Ajker Patrika

চাকরি ছেড়ে, সবকিছু বেচে দুই শিশুসন্তান নিয়ে বিশ্বভ্রমণে দম্পতি

আপডেট : ২২ জুলাই ২০২৩, ১৮: ২৪
চাকরি ছেড়ে, সবকিছু বেচে দুই শিশুসন্তান নিয়ে বিশ্বভ্রমণে দম্পতি

এটা এমন এক বিষয়, যার স্বপ্ন থাকে অনেক দম্পতিরই। তবে এটা করে দেখাতে পারেন কম মানুষই। ম্যাট প্রায়র ও লিয়া প্রায়র তাঁদের চাকরি ছেড়েছেন, বেচে দিলেন সব সহায়সম্পত্তি। তারপর দুই শিশুসন্তান তিন বছরের জ্যাক আর এক বছরের শার্লেটকে নিয়ে বেরিয়ে পড়েছেন বিশ্বভ্রমণে। এ মাসের অর্থাৎ জুলাইয়ের ১৫ তারিখে শুরু হয়েছে তাঁদের ভ্রমণ।

অবশ্য এই দম্পতির ডিএনএতেই আছে ভ্রমণের নেশা। ২০১১ সালে লাওসে তাঁদের প্রথম দেখা হয়। ম্যাট তখন একটা লন্ডন ব্ল্যাক ক্লাব গাড়ি চালিয়ে বিশ্ব ঘুরে ব্রিটিশ রেডক্রসের জন্য অর্থ সংগ্রহ করছেন। অন্যদিকে লিয়া দক্ষিণ কোরিয়ায় কয়েক বছর শিক্ষকতা করে এক বছরের বিশ্বভ্রমণে বেরিয়েছিলেন। 

ম্যাট যেহেতু গাড়ি নিয়ে ভ্রমণে আছেন, তাই দূর থেকেই যোগাযোগ থাকে দুজনের। এক বছর পর হংকংয়ে এসে একসঙ্গে জীবন শুরু করলেন তাঁরা। নিজের ভ্রমণের সময় ম্যাটের পরিচয় হয় জাপদের সঙ্গে, যারা ১৯২৮ মডেলের একটি ক্ল্যাসিক গাড়িতে ২২ বছর ধরে বিশ্ব চষে বেড়াচ্ছেন। এই ভ্রমণের সময় তাঁদের চার সন্তান হয়। 

‘লিয়া আর আমার দেখা হওয়ার পরে জাপদের ভ্রমণের কথা বলেছিলাম। তখনই বীজটা রোপিত হয়। ভাবছিলাম, হয়তো আমরাও এ রকম একটা কিছু করব।’ সিএনএনকে বলেন ম্যাট প্রায়র। 

যাত্রা হলো শুরু
তাঁদের সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নিয়েছে এখন। লন্ডন থেকে একটি ইনিয়েস গ্রেনেডিয়ার ফোর হুইলার গাড়িতে যাত্রা শুরু হয়েছে তাঁদের। এর সঙ্গে জোড়া লাগানো আছে প্যাট্রিয়ট কমপ্লেক্স এক্স-৩ নামের একটি ট্রেইলার। আগামী পাঁচ বছরে শতাধিক দেশ ভ্রমণের ইচ্ছা তাঁদের। পথে বিভিন্ন ন্যাশনাল পার্ক ও সংরক্ষিত অঞ্চলে থামবেন এবং পরিবেশগত ও সামাজিক বিভিন্ন উদ্যোগে সাহায্য করবেন। কাজ করবেন জীববৈচিত্র্য নিয়েও।

যুক্তরাজ্য ভ্রমণ শেষে তাঁরা পেরোবেন ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্য। তারপর মধ্য এশিয়া, চীন, হিমালয় অঞ্চল, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল, আফ্রিকা হয়ে ভ্রমণ করবেন উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা। 

এই ভ্রমণে ‘প্রজেক্ট ওয়াইল্ড আর্থ’ নামের নিজেদের একটি প্রকল্পও বাস্তবায়ন করবেন। ভ্রমণের সময় ন্যাশনাল পার্কের বিভিন্ন রেঞ্জার, সহায়তাকরী সংস্থা, সরকারি কর্মকর্তা ও উদ্যোক্তাদের সঙ্গে তাঁদের দেখা হবে। তাঁদের গল্প নিজেদের ওয়েবসাইটে ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তুলে ধরবেন এর মাধ্যমে। 

‘বাচ্চাদের স্কুল শুরুর আগেই আমাদের হাতে চমৎকার একটা সময় আছে। রোমাঞ্চকর একটা কিছু করার এটাই উপযুক্ত সময়।’ বলেন ম্যাট। ভ্রমণটিতে পৃথিবীর জীববৈচিত্র্য রক্ষায় ভূমিকা রাখতে পারবেন বলে আশা করেন ম্যাট। 

প্রজেক্ট ওয়াইল্ড আর্থ
হংকংয়ে ফিরে পরের একটা দশক ব্যস্ত সময় কাটালেন তারা। আমেরিকান নাগরিক লিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরি করার পাশাপাশি হংকংয়ে এমন একটি স্কুল প্রতিষ্ঠায় সাহায্য করেন। অবশ্য ব্রিটিশ নাগরিক ম্যাট এ সময়টায় অনেক কিছুই করলেন। এর মধ্যে আছে বিমান চালনা, একটি রোমাঞ্চ ঘরানার ট্রাভেল কোম্পানির সহ-উদ্যোক্তা, হংকং এক্সপ্লোরারস ক্লাবের পরিচালকের দায়িত্ব পালন ইত্যাদি। 

২০১৯ সালে হংকং শহরে রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দিলে তাঁরা ইন্দোনেশিয়ায় গিয়ে একটি অরগানিক খামার করার কথা ভাবলেন। কিন্তু করোনা মহামারির কারণে দম্পতিকে হংকংয়ে আটতে যেতে হলো। এর মধ্যে তাঁদের ছেলে জ্যাকের জন্ম হলো। 

২০২২ সালেও হংকংয়ের রাজনৈতিক পরিস্থিতি পুরোপুরি ঠিক না হওয়ায় আবার অন্তঃসত্ত্বা লিয়া সাময়িকভাবে পাড়ি জমালেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। তখন হংকংয়ে থাকলেও তাঁদের মেয়ে শার্লেট জন্মানোর সময় অবশ্য স্ত্রীর পাশে থাকতে পারলেন। 

বিখ্যাত প্রাইমেট বিশেষজ্ঞ এবং সংরক্ষক ড. জেন গুডলে অনুপ্রাণিত হন ম্যাট ও লিয়াতারপর কী করা যায় যখন ভাবছিলেন, তখন জাপদের দুঃসাহসিক অ্যাডভেঞ্চারের কথা তাঁরা মনে করলেন। প্রজেক্ট ওয়াইল্ড আর্থ প্রজেক্টটি তখনই ডালপালা মেলল। 

‘পরিবার নিয়ে স্থলপথে ভ্রমণ করার জন্য পরিকল্পনাটি পুনরায় মাথাচাড়া দিল। সবকিছু বিবেচনা করে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আমাদের মনের চাওয়া ও সংকল্প এখানে এক হয়ে গিয়েছিল।’ বলেন ম্যাট, ‘ক্যারিয়ার বা অর্থের দিক থেকে এটা হয়তো খুব বুদ্ধিমান সিদ্ধান্ত নয়, তবে আমাদের এটাই সঠিক মনে হয়েছে।’ 

বিখ্যাত প্রাইমেট বিশেষজ্ঞ এবং সংরক্ষক ড. জেন গুডলে অনুপ্রাণিত হন ম্যাট ও লিয়া। চলার পথে সময়টা কীভাবে কাজে লাগাবেন সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে নিজেদের আগ্রহ এবং মূল্যবোধের দিকে আবার নজর দিলেন দুজন। 

‘এটা পরিষ্কার প্রকৃতিকে রক্ষা করা আমাদের প্রধান লক্ষ্য। এটিই আমাদের নিয়ে যাবে সংরক্ষণের দিকে।’ বলেন ম্যাট। 

বিশ্বব্যাপী পরিবেশগত প্রকল্পগুলো নিয়ে গবেষণা শুরু করেন তাঁরা। পাশাপাশি তাঁদের পরিবার কীভাবে এ ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারে, সে বিষয়ে পরিবেশ নিয়ে কাজ করা অনেক লোকের সঙ্গে কথা বলেন। 

তাঁদের প্রকল্পটি যখন একটি কাঠামো পেতে শুরু করে, দম্পতি অংশীদারদের সঙ্গে একটি নেটওয়ার্ক তৈরি করতে শুরু করেন। বিশ্বব্যাপী ২৫০টির বেশি প্রকল্পের একটি তালিকা করেন, যেগুলোতে তাঁরা চলার পথে কাজ করবেন। এগুলোর মধ্যে আছে আদিবাসীদের ভূমি ফিরিয়ে দেওয়া, প্রকৃতিনির্ভর পর্যটন, বন্যপ্রাণী তদারকি ও সংরক্ষণে প্রযুক্তির ব্যবহার ইত্যাদি প্রকল্প। 

‘আমরা এমন প্রকল্পগুলো খুঁজছিলাম যেগুলো কেবল অনুপ্রেরণামূলক নয় বরং অন্যদের জন্য তাদের নিজস্ব প্রকল্প শুরু করার জন্য একটি উদাহরণ হিসাবে কাজ করতে পারে। যে কোনো ক্ষেত্রে একটি সমাধান খুঁজতে যতটা সম্ভব প্রকৃতিকে বেছে নেওয়ায় বিশ্বাসী আমরা।’ বলেন ম্যাট। কৃষি বনায়ন, পুনরুৎপাদনশীল কৃষির ওপর জোর দেওয়া প্রকল্পগুলোও প্রায়রদের আগ্রহ তৈরি করে। 

পথের গল্প
স্টোরিটেলিং বা গল্প বর্ণনার মাধ্যমে সংরক্ষণে সচেতনতা বাড়ানোর পরিকল্পনা করেন ম্যাট ও রিয়া। এ ক্ষেত্রে তাদের বড় অনুপ্রেরণা দ্য জেন গুডল ইনস্টিটিউট এবং রুটস অ্যান্ড শুটস নামের দুটি সংগঠনের পরামর্শ। এগুলোর প্রতিষ্ঠাতা প্রাইমেট বিশেষজ্ঞ এবং সংরক্ষক ড. জেন গুডল। 

‘গল্প বর্ণনাতে মনোযোগ দিতে তিনি আমাদের জন্য বিশাল এক অনুপ্রেরণা। কারণ তিনি বিশ্বাস করেন এটাই মানুষকে ভেতর থেকে বদলে যেতে সাহায্য করে। এটা ধরেই আমরা এগিয়েছি।’ বলেন ম্যাট, ‘পৃথিবীতে যা ঘটছে এর যত বেশি উদাহরণ আর গল্প জানাব আমরা, তা মানুষকে নানা ধরনের কাজে অনুপ্রাণিত করবে।’ 

যেহেতু গোটা পথটা গাড়ি চালিয়ে ভ্রমণ করবেন তাতে বেশ কার্বন নিঃসরণ হবে। তাই তাঁদের পরিকল্পনা প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্য নিয়ে কাজ করা সংগঠন মসি আর্থের মাসিক সদস্য হওয়ার মাধ্যমে সেটা পুষিয়ে দেওয়া। তা ছাড়া পাঁচ বছরের এই ভ্রমণে সি গ্রাস বা সামুদ্রিক ঘাস সংরক্ষণেও কাজ করবেন। 

একটি পরিবার
তবে মূল ভ্রমণের আগে জ্যাক এবং শার্লেটকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যে কয়েকটি লম্বা দূরত্বের পরীক্ষামূলক ভ্রমণ করেন ম্যাট এবং লিয়া। এ ভ্রমণ এবং ক্যাম্পিং দুজনকে নিজেদের বিশ্ব ভ্রমণ এবং মোবাইল, টিভির মতো বিষয় ছাড়া কীভাবে শিশু দুটির আনন্দময় সময় কাটানো নিশ্চিত করা যায় তার পরিকল্পনা করতে সাহায্য করে। 

ভ্রমণ ও সংরক্ষণের কাজে তাদের সন্তানদের অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে জ্যাক এবং শার্লটকে যতটা সম্ভব বৈচিত্র্য, উদ্ভাবনী ধারণা এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে পারবেন বলে আশা করেন এ দম্পতি। ম্যাট মনে করেন বাচ্চাদের সঙ্গে এই চমৎকার সময় কাটানোটা অসাধারণ হবে। 

‘আমরা আশা করি প্রকৃতি ও অন্যদের সাহায্য করা আমাদের সন্তানদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়বে। তবে ভ্রমণটা শেষ পর্যন্ত তাঁদের কোথায় নিয়ে যাবে, সেটা তাঁদের ওপরই।’ বলেন ম্যাট।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

২০২৫ সালে ইউরোপের সেরা গন্তব্য পর্তুগাল

ফিচার ডেস্ক
এ বছর পর্তুগাল মোট ১২টি ইউরোপীয় অঞ্চলের মনোনীতদের পরাজিত করেছে। ছবি: পেক্সেলস
এ বছর পর্তুগাল মোট ১২টি ইউরোপীয় অঞ্চলের মনোনীতদের পরাজিত করেছে। ছবি: পেক্সেলস

ওয়ার্ল্ড ট্রাভেল অ্যাওয়ার্ডের ইউরোপের সেরা গন্তব্যের শিরোপা জিতেছে পর্তুগাল। গত বছর এই তালিকায় সেরা দেশ হিসেবে গ্রিস সম্মাননা পেলেও আবার আবারও শিরোপা এসেছে পর্তুগালের কাছে। উল্লেখ্য, ২০১৭ সাল থেকে এই মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কারটি পর্তুগাল মোট ছয়বার জিতেছে। এটি ছিল পুরস্কারের ৩২তম সংস্করণ। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানটি ইতালির সার্ডিনিয়াতে অনুষ্ঠিত হয়।

এ বছর পর্তুগাল মোট ১২টি ইউরোপীয় অঞ্চলের মনোনীতদের পরাজিত করেছে। যার মধ্যে ছিল অস্ট্রিয়া, ফ্রান্স, জার্মানি, গ্রিস, আয়ারল্যান্ড, ইতালি, নরওয়ে, স্পেন, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড ও তুরস্ক। পর্যটন, বাণিজ্য ও পরিষেবা বিষয়ক স্টেট সেক্রেটারি পেড্রো মাচাদো এই সম্মানকে ‘পর্যটনকে আমাদের অর্থনীতির অন্যতম প্রধান স্তম্ভে পরিণত করা সব পেশাদারি কাজ, উৎসর্গ এবং গুণমানের প্রতিফলন’ বলে অভিহিত করেছেন। অন্যদিকে, ট্যুরিজম দে পর্তুগালের সভাপতি কার্লোস আবাদ মন্তব্য করেন, এই পুরস্কার প্রমাণ করে যে ‘ইউরোপের সেরা পর্যটন গন্তব্যগুলোর মধ্যে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করার জন্য পর্তুগালের দুর্দান্ত ক্ষমতা রয়েছে’। এটি দেশের ধারাবাহিক প্রচেষ্টার ফসল।

পর্তুগালের আইকনিক গন্তব্য

পুরো দেশের পাশাপাশি পর্তুগালের একাধিক অঞ্চলও ২০২৫ সালের বিশ্ব ভ্রমণ পুরস্কারে স্বীকৃতি লাভ করেছে, যা দেশটির পর্যটন মানকে আরও দৃঢ় করেছে। যেমন—ইউরোপের সেরা দ্বীপ গন্তব্য হয়েছে মাদেইরা। মহাদেশের সেরা শহুরে গন্তব্য পোর্তো। শহর বিরতির জন্য সেরা স্থান হয়েছে লিসবন।

অন্যান্য উল্লেখযোগ্য স্বীকৃতি:

হিউস্কা লা ম্যাজিয়া (স্পেন): অ্যাডভেঞ্চার পর্যটনের জন্য সেরা গন্তব্য হিসেবে আজোরসকে পেছনে ফেলেছে।

কোস্টা কারোনারিনো (গ্রিস: মহাদেশের বিচ হলিডেজের জন্য সেরা স্থান হিসেবে মনোনীত হয়।

বাতুমি (জর্জিয়া): বছরের ‘সব ঋতুর জন্য সেরা গন্তব্য’ হিসেবে বিবেচিত হয়।

ডুব্রোভনিক (ক্রোয়েশিয়া): টানা তৃতীয়বারের মতো ‘শীর্ষস্থানীয় ক্রুজ গন্তব্য’ হিসেবে নাম কুড়িয়েছে।

সেরা দ্বীপ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে মাদেইরা দ্বীপ। ছবি: পেক্সেলস
সেরা দ্বীপ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে মাদেইরা দ্বীপ। ছবি: পেক্সেলস

পর্তুগালের পর্যটন শক্তির মূল দিকগুলো

২০২৫ সালের এই স্বীকৃতি পর্তুগালের পর্যটন শিল্পের অবিচল প্রচেষ্টা এবং পেশাদারির সাক্ষ্য বহন করে। দেশটি ঐতিহ্য ও উদ্ভাবনের এক চমৎকার মিশ্রণ ঘটিয়েছে, যা পর্যটকদের কাছে এটিকে অত্যন্ত আকর্ষণীয় করে তুলেছে। পর্তুগালে ইউনেসকো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটগুলোর প্রাচুর্য রয়েছে। যেমন—লিসবনের বেলেম টাওয়ার এবং ঐতিহাসিক পোর্তো শহর; যা ইতিহাসপ্রেমীদের আকর্ষণ করে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দিকেও এগিয়ে আছে দেশটি। আলগারভের সমুদ্রসৈকত থেকে শুরু করে উত্তরের ডুরো ভ্যালি পর্যন্ত, পর্তুগাল বৈচিত্র্যময় প্রাকৃতিক দৃশ্য প্রদান করে। মাদেইরার মতো দ্বীপগুলো অ্যাডভেঞ্চার এবং প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য স্বর্গরাজ্য। পর্তুগিজ খাবার বিশ্বজুড়ে পরিচিতি লাভ করেছে। বিশেষত, বাখালহাও (শুকনো লবণযুক্ত কডফিশ) এবং পাস্তেইস দে নাতা (কাস্টার্ড টার্ট) খাদ্যরসিকদের আকৃষ্ট করে।

সেরা শহুরে গন্তব্য পোর্তো। ছবি: পেক্সেলস
সেরা শহুরে গন্তব্য পোর্তো। ছবি: পেক্সেলস

লিসবন, পোর্তো ও মাদেইরার বিশেষত্ব

মাদেইরা: সেরা দ্বীপ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে দ্বিপটি। তার সুন্দর পর্বতমালা, উষ্ণ জলবায়ু এবং বিদেশি বাগানগুলোর জন্য বিখ্যাত। এটি প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য সারা বছরের গন্তব্য।

পোর্তো: এটি সেরা শহুরে গন্তব্য। যা ঐতিহাসিক রিবেইরা জেলা, বিখ্যাত ওয়াইন সেলার এবং ডুরো ভ্যালির নৈকট্যের কারণে পোর্তো উত্তর পর্তুগালের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।

লিসবন: ঐতিহাসিক ট্রাম, আলফামার মতো প্রাণবন্ত পাড়া এবং আধুনিক সুযোগ-সুবিধার মিশ্রণে লিসবন শহরের বিরতির জন্য একটি গতিশীল ও খাঁটি অভিজ্ঞতা দেয়।

ভবিষ্যতের দিকে দৃষ্টি: টেকসই পর্যটন

পর্তুগালের এই সাফল্য টেকসই পর্যটনের প্রতি দেশটির অঙ্গীকারকেও তুলে ধরে। দেশটি পরিবেশগতভাবে দায়িত্বশীল ভ্রমণ বিকল্পগুলোতে মনোনিবেশ করছে, যাতে পর্যটন বৃদ্ধি হলেও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সংরক্ষিত থাকে। পর্তুগালের এই ধারাবাহিক সাফল্য প্রমাণ করে যে সংস্কৃতি, ইতিহাস এবং আধুনিকতাকে সঠিকভাবে মিশিয়ে কীভাবে একটি গন্তব্য বিশ্বমানের আকর্ষণ তৈরি করতে পারে।

সূত্র: ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুর ওয়ার্ল্ড

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিমান ভ্রমণের জন্য পুষ্টি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ

ফিচার ডেস্ক
পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করুন। ছবি: পেক্সেলস
পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করুন। ছবি: পেক্সেলস

বিমান ভ্রমণ অনেকের মধ্যে মানসিক চাপ সৃষ্টি করতে পারে। এর ওপর শারীরিক অস্বস্তি যোগ হলে তা আরও অসহনীয় হয়ে ওঠে। পুষ্টি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আপনার খাদ্য ও পানীয়ের ওপর মনোযোগ দিলে এই যাত্রা অনেক বেশি আরামদায়ক হতে পারে। এমন কিছু খাবার ও অভ্যাস আছে, যা যাত্রার আগে এড়িয়ে চললে তুলনামূলকভাবে ভালো একটি যাত্রা পাওয়া সম্ভব।

খাবারের ক্ষেত্রে লক্ষণীয়

গ্যাস সৃষ্টিকারী ও ফোলাভাবের জন্য দায়ী খাবার ও পানীয় এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন। কারণ, পেট ফাঁপা ও অস্বস্তি এড়াতে কিছু খাবার ও পানীয় এড়িয়ে চলা জরুরি। গ্যাস সৃষ্টিকারী খাবার পরিহার করুন। ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনের চিকিৎসক ও নিবন্ধিত খাদ্য বিশেষজ্ঞ মাররা বারোজ পরামর্শ দেন যে, সাধারণত গ্যাস উৎপাদনের জন্য পরিচিত খাবারগুলো ভ্রমণকালে এড়িয়ে চলাই ভালো। শিম, মসুর ডাল (অধিকাংশ শস্যদানা) এবং ক্রুসিফেরাস সবজি যেমন বাঁধাকপি, ব্রাসেলস স্প্রাউটস, ফুলকপি ও ব্রকলি এড়িয়ে চলুন। কারণ, এই খাবারগুলো থেকে সৃষ্ট ফোলাভাব, গ্যাস ও পেটের খিঁচুনি উড়ানের সময় চাপের পরিবর্তনের কারণে আরও বেড়ে যেতে পারে। তাই এগুলো এড়িয়ে চললে অস্বস্তি ও বিব্রতকর পরিস্থিতি এড়ানো সম্ভব।

কার্বনেটেড পানীয়

হোলিস্টিক পুষ্টিবিদ অ্যাম্বার অ্যাটেল উড়ানের সময় মিষ্টি সোডা বা অন্যান্য ফিজযুক্ত পানীয় এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেন। কারণ, বিমান চলার সময় নিম্নচাপের কারণে এমনিতেই শরীরে ফোলাভাব হতে পারে আর কার্বনেটেড পানীয় পেটের ভেতরের সেই গ্যাসের চাপকে আরও বাড়িয়ে দেয়, যা প্রচণ্ড অস্বস্তির সৃষ্টি করে।

উচ্চ সোডিয়াম ও চিনিযুক্ত খাবার

বিমানবন্দরের সহজলভ্য চিপস ও নোনতা বাদামের মতন স্ন্যাকসগুলোও এড়িয়ে চলতে হবে। খাদ্য বিশেষজ্ঞ বারোজ জানান, ভ্রমণের সময় অনেকের পায়ে ফোলাভাব দেখা দেয়। অতিরিক্ত সোডিয়াম গ্রহণ এই ফোলাভাবকে আরও খারাপ করে তোলে। মিষ্টি কিছু খাওয়ার লোভ সামলে নিন। এ বিষয়ে বারোজ বলেন, অতিরিক্ত চিনি বা সাধারণ কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবার (যা অন্য কোনো ম্যাক্রোনিউট্রিয়েন্ট দ্বারা ভারসাম্যপূর্ণ নয়) খেলে শরীরে দ্রুত শক্তি কমে আসে এবং ক্লান্তি বাড়ে। যদি মিষ্টি খেতেই হয়, তবে তা চর্বি ও প্রোটিনের সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

অ্যালকোহল ও কফি

ফাংশনাল ডায়াগনস্টিক নিউট্রিশন প্র্যাকটিশনার এলিজাবেথ কাটজম্যান এই দুটি জনপ্রিয় পানীয় বর্জন করার পরামর্শ দেন। কারণ, কেবিনের শুষ্ক বাতাস এমনিতেই শরীর থেকে আর্দ্রতা টেনে নেয় আর অ্যালকোহল ও কফি এই পানিশূন্যতা বা ডিহাইড্রেশনকে আরও বাড়িয়ে তোলে। ডায়েটিশিয়ান ফিওরেলা ডিকার্লো পরামর্শ দেন, বিমানে অ্যালকোহল পান করলে ডিহাইড্রেশন ছাড়াও শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যেতে পারে। পাশাপাশি হৃদ্‌স্পন্দন বাড়তে পারে। এর ফলে ঘুম ব্যাহত হয়, কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে এবং জেট ল্যাগ দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে।

গ্যাস সৃষ্টিকারী ও ফোলাভাবের জন্য দায়ী খাবার ও পানীয় এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন। ছবি: পেক্সেলস
গ্যাস সৃষ্টিকারী ও ফোলাভাবের জন্য দায়ী খাবার ও পানীয় এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন। ছবি: পেক্সেলস

ট্যাপের পানি

বিমান থেকে সরবরাহ করা পানি বা বরফ পান করা উচিত নয়। কেস ওয়েস্টার্ন রিজার্ভ ইউনিভার্সিটির পুষ্টি বিভাগের চেয়ার হোপ বারকোউইস নিশ্চিত করেছেন যে, বিমানের পানির ট্যাংকগুলো কখনোই জীবাণুমুক্ত পরিবেশের জন্য পুরস্কৃত হয় না। এর পরিবর্তে, সিল করা ও ব্যক্তিগত বোতলজাত পানি পানের পরামর্শ দেন তিনি।

আরামদায়ক ভ্রমণের জন্য সেরা বিকল্প

যদিও অনেক কিছু এড়িয়ে চলার তালিকা রয়েছে, তবুও এমন অনেক স্ন্যাকস আছে, যা আপনি উপভোগ করতে পারেন এবং যা আপনাকে নতুন গন্তব্যে দ্রুত সচল হতে সাহায্য করবে। যেমন প্রোটিনভিত্তিক স্ন্যাকস বিশেষজ্ঞরা এমন স্ন্যাকস নেওয়ার পরামর্শ দেন, যা প্রোটিন-প্রধান এবং দীর্ঘ সময় পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে। লবণ ছাড়া বাদাম যেমন আমন্ড, কাজু, পেস্তা, গ্রিক ইয়োগার্ট, শুকনো মাংসের স্টিক, নাট বাটার ও হুমাস, এগুলো খেতে পারেন।

মিষ্টি কিছু খাওয়ার লোভ সামলে নিন। ছবি: পেক্সেলস
মিষ্টি কিছু খাওয়ার লোভ সামলে নিন। ছবি: পেক্সেলস

আর্দ্রতাদানকারী ও সহজে হজমযোগ্য খাবার

অ্যাম্বার অ্যাটেল পরামর্শ দেন, উড়ানের আগে ও চলাকালে সহজে হজমযোগ্য ও পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত। তাজা ফল, সবুজ শাকসবজি, হার্বাল চা ও সাধারণ গোটা খাবারের স্ন্যাকস আপনার সিস্টেমকে হালকা ও সতেজ রাখে। শসা, সেলারি বা আপেলের টুকরাগুলোর সঙ্গে এক মুঠো কাঁচা বাদাম খেতে পারেন। আর সারাক্ষণ পানি পান করা জরুরি। উড়ানের সময় পানি বা মিষ্টি ছাড়া নারকেলের পানি পান করলে অনেক পার্থক্য দেখা যায়।

খালি পেটে যাত্রা নয়

তালিকা দেখে হয়তো মনে হতে পারে, খালি পেটে থাকাটাই ভালো। কিন্তু রেজিস্টার্ড ডায়েটিশিয়ান হান্না থম্পসনের পরামর্শ অনুযায়ী, যাত্রাপথে কিছু খাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উড়ান চাপযুক্ত হতে পারে এবং ভুল জিনিস খাওয়ার ভয়ে বা খাবারের সীমাবদ্ধতার কারণে খাবার এড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। কিন্তু দীর্ঘ সময় না খেলে ক্লান্তি বাড়ে এবং দীর্ঘ যাত্রার পরে শরীর পুনরুদ্ধার করা কঠিন হয়ে পড়ে।

সূত্র: ট্রাভেল+লিজার

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ হলে নিরাপদ থাকবে যে দেশগুলো

ফিচার ডেস্ক
রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের পর থেকে পারমাণবিক যুদ্ধের ভয় তৈরি হয়েছে ব্যাপকভাবে। ছবি: পেক্সেলস
রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের পর থেকে পারমাণবিক যুদ্ধের ভয় তৈরি হয়েছে ব্যাপকভাবে। ছবি: পেক্সেলস

আমরা সবাই জানি যে একটি পারমাণবিক যুদ্ধ ঠিক কতটা ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। প্রায় ১৩ হাজার পারমাণবিক ওয়ারহেডের বৈশ্বিক মজুতের কারণে এর বিধ্বস্ততা হবে আরও ভয়াবহ। কাজ না থাকা অলস দুপুরে ঘরে বসে এ বিষয়ে ভাবতে নিশ্চয়ই ভালো লাগবে না। তবে হ্যাঁ পারমাণবিক মহাপ্রলয় এলে বেঁচে থাকার জন্য কোন দেশগুলো সবচেয়ে ভালো অবস্থানে থাকবে—এ সম্পর্কে জেনে রাখাই যায়। রিস্ক এনালাইসিস নামক একটি জার্নাল সম্প্রতি জানিয়েছে একটি গবেষণার ফলাফল। তারা সেখানে কিছু দ্বীপ দেশকে চিহ্নিত করেছে—যা পারমাণবিক যুদ্ধ, সুপার আগ্নেয়গিরি বা গ্রহাণুর আঘাতের মতো ‘সূর্যালোক হঠাৎ হ্রাসকারী বিপর্যয়’-এর পরেও তাদের জনসংখ্যাকে খাওয়ানোর জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য উৎপাদন চালিয়ে যেতে সক্ষম।

একটি পূর্ণ-মাত্রার পারমাণবিক যুদ্ধের পরে পাঁচ বিলিয়নেরও বেশি মানুষ মারা যাবে। ছবি: পেক্সেলস
একটি পূর্ণ-মাত্রার পারমাণবিক যুদ্ধের পরে পাঁচ বিলিয়নেরও বেশি মানুষ মারা যাবে। ছবি: পেক্সেলস

পারমাণবিক যুদ্ধের উদ্বেগ ও ভয়াবহ পরিণতি

২০২২ সালে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের শুরু এবং পরবর্তী ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার পর থেকে পারমাণবিক যুদ্ধের ভয় তৈরি হয়েছে ব্যাপকভাবে। অনেকের মনেই প্রশ্ন জেগেছে, একটি পারমাণবিক সংঘাত মানবতা এবং গ্রহের জন্য কী পরিণতি নিয়ে আসবে।

বিপর্যয়কর পরিণতি: একটি পারমাণবিক সংঘাতের সরাসরি বিস্ফোরণে প্রাথমিক মৃত্যু থেকে শুরু করে বিকিরণের দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব পর্যন্ত ভয়াবহ পরিণতি হতে পারে।

ব্যাপক প্রযুক্তিগত পতন: এমনকি বেঁচে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করা হয়, এমন স্থানগুলোতেও প্রযুক্তির পতন ঘটবে। এটি সহযোগিতা, সমন্বয় এবং স্থিতিস্থাপক খাদ্য উৎপাদনে মারাত্মকভাবে বাধা দেবে।

দুর্ভিক্ষের ভয়াবহ ফল: ৬৩ শতাংশ জনসংখ্যা দুর্ভিক্ষে মারা যাবে। রাটগার্স ইউনিভার্সিটির একটি গবেষণা অনুসারে, একটি পূর্ণমাত্রার পারমাণবিক যুদ্ধের পরে পাঁচ বিলিয়নেরও বেশি মানুষ মারা যাবে। যা বিশ্বের বর্তমান জনসংখ্যার প্রায় ৬৩ শতাংশ।

খাদ্য উৎপাদন হ্রাস: পারমাণবিক যুদ্ধে চীন, ফ্রান্স, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে খাদ্য উৎপাদন ৯৭ শতাংশ হ্রাস হবে।

বেঁচে থাকা মানুষ: সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতিতেও বিশ্বজুড়ে বেঁচে যাওয়া মানুষ থাকবে বলে মনে করা হয়।

বেঁচে থাকার জন্য সবচেয়ে স্থিতিস্থাপক দেশ

'রিস্ক অ্যানালাইসিস'-এ প্রকাশিত গবেষণাটি ৩৮টি দ্বীপ দেশকে ১৩টি বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে তুলনা করেছে। এই দেশগুলো একটি মহাপ্রলয়ের পরের বেঁচে থাকার রাজ্যের সাফল্যের পূর্বাভাস দিতে পারে। এই গুরুত্বপূর্ণ কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে খাদ্য উৎপাদন, শক্তির স্বয়ংসম্পূর্ণতা, উৎপাদন এবং জলবায়ুর ওপর বিপর্যয়ের প্রভাব। সূর্যালোক হঠাৎ হ্রাসকারী বিপর্যয়ের পরেও এই দেশগুলো তাদের জনসংখ্যার জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য উৎপাদন করতে সক্ষম হবে।

নিরাপদ দেশের তালিকায় প্রথমেই আছে অস্ট্রেলিয়া। ছবি: পেক্সেলস
নিরাপদ দেশের তালিকায় প্রথমেই আছে অস্ট্রেলিয়া। ছবি: পেক্সেলস

বেঁচে থাকার সম্ভাবনার ভিত্তিতে দেশের তালিকা

অস্ট্রেলিয়া: এই তালিকায় প্রথমেই আছে অস্ট্রেলিয়া। খাদ্য সরবরাহের বিশাল বাফার এই দেশটি। এখানে আছে কোটি কোটি অতিরিক্ত মানুষকে খাওয়ানোর সম্ভাবনা। ভালো অবকাঠামো, বিশাল শক্তির উদ্বৃত্ত, উচ্চ স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং প্রতিরক্ষা বাজেট দেশটিকে সম্ভাবনাময় করে তোলে। তবে কিছু চ্যালেঞ্জও আছে। যুক্তরাজ্য এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তুলনামূলকভাবে ঘনিষ্ঠ সামরিক সম্পর্ক এই দেশটিকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে পারমাণবিক যুদ্ধের লক্ষ্যবস্তু হওয়ার ঝুঁকিতে ফেলতে পারে।

ফসলের ৬১ শতাংশ হ্রাস হলেও নিউজিল্যান্ডে পর্যাপ্ত খাদ্য থাকবে। ছবি: পেক্সেলস
ফসলের ৬১ শতাংশ হ্রাস হলেও নিউজিল্যান্ডে পর্যাপ্ত খাদ্য থাকবে। ছবি: পেক্সেলস

নিউজিল্যান্ড: তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে আছে নিউজিল্যান্ড। পারমাণবিক লক্ষ্যবস্তু থেকে দূরত্ব এবং দীর্ঘস্থায়ী পারমাণবিক-মুক্ত মর্যাদা এ দেশটিকে সুরক্ষিত রাখবে। একে চরম তাপমাত্রা থেকে রক্ষা করে সমুদ্রের নৈকট্য। কার্যকর খাদ্য রপ্তানি অর্থনীতি তাদের জনসংখ্যাকে একাধিকবার খাওয়াতে পারে। এমনকি ফসলের ৬১ শতাংশ হ্রাস হলেও সেখানে পর্যাপ্ত খাদ্য থাকবে।

এই তালিকায় স্থান পাওয়া উত্তর গোলার্ধের একমাত্র দেশ আইসল্যান্ড। ছবি: পেক্সেলস
এই তালিকায় স্থান পাওয়া উত্তর গোলার্ধের একমাত্র দেশ আইসল্যান্ড। ছবি: পেক্সেলস

আইসল্যান্ড: এই তালিকায় স্থান পাওয়া উত্তর গোলার্ধের একমাত্র দেশ আইসল্যান্ড। দেশটির দূরত্বের কারণে সবচেয়ে পারমাণবিক যুদ্ধ অঞ্চলের মধ্যে একটি নিরাপদ দেশ। তবে ছোট অর্থনীতির কারণে এটি আমদানিকৃত পণ্য এবং অবকাঠামো পতনে ভুগতে পারে।

সলোমন দ্বীপপুঞ্জ ও ভানুয়াতু: তালিকায় চতুর্থ ও পঞ্চম অবস্থানে আছে যথাক্রমে সলোমন দ্বীপপুঞ্জ ও ভানুয়াতু। গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ভূগোল এবং সাধারণ সময়ে প্রচুর খাদ্য উৎপাদন দেশটিকে সুরক্ষিত রাখে। উচ্চপ্রযুক্তিগত উৎপাদন ও জ্ঞান অর্থনীতির অভাব দেশগুলোর পুনরুদ্ধার কঠিন করে তুলবে। তবে, প্রতিবেশী বেঁচে থাকা দেশগুলোর সঙ্গে তারা বাণিজ্যে অংশ নিতে পারে।

অন্যান্য দেশ: এরপরেই আছে ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন ও মরিশাস। পারমাণবিক যুদ্ধের পরে তাদের জনসংখ্যার জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য উৎপাদন করতে সক্ষম হবে। ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপাইনের মধ্যে আঞ্চলিক বাণিজ্যের সম্ভাবনা। দুর্নীতি এবং সামাজিক অস্থিতিশীলতার ইতিহাস তাদের স্থিতিস্থাপকতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারে।

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান, রিস্ক অ্যানালাইসিস

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ব্যয়বহুল পণ্য়ে ভরসা নেই, ত্বকের যত্নে প্রাজক্তা কোলির প্রিয় প্রাকৃতিক ৪ উপকরণ

ফিচার ডেস্ক
ছবি: ইনস্টাগ্রাম
ছবি: ইনস্টাগ্রাম

প্রাজক্তা কোলিকে এ প্রজন্মের তরুণীদের চিনতে না পারার কিছু নেই। ভারতীয় ইউটিউবার ও অভিনেত্রী প্রাজক্তা কোলি। তিনি আরও পরিচিত নেটফ্লিক্সের ‘মিসম্যাচড’ সিরিজের জন্য। প্রাজক্তা কোলি তাঁর ত্বকের সমস্যা সমাধানের জন্য রান্নাঘর থেকে উপকরণ নিয়ে ব্যবহার করতেই বেশি পছন্দ করেন। তাঁর ভাষ্য, এই উজ্জ্বল ত্বকের রহস্য ঘরোয়া উপাদানে তৈরি এক্সফলিয়েটিং স্ক্র‍্যাব ও প্যাক।

যদিও বাজারে হালের প্রচুর স্কিনকেয়ার পণ্য পাওয়া যায়, তবুও প্রকৃতি প্রদত্ত উপাদানই তাঁর ভরসা বলে তিনি উল্লেখ করেন।

প্রাজক্তা কোলির স্কিনকেয়ার সিক্রেট

গাল্ফ নিউজের সঙ্গে একটি পুরোনো সাক্ষাৎকারে, প্রাজক্তা কোলি কী করে ঘরোয়া উপাদানে ত্বকের যত্ন নেন—সে কথাই বলেছেন। তিনি বলেন, ‘আমার ত্বকের জন্য জাদুকরের মতো কাজ করে এমন একটি প্যাক হচ্ছে বেসন, হলুদ, দই ও মধু।’ এসব উপকরণে তৈরি পেস্ট মুখে লাগান তিনি। কখনো বেসনের পরিবর্তে চালের গুঁড়োও ব্যবহার করেন। এটিও নাকি জাদুর মতো কাজ করে। প্রাজক্তার ভাষায়, এটিই তাঁর জীবনে ব্যবহৃত সেরা স্ক্র‍্যাব।

প্রাজক্তা ত্বকের যত্নে যেসব উপাদান ব্যবহার করেন, সেগুলোর উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন এখানে—

বেসন

প্রোটিন, ভিটামিন ও খনিজ সমৃদ্ধ বেসন ত্বকে পুষ্টি জোগায়। ওয়ার্ল্ড জার্নাল অব ফার্মাসিউটিক্যাল রিসার্চে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে, বেসন ব্রণ নিরাময়ে, ট্যান দূর করতে এবং মৃত ত্বককে এক্সফোলিয়েট করতে সাহায্য করতে পারে।

হলুদ

অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ও প্রদাহনাশক হওয়ায় হলুদ ত্বকের জন্য বিশেষ উপকারী। গবেষণায় দেখা গেছে, হলুদে থাকা কারকিউমিন নামক উপাদান ব্রণ, কালো দাগ এবং ত্বকের নিস্তেজভাব দূর করতে সাহায্য় করে। ত্বকের তারুণ্য বজায় রাখতেও হলুদ খুব ভালো কাজ করে।

টকদই

ত্বককে আর্দ্র রাখতে, উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনতে, অতিবেগুনি রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করতে, স্থিতিস্থাপকতা বাড়াতে, বার্ধক্যের লক্ষণ কমাতে এবং ব্রণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে এই টকদই।

ছবি: ইনস্টাগ্রাম
ছবি: ইনস্টাগ্রাম

মধু

মধু প্রাকৃতিক ময়শ্চারাইজার। এ ছাড়া মধুতে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য রয়েছে—যা ত্বককে হাইড্রেট করতে, ব্রণ দূর করতে এবং ত্বকের জ্বালাপোড়া দূর করতে সহায়তা করে। ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব ডার্মাটোলজির মতে, মধু যেকোনো ত্বকের যত্নের রুটিনে একটি দুর্দান্ত সংযোজন হতে পারে এবং এটি এটোপিক ডার্মাটাইটিস, সোরিয়াসিস ইত্যাদি ত্বকের সমস্যা কমাতেও সাহায্য করে।

প্রাজক্তা কোলির মতো আপনারও কি এই প্যাক ব্যবহার করা উচিত?

যেহেতু এই প্যাকে ব্যবহৃত সব উপাদান ত্বকের জন্য ভালো। তাই এটি ত্বক পরিষ্কার, এক্সফোলিয়েট এবং উজ্জ্বল করার জন্য একটি কার্যকর মুখের প্যাক হয়ে উঠতে পারে।

যদিও এসব উপাদান একেবারেই প্রাকৃতিক। তবুও প্রথমবার ব্যবহার করার আগে ত্বকবিশেষজ্ঞের পরামর্শ মেনে তারপর ব্যবহার করাই নিরাপদ।

সূত্র: এনডিটিভি

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত