তাতে এখনো ফুল ফোটেনি। কৌতূহলী হয়ে দেখলাম, সেগুলো মূলত ঘের। মাছ ধরার প্রাকৃতিক ব্যবস্থা। ছোট ছোট নৌকায় জেলেরা সেগুলোতে মাছ ধরছে।
আমরা এগিয়ে চলেছি সদরঘাটের দিকে। ইঞ্চি ইঞ্চি করে দূরত্ব কমছে। কমলে কী হবে, এ পথ ফুরোতে সময় লাগবে পাক্কা দশ ঘণ্টা। মোবাইল ফোনের ঘড়ি দেখি—মাত্র ঘণ্টাখানেক এগিয়েছি। শোনা গেল, সামনেই মেঘনা। উত্তেজনার পারদ বাড়ল খানিক।
এই যাত্রার আয়োজন করেছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নদী রক্ষা আন্দোলনের অনন্যসাধারণ সংগঠন ‘তরী’। তাদের দাবি, পুরোনো এবং বন্ধ হয়ে যাওয়া নৌপথ আবার সচল করতে হবে। কিন্তু আমাদের দেশে নৌপথের দৈর্ঘ্য কত কিলোমিটার? আইইউসিএনের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৬০ সালে দেশে নৌপথের দৈর্ঘ্য ছিল প্রায় ১২ হাজার কিলোমিটার। পরের তিন দশকে তা কমে দাঁড়ায় ৬ হাজার কিলোমিটারে। বিআইডব্লিউটিএর তথ্য, ষাটের দশকে নদীপথের দৈর্ঘ্য ছিল ২৪ হাজার কিলোমিটার। গত ছয় দশকে তা নেমে এসেছে মাত্র ৬ হাজার কিলোমিটারে। শুকনো মৌসুমে তা-ও কমে দাঁড়ায় ৪ হাজার ৩৪৭ কিলোমিটারে। তরীর দাবি, নৌপথগুলো পুনরুদ্ধার করতে হবে, দেশ বাঁচাতে। সেই দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে ঢাকা থেকে ট্রেনযোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া। সেখান থেকে নৌকাযোগে ঢাকা উদ্দেশে যাত্রা।
জায়গাটা বিশাল। চারদিকে পানি আর পানি। বাল্কহেডের সংখ্যা যেন বেড়ে গেছে হঠাৎ করে। মাছ ধরার নৌকাগুলোর আকারও বদলেছে। বোটের অভিজ্ঞরা জানালেন, আমরা মেঘনায় চলে এসেছি। অর্থাৎ তিতাস পাড়ি দেওয়া শেষ। এখন আমাদের মেঘনা পাড়ি দিতে হবে।
অথই জলে এখানে ভাসছে প্লাস্টিকের তৈরি দিকনির্দেশক। রাতে তাতে বাতি জ্বলে। বড় বড় ড্রেজার দিয়ে বালু তুলে বাল্কহেডে ভরা হচ্ছে। শত শত বাল্কহেড সেই বালু নিয়ে পাড়ি দিচ্ছে বিভিন্ন দিকে। বেশির ভাগের গন্তব্য ঢাকা। আমাদের বোট এগিয়ে চলেছে। মহাসড়কে যেমন বাস-ট্রাক আর ছোট ছোট ব্যক্তিগত গাড়ির সারি থাকে, এখানে বাল্ডহেডের সারিও অনেকটা তেমনই। একটার পেছনে একটা, শত শত! মাঝি দক্ষ হাতে বোট সামলে চলেছেন। মাঝে কদাচিৎ দেখা যাচ্ছে যাত্রী ও পণ্যবাহী ইঞ্জিনচালিত নৌকা আর স্পিডবোট। কোথাও ঘাটে বাঁধা দেখলাম পুরোনো এক গয়না নৌকা। একসময় এগুলো নদীপথে দাপিয়ে বেড়াত পণ্য নিয়ে। এখন সে বিগত যৌবনা।
মেঘনা এক পবিত্র নদী। বরাক উপত্যকার সুরমা ও কুশিয়ারা এক হয়ে যে প্রবাহ তৈরি করেছে, তার নাম কালনী। ভাটিতে এর নাম মেঘনা। তাতে এসে মিশেছে হিমালয়ের মানস সরোবরের জল, পুরাতন ব্রহ্মপুত্র হয়ে। তারও ভাটিতে মেঘনার সঙ্গে মিলেছে পদ্মা। তারপর চলে গেছে সাগরপানে। আমরা এই পদ্মাসঙ্গমের আগেই হাতের ডানে চলে গেলাম। সেখানে দুটি নদী দুদিকে বেরিয়ে গেছে—একটি শীতলক্ষ্যা, অন্যটি ধলেশ্বরী। এখানে অসংখ্য বাল্কহেড আর মাদার ভ্যাসেলের টার্মিনাল। ধলেশ্বরী ধরে এগিয়ে গিয়ে পড়লাম বুড়িগঙ্গায়। সে পথে সদরঘাট।
টানা ১০ ঘণ্টার যাত্রা। পথে নৌকাতেই রান্না ও খাওয়া। সদরঘাটের দিকে যতই এগিয়ে চলেছি, পানির রং ততই কালো হয়ে উঠছে। বুঝতে পারছি, বহু ব্যবহারে জীর্ণ বুড়িগঙ্গা। কিন্তু নদী থেকে রাজধানী শহর দেখতে সুন্দর।

ভারতের পাহাড়ি শহর কালিম্পং সম্পর্কে ভালোভাবে জানা সমরেশ মজুমদারের অর্জুন সিরিজের বই পড়ে। সেই কালিম্পংয়ে যাওয়া হয় হঠাৎ করেই। দার্জিলিং গিয়েছিলাম। ভ্রমণের তৃতীয় রাতে মনে হলো, কালিম্পং গেলে কেমন হয়! ব্যাস পরদিন সকালেই একটি গাড়ি ভাড়া করে চললাম কালিম্পং। সেখানকার চমৎকার কিছু জায়গার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেব
৩০ মার্চ ২০২৩
প্রতিবছর, অক্টোবরের শেষ শনি ও রোববার, সাপ্তাহিক ছুটির দিনে এই ছোট্ট নির্জন গ্রামের নৈঃশব্দ্য ভেঙে ভিড় করে বহু মানুষ। দূরদূরান্ত থেকে দেশ-বিদেশের মরিচপ্রেমীরা এখানে ভিড় করেন—বসে এক মহা মিলনমেলা। ৫৬ বছর ধরে, অর্থাৎ ১৯৬৯ সাল থেকে এমনটাই চলে আসছে। এমন জাঁকজমক আর জমজমাট আয়োজনের কেন্দ্রে আছে এই বিশেষ...
৯ ঘণ্টা আগে
যাঁরা প্রতিদিন ওয়ার্কআউট করেন, তাঁদের মনে একটা প্রশ্ন রয়েই যায়, প্রতিদিনই কি চুলে শ্যাম্পু ব্যবহার করা উচিত? আবার কী করে চুল বাঁধলে ব্যায়ামের ফলে চুলের গোড়ায় বেশি ঘাম জমবে না, এ নিয়েও অনেকের প্রশ্ন রয়েছে। আন্তর্জাতিক ‘ভোগ’ ম্যাগাজিন...
১০ ঘণ্টা আগে
শহরের অলিগলিতে এখন কতবেল মাখা বিক্রি হচ্ছে। ঝাল বাড়িয়ে জম্পেশ করে সেগুলো বিক্রি করা হচ্ছে। কিন্তু স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে প্রশ্ন থাহলে ঘরেই তৈরি করে নিন জিবে জল আনা কতবেল মাখা। আপনাদের জন্য একটু ভিন্ন স্বাদের কতবেল মাখার রেসিপি ও ছবি পাঠিয়েছেন ‘সেরা রাঁধুনি ১৪২৭’ প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় রানার্সআপ...
১১ ঘণ্টা আগে